প্রণয় আসক্তি পর্ব ১৮+১৯

#প্রণয়_আসক্তি
#লেখিকাঃমাহযাবীন
পর্বঃ১৮

দু’জন মানব-মানবী দেখে চলছে একে-অপরকে।উভয়ের স্থির দৃষ্টিতে বিস্ময় স্পষ্ট দৃশ্যমান।বিস্ময় কাটিয়ে কেউই কিছু বলছে না।
টানা ৮-১০ টা দিন একটি মানুষকে এক নজর দেখার তৃষ্ণায় তৃষ্ণার্ত আঁখিদ্বয়ের তৃষ্ণা হুট করেই এভাবে, অপরিকল্পিতভাবে মিটবে তা সম্পূর্ণ ভাবনাতিত ছিলো আর্শির।’আর্শ ও মিয়ামির বিয়েতে বিহান কি করে এলো?আর কেনোই বা এলো?’ এসব কিছুই আর্শি ভাবছে না।সে তো ব্যস্ত তার চোখের তৃষ্ণা মিটাতে।
আর্শির দিকে স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করে মেয়েটিকে বিষ্ময় নিয়ে দেখে চলছে বিহান।অসম্ভব সুন্দর লাগছে আর্শিকে।ছবির থেকে বাস্তবে মেয়েটি কোনো অংশে কম সুন্দর নয়।লম্বা হাতার লাল রং এর একটি গাউন পড়ে আছে সে।গায়ে বড় ওড়নাও জড়ানো আছে তার।উহু,কোনো লাল পরির মতো লাগছে না তাকে।সে মানুষ,খুব সাধারণ একজন মানুষ।অন্য সব মেয়েদের মতোই দেখতে,কোনো পরি বা জান্নাতি হুরের ন্যায় নয়।তবে মেয়েটি মায়াবী ভীষণ।যার মায়ায় হয়তো নিজের অজান্তেই জড়িয়ে যাচ্ছে বিহান।
‘মেয়েটি এ বিয়েতে কি করছে?’ প্রশ্নটির উত্তর বিহানের কাছে নেই।তবে সে জানতে চায়।

এই মুহূর্তে আর্শি ও বিহানের মাঝে প্রায় ৩-৪ হাতের মতো দূরত্ব।আর এই দূরত্বের মাঝের জায়গাটিতে মানুষের যাতায়াত চলছে অবিরত।বিহান তার ও আর্শির মাঝের এই দূরত্বটা কমাবার উদ্দেশ্যে এক পা অগ্রসর হয়।তবে তাকে থেমে যেতে হয় আচমকা নিশির আগমনে।
ঠোঁটে লম্বা হাসি নিয়ে নিশি তার ভাইয়ের পাশে দাঁড়িয়ে বলে ওঠে,
-ভাই,তুই এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস?
প্রশ্নটি করে বিহানের সামনে বরাবর তাকাতেই আর্শির দেখা পায় নিশি।সে নিজের ঠোঁটের হাসিটি আরো প্রশস্ত করে আর্শিকে ডেকে ওঠে।
নিশির ডাকে ধ্যান ভাঙে আর্শির।এতোটা সময় যে সে বিহানের দিকে তাকিয়ে ছিলো তা ভাবতেই কিছু টা অপ্রস্তুত হয়ে যায় সে।
দ্বিতীয় বার নিশির ডাক কানে আসতেই নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে বিহান ও নিশির কাছে এগিয়ে যেয়ে তাদের সামনে বরাবর দাঁড়ায় আর্শি।নিশি হাসিমাখা কন্ঠে বলে ওঠে,
-আরু(আর্শি) আয় পরিচয় করাই।
কথাটি বলে নিশি তার পাশে দাঁড়ানো বিহানকে ইশারা করে বলে ওঠে,
-ও হচ্ছে আমার বড় ভাই,বিহান খান।
এ কথাটি বলে আর্শির থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিজের ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে নিশি বলে ওঠে,
-ভাই,ও হচ্ছে আমার বান্ধবী আর্শি।আমি,আর্শি আর মিয়ামি একই কোচিং এ পড়ছি।আমরা বেশ ভালো বন্ধু।সেই সাথে আর্শি,মিয়ামির হবু ননদও।মানে আর্শ ভাইয়ার ছোট বোন।
উত্তরে নিজের বোনের দিকে একটু হেসে তাকায় বিহান।পর মুহুর্তেই নিশির থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আর্শির দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে সে।বিহানের সাথে চোখাচোখি হতেই আর্শি অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে সালাম দিয়ে বলে ওঠে,
-ভালো আছেন,ভাইয়া?
বিহান ঠোঁটে একটু হাসি নিয়ে বলে ওঠে,
-জ্বি,তুমি?
-আলহামদুলিল্লাহ।
বিহানের কথার উত্তর দিয়েই আর্শি নিজের দৃষ্টি নিশির দিকে স্থির করে তড়িঘড়ি করে বলে ওঠে,
-আচ্ছা নিশ,আমি একটু মিমির কাছে গিয়ে দেখি ওর কিছু লাগবে কিনা!
নিশি ঠোঁটে হাসি টেনে সম্মতি দিয়ে বলে ওঠে,
-আচ্ছা যা।

নিশির সম্মতি পেয়ে আর এক মুহূর্তও দাঁড়ায় না আর্শি।সাথে সাথে স্থান ত্যাগ করে সে।জনসমাগম হতে একটু দূরে এসে নিজের চোখ জোড়া বুজে বেশ কয়েকটি নিঃশ্বাস নিজের মাঝে টেনে নেয় সে।যেনো এতোক্ষণ নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে ছিলো তার।মেয়েটির হৃৎস্পন্দন যেমন বেড়ে গিয়েছে তেমনই চোখ দুটোও ঝাপসা হয়ে এসেছে তার।মনে মনে একটি প্রশ্নই বিরবির করছে সে,
“কেনো আবারও আমার সামনে এলেন,বিহান?”

এমনটি নয় যে,এই ৮-১০ দিন কথা না বলায় আর্শির অনুভূতিগুলো বিহানের প্রতি কিছুটা প্রশমিত হয়েছে।এক বিন্দু পরিমাণও প্রশমিত হয়নি বরং এ কয়দিন কথা না বলে বিহানকে এক নজর দেখার জন্যে, একটি বার কথা বলার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠেছিলো আর্শির মন।অনুভূতিগুলো তীব্র রূপ ধারণ করছিলো।বিহানের থেকে দূরে থেকে হৃদয়ের দহনে জ্বলছিলো সে।
কিন্তু প্রতিটি ক্ষতই তো নিরাময়যোগ্য।প্রয়োজন শুধু সময়ের।সময়ের সাথে সাথে সব ক্ষতই ঠিক হয়ে যায়।তাই তো আর্শি বহু কষ্টে নিজের অবাধ্য মনকে নিয়ন্ত্রণ করে বিহানের থেকে দূরে ছিলো।কিন্তু আজ আবার ছেলেটি সামনে এসে তার ভেতরের সব কিছু আবার ওলট-পালট করে দিলো।
ছেলেটির ঘন চোখের পাপড়ি,ঘন চাপ দাঁড়ি,হলদে ফর্সা গায়ের রং,ছোট্ট খাঁড়া নাক,হালকা কোঁকড়া ছোট ছোট চুল আর ঐযে মুচকি হাসি টা যা সোজা আর্শির হৃদয়ে এসে লাগে,সব কিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিলো সে তখন।আর ঠিক ঐ মুহূর্ত থেকেই আবারও ছেলেটিকে নিজের,একান্তই নিজের ভাব্বার লোভ বেসামাল হচ্ছে আর্শির।

!!
শুধু মাত্র পরিবারের মানুষদের উপস্থিতিতেই যেহেতু বিয়ে টা হচ্ছে তাই তেমন বড় করে বিয়ের আয়োজন করা হয়নি।মিয়ামিদের বাসার ছাঁদ টা যথেষ্ট বড় হওয়ায় সেখানেই বিয়ের সকল বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
কবুল বলার পূর্বে বর-বৌ এর একে-অপরকে দেখা বারণ হওয়ায় ছাঁদের মাঝ বরাবর বড় পর্দা দ্বারা ছাঁদটি দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে।একটি পাশে মেয়েরা এবং অপর পাশে ছেলেরা।আর পুরো ছাঁদটা বিভিন্ন রকমের ফুল,বেলুন,এলইডি ফেইরি লাইটস দিয়ে সাজানো হয়েছে।মিয়ামি ও আর্শের বসার জায়গাটিও আকর্ষনীয় ভাবে সাজানো হয়েছে। আর এসব ডেকোরেশনের কাজ করেছে আর্শ ও মিয়ামির কাজিনরা মিলে।
আসলে,বন্ধু-বান্ধব ও কাজিনসরা ছাড়া জীবন টা একদম চিনি ছাড়া চায়ের মতো।এরা আমাদের জীবনে কিছু কিছু ক্ষেত্রে খলনায়কের চরিত্রের অধিকারী হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এরাই আমাদের মজ-মাস্তি,আনন্দময় স্মৃতির একটি বিরাট অংশ জুড়ে থাকে।এদের ছাড়া জীবন পানসে!

সন্ধ্যা ৭ টা থেকে বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিলো।এখন বাজে ৮ টা!বাড়ির সবাই ছাঁদে উপস্থিত।বিহান ও নিশিও আছে।এই প্রথমই তারা আর্শি ও মিয়ামির পরিবারের সাথে পরিচিত হলো।কিন্তু এটুকু সময়েই দু’জনেই যেনো এ পরিবারের একটি অংশে পরিণত হয়েছে। প্রত্যেকে মিশুক হওয়ায় বিহান ও নিশি খুব সহজেই সবার সাথে মিশে গিয়েছে।ফলে বিয়েটা খুব খুব উপভোগ করছে তারা।

মেয়েদের মাঝে প্রায় সবাই বিভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি তোলায় ব্যস্ত।আর্শিও ব্যস্ত মিয়ামির ছবি তোলায়।এ অবশ্য উপর থেকে উপর থেকেই।মন তো তার বিহানের কাছেই পরে আছে।তার মন চাইছে এই মুহূর্তে সব কিছু ফেলে বিহানের কাছে যেতে।ছেলেটির বুকে মাথা রেখে অভিমানী কন্ঠে বলতে যে,
“আপনাকে ছাড়া থাকতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে, বিহান।আপনি কেনো আমাকে অল্প,একটু,সামান্য পরিমাণও ভালোবাসতে পারলেন না?কেনো ভালোবাসলেন না আমায়?”
মন যা চায় তা অনেক ক্ষেত্রেই পরিস্থিতির কবলে পরে মনেই মাটি চাপা দিতে হয়।যেমনটি আর্শি দিচ্ছে।কারণ, এতোগুলো মানুষকে উপেক্ষা করে বিহানের কাছে যাওয়ার সামর্থ্য তার নেই।আর না আছে অধিকার,বিহানকে জড়িয়ে ধরার বা অভিমান করার।
ছেলেরা সবাই এক হয়ে আড্ডায় মেতে আছে।কেউ কেউ আবার আড্ডার মাঝেই গ্রুপ ফটো তুলছে।সবার সাথে আড্ডায় অংশ গ্রহণ করলেও,আর্শিকে ঐ সময় দেখার পর থেকে বিহানের অশান্ত নয়ন মেয়েটিকেই খুঁজে চলছে।কিন্তু ছেলে ও মেয়েদের মাঝে টানানো পর্দাটির জন্যে মেয়েটিকে দেখার সুযোগটি সে পাচ্ছে না।তবুও আঁখিজোড়া ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেই।

!!
আর্শির আবদারে প্রায় ৫০+ ছবি তুলে ক্লান্ত হয়ে ঠোঁট উল্টে নিজের চেয়ারে বসে পরে মিয়ামি।আজ তার বিয়ে তবুও চেহারায় আনন্দের ছিটে-ফোঁটাও নেই।আর্শি, মিয়ামির মন খারাপ বুঝতে পেরে তার পাশে যেয়ে বসে নিম্ন স্বরে বলে ওঠে,
-কি হইছে?নতুন বৌ নিজের চেহারা বিধবাদের মতো বানায়ে রাখছে কেন?
-বাজে বকিস নাহ।
মেজাজ খারাপ করে কথাটি বলে মিয়ামি।পর মুহূর্তেই অসহায় চোখে আর্শির দিকে তাকিয়ে ঠোঁট উল্টে বলে ওঠে,
-আমি কি আমার বর টারে দেখবো না?এই কবুল বলাবলি কখন হবে?
মিয়ামির কথা ও কথাটি বলার ভঙ্গি দেখে হেসে ওঠে আর্শি।হাসিমাখা কন্ঠেই বলে ওঠে,
-এতো পাগল হওয়ার কি হইলো?আজ থেকে তো জীবনের শেষ নিঃশ্বাস অব্দি এই একই মানুষরে দেখে দেখে বোর হবি।সো চিল কর!
উত্তরে মিয়ামি বলে ওঠে,
-আমার সম্পূর্ণ আয়ুটা এই মানুষটিকে দেখে পাড় করে দিলেও মন ভরবে না।তাকে দেখে মন ভরতে হলে এক জীবন অতি নগন্য সময়।৬ টা বছর ধরে এই মানুষটাকে প্রতিদিন নিয়ম করে দেখে আসছি।তাও একটি দিন না দেখলে মনে হয় শত দিন দেখিনি।সেখানে,”বোর” শব্দটার অস্তিত্ব আছে কি?
মিয়ামির কথায় আর্শির ঠোঁটে প্রশান্তির হাসি ফুটে ওঠে।সে মুগ্ধ কন্ঠে বলে ওঠে,
-আমার ভাইটা অনেক ভাগ্যবান।আলহামদুলিল্লাহ!
আর্শির কথাটি শেষ হতে না হতেই নিশি আর্শির পাশে বসতে বসতে বলে ওঠে,
-ইশ,আমার ভাই টাও যদি এমন লাকি হতো!কোনো একটা মেয়ে যদি আমার ভাইটাকেও এতোটা ভালোবাসতো!
নিশির কথা কানে আসতেই ‘কাটা জায়গায় লবণের ছিটা’ যেমন পীড়া দেয় ঠিক তেমন পীড়াই অনুভব করছে আর্শি।
সে তো ঠিক এতোটাই ভালোবেসেছে কিন্তু এই বুক ভরা ভালোবাসা প্রকাশের অধিকারটা তার নেই।আর এ কষ্টের থেকেও অনেক অনেক বেশি কষ্ট তখন হয় যখন আর্শি ভাবে,বিহান অন্য কারো হবে।অন্য কোনো একটি মেয়ে তার বিহানকে ভালোবাসবে,তার বিহানের উপর অন্য কারো অধিকার হবে।
চিরন্তন সত্যটি হচ্ছে,”আমার প্রিয় মানুষটি আমার নয়” মানা টা যত টা কষ্টের তার থেকেও অনেক বেশি কষ্টের এটি যে,”আমার হৃৎপিণ্ডের বৃহৎ জায়গা জুড়ে যে মানুষটির বসবাস তার হৃৎপিণ্ডের অধিকারী অন্য কেউ”।

আর্শি,মিয়ামি ও নিশির এ সকল কথার মাঝেই মিয়ামির মা মেহরিন বেগম তাদের কাছে এগিয়ে এসে তাড়া দিতে দিতে বলে ওঠেন,
“কাজী সাহেব এসে পরেছেন,শীঘ্রই বিয়ে পড়াবেন।”
মায়ের কথাটি কানে আসতেই ঠোঁটে হাসি ফুটে ওঠে মিয়ামির।হৃৎস্পন্দনেরা নিজেদের গতি বাড়িয়ে জানান দিচ্ছে যে,খুব শীগ্রই তারা পরিপূর্ণ হতে যাচ্ছে।যেমনটি আধা আর আধা মিলে পরিপূর্ণ এক হয়।
#প্রণয়_আসক্তি
#লেখিকাঃমাহযাবীন
পর্বঃ১৯

মিয়ামির কক্ষটা ছোট ছোট রঙিন মোমবাতি দিয়ে সাজানো।কক্ষের বিছানার সাদা চাদরের উপরও অসংখ্য গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।কক্ষ জুড়ে একটি মিষ্টি সুঘ্রাণ বয়ে বেড়াচ্ছে।সেই সাথে এসি চালু থাকায় পরিবেশটা ঠান্ডা ঠান্ডা।তবে বেশি ঠান্ডাও নয়।
এখন এ কক্ষেরই বিছানার ঠিক মাঝ বরাবর বসে আছে মিয়ামি। তাকে এখানে বসিয়ে রেখে সবাই কক্ষ ত্যাগ করেছে।অপেক্ষা শুধু আর্শের আগমনের।

মিয়ামি তার জায়গাটিতে বসেই পুরো কক্ষ টায় চোখ বুলিয়ে নেয়।যেমনটি সে চেয়েছিলো ঠিক সেভাবেই তার কক্ষটাকে সাজানো হয়েছে।মন টা আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে আছে তার।সব কিছুই যেনো স্বপ্ন।উহু,স্বপ্নের থেকেও সুন্দর!
মনে মনে আর্শিকে অনেক অনেক গুলো ধন্যবাদ দিলো মিয়ামি।সে খুব ভালো করেই জানে তার বিয়ের সব কিছু আর্শি নিজ হাতে সামলিয়েছে।দু’জন খুব কাছের বান্ধবী হওয়ায় একে-অপরের পছন্দ-অপছন্দ খুব ভালো করে জানে তারা।সেই সাথে নিজেদের বিয়ে নিয়ে বুনে রাখা স্বপ্ন গুলোও একে-অপরকে বলাটা বাদ যায়নি তাদের।

প্রায় আধ ঘন্টা অপেক্ষার প্রহর গুণার পরেও আর্শের দেখা না মিলায় চেহারায় বিরক্তি স্পষ্ট ফুটে উঠেছে মিয়ামির।এক বুক উত্তেজনা নিয়ে আর্শের অপেক্ষায় প্রহর গুনে চলছে সে।সময়ের সাথে ধীরে ধীরে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে আরম্ভ করেছে তার।অনেকক্ষণ ধরে বসে থাকায় আর বসে থাকতে ইচ্ছে ও হলো না।বিছানা থেকে নেমে পুরো কক্ষের সাজানো টা মুগ্ধ চোখে একবার দেখে নেয় মিয়ামি।চোখ তৃপ্ত হতেই হাতের মুঠোফোন টা খুলে তাতে কক্ষের বিভিন্ন স্থানের ছবি ক্যামেরাবন্দি করে নেয় সে।এই সুন্দর মুহূর্তটা ক্যামেরাবন্দি না করলে যেনো বড্ড অপরাধ হয়ে যেতো!
বাসর রাত অর্থাৎ বিয়ের প্রথম রাতটি নিয়ে বলতে গেলে প্রতিটি মেয়ের মাঝেই ভয়,সংকোচ, লজ্জা ও জড়তা কাজ করে।ছেলেদের মাঝে ভয়, সংকোচ কাজ না করলেও লজ্জা ও জড়তা টা তারাও অনুভব করে।হয়তো মেয়েদের তুলনায় কম নয়তো সমান সমান।পারিবারিক বিয়েতে পাত্র-পাত্রী উভয়ের মাঝেই এসব অনুভূতিগুলো বেশি অনুভব হয়।তবে যাদের বিয়ের পূর্বে ভালোবাসা থাকে তাদের মাঝে যে এসকল অনুভূতি কাজ করে না এমনটি নয়!তাদের মাঝেও কাজ করে তবে তা পরিমাণে কম।
আজ মিয়ামির বাসর রাত হলেও ভয়,জড়তা, সংকোচ বা লজ্জার ছিটেফোঁটাও নেই মিয়ামির মাঝে।যা আছে তা কেবল উত্তেজনা,আনন্দ,উল্লাস।
আসলে বয়স কম হলে মানুষ অনেক জটিল বা গম্ভীর বিষয়গুলোর গভীরতা টা তেমন একটা অনুভব করে না।কারণ বয়স বাড়ার সাথে সাথেই মানুষ সমাজ বা বাস্তবতার জঘন্য রূপগুলো আবিষ্কার করতে থাকে।ফলে তাদের মাঝে নেতিবাচক চিন্তা সৃষ্টি হয়।সেই সাথে তারা অনেক কিছুর গভীরতা বুঝতে শেখে।কিন্তু যখন মানুষের বয়স কম থাকে তখন সিংহভাগ মানুষদের মাঝেই নেতিবাচক চিন্তা খুব কম থাকে।ফলে তারা যেকোনো বিষয় সহজে গ্রহণ করতে পারে,তাদের মাঝে নেতিবাচক কোনো চিন্তা কাজ করে না।
যেমনটি মিয়ামির মাঝে কোনো চিন্তাই কাজ করছে না।সে এতোটুকু ভেবেই সুখী যে,তার স্বপ্নের পুরুষ টা,তার প্রথম প্রেম সারা টা জীবনের জন্যে তার হয়ে গিয়েছে।আজ তার প্রথম সাফল্য হলেও আর্শকে ড্রাগ আসক্তি থেকে মুক্ত করে মিয়ামিতে আসক্ত করতে পারলেই তাদের প্রণয়ের বিজয় হবে এবং সেদিনই প্রকৃতপক্ষে মিয়ামি সফল হবে।মিয়ামির নিজের উপর বিশ্বাস আছে সে সফল হবেই হবে সৃষ্টিকর্তার হুকুমে।
তাই মনের আনন্দে সে সকল চিন্তা ফেলে কক্ষের এই ছোট ছোট মোমবাতি গুলোর হলদে আলোতে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে।
ছবি তোলার মাঝেই দরজা লাগানোর শব্দ কানে আসে মিয়ামির।চটজলদি ফোনটা বিছানায় রেখে দরজার দিকে ফিরে দাঁড়ায় সে।
আর্শ ঠোঁটে মৃদু হাসি নিয়ে মিয়ামির কাছে আসতে আসতে বলে ওঠে,
-বাহ,জামাইকে রেখেই সেলফি-কুলফি তোলা শেষ!
আর্শের কথার উত্তরে ঠোঁটে একটু হাসি টেনে মিয়ামি বলে ওঠে,
-আসসালামু আলাইকুম।তুমি আসতে এত্তো লেট করলা ক্যান?
-ওয়ালাইকুম আসসালাম,তোমার ননদ গুণে গুণে ২০ হাজার টাকা নিছে গেট আঁটকায়ে।চাইছিলো ২৫ হাজার,মানে বোঝো?আমার বেতনের অর্ধেক।তারপর অনেক কষ্টে ৫ হাজার কমিয়ে ২০ হাজার দিয়ে তবেই রুমে ঢুকতে সফল হলাম।
ঠোঁটের হাসিটি আরেকটু প্রসস্থ করে মিয়ামি বলে ওঠে,
-তাহলে তো আর্শি তোমার উপর দয়া করছে।আমাদের তো পরিকল্পনা ছিলো গেট আঁটকায়ে একজন-আরেকজনের বরের কাছ থেকে ৩০ হাজার করে টাকা নিবো।
-পাগল তোমরা?এতো টাকা কে নেয়?
-এহহ! পুরো ৩০ হাজার কি আমাদের একার পকেটে আসবে নাকি?সব কাজিনরা ভাগাভাগি করে নিতে নিতে দেখা যায় ১-২ হাজার টাকা আসে আমাদের পকেটে।
মিয়ামির কথায় একটু হাসে আর্শ তবে কিচ্ছু টি বলে না।এই মুহূর্তে তার চোখজোড়া ব্যস্ত নিজ স্ত্রীর পা হতে মাথা অব্দি পর্যবেক্ষণ করায়।
লাল রঙের একটি বেনারসি শাড়ি পরেছে মেয়েটি।অলংকার বলতে তেমন আহামরি কিছু পড়েনি।আর্শের বাড়ি থেকে দেওয়া সোনার অলংকারগুলোই শুধু পরেছে মেয়েটি।আর সাজ বলতে ঠোঁটে লাল লিপস্টিক,মুখে হয়তো ফেস পাওডার দেওয়া আর চোখে গাঢ় কাজল।
ব্যাস,এসব সাধারণ সাজেই নজরকাঁড়া সুন্দর লাগছে মেয়েটিকে।মিয়ামিকে সদা-সর্বদাই দেখতে অন্য সকল নারীদের থেকে বেশি সুন্দর লাগে আর্শের কাছে।এটি এর জন্য নয় যে,মিয়ামি সত্যিই অন্যদের থেকে বেশি সুন্দর। এর কারণটি হচ্ছে, আর্শের মনে মিয়ামির জন্যে জমে থাকা ভালোবাসা টা।প্রকৃত ভালোবাসায় ভালোবাসার মানুষটিকে আমাদের দৃষ্টিতে অন্য সবার থেকে বেশি সুন্দর লাগে।
মিয়ামির দিকে দৃষ্টি স্থির রেখে ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে যায় আর্শ।দূরত্ব অনেকটা কমিয়ে এক হাতে আলতো করে মিয়ামির গাল স্পর্শ করে সে।আর্শের স্পর্শে ঠোঁটে মৃদু হাসি ফুটে ওঠে মিয়ামির।মেয়েটিও নিজের চোখজোড়া আর্শের চোখ পানে স্থির রাখে।আর্শ এক হাতে মিয়ামির গাল ও অপর হাতে মিয়ামির কোমর আঁকড়ে ধরে মেয়েটিকে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।নাকে নাক ঘষে মৃদু স্বরে বলে ওঠে,
-এই পিচ্চি টা সত্যিই আমার বউ?
উত্তরে ঠোঁটে একটু হাসি টেনে মিয়ামি বলে ওঠে,
-এই বুড়ো টা সত্যিই আমার বর?
উত্তরে আর্শ কিছু বলে না।তাদের উভয়ের ঠোঁটেই হাসি।প্রশান্তির হাসি!
কিছু টা সময় এভাবেই একে-অপরকে অনুভব করবার পর নিরবতা ভেঙে আর্শ বলে ওঠে,
-অসম্ভব সুন্দর লাগছে তোমায়!
এ কথার উত্তরে কোনো বাক্য ব্যয় না করে মিয়ামি আলতো করে জড়িয়ে ধরে আর্শকে।নিজের অর্ধাঙ্গকে জড়িয়ে ধরে নিজেকে পূর্ণ পূর্ণ অনুভব করছে সে।তারা উভয়ই নিজেদের চোখজোড়া বুজে নিয়ে একে-অপরের হৃৎস্পন্দন অনুভবে ব্যস্ত হয়ে পরেছে।

!!
এতো দিনের ব্যস্ততার আজ অবসান ঘটলো।অবশেষে,বিয়েটা সম্পন্ন হয়েছে।ক্লান্ত শরীর বিছানায় এলিয়ে দিতেই আর্শির চোখের সামনে বিহানের চেহারাটি ভেসে উঠলো।ছেলেটিকে নীল পাঞ্জাবিতে আজ ভীষণ সুন্দর লাগছিলো।চোখ ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না আর্শির।বিয়ের পুরোটা সময় সে লুকিয়ে লুকিয়ে বেশ ক’বার দেখে নিয়েছে বিহানকে।বেশ ক’বার বিহানের সাথে চোখাচোখিও হয়েছিলো তার।
‘কবুল’ বলার পর্বটি শেষ হতেই যখন ছেলে-মেয়েদের মাঝের পর্দাটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছিলো তখন হুট করেই আর্শির হৃৎস্পন্দন অনেকটা বেড়ে গিয়েছিলো।অবাধ্য চোখজোড়া বিহানের দেখা পাবার আশায় ব্যস্ত হয়ে পরেছিলো।আর দেখা পেয়েছিলোও বটে।কেনোই যেনো আর্শির বারংবার মনে হচ্ছিলো,কেবল সে ই নয় বরং বিহানও সবার নজর এড়িয়ে তাকে দেখে চলছিলো, কথা বলবার সুযোগ খুঁজছিলো।
এসব ভাবতেই আর্শি দেরি না করে নিজের আইডিটি আবার এক্টিভ করে।ম্যাসেন্জারে ঢুকে দেখে বিহান এক্টিভ আছে।ছেলেটিকে ম্যাসেজ দিতে ইচ্ছে হলেও বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো আত্মসম্মান।তাই আর অপেক্ষা না করে আবারও আইডিটি ডিএক্টিভ করার অপশনে ঢুকলো আর্শি কিন্তু এর থেকে বেশি আগানোর পূর্বেই তার ফোনে একটি ম্যাসেজের নোটিফিকেশন আসে।
ম্যাসেজটি অন্য কেউ নয় বিহানই দিয়েছে।
“কেমন আছো?”
বিহানের এমন ম্যাসেজ পেয়ে আর্শির হৃদয় ধুক ধুক শব্দ করে স্পন্দিত হতে শুরু করেছে।এতোগুলো দিন পর ছেলেটির এই একটি ম্যাসেজই আর্শির ঠোঁটের অকৃত্রিম হাসির কারণ।আবার মেয়েটির মনে ম্যাসেজের উত্তর দিবে কিনা তা নিয়ে দ্বিধাও কাজ করছে।মস্তিষ্কের উপদেশ,অভিমান,আত্মসম্মান সব কিছুকে নিজের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মনকে জয়ী ঘোষণা করে আর্শি বিহানের ম্যাসেজের উত্তর দিয়েই দিলো,
“আলহামদুলিল্লাহ,আপনি?”

!!
মিয়ামিকে শরীরের অলংকারগুলো খুলতে বলে নিজে ওয়াশরুম হতে গোসল সেরে বের হয় আর্শ।সে বের হতেই মিয়ামি গোসল সারতে ঢুকে পরে। ঠিক তখন থেকে বিছানার বাম পাশে মিয়ামির অপেক্ষায় বসে বসে ফেসবুকিং করতে করতেই প্রায় ১৫ মিনিট হয়ে পাড় করে ফেলেছে আর্শ কিন্তু মেয়েটি এখনো বের হলো না।তবে এ নিয়ে আর্শের মাথাব্যথা নেই।সে তো নিজের ফোনের সাথে সুখে শান্তিতে সংসার করতে ব্যস্ত।
প্রায় ২০ মিনিট হতেই মিয়ামি ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আসে।দরজা খোলার শব্দ পেয়ে আর্শ সেদিকে তাকায়।তার চোখ যেনো আঁটকে গিয়েছে মেয়েটিতে।একটি টি-শার্ট আর প্যান্ট পরেছে মেয়েটি।অবশ্য মিয়ামি যে রাতে এই পোশাকেই ঘুমায় তা অজানা নয় আর্শের।আগেও কয়েকবার মিয়ামিকে এভাবে দেখেছে সে।কিন্তু আজ কেনো যেনো অন্য রকম সুন্দর লাগছে মেয়েটিকে।
মেয়েটির থেকে চোখ ফিরাতে বিন্দু পরিমাণ ইচ্ছে হচ্ছে না আর্শের,ড্যাবড্যাব করে সে মেয়েটিকে দেখে চলছে।
মাথার চুল মুছে গামছা টা বারান্দায় নেড়ে দিয়ে কক্ষে এসে আর্শের দিকে তাকাতেই মিয়ামি দেখতে পায় ছেলেটি তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আর্শের এমন চাহনিতে একটু লজ্জা লাগে মিয়ামির।ঠোঁটে ফুটে ওঠে আলতো হাসি।সে ধীর কদমে বিছানায় উঠে আর্শের বুকে মাথা রেখে বলে ওঠে,
-ঘুম পাচ্ছে আর্শ।শুয়ে পরো না!আমি তোমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাবো।
এই প্রথম মিয়ামির মুখে ‘আর্শ’ শব্দটি শুনে ভীষণ অবাক হয় আর্শ।বিস্মিত চোখে মিয়ামির দিকে তাকিয়ে সে বলে ওঠে,
-আর্শ?
-তো কি ভাইটু বলবো?আর আমাদের বাচ্চা-কাচ্চারা তোমাকে মামাটু বলবে?
মিয়ামির কথায় হেসে ওঠে আর্শ।ঠোঁটে হাসি নিয়েই বলে ওঠে,
-ওহ,তাই তো!
-হ্যা,এখন শোও তো জলদি।
আর্শ কথা না বাড়িয়ে শুয়ে পরে।মিয়ামিও তার বুকে মাথা রেখে তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরে।উভয়ই নিজেদের চোখ বুজে নিয়েছে ঘুমাবার উদ্দেশ্যে।এভাবে কিছুটা সময় পাড় হতেই আর্শ হটাৎ নিজের গলায় মিয়ামির ঠোঁটের স্পর্শ পায়।সাথে সাথে চোখ মেলে তাকায় সে।মিয়ামি তার দিকেই তাকিয়ে আছে।চোখে চোখ পরতেই আর্শ ব্রু কুঁচকে বলে ওঠে,
-ঘুমাও না কেন?
-তোমার মতো নিরামিষ নাহ,তাই।আগে একটু আদর করি তারপর ঘুমাবো।তুমি চোখ বন্ধ করো তো।
আর্শ উত্তরে কিছু বলার মতো খুঁজে পেলো না।তাই দেরি না করেই নিজের চোখজোড়া বুজে নেয় সে।আর্শ খুব ভালোই বুঝতে পারছে যে,আর কিছুক্ষণের মাঝেই সে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কিছু একটা করে বসবে।একে তো আজ রাত টাই বিশেষ, তার উপর প্রিয় মানুষটি এতোটা আবেদনময়ী রূপে তার এতোটা কাছে! এমনটাবস্থায় নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা কতোটা কষ্টকর টা আর্শের থেকে ভালো কেউ অনুভব করতে পারবে না।
আর্শ চোখজোড়া বুজতেই মিয়ামি ঠোঁটে মৃদু হাসি টেনে আর্শের খোচাখোচা দাঁড়িতে হাত বুলোতে বুলোতে গালে,কপালে,নাকে চুমু বসিয়ে দেয়।মিয়ামির গরম নিঃশ্বাস আর্শের মুখের উপর এসে পরছে আর আর্শের ভেতরের সব কিছু উলোটপালোট হয়ে যাচ্ছে।ছেলেটির হৃৎস্পন্দনও স্বাভাবিকের থেকে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। মিয়ামির এমন অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আচমকা মিয়ামিকে বিছানায় ফেলে তার উপর ভর দিয়ে শুয়ে পরে আর্শ।ছেলেটি ঘন নিঃশ্বাস নিজের মাঝে টেনে নিতে নিতে মৃদু স্বরে বলে ওঠে,
-আই কান্ট কন্ট্রোল এনি মোর।[আমি আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না]
বলেই আর দেরি করে না আর্শ।মিয়ামির ওষ্ঠদ্বয়ে নিজের ওষ্ঠদ্বয় মিশিয়ে নেয়।আর্শের এক হাত মিয়ামির মাথার নিচে এবং অপর হাত মিয়ামির জামা ভেদ করে তার উন্মুক্ত পেটে বিচরণ করছে।মিয়ামিও দু’হাতে আর্শের চুল শক্ত করে খামচে ধরেছে।
এভাবেই বেশ কিছুক্ষণ পাড় হতেই উভয়ে হাঁপিয়ে গিয়ে একে অপরের কাছ থেকে সরে এসে কপালে কপাল ঠেকিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে আরম্ভ করে।সময়ের সাথে উভয়ের নিঃশ্বাসের বেগ কিছুটা স্বাভাবিক হতেই আর্শ মিয়ামির গলায় মুখ গুঁজে শুয়ে সেথায় ঠোঁট বুলিয়ে মৃদু কন্ঠে বলে ওঠে,
-ঘুমাও।

চলবে।
চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here