প্রয়োজনে প্রিয়জন পর্ব -১৯+২০

#প্রয়োজনে_প্রিয়জন
#পর্ব_১৯
#তানজিলা_খাতুন_তানু

খোলা আকাশের নীচে দুজন দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। হালকা শীতল বাতাস দুজনকেই বারবার স্পর্শ করে চলেছে,অতসী নিজের গায়ের ওড়নাটা আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল…

– আপনাকে এখন ছাদে আসতে বললাম বলে,রাগ করলেন?
– না। কি বলবে বলো।

অতসী চুপ করে গেল, আদৃত অতসীর মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করে চলেছে ওর মনের খবর। কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর, অতসী নিজে থেকেই মুখ খুলল…

– জীবন আমাকে যখন যে পাড়ে নিয়ে এসেছে, আমি সেই পাড়েই এসেছি। কখনো কোন অভিযোগ করিনি তবে আজকে করতে মন চাইছে, শুনবেন?

আদৃত নিজের দৃষ্টি অন্যদিকে করে নিয়েছিল। অতসীর শেষ কথাটা শুনে চট করে ওর চোখের দিকে তাকাল, অতসীর চোখে স্পস্ট কোনো কিছু না পাওয়ার যন্ত্রনা ফুটে উঠেছে। আচ্ছা তাহলে কি অতসীর জীবনেও অনেক কষ্ট, দুঃখ আছে! আদৃত নিজের মনে নিজেকেই প্রশ্ন করল। তারপর অতসীর দিকে তাকিয়ে ঘাড় নাড়িয়ে বোঝালো হ্যাঁ।অতসী একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতে শুরু করল…

– অভিযোগ তো অনেককিছুই করতে মন চাই, তবে সবকিছু বলা হয়ে উঠে ন। আজকে কিছু মানুষকে নিয়ে অভিযোগ করব, যারা না থাকলে হয়তো কঠিন হৃদয়ের অতসী নিজের খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসতো না।
– মানে?

অতসী মৃদু হাসল। নিজের জীবনটা কেন এতটা অগোছালো, এলোমেলো সেটা বুঝে উঠতে পারে না।

– সদ্য কলেজে ভর্তি হয়েছি। বন্ধু-বান্ধব কেউই হয়ে উঠেনি কারনটা আমার সাধারন সাজপোশাক, আর শান্ত স্বভাব। নিত্যদিনের মতো ক্লাসে বসেছিলাম, ক্লাস শুরু হলো বলে তখনি একটা মেয়ে চট করে আমার পাশে বসে পড়ল.. আমি অবাক হয়ে মেয়েটির দিকে তাকালাম, মেয়েটি সুন্দরী, পোশাক দেখে মনে হচ্ছে বড়োলোক বাড়ির মেয়ে। ক্লাসে স্যার চলে আসাতে তার সাথে আর কথা বলা হয়ে উঠল না। ক্লাস শেষে নিজে থেকেই বলে উঠল…

– তোমার নাম কি?
– আমি অতসী। তুমি।
– আমি জিনিয়া। আমরা কি ফ্রেন্ড হতে পারি।

অতসী খুব অবাক হলো, বড়োলোকের মেয়ে হয়ে ওর মতো একটা সাধারণ মেয়েকে ফ্রেন্ড করতে চাইছে বিষয়টি ওকে একটু অবাক করল। তবুও না করল না। শুরু হয়ে যায় একটা মিষ্টি সম্পর্ক। আসতে আসতে দুজনে আরো ক্লোজ হয়ে পড়ে। একদিন…

– আজকে আমি আমার কাজিনের সাথে তোর আলাপ করিয়ে দেব চল।

অতসী প্রথমে একটু নাকোচ করলেও জিনিয়া নাছোড়বান্দা তাই ওকে যেতেই হলো। ক্যান্টিনে বসিয়ে জিনিয়া ওর কাজিনকে ডেকে পাঠাল..

-হাই জিনি।
-হ্যালো। ওটা আমার ফ্রেন্ড অতসী।

মিহান অতসীর দিকে তাকালো। প্রথম দেখাতেই অতসী কে ওর বড্ড ভালো লেগে যায়, তাই ওর সাথে ফ্রেন্ডশিপ করে। তিনজনের বন্ধুত্ব ভালোই চলছিল, মিহান সবসময়েই অতসী কে খুব কেয়ার করত, অতসীর মনে সন্দেহের সৃষ্টি হতে থাকে তাই মিহান কে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। সেটাই কাল হয়ে দাঁড়াল।

অতসীর ইগনোর করাতে, মিহানের মনের সুপ্ত কথাটা ওর নিজের কাছে প্রকাশিত হয়ে যায়। পরেরদিন কলেজে গিয়ে অতসীর সাথে আগে দেখা করে, অতসী এড়িয়ে যেতে চাই কিন্তু কোনো লাভ হয় না।

– অতসী এইরকম কেন করছ।
– আমি কিছু করিনি পথ ছাড়ো মিহান।

মিহান পথ ছেড়ে দিতেই, অতসী দুইপা ফেলে দিতে গিয়ে যেতেই মিহান করুন কন্ঠে বলে উঠল..

– ভালোবাসি অতসী।

অতসীর পা দুটো থমকে যায়। তবুও মিহানের দিকে ঘুরে তাকায় না, মিহান আগিয়ে এসে অতসীর সামনে দাঁড়িয়ে রিকুয়েস্ট করে…

– ভালোবাসতে হবে না তবে আমার সাথে বন্ধুত্বটা নষ্ট করো না প্লিজ।

মিহানের রিকুয়েস্টে অতসী পুনরায় ওর সাথে কথা বলতে শুরু করে। মিহানের কেয়ার,ভালোবাসা দেখে অতসী কিছুটা দূর্বল হয়ে পড়ে ওর প্রতি আর রিলেশনে জড়িয়ে পড়ে। রিলেশনের তিনমাস ভালোই কাটে, মিহান অতসী কে জানায় ..

– অতু আমি বাড়িতে তোমার কথা বলতে চাই।
– কিন্তু।
– কোনো কিন্তু নয়। আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলতে চাই না।

অতসী আর কিছু বলে না। মিহানের সিদ্ধান্ততে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ করেই মিহান বদলে যেতে শুরু করে। অতসীর বিষয়টা চোখে লাগে, বারবার জিজ্ঞেস করতে থাকে।

– মিহান তুমি ঠিক আছো?
– হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন!
– না আগের মিহান টা হঠাৎ করেই যেন বদলে গেছে, পুরানো মিহানকে খুঁজে পাচ্ছি না আমি।
– তোমার মনের ভুল, আমি ঠিক আছি। চিন্তা করো না।
– হুম।

অতসী নিজের মনকে বুঝ দিয়ে থাকতে শুরু করে।
একদিন হঠাৎ জানতে পারে, জিনিয়ার সাথে মিহান রিলেশন জড়িয়ে গেছে। বড্ড আঘাত পায় অতসী, মিহানের সাথে কথা বলতে চাই কিন্তু মিহান বিষয়টি এড়িয়ে চলে তাই বাধ্য হয়েই জিনিয়ার মুখোমুখি হয়, আর বাকিটা তো সকলেরই জানা। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই জিনিয়া আর অতসীর বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যায় আর অতসী প্রতিবাদী হয়ে ওঠে।

সমস্তটা বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল অতসী। আদৃত ওর দিকে তাকিয়ে বলল…

– মিহান কে এখনো ভালোবাসো?

অতসী চট করে আদৃতের চোখের দিকে তাকিয়ে বলল..
– ভালোবাসি কিনা জানি না, তবে আমি চাই মিহান আর জিনিয়া ভালো থাকুক।
– যারা তোমার সাথে প্রতারনা করল, তাদের তুমি ভালো চাইছ?

অতসী আদৃতের চোখের দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল..

– প্রতিশোধ নামক জিনিসটাকে আমি বড্ড ঘৃনা করি। প্রতিশোধ শুধু কেড়ে নিতেই পারে, কিছু দিতে নয়। জিনিয়া আমার প্রিয়জন ছিল আর মিহান ওহ। আমি জানি ওদের দুজনের কেউই আমাকে ঠকায়নি। জিনিয়া নিজের ভালোবাসা বাঁচাতে চেয়েছে আর মিহান পরিস্থিতির শিকার।
– পরিস্থিতির শিকার মানে কি?
– সে অনেক কথা। মিহানের জীবনটা অনেক অনেক জটিলতা দিয়ে ঘেরা। আর সেইসব জটিলতা গুলোই মিহান কে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে। মিহান নিজেও ভালো নেয়।
– তাহলে এখন তুমি করতে চাইছ।
– কিছুই না। মিহানের জীবনের সমস্যাগুলো জিনিয়া ঠিক মিটিয়ে নেবে।
– আর তোমার জীবনটা।
– কারোর প্রয়োজনের সঙ্গী হয়েই না হয় জীবনটাকে কাটিয়ে দেব।
– কাউকে ভালোবাসতে মন চাই না?
– না, বিশ্বাস নামক বস্তুটাই আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। আর বিশ্বাস শব্দটা না থাকলে কখনোই কাউকে ভালোবাসা সম্ভব হয়ে উঠে না।

আদৃত ওর দিকে তাকিয়ে বলল…
– সমস্যা থাকতেই পারে, কিন্তু তার সমাধান ওহ আছে।
– আমার জীবনের সমস্যাগুলোর সমাধান নেয়, হয়তো আমি নিজেই এর কোনো সমাধান চাই না, তাই।

অতসী আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। তারপরে বলল…

– বাদ দিন এইসব। সবকিছুর মাঝে আসল কথাটা বলতেই ভুলতে গেছি।
– কি কথা।
– আমি চাইছিলাম….
– কি?

অতসীর কথা শুনে আদৃত চমকে উঠল…

#চলবে…#প্রয়োজনে_প্রিয়জন
#পর্ব_২০
#তানজিলা_খাতুন_তানু

– আমি আর এই বাড়িতে থাকতে পারব না।

আদৃত চমকে উঠল অতসীর কথা শুনে। আদৃত কিছু বলতে যাবে তার আগেই অতসী বলল…

– আরুর প্রতি আমি একটু দূর্বল, সেই কারনেই এই বাড়িতে থাকা নিয়ে আমি বেশি জোর করিনি। নিজের ইচ্ছাতেই এই বাড়িতে থাকতে রাজি হয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু আমার মনে হচ্ছে বিষয়টি আমার ভুল হয়েছে।
– ভুল মানে?
– দেখুন, আমি একজন অবিবাহিত মেয়ে। আর আপনাদের বাড়িতে আমার থাকাটা সকলে ভালো চোখে দেখছে না। আমি আর থাকতে পারব না, প্লিজ জোড় করবেন না।

আদৃত কিছু বলল না। প্রতিটা মানুষেরই নিজস্ব কিছু মতমত থাকে, জোর করে চাপিয়ে দেওয়াটা ঠিক নয়।

– কি হলো চুপ করে গেলেন কেন?
– না কিছু না। ঠিক আছে তোমার সমস্যা হলে তুমি চলে যেতে পারো। আমি জোর করবো না।

অতসী আর কিছু বলল না। আরো কিছুক্ষণ কেটে যায়, আদৃত নিজে থেকেই বলল…

– রাত তো অনেক হলো, চলো নীচে চলো।
– হুম, আপনি যান আমি আসছি।
– ওকে।

আদৃত নিচে চলে যেতে, অতসী আরো কিছুক্ষণ থেকে তারপরে নিজের ঘরে কান্নায় ভেংগে পড়ল। কষ্টগুলো পুনরায় নাড়া দিয়ে উঠছে, পুরানো ক্ষতগুলো তাজা হয়ে উঠছে অতসী কি পারবে সবকিছু সহ্য করে টিকে থাকতে।

আদৃত নিজের ঘরে গিয়ে আরুর কপালে একটা চুমু দিয়ে বলল…

– মারে আমাকে মাফ করে দিস। তোর আন্টিকে তোর কাছে রাখতে পারলাম না আমি।

পরেরদিন…

অতসী নিজের জিনিসপত্র গুছিয়ে সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যেতে যায়। আরু তো কিছুতেই ওকে বাড়ি থেকে যেতে দিতে রাজি নয়, কান্না করে চলেছে।

– মিষ্টিবুড়ি কান্না করো না সোনা। আমি তো প্রতিদিন তোমাকে পড়াতে আসব, আর তুমি যদি কান্না করো তাহলে কিন্তু আর আসবো না।
– সত্যি আসবে তো।
– হুম।

মিতু আরুকে সামলে নিয়ে বলল…

– অতসী বাড়ি থেকে না গেলেই পারতে।

অতসী কিছু বলল না, শুধু হাসলো। অতসীর বাড়ি ছাড়ার সময়ে আদৃত বাড়িতে ছিল না। অতসী নিজের ঠিকানার উদ্দেশ্য রওনা দিলো। যাবার আগে বাড়ির দিকে তাকিয়ে বিরবির করে বলল…

– যদি আমার সামর্থ্য থাকত তাহলে এই মানুষগুলোর জীবনে আর ফিরে আসতাম না। কিন্তু কিছু একটা বড্ড টানে আমাকে, এই বাড়িটা আমাকে বড্ড বেশি টানে। একটা আবেগ কাজ করে, সবটাই কি আরুর জন্য নাকি অন্য কোনো কারন?

অতসী আগের বাড়িতে ফিরে গেছে। অনেকেই অনেককিছু বলছে সেগুলোকে অতসী পাত্তা দেয়নি। বিট্টু আর বাড়িওয়ালা প্রচন্ড রকমের খুশি হয়েছে অতসী ফিরে আসাতে। অতসী সকলের খুশি দেখে মৃদু হাসলো।

দুইদিন পর…

অতসী কলেজে যাবার পরেই শাহানার মুখোমুখি হলো। শাহানা বাঁকা হেসে বলল…

– কিরে খবর শুনেছিস।
– কি খবর।
– মিহান আর জিনিয়ার তো বিয়ে।

অতসীর মাঝে কোনো চঞ্চলতা ফুটে উঠলো না। বরং ওর মুখের কোনে হাসি ফুটে উঠল..

– এটা তো খুব ভালো খবর।
– মানে?
– মানে আবার কি?
– মিহানের বিয়ে তোর মাঝে কোনো ভাবাবেগ দেখা গেল না কেন?
– আমি চাই জিনিয়া আর মিহান ভালো থাকুক। আর একটা কথা বলি, কূটনীতি না করে মানুষের ভালো চাও দেখবে সবাই ভালো বাসবে তোমাকে।

অতসী আর কিছু না বলে চলে গেল। শাহানার মাথাতে কথাগুলো ঘুরতে লাগল…

– মিহান আর জিনিয়া অতসী কে ঠকানোর পরেও অতসী ওদের ভালো চাইছে। অথচ আমি বিনা কারনে মানুষের সাথে ঝামেলা করছি। সত্যি অনেকটা নীচে নেমে গেছি আমি!

শাহানার মধ্যে এই প্রথম অনুশোচনা বোধ হচ্ছে। অতসীর কথাগুলো শুনে নিজের মাঝে অনেক গুলো অনুভূতি হচ্ছে। তাহলে কি শাহানাও বদলে যাবে?

অতসীর সাথে সেইদিন জিনিয়ার আর দেখা হয়নি। পরেরদিন কলেজে গিয়ে অতসী নিজে থেকেই জিনিয়ার মুখোমুখি হলো।

– অভিনন্দন।
– কিসের জন্য?
– তোর আর মিহানের নতুন জীবনের জন্য।
– ধন্যবাদ।

অতসী মিষ্টি একটা হাসি দিলো। জিনিয়া ওর হাসির দিকে তাকিয়ে বলল…

– অতসী তুই কি সত্যি আমার ভালো চাস।
– কোনো সন্দেহ‌! আমি মন থেকে চাই তুই আর মিহান সত্যি ভালো থাক।

জিনিয়া কোনো কথা না বলে অতসী কে জড়িয়ে ধরলো।

– আরে কি করছিস?
– আমাকে মাফ করে দিস অতসী। আমি তোর সাথে অনেক অন্যায় করে ফেলেছি।

অতসী নিজের থেকে জিনিয়াকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল..

– আমি কিছু মনে করিনি। তুই মিহান কে নিয়ে ভালো থাকিস তাতেই আমি খুশি।
– হুম। আমার বিয়ের সমস্ত অনুষ্ঠানে তোকে কিন্তু আসতেই হবে।
– অবশ্যই যাবো।
– ধন্যবাদ।

অতসী জিনিয়ার দিকে তাকিয়ে নিজের মনে মনে বলল…

– তোর‌ বিয়েতে তো আমাকে যে যেতেই হবে। মিহানের এলোমেলো জীবনটার সবকিছু আমাকে জানতে হবে, আর তার জন্য তোদের বিয়েতে আমার উপস্থিত থাকাটা খুব জরুরী।

দিন নিজের গতিতে এগিয়ে চলেছে। জিনিয়ার সাথে অতসীর সম্পর্কটা আগের থেকে কিছুটা স্বাভাবিক। সেইদিনের পর মিহান আর কলেজে আসেনি। শাহানাও কিছুটা বদলে গেছে, অতসী সহ বাকিদের সাথেও আর ঝামেলা করেনা, নিজের মতো কলেজে আসে আবার চলে যায়। শাহানার পরির্বতন ওর বন্ধুদের ভাবিয়ে তুললেও অতসী স্বাভাবিক ছিল। ওহ বুঝেছিল, সেইদিনের কথাগুলো শাহানার আত্মসম্মানে আঘাত করেছে। তাই তো বদলে যেতে শুরু করেছে।

– অতসী।

নিজের নাম শুনে অতসী পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখল শাহানা দাঁড়িয়ে আছে।

– হ্যাঁ বলো।
– সরি।

অতসী মৃদু হাসলো, তারপর শাহানার কাঁধে হাত দিয়ে বলল…

– তুমি নিজেকে শুধরে নিতে শুরু করেছো এর থেকে আনন্দের আর কি হতে পারে। এইরকমই থেকো।

শাহানা অতসীর দিকে তাকাল, সত্যি মেয়েটা অন্য সবার থেকে আলাদা।

– আচ্ছা আমরা কি ফ্রেন্ড হতে পারি।

অতসী কিছু বললো না, বন্ধুত্ব নামক বস্তুটার প্রতি ওর আর একটুও বিশ্বাস নেই। অতসীর মনোভাব কিছুটা আন্দাজ করে শাহানা বলল…

– আমাকে বিশ্বাস করতে পারছ না তাই তো?
– আরে না। আচ্ছা ঠিক আছে,আজ থেকে আমরা বন্ধু।

শাহানার মুখে হাসি ফুটে উঠল। অতসীও হাসলো।

অন্যদিকে…

আরুকে নিয়মিত পড়াতে গেলেও আদৃতের মুখোমুখি হয়নি। আদৃত ইচ্ছা করেই অতসীর সামনে আসেনি সেটা ভালো করেই বুঝতে পারছে অতসী। অতসী নিজে থেকে আর কিছুই বলেনি।

অতসী ক্যান্টিনে গিয়ে বসার কিছুক্ষণের মধ্যে জিনিয়া ওর‌ সামনে এসে বসল।

– ওই তোর সাথে আমার একটা কথা আছে।
– কি কথা।
– আমার বিয়ে সামনের রবিবার। তোকে কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে আসতে হবে।
– বৃহস্পতিবার এতদিন আগে থেকে গিয়ে আমি কি করব।
– প্লিজ, প্লিজ।
– আচ্ছা ভেবে দেখছি।

জিনিয়ার সাথে অতসী কিছুক্ষণ কথা বলে , তারপর আদৃতের বাড়িতে যায় আরুকে টিউশনি পড়াতে।
আরুকে পড়ানোর মাঝে অতসী বারবার আনমনা হয়ে যাচ্ছে, মিতু আরুর ঘরে উঁকি নিয়ে দেখল অতসী আনমনা হয়ে বসে আছে। অতসীর কাঁধে হাত দিয়ে মিতু বলল…
– কোনো সমস্যা অতসী।
– না কিছু না।
– আমাকে বলতে পারো।

অতসী চোখের ইশারায় বোঝাল, আরুকে পড়ানোর পর বলছে। মিতু মাথা নাড়িয়ে চলে যায়। আরুকে পড়ানো শেষ করার পর অতসী মিতুকে বলল…

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here