পবিত্রতার_ছোঁয়া পর্ব ৩

গল্প :#_পবিত্রতার_ ছোঁয়া
পর্ব :#3
লেখিকা :#জাবিন _মাছুরা [ছদ্মনাম]
||

আমি বাসা থেকে বের হয়ে, রাস্তায় কুকুরের মতো দৌড়াছি। আমার তো অনেক ভয় লাগছে, যদি তাহসিন স্যার ক্লাসে ঢুকে পড়ে। সিরি দিয়ে কোচিং এ উঠতে যেয়ে হাপিয়ে গেলাম। ক্লাসের সামনে এসে দেখলাম স্যার ক্লাসে ঢুকে পড়েছে। আল্লাহ এখন কী হবে আমার?
||||

আমি :স্যার আসি? [মনে মনে আয়তাল কুরছি পড়ছি]

স্যার:নিশ্চুপ…

আমি :স্যার আসি?

স্যার দেখেও না দেখার ভান করে, চেয়ারে বসে ফোন স্ক্যল করছে। ক্লাসের সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু কেউ কোন কথা বলছে না।
আমার তো এখন প্রায় ভয়ে কান্না চলে আসছে। স্যার ফোন থেকে চোখ তুলে আমার দিকে তাকাল।

স্যার :এই মেয়ে বলো কয়টা বাজে? [রেগে গিয়ে]

আমি:স্যার,, দ,শটা, পনে,রো। [তুলতে তুলতে]

স্যার :ওহ, আমি মনে হয় পনেরো মিনিট আগে এসে পরেছি। [গম্ভীর হয়ে]

স্যারের কথা শুনে সবাই হেসে দিল।

স্যার :, চুপপপ,, [ধমক দিয়ে]

সাথে সাথে সবাই চুপ হয়ে গেল। আমি মাথা নিচু করে বললাম,

আমি : সরি স্যার, আর কোনো দিন দেরি হবে না। সরি।

স্যার : ভেতরে আস। আর কোন দিন যেন লেট না হয়।

আমি :জী স্যার,,, [ওহ আল্লাহ ধন্যবাদ]

স্যার :টেবিলের ওপর থেকে খাতা আর প্রশ্ন নিয়ে লেখা শুরু করো। এমনেই পনেরো মিনিট লেট। যাও।

আমি বেঞ্চে বসে কলম বের করে লেখা শুরু করলাম। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড তমা আমার দিকে একপলক তাকিয়ে আবার লেখা শুরু করল।
|||

মিহুর মা আমি কি আমার মেয়েটার সাথে অন্যায় করে ফেলেছি? [মিহুর বাবা]

মিহুর মা :না তুমি যা করেছ ঠিক করেছ। এমনেই আমাদের অনেক শত্রু আছে। এখন আমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারব, তাহসিন মিহুকে দেখে রাখবে।

মিহুর বাবা:হ্যাঁ। তাহসিন অনেক ভালো ছেলে। ওর মতো ছেলে পেয়ে আমি অনেক খুশি। তাছাড়া ওকে আমি যে যে শর্ত দিয়েছি, তা ও খুশি মনে মেনে নিয়েছে।এখন যাও, মিহু কোচিংন থেকে আসার আগে ওর পছন্দের খাবার রান্না কর।

মিহুর মা: হুম, যাচ্ছি। মেয়েটা সকালে না খেয়ে চলে গেছে। তাহসিন কে বলব ও খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করে না।

মিহুর বাবা:কথা না বলে যাও। মিহু একটু পরেই চলে আসবে।
||

পরীক্ষা সময় শেষ হওয়ার পর, তাহসিন স্যার সবার আগে আমার খাতা জমা নিলেন। স্যার আমাকে দেখে এমন ভাব নিলেন, যেন সে আমাকে চিনে না। আর আমি ভাবছি কালকে এই লোকটার সাথে আমার বিয়ে হলো। বিয়ের কথা মনে পড়তেই মনটা খারাপ হয়ে গেল।
স্যার ক্লাস থেকে যাওয়া পর,

তমা:ওই মিহু আজকে এত দেরি হলো কেন?

মিহু :ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়ে গেছে।

তমা:তোর মুখটা এমন ফোলা – ফোলা লাগছে কেন? তুই কি অসুস্থ?

মিহু :দেরী করে ঘুম থেকে উঠেছি তাই।আমার কিছু হয় নি।

তমা :তুই মিথ্যা বলছিস, বল কী হয়েছে?

আমি: এ কথা বাদ দে। আমি ঠিক আছি।

তমা :সত্যি?

আমি :হুম।

তমা:ছুটির পর একসাথে যাব ঠিক আছে?

আমি :ঠিক আছে।
তারপর অন্য স্যার ক্লাসে চলে এলো। আমরা কথা বলা বাদ দিয়ে দিলাম।
||
শাদিয়া :তুমি আসবে কবে আবির? [শাদিয়ার বয় ফেনড ]

আবির:সামনে মাসেই। এসই আমারা বিয়ে করে ফেলব। ওকে।

শাদিয়া :ঠিক আছে ।মা ডাকছে, রাখি। রাতে কথা বলব।

আবির:বাই।

||
তামিম সাহেব [তাহসিনের বাবা] সোফায় বসে পেপার পড়ছে। হঠাৎ বাসার কলিং বেল বেজে উঠল। তামিম সাহেব দরজা খুলে দিতে গেলেন।

তামিম সাহেব : তোমার বেড়ানো শেষ হয়েছে?
তা ভাইয়ের বাসায় থেকে আমার জন্য কিছু এনেছ?

[যার সাথে তামিম সাহেব কথা বলছে, সে হলো তাহসিনের সৎ মা। তাহসিনের যখন আট বছর বয়স তখন তাহসিনের মা মারা যায়। তারপর তাহসিনের বাবা রিনা বেগম কে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।]

রিনা :না কিছু আনি নি। কয়েক দিন পর ঠিকি আনব।তোমার ছেলে তাহসিন কোথায়?

তামিম সাহেব :বাসায় নেই। তোমার কথার মানে কী? আমি বোঝালাম না।

রিনা :আমি বলছিলাম যে, আমাদের তাহসিন এর তো বিয়ের বয়স হয়েছে ।তাই আমি চাই আমার ভাইয়ের মেয়ে রিমিকে, তাহসিনের বউ করে আনব।

তামিম সাহেব :দেখ এটা সম্ভব না।

রিনা:কেন সম্ভব না?

তামিম সাহেব :কীভাবে সম্ভব তাহসিন এর তো মিহুর সাথে বিয়ে হয় গেছে। রিনাকে তো বিয়ের কথা বলা যাবে না । তাহসিন তো বিয়ের কথা বলতে নিষেধ করেছে। [মনে মনে]

তামিম সাহেব :কারন তাহসিন তোমার ভাইয়ের মেয়েকে কোন দিন বিয়ে করবে না।

রিনা:দেখ আমি কোন কথা শুনতে চাই না। আমি আমার ভাইকে কথা দিয়ে এসেছি। তাহসিনের বউ হলে রিমিই হবে অন্য কেউ নয়।

||

আমি কোচিং থেকে একা বাসায় যাচ্ছি। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে কেউ আমার পিছু নিচ্ছে। আমি বেশি কিছু না ভেবে হাটতে থাকি।

||
বাসায় এসে কারো সাথে কোন কথা না বলে নিজের ঘরে চলে এলাম। ঘরে এসেই গোসল করতে চলে গেলাম।
গোসল শেষে ঘরে এসেই দেখি মা আর বাবা খাবার নিয়ে খাটের উপর বসে আছে। আমার বাবার মুখটা দেখে অনেক খারাপ লাগছে।

আমার মা: মিহু দেখ কি রান্না করেছি।

আমার বাবা: দেখ তোর জন্য বিরিয়ানি রান্না করছে।

আমি :আমি খাব না।

মা:দেখ মা তোর বাবা কালকে থেকে কোন খাবার মুখে দেয় নি। তুই না খেলে তোর বাবাও খাবে না।

আমি এবার কিছু না বলে কেঁদে দিলাম। আমার কান্না দেখে বাবাও কান্না করে দিল।

বাবা:আমাকে মাফ করে দে।

আমি :বাবা সরি। আমি জানি তুমি যা করবে আমার ভালোর জন্য করবে।

বাবা :তুই আমাকে মাফ করে দিয়েছিস?

আমি :হ্যাঁ বাবা। নেও তারাতারি খেয়ে নেও আমাকেও খাইয়ে দেও।

বাবা আমার কথা শুনে তারাতারি খাবার খাইয়ে দিতে লাগল। আমারা তিনজনই একসাথে খাবার খাওয়া শেষ করলাম। খাওয়া শেষে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। বাবা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল।
||
ঘুম থেকে উঠেই দেখলাম সন্ধ্যা হয়ে গেছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাতটা বাজে। তারমানে স্যার আসার সময় হয়ে গেছে।

কিছুখন পরই স্যার তার গম্ভীর মুখে চলে এলো। কিন্তু স্যারের মুখটা দেখে আমার অনেক খারাপ লাগছে। কারন মুখ দেখে মনে হচ্ছে যে সে কান্না করে এসেছে।

আমি :স্যার আসসালামুআলাইকুম।,,,,
চলবে?

[কেমন হয়েছে জানাবেন।আবিরের কিন্তু আরো একটা পরিচয় আছে। ভালো রেস্পনস পেলে রাতে একটা বোনাস পর্ব দেব।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here