প্রেমরোগ পর্ব -১৭+১৮

#প্রেমরোগ-১৭
#তাসনিম_তামান্না

বিকালের দিকে খবর পেলো গ্রামে মেলা হচ্ছে। মেলার কথা শুনেই কুয়াশা, মেঘা, তুতুল লাফিয়ে উঠে যাবে বলে। পাখির ও যেতে ইচ্ছে করছিল কিন্তু বাদ সাধে কুশান এই অবস্থায় মেলায় যাওয়া ঠিক না অঘটন ঘটতে সময় লাগবে না। পাখির মন খারাপ হলেও নিজেকে নিজে বুঝালো। তুষার, মেঘ, মেঘা, কুয়াশা, তুতুল মেলায় গেলো। তখন সন্ধ্যা নামছে ধরনিতে। রংবেরঙের কৃত্রিম আলো জ্বালিয়ে দিচ্ছে। মরিচবাতিগুলো বিভিন্ন সেডের হচ্ছে। কুয়াশার মেলায় ডুকতেই রেশমি চুড়িগুলোর দিকে মন টানলো। নেড়েচেড়ে চুড়ি দেখলো হাতে পড়লো না। তুষার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো।
” নাও লালটা তোমার হাতে ভালো লাগবে ”
তুষার নিজের হাতে কুয়াশাকে লাল রঙের চুড়ি পড়িয়ে দিলো। ফর্সা হাতে লাল ফুটে উঠেছে। হাত নেড়ে চুড়ির ঝনঝন শব্দ শুনে কুয়াশার মুখে হাসি ফুটে উঠলো। মেঘা নীল রংয়ের চুড়ি নিলো। তুতুলও ওদের দেখাদেখি করে সবুজ রঙের চুড়ি নিলো। কুয়াশা পাখির জন্যও চুড়ি নিলো। রাতের মেলায় লোকজনের সমাগম বাড়তে লাগলো। টুকটাক আরো অনেক কিছু কিনলো ওরা। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো বেবিদের খেলনাও কিনলো বেশ কয়েকটা। মেঘ বলল
” পাগল হয়ে গেছিস? বেবিদের খেলনা আমরা দোকান থেকেও কিনতে পারবো শুধু শুধু এতো পথ বয়ে নিয়ে যাওয়া ”
তুতুল বলল ” তুমি চুপ করো তুমি এসব বুঝবে না ”
” হ্যাঁ তোমরা তো বুঝদার কমিটির লিডার ”
মেঘা বলল
” ভাইয়া আমরা এখন ঝগড়া করার মুডে নাই তোকে পড়ে দেখে নিবো ”
মেলায় নাগরদোলা, আর নৌকাদোলা উঠেছে। মেঘ বলল ” চল নাগরদোলায় উঠবো ”
কিন্তু মেঘা, কুয়াশা যেতে রাজি হলো না। মেঘ বলল ” মেঘা কে যেতে হবে না আগের দিনের মতো অসুস্থ হয়ে যাবে কুয়াশা তুই যাবি ”
কুয়াশা যেতে না রাজ তবুও মেঘের জোড়াজুড়ি তে বাদ্ধ্য হয়ে যেতে হলো। নাগরদোলা উপরে উঠতেই কুয়াশা নিচের দিকে তাকালো মাথা ভনভন করে ঘুরে উঠলো। তুষার পাশে বসে ছিল। তুষারের হাত খামছে ধরলো নাগরদোলা উপরে নিচ উঠানামা করতে লাগলে কুয়াশা, তুতুল ভয়ে চিৎকার দিলো। কুয়াশা ভয়ে হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে তুষারের বুকে মাথা রাখে চোখ বন্ধ করে রইলো। তুষারও কুয়াশা কে দুহাতে আগলে নিলো। নাগরদোলায় চেচামেচি করছে কেউবা ভয়ে কেউবা আনন্দে এক্সাইটমেন্টে। নাগরদোলা থেকে নেমে কুয়াশা টলমল পায়ে হাঁটতে লাগলো। তুষার এসে ধরলো কুয়াশাকে বলল
” কি হচ্ছে? মাথা ঘুরছে ”
” হুম একটু ”
লেবুর পানির দোকানের একটা চেয়ারে কুয়াশাকে বসালো। মেঘা মজা করে বলল
” কি রে কেমন মজা করলি? যঘন্য এটা ফ্যান্টান্সটি কিংডমের রাইডের মতো ভ য়া নক ”
মেঘা হেসে বলল ” তোর চেচানো দেখেই বুঝেছি ”
” শ য় তা ন হাসবি না একদম ”
সবাই লেবুর শরবত খেলো। বাসায় ফেলার সময় সকলের জন্য বেশ অনেকগুলোই কদবেল কিনলো।
বাসা ক্লান্ত হয়ে ফিরে ফ্রেশ হয়ে কদবেল খেতে বসলো। পাখিও টক কদবেল দেখে জ্বিবে পানি চলে এলো। কুশান এবারও বাদ সাধলো
” এগুলো বাইরে থেকে মাখানো কি না কি দিয়েছে তোমাকে খেতে হবে না ”
পাখি এবার রেগে বলল ” সব কিছুতেই তোমার না তুমি চুপ থাকো এটা আমার ফেবারিট এটা আমি খাবোই কোনো বারণ শুনবো না ”
কুশান চোখ মুখ অন্ধকার করে বসে রইলো। কুয়াশা ভাইয়ের অবস্থা দেখে বলল ” এটা আমাদের সামনেই মাখিয়েছে ওনার হাতে গ্লাফস ও ছিল। তুমি এতো চিন্তা করো না কিছু হবে না ”
কুশান কিছু বলল না পাখির দিকে তাকিয়ে রইলো পাখি বাচ্চাদের মতো মজা করে খাচ্ছে আর খিলখিল করে হাসছে ওদের আনা খেলনা গুলো দেখে। কুশান ও হাসলো। ভালোবাসা মানুষের খুশির জন্য কিছু জিনিস মেনে নিতে হয়। তাকে তার মুখের প্রাণ খোলা হাসিটা দেখে মনপ্রাণ জুড়িয়ে যায়।
কুশান পাখির প্রেমের বিয়ে প্রথমে সকলে অমত জানেও পরে ছেলেমেয়ে মুখ দেখে মেনে নিয়েছে। পাখিও লক্ষি মেয়ে বিয়ে তিন বছরেও না শাশুড়ী ননদদের সাথে কোনো রকম খারাপ ব্যবহার বা ঝগড়াঝাটি রেকর্ড নেই। খারাপ পরিস্থিতি সবসময় সামলিয়ে এসেছে। শাশুড়ী রাগের মাথায় বকলেও পাখি কখনো মুখের ওপরে কথা বলে নি। রাগ কমে গেলে শাশুড়ীই এসে আমার নিজের ভুলের জন্য মাফ চেয়ে নেই অথবা পাখির নিজের ভুলের জন্য শাশুড়ী কাছে মাফ চেয়ে নেয়। রাগ, অভিমান, সব ভালো খারাপ মিলেই সম্পর্ক পরিবার। পাখি যখন প্রেগন্যান্ট এর পর থেকে যখন মোটা হতে লাগলো তখন বড্ড মন খারাপ করে কুশান কে বলে ছিল
” শোনো আমি দেখতে খারাপ হয়ে যাচ্ছি বলে কি তুমি আমাকে ভালোবাসা ও কমিয়ে দিবে? ”
কুশান মজা করে বলে ছিল ” ভালোবাসা কমিয়ে দিবো না আরেকটা বিয়ে করবো ”
সে কথা শুনে পাখি কাঁদতে কাঁদতে নাজেহাল অবস্থা পাখির অবস্থা দেখে প্রথমে কুশান হাসলেও পরবর্তীতে ভাবে এই মেয়েটা তাকে এতো ভালোবাসে? কুশান পাখির কান্না থামানোর জন্য বলেছিল ” তুমি পাগল হলে না-কি? দ্বিতীয় বার বিয়ে করলে তোমাকে করবো। তৃতীয় বার বিয়ে করলেও তোমাকেই করবো। এবার কান্না থামাও শরীর খারাপ করবে তো ”
পাখি কান্নারত ছলছল চোখে কুশানের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বলেছিল ” সত্যি তো? ”
” হুম তিন সত্যি ”
” আমি মরে গেলেও অন্য কেউকে তোমার পাশে সহয় করতে পারবো না ”
” হুঁশশ এসব কথা কেউ বলে? ”
কুশান বোঝে এই মেয়ের মধ্যে তার শত ভালোবাসা লুকিয়ে আছে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনলো তুষারের বাবা আজ সন্ধ্যায় ইনপ্টেন মিটিং আছে এখনি যেতে হবে। তুষারের বাবা-মা বেরিয়ে পড়লো।
আরও দুদিন পর সকলের ঘোরাঘুরি শেষ করে আজ বাসার দিকে রওনা হবে সকলে। যে যার সিটে বসে গেলো। ছোটরা একগাড়িতে বড়রা একগাড়িতে। ছোটদের গাড়ি আগেই চলছিল সকলে হাসিমজা করছিলো। বড়দের বাড়ি স্প্রিডে বেসামাল ভাবে আগে উঠে গেলো। কুশান বলল
” আচর্য্য এভাবে কেউ চালায়? ড্রাইভার কি পা গ ল হলো না-কি? ”
মেঘ বলল ” এভাবে চালালে তো অঘটন ঘটতে সময় লাগবে না ”
কুশান ফোন দিলো কৌশলের কাছে।
” হ্যালো আব্বু? ”
” হ্যাঁ ”
” এভাবে গাড়ি চালাছে কেনো? ভালো ভানে নরমাল ভাবে চালাতে বলো ”
” গাড়ি ব্রেকফেল করেছে। কিছু কাজ দিচ্ছে না নিজের মতো চলছে ”
কুশানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো হতভম্ব হয়ে গেলো চিল্লিয়ে বলল ” হোয়াট? ”
” কি করবো বুঝতেছি না ”
কুশান কাতর গলায় বলল ” আব্বু। কি হবে এখান ”
কৌশল বলল ” আমাদের কিছু হয়ে গেলে সবার খেয়াল তুমি রাখবে আব্বু কোনো কিছুতেই ভেঙে পড়বে না। কুয়াশা, পাখি, মেঘ, মেঘা ওদের সব দায়িত্ব তোমার দেখে রেখ ওদের ”
কুশান কেঁদে ফেললো বলল
” আব্বু এখন কি এসব বলার সময়? এভাবে বলো না প্লিজ ”
কৌশল দম ছেড়ে বলল ” বললাম না ভেঙে না পড়তে সবার দায়িত্ব তোমার। তুমি ওদের বট গাছ ”
কুয়াশা ভয়ার্ত গলায় বলল ” কি হয়েছে ভাইয়া কাঁদছো কেনো? ”
” ও গাড়ি ব্রেকফেল করেছে ”
সকলের মধ্যে কান্নাকাটি লেগে গেলো। একপ্রকার তুষার বড়দের গাড়ির পিছনে পিছনে বেশস্প্রিতেই যাচ্ছে।

চলবে ইনশাআল্লাহ#প্রেমরোগ-১৮
#তাসনিম_তামান্না

চৌধুরী বাড়িতে শোকের ছায়া নেমেছে। প্রিয় জন হারানোর হাহাকার চারিদিকে গ্রাস করে আছে। কারোর চোখের পানি শুকাচ্ছে না। একদিনে অনাকাঙ্ক্ষিত চারজনের একসাথে মৃত্যু কেউই মেনে নিতে পারছে না। চোখের সামনে বিভৎস দৃশ্যকল্প ভেসে উঠছে বার বার। মেঘা পাগলামি করছে। কুয়াশা নিরবে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে। কে কাকে শান্ত না দিবে? এক এক জন যে ভেঙে গুড়িয়ে গেছে। কেউ নিজেকে সামলাতে পারছে না। বাড়িতে চেনাজানা আত্মীয়স্বজনের সমাগম। ছেলেমেয়েগুলোর অবস্থা দেখে তাদের চোখেও পানি। তারাও আহাজারি করছে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটা কি না ঘটলে পারতো না? কাল থেকে কারোর মুখে কিছু টি পড়ে নি। মানুষের বিচ্ছেদ হয়। কিন্তু মৃত্যু বিচ্ছেদে মানুষ গুলোকে চাইলেও ছোঁয়া যায় না কথা বলা যায় না। আসরের নামাজের পর মাটি হয়ে গেছে চারজনের। কুয়াশা নিয়ে যাওয়ার সময় পাগলামি করলেও এখন শান্ত হয়ে বসে আছে। একদম থম মেরে যেনো সময়টা থেমে গেছে। পাখির এই শরীরে অজ্ঞান হয়ে গেছে। পাখির মা-বাবা, ভাই এসেছে। পাখিকে সামলাচ্ছে। জোর করে কয়েকবার খাইয়ে দিয়েছে এই অবস্থা না খেয়ে থাকলে আরেকটা বিপদ এসে জুড়বে। কুশান, মেঘ, মেঘা, কুয়াশার মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। মুখ শুকিয়ে একটু খানি হয়ে গেছে। আজ ওদের নামের পাশেও অনার্থ শব্দ টা জুড়ে গেলো। তিন অক্ষরের শব্দ কিন্তু কত ভারি শুনলেই বুকটা হু হু করে উঠে। সন্ধ্যা দিকে আত্মীয় স্বজনরা সকলে চলে গেছে। বাড়িতে গুটিকয়েক মানুষ ছাড়া কেউ নেই। কুয়াশা শান্ত হয়ে বসে চোখের পানি বিসর্জন দিচ্ছে। তিশা এসে কুয়াশার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল
” কাঁদলে হবে? খেতে হবে তো না হলে অসুস্থ হয়ে পড়বি তো চল উঠ খাবি ”
কুয়াশা চুপ করে রইলো। মায়ের কথা মনে পড়ছে খুব মা বকাঝকা করে খাওয়া তো। অভিমান করলে নিজেও না খেয়ে থাকতো কুয়াশা কেও খেতে বলতো না। এই তো সেদিনও তো মা বকলো আদর করলো। আর আজ নেই। জীবন কি এতোটাই অনিশ্চিত? আজ আছে তো কাল নেই। কুয়াশার মনে হলো সে মা’কে অনেক কষ্ট দিয়েছে। মায়ের কথা শুনে নি। অনেক মিথ্যা বলেছে। সব চোখের সামনে ভাসতে লাগলো। বুকের ভিতর হুহু করে উঠলো আর একটিবার কি ফিরে পাওয়া যাবে না? ভুল গুলো ভুল ই থেকে যাবে? শুধরে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই? আর মার কোলে মাথা রাখতে পারবে না? অভিমান করে থাকতে পারবে না? কেউ আর বকবে না? বাবা আর ভুল গুলো ধরিয়ে বুঝাবে না? অভিমান করে থাকলে বাবা আর খাইয়ে দিবে না? মেঘা, মেঘের নামে মামনির কাছে আর নালিশ দেওয়া হবে না। বাবাই এর কাছে আর আবদার করে খাওয়ার এনে দেওয়ার কথা বলা হবে না।কত কিছু হারিয়ে ফেললো এক নিমিশেষে। কুয়াশার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো। বসে থাকতে পারলো না ফুপিয়ে কেঁদে দৌড়ে চলে গেলো নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে ফ্যামেলি ফটো বুকে জড়িয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদলো। তিশা কয়েকবার দরজা ধাক্কা দিয়ে গেছে। কুয়াশা খুলেনি। কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্তিতে দুচোখের পাতা এক হয়ে গেলো। তলিয়ে গেলো নিদ্রাদেশে। কিন্তু ঘুম হলো না ভেঙে গেলো ভাইয়ের আদুরে কন্ঠে বলছে
” বাবুইপাখি কি হয়েছে? দরজা খোল। বাবুইপাখি দরজা খোল। ভাইয়া ডাকছে তোকে ”
কুয়াশার চোখ লাল হয়ে গেছে। সবাইকে উপেক্ষা করতে পারলেও ভাই আর বাবা কে কুয়াশা কখনো উপেক্ষা করতে পারে না। ঢুলুঢুলু পায়ে উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিয়ে ভাইয়ের শুকনো মুখের দিকে তাকালো। কুশানের হাতে খাবারের প্লেট। কুয়াশা ছলছল চোখে তাকিয়ে বলল
” খাবো না আমি এসব কেনো নিয়ে এসেছো? ”
কুশান খাবারের প্লেট নিয়ে বেডে বসে কুয়াশাকে বসিয়ে বলল ” না খেলে শরীর খারাপ করবে যে ”
কুয়াশা বাচ্চাদের মতো জিদ করে বলল ” তাও খাবো না সবাইকে এনে দাও। ”
কুশানের খুব অসহায় লাগছে নিজেকে এতোদিন বাবা নামক বটবৃক্ষের ছায়ায় ছিল কোনো ঝড় তাদের স্পর্শ করতে পারে নি। কিন্তু আজ সে তো সবার বড় সবাই কে সামলাতে পারছে না। বাবার কথা ও রক্ষা করতে পারছে না। কুশান দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল ” এমন করে না ময়নাপাখিটা। ভাইয়ার যে এনে দেওয়া সাধ্য নাই। পারলে এখনি এনে দিতো ”
কুয়াশা ভাইকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলল
” এমন কেনো হলো ভাইয়া এমন হওয়ার কি খুব দরকার ছিল। ‘আব্বু-আম্মু নেই’ এই শব্দটা এতো ভারি কেনো ভাইয়া? আমার খুব কষ্ট হচ্ছে ভাইয়া ”
কুশানের চোখেও পানি চলে আসলো নিজেকে সামলিয়ে বলল ” আমরা কাঁদলে তো আব্বু আম্মুর কষ্ট হবে কাঁদে না সোনা। আমরা এভাবে থাকলে আব্বু আম্মু ই তো কষ্ট হবে। খেয়ে নে। না খেলে শরীর খারাপ করবে ”
কুশান অনেক বুঝিয়ে কুয়াশাকে খাইয়ে দিলো কয়েক লোকমা কিন্তু সেটা কুয়াশার পেটে সহ্য হলো না ওয়াসরুমে গিয়ে বমি করে সব বের করে দিলো। কুশান বোনকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। তুষার কুয়াশার রুমে এসে কুয়াশার অবস্থা দেখে বুঝলো গ্যাসটিক হয়েছে এটা না খাওয়ার ফল।
কুয়াশা ক্লান্ত অবশ শরীর নিয়ে বিছানায় শুতেই তুষার বলল ” ভাইয়া তুমি যাও খেয়ে নাও ভাবিপু কে-ও খাইয়ে দাও মেঘা খেয়েছে মেঘ কেও খাইয়ে দিও আমি এখানে আছি কুয়াশার গ্যাসটিক হয়েছে আমি মেডিসিন দিচ্ছি ”
কুশান মাথা দুলিয়ে চলে গেলো ও ও আর পারছে না শরীরটা বড্ড ক্লান্ত লাগছে। কুয়াশার বন্ধ চোখের পাতা দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। তুষার কুয়াশার পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল
” মাথা ব্যথা করছে? ”
কুয়াশা উত্তর না দিয়ে ছলছল চোখে তুষারের দিকে তাকিয়ে বলল ” আব্বু আম্মুর কাছে নিয়ে যাবেন প্লিজ ”
তুষার চুপ থেকে বলল
” কাল নিয়ে যাবো। উঠে মেডিসিন গুলো খেয়ে নাও
কুয়াশা চুপচাপ খেয়ে নিলো। তুষার ইচ্ছে করে একটা ঘুমের ঔষধ ও দিয়ে ছিল। না হলে কুয়াশা না ঘুমিয়ে কান্নাকাটি করতো। কুয়াশা ঘুমালে তুষার নিচে আসলো। কুশান মেঘ কে বোঝাচ্ছে
” না খেয়ে তুই কি চাইছিস অসুস্থ হতে? চুপচাপ খেয়ে উঠবি আমি কোনো কথা শুনতে চাইছি না। তারা কখনোই আমাদের এভাবে দেখতে চাই নি আর এখনো চাই না ”
মেঘ কুশানের গলা দিয়ে খাবার নামছে না তবুও একটু জোর করে খেলো। না খেলে তো জীবন চলবে না আর এভাবে থাকলে একে একে সকলে অসুস্থ হয়ে পড়বে তখন কে কাকে দেখবে। সবাই রাতে ঘুমালেও কুশানের নির্ঘুম রাত কাটলো। মেঘ ঘুমালেনও একটু পর পর জেগে উঠছে।
চলবে ইনশাআল্লাহ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here