তুই হৃদহরণী পর্ব ১

১৮+ কিছু কথা আছে তাই এড়িয়ে যাবেন।
#তুই_হৃদহরণী
#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)
পর্ব : ১

মদ খেয়ে বদ্দ হয়ে আছে আহরার। বিছানায় বসে হেলছে ঢুলছে। আর উন্মাদের মতো দাঁত বের করে হাসছে। ফিরাত তাকে কোনো রকম বিছানায় এসে বসিয়ে দিল। বারবার করে বলছে, শুয়ে পরতে কিছুই শুনছে না সে। হাত ঠিক ভাবে তুলতে পারছে না তবুও নড়বড় হাত ফিরাতের দিকে তুলে নিচু কন্ঠে বলল,
“তুই জানিস? তুই জানিস আমি কে?”
আহরারের কথায় ফিরাত একটুও অবাক হলো না। বরং সে ঠোঁট উল্টে শক্ত বিশাল দেহ আরো শক্ত করে দাঁড়িয়ে রইল।
“তুই জানিস না আমি কে? আমি, আমি আহরার। আহরার চৌধুরী। আমার নামের অর্থ যেমন স্বাধীন। আমি চলিও তে তেমন করে।”
ফিরাত এক পা এগিয়ে গিয়ে আহরার কে ধরল। আর একটু হলেই ঘাট থেকে পরে যেত। ফিরাত আহরার কে ঠিক করে বসিয়ে দিতে দিতে বলল,
“আরে আস্তে। পরে যাবি তো।”
আহরার লেগে আসা মাতাল গলায় আবার বলল,
“মিস্টার আর মিসেস চৌধুরী আর যাই করুক আমার নাম টা বেশ রেখেছে। কি বলিস?”
আহরার ফিরাতের দিকে তাকিয়ে হাহা করে হাসতে লাগল নেশা ভরা চোখ নিয়ে।

ফিরাত বিড়বিড় করে বলছে,
“আজ তোর একটু বেশিই হয়ে গেছে না হলে এমন করতি না।”
“মিস্টার আলতাফ চৌধুরী আর মিসেস কি জানি নাম? ভুলে গেছি। ও, মিসেস মিলিফা চৌধুরী। ধন্যবাদ আপনাদের। ধন্যবাদ এত সুন্দর নাম দেওয়ার জন্যে।”
“ইয়ার ওরা তোর মা বাবা হয়।”
“আরে রাখ। কিসের মা বাবা? আমার কেউ নেই। কেউ না। আমি সবসময়ই স্বাধীন। কেউ নেই আমার। মা বাবা মাই ফুট।”
“….
ফিরাত আর কিছু বলতে পারল না। করণ যে জানে আহরারের ক্ষোভ, দুঃখ, কষ্ট টা। হাজার কেন লাখোবার বুঝিয়েছে কোনো লাভ হয়নি। হওয়ার মতোও না। যতই হোক সেও বুঝে আহরারের কষ্ট টা।

আহরার বলে উঠল,
“ফিরাত দোস্ত আজ যদি কোনো মেয়ে বা বেত্তমিজ ইলান আসে তো কোনো কথা নয় সোজা চলে যেতে বলবি।”
“কেন তুই..”

ফিরাতের কথা শেষ হওয়ার আগে দরজা ঠেলে ইলান ভেতরে চলে এলো।
“বেবি।”
আহরার বিরক্ত মাখা চোখ নিয়ে ইলানের দিকে তাকায়। বিষিয়ে উঠে সে।
“তুই। এখানে কেন?”
“বেবি তুমি রেগে আছো?”
“রাখ তোর রাগ, তুই এখন যা।”
“আহরার কি হলো?”
আহরার এভার নেশার রেশ কাটিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিল। রাগে চোখ মুখ তার শক্ত হয়ে এসেছে।
“তোর সাহস কি করে হয় আমার নাম নেওয়ার? আহরারের নাম নিচ্ছিস তুই? দেখ ইলান তোকে আমার আর ভালো লাগছে না তুই যা।”
“কিন্তু বেবি আমি তোমায় ভালোবাসি।”
“ইলান ভালো করে বলছি আমার সামনে থেকে চলে যা। না হয় তুই খুন হবি।”
ইলান মনে মনে আহরার কে হাজার খানিক খারাপ অকথ্য ভাষা বকে চলে গেল। কারণ সে জানে আহরারের সামনে বকলে সত্যিই সে খুন করবে তাকে।

“ইলান কে চলে যেতে বললি?”
“হুম। ওকে আর ভালো লাগছে না। সারাক্ষণ বেবি বেবি করে। বিছানাতে আজ কাল সে ভালো নয়। সুখ দিতে পারে না আমায়। মজাও পাই না ওর মাঝে।”
“….
“দোস্ত মিলা, তিনা, ইসা আর আইলা কেই ভালো লাগছে কদিন। সমস্যা নেই দুজনের মেয়াদ আর রস ফুরিয়ে আসছে। দু তিনদিনের মাঝেই না করে দিব। তবে ইসা তো সেই সেক্সি, ইসস কি ফিগার মাইরি। দেখলেই শরীর গরম হয়ে আসে। কিছু মেয়ে রা এমনি হয় রে। তবে আইলা কে জাস্ট ওর বুবসের জন্যে রাখা। দোস্ত ওর বুকের মাঝে শুয়ে থাকলে নরম তুলতুলে লাগে। মজাই পাই একটা। ওর বুবসও তো জাস্ট মনে হয় র…”
আহরারের কথা থামিয়ে দিয়ে ফিরাত বলল,
“হয়েছে হয়েছে প্লিজ থাম। আর বলিস না।”
“কেন রে? ফিরাত আমি না বুঝি না। তুই আমার সাথে থেকেও কেন আমার মতো না। তোর লাইফ এত নিরস কাটে কি করে আল্লাহই জানে। আমি তো বিন্দাস, স্বাধীন।”
“আহরার এখন তো একটু ঘুমা ইয়ার।”
“হুম। গুড নাইট।”
“গুড নাইট।”
ফিরাত দরজা লাগিয়ে দিয়ে চলে গেল। যেতে যেতে ভাবতে লাগল, “ও এমনি। এত বুঝাই তবুও ঠিক হয় না। ও কি এমনি থাকবে?”

আহরার শার্টের বোতাম খুলে শার্ট টা গা থেকে নামাল। সোফার দিকে ঢিল দিয়ে উন্মুক্ত শরীরে শুয়ে পরল হাত পা মেলে।

আহরার দেখতে যেমন সুদর্শন, কথা বলাও তেমনি মধুর। যেমন গুঁছিয়ে কথা বলতে জানে তেমনি কথাতে রস থাকে। কি মিষ্টি কন্ঠ। একবার শুনলে শুনে যেতেই ইচ্ছা হয়। গায়ের রং ধবধবে সাদা ফরেন্সিদের মতোই। যতই হোক ছোট কাল বিদেশে কেটেছে। রক্তবর্ণ ঠোঁটের রঙ। লাল টকটকে। চুলে হাল্কা ব্রাউন কালার আসে। চাপ দাড়ি। ওমন মুখের সাথে চাপ দাড়ি টা একদম পারফেক্ট। তবে চেহারার মতো সুন্দর নয় তার চরিত্র। মেয়েদের সাথে বিছানায় যাওয়ার তার যেমন শখ, তেমনি স্বভাব আর নেশা। কোনো একটা মেয়ে বাদ নেই যে তার দৃষ্টিতে গিয়েছে আর সে বিছানায় তাকে নেয় নি। বয়স ১৮+ হওয়ার আগ থেকেই বিদেশি কালচার ঢুকে গেছে তার মাঝে। তখন থেকেই প্রতিদিন মেয়ে নিয়ে খেলেছে সে। আহরার নামের অর্থের সাথে তার চলা, স্বভাব, চালচলন একদম ঠিক আছে। যেন একটুও নড়চড় নয়।

অন্যদিকে ফিরাত যেমন সুদর্শন তেমনি ভালো। কমলার মতো ঠোঁটের রঙ। কালো চুল, হাল্কা দাড়ি। দেখতে সেই লাগে। দুজনকেই যে কোনো মেয়ে দেখলে প্রেমে পরে যাবে। স্বাদে কি আর মেয়ে রা আহরারের কাছে ধরা দেয়? আহরার কে দেখলে যে কোনো মেয়ের মাথা ঘুরবে, চড়ক দিবে। তেমনি ফিরাত। তবে তার স্বভাব বেশ ভালো। মেয়েদের দিকে তার নজর তেমন যায় না তবে একজন ব্যতীত। আহরার আর ফিরাত দুই বন্ধু হলেও। স্বভাব একে অপরের বিপরীত। ফিরাতের বিপরীতই যেন আহরার।

১২ টার দিকে আহরারের ঘুম ভাঙ্গে। উঠে গিয়ে ফ্রেশ হয়। শাওয়ারের নিচে সাদা ধবধবে শরীর বিলিয়ে দিচ্ছে। মেয়েদের মতো পানির বিন্দু গুলিও তার ওমন জিম বডি শরীর আকঁড়ে ধরছে। লম্বা শাওয়ার শেষ করে আহরার বের হয়ে আসে। আয়নার সামনে গিয়ে নিজের ভিজা চুল ঠিক করতে থাকে। পরনে তার শুধু টাওয়াল।
ফিরাত হঠাৎ রুমে এসে দেখে আহরার আয়নার সামনে।
“সাদারাজা কি কোথাও বের হবে।”
“ইয়েস।”
“কোথায় যাবি এখন?”
“আগে যাবো আইলার বাসায়। ওর বুবস মিস করছি।”
“আহ আহরার তুই কবে ঠিক হবি?”
“হাহা কেন রে? তোর ভালো নাই লাগতে পারি বাট আমি ইনজয় করি।”
“….

আহরার রেডি হতে হতে বলল,
“কেন এসেছিস বল।”
“তোর ঘুম ভাঙ্গল কি না দেখতে। অফিস যাবো।”
“তো যা। আমার কিন্তু আজ সময় নেই।”
“তোর সময় থাকে কবে?”
“বিশ্বাস কর ফিরাত, বিজনেস আমার হলেও তেমন একটা জোর পাই না অফিস যাওয়ার। তাছাড়া তুই আছিস। আমি মানেই তুই।”
“তা বললে হয়?”
“১০০ বার হয়।”

আহরার কালো একটা শার্টের উপর এস কালারের কোট জড়িয়ে নেয়। আয়নার সামনে বডিস্পে দিতে দিতে বলল,
“আর কিছু বলবি?”
“না। চল খেয়ে নে।”
“বাহিরে খেয়ে নিব। বাই।”
হন্তদন্ত হয়ে বের হয়ে গেল আহরার। ফিরাত একটা নিশ্বাস ফেলে দিয়ে বসা থেকে উঠা দাঁড়ায়। অফিস যাওয়া দরকার এখন।

আহরার খুব তাড়াতাড়ি করে আইলার বাসায় চলে গেল। পথে জানিয়ে দিয়েছে সে আসছে। আহরার গাড়ি থেকে নেমে তাড়াতাড়ি উপরে উঠল। কলিংবেল চাঁপছে কিন্তু আইলা দরজা খুলছে না দেখে রাগ হয় তার। আইলা লিপস্টিক টা দিয়ে লাল রং এর শার্টের বুতাম খুলে দিল। প্রায় অর্ধেক বেস্ট দেখা যাচ্ছে। হাসি মুখে চুল ঠিক করে এগিয়ে গেল দরজার দিকে। দরজা খুলে দিয়ে পথ আটকে দাঁড়ায়। আহরার কে পা থেকে মাথা অবধি দেখে। আহরারের নজর সবার আগে আইলার ঠোঁটে আর বেস্টে যায়। লাল শার্টের ভেতরে সাদা বেস্টের সরু পথ দেখে তার রাগ উধাও হয়ে যায়। ঝাঁপটে ধরে আইলা কে। আইলা হেসে উঠে খিলখিল করে।
“ও ডার্লিং খুব মিস করছিলাম তোমায়।”
“তোমাকেও খুব মিস করছিলাম বেবি।”
“আমাকে নাকি আমার টাকা কে?”
মুখ কালো করে দিয়ে আইলা বলল,
“তুমি..”
“ও ডার্লিং আমি জানি তো তুমি আমায় মিস করছিলে। বিশেষ করে তোমার বুবসে আমার মুখ বুলানো টা।”
“আহহ বেবি।”
“ওকে ওকে চলো।”
“হুম নাস্তা রেডি করেছি চলো তবে।”
“নাস্তা নয় বিছানায় চলো। ইউ নো খুব ভাবে মিস করছি পরশুদিনের সেক্স টা। ইস কি ছিল তোমার পারফরমেন্স। জাস্ট মাইন্ড ব্লোয়িং। কাল তো তোমার সাথে মিটই করতে পারলাম না। সেক্স হবে দূরে কথা।”
“আগে তো..”
আইলার কথা শেষ করার আগেই আহরার তাকে টানতে টানতে বেডরুমে নিয়ে গেল। মেতে উঠল শরীর খেলায়। আহরার আইলার সাথে আদিম খেলায় মত্ত। আইলা কে রেখেছে শুধু তার বেস্টের জন্যেই। মজা মিটে গেলে আবার ফেলে দিবে আহরার। আর আইলার তো কাজই এটা। টাকা পায় যে।

আহরার নিজের চাহিদা মিটিয়ে নিস্তেজ হয়ে বিছানায় পরে রইল। আইলা নিজের কাপড় পরে দেয়। তবে তেমন জোর দিয়ে নয় আহরার কে নিজের সুন্দর সাদা দেহ দেখিয়ে। শার্টের বোতাম লাগাতে গেলে আহরার সেখানে আবার মুখ বুলায়। আইলা হেসে উঠে। খানিক বাদে নিজের জায়গায় গিয়ে আহরার শুয়ে পরে। শরীর ঘামছে তার। আইলা কাছে আসতে চাইলে আহরার বলল,
“আমায় একা ছাড়ো।”
“কেন?”
“আমি প্রশ্ন শুনতে পছন্দ করি না। যাও।”
“তোমার চাহিদা মিটে গেছে এখন সব শেষ?”
“তোমার তো টাকা পেলেই হবে। নাও গো।”
“ডার্লিং তুমি আমায়..”
আহরারের রাগি চোখ দেখে আইলা চলে গেল। সে খুব জানে এই মানুষ টা কে রাগানো মানে তার বিপদ। টাকা তো যাবেই। না জানি জানটাও চলে যায়। আইলা আর কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে গেল।

আহরার খালি গায়ে বসে আছে। প্যান্ট টা গা থেকে ছিঁড়ে ফেলে দিতে ইচ্ছা হচ্ছে। কেমন যেন রাগ লাগছে। স্বস্তি পাচ্ছে না। সিগারেটের প্যাকেট নিয়ে একদমে টানতে লাগল। এখানে তার আর ভালো লাগছে না। উঠতে হবে। দূরে আজ কোথায় যেতে হবে তার। আহরার উঠল। শার্টের বোতাম লাগিয়ে কোট গায়ে দিয়ে বেড়িয়ে পরল। আইলা পিছন থেকে ডাকলেও শুনল না। আইলাও পাত্তা দিল না। আহরার মন থেকে কাউ কেই চায় না। আহরার যে শুধু তার সাথেই শারীরিক সম্পর্কে নেই। বরং বহু মেয়ের সাথেই আছে আইলা তা জানে। তবে টাকা ছাড়াও আহরারের সৌন্দর্যে সে মুগ্ধ হয়। আহরার সে মেয়েদের চিনে। মেয়েদের নিয়ে তো সেই ছোট বেলা থেকে উঠা বসা। আহরারের শরীর হলেই চলে। তার জীবন টাই এমন হয়ে গড়ে উঠেছে।

গাড়ি তে উঠে বসে আহরার নিশ্বাস নেয়। ড্রিংকের ছোট বোতল টা থেকে কয়েক ডুক খেয়ে আবার ড্রাইভ করতে লাগল। একা একটা লংড্রাইভ দিবে আজ।

চলবে….
(সতর্ক বানী আগেই দিয়েছি। আশা করছি এটাও ভালো লাগবে আপনাদের ইনশাল্লাহ। কপি করে অন্যকেউ পোস্ট করা থেকে বিরত থাকুন)

Sabriha Sadi

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here