প্রণয়স্পর্শী পর্ব ৩২+৩৩

#প্রণয়স্পর্শী
#Tafsia_Meghla
#বত্রিশতম_পর্ব

অনাকাঙ্ক্ষিত যায়গায় অনাকাঙ্ক্ষিত মানুষকে দেখলে মানুষ যেমন চমকে যায় মেঘলার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে হঠাৎ অতীত এর সেই অনাকাঙ্ক্ষিত মানুষটিকে দেখে মেঘলা নিজেকে সামলে রাখতে পারেনি অচেতন হয়ে পরেছে৷
মেঘলার এহেন অবস্থা দেখে অবাক না হয়ে পারলো না আহানা, রাজকে দেখে এমন অচেতন হয়ে পরলো কেন?
আহানা আর এখানে না দাঁড়িয়ে গাড়ি থেকে পানি আনতে যায়, পানি নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে দরজা লাগিয়ে যা দেখলো তা দেখে পুরোই অবাক রাজ মেঘলাকে নিজের গাড়িতে উঠাচ্ছে কোলে করে৷ রাজে হাবভাব ভালো ঠেকছে না আহানার কাছে রাজ কি মেঘলা কে চিনে?
আহানা তারাতারি সেখানে গিয়ে রাজের বাহু চেপে চেচিয়ে বলে,
— ” কি করছিস রাজ?
ওকে তোর গাড়িতে উঠাচ্ছিস কেন? ”
রাজ আহানার হাত ঝাড়া দিয়ে ফেলে চেচিয়ে বলে,
— ” ও এতোদিন তোর কাছে ছিলো না? ইচ্ছে করে তুই ওকে লুকিয়ে রেখে ছিলি জানতি সব তুই? ”
রাজের কথায় অবাক হলো আহানা, মেঘলাকে লুকিয়ে রাখতে যাবে কেন? আর ইচ্ছে করে মানে কি?
আহানা বলে,
— ” কি বলছিস তুই? ওকে তুই চিনিস? ”
রাজ চেচিয়ে বলে,
— ” ও আমার মেঘ যার জন্য পাগল এই রাজ যাকে পেতে নিজেকে ঠিক করার জন্য লন্ডন গিয়েছিলাম কিন্তু ও পালিয়েছিলো বড্ড ভুল করেছে ওকেই খুজতে ঢাকায় আসা আমার৷ পাখি অবশেষে আমার হাতের মুঠোয় আর আমি কি না পাখিকে ছেড়ে দিবো? ”
রাজের কথা শুনে আরেক দফা অবাক হয় আহানা, সাথে ভয় ও করছে আহানা জানে রাজ কেমন এ ও জানে ওর ভাইও কেমন৷ এই সত্যিটার মুখোমুখি হয়ে নিজেকেও ঠিক রাখতে পারছে না আহানা৷ কিন্তু এটা ঠিকি বুঝতে পারছে বড় কোনো ঝড় আসবে৷
আহানা নিজেকে ঠিক রেখে কাঁপা কাঁপা গলায় বলছে,
— ” ক কি বলছিস ত তুই? ওকে নিয়ে যাস না তাহলে বড় ভুল করে ফেলবি৷ ”
আহানার কথা শুনে হিংস্র দৃষ্টিতে আহানার দিকে তাকায় রাজ৷ আহানা কেঁপে উঠে, এ কোন রাজকে দেখছে ও? একজন ভুল মানুষকে প্রথম থেকে ভালোবেসে আসছে ও৷
আহানাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে নিজে গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট করে আহানার সামনে দিয়ে মেঘলাকে নিয়ে চলে যায় রাজ৷

রাত সারে এগারোটা বাজে৷ বৈঠকখানায় বড় সোফাটায় মাথা নিচু করে বসে আছে শোভন হাত দিয়ে টপ টপ করে রক্ত ঝড়ছে বাড়ির সবাই ভীত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শোভনের মুখোমুখি বসে আছে আহানা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে৷ ও বড় হলেও আজ ছোট ভাইকে ভয় করছে ওর সন্ধ্যায় শোভনকে সব জানাতেই সব জায়গায় খোজ নেয় না পেয়ে সেই রাগ আহানার উপর ঝাড়ে৷
সব কিছু ওর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে, এই রাজকে শোভন কখনই পছন্দ করতো না সেই রাজকেই ওর বড় বোন ভালোবাসে আবার সেই রাজই মেঘলাকে নিয়ে গেছে রাজের ব্যাপারে এখনো খোলাসা হতে পারেনি শোভন৷
পকেট থেকে ফোন বের করে কাউকে ফোন দেয় শোভন না পেয়ে ফোনটা ছুড়ে মাটিতে ফেলে আহানাকে বলে,
— ” বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে আমার থেকে পার্মিশন নেওয়ার প্রয়োজন মনে করিসনি? ”
শোভনের শান্ত কন্ঠে আরো বেশি ভয় পায় আহানা তারপর আমতা আমতা করে বলে,
— ” ভাই আমি যেতে চাইনি মেঘলাই জোরাজোরি করেছে তাই গিয়েছিলাম৷ ”
শোভন আবারো বলে,
— ” ও না হয় আমাকে জানায়নি কিন্তু তুই তো পারতি আমাকে জানাতে?”
আহানা উত্তর দিলো না৷ আহানার উত্তর না পেয়ে শোভন আরো রেগে চেচিয়ে বলে,
— ” কি পারতি না বল? ”
আহানা কেঁপে উঠলো শোভনের এমন চিৎকারেও এমন একটা কিছু নিয়েই ভয় পাচ্ছিলো শোভন কখনই রাজকে পছন্দ করে না, না জানি সামনে পেলে খুনই করে দেয়৷ রাজের রাগ সম্পর্কেও জানে আহানা রাজ এর স্বার্থে আঘাত লাগলে কাউকে ছাড়ে না সামনে কি হবে তা ভবে আহানার শরীর শিউরে উঠছে৷
আহানা নিজেকে শান্ত করে আমতা আমতা করে বলে,
— ” ভাই প্লিজ শান্ত হ, পেয়ে যাবি মেঘলাকে৷ ”
শোভন আরো দ্বিগুণ চেচিয়ে বলে,
— ” শান্ত হওয়ার কাজ করেছিস তোরা? আর কি বললি পেয়ে যাবো৷ হুম পাবোই তো সথে ওই রাজকেও দেখে নিবো৷ ”
বলে বড় বড় পা ফেলে বেড়িয়ে যায়, পিছন থেকে ওর মা ডাকলেও সারা দেয় না৷


অন্ধকার ঘড়ে ফ্লোরে পরে আছে মেঘলা হাত, পা, মাথা থেকে রক্ত পরছে হাত প্রতিটা স্থান কেটে কেটে গেছে৷ কেউ যেমন নির্মম ভাবে চাবুক চালিয়েছে এমন অবস্থা হাত পা বাধা কিছুক্ষন পর পর ফুপিয়ে কেঁদে উঠছে৷
দরজার আওয়াজ পেয়ে গুটিশুটি হয়ে রইলো, রাজ এসেছে এক হাতে গরম দুধ এর গ্লাস আরেক হাতে ফার্স্ট এইড বক্স রাজকে দেখে আরো ফুপিয়ে উঠলো৷
রাজ বাকা হাসলো তা দেখে৷ একপা দু পা করে মেঘলার সামনে এসে টেবিল এর উপর দুধ আর ফার্স্ট এইড বক্সটা রেখে মেঘলার পাশ ঘেষে বসে বলে,
— ” ভয় পাচ্ছিস মেঘ? কষ্ট হচ্ছে? ”
মেঘলা উত্তর দিলো না দৃষ্টি সরিয়ে অন্য দিকে তাকালো তা দেখে রাজ আবারো ঠোঁট এলিয়ে হেসে বলে,
— ” দৃষ্টি সরালি যে? ভয় পাচ্ছিস? এ ভয়টা পালানোর সময় মনে ছিলো না? ”
বলেই মেঘলার গাল চেপে ধরলো মেঘলার চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝড়ছে কিন্তু সে দিকে রাজের খেয়াল কই?
রাজ শান্ত কন্ঠে বলে,
— ” পালিয়ে ছিলি কেন? ”
মেঘলা চুপ করে রইলো রাজ রেগে আবার বলে,
— ” বল কাউকে না জানিয়ে পালিয়ে ছিলি কেন? ”
মেঘলা মুখ ঘুড়িয়ে বলে,
— ” আমাকে যেতে দাও, আর আটকে রেখে লাভ ও নেই যার আসার সে সময় মত আসবে তখন পালানোরও কুল পাবে না৷ ”
ক্রুদ্ধ কন্ঠে বললো মেঘলা আর তা শুনে রাজ আরো রেগে গেলো৷ মেঘলার সামনে গিয়ে গালে ঠাস ঠাস করে থাপ্পড় বসিয়ে বলে,
— ” বেশি বার বেরেছে না তোর? তোকে আমার চাই যে এর মধ্যে যে আসবে দরকার পরে তাকে শেষ করে দিবো আমি তবুও তোকেই আমার চাই৷ ”
মেঘলা এবার শব্দ করে কেঁদেই দিলো, কেন ওর সাথে এমন হয়? সারাটা জীবন এমন কষ্টে কষ্টেই কাটাতে হচ্ছে সুখ এসে ধরা দিলেও তা ক্ষনিকের সুখ৷ আবার সেই আগের মত হয়ে যাবে না তো দিন গুলো? শোভনকে কি আর দেখতে পাবে না? শোভন এর সাথে আর কথা হবে না?
শোভন কি আসবে না?
অতীত এর কথা মনে পরতেই চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে মেঘলার সে আর ওই বাড়তে ফিরতে চায় না মা মারা যাওয়ার পর থেকে কখনো ও বাড়িতে মেঘলা ভালো ছিলো না৷ মেঘলার মা মারা যাওয়ার দু-দিন পড়ই বাবা নিরুদ্দেশ হয়ে যায়, অনেক খোজাখুজি করেও ওর বাবাকে পাওয়া যায় নি হয়তো নিজ থেকেই নিরুদ্দেশ হয়েছে তাই পাওয়া যায়নি?
#প্রণয়স্পর্শী
#Tafsia_Meghla
#তেত্রিশতম_পর্ব

অতীত,,,,,,
যার জীবন প্রথম থেকেই বিষাদময় তার হয়তো পুরো জীবনটা-ই বিষাক্ত কাটে, তেমন মেঘলারও ছোট থেকে বড় চাচার বাড়িতে বড় হওয়া৷ সেটা নিজের বাড়ি হলেও তেমন ভাবে সম্মান পায়নি, বাড়িতে সব সময় চাচির মার খেতেই হতো চাচা দেখেও না দেখার ভান করে থাকতো৷
রাজ তাদেরই ছেলে ছোট থেকেই রাজ মেঘলার প্রতি আকৃষ্ট কখনো তেমন ভাবে সবার সাথে মিশতে দেয়নি বাইরে কারো সাথে কথা বললে বাড়িতে এসে অত্যাচার করতো৷ মেঘলার চাচির ধারনা ছিলো মেঘলা ইচ্ছা করে তার ছেলেকে নিজের বসে রাখছে কিন্তু মেঘলা কখনই রাজকে পছন্দ করতো না৷
বড় চাচার ছেলে হলেও রাজ বাড়িতে থাকতো না হোস্টেল এ পড়া শোনা করেছে রাজ, মেঘলার মা মারা যাওয়ার পর এসেছিলো রাজ তখনই মেঘলাকে দেখে মনে ধরে হোস্টেলে থাকলেও প্রতিদিন মেঘলার খোজ নিতো রাজ, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনুভূতি এক সময় ভয়ংকর আকার ধারন করে যত্ন গুলো ভয়ংকর যত্নে পরিনত হয়৷
সে দিন ছিলো রাজের বড় বোনের বিয়ের গায়ে হলুদ সবার সাথে মিলিয়ে লাল জামদানী পরে সেজেছিলো ৷ ব্যাস্ততার কারনে হলুদের দিন রাতে রাজ বাড়িতে আসে বাড়িতে এসেই চোখ মেঘলাকে খোজে৷ প্রায় দু ঘন্টা খুজেও মেঘলাকে পায় না রাজ মাথায় রক্ত উঠে যায় রাজ এর আগেই ফোন করে বলে দিয়েছিলো বাড়িতে এলে যেন ওকে খুজতে না হয়৷ এ মেয়েকে পেলে রাজ আজ মেরেই ফেলবে তা ভেবে রেডি হয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে মায়ের কাছে গিয়ে থম থমে গলায় বলে,
— ” মা মেঘ কই? ”
ছেলের মুখে মেঘলার কথা শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে রাজের মা৷ রেগে গম্ভীরমুখে বলে,
— ” আমি কি করে বলবো দেখ গিয়ে কোথায় কোন ছেলের সাথে বসে আছে, ওই মেয়ের তো আবার ছেলে দেখলেই গায়ে পরে যেতে ইচ্ছে করে৷ ”
বলেই ছেলের সামনে থেকে রাগে গজগজ করতে করতে চলে যায়৷ মায়ের কথা শুনে রাগ আরো বেড়ে যায়,হয়তো ওর মা খারাপ কিছু দেখেছে নয়তো বাজে কথা বলবে কেন? প্রায় অনেকক্ষন খুজে জানতে পারে ছেলেদের বাড়িতে গেছে সবার সাথে৷ রাজ রাগে নিজের রুমে গিয়ে বসে, রাত দশটায় মেঘলা সবার সাথে আসে ছেলের বাড়ি থেকে উঠনে আওয়াজ পেয়ে রাজ যেতেই দেখে একটা ছেলের সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছে তা দেখে রাজ আরো রেগে যায়৷ সেখানে গিয়ে মেঘলার হাত ধরে নিজের রুমে নিয়ে আসে৷ ভেবেছিলো কিছু বলবে না কিন্তু ওই ছেলের সাথে দেখে মাথা গরম হয়ে যায়৷
রাগে থাপ্পড় মেরে বলে,
— ” কি করছিলি ওই ছেলের সাথে? ছেলে দেখলে নিজেকে ঠিক রাখতে পারিস না? এতোই যখন ছেলেদের সাথে থাকতে ইচ্ছে করে তাহলে আমাকেই বলতি৷ ”
রাজের কথায় মেঘলা কেঁদে উঠে, ওর চাচি তো পাঠিয়েছিলো ওই ছেলেকে ডাকতে নয়তো মেঘলা কখনোই কোনো ছেলের সামনে যায় না৷ কিন্তু সে কথা আর মুখে বলতে পারলো না স্টিল এর স্কেল নিয়ে সজোরে মারতে থাকে মেঘলাকে একটা সময় মেঘলা নিস্তেজ হয়ে নিচেই পরে থাকে৷

অসুস্থ হয়ে তিন দিন বিছানায় পরে ছিলো তখন মেঘলা, সেবা করার মতো ও কেউ ছিলো না৷ বিয়েতেও বের হয়নি আর রাজকে দেখলেই ভয়ে কুকড়ে উঠে মেঘলা৷ ঘর থেকেও খুব একটা বের হয়না এখন রাজ আছে তাই ওর চাচি ওকে কাজের জন্য ডাকে না৷ রাজ থাকলে মেঘলার চাচি মেঘলাকে কাজ দিতে পারে না, বারান্দার গ্রিলে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে মেঘলা ওর কিছুই ভালো লাগছে না কলেজেও যায় না কিছু দিন যাবৎ ভাবছে কাল থেকেই যাবে৷ হঠাৎ দরজার আওয়াজে ঘোর ভাঙে মেঘলার রাজ ওর রুমে এসেছে রাজকে দেখে ভয়ে মাথা নিচু করে রাখে রাজ মেঘলার সামনে এসে বাহু চেপে ধরে পাশে চেয়ারে বসিয়ে নিজে ওর সামনে হাটু গেরে বসে দু হাত দিয়ে হাত চেপে ধরে বলে,
— ” রাগ করে আছিস মেঘ? আম সরি আমার মাথা ঠিক ছিলো না তুই তো জানিস আমি তোকে কারো সাথে সহ্য করতে পারি না তাই মাথাটা গরম হয়ে গিয়েছিলো৷ আমাকে মাফ করে দে প্লিজ৷ ”
মেঘলা কিছু বললো না৷ রাজ আবার বলে,
— ” কথা বলবি না? আমাকে মাফ করা যায় না? ”
মেঘলা তাচ্ছিল্য হেসে বলে,
— ” আমি কে? আমার থেকে মাফ চাওয়া প্রয়োজন নেই৷ ভালো লাগছে না একা থাকতে দাও আমায় ভাইয়া৷ ”
বলে রাজকে এরিয়ে রুমের দিকে চলে যায়৷ রাজের রাগ হয় মেঘলার এমন ব্যবহারে রেগে গিয়ে মেঘলার বাহু চেপে ধরে বলে,
— ” মাফ চাইতে এসেছি বলে ইগনোর করছিস? সাহস দিন দিন বাড়ছে৷ ”
মেঘলা জানে এমন কিছুই হবে এই ছেলে এমনই মাফ চাইবে তার কিছুক্ষন পরই আবার এমন আচরন করবে৷ কয়েক ফোটা বেহায়া পানি গড়িয়ে পরলো তা দেখে রাজ মেঘলাকে ছেড়ে গিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়৷
পরের দিন সকালে উঠে সময় মতো কলেজের জন্য রেডি হচ্ছে তখনই রুমে আসে রাজ৷ উরনা ছিলো না মেঘলার শরীরে যার কারনে মেঘলা ইতস্ততায় পরে যায় কিন্তু রাজ স্বাভাবিক ভাবেই মেঘলার সামনে এসে বলে,
— ” এতো ফরমালিটিস এর দরকার নেই আমিই, আর আজ তোকে আনতে যেতে একটু দেরি হতে পারে বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকিস৷ ”
বলে রুম থেকে বেরিয়ে যায়৷
মেঘলা রেডি হয়ে ব্যাগ গুছিয়ে বাইরে এসে দেখে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাজ তা দেখে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো মেঘলা এ ছেলে যতদিন এখানে আছে আতংকে আতংকেই থাকতে হবে৷
মেঘলা বাইকে উঠে বসতেই বাইক স্টার্ট দেয় রাজ৷ কলেজের সামনে আসতেই মহা বিপদে পরে মেঘলা কলেজ গেইট এর সামনেই দাঁড়িয়ে আছে মেঘলার বান্ধবি ফিহার বয়ফ্রেন্ড ফিহার সাথে ঝগড়া হওয়ায় মেঘলার সাথে সাথে ফিহাকে নিয়ে কথা বলতে এসেছে মেঘলা ছেলেটাকে এরিয়ে গিয়ে কলেজ গেইট দিয়ে ঢুকবে ঠিক তখনি পিছন থেকে ছেলেটা মেঘলার হাত আটকে ধরে বলে,
— ” তোমার সাথে আমার কথা আছে মেঘলা৷ ”
মেঘলা সাথে সাথেই পিছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখে রাজের চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে কিন্তু কিছু বলছে না৷ মেঘলা ভয় পেয়ে আমতা আমতা করে বলে,
— ” ভাইয়া আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে পরে কথা বলি৷ ”
বলে ভিতরে যেতে নিলেও ছেলেটা আবার ডাকে মেঘলা ছেলেটার ডাক উপেক্ষা করে কলেজে ঢুকে যায়৷ রাজ কিছু বলছে না দেখে মেঘলা আরো ভয় মেয়ে যায়, এ ছেলে শান্ত আছে মানে বড় কিছু করবে না তো?
সে দিন রাজ মেঘলাকে কিছু বলেনি বাড়িতে যাওয়ার পর ও কিছু বলেনি এমন কি কথাও বলেনি কোনো৷
গভীর রাত মেঘলা বারান্দায় বসে বই পরছিলো গ্রাম অঞ্চলে রাত আটটা বাজতেই গভীর রাত মনে হয় আর এখন তো একটা বাজে কেউ জেগে নেই বই পরতে মগ্ন ছিলো তখন হঠাৎ বাইরে আওয়াজ পেয়ে ধ্যান ভাঙে মেঘলার৷ রাজ বের হলো কোথায় একটা যাচ্ছে মেঘলার কি জানি কি মনে হলো ও নিজেও আস্তে করে নিজের থেকে বের হয়ে বাইরে বের হয়ে রাজের পিছু পিছু ছুটলো৷
ওদের গোডাউনে এসেছে রাজকে এতো রাতে এখানে ঢুকতে দেখে অবাক হলো মেঘলা৷ এ ছেলে এতো রাতে অবাক হলো, রাজ অনেক আগেই ভিতরে ঢুকেছে তাই মেঘলা ঢুকে রাজকে দেখতে পায় না৷ আশে পাশে আস্তে আস্তে হেটে রাজকে খুজছে মেঘলা হঠাৎ কারো চিৎকার এর আওয়াজ পেয়ে কেঁপে উঠলো মেঘলা এতো রাতে এই বন্ধ পরিত্যক্ত গোডাউনে কে চিৎকার করলো? সে আওয়াজ অনুসরন করে মেঘলা যা দেখলো তা দেখে নিজেও চিৎকার দিয়ে উঠলো৷
রাজ হলুদের দিন এর সেই ছেলে আর ফিহার বয়ফ্রেন্ডকে বাজে ভাবে মারছে৷ চেনা কন্ঠ শুনে পিছনে তাকালো রাজ৷ পিছনে ফিরে মেঘলাকে দেখে অবাক হলো না চেহারা পরিবর্তন ও হলো না রাজ যেন এটাই চেয়েছিলো৷
রাজ বাকা হেসে মেঘলার সামনে এসে বলে,
— ” বাহহ তাহলে তোর কাছের মানুষের মৃত্যু দেখতে তুই ও এসেছিস? আমি তো এটাই চেয়েছিলাম তাই আজ তোকে শাস্তি দেয়নি৷ প্রতিদিন মেরে কেটে তোকে কষ্ট দিলে আমিও কষ্ট পাই তাই ভাবলাম আজ না হয় শাস্তির ধরনটা একটু পাল্টাই তাই তো বাড়ি থেকে এতো দূর হেটে আসলাম আমি জানি তুই আমার পিছু নিবি৷ তো শাস্তি শুরু করা যাক?”
বলেই পৈচাশিক হেসে অচেতন হয়ে পরে থাকা একটা ছেলের পেটে বড় একটা ধাড়ালো ছুড়ি ঢুকিয়ে দিলো৷ মেঘলা আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলো না চোখের সামনে এতো বাজে ভাবে খুন হওয়া কেউ দেখে ঠিক থাকতে পারবে না৷ লুটিয়ে পরলো মেঘলা নিচে তা দেখে রাজ হাসলো বাকা হাসি সে যেন আনন্দ পাচ্ছে মেঘলার কষ্টে৷ মহা আনন্দ৷৷

চলবে,

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here