নেশা পর্ব ৪+৫

পর্ব ৪+৫
নেশা Returns💞
Ayusha Akter Usha
“”4″”
নেশা রেস্টুরেন্টে বন্ধুদের সাথে বসে আছে।আর তার গার্ডস রা কিছু দূরে দাঁড়িয়ে আছে।তারা টুকটাক কথা বলছে আর লাঞ্চ করছে।এমন সময় তার এক ফ্রেন্ড বলে উঠল
-হেই গাইস ছেলেটাকে দেখ।হোয়াট আ হ্যান্ডসাম।ইচ্ছে হচ্ছে টুপ করে গিলে ফেলি।
তার কথা শুনে নেশা পেছনে তাকালো।ওমা এ যে সাফার।সাফার তার গার্ডদের নিয়ে রেস্টুরেন্টে ঢুকছে।ও রেস্টুরেন্টে কি করছে।মাফিয়া মানুষ কি এখন তাঁদের সাথে একই রেস্টুরেন্টে বসে লাঞ্চ করবে নাকি।
-সত্যিই রে হোয়াট আ সে* ইয়ার।
নেশা তার বন্ধুদের কথা শুনে চট করে তাঁদের দিকে তাকালো।কি খারাপ নজর।ইচ্ছে করে সব নুডলস এদের মাথায় ঢালে।এরা যে তার বন্ধু ভাবতেই নেশা গা গুলিয়ে যাচ্ছে।কি রকম একটা ছেলের সম্পর্কে কমেন্ট করছে।তার উপর আবার সাফার কে।সাফার কে নিয়ে বলা কোনো কথাই তার সহ্য হচ্ছে না।রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে তার।সাফার রেস্টুরেন্টের ভেতর ঢুকে নেশার সামনের সিটে গিয়ে দাড়ায়।আর তার গার্ডরা সেই সিটে বসে থাকা একটা লোকের দিকে বন্দুক তাক করে।সাফারকে ওখানে দাঁড়াতে দেখে সিটে বসে থাকা একজন লোক ভয়ে ভয়ে উঠে দাড়ায়।
-সাফার সব কিছু সহ্য করতে পারলেও ধোঁকা সহ্য করে না।আমার সব ডিটেলস আমার গোপনে সম্রাট খানকে দেওয়ার মতো ধোকা দিয়েছিস তুই আমাকে।আর শাস্তি খুব ভয়ানক হবে।
-সসসরি সরি সার এইবারের মতো ক্ষমা করে দিন।আর এরকম হবে না।এই বারের মতো ক্ষমা করে দিন।প্লিজ সার প্লিজ।
-সাফারের কাছে একটা ভুল ই তার ফার্স্ট এন্ড লাস্ট ভুল হয়।
সাফার অন্যদিকে তাকায়।
-shoot him…
কথাটা বলার সাথে সাথে গার্ডরা ওই লোকের শরীর গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয়।ইতোমধ্যে রেস্টুরেন্টের সবাই পালাই পালাই করছে।সেখানে দুটো পুলিস ও ছিল।সাফার কে দেখে তাঁরাও ভয়ে পিছিয়ে যায়।নেশা থ মেরে দাঁড়িয়ে আছে।সব কিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে সাফারের কথা তো তার কানে আসেনি।কিন্তু সাফারের রাগী লুক দেখেই সে বুঝেছে হয়তো কোনো বড় ভুল করেছে ওই লোকটা।গ ার্ডসরা এসে নেশাকে ঘিরে রেস্টুরেন্ট থেকে বের করতে এলে নেশা চট করে বলে উঠে।
-আমি ওয়াশরুম যাবো।
-পরে যাইয়েন ম্যাডাম এখন এখান থেকে চলেন।
-আমি এক্ষুনি যাবো।
-ম্যাডাম প্লিজ।
-বললাম তো আমি এক্ষুনি যাবো মানে এক্ষুনি যাবো।
গার্ডসরা উপায় না পেয়ে নেশা কে রেস্টুরেন্টের ভেতর নিয়ে যায় নেশা লেডিস টয়লেটে ঢুকে পরে।আর গার্ডস রা দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে।নেশা তাড়াতাড়ি নিজের গলার স্কার্ফ দিয়ে হিজাব বাঁধে।আর নিজের জ্যাকেট খুলে উল্টো করে পরে।জ্যাকেটের উপর কালো হলেও ভেতরের রঙ ধূসর।তারপর নিজেকে একদম ফিট করে নিশা বেরিয়ে আসে।প্রথমে গ ার্ডসদের দেখে নেশা থমকে যায়।কিন্তু গার্ডরা তাঁকে চিনতে না পারায় লাফ দিয়ে নাচতে নাচতে ওখান থেকে চলে আসে।বাইরে এসেই দেখে সাফার গাড়িতে চড়ে চলে যাচ্ছে।তা দেখে নেশা দৌড়ে গাড়ির পিছু করতে লাগে।
-হ্যালো হ্যালো মি শুনছেন গাড়ি থামান।এই যে মি ..
ধুর নেশা তুই এতো ইডিয়ট কেন পুরো এক রাত উনার সাথে জার্নি করল অথচ এখন পর্যন্ত উনার নামটা পর্যন্ত জানে না উফফ।।।।
-হ্যালো গাড়ি থামান।হ্যালো ব্লাক কার।।।।
কিন্তু কে শুনে কার কথা গাড়ি তার মন মতো চলছে।আর নেশা তার পিছু পিছু দৌড়াচ্ছে।দৌড়াতে দৌড়াতে নেশার স্কার্ফ খুলে যায়।দুপুরের কড়া রোদ তার মাথায় এসে পরেছে।হাঁপিয়ে উঠে নেশা একসময় থেমে যায়।হাঁটুতে হাত দিয়ে জোড়ে জোড়ে নিঃশ্বাস নিতে লাগে।সাফার জানালায় হাত রাখতে গিয়ে সামনের জানালায় থাকা আয়নায় দেখে পেছনে নেশা দাঁড়িয়ে হাপাচ্ছে।সাফার তাড়াতাড়ি গাড়ি থামাতে বলে।গাড়ি থামতেই সাফার গাড়ি থেকে নেমে পরে।সাফারকে গাড়ি থেকে নামতে দেখে নেশার ঠোঁটের কোনে হাসির লেখা ফুটে উঠে।কিন্তু বেশিক্ষণ নিজেকে ধরে রাখতে পারে না।এর আগে কখনোই সে এতটা দোড়োয় নি।তার উপর এই কড়া রোদ তার সহ্য হলো না।মাথা ঘুরে ওখানেই পরে গেল।।।
যখন জ্ঞান ফিরল তখন নেশা নিজেকে বেডের ওপর আবিষ্কার করে।ভালো করে চারিদিকে তাকিয়ে দেখে ও একটা বিশাল বড় রুমে রয়েছে।আর তার বেডের পাশের একটু দুরে থাই গ্লাস ভেদ করে একজন রাতের শহর দেখতে ব্যস্ত।নেশা মাথায় হাত দিয়ে উঠে বসে।ও কোথায় এটা।কি করে এলো এখানে এটা তো ওর রুম নয়।তাহলে এটা কার রুম।কোথায় ও।পরক্ষণেই তার মনে পরে সে সাফারের গাড়ির পিছু করছিল।তারপরেই আর কিছু মনে নেই।নেশা পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটাকে পেছন থেকে ভালো করে দেখে বুঝতে পারে ওটা সাফার।সাফার এখানে কি করছে।নেশা তাড়াতাড়ি উঠে সাফারের কাছে যায়।
-আমি এখানে কি করে এলাম আর আপনি এখানে কি করছেন।
নেশা গলা শুনে সাফার তার দিকে ঘুরে তাকায়।
-আমার বাড়ি আমার রুম আমি থাকব না তো আর কে থাকবে।
-এটা আপনার বাড়ি ওহ মাই গোড রাত হয়ে গেছে।আর আমি এখানে। এতক্ষণে বাড়িতে নিশ্চয়ই মাম্মা পাপা টেনসন করছে আমার জন্য।কিন্তু আমি এখানে এলাম কি করে।
-নিশ্চয়ই উড়ে আসোনি।
-আপনি এনেছেন।
-কেন অন্য কারোর আনার কথা ছিল।আর ওইভাবে পাগলের মতো আমার গাড়ির পেছনে দৌড়াচ্ছিলে কেন।
-আরে সেদিন রাতে তো আপনি আমার জন্য অনেক খরচ করেছিলেন সেগুলোর ঋণ তো শোধ করা বাকি ছিল।সেই জন্যই তো।
-আচ্ছা তুমি আমার ঋণ শোধ করতে চাও।
-হুম তাড়াতাড়ি বলে দিন আপনার কত হয়েছে।আমি শোধ করে দেই।আমায় আবার বাড়িও ফিরতে হবে।
সাফার বাঁকা হেসে নেশার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে
-তোমার যা ঋণ হয়েছে সেটা শোধ করার সাধ্য তোমার নেই।অনেক বড় ঋন সেটা চুকাতে চুকাতে সারাজীবন লেগে যাবে তোমার।
-মানে কি।শুধু কিছু খাবার এ তো খেয়েছিলাম।
সাফার হাল্কা হেসে বলে
-সত্যি তুমি ইডিয়ট।
বলে চলে যাচ্ছিল তখনি নেশা বলে উঠে।
-আমি বাড়ি যাবো।
সাফার ওখানেই দাঁড়িয়ে না ঘুরেই বলে
-বাড়ি যাওয়ার নাম ভুলে যাও।এখন থেকে তোমায় এখানেই থাকতে হবে।
বলেই হাঁটা ধরল।
-মানে কি এখানে থাকবো মানে।আমার কি বাড়ি ঘর নাই।আমি বাড়ি যাবো।আর যাবো মানে যাবো এক্ষুনি যাবো।এই মূহুর্তে যাবো।আর আপনি আমায় বাড়ি পৌছে দেবেন।
নেশার জেদ দেখে সাফার রেগে গিয়ে ঘুরে নেশার কাছে এসে কোটের নিচে থাকা বন্দুক হাতে নিয়ে সোজা নেশার কপালের মাঝখানে তাক করে।নেশা বড় বড় চোখ করে সাফারের দিকে তাকায়।সাফার নেশার দিকে বন্দুক তাক করেই তার দিকে এগোতে লাগে।নেশা পিছোতে পিছোতে থাই গ্লাসের সাথে লেগে যায়।সাফার নেশার একদম কাছে গিয়ে বন্দুক কপাল থেকে স্লাইড করে নিচে নামাতে নামাতে
বলে
-বেশি কথা বলা আমি একদম পছন্দ করিনা।আমি যখন বলেছি তুমি এখানে থাকবে মানে এখানেই থাকবে গড ইট।যদি পালানোর চেষ্টাও করেছ তো এর ফল অনেক খারাপ হবে তোমার জন্য।
নেশা চট করে তার গালে ধরে থাকা বন্দুক ধরে ফেলে।সাফারের হাত থেকে বন্দুক নিয়ে পাশে গিয়ে সাফারের দিকে বন্দুক তাক করে বলে
-ওতটা ইডিয়ট ভাববেন না আমাকে।নিজের প্রোটেকন নিজে করতে পারি।যার আগে পিছু চারটা হনুমান ইয়া বড় বড় গান নিয়ে ঘুরে বেড়ায় তাঁকে আপনি আপনি এই ছোট খেলনা দিয়ে কি ভয় দেখাবেন।
বলেই নেশা হাতে থাকা বন্দুক দিয়ে সুট করল।না না সাফার কে নয় পাশের থাই গ্লাসে।গ্লাস আঘাত পেয়ে ছনছন করে ভেঙে পরতে লাগল।সাফার খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই দৃশ্য দেখছে।যেন সে এটাই আশা করেছিল।
-এখান থেকে পালানো আমার জাস্ট দুই মিনিটের ব্যাপার।

“”5″”
সাফার পকেটে হাত রেখে নেশার দিকে এগোতে লাগল।সাফারকে এগোতে দেখে নেশা তার দিকে গান তাক করে আমতা আমতা করে পেছনে যেতে লাগল।
-আআপনি এইভাবে এগোচ্ছেন কেন।দদদেখুন আমি কিন্তু আপনাকে ভয় পাইনা তাই এই ভাবে এগোনো বন্ধ করুন।কি হলো আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন না।আমি কিন্তু শুট করব।একদম এগোবেননা আর।
নেশা পেছোতে পেছোতে একদম কিনারায় চলে যায়।থাই গ্লাস ভাঙা।সে পেছোতে পেছোতেই তার পা কিনারায় গিয়ে ফসকে যায়।নেশা পরতে যাবে তার আগেই সাফার এক হাতে তার হাত ধরে ফেলে।নেশা কটকট করে চোখ বন্ধ করে নেয়।হাত থেকে গান পরে যায়।
-প্লিজ প্লিজ ছাড়বেননা প্লিজ ছাড়বেননা।আহহ…ওহহ গোড প্লিজ সেভ মি।।।।প্লিজ প্লিজ ছাড়বেননা প্লিজ।
-আমি ঠিকি ভেবেছিলাম।ইউ আর আ টু মাচ ইডিয়ট।গান তোমার হাতে ছিল।আর তুমি আমাকে শুট না করে থাই গ্লাসে করলে এখান থেকে পালানোর জন্য।ওকে তো আমি তোমাকে হেল্প ই তো করছি।এদিক দিয়েই তো পালাতে চাইছিলে তাইনা।তো পালাও দেখি কতটা ব্রেভ তুমি।
বলেই হাতে একটু ছাড় দিল।নেশা সঙ্গে সঙ্গে আরেকহাতে সাফারের হাত চেপে ধরল।
-নো নো ছাড়বেননা।ধরে থাকুন।আমি তো জাস্ট ঢপ মারছিলাম।আপনি আমার কথা মাইন্ডে নিচ্ছেন কেন।আমি তো ছোট বাচ্চা একটা।এত উঁচু থেকে পরলে আমার শরীরের হাড্ডিও খুঁজে পাওয়া যাবে না।প্লিজ আমি এই বয়সে মরতে চাইনা।প্লিজ আমার ধরে থাকুন।আমার হাত ছাড়বেননা প্লিজ ধরে থাকুন।
নেশার কথা শুনে সাহা যে কি জানি হলো।সে এক ধ্যানে নেশার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে বলল
-ছাড়বনা কখনো এই হাত ছাড়বোনা।সারাজীবন আঁকড়ে ধরে থাকবো।
সাফারের কথায় নেশা স্তব্ধ হয়ে গেল।সাফারের কথাটা যেন একদম তার বুকে গিয়ে বিধল।নেশা সাফারে চোখের দিকে তাকালো।এই চোখে যেন হাজারো নেশা।বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে যে কেউ মাতাল হয়ে যাবে।এখন যেমন নেশা হচ্ছে।সাফার ধীরে ধীরে নেশা কে নিজের দিকে টানতে লাগল।নেশাকে সোজা করে দাঁড় করালো।নেশা একদম তার কাছে এসে তার চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে আছে।
-এরপর এখান থেকে পালাতে চাইলে হাত ধরে থাকব না সাথে সাথে ছেড়ে দেব।
-পারবেন না তার আগেই আমি ধরে ফেলব।
নেশা সাফারের চোখে চোখ রেখে এক ঘোরের মধ্যে কথাটা বলল।সাফার চট করে নেশার চোখ থেকে চোখ সরিয়ে নিল।নেশার হাত ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই নেশা বলে ওঠে
-আমরা এখন কোথায় আছি।
সাফার নেশার দিকে তাকিয়ে বলে
-সময় হলে জানতে পারবে।
বলে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো সাথে সাথে নেশা আবার ডাক দিল।
-একলিস্ট আপনার নাম টা তো বলে যান।সেদিন পুরো একটা রাত একসাথে থাকার পরেও এখন পর্যন্ত আপনার নাম জানিনা।
সাফার এবার নেশার দিকে ঘুরে একদম নেশার কাছে গিয়ে কানের কাছে একটু ঝুঁকে ফিসফিসিয়ে বলল
-এইভাবে বলোনা কেউ শুনলে অন্যকিছু ভাববে।
বলেই বাঁকা হেসে নেশার দিকে তাকিয়ে চলে গেল।নেশার কথাটা বুঝতে প্রায় কিছুক্ষণ লাগল।যখন বুঝল তখন নেশার চোখ এক হাত বড় গেল।দাঁতে কিড়মিড় করে বলল
-বাজে লোক কথাকার।
কিন্তু যতই বাজে হোক না কেন সাফারের প্রতি নেশার একটা সফ্ট কর্নার তো রয়েই গেছে।মা বাবার থেকে দূরে থাকার কষ্ট হচ্ছে কিন্তু মনের এক কোণে সাফারের সাথে থাকার ভালো লাগা টাও আছে।সেটা কিডন্যাপ হয়েই হোক আর যাই হোক না কেন।কিন্তু কথা হলো একটা।সাফার কি তাঁকে কিডন্যাপ করল কিন্তু কেন।আচ্ছা সাফার গিয়ে তাঁকে কিডন্যাপ করল নাকি সে নিজে এসে কিডন্যাপ হলো।কিছু ই বুঝতে পারছে না নেশা।সাফার কেন তাঁকে কিডন্যাপ করবে।
সাটর কিছুক্ষণ পর আবার রুমে এলো।খাবার নিয়ে।নেশা বেড এ বসে ছিল।নেশার সামনে খাবার রেখে বলল
-খেয়ে নাও।
নেশা একবার খাবারের দিকে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নিয়ে বলল
– খাবোনা।
যদিও খিদে পেয়েছে তবুও কিডন্যাপ বলে কথা একটু তো দর নিতেই হয়।
-বেশি ন্যাকামো না করে চুপচাপ খেয়ে নাও
-বললাম তো খাবোনা।
সাফার এবার একরাশ বিরক্তি নিয়ে নেশার পাশে বসে প্লেট হাতে নিয়ে নেশার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল
-হা করো।।
নেশা অবাক হয়ে সাফারের দিকে তাকালো।
-কি হলো হা করতে বলেছি।
নেশা সাফারের দিকে তাকিয়ে ই হা করল।সাফার তাঁকে খাওয়াতে লাগল।নেশার মনে হচ্ছে সে যেন স্বপ্ন দেখছে।এই মূহুর্তে সে শুধু সাফারকেই দেখছে।তার খুব ইচ্ছে হচ্ছে এই মূহুর্তটাকে আটকে রাখার।ঘড়ির কাটা গুলো খুলে রাখার যেন সময় টা এখানেই আটকে থাকে। সাফার তাঁকে সারা জীবন এভাবেই খাওয়াতে থাকে।কিন্তু সারাজীবন এভাবে খেলে তো সে মোটা হয়ে যাবে।আর মোটা হয়ে গেলে যদি সাফার আর তাঁকে খাইয়ে না দেয় তখন।না বাবা সারাজীবন খাওয়ানোর কোনো দরকার নেই।নেশা আর খাবেই না।
-আর খাবোনা।
-কেন?
-পেট ভরে গেছে।
-এই খাবারটা পুরোটা শেষ করতে হবে তোমায়।
-বললাম তো আর খেতে পারবোনা।আর একটু খেলে পেট পুরো ফুটে যাবে।
-এই মেয়ে শোনো।তোমাকে এখানে তুলে আনা হয়েছে শশুর বাড়ি আসোনি যে আদর করে খাওয়ানো হবে।
-কিন্তু আপনি তো সেটাই করছেন।
সাফার থতমত খেয়ে গেল।কি বলবে বুঝতে না পেরে।প্লেট রেখে উঠে দাড়ালো।
-তুমি খাও আর না খাও তাতে আমার কিছু যায় আসে না।
বলেই চলে গেল।নেশা সাফারের যাওয়ার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বেডে গিয়ে কম্বল গায়ে জড়িয়ে গুটিশুটি মেরে শুয়ে পরল।
সকালে নেশার খুব তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙে গেল।নেশা আড়মোড়া ভেঙে উঠে রুর থেকে পা বাড়ালো বারান্দার দিকে।সকালের দৃশ্য টাও কত সুন্দর হয়।চারিদিকে পরিবেশ দেখতে দেখতে নেশা পাশের বারান্দায় চোখ পরতেই দেখে সাফার তার দিকে একনজরে তাকিয়ে আছে।সাফারকে দেখেই নেশা আতকে উঠল।এলোমেলো চুল ঘুম ঘুম চেহারা গায়ে একটা গেঞ্জি মাত্র।নেশার বুক ধক করে উঠল।ঘুম থেকে ওঠা মানুষকে যে এতটা সুন্দর লাগে তা নেশার জানা ছিল না।অন্যদিকে সাফারের যেন নেশার নেশা ধরে যাচ্ছে।এই মেয়ে তাঁকে একদিন ঠিক পাগল করে ছাড়বে।এই মেয়ের প্রত্যেকটা রুপের নেশায় পরে সাফার।সদ্য ঘুম থেকে ওঠা নেশাকে দেখে সাফারের ইচ্ছে হচ্ছে এখনি কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে একটু আদর করে দেয়।সাফার দৃষ্টি নেশা দম বন্ধ করে দিচ্ছে।তাই ও তাড়াতাড়ি বারান্দা থেকে চলে এলে।রুমে এসেই যেন সে দম নিল।আর কিছু না ভেবে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে পরল।
to be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here