পরানের দুলাভাই পর্ব -০৪

🕵পরানের দুলাভাই🕵
# সেলিনা আক্তার শাহারা,,
পর্ব-৪ 😍
——-***—–

হাতটা সরাতেই নিতু মুগ্ধের উপর পরে যায় আর মুগ্ধের ঠোটের উপর নিতুর ঠোট গুলো লেগে যায়,
কি নেশা মাখা চোখে নিতু মুগ্ধের দিকে চেয়ে আছে, মুগ্ধের চোখে নিতুর জন্য ভালোবাসা নাকি দায়িত্ববোধ তা নিতু বুঝতে চেষ্টা করছে,

এর মধ্যেই তাদের ধ্যান ভাংগে ফোন এর আওয়াজে,,নিতু চট করে উঠে দৌড় দেয় রুমে, গিয়ে দেখে নিতুর মা কল দিয়েছে, নিতু খুশি হয়ে ফোন টা হাতে নিয়ে কথা বলা শুরু করে,

নিতুর মাঃ কেমন আছিস মা!

নিতু : ভালো মা তুমি বাবা কেমন আছো।

নিতুর মা একটা হাফ ছেরে বললো আমরা ভালো আছিরে মা তর প্রতি আমরা যে অবিচার করেছি তার জন্য তর বাবা খুবই অনুতপ্ত, লজ্জায় কথা বলতে পর্যন্ত চায় না।
নিতু এবার তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে তার মা কে বললো মা তোমাদের কোন দুষ নেই সব নিয়তি,

নিতুর মা এবার বললো বাবাজি কোথায় রে নিতু,

এখানেই আছে,, বলতেই নিতু পিছন ফিরো দেখে মুগ্ধ রমে ঢুকছে,
নিতুর মা এবার বললো কাল তর বাবা আর জাইন আসবে তদের কে নিতে , চলে আসিস জামাই বাবাজি কে নিয়ে, তর শাশুরির সাথে আমার কথা হয়েছে,
নিতু বাড়ি জাওয়ার কথা শুনেই গদ গদ করতে করতে বললো হ্যা মা বাবাকে জলদি পাঠিয়ে দিও,
বলেই কিছুক্ষন কথা বলার পর ফোন কেটে দিলো,

মুগ্ধ এবার বললো কাল বাড়ি জাবে???

হ্যা বিয়ের পর নাকি স্বামীকে নিয়ে জেতে হয়,
আপনি জাবেন না ( বলেই নিতু অসহায় ভাবে মুগ্ধের দিকে তাকিয়ে রইলো))

মুগ্ধ বললো জাবোনা কেন নিয়ম যখন অবশ্যই জাবো শশুর বাড়ির আয়েস কেনা চায় বলো বলেই ঠোট বাকা হাসি দিয়ে শুয়ে পরল চুপ করে।

নিতু শুয়ে শুয়ে ভাবছে, মুগ্ধের এত কাছে এলাম প্রথম বার কিন্তু তার চোখে আমার জন্য কি ওটা ভালোবাসা ছিলো? নাকি দায়িত্ব বোধ আর পরিবারের চিন্তা করে সে আমাকে কন মতে রাখতে চাইছে মিথ্যা বাধনে,

মুগ্ধ তো কাল পর্যন্ত আপুকে চাইতো এক দিনে কি করে বদলাবে না না, এটা ভালোবাসা না, মুগ্ধ নয় উনি দুলাভাই হয় কারন উনি এখনও আপুকে ভালো বাসে তাই উনার কাছ থেকে আমার কিছু আশা করা ঠিক নয়। বলেই নিতু অন্য দিক মুখ করে ঘুমিয়ে পড়লো।

সকালে ঘুম থকে উঠে যায় মুগ্ধ রোজকার মত জগিং এ জাবে,
আজ নিতু এলোমেলোই হয়ে শুয়া,
তার কোমরের তীল টা মুগ্ধকে টানছে, ফর্সা গায়ের রং এ যেনো কালো তীল টা খুব ফুটে উঠেছে,
মুগ্ধ না চাইতেই তার হাত নিতুর কোমর এ চলে গেলো,আল্ত করে করে কোমরে হাত ঘুরাতে লাগলো মুগ্ধ হঠৎাত মুগ্ধ কোমরের তীল টায় একটা কিস করে উঠে যায় বাহিরে চলে যায়,

নিতু চেয়ে আছে চোখ দিয়ে পানি ঝরছে, কারন মুগ্ধরের স্পর্সেই জেগে গিয়ে ছিলো তার পর ও চোখ বন্ধ করে রেখেছিলো আর মুগ্ধ এমন পাগল করা ছোয়া দিয়েই বেরিয়ে গেলো,
নিতু ফ্রেস হয়ে আসলো কিন্তু এবার শাড়ি টার কি করবে,, বের হয়ে বিছানায় চোখ যেতেই দেখলো মুগ্ধ, ওর দিকেই চেয়ে আছে,

নিতু আজ ছায়া টা আর ব্লাউজ টা পরেই বেরিয়েছে ভেবেছিলো রুম এ কেউ নেই, কিন্তু বদজ্জাত টা এসে জাবে কে জানে, আর এটা আজ জগিং জায় নি কেন??

ভাবতে ভাবতেই মুগ্ধ কাছে চলে এলো,

আর বললো দাও আমি পরিয়ে দেই,
আপনি আজ দৌরাতে জান নি আপনার তো সকাল বেলার রূপটা ভালো লাগে তাহলে বাড়িতে কেন???( নিতু)

মুগ্ধ কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো, গেলে বাহিরের রূপ দেখতে পেতাম যা আমি রুজই দেখি ,
আজ ভিতরের রূপটা দেখতেই জাইনি,

নিতু মাথা চুলকাতে চুলকাতে বির বির করে বললো ভিতরের রুপ?
সেটা আবার কি, কিছুক্ষন পর নিতু বুঝতে পারলো যে মুগ্ধ কোন ভিতরের রূপ এর কথা বলেছে,
বদমাই বেটা লুচ্চা বলেই হাজার টা বকা দিচ্ছে মনে মনে,
মুগ্ধের শাড়ি পরানো শেষ, এবার বললো তোমার বাবা আর তুমার ভাই চলে আসবে কিছুক্ষন পর, নাস্তা করে বেগ গুছিয়ে নাও,
নিতু মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললো,

মুগ্ধ ড্রইং রুমে খবর এর কাগজ পরছে,
নিতু রান্না ঘরে টুকটাক সাহাজ্য করছে তার শাশুরি আর ননদ গুলোকে 😌
নিতুর ননদ গুলা কাজের চেয়ে নিতুকেই জ্বালাতন করছে বেসি, এমন এমন কথা বলছে আর নিতু লজ্জা পাচ্ছে।

কোন মতে রান্না ঘর থেকে এসে খেতে বসে সবাই বসেছ, মুগ্ধের বাবা একটু গম্ভির কথা কমই বলেন,

কোনো অসুবিধা হচ্ছেনা তো তোমার ( মুগ্ধের বাবা)

না বাবা হচ্ছে না( নিতু)

ওহ হলে আমায় বলো( মুগ্ধের বাবা)
বাস প্রথম বার এর মত নিতু তার শশুর এর কথা হয় এত টুকই,
১০ টার দিকে নিতুর বাবা ও জাইন চলে আসে,
নিতুও সব রেডি করে রেখেছে,
জাইনকে দেখে নিতুর বুকটা ফেটে জাচ্ছে,
চোখ লাল মুখটা শুকনা শুকনা, মনে হয় খায়নি ঠিক মত দুদিন ধরে ঘুমও হয় নি,

জাইন নিতুকে দেখে বললো ভালো আছি রে তুই,
মুগ্ধ কি তকে.. কথাটা শেষ করার আগেই মুগ্ধ এসে পরে, বাবা কে সালাম করলো, জাইন ভাইয়ের সাথে কুশল বিনিময় করলো।
বাবা ও জাইন হালকা মিষ্টি মুখ করে বের হল আমরাও আম্মু বাবা ও সবার কাছ থেকে বিদায় নিলাম,

আজ মন খুশি নিতু বাড়িতে যাচ্ছে সে সেখানে সবাই তার চিনা,, উফ ভাবতেই নিতু হাসছে,
জাইন ও বাবা সামনে নিতু ও মুগ্ধ পিছনে বসেছে,
জাইন গাড়ি চালাচ্ছে আর আয়না দিয়ে মুগ্ধ আর নিতুকেই দেখে যাচ্ছে,

নিতু একটা হাই তুলে ঘুম ঘুম এসে যাচ্ছিলো,
মুগ্ধ নিতুর মাথাটা এনে ওর কাধে দিয়ে ইসারা দিলো এখানে ঘুমুতে, ( নিতুর গাড়িতে উঠলেই ঘুম পেয়ে যায় ছোট বেলা থেকেই)
জাইন এটা দেখে একটু রেগে জায়, নিতু ব্যাপার টা বুঝতে পেরেও না বুঝার ভান করে মুগ্ধের কাধে মাথা রেখেছে, কারন জাইনকে বুঝাতে হবে নিতুও এগিয়ে গেছে জাইন ও যেনো সামনে এগুয়,

জাইন এবার খুব স্পিড এ গাড়ি ছারে কিছুক্ষন এর মধ্যেই বাড়ি পৌছে যায়,
গাড়ি থেকে নেমেই নিতু এক দৌড় দিয়ে বাড়ির ভিতর এ চলে জায়,
মুগ্ধ হা হয়ে আছে সে নতুন মানুষ কাউকে তেমন চিনেনা, এখন কি করবে,,,
নিতুর বাবা খুব শান্ত এক জন মানুষ, তিনি বললো চলো বাবা ভিতরে চলো, মুগ্ধ লাগিজ টা টানতে টানতে এগুচ্ছে, তাই জাইন চট করে লাগিজ টা হাত থেকে নিয়ে বললো চলুন ভাই ভিতরে চলুন।

মুগ্ধও ভিতরে এলো,
নিতুর মা মুগ্ধকে দেখে মিষ্টি হাসি দিয়ে কুশল বিনিময় করে বললো বাবা তোমায় কিছু কথা বলার ছিলো।
হ্যা মা বলুন মা ( মুগ্ধ)

মুগ্ধর মুখে বাবা ডাক শুনে নিতুর মা খুশি হয়,
আর বললো তুমি বসো,
নিতুর মা সবাই কে শরবত মিস্টি নানা কিছু খেতে দিলো, মুগ্ধ সামান্য মুখে দিতেই বললো নিতু কোথায়??

নিতুর বাবা এবার একটু হেসেই বললো ওহ মনে হয় ওর রুমে টুটুর সাথে খেলা করছে!!

টুটু কে বাবা ( মুগ্ধ)
টুটু হল ওর ট্যাডিবিয়ার, বলেই হা হা হা করে নিতুর বাবা হেসে দিলো সাথে মুগ্ধও,
নিতুর মা বললো যাও বাবা রুম এ জাও একটু বিশ্রাম নাও,

মুগ্ধ এবার নিতুর রুমে এসেছে প্রথম বার রুপটা পুতুল দিয়ে ভরা কেমন যেনো ১০ বছর এর বাচ্চাদের রুম মনে হয়ে।
মুগৃধ হা হয়ে নিতু কেই দেখছে, নিতু টুটু কে নিয়ে চুমু দিচ্ছে আর বলছে কোথায় ছিলো সোনা তোমায় ছারা আমার কস্ট হয়েছিলো তুমিকি আমায় মিস করেছো ( নিতু)

মুগ্ধ এবার হালকা কাসি দেয় নিতুকে ট্যার পাওয়াতে,
নিতু পিছন ফিরে দেখে মুগ্ধ, তাকে দেখেই চট করে দারিয়ে গেলো,
বললো ওহ আসুন বসুন।

এত ক্ষমে মনে পরলো তো আমিও এসেছি, আমায় নিয়েও এলে না ( মুগ্ধ)

না মামে একটু ইমোশনাল হয়ে ঐ আর কি ( নিতু)
থাক বুঝতে পেরেছি, বলে আবার মুগ্ধ বলে উঠলো নিতু!!

হুম( নিতু)

আমায় তোমার এলাকা টা ঘুরে দেখাবে ( মুগ্ধ)

হ্যা হ্যা কেন নয় বিকেলে কেমন ( নিতু)

ওকে ডান বলে মুগ্ধ ফ্রেস হয়ে বসতেই নিতুর মা ডাক দিয়ে খেতে জাওয়ার জন্য ডাকছে,

সবাই খেতে বসলো জাইন বসলোনা বললো কাকিমা আমি বাসায় গিয়েই খাবো, ( জাইন দের বাসা নিতুদের বাসা থেকে ১০ মিনিট এর পথ)
জাইন চলে গেলো নিতু সব বুঝতে পারলো,
হয়তো মুগ্ধও কারন সে সবই লক্ষ করছিলো।

খাওয়া শেষে একটু ঘুম চাই সেই খাওয়া হল আজ, শশুর বাড়ি মধুর হাড়ি বলে কথা জোর করে একে একে সব পত্ত খাইয়েছে ওকে।

মুগ্ধ এবার শুবে কোথায় টুটুকে নিয়ে নিতু শুয়ে আছে জয়গা কই আর,

তাই মুগ্ধ নিতু কাছ ঘেসে শুতেই নিতু চট করে বসে বললো আ প নি ,

কেন অন্য কাউকে আশা করেছিলে নাকি??
মানে( নিতু)

নাহ কিছু না তোমার কাছে এসেছি তাই তুমি এমন করছো তো ওকে আমি দূরে চলে জাচ্ছি বলেই জেতে নেয় মুগ্ধ।

নিতু চক করে মুগ্ধের হাতটা ধরে বললো কোথায় জাবেন শুনি বাকা করে চেয়ে,
যেখানে বলবে সেখানেই জাবো ( মুগ্ধ)

আমার কথা আপনি শুনবেন কেন( নিতু)

কেন জানিনা তবে শুনবো( মুগ্ধ)

মুগ্ধও নিতু একে অপরের দিকে চেয়ে দুজনকেই টানছে কাছে কিন্তু কেউ কারো কাছে নেই,
নিতু এবার একটু জাগয়া দিয়ে বললো হবে তো এটুকুতে??
মুগ্ধ হাসি দিয়ে চুপ করে শুয়ে রইলো,
নিতুর চুল গুলো মুগ্ধের নাকের কাছে মুগ্ধ সুভাস নিচ্ছে চুল এর,
চট করে মুগ্ধ মাথা গুজে দিয়েছে নিতুর চুলে,
আর কোমর জরিয়ে ধরেছে—-*

চলবে।????

ভুল ত্রুটি মাফ করবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here