প্রণয়স্পর্শী পর্ব ৩৪+৩৫

#প্রণয়স্পর্শী
#Tafsia_Meghla
#চৌত্রিশতম_পর্ব

মেঘলা আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলো না চোখের সামনে এতো বাজে ভাবে খুন হওয়া কেউ দেখে ঠিক থাকতে পারবে না৷ লুটিয়ে পরলো মেঘলা নিচে তা দেখে রাজ হাসলো বাকা হাসি সে যেন আনন্দ পাচ্ছে মেঘলার কষ্টে৷ মহা আনন্দ৷৷ কিন্তু না এইটুকুতেই ওর শাস্তি পূর্ন হবে না রাজ চায় আরো শাস্তি দিতে তাই বাকা হেসে পাশে থেকে পানির বোতল নিয়ে পুরোটা পানি মেঘলার চোখে ঢেলে দেয় পিটপিট করে চোখ খুলে উঠে গুটিয়ে বসে মেঘলা৷

রাজ বলে,
— ” এইতুকুতেই অজ্ঞান হলে চলবে না জান আরো একজন তো বাকি আছে৷ ”
মেঘলা ভয় কাতর কন্ঠে বলে,
— ” ওরা তো কিছু করেনি ওদের মারছো কেন? ছেড়ে দাও প্লিজ ভাইয়া আমি আর কারো সাথেই কথা বলবো না৷ ”
রাজ আরো রেগে যায় রেগে গিয়ে মেঘলার গাল চেপে ধরে বলে,
— ” জ্বলছে খুব? কেন রে? ভালোবাসতি বুঝি? ছাড়বো না কাউকে, আর ওই ছেলের হাত ধরেছিলি না? বলেই অচেতন অবস্থায় পরে থাকা ছেলেটির হাতে আঘাত করতে থাকে৷
মেঘলা চোখ খিচে বন্ধ করে ফেলে রাজ গিয়ে মেঘলার সামনে বসে বলে,
— ” চোখ খুলো জান৷ ”
মেঘলা খুললো না আরো খিচে বন্ধ করে ফেলে রাজ আবার বলে,
— ” খুলতে বলেছিতো? খুল৷ ”
মেঘলা খুললো না রাজ এবার রেগে গিয়ে চেচিয়ে বলে,
— ” খুল৷ ”
মেঘলা এক ঝটকায় চোখ খুললো রাজ হেসে বলে,
— ” ভেরি গুড, এবার যদি চোখ বন্ধ করিস তাহলে শাস্তি আরো ভয়াবহ হবে৷ ”
মেঘলা কিছু বললো না৷
রাজ উঠে গিয়ে আরেক জন এর পেটে ছুড়ি ঢুকায়, মেঘলার বান্ধুবি ফিহার বয়ফ্রেন্ড এর পেটে বাজে ভাবে ছুড়ি ঢুকিয়ে সেটা আবার বের করে আবার হাতে আঘাত করতে থাকে যে হাত দিয়ে মেঘলাকে ধরেছিলো৷
মেঘলা এসব সহ্য করতে পারছে না এতো খারাপ মানুষ হয়? যে মানুষ খুন করতে পারে সে অন্তত কাউকে ভালোবাসতে পারে না৷
রাজ পৈচাশিক হেসে মেঘলার সামনে এসে রক্তাক্ত ছুড়িটা মেঘলার হাতে চেপে ধরে বলে,
— ” এই হাতেই ছেলেটা ধরেছিলো তাই না? ”
বলে আরো জোরে চেপে ধরে গল গল করে রক্ত পরছে একটা সময় আবারো জ্ঞান হারিয়ে নিচে পরে যায় মেঘলা৷

চোখে আলো এসে পরতে চোখ মেলে মেঘলা, তখন এর কথা মনে পরতেই ধরফরিয়ে উঠে বসে কোথায় আছে তা দেখার জন্য৷ আশে পাশে তাকিয়ে দেখে ও নিজের ঘরেই আছে আর সকাল হয়ে গেছে রাতের কথা মনে পরতে ডুকরে কেঁদে উঠে কাল রাতের দৃশ্য যে কখনো ভুলতে পারবে না৷
সে-দিন এর পর থেকে রাজ এর থেকে দূরে দূরে থাকে রাজকে দেখলেই আরো অসুস্থ হয়ে পরে জোর করেও রাজ মেঘলার কাছে থাকতে পারে না এক সময় রাগে ক্ষোভে ব্যার্থ হয়ে লন্ডনের উদ্দেশ্যে পারি দেয়৷ আগে থেকেই সব ঠিক ছিলো আর রাজ ভেবে ছিলো মেঘলার সাথে কাবিন করে যাবে কিন্তু মেঘলার মানষিক সমস্যা আরো বাড়ছিলো তাই ডাক্তারের কথা মতো মেঘলার কাছ থেকে দূরে চলে যায়৷
রাজ যাওয়ার পর মেঘলার উপর অত্যাচার আরো বেড়ে যায় রাজের মা কথায় কথায় ছেলের দূরে যাওয়ার দোষে মেঘলাকে মারে, তবুও নিজেকে ঠিক রেখে সে বাড়িতেই সব সহ্য করে থেকে যায় শুধু মাত্র পড়াশোনার জন্য৷ রাজ যাওয়ার তিন বছরের মাথায় মেঘলাকে একটা মাদক ব্যবসায়ীর সাথে বিয়ে ঠিক করে রাজকে না জানিয়ে, বিয়ের দিনই বাড়ি থেকে পালায় মেঘলা৷

বর্তমান,

কিছুর আওয়াজ পেয়ে অতীত এর ভাবনা থেকে ফিরলো মেঘলা চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পরছে, শোভনের অপেক্ষায় বসে আছে মেঘলা৷ ওর ডাক্তার সাহেব আসবে ওকে নিয়ে যাবে এখান থেকে কিন্তু আদৌ কি শোভন নিয়ে যেতে পারবে?
রাজ বেশ কিছুক্ষন পর মেঘলার কাছে এসে শান্ত কন্ঠে বলে,
— ” তোকে কত খুজেছি জানিস? সে দিন বৃষ্টির রাতে আহানার ওয়ালপেপার এ তোর আর আহানার ছবি দেখে বেশ চমকে গেছিলাম৷ আহানার সাথে তোর কি করে দেখা হলো? ও কি তোকে পালাতে সাহায্য করেছিলো? কিন্তু ওর সাথে তোর পরিচয় হলো কি করে? ”
রাজের প্রশ্নের উত্তর দিলো না তবে মেঘলাও বেশ অবাক হলো রাজ আহানাকে কি করে চিনে? আর আহানার সাথে কি পরিচয় রাজের? রাজ আহানাকে চেনে মানে শোভনকেও চিনে৷
মেঘলার উত্তর না পেয়ে রাজ আবার রাগী রাগী কন্ঠে বলে,
_- ” উত্তর দিচ্ছিস না কেন? আর শোভন এর কথা বললি কেন তুই? শোভন কে কি করে চিনিস? শোভন আসবেই বা কেন তোকে নিয়ে যেতে? শুনে রাখ মেঘলা আমি কিন্তু কাউকে ছাড়বো না কাউকে না এমন কি তোকেও না৷ পালিয়ে ছিলি না? এবার হাত পা ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখবো বলে দিলাম৷ ”
মেঘলা এবারও নিশ্চুপ ও কথা বলতে চায় না এই খারাপ ছেলেটার সাথে, ওর তো চিন্তা হচ্ছে শোভনকে নিয়ে নিশ্চয়ই শোভনও খুব রেগে আছে সে-দিন বাড়ি থেকে না বের হলে এতো কিছু হতো না৷
শোভন নিশ্চয়ই আহানার উপর অনেক রাগ দেখিয়েছে? ইস ওর জন্য আহানা বকা শুনলো এবারো৷
মেঘলাকে এবারো চুপ থাকতে দেখে রাগ হচ্ছে রাজের মেঘলাকে এখন মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে, এ মেয়ে তো এমন ছিলো না? রাজকে বাঘের মতো ভয় পেতো আর এ মেয়ে আজ ওকে ইগনোর করছে? সহ্য হচ্ছে না রাজের সব কিছু শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে সব ধ্বংস করে দিতে ইচ্ছে করছে রাজের৷
উঠে দাঁড়িয়ে হাসফাস করতে করতে সামনে থাকা চেয়ারটা নিয়ে ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় জোরে বাড়ি মারে আয়নাটা নিমেষে ভেঙে চুরমার হয়ে যায়৷ মেঘলা ভয়ে গুটিয়ে বসে কিন্তু সে ভয়টা চেহারায় ফুটিয়ে তুলে না কারন রাজের সামনে ভয় কাতর হয়ে থাকলে রাজ আরো আঘাত করবে মেঘলাকে৷
রাজ আবার মেঘলার সামনে এসে বসে বলে,
— ” কি হলো? আমার কথা কানে যায়নি তোর? আমি প্রশ্ন করছু তো? উত্তর দে? আহানা আর শোভনকে চিনিস কিভাবে তুই? শোভনের সাথে তোর কি সম্পর্ক? কে শোভন? বল? ”
মেঘলা এবারো নিশ্চুপ রাজ আরো হিংস্র হয়ে উঠছে হাতের সামনে যা পাচ্ছে সব ভেঙে ফেলছে৷ রাজের হিংস্রতা দেখে মেঘলার মনে রাজের প্রতি ঘৃণা আর ভয় আরো বারছে৷ একটা মানুষ এমন কি করে হয়?
রাজ এবার রেগে চিৎকার করে বলে,
— ” মেঘ আমি কিছু জিগ্যেস করছি তো? বল শোভন তোর কি হয়? শোভনের সাথে তোর কি সম্পর্ক ? ”
মেঘলা কেঁপে উঠে কিছুক্ষন চুপ থেকে নিজেকে শান্ত করে মিহি কন্ঠে বলে,
— ” শোভন আমার স্বামী, শোভন এর সাথে আমার বিয়ে হয়েছে৷ আমি শোভনকে ভালোবাসি শুনেছেন? হুম আমি শোভনকে ভালোবাসি৷ ”
রাজ নিমেষে শান্ত হয়ে গেলো কিছুক্ষন শান্ত থেকে কথাটা মাথায় ঢুকলে এক ঝটকায় মেঘলার কাছে গিয়ে গলা চেপে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বলে,
— ” মেরে ফেলে দিবো, তুই আমার শুধু আমার আমি না পেলে তোকে আমি মেরে ফেলবো৷ শেষ করে দিবো ওই শোভনকে সব শেষ করে দিবো তোকেও শেষ করে দিবো৷ ”
মেঘলার কষ্টে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে তবুও নিজেকে শান্ত রেখে মিহি হেসে শান্ত কন্ঠে বলে,
— ” তবে মেরেই ফেলো, তাও বলবো আমি ভালোবাসি হুম শোভনকে-ই ভালোবাসি৷ ”
বলেই চোখ বন্ধ করে নিলো শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে একটা সময় হাল ছেড়ে দেয় মেঘলা লুটিয়ে পরে নিচে৷
#প্রণয়স্পর্শী
#Tafsia_Meghla
#পঁয়ত্রিশতম_পর্ব

হসপিটালের করিডরে বসে আছে শোভন পাশেই আহানা বসে আছে অশ্রুসিক্ত নয়নে, নিজের প্রতি ওর নিজের ঘৃণা হচ্ছে৷ একজন বাজে খারাপ মানুষকে ভালোবেসে ছিলো৷ মেঘলা আইসিইউতে আছে মানষিক অবস্থা এতোটাই খারাপ ওর নিজের ও বাঁচার ইচ্ছে নেই তাই চিকিৎসা করেও শরীর এর কন্ডিশন ইম্প্রুভ করতে পারে নি৷
দু’দিন যাবৎ হসপিটালে আছে মেঘলা জ্ঞান এখনো ফিরেনি, সে দিন অনেক খোজা খোজি করে মেঘলার গ্রামের ঠিকানা খুজে মেঘলার গ্রামে যায়৷ এতো ঝামেলার মাঝে কখনো শোভনের মেঘলার গ্রামের ঠিকানাটা জানা হয়নি, পরে মেঘলার আরেকটা ডায়রি আছে সে ডায়রিটার কথা মনে পরতে অনেক খোজা খুজি করে ডাইরিটা বের করে বান্ধবীদের নাম্বার পায় সে নাম্বারে ফোন করার পরই মেঘলার বান্ধবী মেঘলার বাড়ির ঠিকানা দেয়, সেখানে গিয়েই জানতে পারে রাজ মেঘলার বড় চাচার ছেলে৷ কিন্তু সেখানে গিয়েও রাজকে পায় না৷
বাড়িতে এসে আবার সেই ডাইরিটা মেলে বসে শোভন যদি কিছু জানতে পারে তা ভেবে পুরো ডাইরিটা পরে স্থুগ্ধ হয়ে যায় শোভন৷ প্রথম দিকে শোভন মেঘলাকে দোষারোপ করছিলো বিয়ে থেকে পালিয়ে এসেছিলো দেখে খারাপ ভেবে ছিলো মেঘলাকে কিন্তু পরে ব্যাপারটা মানিয়ে নিলেও এখন সবটা পরে পুরো ধারনাই পালটে গিয়েছিলো৷ একটা মেয়েকে কতটা টর্চার করে ছিলো ওরা৷ আর রাজ? রাজের প্রতি রাগটা আরো বেড়ে যায় শোভনের, সে গোডাউন এর কথা পরে শোভন আবার গ্রামে গিয়ে সে গোডাউনে যায় কিন্তু পায় না তখন শোভন একে বারেই ভেঙে পরে ছিলো কোথায় খুজবে মেঘলাকে আর সব যেন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে রাজের প্রতি রাগটা আরো তীব্র হয়ে উঠছে, সে দিন এর পর আরো এক দিন কেটে গিয়ে ছিলো তাও মেঘলার খোজ পাচ্ছিলো না পুলিশরাও বেশ খোজাখুজি করে৷
মানুষিক ভাবে শোভন ভেঙে পরলেও তা কাউকে বুঝতে দেয়নি, ও যেহেতু একজন ডক্টর সে দিক দিয়ে সব দিকেই রাখতে হবে পরের দিন একটা ইমারজেন্সি সার্জারি পরে যায় যার জন্য ইচ্ছে না থাকলেও যেতেই হয় আর সার্জারিটা ঢাকা থেকে একটু দূরে একটা হসপিটালে ছিলো সেখানে গিয়ে সার্জারি শেষ হওয়ার পর অপারেশন থিয়েটার থেকে যখন বের হয় তখন রিসিপশনে রাজকে দেখতে পায় রাজকে দেখে শোভনের রাগ আরো চারা দিয়ে উঠে সেখানেই রাজকে অনেক মারে হঠাৎ আক্রমনে রাজও কিছু করতে পারেনি এতো মারার পরও রাজ মেঘলার কথা কিছুই বলেনি তার একটাই কথা বলবে না সে মেরে ফেললেও৷
এমন মারামারি তে সেখানে প্রায় ভির জমে গিয়েছিলো তখনি নার্স রাজকে এসে বলে,
— ” আপনার পেশেন্ট এর অবস্থা ভালো নয়৷ ”
তখনি শোভনের খটকা লাগে নার্সের সাথে গিয়ে মেঘলাকে ওইরকম অবস্থায় দেখে শোভন স্থুগ্ধ হয়ে গিয়ে ছিলো৷
কি অবস্থা হয়ে গেছে মেয়েটার, নিজেকে শান্ত করে ডক্টরকে জিগ্যেস করার পর জানতে পারে যখন হসপিটালে মেঘলাকে আনে হাত পা অনেক ঠান্ডা ছিলো তারা ভেবে ছিলো হয়তো দূর্বলতার কারনে পরে গলার কাছে হাতের ছাপ পেয়ে বুঝতে পারে কেউ হয়তো কেউ গলা টিপে ধরে ছিলো৷
সে কথা শুনে শোভনের আরো রাগ উঠে যায় রাজকে গিয়ে আরেক ধাপ মারে, তখনি সেখানে আহানা আসে আহানা জানতো শোভন এখানে আছে ওর মনের অবস্থা ভালো না আবার এতো দূর এসেছে সার্জারীর জন্য তাই আহানাও এসেছিলো শোভন ঠিক আছে কি না দেখতে৷ রাজকে ওভাবে পরে থাকতে দেখে ভিতরটা কেঁপে উঠেছিলো আহানার, কি করবে? ভালো তো বাসে? যতই খারাপ হোক একটু তো কষ্ট লাগবেই৷ শোভনকে শান্ত করে আহানা শক্ত হয়ে নিজ থেকেই পুলিশকে ফোন করে, কিন্তু শোভনের রাগ কমেনি ও আরো শাস্তি দিতে চায় রাজকে নিজের হাতে কিন্তু এখন ব্যাপারটা এখানেই রেখে নিজেকে শান্ত রেখে নিজের হসপিটালে মেঘলাকে ট্রান্সফার করে৷
ভালোবাসার মানুষের এমন অবস্থা দেখলে কেউ ঠিক থাকতে পারে না শোভন এর ভিতর থেকে পুরো পুরি ভেঙে পরেছে তাও শরীর এর দিক দিয়ে শক্ত থেকে সব কিছু করছে৷ এতো চিকিৎসার পরেও কোনো ইম্প্রুভ না হওয়ায় মনরোগ বিশেষজ্ঞ দেখালে তিনি বলেন,
মেঘলা মানুষিক ভাবে ভেঙে পরেছে তার মনে আর বাঁচার আগ্রহ নেই৷ তা শুনে শোভন শান্ত হয়ে যায় মেঘলার প্রতি অভিমান জ্বমে, ওই রাজের জন্য ও বাঁচতে চায় না? ও কি শোভনের কথা ভুলে গেছে? ও কি জানে না কেউ যে ওকে পাগলের মত ভালোবাসে পাগলের মত চায়? মেঘলা সুস্থ হলে বোঝা পরা করবে শোভন৷
পাশে আহানা বসে আছে সে দিকে শোভন ঘুরে থম থমে কন্ঠে বলে,
— ” রাগ করেছিস আমার উপর আহান? ”
আহানা ব্রু কুচকে বলে,
— ” কেন? ”
শোভন বলে,
— ” আমি রাজ কে,,,,”
এইটুকু বলতেই আহানা শোভনকে থামিয়ে দেয় চোখ মুছে ভাই এর দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য হেসে বলে,
— ” তোর কি মনে হয় ওই খারাপ লোকটার জন্য তোর সাথে রাগ করবো? হুম ভালোবাসি কিন্তু ওর প্রতি এখন আমার আর কোনো মায়া নেই ভাই, আমি ওই খুনিটাকে আর চাই না৷ ওর শাস্তি ও পেয়েছে, আমি ভুলতে চাই ভাই ওই খুনিটাকে আমি ভুলতে চাই৷ ”
বলে উঠে এক প্রকার দৌড়ে বেরিয়ে যায় আহানা, সে তার অবাধ্য বেহায়া চোখের পানি গুলো আড়াল করতে চায় আর কাউকে দেখাতে চায় না৷ ভুল মানুষকে ভালোবেসেছে ভুল মানুষটাকে চেয়েছে সব সময়৷ আহানার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে শোভন দীর্ঘ শ্বাস ফেলে, রাজের প্রতি রাগটা আরো গাঢ় হচ্ছে শোভন শাস্তি দিবে রাজকে কঠিন শাস্তি৷

আজকের দিনটাও কেটে যায়, মেঘলার একি অবস্থা সারাক্ষন অক্সিজেন দেয়াই থাকে৷
গলা চেপে ধরায় অনেক ক্ষত তৈরি হয়েছিলো আচর লেগে ছিলে গিয়েছিল সেখানে হাত দিয়ে স্পর্শ করে ভালোবাসা পরশ একে দিলো শোভন৷
তিন দিন যাবৎ হসপিটালেই আছে মেঘলার সব কিছু ও নিজেই করে নার্স ও ঢুকতে দেয় না৷
পাশে একটা চেয়ারে বসে ক্যানেল লাগানো হাতটা আলতোভাবে ধরে বলে,
— ” খুব ভালো লাগছে তোমার আমাকে কষ্ট দিয়ে? হুম ভালো তো লাগবেই তুমি তো চাইতে আমি কষ্ট পাই তোমাকে কষ্ট দিয়েছি কি না? তাই রিভেঞ্জ নিচ্ছো? শুনছো মেয়ে ভালো নেই হুম আমি ভালো নেই আমার যে তোমাকে চাই খুব করে চাই আমি ঠিক মতো নিশ্বাস নিতে পারি না আমার যে কষ্ট হচ্ছে তুমি কি বুঝতে পারছো? না বুঝবেই বা কিভাবে তুমি তো আমাকে কষ্টে দেখে আনন্দ পাচ্ছো পৈচাশিক আনন্দ তাই না? শুনে রাখো মেয়ে তোমাকে ভালো হতে হবে নিজের জন্য নয় আমার জন্য আমার তোমাকে প্রয়োজন, আমি ভালো থাকার জন্য আমার তোমাকে প্রয়োজন৷ তোমার কথা না শুনে আমি থাকি কি করে বলো তো? যে হাসির মায়ায় আমাকে ফেলেছিলে সে হাসি না দেখে আমি থাকি কি করে বলো তো? হুট হাট কাজের ফাকে তোমার বোকা বোকা কথা না শুনে আমি থাকতে পারছি না যে৷ আমাকে পোড়াচ্ছো তো? এ শাস্তি কতটা ভয়ংকর জানো তুমি? তোমায় আমি শ্বাস্তি দিবো, কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি৷ ”

চলবে ইনশাআল্লাহ,,,,
চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here