প্রণয়স্পর্শী পর্ব ৩৬+৩৭

#প্রণয়স্পর্শী
#Tafsia_Meghla
#ছত্রিশতম_পর্ব

প্রায় তিন দিন পর চোখ খুললো মেঘলা, মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে চোখের নিচ কালো হয়ে গেছে চোখের সামনে শোভনকে দেখে ঝাপটে পরে ওর উপর সব দুঃখ কষ্ট নিংড়ে দেয় শোভনের বক্ষপিঞ্জিরায়৷ ভেবে ছিলো আর শোভনকে দেখতেই পাবে না৷ রাজ ওকে মুক্তই দিবে না, চোখ খুলে ভালোবাসার মানুষটাকে চোখের সামনে দেখে আর ঠিক থাকতে পারেনি৷ কিন্তু সব কিছুর মাঝেও কেমন গুমোট পরিস্থিতি রয়েই গেলো শোভন শক্ত হয়ে বসে আছে, বদ রাগী ডাক্তারটা তাহলে সব জেনে মেঘলাকে মেনে নিতে পারছে না? তাই এমন ভাবে আছে? শোভন তাহলে ওকে ভুল বুঝছে? বুকে তীব্র ব্যাথা হলো মেঘলার বুক থেকে মুখ সরিয়ে শোভনের মুখের দিকে তাকিয়ে হাব ভাব বুঝার চেষ্টা করে আবার শোভনের বুকে মুখ গুজে ইচ্ছে মতো কাঁদলো৷ ভুল ভাল চিন্তা মেঘলার মাথায় ঘুরছে৷
শোভন কি মেঘলাকে ছেড়ে দিবে? আর ভালোবাসবে না ওকে ওর ডাক্তার সাহেব? তা ভেবে আবারো কাঁদলো কাঁদতে কাঁদতে শোভনের এপ্রোনটা ভিজে গেছে বুকের দিকে শোভন বিরক্ত নিয়ে একবার ওর বুকের দিকে তাকালো৷ এই মেয়ের জন্য কি দু-দন্ড অভিমান করেও থাকতে পারবে না?
এভাবে কাঁদলে শোভন নিজেকে ঠিক রাখতে পারবে?
তবুও শোভন নিজের সিদ্ধান্তে অটল রইলো রাজের জন্য ও বাঁচতে চাইছিলো না? না কথা বলবেই না এই মেয়ের সাথে৷
শোভনের বুক খামছে ধরে কান্না সিক্ত কন্ঠে বলে,
— ” এই ডাক্তার কথা বলছেন না কেন? আমি সুস্থ হয়েছি দেখে আপনি খুশি নন? নাকি সবটা জেনে গেছেন তাই আমাকে ছেড়ে দিবেন? বিশ্বাস করেন আমি রাজকে কখনই পছন্দ করতাম না৷ ”
শোভন বিরবির করে বলে,
— ” সাধে কি এই মেয়েকে আমি স্টুপিড বলি? রাগ করে আছি কি নিয়ে আর বলছে কিসের কথা৷ স্টুপিড কোথাকার৷ ❞
রাজের উত্তর না পেয়ে কান্নার পরিমান আরো বেরে যায় মেঘলার মেঘলা আরো জোরে খামছে ধরে বলে,
— ” এই বদ রাগী ডাক্তার চুপ করে আছিস কেন? কি ভাবছিস আমাকে ছেড়ে দিবি? আমাকে আর ভালোবাসবি না? শুনে রাখ কান খুলে আমাকে ছেড়ে দিলেও আমি যাবো না তুই আমার৷ ”
শোভন অবাক হয় এই মেয়ে ছেড়ে দেওয়া পর্যন্তও চলে গেছে আবার তুই করে বলছে? চোখ খুলেই শরীরের জোর বেরে গেছে বাহ কি উন্নতি৷
শোভন আবার বিরবির করে বলে,
— ” এই মেয়ের উপর দেখছি অভিমান করাও যাবে না, কি বাচ্চামো শুরু করেছে স্টুপিড মেয়ে৷ ”
শোভনের চুপ করে থাকায় মেঘলার কান্নার পরিমান বেড়েই যাচ্ছে এক সময় হিচকি উঠে যায়৷ এখন এই মেয়েকে চুপ না করালে আরো অসুস্থ হয়ে পরবে তা ভেবে পকেট থেকে ফোন করে আহানাকে ফোন করে বলে,
— ” আহান তুই কোথায়? আসতে পারবি একটু হসপিটালে? মেঘলার জ্ঞান ফিরেছে৷ ”
আহানা হসপিটালের বাইরেই ছিলো তাই আসতে দেরি হলো না৷ শোভন নিজের বুক থেকে মেঘলাকে সরিয়ে ঠিক করে বসিয়ে আহানাকে বলে,
— ” আহান ওকে বলে দে ভুলভাল চিন্তা মাথা থেকে সরাতে ও আমার বউ ওকে আমি ছাড়তে যাবো কেন? ওর মত আমায় ভাবছে নাকি? যে অন্যের জন্য নিজের মানুষকে কষ্ট দিবো? ”
বলেই মেঘলার প্রেসার চেক করে ইনজেকশন দিয়ে বড় বড় পায়ে বেরিয়ে যায়৷ শোভন যেতেই মেঘলাকে আহানা সবটা বলে তারপর মেঘলা বুঝতে পারে রাগী ডাক্তারটা ওর উপর অভিমান করে আছে৷ আর এ অভিমান ভাঙ্গতে যে মেঘলার অনেক কাঠ কয়লা খোয়াতে হবে তা ভেবে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো৷


সাত দিন পর মেঘলাকে বাড়িতে আনা হলো এখন সুস্থ মেঘলা, শোভনের অভিমান এখনো ভাঙেনি এতোদিন অনেক চেষ্টা করেছে মেঘলা শোভনের সাথে কথা বলার কিন্তু শোভনই কথা বলেনি৷ আজও রিলিজ হওয়ার পর মেঘলার সাথে শোভন আসেনি আহানা আর শোভনের মা মেঘলাকে বাড়িতে নিয়ে এসেছে৷
ফ্রেশ হয়ে সবার সাথে ড্রইং রুমে বসেছে মেঘলা, আজও আহানা ওর ফ্লাটে ফিরতে চেয়ে ছিলো শোভনের মা জোর করে এখানেই রেখেছে৷ সবাই যখন খোশমেজাজে খোশগল্পে মগ্ন তখন শোভন হসপিটাল থেকে ফিরলো, বৈঠক খানার গল্পের দিকে নজর না দিয়ে নিজের মত করে উপরে চলে যায়৷
শোভন যেতেই আহানা ইশারা করে বলে,
— ” আয় ঘরে দিয়ে আসি এখন একা কথা বলে দেখ৷ ”
মেঘলা হতাশ হয়ে বলে,
— ” না আপু এখন আমি ভুলেও যাবো না দেখে মনে হলো আবহাওয়া গরম এখন গেলে হয়তো কানের নিচে দু একটা পরতেও পারে৷ ”
আহানাও আশাহত হয়ে বসে রইলো কিছুক্ষন পর ফোন স্ক্রল করতে করতে শোভন নিচে নেমে এলো৷ বড় সোফাটায় মেঘলা একা বসেছিলো দূরত্ব বজায় রেখে সেখানে বসে৷
তখনি আহানা থমথমে গলাই বলে,
— ” রাজ জেল থেকে পালিয়েছে ভাই৷ ”
আহানার কথার প্রতিত্তর দিলো না শোভন চেহারার ভাব ভঙ্গিও পাল্টালো না মেঘলা এই কথাটা শুনেই ঘাবড়ে যায় আহানা মেঘলার হাত চেপে ধরে৷ কিন্তু আহানা আবার শোভনের নিকে আড়ষ্ট হয়ে তাকালো অদ্ভুত তো শোভন এমন করে বসে আছে কেন যেন কিছুই হয় নি? রাজ পালিয়েছে শুনেও শোভন স্বাভাবিক ভাবে বসে আছে দেখে অবাক হলো আহানা৷ কি হলো আবার এই ছেলের? শোভনের মা কিছু বলবে এর আগে শোভন স্বাভাবিক ভাবে ফোনের দিকে চোখ রেখে মা কে বলে,
— ” দু দিনের মধ্যে পারিবারিক নিয়মে বিয়ের ব্যাবস্থা করো মা৷ ”
বলেই ফোনটা পকেটে রেখে মায়ের দিকে তাকালো৷ শোভনের এমন ঠোঁট কাটা কথা বার্তা শুনে সবার চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম৷ এটা শোভন তো নাকি অন্য কেউ তা ভেবে আহানা অবাক৷ শোভনের মা তো বিরবির করে বললো ও,
— ” আমার ছেলেটা এমন নির্লজ্জ বিয়ে পাগল হলো কবে থেকে৷ ”
মেঘলা শোভনের কথায় অবাক না হলেও বেশ লজ্জায় পরে যায়, ওর এমন আচরনে ও অবগত কিন্তু সকলের সামনে এমন দু দিকের মাঝে নিজের বিয়ের কথা নিজের মুখে বলছে এ ছেলে যে লজ্জায় মেঘলার মাটির নিচে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছে৷
সবার এমন বিস্ময় চেহারা দেখে শোভন বলে,
— ” কি হলো? সবাই এমন অবাক কেন? আমি কি চমকানোর মতো কিছু বলেছি? ”
শোভনের কথায় সবাই স্বাভাবিক হয়ে বসলো শোভনের বাবা গলা খাকারি গিয়ে বলে,
— ” দু দিনের মধ্যে কি করে সম্ভব? এ বিয়েটা তো দিচ্ছি শুধু সামাজিক নিয়মের জন্য এমনি তো তোমাদের বিয়ে হয়ে গেছে এতে আস্তে ধীরে করলে আমার মনে হয় ব্যাপার টা ভালো হবে৷ ”
শোভন বলে,
— ” দু দিনের মধ্যে বলেছি যেহেতু দু দিনের মধ্যেই, তাছাড়া এর পরে আর আমার সময় নেই৷ ”
বলে মেঘলার হাত ধরে উপরের দিকে হাটা দেয় তাতে মেঘলা আরো লজ্জায় পরে যায়৷ এ ছেলের লজ্জা বলে তো কিছুই নেই কিন্তু মেঘলার তো আছে কি নির্লজ্জের মত আচরন বাবা৷
মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে বিরবির করে বলে,
— ” আল্লাহ সুতা থুরি রসি ফেলো উঠে যায়৷ ”
#প্রণয়স্পর্শী
#Tafsia_Meghla
#সাইত্রিশতম_পর্ব

গধুলি তখন মেঘলা বারান্দায় সোফায় বসে বইতে মগ্ন শোভন পাশে বসে ফোন ঘাটছে চুলগুলো উষ্কখুষ্ক হয়ে আছে গলার টাইটা হাত দিয়ে ঢিলে করে রেখেছে ঘাম জড়ানো শার্ট নিয়েই এখানে এসে বসেছে৷ ঘরে এসিতে সমস্যা হয়েছে সেখানে মিস্ত্রি ঠিক করছে তাই হসপিটাল থেকে এসে এখানেই বসে পরেছে৷ বারান্দার মুক্ত হাওয়া শরীর নিমেষে ঠান্ডা করে তুলেছে ঘামাক্ত শার্টটা শুকিয়ে আসছে, মেঘলা এখন খেয়াল করলো ওর পাশে যে কেউ আছে বই হাতে থাকলে তো কোনোদিকেই মন থাকে না এই মেয়ের৷
বই থেকে মুখ সরিয়ে শোভনের দিকে তাকিয়ে মিহি হাসলো শোভনের চোখ এখনো মোবাইলেই৷ ছেলেটা এখনো অভিমান করে আছে ওর উপর আজ বাদে কাল দ্বিতীয় বারের মত বিয়ে তবুও এ বদ রাগী ডাক্তার এর অভিমান কমেই না এবার মেঘলাকেই কিছু করতে হবে৷ দুষ্টু হেসে উষ্ক খুষ্ক চুল গুলো হাত দিয়ে ঠিক করে দিচ্ছে শোভন একবার চোখ ঘুড়িয়ে মেঘলার দিকে থম থমে হয়ে তাকালো পরক্ষনে চোখ সরিয়ে উঠে বারান্দার এক কোনে গিয়ে দাড়ালো৷
মেঘলা সেখানে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে উঠে গিয়ে শোভনের সামনে গিয়ে নিজের কোমরে দুই হাত দিয়ে বলে,
— ” এবার একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না ডাক্তার সাহেব? এতো অভিমান করার মানে কি? এখন তো দেখছি মরে গেলেই ভালো হতো অন্তত আপনার আকাশ সমান অভিমান তো দেখতে হতো না৷ ”
বলেই নিজেই মুখ ফুলিয়ে অন্য দিকে ঘুরতে যাবে এর আগে শোভন হাত চেপে নিজের দিকে ঘুরিয়ে গাল চেপে ধরে বলে,
— ” আরেকবার এ কথা বলবে তো খবর করে দিবো, মাথা ঠিক আছে তোমার কি বলছো? ”
কিছু বললো না মেঘলা শোভন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে ঘুড়ে গাল ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো৷
তা দেখে শোভন বিরবির করে বলে,
— ” এই মেয়ে আমার রাগ ভাঙাতে এসে নিজেই রাগ করে রইলো কি মেয়ে রে বাবা৷ ”
শোভন মেঘলাকে আবার নিজের দিকে ঘুড়িয়ে ফিসফিস কন্ঠে বলে,
— ” আমার রাগ ভাঙ্গানোর স্টাইল তোমার মতো আনরোমেন্টিক না, আশা করি তুমি চাও না ঘরে এতোগুলো লোকের সামনে আমি আমার স্টাইলে তোমার রাগ ভাঙ্গাই? চাও? চাইলে বলো? আম স্টিল রেডি৷ ”
বলেই বাকা হাসে শোভন, মেঘলা শোভনের কথা শুনে বড় বড় চোখে কিছুক্ষন শোভনের দিকে তাকিয়ে ব্যাপারটা বুঝতে পেরে ঝাপটে ধরে শোভনের বুকেই মুখ লুকিয়ে বলে,
— ” ডাক্তার সাহেব, দিন দিন আপনি ঠোঁট কাটা হয়ে যাচ্ছেন৷ আস্ত অসভ্য হয়ে যাচ্ছেন তা কি আপনি জানেন? ”
শোভন কিছু বললো না প্রসন্ন হেসে মেঘলাকে আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে৷
গধুলির এমন প্রেমময় মূহুর্তে দূর আকাশের সূর্যটাও যেন লজ্জা পেয়ে মুখ লুকালো আর চারোপাশটা সন্ধ্যার মিষ্টি আধারে ঢেকে গেলো৷
সাঝেঁর বেলার আধারটা আজ তোমার আমার
অন্তিম সূর্যের শেষ আলোটা না হয় লাজেই হারাক৷

বৈঠক খানায় বসে টিভি দেখছে আহানা আর মেঘলা, শোভন বসে আছে তবে তার টিভির দিকে খেয়াল নেই বই পরছে৷ বাড়িতে নানান কাজের মাঝেও শোভন কোনো কাজেই হাত লাগায় না এমন কি বউকেও করতে দেয় না কিছু, কাল বিয়ে তাই তোর জোর চলছে৷
সব কাজের মাঝেও শোভনের মা ছুটে এসে শোভনকে বলে,
— ” সকালেও তোকে বললাম মেয়ে দুটো কে নিয়ে শপিং এ যেতে গেলি না, এখনো কি যাবি না? বিয়ে কি করবি পুরান কাপর পড়ে৷ ”
চাচির সায় পেয়ে আহানাও ফোরন কেটে বললো,
— ” হ্যাঁ কাল তো বিয়ে শপিং এ কি যাবি না? তুই না যাস আমি আর মেঘলা যাই? যেমন ভাবে বসে আছিস লাগছে বিয়েটা কাল না আরো এক মাস পর৷ ”
শোভন বইটা সাইডে রেখে বিরক্ত নিয়ে বলে,
— ” উফফ আহান বিরক্ত করিস না তোর দরকার হয় তুই যা আমায় জ্বালাচ্ছিস কেন?”
আহানাও বিরক্ত গলায় বলে,
— ” তোকে বলিনি আমি মেঘলার কথা বলেছি ওকে নিয়ে যাই কাল বিয়ে বাড়িতে এতো মানুষ আসবে অথচ বিয়ের শপিংই হয় নি৷ ”
শোভন বলে,
— ” মেঘলাকে নিয়ে শপিং এ যাবি? ইম্পসিবল আমার বউকে আমি কোথাও নিয়ে যেতে দিবো না৷ ”
শোভনের এমন সংকোচহীন কথায় মেঘলা লজ্জায় মিহিয়ে গেলো, আর আহানা আর ওর মা হতবম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো৷ এ ছেলে সত্যি নির্লজ্জ হয়ে গেছে৷
তবুও ইতস্ততা কাটাতে আহানা দাঁত চেপে বলে,
— ” ভাই তোর বউকে পাঠাবি না তাহলে কাল এতো মানুষের সামনে তোর বউ পরবে কি?”
শোভন একই ভঙ্গিতে বলে,
— ” তা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না যা দরকার ঘরে এসে পরবে, তুই বসে চিপস খা আর টিভি দেখ৷ ”
বলে আবার বই পড়ায় মন দিলো৷ ছেলের কথা শুনে শোভনের মা স্বস্থির শ্বাস নিয়ে আবার অন্য কাজে চলে গেলো৷
টিভির চ্যানেল পাল্টাতে কিছু একটা ভেবে আহানা থম থমে গলায় বলে,
— ” ভাই রাজ এর খবর পেয়েছিস কোথায় গেছে জানিস? ”
শোভন উত্তর দিলো না, মেঘলাও প্রশ্ন সূচক চাওনি দিয়ে শোভনের দিকে তাকিয়ে ছিলো তখনই নিউজ চ্যানেলের নিউজের শব্দে আহানা, মেঘলা দু-জনেই টিভির দিকে তাকায় সেখানে দেখাচ্ছে৷
জেল থেকে পালানো খুন আর কিডন্যাপিং এর আসামি রাজ এর অচেতন দেহ পাওয়া যায় তার গ্রামের পরিত্যক্ত গোডাউনে৷ রাজ পালানোর পর পুলিশ খোজাখুজির পর সেখানেই রাজকে পায় গোডাউনটার পাশে ক্যামিকেল ফ্যাক্টরি ছিলো সেখানে আগুন লাগার কারনে এই গোডাউনটাও পুড়ে যায়৷ সেই ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগার পিছনেও রাজের হাত ছিলো পুলিশ এটাও জানতে পারে৷
রাজের শরীরের কিছু কিছু অংশ পুরে গেলেও রাজের কিছু হয়নি তার চিকিৎসা চলছে৷
তা দেখে মেঘলার মুখের কোনে হাসি ফুটে উঠে অস্পষ্ট কন্ঠে বলে,
— ” পাপ বাপকেও ছারে না৷ ”
অস্পষ্ট কন্ঠ হলেও আহানা আর শোভন কারো কান এরায়নি আহানা মূর্তির ন্যায় বসে আছে তার সব কিছু যেন থমকে যাচ্ছে৷ আর শোভনের ঠোঁটের কোনে ফুটে উঠে রহস্যময় হাসি তা সবার আড়ালে দিলেও আহানার চোখ এড়ায় না৷
কিছুক্ষনের মাঝেই শোভনের মা ডাকতেই মেঘলা উঠে চলে যায় মেঘলা যেতেই আহানা শীতল গলায় প্রশ্ন করে,
— ” ভাই রাজ এর এমন অবস্থা কি করে হলো৷ ”
শোভন এবার হাসলো রহস্যময় হাসি যা ইঙ্গিত করছে গভীর রহস্যময় কিছু৷ শোভনের হাসি দেখে আহানা অবাক চাওনি দিলো ও জানে ওর ভাই কেমন৷
তবুও শোভনের মুখ থেকে শুনতে চায় তাই আবার বলে,
— ” বললি না ভাই? রাজ এর এ অবস্থা কি করে হলো? ”
শোভন আবারো একই ভঙ্গিতে হেসে বলে,
— ” ওই যে মেঘলা বললো না পাপ বাপকেও ছারে না? হুম এটাই হয়েছে৷ ”
বলে উঠে উপরে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়েও আবার আহানার সামনে আসলো আহানা কিছু একটা ভাবনায় মগ্ন ছিলো শোভনের এমন আসা দেখে কেঁপে উঠলো শোভন তা দেখে শব্দ করে হেসে বলে,
— ” ওর শাস্তি ও পেয়েছে আমি তোকে হ্যাপি দেখতে চাই৷ স্মাইল আহান৷ ”
বলে হাত দিয়ে ইশারা করলো আহানা হাসলো না শোভন আবার বলে,
— ” স্মাইল দি ? ”
এবার জোর পূর্বক হাসলো আহানা৷ ও বুঝতে পারলো ওর ভাইটা অনেক রেগে আছে তাই আহান না বলে দি বললো৷ শোভনও প্রসন্ন হেসে যাওয়ার জন্য আবারো কয়েক কদম এগোলো সিড়ির সামনে গিয়ে আবার থেমে যায় ঘার ঘুড়িয়ে বলে,
— ” প্রানে মারিনি দি বাঁচিয়ে রেখেছি তোর ওই হাসির জন্য৷ ”

চলবে,
চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here