প্রেমালঘ্ন পর্ব -০৯+১০

#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ৯
,
,
,
,
,
,
বড় আব্বু আধার ভাইয়া আলিফ ভাইয়া আস্ফি ভাইয়া সবাই কেবিনে বসে আছে আধার ভাইয়া মুখটা নিচু করে রেখেছে।কারো মুখে কথা নেই সবাইকে চুপ থাকতে দেখে নিস্তব্ধ রুমে কথা বলে উঠলো সর্বপ্রথম বড় আব্বু

;আধার বাবা কিছু বলতে চেয়েছিলা্ আমরা কেউ তোমাকে জোর করছিনা ছায়া মা সুস্থ হোক তারপরে নাহয় সব শুনবো

আধার ভাইয়া এবার নিশ্বাস নিলেন জোড়ে যেনো এতোক্ষণ আটকে রেখেছিলেন নিজের মাঝে

;আমি আজকেই বলতে চায় সব তারপরে বাকি ডিসিশান আপনার।

সবাই এইবার নড়েচড়ে উঠলো আর ধ্যান দিলো আধার ভাইয়ার মুখ পানে আমি কি মনে করে ছায়া আপুকে নিয়ে আড়ালে দাড় করালাম ভাবলাম হয়তো ছায়া আপুর শুনা দরকার।আধার ভাইয়া এক গ্লাস পানি নিয়ে এক নিশ্বাসে শেষ করে দিলেন

;আমি নতুন কেবল জয়েন করেছিলাম আমার ফোর্সে।আমার প্রথম পোস্টিং হয়েছিলো চট্টগ্রাম এটা ৫ বছর আগের কথা সেসময় আমি সামান্য অফিসার ছিলাম তেমন কোন দ্বায়িত্ব ছিলোনা। তাই চট্টগ্রাম শহর টাকে দেখতে বেরিয়েছিলাম হঠাৎ ইমফোর্মেশান পাওয়া যায় চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটিতে নাকি কিছু ক্রিমিলাম এট্যাক করেছে আমাকে যেতে হবে। আমিও ছুটে গেছিলাম কাছে থাকায় আগে পৌঁছে গেছিলাম। সেখানে যেতেই দেখি একজন ক্রিমিনাল একটা মেয়ের গলায় ছুড়ি ধরে রেখেছে।গলার চামড়া হালকা চাকুর টান লাগায় রক্ত পরছিলো আমার কাজ ই ছিলো এই সব মারামারি রক্তারক্তি কিন্তু সেদিন ওই মেয়েটার রক্ত দেখে কেমন যেনো তাল গোল পেকে গেছিলো আমার । জানিনা কিসের জন্য

আলিফ ভাইয়া হঠাৎ বলে উঠলো
;মেয়েটা ছায়া ছিলো

;হুম তখন অবশ্য নাম জানতাম না আমি সে ও বলেছিলোনা যায় হোক। আমি কোন মতে পিছন দিয়ে যেয়ে এট্যাক করেছিলাম ওকে বাচানোর সাথে সাথেই বাকি অফিসার রা ও ক্রিমিনাল দের ধরে ফেলে।আমি ছায়াকে কিছু বলার আগেই সে জ্ঞান হারায় আমি ঘাবড়ে তাকে নিয়ে চলে যায় হস্পিটালে।ছায়া আমার লাইফে এসেছিলো একটা উড়ন্ত পাখির মতো যে আমার জন্য ছিলো অনেক লাকি ধীরে ধীরে প্রোমশন পেতে থাকলাম কিন্তু পাখিটার খোজ পেয়েছিলাম না আর তার বাবা নাকি তাকে নিয়ে চলে এসেছিলো রাজশাহী সেখানেই নাকি পড়াশুনা করাবে এমন টা জানিয়েছিলো ভার্সিটি থেকে। তিনি চায়তেন না তার মেয়ে এমন বিপদ জনক জায়গায় থাকুক।

;হুম আমার মেয়েরা আমার জন্য অনেক দামী আমি চাইতাম না তারা কষ্ট পাক কিন্তু হয়তো আমি পারিনি আমার মেয়েদের কষ্ট থেকে দূরে রাখতে

বড় আব্বু আমার দিকে তাকিয়ে কথা টা বলতেই আমি মাথা টা নিচু করে নিলাম। জানি কিসের জন্য বড় আব্বু এমন টা বলছে। নিজেকেই নিজের কাছে বড্ড নিচু মনে হচ্ছে।

;নিজের ক্যারিয়ার এর দিকে ফোকাস করলাম ৪ বছরে অনেক অনেক প্রোমশন মেডেল পেয়েছি সততার জন্য পোস্টিং ও হতে হয়েছে বহু জায়গায়। যার কারনে আমার শত্রুর অভাব ছিলোনা। দেন আমাকে এপোয়েন্ট করা হলো ওন এ সিক্রেট মিশান সেটা ছিলো রাজশাহীতে।আমি কোন দিন ধারণা করিনি আমি পাখিটাকে এইখানে পেয়ে যাবো। কিন্তু যতোদিনে পেয়েছিলাম ততোদিনে আমার এমন অবস্থা ছিলো যে কোন মহূর্তে সুট আউট আর নাহলে অন্য কিছুতে আমার মৃত্যু অনিবার্য ছিলো সেজন্য পাখি কে পেয়েও তার থেকে দূরে থাকতাম কিন্তু ভাগ্য বার বার ওর আশেপাশেই এনে দার করাতো। এরই মাঝে বুঝা হয়ে গেছিলো শুধু আমি না পাখিও আমাকে ভালোবাসে ধীরে তার পাগলামী আমার জন্য বেরে যাচ্ছিলো।আমি কোন মতেই চাচ্ছিলাম না সে জড়িয়ে যাক আমার সাথে তাহলে যে তার লাইফ ও রিস্কে এসে যাবে।

কিন্তু ৫ দিন আগে আপনাদের ফ্যামিলি অনুষ্ঠান ছিলো মনে হয় সেদিন আমি একটা লেডি অফিসারে সাথে মিশানে ছিলাম আমরা জানতে পেরেছিলাম পাশের ক্যাফেতে কিছু একটা অবৈধ কাজ চলছে।যার জন্য আমরা এজ এ কাপাল সেখানে গেছিলাম আর সেখানেই ছায়ার দেখা পাই আমি ভেবেছিলাম না এমনটা কিন্তু ভুল একজায়গায় করে ফেলি সেটা হলো আমি ওকে দেখে আসফিয়া মানে লেডি ইনস্পেকটর কে পরিচয় করায় এজ মাই ওয়াইফ আমি ভাবি সে হয়তো আমাকে ভুল বুঝে আমাকে ঘৃণা করে দূরে সরে যাবে আর হয়তো হয়েছেও সেটা কিন্তু আমি পারিনি তাকে ছাড়া সে যাওয়ার পরে নিজেকে পাগল লাগছিলো বার বার তার চোখ বেয়ে পরা পানি গুলো আমার মনে তুফান তুলছিলো। তাই ছুটে ছিলাম তার পিছে।

আবার ছেয়ে গেলো নিশ্চুপতা এদিকে ছায়া আপু কান্না করছে নিশ্বব্দে। হয়তো উনার মন এখন নিজের সাথে যুদ্ধ করছে।হয়তো নিজেকে দোষ দিচ্ছে নয়তো নিজের ভাগ্যকে।

বড় আব্বু কিচ্ছুক্ষণ থেমে থাকলেন তারপর ডাক দিলেন ছায়া আপুকে।
ছায়া আপু ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো বড় আব্বুর কাছে। বসে পরলো বড়আব্বুর পায়ের কাছে

;সব তো শুনলি চাস এই ছেলেটাকে

;বাবা মরতে হবে একটাদিন সবার যদি আজ আমি উনার জায়গায় অন্য কারো বধূ সেজে যায় আর ১০০ বছর ও বাচি সে বেচে থাকা আদৌও বেচে থাকা হবে। উহু খালি কাটাতে হবে কিন্তু যদি আমি উনাকে বিয়ে করি আর ১০ দিন ও যদি নিশ্বাস নি তবুও একটা প্রশান্তি থাকবে যে হ্যা আমি পেয়েছি আমি আমার ভালোবাসাকে।কিন্তু হ্যা আমি উনাকে কোন দিন ও মাফ করতে পারবোনা। বাকী সিদ্ধান্ত তোমার উপরে বাবা

ছায়া আপু চলে গেলেন সেখান থেকে।আমিও গেলাম তার পিছনে।

কেটে গেলো ৩টা মাস আজকে আমার প্রথম দিন ভার্সিটির। হ্যা চান্স পেয়েছি আমি তাও আমার আমার পছন্দের বিষয় ম্যাথামেটিক্স এই। অবশ্য ক্লাস শুরু হয়েছে আরও দুই মাস আগে কিন্তু ছায়া আপুর বিয়েই এতোদিন ক্লাস করা হয়েছিলো না। যার কারণে আজকে প্রথম দিন অবশ্য ক্লাস ও হয়েছিলোনা আসফি ভাইয়ার মতে।

কাপা কাপা পায়ে এগিয়ে গেলাম ভিতরে অচেনা জায়গায় কোন মুখ পরিচিত নেই জানিনা কি ভাবে মানাবো সবার সাথে।আদৌ পারবো কি টিকতে পছন্দের ভার্সিটিতেএতো এতো চ্যালেঞ্জ পূরন করে জানা নেই। কিন্তু আমি চায়না সে শহরের পুনরায় মুখোমুখি হতে যে শহরে আমার প্রিয় মানুষ টা অন্য কারো।সব কিছু না পাওয়ার নাম ই তো জীবন তবুও মানতে চায়না এই মন।

;এই যে ম্যাম নিউ এডমিশান

কারো আওয়াজ শুনে পিছনে তাকিয়ে দেখি ৪ টা ছেলে আর ১ টা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে হয়তো সিনিয়র । আমি শান্ত হয়েই জবাব দিলাম কারন এরা যদি এক্কটা বার বুঝে আমি ভয় পাচ্ছি এরা আরও বেশি করবে

;জি আমি নিউ

;উম্মম তো মিস ফ্রেশার আপনার কি জানা নেয় সিনিয়র দের সালাম দিতে হয়

;আসলে আমি খেয়াল করিনি আপনাদের

;ওয়াহ তো মিস কমলা হিজাব নাম কি আপনার

;আসফিয়া বিনতে আয়রা

;পায়রা হুম গুড নেম

আমার রাগ উঠলো কিছু না বলে যেতে নিলেই তাদের মধ্যে একটা ছেলে এসে আমার ব্যাগ ধরে নিলো আটকা পড়লাম আমি

;আরহাম কে কেউ এটিটিউড দেখাক সেটা এই আরহাম এর সহ্য সিমার বাহিরে সো নেক্সট টাইম আমার অনুমতি বিহীন যাওয়ার চেষ্টা অব্দি করোনা মেয়ে নাহলে তোমার সাথে ঠিক কি হতে পারে আমি নিজেও জানিনা

উনি হঠাৎ ব্যাগ ছেড়ে দিতেই আমি সামনের দিকে ঝুকে পরি।পরে যেতে।নিলে আরহাম নামক লোকটি পুনরায় ধরে ফেলে আমার ব্যাগ। আমাকে দাড় করিয়ে দেয় সজা করে

;আগে হাটা শিক্ষেন ম্যাম নাহলে,,,,,

;নাহলে কি???

হঠাৎ কারো আওয়াজে সবাই পিছনে তাকায় সবার চেহারার রঙ পালটে যায় তাদের চেহারা দেখে প্রচন্ড হাসি পায় আমার
#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১০
,
,
,
,
,
কানে এসে বাজে আসফি নামক ব্যাক্তিটির গম্ভির গলা।সবাই ভয়ে জড়সড় হয়ে গেলেও আরহাম নামক ছেলেটির মাঝে কোন ভাবাবেগ দেখতে পেলাম না আমি।আরহাম বাদে সবাই আসফি ভাইয়াকে সালাম জানায়। আসফি ভাইয়াও সালামের উত্তর নেন তা দেখে আরহাম ভ্রু কুচকে ফেলে।

আরহাম নামক ছেলেটির নাক আর কান দেখি হঠাৎ লাল হয়ে উঠেছে ফর্সা হওয়াই স্পষ্ট রক্তিম আভাটা বুঝা যাচ্ছে উনি কি রেগে গেছেন উনার ফ্রেন্ড রা আসফি ভাইয়াকে সালাম জানিয়েছে দেখে?কিন্তু উনার ও তো উচিৎ ছিলো আসফি ভাইয়াকে সালাম জানানো কারন আসফি ভাইয়া উনার গুরুজন এই সব ভাবনার মাঝে খেয়াল করলাম আমার হাত আসফি ভাইয়ার হাতের মুঠোয়

আমার হাত ধরে এগিয়ে যেতে নিলেই আমি থমকে দাড়ালাম। উহু উনার সাথে যাবোনা সেজন্য না বরং পুনরায় আমার ব্যাগে টান পরায় আমি দাঁড়ায় যায়।আসফি ভাইয়া আমার দিকে ভ্রু দুইটি কুচকে তাকালে আমি অসহায় ফেস করে তার দিকে তাকায়ে পিছনের দিকে ইশারা করি।হঠাৎ ভাইয়ার শান্ত চোখ জোড়ায় দেখা যায় রাগ। ভাইয়া রেগে গেলে তার চোখ দুইটা ছোট আর লাল হয়ে যায় যা দেখত্র দারুন লাগে।হঠাৎ জোড়ে টান পড়ায় হুড়মুড়িয়ে পরি আমি আসফি ভাইয়ার বুকের বাম পাশ হাত পা কাপছে আমার কানে এসে বারি খাচ্ছে আসফি ভাইয়ার দ্রুত গতিতে ছুটে চলা হুদ স্পন্দন ।। কেন যেনো কান দুইটা আরেকটু মিশিয়ে নিলাম উনার বুকের বামপাশটাই কেন যেনো ভালো লাগছিলো অদ্ভুদ এক অনুভূতিতে বুকের বাম পাশটাই আন্দলোন শুরু হয়ে গেলো

;তোমার সাহস কি করে হয় আমার যাওয়ার পথে বাধা দেওয়ার

আসফি ভাইয়ার হুংকারে কেপে উঠলাম এই প্রথম উনাকে এই ভাবে উচ্চস্বরে চিল্লাতে দেখলাম ভয়ে উনার বুকেই ঘাপটি মেরে রইলাম কারন বড় আব্বুর পরে যদি কোন সুরক্ষিত জায়গা থাকে তাহলে সেটা উনি।

;আর তোর সাহস কি করে হয় আমার পার্মিশান ছাড়া ওকে নিয়ে যাওয়ার।

হঠাৎ পুনরায় ব্যাগে টান পড়তেই রাগ হলো আমার এই লোকটার সমস্যা কি আমার ব্যাগ নিয়ে টানা টানি করে কেন আজব ব্যাগ নাই নাকি উনার।আমি আসফি ভাইয়ার দিকে তাকালাম। তিনি হাসছেন ভয়ংকর লাগলো সে হাসি। বুঝতে পারলাম এখানে আর কিছু মহূর্ত থাকলে যেকোন অঘটন ঘটতে পারে।

;আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলেন আমার ভয় করছে।

;বিশ্বাস আছে না আমার উপর

;হ্যা আছে অনেক বেশি কিন্তু এই মহূর্তে এখান থেকে চলেন

এর মাঝেই বুঝলাম আরহাম নামক ছেলেটার ফ্রেন্ড গুলোও তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোড়াজুড়ি করছে এক পর্যায়ে তাকে নিয়ে চলে গেলো তারা। আমি যেনো জান ফিরে পেলাম

;আপনি রেগে আছেন

;নাহ চল এখান থেকে

;আপনার ক্লাস নাই

;হুম কিন্তু দেরি আছে তোকে তোর ক্লাস চিনায় দিয়ে আসি তারপরে। আর শুন ছুটি হওয়ার পরে আমাকে কল দিবি আমি এসে নিয়ে যাবো ঠিক আছে একা একা মাতবরি করলে সাপটে একটা থাপ্পড় মারবো।

;আপনি সব সময় এমন করল্লার মতো করেন কেনো শুনি। একটু মিষ্টি কথা বললে কি হয়

উনি এবার হাসলেন আমার দিকে হালকা ঝুকে আমার কানের কাছে নিজের মুখ নিয়ে এলেন।আমার হৃদসন্দন যেনো থেমে গেলো।হঠাৎ গলাটা শুকিয়ে এলো।এই লোকটা আমাকে মেরে ফেলার প্ল্যানিং করছে নির্ঘাত।

;যখন তুমি ভয়ে আখি জোড়া দ্বারা আমাকে দেখো সেই মহূর্তে মনে হয় এমন ভাবে আগলে রাখি এই শ্যামাঙ্গিনীকে যেনো এই ভিতু চেহারা আর কেউ না দেখতে পারে।ওহে শ্যামাঙ্গিনী তুমি কি জানো তোমার এই ভিতু চেহারাটা ঠিক কতোটা মোহনীয় কোন প্রেমিক পুরুষকে পাগল করতে সক্ষম গো প্রিয় মানবী।।

অনেক প্রচেষ্টার পরেও সক্ষম হলাম না আমার আখি জোড়া মেলতে বুঝিনা কেনো উনি আমার সাথে এমন করে কি এমন খুশি মেলে আমাকে এমন বিব্রত অবস্থায় ফেলে।

ক্লাস এ প্রবেশ করতেই সবাই ড্যাব ড্যাব করে তাকালো আমার দিকে।হুট করে সব গুলো দাঁড়িয়ে পড়লো আমি অবাক হলাম আমাকে দেখে সবাই এভাবে দাড়ালো কেন আমার ছোট মস্তিষ্কে প্রথমে না ঢুকলেও পরে পিছন থেকে আসফি ভাইয়ার আওয়াজ শুনে বুঝলাম এদের সম্মান আসলো কার প্রতি।আসফি ভাইয়া ইশারায় সবাইকে বসতে বললো

উনি এসে আমার মাথায় হাত দিয়ে নিজের দিকে ফিরালেন

;এটা তোর ক্লাস একদম ফ্রোন্ট ব্রেঞ্চে বসবি ঠিক আছে।দেখেশুনে বেছে বেছে ফ্রেন্ড চয়েজ করবি ঠিক আছে।যা বয় আমি আসি

আমি ভালো মেয়ের মতো বসে পরলাম। উনি বের হতেই ক্লাসে অর্ধেক এর বেশি মেয়ে আমার দিকে আড় চোখে তাকালো। আমি সেদিকে পাত্যা না দিয়ে ফোন বের করলাম।

হুট করে একটা মেয়ে এসে আমার পাশে বসে পরলো।আমি তাকিয়ে দেখি গোল গাল চেহারে অসম্ভব রকমের একটা কিউট মেয়ে। আখি জোড়ার উপরে হাই পাওয়ারের চশমা পরে আছে তবুও ঘোন পল্লব গুলো স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে

;আসসালামু আলাইকুম। আমি মারিয়া তাবাসসুম

আমি মুচকি হেসে সালামের জবাব নিলাম

;আমি আসফিয়া বিনতে আয়রা

;আচ্ছা আমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করবা যদি কিছু মনে না করো

;আরে নাহ ফ্রেন্ডস

মহূর্তের মাঝে তার আর আমার ফ্রেন্ডসিপটা অনেক স্ট্রোং হয়ে উঠলো।বুঝলাম সে অনেক কথা বলে সে আমি যতোটা শান্ত সে ততোটা চঞ্চল আবার এটাও জানা গেলো যে সে বড় সড় লেভেলের ক্রাশ নামক খাবার খেয়েছে আসফি ভাইয়ার উপর।ওর ভাষায় লাভ এট ফার্স্ট সাইট। আমি সেটা শুনে ওকে অবকল করলাম হাসির তালে তার গালে বাম পাশে টোল পরছে সাথে দুই পাশে দুইটা গজ দাতে অসম্ভব রকম সৌন্দর্য তে ভরপুর তার হাসি । মানাবে দুইজন কে ভিষণ। ভাইয়া যতোটা শান্ত গম্ভির এই ততোটাই হাসিখুশি।

দেখতে দেখতে সব ক্লাস শেষ করে দুইজনে বেরিয়ে এলাম। আজকে আসফি ভাইয়ার ক্লাস ছিলোনা কালকে আছে বলে।এমনটাই জানালো মারু(মারিয়া)ওর কাছে আসফি ভাইয়ার সব ডিটেলস আছে।
এরই মাঝে আমার ফোনটা বেজে উঠলো আননোন নাম্বার আমি কি মনে করে রিসিভ করে কানে ধরতেই অপর পাশ থেকে পুরুষালী অস্থির কন্ঠ কুর্নগহব্বরে এসে বারি খেলো। বুঝতে বাকি নেই ফোনের অপরপ্রান্তের ব্যাক্তিটি আসফি ভাইয়া কেন জেনোনা আখি জোড়া গেলো মারুর উপরে।

;জ্বি

;তুই কোথাও যাস না যেনো আমার একটু দেরি হবে একটু অপেক্ষা করিস আচ্ছা। ইচ্ছা করলে কিছু খেয়ে নে আমি এসে বিল পে করে দিবো

;আমার সাথে আমার ফ্রেন্ড ও আছে সমস্যা নাই

;আচ্ছা

;কে ছিলো

মারুর কথা শুনে তার দিকে চায়লাম। আমি মুচকি হেসে তাকে জানালাম আসফির কথা মহূর্তে তার গাল দুইটা রক্তিম আভায় ছেয়ে গেলো।তারা চেয়ের দুধে আলতা আমি শ্যমলা কিন্তু সে একদম ফর্সা। যার কারণে লজ্জার আভা স্পষ্ট তার গালে ফুটে উঠেছে। ইশ কি স্নিগ্ধই না লাগছে এই মেয়েটাকে তার নাম মারিয়া না হয়ে স্নিঙ্ধা হওয়া উচিৎ ছিলো।

কিছু মহূর্তের মাঝেই ঘামাক্ত মুখ নিয়ে আমার সামনে এসে হাজির হলেন আসফি ভাইয়া।কেন যেনো নিষিদ্ধ এক ইচ্ছা জানান দিলো মনের দোয়ারে নিজের ওর্ণা টা বাড়িয়ে ওই মুক্তোর মতো ঘাম গুলো মুছিয়ে দিতে আমি হাত টা উঁচু করতে নিতেই পাশ থেকে মারু রুমাল এগিয়ে দিলো।আমি লজ্জা পেলাম নিজের এমন বোকামো ভাবনায়।

আমি হেসে অন্যদিকে ফিরতেই টান পরলো আমার ওর্ণায় সাথে সাথে হাত চলে গেলো কাধে।পিছনে তাকিয়ে দেখি আসফি ভাইয়া আমার ওর্ণা টাকে নিজের রুমাল বানিয়ে রেখেছে।আমি চোখ ফিরিয়ে তাকালাম মারুর দিকে বেচারীর চেহারাটা কাদো কাদো হয়ে আছে।কেন যেনো খারাপ লাগলোনা বরং বড্ড হাসি পেলো।

চলবে!
চলবে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here