প্রেমালঘ্ন পর্ব -২৭+২৮

#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ২৭
,
,
,
,
বাসে বসে একমনে বাহিরের আকাশ দেখছি।কি সুন্দর আকাশের বুকে জায়গা করে নিয়েছে এক ফালি চাঁদ।আকাশের সৌন্দর্য দ্বিগুন করতেই হয়তো এই চাঁদটার বড্ড প্রয়োজন ছিলো। চাঁদ ছাড়া যে সাযে না এই আকাশ তারা দিয়ে। ইশ এই বিশাল আকাশের বুকে থাকা চাঁদ টাকে দেখলেই অশান্ত মন যেনো মহূর্তে শান্ত হয়ে যায়৷ এমন নিজেস্ব চাঁদ তার নেই কেনো।

হঠাৎ কারো ভারি নিশ্বাস পেতেই পাশ ফিরে তাকালাম।আখি দ্বয়ের পর্দার সামনে ভেসে উঠলো আসফি ভাইয়ার ঘামে ভিজা ঘুমুন্ত নিশপাপ চেহারা। কিছু মহূর্তের আগের ভাবনা টা মাথায় আসতেই নিজেকে ভয়ংকর কিছু গালি দিতে মন চাইলো। কে বলেছে আমার নিজেস্ব চাঁদ নেই এই যে আমার চাঁদ আমার কাধে মাথা দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে।মায়াতে ভরা এই মুখখানি কি কোন চাদের থেকে কম এই চেহারার দিকে তাকালেই তো অশান্ত মন মহূর্তে শান্ত হয়ে যায়।উনার বুকে মাথা রাখলেই তো হাজার কষ্ট নিমিষেই দূর হয়ে যায়।মাঝেমধ্যে আল্লাহর কাছে লক্ষ কোটি শুকরিয়া আদায় করতে মন চায় এমন একটা অসাধারন ব্যাক্তি সম্পন্ন ব্যাক্তিকে তার জীবনে দেওয়ার জন্য।আগে আল্লাহ র আছে হাজারো অভিযোগ তুলা হতো কেনো পেলাম না ভালোবাসার সে আলিফ নামক ব্যাক্তিটাকে।এখন এই অভিযোগ গুলো ভিত্তি হীন লাগে যদি সেদিন আলিফ ভাইকে নিজের মনের কথা জানিয়ে দিতো তাহলে নিশ্চয় দয়া করে বা নিজের বাবার দিকে তাকিয়ে হয়তো বিয়ে অব্দি করে নিতো আলিফ ভাইয়া আমাকে।কিন্তু সেটা হলে না পেতাম আমি আলিফ ভাইয়ার সুদ্ধ ভালোবাসা উহু সেটা ভালোবাসায় রুপ নিতোনা দয়া আর করুনায় থাকতো সেটা সীমাবদ্ধ আর নয়তো ঘৃণা। পাওয়া হতোনা এই অসাধারণ ব্যাক্তির পাগলের মতো ভালোবাসা।যার সমস্ত পাগলামী আমাকে ঘিরে।

হারে হারে টের পাচ্ছি এই লোকটা আমার মস্ত বড় সর্বনাশ করে ফেলেছে তাইতো আমার আখিজোড়া থেকে শুরু করে নিশ্বাস অব্দিও তাতেই সীমাবদ্ধ। হাজার মানুষের ভিড়েও যে তার এই আখি জোড়ার খোজ শুধু এই গম্ভির মানুষ টার।হাজারো ডাকের ভিরে ওর শ্রবন শক্তি শুধু বার বার শ্যামাঙ্গিনী নামটাই শুনতে চায় তার মধু মাখানো গলার স্বরে।নিশ্বাস অব্দিও আজকাল তার বিহনে আটকে আসে।

বলেনা ভালোবাসা যতো বেশি গাঢ় হয় হারানোর ভয়টাও দ্বিগুন হয়ে যায় আমার সাথেও ঠিক সেরকম টাই হচ্ছে।তার যে এই লোকটার ছাড়া এক মহূর্তও চলেনা যদি কোন দিন লোকটা দূরে সরে যায় তখন কি হবে কিভাবে বাচবে আয়রা এই মায়াদিয়ে ঘেরা গম্ভির মানুষ টাকে ছাড়া। মহূর্তে বুকটা কেপে গেলো।হারানোর ভয়ে আখিজোড়া বেয়ে অশ্রু গড়াতে সময় নিলোনা।আর সে অশ্রুফোটা অনুভব করতে যেনো আসফি ভাইয়ের ও সময় লাগলোনা তাই তো চোট করে খুলে ফেললো তার ঘুম জোড়ানো শান্ত স্পষ্ট আখিজোড়া।

আহা সে কি চাহুনী যে চাহুনীতে পাগল না হয়ে কি রেহাই আছে।কেন এতো মায়া দিয়ে তৈরি কে বলেছে শুধু নারীরা মায়ার অধিকারীনি হয় কবিরা হয়তো আসফি ভাইয়ের মতো মায়াবী মানব দেখেনি তাহলে পুরুষদের সুদর্শন যুবক নই মায়াবী যুবোক হিসেবেও আক্ষায়িত করতে ভুলতো।

—কি হয়েছে তোর চোখে পানি কেনো ব্যাথা পেয়েছিস নাকি। নিশ্চয় জানালাই মাথা ঠেকিয়েছিলি দেখি কথায় ব্যাথা পেয়েছিস তুই কি বড় হবিনা নিজের খেয়াল রাখার কথা তো পাগল ও বুঝে কিন্তু তোর মাথায় কি সেই বোধ শক্তি ও নাই

আসফি ভাইয়ার এমন তিক্ত কথার বিপরীতে তিক্ত কথার বিপরীতে বেরিয়ে গেলো মুখ থেকে লাগাম হীন কিছু বানী

—আপনার ওই লাল খোয়ড়ি সিগারেটের আগুন পুড়ে যাওয়া ঠোটে গভীর এক চুম্বন আকতে বড্ড ইচ্ছা করছে আসফি ভাই।আপনার এই ঠোঁট জোড়ার মাঝে থাকা তিলটা যে আমাকে বড্ড টানে আসফি ভাই।

আসফি ভাই আমার এহেন কথায় হতদম্ভ হয়ে বসে রইলো। চোখ দুইটা তার বিস্ময়ে বড় আকার ধারণ করেছে।কিছু ক্ষন হঠাৎ বিস্ময়ে ঘেরা আখিজোড়া শান্ত হয়ে গেলো বাম হাত দিয়ে টেনে নিলো আমাকে বুকে ডান হাত দিয়ে নিজের কপালের ঘাম মুছে ফেললেন যত্ন সহকারে।ইশ উনার এই কাজটাতেও যেনো আমি খুজে পেলাম এক রাশ মায়া।পাগল হয়ে যাচ্ছি বুঝতে বাকিনেই। উনার সব কাজের কেমন নেশা ধরছে।কারন টা আমার জানা নেই অনুভূতি গুলো ডানা ঝাপটেছে বুঝতে পারলাম নিজের উপর যে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছি বেশ টের পাচ্ছি সেটার।

—ড্রাইভার বাস দ্রুত চালান। নাহলে যে এই প্রেমিক পুরুষ প্রিয়সীর আবদার না পূরন করার দায়ে প্রেমের জেলে আটকে পরবে।

রাত হওয়াই বাসে তেমন কেউ ছিলোনা বেশ কইটা প্রেম যুগোল আর কিছু মধ্যবয়স্ক কপোত কপোতী।তাদের মাঝেই কিছু যুবোক হই হই করে উঠলো কেউ বাজিয়ে দিলো সিটি।মেয়েরা ফিসফিস করে বলে উঠলো কিছু একটা তার প্রেমিক দের কানা যা শুনা হলোনা আমাদের।কিন্তু আসফির এহেন কান্ডে লজ্জায় উনার বুকে মুখ লুকানো ছাড়া কোন উপায় ই আমার মাথায় এলোনা।

—এই ভাবে লজ্জায় লুকিয়োনা এই মুখ। তুমি কি জানোনা তোমায় লজ্জা পেলে তোমার আখিজোড়ায় ঠিক কতোটা শুভাশীনি লাগে। এই চাঁদ টাও যেনো তোমার লজ্জা মাখা মুখটা দেখে মেঘের আড়ালে চলে যাবে চন্দ্রকান্তা।

—উহু শ্যামাঙ্গিনী আসফি নামক গম্ভির পুরুষের শ্যামাঙ্গিনী। এই নামটা যে এই বুকে এনে দেয় এই আকাশ সমান প্রশান্তি ভালোবাসা।এই নামটাই আপনার ছোয়া রয়েছে।যা এই মনটাই উত্থাল পাত্থাল ঝড় তুলে দেয়

—ভালোবাসি আমার শ্যামাঙ্গিনী অর্ধাঙ্গিনী রুপে তোমাকে পাবো তা যেনো এখনো আমার স্বপ্নে রয়ে যায়।তোমার চোখে এই ভালোবাসা দেখার যেনো কতোগুলো দিন ব্যাথায় কাতরায়েছে তা শুধু এই ক্ষত বিক্ষত মন টা জানে। যানো এতো দিন তোমার মাথা এই বক্ষে পাওয়ার জন্য কতো রাত নির্ঘুম পার হয়েছে আমার

—অপেক্ষার প্রহর আসলেই মিষ্টি হয় আসফি।

আসফি ভাইয়া হাসলেন শক্ত করে জড়িয়ে নিলেন আমাকে উনার বাহুতে।

——————–

রুমে বসে থেকে বই পড়ছিলো আরহাম। এমন সময় দরজায় কের কের আওয়াজ করতেই চোখ তুলে তাকায় আরিফার দিকে।বাকা হাসে আরহাম।ভয় পেয়ে যায় আরিফা।মনে পরে যায় সকালের ঘটনা সাথে আরহামের প্রতিবাদ।

—আ আপনি ডেকেছিলেন

—আই লাইক ইট সুন্দরী।

কেপে উঠে আরিফা আরহামের এমন আওয়াজ শুনে।আরহাম সেটা দেখে চোখ টিপ দিয়ে এগিয়ে আসে। আরিফা পিছাতে শুরু করে ভয়ে।সে জানেনা কেন এতো ভয় লাগছে তার কারন কি আরহামের এহেন চাহনী।এতোদিন আরহামের চোখের ভাষা সে পড়তে পারতো কিন্তু আজ কে কেন যেনো পরিচিত আরহামকে বড্ড অপরিচিত লাগছে তার নিকট।এতোদিন স্পষ্ট যার চোখে নিজের চোখে তীব্র রাগ ক্ষোভ দেখতে পেতো আজকে সে চোখে অন্য রকম কিছু দেখতে পাচ্ছে এ ও সম্ভব। কিন্তু কি করে।সকাল অব্দি তো তার সামনে থাকা রাগী পুরুষ টা তার সাথে কতোটাই না বাজে ব্যবহার করলো তাহলে কি করে কয় ঘন্টার ব্যাবধানে এতোটা বদল।

হঠাৎ দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যেতেই থেমে গেলো আরিফার কদম সাথে চওড়া হলো আরহামের ঠোঁটের কোণের হাসি।আজকে এই হাসিটাকেও বড্ড ভয়ংকর লাগছে।আকস্মিক আরহামের বলিষ্ঠ হাতের টান পড়তেই আরিফা যেয়ে ঠেকলো আরহামের বুকের বাম পাশটাই নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো সকল ভয়।কিন্তু পরক্ষনেই আখিজোড়ায় ভর করলো আখিজোড়া গলায় আর চুলে সুক্ষ্ণ ব্যাথা হতেই কেপে উঠলো সে। আরহাম এক হাত দিয়ে কোমড় পেচিয়ে অন্য হাত দিয়ে চুল খামিচে ধরে আরিফার গলায় হিংস্র পশুর ন্যায় দাত বসিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে চলেছে।আরিফা চুপ করে সেখানেই দাড়িয়ে দেখতে শুরু করলো তার বিবাহিত বরের হিংস্রতা। কানে বেজে উঠতে লাগলো আরহামের বলা কথাটা

’’ এই আরহাম কে চাওয়ার শাস্তি তুই হারে হারে পাবি আর ভুলেও আমার সামনে আসার চেষ্টা করবিনা। তোর ঠায় আমার সামনে শুধু রাতে হবে। উহু তোকে ভালোবাসার জন্য না তোকে আমার হিংস্রতার নমুনা দেখানোর জন্য। *wellcome to my hell sweetheart* তুই ছটফট করবি মৃত্যুর ”

আরিফাকে কথাটির মানে বুঝিয়ে দিচ্ছে তার চোখ থেকে বেরিয়ে আসা অশ্রু কণা গুলো।যন্ত্রণাই ছোটফোট করতে করতে আরহামের হিংস্রতা সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান শুন্য হয়ে পরে থাকে বিছানায়।

চলবে!#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ২৮
,
,
,
,
,
সূর্যের তীর্যক রশ্নি চোখে এসে লাগতেই ঘুম ভেংগে যায় আরিফার।সারা শরীর ব্যাথায় ছিড়ে পরছে।কিছু কিছু জায়গায় জ্বলছে প্রচন্ড ভাবে। মহূর্তে ভারি হয়ে আসে আঁখি পল্লব। হঠাৎ টের পায় কারো বাহুর বন্ধন অশ্রুতে ভারি হয়ে আসা আখি পল্লব হঠাৎ করে বিস্ময়ে বড় হয়ে আসে।বাধা না পেয়ে অশ্রু গুলাও বাধন হারা পাখির মতো ভেয়ে পরে গাল দ্বারা

—সারা রাত সমস্ত ঘৃণা দ্বারা নিজের হিংস্রতা বুঝালেও রাত্রি শেষে ঠিক নিজের বক্ষের বাম পাশটাই ঠায় দিয়েই দিলেন একদিন এই বুকটাই আমার মাথা পাওয়ার জন্য ছোটফোট করবেন ঠিক যেমন টা আমি করি কিন্তু হয়তো সেটা হতে বড্ড দেরি হয়ে যাবে।

আরহাম কে নড়তে দেখেই আরিফা আখিজোড়া বন্ধ করে ফেলে।সে দেখতে চায় আরহাম এই অবস্থায় তাকে দেখে কি করে।আরহাম চোখ মেলতেই তার দৃষ্টি থমকে যায় আরিফার ফর্সা নিল চেহারায়।আরহামের বুঝতে বাকি নেই কাল রাতের ব্যবহারে জন্য ব্যাথায় আরিফার মুখটার এই অবস্থা তবুও কি মেয়েটার সৌন্দর্যের কোন কমতি আছে। এই যে চোখের পানি গাল বেয়ে পরেছে যার কারনে কালো দাগ বসে গেছে অশ্রু কণা শুকিয়ে তবুও কতোটা মনমোহনীয় লাগছে।আরহাম আলতো ভাবে নিজের ঠোঁট ছোয়ালো আরিফার ঠোঁটে। ধীরে সুস্থে উঠে নিজের কাপড় গায়ে জড়িয়ে চাদর দিয়ে আরিফার নগ্ন শরীর টাকে জরিয়ে কোলে তুলে ফ্লোরে শুয়ায় দিলো যাতে আরিফা ঘুম থেকে উঠে মনে করে আরহাম তাকে জ্ঞান শূন্য অবস্থায় মেঝেতে ফেলে রেখেছে।যার মনে ঘৃণা জন্মানোর জন্য আরহামের এতো ব্যবস্থা সে তো ঘুনক্ষরেও টের পেলোনা তার করা স্নিগ্ধ পরশে কারো মন টা কাতর হয়ে উঠেছে অদ্ভুদ ভালোলাগায় অদ্ভুদ এক অস্থিরতায় সে কম্পিত। আরহামের নিজের করার নতুন উদ্দেগে সে বহমান নদীর ন্যায় হয়ে উঠেছে।

আরহাম ওয়াসরুমে যেতেই উঠে বসে আরিফা

—পারলেন না তো নিজেকে কঠোড় আবরণে আটকে রাখতে। তেমনি আপনার মনে আপনার অজান্তেই যে জায়গা করে নিয়েছি সে জায়গাটা আরও দৃঢ় হতেও আটকাতে পারবেন না আরহাম মশাই

আরহাম ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে দেখে আরিফা বসে আছে উঠার চেষ্টা করছে কিন্তু উঠতে পারচ্ছেনা

—এতোটাও যন্ত্রণা দেওয়া উচিৎ হয়নি। নিজের রাগ কন্ট্রোল কর আরহাম ওকে এই ভাবে কষ্ট দেওয়া তোর কাজ না ওকে মানসিক ভাবে ভাংগে গড়াতে হবে ভালোবাসার প্রচন্ড ভালোবাসায় ঢুবায়ে ছেড়ে দেওয়াই তোর উদ্দেশ্য

—গন্ডার কথাকারা ওইখানে দাঁড়িয়ে থেকে দেখছে কই আমাকে তুলতে সাহায্যে করবে তা না উনি তো নিজেকে কঠোর করতে হবে ধুরু ভালো লাগেনা।

—এইযে কানা ওইখানে সং সেজে না দাঁড়িয়ে এখানে এসে আমাকে তুলুন নাকি বডি হাওয়া দিয়ে ফুলিয়েছেন তুলার শক্তি নেই

আরহাম নিজের মনেই হাজারো ছোক কষতে ব্যস্ত ছিলো হঠাৎ আরিফার এমন ব্যঙাত্বক কন্ঠ শুনে ভ্রু কুচকে তাকাই যে মেয়ের উপরে রাতে ঝড় বেয়ে গেলো এখন অব্দি তার ফল অনুসারে সে মেঝেতে পরে আছে উঠার মতো শক্তি নাই সে এইভাবে চ্যাটাং চ্যাটাং বানি শুনাচ্ছে আরহাম কে।আরহামের এই মহূর্তে ইচ্ছা করছে কানের নিচে কয়টা দিতে।

কথা না বারিয়ে আরহাম চোট করে কোলে তুলে নিলো আরিফাকে। আরিফা আরহাম এর গলা জরায় ধরলো হঠাৎ করে তার আখিদ্বয় আটকে গেলো আরহামের গলায় থাকা আচড়ের দাগে জায়গা টাই রক্ত জমে গেছে আরিফা মনে নিষিক্ত একটা আবদার মাথা চারা দিয়ে উঠলো বড্ড ইচ্ছা করলো ওই আচরের জায়গাটাই নিযের ওষ্ঠের নরম ছোয়া একে দিতে কিন্তু সে জানে এই মহূর্তে কাজ টা করতে তার যতোটুকু সময় লাগবে তার চেয়ে দ্রুত আরহামের সময় লাগবে তার বাধন থেকে আরিফাকে ছাড়িয়ে মেঝেতে ফেলে দিতে। বাথরুমের দরজার সামনে আসতেই আরিফা আর নিজেকে আটকে পারলোনা ওষ্ঠদ্বয় চেপে ধরলো আরহামের ঘাড়ে নিবিড় ভাবে। আরহাম কেপে উঠলো চোখ এর পর্দা বন্ধ করে এক হাত দিয়ে আরিফাকে আকড়ে ধরে অন্যহাত গিয়ে ঠেকলো দেওয়ালে নয়তো যেকোন মহূর্তে নিজের ভারসাম্য হারিয়ে পরে যাবে।
আরিফার ইচ্ছা করছেনা এই ছোয়া বিচ্ছেদ করতে ছোট ছোট স্পর্শে ভরিয়ে দিতে লাগলো আরহামের গলায়।আরহাম ধীরে ধীরে আরিফাকে নিচে নামিয়ে দেওয়ালে চেপে ধরলো যতোই ঘৃণা করুক বা যায় করুক পুরুষ মানুষ কিভাবে ফিরায় দিবে এতো আবেদনময়ী নারীর স্পর্শ আরহাম ও পারেনি আরিফার ঠোঁট তার বক্ষের দিকে যেতে নিলেই চুল মুঠ করে ধরে দুই জনের ওষ্ঠ এক করে দিলো।

———————

ওয়াসরুম থেকে শাড়ি পরে বেরিয়ে আসতেই যেনো আমার চোখ জোড়া থমকে যায়। চোখের সামনে নিজের স্বামি নামক ব্যাক্তিটির এহেন রুপ দেখে যেনো আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো কালো রঙের পাঞ্জাবী পরে চুল সেট করতে ব্যস্ত মানব টির কি খেয়াল আছে তার এহেন রুপে তার স্ত্রীর ঠিক কি রুপ পাগলের মতো অবস্থা হতে চলেছে।

—আমাকে দেখা শেষ হলে এবার তৈরি হয়ে নিন ম্যাডাম।নাহয় আপনার এমন রুপ দেখে কারোই ভার্সিটির প্রবেশদ্বারে পা রাখা হবেনা ডুবতে হবে এক অন্যের মাঝে যেটা এই মহূর্তে শোভনীয় হবে বলে আমার মনে হয়না

গরম হয়ে উঠলো গাল জোড়া।লজ্জায় মাথা টা নিচু হয়ে উঠলো চোখের পর্দায় ভেসে উঠলো কালকের বাসের ঘটণা টা। ভাবতেই শিউরে উঠলাম কিভাবে এতোটা বেশরম হয়ে উঠলাম কে জানি নিশ্চয় এই বেশরম লোকটার সঙ্গদোষ।

আমার হুস ফিরাতেই হয়তো টেনে নিলেন নিজের দিকে এই অসভ্য গম্ভির ব্যাক্তিটির হাত। যার মুখ টায় সবসময় গম্ভির্য বাস করলেও খুব কম সময়ের জন্য হাসি দেখা যায় তবুও তা প্রানচ্ছল হাসি নয় বাকা হাসি শুধু মাত্র ঠোঁট টা একটু বাকিয়ে জানান দেয় হ্যা তিনিও হাসতে জানেন।যার এই সামান্য মুচকি হাসিটা এতোটা মারাত্মক তার প্রানচ্ছ্বল হাসিটা ঠিক কতোটা ভয়ংকর হবে ভাবতেই অদ্ভুদ একটা শিহরণের টের পায়।ইতি মধ্যে আমাকে নিজের মতো করে সাজিয়ে তুলেছেন আসফি ভাইয়া। হিজাবে পিন আটকে দিয়ে হিজাবের উপরেই আটকে দিলেন আর্টিফিশিয়াল কিছু কৃত্রিম সৌন্দর্যতে ভরপুর ফুল। কপালে ছোট একটা পরশ একে কানের কাছে মুখ আনতেই যেনো আমার কান দুইটা উনার ঠোঁটের আরও কাছে চলে গেলো উনার সেই অদ্ভুদ প্রেমা বার্তা শুনতে

—শ্যামাঙ্গিনী তোমার ঝলসোনা রুপে এই প্রেমিক পুরুষের হৃদয় ছাড়খার হয়ে যাচ্ছে তা কি টের পাচ্ছে তোমার এই নিষ্ঠুর মন তোমার কাজল কালো চোখে চোখ রেখে হারিয়ে যাচ্ছে এই কঠোর পুরুষের অবচেতন মন তোমার ওই কাজল কালো চোখের চাহনিত ধ্বংশ আমি, তোমার দেহে জড়ানো এই শাড়িটা যে আমার হিংসার কারন হয়ে দাড়িয়েছে ।
তোমার এই ভয়ংকর সুন্দর রুপ যে ধ্বংশ করার ক্ষমতা রাখে এই প্রেমিক পুরুষের হৃদয়কে, আহ! কি রুপ এই রুপে যে আমি পুনরায় তোমাতে হারিয়ে যাচ্ছি মত হচ্ছি আল্লাহর তৈরি এই অপরুপ সৌন্দর্যতে

এই ধূসর রাঙা শাড়িতে যে তোমাকে লাগছে বিনাসী এই হৃদয়ের
তোমার ওই কাজল কালো চোখ লাগছে যে কাজলআখি,

তোমার ঝলসানো রুপে ধ্বংস এই মানব

তুমি যে ধ্বংশময়ী

_______

ভার্সিটির দরজাই পা রাখতেই আসফি বলে চিল্লিয়ে তার সামনে নারী অবয়ব এসে দাঁড়াতেই আসফি ভাইয়ার চোখে আলাদা একটা খুশির ঝলক দেখা গেলো।ভয়ে আমার পা আসাঢ় হয়ে উঠলো। হারানোর ভয়টা তীব্র হতেই খামছে ধরলাম তার বাহু। কিন্তু তাতে কি খেয়াল আছে তার সে যে ব্যাস্ত তার পুরাতন সখীকে আপ্যায়ন করতে সে কি জানে তার এই আপ্যায়ন শুধু তার সখীর নই সাথে তার এই আপ্যায়ন আমাদের সম্পর্কের নতুন মোড়

চলবে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here