প্রণয়ালাপ পর্ব শেষ

#প্রনয়ালাপ (শুভ পরিনতি উপন্যাস ভিত্তিক খন্ডাংশ)
#লেখনীতে_Maya_Binte_Alam

শেষাংশ

সাহিরের প্রশ্নে অপ্রস্তুত হয়ে গেল নূর। তবে নিজেকে সামলে জবাব দিল,

–‘আমিও তো এটাই চেয়েছিলাম সাহির। ওর আমার প্রতি পজেসিভনেস কমুক। অন্যকারো প্রতি ও আকৃষ্ট হোক। ওর জীবনে আমি ছাড়াও অন্যকোনো গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের আগমন ঘটুক। আর দেখো সেটা হয়েছে, আমি এখন ওকে নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারি। ‘

কথাগুলো শেষ করে বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলল নূর। সাহিরও কিছু বলল না বরং প্রসঙ্গ পরিবর্তনে বলে উঠল,

–‘আমি কিন্তু এখনো তোমাকে কংগ্রাচুলেট করিনি! ‘

ভ্রু কুঁচকে নূর সাহিরের দিকে তাকালো। সে দৃষ্টি দেখে হেসে সাহির বলল,

–‘অপারেশনটা সাকসেসফুলি কমপ্লিট করতে পেরেছো তুমি। আই অ্যাম প্রাউড অব ইয়্যু! ‘

গত দু’দিন আগে নূর একজন জটিল হার্ট রোগে আক্রান্ত রোগীর হার্ট অপারেশন করেছে এবং সেখানে ও নবীন ডক্টর হিসেবে সফলও হয়েছে। অবিশ্বাস্য ছিল ব্যপারটা অনেকের কাছে। এতে ওকে নিয়ে খবরের কাগজে, টিভিতে নিউজও হয়েছে। বড় বড় ডক্টর’রা ওকে অভিনন্দন জানিয়েছে। কিন্তু সাহির কিছুই বলেনি এ ব্যাপারে। ও ছিল না সেসময়ে নূরের কাছে, ইচ্ছা ছিল সরাসরি এসেই অভিনন্দন জানাবে নূরকে। আর এখন করলও তাই। যদিও ইচ্ছা ছিল অন্যরকম করে করার।

নূর মাথা একপাশে কাত করে অভিবাদন গ্রহণের ভঙ্গি করে বলে উঠল,

–‘আই অ্যাম অনার্ড স্যার! তবে আমি মনে একজন ডক্টর হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করেছি আমি, ব্যাস আর কিছুই নয়। ভবিষ্যতেও এমন হাজারো জটিল অপারেশন করতে ইচ্ছুক আমি। এ কাজের জন্যই তো ডাক্তার হয়েছি, তাই নয় কি? ‘

–‘হুম সেটায় কথা এটা তোমার প্রফেশন, তবে সকলে একনিষ্ঠ হয়ে নিজের কাজটা করে না। সমস্যা তো ওখানেই। ‘

এ প্রসঙ্গে কোনো কথা না বলে নূর উৎফুল্ল হয়ে বলে উঠল,

–‘ইহান বড় হয়ে কি হতে চায়? ওর এইম ইন লাইফ কি?’

–‘ও এখনো ছোট, বোঝে না খুব এসব বিষয়ে। বড় হয়ে যা ইচ্ছা সেটায় হবে। ওর ইচ্ছার প্রাধান্য থাকবে আমার কাছে। ‘

–‘হুম! ‘

একুটু বলে নূর চুপ করে রইল। সাহির উচ্ছ্বসিত কন্ঠে নূরকে জিজ্ঞেস করে উঠল,

–‘আমাদের বেবি’কে কি বানাবে বড় হলে? ‘

–কেন এই মাত্রই তো তুমি বললে ইহান নিজে যা চায় তাই তবে। আবার এই প্রশ্ন কেন? ‘

–‘আমি ওর কথা না আমাদের বেবির কথা বলছিলাম। ‘

সাহিরের এ’কথায় নূর অপ্রত্যাশিত একটা মুখভঙ্গি করে ওর পানে তাকালো। তৎক্ষনাৎ সাহির চমকে উঠল। নিজের ভুল শুধরে বলে উঠল,

–‘স্যরি খেয়া! আমি ওভাবে বলতে চাইনি। ইহানও আমাদের ছেলে। কি করে বেড়িয়ে গেল মুখ ফঁসকে কথাটা বুঝিনি। ভেরি স্যরি! ‘

–‘কখনো কখনো তুমি এমন এমন কথা বল যে আমি আমার পরিচিত সাহিরকে খুঁজে পাই না তোমার মধ্যে!’

চকিত হয়ে সাহিরের জিজ্ঞাসা,

–‘মানে?’

–‘আমি না যেকোনো মানুষকে খুব দ্রুত বুঝতে পারি, তার ভেতরটা পড়ে ফেলতে পারি। কিন্তু তোমাকে পারি না আমি কেন জানি। কেমন রহস্যের বেড়াজালে ঘেরা তুমি মাঝে মধ্যে মনে হয়। আবার কখনো মনে হয় আমিই হয়তো ভুল। চোখের সামনে যা দেখি তা কিকরে ভুল হয়! ‘

সাহির নূরের কথা শুনে প্রথমে থমকে গেলেও পরমূহুর্তে উচ্চশব্দে হো হো করে হেসে উঠল। সাসরে দৃষ্টি নিবন্ধ রেখে নূরের পানে না তাকিয়ে বলল,

–‘একটা মনে রাখবে সব সময়, যেকোনো কিছুর ঊর্ধ্বে আমার কাছে তুমি। আমি সবকিছুর ঊর্ধ্বে তোমাকে ভালোবাসি! এটাই আমার জীবনের ধ্রুব সত্যি খেয়া!’

কোনো শব্দ খুঁজে পেল না নিজের শব্দ ভান্ডারে কথার প্রেক্ষিতে নূর। তাই নিরবতাকে সর্বোত্তম অপশন মনে করে চুপ করে রইল। সেই সাথে নিষ্পলক বিশেষ দৃষ্টিতে সাহিরকে পরোখ করে যাচ্ছে। গাড়ি চালানোয় সাহির মগ্ন থাকলেও চুপিসারে দু একবার আঁড়চোখে নূরকেও দেখে নিচ্ছে। সকলের অগোচরে এ’কাজটা করতে ও দক্ষতা সম্পন্ন। তাই দুষ্টুমির স্বরে বলে উঠল,

–‘কি দেখছো? ‘

নূরও আপন ধ্যানে মগ্ন হয়েই প্রতিত্তুর করল,

–‘ইয়্যুর লিপস! ‘

–‘এই এই তুমি আমার ঠোঁটের দিকে তাকাচ্ছো! আমার ঠোঁটের ভার্জিনিটি হরনের ইচ্ছে টিচ্ছে হচ্ছে নাকি তোমার? নিজের বলা কথা নিজেই ভুলে গেলে নাকি? বিয়ের আগে তো কিছু হবে না বলেছিলে! ‘

বেজায় বিরক্ত হলো নূর সাহিরের কথায়। রাগও উঠল অনেক। যখন তখন ওকে কথার প্যাচে ফেলতে উস্তাদ এই ছেলে। নূর রাগী চোখে সাহিরের দিকে তাকিয়ে তাঁতানো স্বরে বলে উঠল,

–‘তুমি মনে হয় স্মোকিং করো, না?’

নূরের কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে বিষম খেল সাহির। কাশি শুরু হয়ে গেছে বেচারার। কোনোরকমে রাস্তার পাশে গাড়ি পার্ক করল ও। নূরও হকচকিয়ে গেছে, এমন কিছু হবে ঘুনাক্ষরেও কল্পনা করেনি। সাহিরের পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে নূর। পানির বোতল দ্রুত হাতে নিয়ে মুখটা খুলে সাহিরকে পানি পান করালো নূর। কাশি কমে গেছে অনেকটা, স্বাভাবিক এখন সাহির। কিন্তু নূর স্বাভাবিক নয়, ও অপরাধী ভঙ্গিতে মাথা নিচু করে বসে আছে। সেই সাথে সাহিরকে উদ্দেশ্য করে স্যরি বলে চলেছে। কন্ঠে ভয়, উদ্বেগ, উৎকন্ঠা স্পষ্ট প্রকাশ পাচ্ছে ।

–‘স্যরি সাহির, স্যরি! আমি মজা করে বলেছিলাম কথাটা। কিন্তু এমন হবে কল্পনাও করিনি। তোমার কিছু হয়ে গেলে আমি আ.মি কি কর..তাম! ‘

কথা জড়িয়ে যাচ্ছে নূরের। টুপটুপ করে দু এক ফোঁটা করে চোখের পর্দা ভেদ করে পানিও গড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। সাহির নূরের কান্না দেখে ঘাবড়ে গেল। ঘাবড়ানো স্বরে বলতে শুরু করল,

–‘খেয়া কাঁদছো কেন? কিছু হয়নি তো, দেখো আমি ঠিক আছি। এবারে আমার খারাপ লাগছে খেয়া, প্লিজ স্টপ ক্রায়িং খেয়া! প্লিজ আই বেগ অন ইয়্যু খেয়া, আই কা’ন্ট টলারেট ইয়্যুর টিয়ারস! প্লিজ স্টপ, প্লিজ ফর মাই সেক! ‘

নূর কাঁপা স্বরে জবাব দিল,

–‘দেখো কাঁদছি না আমি আর, এমনিতেই তখন আমার জন্যে কত কষ্ট পেলে। ‘

–‘কষ্ট পাইনি আমি, এমনিই তখন কাশি শুরু হয়ে গেছিল। নিজেকে অহেতুক দোষ দিও না। ‘

মাথা নিচু করে রাখা অবস্থায় নূর মাথা নেড়ে সায় জানালো। তৎক্ষনাৎ সাহিরের রাগী স্বর ওর কানে এলো।

–‘মাথা তোল তুমি। আর কক্ষনো যেন তোমাকে মাথা নিচু করে রাখতে না দেখি! তুমি মাথা নিচু করে রাখার মতোন কোনো কাজ করনি, আর আমি জানি আমার খেয়া কখনো করবেও না! কি হলো এখনো মাথা নিচু করে আছো কেন? তোল মাথা, চোখে চোখ রাখ আমার। ‘

সাহিরকে এই মূহুর্তে ভয়ংকর মনে হচ্ছে নূরের কাছে। ওদের সম্পর্কের এতোগুলো দিনের মধ্যে আজ প্রথম সাহিরকে এতো রাগান্বিত হতে দেখছে নূর। একদিনে দু’বার রেগে গেছে ও নূরের উপরে।

–‘রেগে যাচ্ছো কেন? এই যে মাথা তুলেছি। ‘

কথাগুলো বলে মাথা উঁচু করে সাহিরের চোখে চোখ রাখল নূর। সাহির হেসে নূরের সিক্ত চোখ মুখ দিয়ে ওর কপালে চুমু খেয়ে বলল,

–‘এইতো গুড গার্ল। আর কখনো যেন এ ব্যপারে বলতে নাহয় তোমাকে। যে কোনো পরিস্থিতিতে তোমাকে আমি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় দেখতে চাই। প্রমিজ কর, কখনো হার মেনে নেবে না। নিজের সম্মান সবসময় অক্ষুণ্ণ রাখবে। প্রয়োজনে প্রিয়জনের বিরুদ্ধেও যেতে দ্বিধা করবে না। প্রমিজ মি খেয়া! ‘

ছলছল চোখে সাহিরের পানে তাকিয়ে থেকেই নূর সাহিরের বাড়িয়ে দেওয়া হাত স্পর্শ করে অভয় দিল ওকে। সাহিরের চোখে চোখ রেখে বলল,

–‘সাহির মানুষ আর মানুষ মাত্রই গুন ভুল উভয়ের সম্মিলিত একটা সত্তা। আমিও মানুষ তাই আমিও এসবকিছুর ঊর্ধ্বে নই। হয়তো তুমি আমাকে একটু বেশিই ভালোবাসো বলে গুনগুলোই তোমার চোখে ধরা পড়ে। কিংবা এমন কোনো পরিস্থতির সম্মুখীন হয়নি আমি যাতে খারাপ রুপটা দেখা যেতে পারে আমার তবে আমি বিশ্বাস করি যেকোনো মানুষের ক্ষেত্রে তার আত্মসম্মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস। অতি মূল্যবান কিছুর বিনিময়েও সেটা বিসর্জন দেওয়া উচিত নয়। আমি রাখব তোমার কথা নিজের সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। প্রমিজ! ‘

সাহির নূরের কথা শুনে মনে মনে হাসল একটু। সাহির খুব ভালো করেই জানে নূরের প্রতি ইতির আচরন কিরূপ, আর ইরানের সরূপ কেমন ছিল পূর্বে। তবুও ও বলবে পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়নি!

নিরবতায় আচ্ছন্ন অবস্থায় দু’জন পরস্পরের প্রতি প্রচন্ড অনুরাগী মানব মানবী নিজেদেরকে অনুভব করছে৷ কোনোরূপ ব্যাক্যালাপ ব্যতীতও মনের কথা বুঝে নিচ্ছে পরস্পর পরস্পরের। কিছু সময় পরে নিরবতা ভঙ্গ করল সাহির। আদুরে স্বরে বলে উঠল,

–‘নিকিতা আর ইরানের সম্পর্ক কতদূর এগোলো গো? ‘

বুকটা আকস্মিক ধুঁক করে উঠল নূরের। সাহির মাঝে মাঝে সম্পূর্ণ একজন স্বামীর ন্যায় আচরন করে নূরের সাথে। যেমন প্রায়ই হঠাৎ হঠাৎ ডেকে উঠে, শুনছো, হ্যাঁ গো, ও’গো, গো শব্দগুলো ব্যবহার করে। নূরের মনে তখন অন্যরকম অনুভূতির জড় বয়ে যায়। অজানা শিহরনে শিহরিত হয় নূর। সাহিরের প্রতি স্বামী স্বামী অনভূতি মনে কড়া নাড়ে। কিন্তু ওর নিজের কারনেই দু’জনে এখনো পৃথক। সাহির তো প্রথমেই বিয়ের কথা বলেছিল নূরের কারনেই এখনো দুজনের প্রনয়ের সম্পর্ক পরিনতির পথে এগোয় নি।

সাহিরের পানে নিষ্পলক তাকিয়ে নূর মিহি কন্ঠে জবাব দিল,

–‘না! আর এতো সহজও তো নয়, তাই না? ‘

–‘ইরান বলেছিল অনেকটাই তবে আমি পুরোপুরি জানি না। ‘

–‘ভাইয়া বিদেশে থাকাকালীন ওর গার্লফ্রেন্ডের সাথে শুধু এজ ইউজুয়াল কোনো সম্পর্ক ছিল না। দু’জনের সম্পর্ক অনেক গভীর ছিল। ‘

–‘মানে ওরা কি ফিজিক্যালি ইনভলভড ছিল? ‘

–‘হুম, ফিজিক্যাল রিলেশন ছিল দু’জনের মধ্যে। সেজন্যই তো ভাইয়া তখন ঐ মেয়েকে ছেড়ে নিকিতা আপুকে বিয়ে করতে সম্মতি দেয় নি। ফলে কত ঝড়-ঝাপটা এতোটুকু জীবনে আপুকে সহ্য করতে হয়েছে জানি আমি, স্বচক্ষে দেখেছি। তাই এখন আপুর পক্ষে ভাইয়াকে মেনে নেওয়া যে সহজ হবে না, একজন মেয়ে হিসেবে বেশ বলতে পারি আমি। ‘

আচমকাই সাহির এক অবাঞ্ছিত প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল নূরের পানে।

–‘কখনো যদি জানতে পারো আমারও এমন কোনো অতীত ছিল কি করবে তুমি? ‘

সাহিরের কথা কর্নকূহরে প্রতিধ্বনিত হতে থমকে গেল নূর। নির্বিকার, নিষ্প্রাণ দৃষ্টিতে সাহিরের পানে নিষ্পলক তাকিয়ে ও। এই ভাবনা মনে এলেও যে হৃদয় হাজার খন্ডে খন্ডিত হয়, দুমড়ে মুচড়ে যায় ও। তবে সব সময়ের ন্যায় এইবারেও বাস্তবিক প্রতি উত্তর করল নূর। মনের কোনে উদ্ভুত ভয়কে লুকিয়ে ঠোঁটের কোনে হাসি ঝুলিয়ে রেখে বলল,

–‘তোমার বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ আমি হলেই চলবে। এছাড়া তোমার অতীতের অনেক কিছুই আমার জানা শুধু যে সাত বছর লন্ডনে ছিলে সে সম্পর্কে তো জানি না আমি। ‘

–‘এমন উত্তরই প্রত্যাশিত ছিল বউ!’

ঠোঁট ফুলিয়ে নূর বলে উঠল,

–‘বউ হইনি এখনো! ‘

–‘তো চল এক্ষুনি গিয়ে বিয়ে করে ফেলি, আমার কোনো আপত্তি নেই। ‘

চোখ ছোট ছোট করে নূর তাকালো সাহিরের পানে। সে দৃষ্টি প্রত্যক্ষ করে সাহির হেসে উঠল। নূরের মুখভঙ্গির কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য না করে সাহির ছোট করে একটা দম নিয়ে নিছক অভিনয় করে হতাশা আর আফসোসের স্বরে বলে উঠল,

–‘বত্রিশ বছর বয়সে এসেও এখন বিয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে! নো প্রবলেম তোমার যখন সম্মতি পাবো তখনই আমরা বিয়ে করবো। এই শোনো না! ‘

অনিচ্ছায় মুখ থেকে কথা বের করল নূর, জবাব দিল সাহিরের কথার। বলল,

–‘হুম, বল শুনছি। ‘

–‘আমি যেমন প্রতি ক্ষনে তোমার সান্নিধ্য কামনা করি তুমিও কি করো? ‘

–‘সাহির এসব অসভ্যতামি এক্ষুনি বন্ধ করো, নয়তো.. ‘

–‘নয়তো কি খেয়া? ‘

–‘নয়তো কি জানি না, গাড়ি দ্রুত চালাও। ‘

–‘এই তুমি যদি কখনো বিসিএস এ না টেকো তবে কি কখনো বিয়ে করবে না? মানে সারাজীবন আমাকে ব্যাচেলর হয়ে থাকতে হবে! ‘

সাহিরের কথা শুনে হেসে ফেলল নূর। বলে উঠল,

–‘এসব কথা কিকরে মাথায় আসে তোমার? যতসব আজব চিন্তা ভাবনা। তোমাকে কাছে থেকে না দেখলে কেউ জীবনেো আন্দাজ করতে পারবে না ভেতরে ভেতরে কেমন তুমি। ‘

ভ্রু কুঁচকে সাহিরের প্রশ্ন,

–‘কেমন আমি? ‘

হাই তুলে নূর বলতে শুরু করল,

–‘সবাই যেমন ভাবে বা বাহিরে তুমি যেমন তেমনই তুমি । তবে সকলের জানার বাহিরেও তোমার কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আছে। ‘

মনোযোগ দিয়ে শুনছে সাহির নূরের কথা। ও মিলিয়ে দেখতে চায় আদৌও নূর সঠিক বলতে পারে কিনা!

–‘ভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি খেয়া?’

–‘আমি ভাবতাম কোনো মেয়ের সাথেও কথা বলতে বুঝি তুমি লজ্জা পাও, অথচ সত্যটা সম্পূর্ন ভিন্ন। তুমি. ‘

–‘কি আমি? ‘

–‘তুমিই জানো কেমন তুমি, বলতে হবে না আমার। আমার ঘুম পাচ্ছে খুব। ঘুমাবো আমি, বাড়ি পৌঁছে গেলে ডেকে দিও আমাকে। ‘

সাহির আর কিছু না বলে একটু হেসে গাড়ি চালানোয় মনোযোগ দিল। কিছুদূর যেতে নরম স্বরে ডেকে উঠল,

–‘খেয়া! ‘

কোনোরূপ সাড়া না পেয়ে নূরের দিকে ফিরে হেসে ফেলল সাহির। সিটে মাথা হেলিয়ে ঘুমে মশগুল। এতো দ্রুত এতো গভীর ঘুমে তলিয়ে গেছে। হেসে নূরের দিকে একটু খানি ঝুঁকে এক হাতে ওর কপালে পড়া চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে কপালে অতি সাবধানে চুমু খেল। সাহির ড্রাইভিংয়ে মনোযোগ দিতে নূর চোখ বন্ধ থাকা অবস্থায় হাসল একটু। আর মনে মনে উচ্চারন করল,

–‘ভালোবাসি সাহির, অনেক ভালোবাসি!’

*শেষ*

কেমন হলো জানাবেন সকলে প্লিজ। ধন্যবাদ সকলকে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here