প্রেমালঘ্ন পর্ব -১৯+২০

#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ১৯
,
,
,
,
,
হাসপাতেল এক বেডে পড়ে আছি বাম হাতে স্যালাইন চলছে অনবরত। মাথার উপরের ফ্যান টা যে অনেক আগের সেটা তার ক্যার ক্যার আওয়াজেই বুঝা যাচ্ছে।অসম্ভব রকমের মাথা ব্যাথায় চোখ জোড়া অব্দি খোলা রাখতেও কষ্ট হচ্ছে।মনে হচ্ছে কয় মন ওজন রাখা হয়েছে এই চোখের পাতায়।চোখ বেয়ে যে পানি পড়ছে সেটা বুঝতে বাকি রইলোনা কিসের এই ব্যাথা জানা নাই আদৌ কি মাথা ব্যাথার জন্য এই অশ্রু জল নাকি আপন জনার থেকে শুনা সে কটূ বাক্য গুলা

ইতিমধ্যে কারো প্রবেশ এর আওয়াজ পেতেই মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিলাম। কি দরকার নিজেকে দুর্বল প্রমান করা এই সমাজ টা যে বড্ড নিষ্ঠুর এখানে দুর্বল দের জায়গা নেই এরা আঘাতে আঘাতে দুর্বল দের মেরে ফেলবে। এরা শক্তিশালীদের আরও শক্তিশালী করে তুলে আর দুর্বল দের আরও দুর্বল।

;এখন কেমন লাগছে মিসেস রহমান মাথায় পেন আছে

আমি অবাক হলাম মিসেস রহমান শুনে পরে ভাবলাম হয়তো ভুল করে বলে ফেলেছেন

;নিজের প্রতি যত্ন নেন এমনিতেই ভিষন দুর্বল আপনি এই ভাবে না খেয়ে থাকলে আরও বেশি দুর্বল হয়ে পড়বেন। সেটা আপনার জন্য ভালো হবেনা আর এই টুকু বয়সে এতো চিত্না করেন কিসের। আপনার যে পরিমান স্ট্রেস যে কোন মহূর্তে স্ট্রোক করে ফেলবেন এই বয়সে এতোটা চাপ ভালোনা মিসেস

;ডাক্টার আমি মিসেস না আমি মিস

;ইউ আর রং ওয়াইফি বিয়ের পরে মেয়েদের মিস না মিসেস বলে ডাকা হয় আপনি হয়তো জানেন না। খালি পুথিগত বিদ্যায় হয়েছে যাক সমস্যা নাই বাকী সব নাহয় আমি শিক্ষায় দিবো হাতে কলমে

ডাক্তার হেসে উঠলেন আসফি ভাইয়ার কথায়। আমি মুখটা শক্ত করে উঠে বসার চেষ্টা করলাম কিন্তু শরীরে জোড় না পাওয়াই পড়ে যেতে নিলেই ধরে ফেলেন আসফি ভাইয়া।

ডাক্তার আসফি ভাইয়ার কাধে চাপড় মেরে সেখান থেকে চলে যায়।আমি নিজেকে ছাড়ানোর জন্য উনাকে ধাক্কা দেই

;তোমার কি মনে হয় শ্যামাঙ্গিনী তোমার এই নরম হাতের ধাক্কাই আমি দূরে সরে যাবো। কি করে ভাবলা সেটা হুম এমনিতে দুই দিন অজ্ঞান হয়ে থেকে বড্ড জ্বালায়েছো।এবার আমার পালা এবার আমি জ্বালাবো আর সে জ্বালা সহ্য করবে তুমি এবার আমার আগুনে পুরাবো তোমাকে।

;দূরে সরেন আসফি ভাইয়া বড় আম্মু বা অন্য কেউ দেখলে সমস্যা হয়ে যাবে ভাইয়া প্লিজ দূরে সরেন।

;আর যদি না সরি

;না সরলে আপনার কিছুনা চরিত্রে দাগ আমার পরবে সমাজ কাদা ছুড়বে আমার উপরে আপনার উপরে না কারন ছেলেদের সব দোষ মাফ কিন্তু মেয়েদের পান থেকে চুন খোসলেও তাকে চুন কালী মাখানোর আগে কেউ ভাবেনা।

;বেশি বলে ফেলছিস না কাগজে কলমে তুই আমার স্ত্রী আমার প্রেমিকা বা গার্লফ্রেন্ড না। যার কাছে আসার জন্য আমাকে আগে সমাজের দিকে তাকাতে হবে আমি চাইলে এখনি তোকে আদরে আদরে ভরায় দিতে পারি কারো কিছু বলার সাহস হবেনা

;আপনার মায়ের সাহস হবে আসফি ভাই ভুলে যাবেন না উনার চোখে আমি একজন চরিত্রহীনার মেয়ে যার চরিত্র আদৌও ঠিক কি না সেটা নিয়ে বড্ড চিন্তিত তিনি। যিনি ৬ মাসের মেয়েকে কলে পিঠে মানুষ করেছে সে মহিলা যেখানে নিজের ছেলের বউ হিসেবে আমাকে মানতে পারবেনা সেখানে অন্য কেউ কি করে মানবে বলতে পারবেন।
আপনি এখান থেকে চলে যান আসফি ভাইয়া চলে যান কোন সুন্দর ভদ্র মেয়েকে দেখে বিয়ে করে ফেলেন জীবন সাজান আপনাকে নিয়ে তাদের বড্ড আশা হাজারো স্বপ্ন

;তাদের স্বপ্ন দেখলি তাদের চাওয়া দেখলি কিন্তু একটাবার ভাবলিনা আমার কথা এই কোমল ঠোঁট এর মাঝখান দিয়ে যখন বেরিয়ে আসে চরিত্রহীন কথাটা তখন এই বুক পাজরে কতোটা ভাংগোন ধরে সেটা তোর কল্পনার বাহিরেও শ্যামাঙ্গিনী। তুই ভাবিস তোর বড় আম্মুর কথা।তোর বড় আম্মু ভাবে তার ছেলেকে নিয়ে বুনা স্বপ্নের কথা কিন্তু মাঝখানে যে আমি রয়েছি সেটা ভুলে যাস। এবার আমিও স্বার্থপর হবো বড্ড স্বার্থপর হবো।

আমি উওর দেওয়ার আগেই ঠোঁটের ভাযে টের পেলাম অন্যকারো ঠোঁটের ছোয়া।চোখ বেয়ে পানি বেরিয়ে গাল বেয়ে পরতে শুরু করলো কিন্তু এই চোখের পানি শুধু আমার ছিলোনা বরং আমার গাল বেয়ে পড়া পানির সাথে আসফি ভাইয়ার চোখের পানিও মিলে মিশে এক হয়ে যাচ্ছে।

________

পরের দিন ডিসচার্জ নিয়ে বাসায় এলাম। গাড়ি থেকে পা নিচে নামাতেই মাথা টা ঘুরে উঠলো। এখনো উইকনেস থেকেই গেছে। গাড়িতেই বসে রইলাম আসফি ভাইয়া গেট লাগায় দিয়ে আমাকে নিয়ে গাড়ি পার্ক করলো।গাড়ি খুলে আমাকে কোলে তুলে নিয়ে বের হলো ইচ্ছা হলেও সাহস পেলাম না উনার গলায় নিজের হাত রাখার। এমনকি উনাকে নামাতে বলার জন্যও সাহস জোগাতে পারলাম না কারন এই মহূর্তে উনাকে এই সময় নামাতে বললে উনি কখনোই এমনটা করবেন না।

বাড়িতে প্রবেশ করতেই অস্বস্তি এসে ভর করলো চোখ জোড়ায়।বড় আব্বু সহ সবাই ডাইনিং টেবিলেই বসে আছে। করুন চোখে তাকালাম আমি বড় আব্বুর দিকে উনার চোখ মুখে স্পষ্ট ব্যাথার ছায়া সেদিনকার কথায় যে উনি বড্ড আঘাত পেয়েছেন। কিন্তু কি করতাম বড় আম্মুর কথা গুলো যে বড্ড যন্ত্রণা দিচ্ছিলো।যে বড় আম্মুকে নিজের মায়ের জায়গায় দেখে এসেছি কি করে পারতাম ধরে রাখতে নিজেকে।আমার চেয়ে কান্না করার মতো কোন বুক ছিলোনা কেউ ছিলোনা মাথায় হাত বুলানোর জন্য শুধু ছিলো কষ্টের ছায়া।

;এখানে বসা ওকে আসফি নিশ্চয় খেয়ে আসিস নি খেয়ে নে আমি ওকে খাওয়াই দিচ্ছি

;কেন ছোট মা তুমি ওকে খাওয়াই দিলে তোমার হাত নোংরা হয়ে যাবেনা হাজার হোক চরিত্রহীনার মেয়ে কে হয় তোমাদের

;লাগাবো থাপ্পড় ছোট থেকে যাকে মানুষ করলাম তার চরিত্রের কথা তোর চেয়ে ভালো আমি জানি। হবে সে মেঝো আপার জন্মানো কিন্তু তাকে মানুষ করেছি জন্ম দেওয়া মা যে কি না জন্মের কয় মাস পরে ছেড়ে চলে গেছে তার শিক্ষ যদি ওর মাঝে থাকে তাহলে ১৯টা বছর আমারা ওকে মানুষ করেছি আমাদের শিক্ষাও ওর মাঝে আছে।

;এই কথা গুলো সেদিন কই ছিলো যেদিন উনি তোমাদের সামনে ওকে উদ্দেশ্য করে কথা বলছিলো সেদিন কেনো চুপ ছিলে বলো আমাকে।

;আসফি ভাইয়া আপনি অযথা কেনো কথা বলছেন বড় কাকী ভুল কিছু বলেন নাই যে সবাই প্রতিবাদ করবে।কিসের জন্য বাহিরের মেয়ের জন্য আপনারা নিজেদের মধ্যে ধন্ধ সৃষ্টি করছেন

;ব্যাস বহুত বলে ফেলেছিস তুই এই বাড়ির রক্ত তুই আমার ভাইয়ের আমানত কোন আশ্রিতা বা বাহিরের লোক নই। এই বাড়ির উপর যতোটা আসফি আলিফ ছায়া আর আরিফার অধিকার আছে তোর ও আছে।আর এখন সে অধিকার বেড়েছে কারন তুই এই বাড়ির বড় ছেলের বউ এই বাড়িতে সবচেয়ে বেশি দাপট তোর

বড় আব্বুর হুংকারে মহূর্তে শান্ত হয়ে গেলো পরিবেশ বড় আম্মু অশ্রু শিক্ত চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।

বড় আব্বু সেখান থেকে চলে যায়।আসফি ভাইয়া আমাকে সোফায় ব্দায় দিয়ে কপালে চুমু একে তিনি রুমের দিকে পা বারান ফ্রেশ হবেন বলে।

এরই মাঝে ছোট মা খাবার এনে আমার সামনে বসে।খাবার দেখে নাক মুখ কুচকে ফেলি

;আমার খেতে একদম ই ইচ্ছা করছেনা প্লিজ সরান

;রেগে আছিস আমার উপরে

; এ মা নানা কি বলেন ছোট কাকী আপনার উপরে রাগ করবো কেন এই ভাবে বলেন না

;এবার সত্যি থাপ্পড় দিবো আর একবার যদি কাকি শুনি এবার ঝটপট হা কর একটু খেয়ে ঔষধ খেতে হবে দুই দিনে শুকিয়ে কেমন হয়ে গেছে।

ছোট আম্মুর হাতের লোকমা মুখে পুরে নিলাম কান্না গুলো গলায় দোলা পেকে আসছে সহ্য করতে পারলাম না ছোট মা কে জরায় ধরে কান্না করে দিলাম উনিও মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন।।।

চলবে!#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ২০
,
,
,
,
,
;ওহ বউ রে কই তুমি।সে কখন থেকে দেখিনি তোমাকে বউ।

আসফির এমন ডাকে জোড়ে সোড়ে একটা ভিষিম খাইলাম পানি নাক দিয়ে উঠে যা তা অবস্থা করে ফেললাম রান্না ঘর থেকে ছুটে এলো বড় আম্মু এদিকে ছোট আম্মুও অস্থির হয়ে উঠলেন। আসফি ভাইয়া কই থেকে প্রকোট হলেন সাথে সাথে।মাথায় পিঠে হাত বুলাতে লাগলেন অস্থির হয়ে আমি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছি এদের পাগলামো।

;এই পাজি ছেলে এই ভাবে কেউ চিল্লাই এখনি তো বিপদ হতো মাত্র মেয়েটা হাসপাতাল থেকে ফিরেছে।

;তো কি করবো সে কখন থেকে আমার বউটাকে আটকায় রাখেছো একটু শান্তি করে দেখবো ৩ দিন হলো বউ টারে আদর করিনা কেউ আমার কষ্ট বুঝেনা

আসফি ভাইয়ার এমন লাগাম হীন কথা শুনে কান দুইটা গরম হয়ে উঠলো লোকটার মাঝে লাজ লজ্জার ছিটা ফোটাও নাই এক কথায় যাকে বলে অসভ্য

;চুপ কর পাজি ছেলে নাহলে দিবো একটা থাপ্পড়

;সেটা নাহয় পড়ে দিও এখন আমার বউ টাকে লাগবে ভিষন প্রেম প্রেম পাচ্ছে গো বউ চলো।

আমি শুধু অবাক হয়ে চেয়ে চেয়ে দেখছি আসফি ভাইয়ার কর্মকান্ড গম্ভির আবরণের পিছনে যে এমন একটা অসভ্য চেহারা লুকিয়ে ছিলো সেটা এতোদিন অব্দি কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি। ইচ্ছা করছে তিতা কয়টা কথা শুনায় দিতে কিন্তু উনার হুট করে কোলে তুলে নেওয়া তিতা কেন কথা বলতেই ভুলে গেলাম।এদিকে ছোট মা উচ্চস্বরে হেসে দিলেন

আমাকে রুমে এনে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে নিজেও আমার কোলে আসন পেতে নিলেন।আমি সরানোর চেষ্টা করতেই হাত সামনে এনে পর পর কিস করতে শুরু করলেন ভাষা হারা হয়ে গেলাম।কি কান্ড শুরু করেছে এই লোক।

;বুঝলা বউ আমি বড় ভাই হয়েও আমার আগে ছোট বাপ হতে চলেছে এদিকে আমি এখনো বাসর করার ও কপাল হলোনা। প্রচুর বাসর বাসর পাচ্ছে রে বউ চলো বউ ফটাফট বাসর দিনটা সেরে ফেলি। বছর ঘুরতে ঘুরতে তোমার কোলে চলে আসবে ব্যাপার টা দারুন না।

;স্টোপ ইট আসফি ভাই কি শুরু করলেন আপনি।কখন থেকে বউ বউ করছেন আবার নিচে ওইসব লাগামহীন,,,,,,,,,

আর কিছু বলার আগেয় শুরু হলো উনার ঠোঁটের অত্যাচার আমার দুই গাল জুড়ে প্রথম প্রথম উনাকে সরাতে চাইলেও কিছু মহূর্ত পরেই হাত দুইটা চলে গেলো উনার কলারে। খামছে ধরলাম উনার শুভ্র শার্ট টা।কিন্তু এতে যেনো থামলেন না তিনি কোল থেকে উঠে আমাকে নিজের কোলে বসায় দিয়ে দুইজনার ওষ্ঠদ্বয় এক করে দিলেন ধীরে ধীরে নেমে এলেন গলায় উনার প্রতিটা স্পর্শ যেনো সকল কষ্ট ভুলানোর ঔষধ হিসেবে কাজ করছিলো।কিন্তু বেশিক্ষন ভুলে থাকা কি আদৌ সম্ভব আমরা যতোই চেষ্টা করি খারাপ সময় গুলো ভুলে থাকার কিন্তু সেটাই আগে এসে চোখের সামনে ভেসে উঠে। আমার বন্ধ চোখের পর্দাতেও মহূর্তে সেগুলোই ভেসে উঠলো কেপে উঠলো ঠোঁট জোড়া চোখের কোণে অশ্রু গুলো এসে ঠায় করে নিলো মহূর্তে। এদিকে আসফি ভাইয়াও নিজের সীমানা অতিক্রম করে সম্পূর্ণ্য ভাবে নিজের করে নেওয়ার প্রচেষ্টায় উদ্দত হতে শুরু করলেন। নিজেকে সামনে উনাকে ধাক্কা দিয়ে সরানোর চেষ্টা করতেই ব্যাথায় চিনচিন করে উঠলো গলায় আসফি ভাইয়া রাগী চোখে তাকালেন আমার দিকে।বুঝলাম উনার এমন ব্যবহারের কারন উনার কাজে ব্যাঘাত তাই তো নির্মম ভাবে কামড়ে ধরলেন আমার গলায়।

;ছাড়ুন আমাকে আসফি ভাই

;হুস(ঠোঁট আঙ্গুল দিয়ে) এই মুখ দিয়ে আর একটাবার ও আমি ভাইয়া শুনতে চায়না আমি আমার অনাগত সন্তানের মামা নই দেখা যাবে মায়ের মুখে ভাইয়া শুনে আমাকে আমার ছেলে মেয়ে বাবার জায়গায় মামা ডাকা শুরু করলে আমার মান সম্মান থাকবেনা।

;এটা সম্ভব না নাহ আমাদের ছেলে মেয়ে না আমাদের এক হওয়া সেখানে সন্তানের কথা আসছে কই থেকে

;এই শ্যামাঙ্গিনী তোমার এই লাল হয়ে যাওয়া গাল দুইটা এতোটা প্রবল ভাবে টানে তোমার রাগী অভিমানী চোখ যখন আমার দিকে দৃষ্টি ফিরাও তখন মনে হয় নিজেকে পাগল মনে হয় ইচ্ছা করে বাহু ডোরে শক্ত করে চেপে ধরে নিজের উষ্ণতা দিয়ে পাগল করে দি।ওহে শ্যামাঙ্গিনী তুমি নিজেও জানোনা তোমারে দেখলে এই গম্ভির আবরণে লুকিয়ে থাকা শক্ত পুরুষ্টার ও যে অসভ্য হতে ইচ্ছা করে।

;আসফি ভাই আমার ও যে ভিষণ ইচ্ছা ছোট একটা নীড়ের যেখানে সন্ধ্যা নামতেই বারান্দায় দ্বাড়িয়ে আপনার সাথে মিলে দেখবো সে লগ্ন যেটা হবে আমাদের প্রেমালঘ্ন। কিন্তু আমি সে প্রেমালঘ্ন কাউকে নারাজ করে যে চায়না আমি চায় না কোন মা থেকে তার ছেলেকে দূর করতে। একটা বার দেখেছেন বড় আম্মুর মুখিটা। সে মুখে স্পষ্ট পরাজয় লক্ষিত একটা মায়ের অভিশাপ নিয়ে কি আদৌ আমরা পারবো আমাদের প্রেমালঘ্নের সূচণা করতে।

;তোকে একটা গল্প শুনায়েছিলাম মনে আছে তোর।

;কার মাঝে কি বলছেন আসফি ভাইয়া এখানে গল্পর কথা কই থেকে আসলো

;মনে আছে তোর

;হুম আছে।

;আচ্ছা তুই জানতে চেয়েছিলি না পরে কি হলো ছেলেটা কি পেলো মেয়েটাকে নিজের করে।আচ্ছা উওরে যদি না বলি কষ্ট হবে তোর

;হুম কারন সে ছেলেটা হাজারো অপেক্ষার প্রহর গুনেছে সে মেয়েটাকে পেতে।কে পারে নিজের ভালোবাসাকে এতোদিন নিজের বুকের মাঝে আগলে রেখে ওই একটা মানুষ কেই পাগলের মতো ভালোবাসতে বিনা দাবি বিনা অধিকার ফলায়ে।

;তুই যদি ওই মেয়ের জায়গায় হতি আর ছেলেটা যদি তোকে বলতো তার ভালোবাসার কথা ফিরিয়ে দিতি

;নাহ কোন মেয়েই পারবেনা এমন পাগলের ভালোবাসা ফিরিয়ে দিতে।

;তাহলে আমার দোষটা কোথায় আমার ভালোবাসা কেন তোর কাছে তুচ্ছ কেন পারবিনা আমার জন্য লড়াই করতে তুই না থাকলে যে আমি নিঃস্ব রে সেটা কি তুই বুঝিস না যে গল্প শুনালাম সে পিচ্চি পরিটা আর কেউনা আমার শ্যামাঙ্গিনী আমার শ্যামপরী।

আমি থমকে গেলাম চোখ বেয়ে নোনা জ্বল গরিয়ে পরলো ভাবিনি কোন দিন এই আসফিকেও আমাকে দেখতে হবে কোন দিন ভাবিনি সেও কোনদিন এতোটা পাগলামী করবে আমার জন্য। আচ্ছা আমি ভাগ্যবতী নাকি অভাগী কোনটা। প্রথমে ভালোবাসাকে নিজের করতে পারলাম না। কিন্তু দ্বিতীয় বার যাকে ভালোবাসলাম সে আমার স্বামি হলেও তাকে পাওয়ার অধিকার আমার নেই এটা জানার সর্তেও যে লোকটা আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে।কেন এই অসহায়তা কেন এই বুকটা আমার হয়েও এই বুকে ঝাপিয়ে পড়ে কান্না করতে কেন।

;এই চোখের অশ্রু কোণা এই ভাবে মাটিতে ফেলিস না রে। এগুলো যে ভীষণ মূল্যবান ভীষণ।

পারলাম না আর ধরে রাখতে কাগজে কলমে লোকটা আমার আল্লাহ দ্বারা তৈরি পবিত্র বন্ধণে আবন্ধ আমরা তবে কেনো ভয় পাবো। বিয়েটা যেহেতু হয়েছে সেহেতু বাকিটা আল্লাহ র উপর নাহয় থাকলো। একটু প্রশান্তি নাহয় আমিও উপভোগ করে নিলাম আমি।

আছড়ে পড়লাম নিজের নামে লিখা এই মানুষটার উপরে।।মানুষটার বুকটাও যে শূন্য ছিলো এতোদিনে সেটা যে আজ পরিপূর্ণ হলে সেটা বুঝতে খুব বেশি সময় লাগলোনা আমার।

_______
সন্ধ্যার দিকে চোখ আলগা হয়ে এলো আমার পাশে হাতরে জায়গা খালি পেয়ে আৎকে উঠলাম দ্রুত চোখ মেলা তাকালাম।তাড়াতাড়ি উঠতেই নিজের দিকে চোখ এলো।লজ্জায় মহূর্তে কুকড়ে উঠলাম তাড়াতাড়ি মেঝে থেকে কাপড় তুলে গায়ে জড়িয়ে নিলাম।বিছানার চাদর টা তুলে ভালো চাদর বিছিয়ে দিলাম।

বাহিরের দিকে পা বারানোর জন্য উদত হতেই বাজে একটা গন্ধ এসে বাড়ি খেলো নাকে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেলাম বারান্দার দিকে।নগ্ন পিঠটাই চোখ পড়তেই সিউড়ে উঠলাম আমি।ফর্সা পিঠে স্পষ্ট নখের আচরে নাজেহাল অবস্থা।

পিঠে ঠান্ডা কিছুর স্পর্শ পেতেই কেপে চোখ জোড়া বন্ধ করে নিলেন আসফি।হালকা জ্বলন ধরলেও তৃপ্তির একটা স্বাদ ও যেনো ঠোঁটের কোণে থাকা মুচকি হাসিটা বহন করছে।

চলবে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here