পূর্ণতা পর্ব ২+৩

#পূর্ণতা🖤
#Part_02+03
#Writer_Meghla(মেঘ)

তূর্য ঘরে এসে দেখলো,,,, পূর্ণতা খাটের কাছের পড়ার টেবিলটার উপর পা তুলে বসে আছে। আর বিরবির করে কি যেন বলছে।

তূর্য তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
——” কি হলো? এখানে এভাবে বসে আছো কেন? আমি না তোমাকে ঘুমাতে বললাম।”

তূর্যর কথা শুনে পূর্ণতা খাটের দিকে ইশারা করে কাঁদো কাঁদো গলায় বললো,
——“ওখানে টিকটিকি!”

——-” টিকটিকি? তো কি হয়েছে?”( ভ্রু কুঁচকে)

পূর্ণতা বাচ্চাদের মত করে বললো,
——-“আমার ভয় লাগে। যদি টিকটিকিটা আমাকে কামড়ে দেয়!”

পূর্ণতার কথা শুনে তূর্য মুচকি হেসে বললো,
——-” আরে পাগলি! টিকটিকি কাউকে কামড়ায় না। যাও এখন লক্ষী মেয়ের মতো ঘুমিয়ে পর।”

——–” না আমি একা ঘুমাবো না। আমার ভয় করে। প্লীজ তুমি আমার সাথে ঘুমাও।”

——–“এরকম করতে নেই পূর্ণ। লক্ষী মেয়ে তো তুমি,,,, তাহলে যাও ঘুমিয়ে পর। আমি বারান্দাতেই আছি।”

পূর্ণতা জেদ ধরা গলায় বললো,
——-“তুমি আমার সাথে না ঘুমালে আমি ও ঘুমাবো না।”

তূর্য তার দিকে তাকিয়ে একটু রাগী গলায় বললো,
——-” বলছি তো যাও ঘুমিয়ে পর।”

——-” তুমি ও আমাকে বকছো?”( বাচ্চাদের মত করে)

——-“বকছি কোথায়? আমি তো তোমাকে ঘুমাতে বললাম। ভালো মেয়ে তো তুমি। অনেক রাত হয়েছে। যাও ঘুমিয়ে পর।”

পূর্ণতা বাচ্চাদের মত করে আকুতির স্বরে বললো,
——-” আমার ঘুম আসছে না। তুমি আমাকে ঘুম পারিয়ে দেবে? কতো দিন কেউ আমাকে ঘুম পারিয়ে দেয় না। আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দেয় না। জানো? ছোট বেলায় মাম্মাম যখন বেঁচে ছিল আমাকে প্রতি দিন সুন্দর সুন্দর গল্প বলে ঘুম পারিয়ে দিত। মাম্মাম আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকে কেউ আর আমাকে গল্প শোনায় না। আগে তন্ময় ভাইয়া মাঝেমাঝে গল্প বলতো কিন্তু বড় আম্মু ভাইয়াকে খুব বকতো। তাই আর আমি কখনো ভাইয়ার কাছে গল্প শুনতে চায়নি। আমার ভাইয়াকে কেউ বলে আমার খুব কষ্ট হয়।”

পূর্ণতার প্রত্যেকটা কথা তূর্যর বুকের গিয়ে তীরের মত বিধলো। কতো ছোট বয়সে বাবা-মাকে হারিয়েছে মেয়েটা। তার পর থেকে চাচা-চাচির একরকম অবহেলায়ই বড় হয়েছে সে। এ পরিবারের তাকে ভালোবাসার মধ্যে শুধু তন্ময়ই তাকে ভালোবাসে। নিজের বোনের থেকেও বেশী সে পূর্ণতাকে ভালোবাসে। আর তূর্যদের পরিবারও কখনো তার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টাই করেনি। সে জন্য তূর্যর আজ নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে। তূর্য পূর্ণতার মাথায় হাত রেখে মুচকি হেসে বললো,

——-” মন খারাপ করছো কেন পাগলি। আজ আমি তোমাকে গল্প শোনাবো।”

পূর্ণতা আনন্দে আত্মহারা হয়ে বললো,
——–“সত্যিই?”

তূর্য মাথা নাড়ল। পূর্ণতা তূর্যকে একহাতে হালকা করে জড়িয়ে ধরে বললো,
——-” তুমি আমার ভালো ভাইয়া।”

——-” যাও এখন গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ো।”

পূর্ণতা এক লাফে বিছানায় শুয়ে পড়লো‌। তার পর বলতে শুরু করল,,, কি হলো ভাইয়া গল্প বলছো না কেন? তাড়াতাড়ি বলো। তূর্য বিছানায় পাশে একটা চেয়ারে বসে মুচকি হেসে বললো,
——-“কোন গল্পটা বলবো সেটা তো আগে ভাবতে দাও।”

——-” আচ্ছা। তুমি ভাবো। আমি আর তোমাকে ডিস্টার্ব করবো না। এই আমি চুপ।” ( ঠোঁটে আঙুল দিয়ে)

খানিক ভেবে তূর্য বললো,,, তাহলে এখন গল্প শুরু করি? কিন্তু পূর্ণতার কোন সাড়া শব্দ নেই। সে তাকিয়ে দেখল, পূর্ণতা ঘুমিয়ে পড়েছে। তূর্য মনে মনে বললো,,,এতোক্ষণ গল্প শোনার জন্য হম্বিতম্বি করে এখনি ঘুমিয়ে পড়েছে। এই নাকি তার ঘুম আসছিল না। যাই হোক আমি বরং এখানেই বসে থাকি। আবার কখন ঘুম থেকে উঠে যায়!

🍁
এদিকে তূর্যর মামী রুমে এসে চিল্লাচিল্লি শুরু করছে। তূর্যর মামী তার স্বামীর দিকে তাকিয়ে রাগী কন্ঠে বললো,
——“দেখছো? তোমার ভাতিজি কি পরিমান শেয়ানা হয়েছে? এতো বড় অন্যায় করার পরেও বলছে,,,, সে নাকি খুব ভালো কাজ করছে।”

——–” আমার কি দোষ? তোমার ছেলেই তো ওকে বাড়িতে নিয়ে এসেছে।”

——–” সেটাই তো পেটের ছেলে যদি শত্রু হয়। তাহলে আর কি করার। কিন্তু তূর্য বাবার কি দরকার ছিল ঐ পাবনা ফেরত পাগলের সাথে কথা বলার? যার জন্য আমাদেরকে রুম থেকে বের করে দিল।”

মায়ের মুখে এই কথাটা শুনে তিথি ক্ষেপা বাঘিনীর মতো গর্জে উঠে বললো,
——” কিই? পূর্ণতা তূর্যর রুমে! আমার জামাটা পুড়েও ঐ হারামজাদীর শান্তি হয়নি। এখন আবার আমার তূর্যর দিকে নজর পড়েছে। আমি ওকে ছাড়বো না।”

——-“দুই ভাই বোনর শুধু বড় বড় কথা! এতো পেচাল বাদ দিয়ে এখন দূর হ আমার চোখের সামনে থেকে। জামা কাপড় ঠিক ভাবে রাখতে পারে না শুধু বড় বড় বুলি! যখন যা চাস তাই পাস তো তাই টাকার মর্ম বুঝিস না। ফাজিল মেয়ে এখনো এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? যা দূর হ চোখের সামনে থেকে।”

অত্যন্ত রাগী কন্ঠে তিথিকে কথাগুলো বললো তার মা। তিথি আর এক মূহুর্ত ওখানে না দাঁড়িয়ে দৌড়ে নিজের রুমে চলে এলো। আর মনে মনে বললো,,, পূর্ণতা তোর জন্য আম্মু আজ আমাকে এতো গুলো কথা শুনালো‌। এর দাম তোকে দিতে হবে।

🍁
পাশের রুম থেকে আসা তীব্র আর্তনাদে শব্দে তন্ময়ের ঘুম ভেঙে গেল। সে দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখলো,,,সাড়ে এগারোটা বেজে গেছে। আসলে কালকে রাতে সে একটা কাজে গিয়েছিল। সেখান থেকে এসে শুতে শুতেই ভোর হয়ে গিয়েছিল তাই ঘুম থেকে উঠতে এতো দেরি হলো। সে বিছানা থেকে উঠে পাশের রুমে গিয়ে দেখলো সেখানে পূর্ণতাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। তন্ময়ের বুঝতে অসুবিধা হলো না এটা করা কাজ। সে ভাবতে পারছে না মানুষ এতো নিষ্ঠুর কি করে হতে পারে? তন্ময় মা,মা বলে ডেকে উঠল। তার মা খুন্তি হাতে পূর্ণতার দরজার সামনে উপস্থিত হলো। তার পর একটা বিরক্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
——–” কি হলো? এভাবে চিল্লাচ্ছিস কেন?”

——-” তুমি জানো না বুঝি?”

——-” ঢং না করে তাড়াতাড়ি বল। আমার অনেক কাজ আছে।”

——–” আমি ঢং করছি? পূর্ণতাকে এভাবে বেঁধে রেখেছো কেন?”

——-” বেঁধে রেখেছি বেশ করেছি। জানি তোর এই আদরের বোন কি করছে?”

——-” পূর্ণতা যে অন্যায়ই করুক না কেন,,, ওকে এভাবে বেঁধে রাখার কোন অধিকার তোমার নেই। খুলে দাও বলছি। তা না হলে এর ফল কিন্তু ভালো হবে না বলে দিলাম।” শক্ত কন্ঠে কথাগুলো বললো তন্ময়।

——–” আর কি খারাপ করবি তুই আমার? দশ মাস দশ দিন যে মা তোকে পেটে ধরেছে পরের মেয়ের তার সাথে এমন ব্যবহার করেছিস এর থেকে খারাপ আর কি হতে পারে? দেখবি একদিন তোদের ছেড়ে ঠিক চলে যাবো।”

কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বললো তন্ময়ের মা। তার পর দ্রুত পায়ে রান্না ঘরের দিকে চলে গেল সে। মায়ের এই কথাগুলোতেই প্রতিবারই আটকে যায় তন্ময়। হাজার হোক সে তো মা। তাকে কত কষ্ট করে এই দুনিয়াতে এনেছে। কত কষ্ট করে লালন পালন করেছে। তাই মায়ের মুখের উপর কথা বলার সাহস পায় না সে।
পূর্ণতার দিকে তাকিয়ে দেখলো,,,সে এখনো নিঃশব্দে কাঁদছে। নিজের কষ্টের জন্য না। তন্ময়কে তার মা বলেছে তাই তার এই কান্না। ছোট বেলা থেকেই তন্ময়কৈ কেউ কিছু বললে পূর্ণতা এরকম করে। যেন কষ্ট তন্ময়ের নয় পূর্ণতারই হচ্ছে। তন্ময় এবার পূর্ণতার দিকে তাকিয়ে বলল,

——-” খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না পূর্ণ?”

পূর্ণতা বাচ্চাদের মত করে বললো,
——-” না আমার একদম কষ্ট হচ্ছে না। আমার সোনা ভাইয়া এসে গেছে তো।”

তন্ময় মুচকি হেসে বোনকে জড়িয়ে ধরল। আর মনে মনে ভাবলো,,,এই বিশাল সাম্রাজ্যের একমাত্র উত্তরাধিকারী হয়েও ভাগ্যের দায়ে আজ শিকল বন্দী পূর্ণতা। আর তন্ময় নিজের চোখে সব অন্যায় দেখেও কিচ্ছু করতে পারছে না। শুধু নিঃশব্দে অপেক্ষা করছে সেই রাজকুমারের যে তার বোনটাকে মুক্ত করবে এই পাপের সাম্রাজ্য থেকে। কবে আসবে সেই রাজকুমার? কবে আসবে??

#চলবে….

( আমি খুব দুঃখিত আপনাদেরকে তিন দিন ধরে অপেক্ষা করানোর জন্য। আসলে সার্ভার বন্ধ থাকার কারণে আমি আইডিতে ঢুকতেই পারছিলাম না। অনেক চেষ্টা করে আজকে ভিপিএন দিয়ে আইডিতে ঢুকছি। ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন আর গল্পটা কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।)

#পূর্ণতা🖤
#Part_03
#Writer_Meghla(মেঘ)

ঘড়িতে এখন দুপুর দেড়টার মতো বাজে। এমন সময় তিথি পড়ার টেবিলে বই নিয়ে বসে থাকতে দেখে খানিকটা আশ্চর্য হলো তন্ময়। আশ্চর্য হওয়াই কথা! যে মেয়েকে পরীক্ষার আগের রাতেও বইয়ের ধারে কাছে আসতে দেখা যায় না। সেই মেয়ে এই ভর দুপুরে বই নিয়ে বসে আছে এটাতো রিতিমত পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য। তন্ময় গলা খাঁকারি দিয়ে বললো,

———“তুই তো পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য দেখাইলিরে বোইন। আমি একেবারে ধন্য হয়ে গেলাম।”

কিন্তু কথাটা যেন তিথির কানে ঢুকলই না। সে আসলে পড়ার টেবিলে বসে বসে তূর্যকে নিয়ে ভাবছিল। কি করে তূর্যর কাছাকাছি আসা যায়,,, তূর্যর মনযোগ পাওয়া যায় তাই ভাবছিল। তন্ময়ের ডাকে সে ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে এসে বললো,

———” হুঁ কিছু বললে ভাইয়া?”

——–” বল্লাম তুই আবার পড়াশোনাও করিস?”

তিথি হালকা রাগ দেখিয়ে বললো,
——–” তাহলে কি আমি পড়াশোনা না করেই ভার্সিটির স্টুডেন্ট হয়েছি?”

———” না মানে কোন দিন তোকে বইয়ের ধারে কাছে আসতে ও দেখিনি তো। তাই বললাম আরকি!” ( দাঁত কেলিয়ে)

———” তা হলে কি আমার চেহারা দেখে স্যারেরা আমাকে পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেয়?”( হালকা রেগে)

তন্ময় ভাবলেশহীন ভাবে বললো,
———” হয়তো! তোর যা বিচ্ছিরি চেহারা। দেখতে তো একেবারে পেত্নীর মতো। তোর এই পেত্নী রূপ দেখে ভয় পেয়েই স্যারেরা তোকে পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেয়।”

———-” কি বললে তুমি? আমি এখন আম্মুকে ডাকবো কিন্তু।”

——–” ইচ্ছে হলে ডাক। আম্মু আমার কি করবে?( ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)

——–” ডাকলাম কিন্তু।”

——–” ডাক। ডাকলে তোরই ক্ষতি। আমার কিছু না। তোর জন্য যে গিফটা আনছিলাম সেটা তোকে দেবে না। এখন ভেবে দেখ তুই কি করবি?”

———” গিফট কোথায়?”

———” এইতো গুড গার্ল।”

এই বলেই তন্ময় রেপিং পেপার মোড়ানো একটা গিফট বক্স তিথির সামনে তুলে ধরলো। তিথি খানিকটা অবাক হয়ে বললো,
——–” এতে কি আছে ভাইয়া?”

——–” আমি বলে দিলে তো সব সারপ্রাইজ শেষই হয়ে গেল। তার থেকে তুই খুলে দেখ কি আছে।”

তিথি প্যাকেটটা খুলে দেখলো সুন্দর একটা লেহেঙ্গা। লেহেঙ্গাটা দেখেই তিথির মন খুশিতে নেচে উঠল। সে আনন্দিত গলায় বলল,

———“ও মাই গড! ভাইয়া তুমি আমার জন্য লেহেঙ্গা কিনে এনেছো? আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না।”

——–” আম্মু বললো তোর জামাটা নাকি পূর্ণতা পুড়িয়ে ফেলছে। তাই তোর জন্য এই লেহেঙ্গাটা কিনে আনলাম তোর পছন্দ হয়েছে?”

———“হুঁ খুব খুব পছন্দ হয়েছে। ইউ আর বেস্ট ভাইয়া।”

——–” কি বললি? আমি… এই আমি বেস্ট ভাইয়া? বিশ্বাস করতে খুব কষ্ট হচ্ছে বোইন।”

——–” সত্যি বলছি তুমি খুব ভালো ভাইয়া।”

——–” হাইছে। আর এতো পাম দেওয়া লাগবো না। বেশি পায় দিলে আবার ফেটে যাবো। তখন আর আমার বিয়ে করা হবে না। যাই হোক বল পূর্ণতা কোথায়?”

——–” কেন? পূর্ণতাকে দিয়ে কি করবে?”

———” দরকার আছে বলেই তো জানতে চাচ্ছি।”

তিথি একটা বিরক্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলতে শুরু করল,
——–” আর বলো না,,,, আম্মু ওকে একটু ঘর মুছতে দিয়েছিল। ঘর মুছতে গিয়ে সেই নবাবজাদি আছাড় খেয়ে এখন বিছানায় শুয়ে আছে। তাও আবার তূর্য ভাইয়ার বিছানায়! পাগল হলে কি হবে হাড়ে হাড়ে বজ্জাত!”

তিথির এমন কথায় তন্ময় তার দিকে কঠিন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রেগে তিথির রুম থেকে বেরিয়ে গেল,,, তার মা পেয়েছে টা কি? বাড়িতে কি কাজের লোকের অভাব? যে পূর্ণতাকে দিয়ে ঘর মুছতে হবে! তন্ময়ের মা-বাবার পাপের ঘরা পূর্ণ হয়েছে এবার তাদের শাস্তি পেতেই হবে। পেতেই হবে। কেউ বাঁচাতে পারবে না।

🍁
পশ্চিম আকাশের কোলে সূর্য প্রায় ঢলে পড়ছে। শেষ বিকেলের হলদে আলোয় তূর্য ছাদের এককোণায় দাঁড়িয়ে রক্তিম আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আর পূর্ণতার কথা ভাবছে। মেয়েটাকে সবাই যতটা পাগল বলে আসলে পূর্ণতা ওতোটা পাগল নয়। তূর্যর ধারণা সঠিক চিকিৎসার অভাবেই পূর্ণতার আজ এই দশা। ভালো ভাবে ট্রিটমেন্ট করলে এখন সে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারে। তূর্য মনে মনে বললো,, দেখি। পূর্ণতার চিকিৎসার ব্যাপারে মামা-মামীর সাথে কথা বলতে হবে। হাজার হলেও পূর্ণতা তার মামাতো বোন। আর তূর্য নিজেও একজন ডাক্তার। এমন সময় হঠাৎ তূর্যর হাতে থাকা মুঠো ফোনটা বেজে উঠলো। তূর্য ফোনটা রিসিভ করে কানে নিয়ে বললো,

——-” হুঁ রিশা। বল কি বলবি?”

——–“কেমন আছো? মামাবাড়িতে কেমন লাগছে?”

——–” ভালোই আছি। বাট তুই আমাকে হঠাৎ তুমি করে বলা শুরু করলি কেন বলতো?”( ভ্রু কুঁচকে)

ও পাশ থেকে রিশা লাজুক হাসে বললো,
——–” বারে আর কয়েক মাস পরে আমাদের বিয়ে এখনো কি তোমাকে তুই করে বলা যাবে?”

( রিশা তূর্যর হবু বউ। ওরা দুজন ছোট বেলা থেকে একসাথে লেখাপড়া করে এসেছ। রিশা তূর্যকে খুব ভালোবাসে কিন্তু তূর্যর রিশার প্রতি তেমন কোন ফিলিংস না থাকলে ও জীবন সঙ্গী হিসেবে রিশাকে বেশ পছন্দ তূর্যর। তূর্যর মতে হাসবেন্ড ওয়াইফ হবে বন্ধুর মতো। আর রিশার মতো একজন বন্ধু পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। তাই তার মতে রিশাই তার জন্য বেস্ট জীবন সঙ্গী।)

——–” তা ঠিক। বিয়ে ঠিক হওয়ায় পর নিজের বরকে তুই করে বলা সত্যিই ঘোর অন্যায়। তাহলে আমিও তোমাকে তুমি বলা শুরু করি বউ? এই তুমি কি লজ্জা পাচ্ছো?”

দূর থেকে দাঁড়িয়ে কথাগুলো শুনছিল তিথি। সে মনে মনে বললো,,, তার মানে তূর্য এনজেইঞ্জড।

#চলবে….

( ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর গল্পটা কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here