প্রেমাসক্তি পর্ব ৫

#প্রেমাসক্তি
#পর্ব__০৫
#অদ্রিতা_জান্নাত

আস্তে আস্তে চোখ খুলে উঠে বসলাম ৷ রুমের চারদিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম ৷ ইশানকে কোত্থাও দেখতে পেলাম না ৷ বেড থেকে নামতে গেলেই ইশান দৌঁড়ে এসে বলতে লাগলেন,,,,,,,

ইশান : আরে কি করছো? কি করছো? নামছো কেন?

ইশিতা : কোথায় ছিলেন আপনি?

ইশান : একটু বাহিরে গিয়েছিলাম কেন?

ইশিতা : না এমনি ৷ সরুন নামবো ৷

ইশান : কেন নেমে কই যাবা?

ইশিতা : আপনাকে বলে কয়ে এখন সব করতে হবে আমায়? আপনি নামতে কেন দিচ্ছেন না?

ইশান : ব্যথা পাবে তো ৷

ইশিতা : তার জন্য কি সারাদিন রুমের মধ্যে খাটে বসে থাকবো? পায়ে ব্যথা নেই সেরে গিয়েছে ৷ সরুন ৷

ইশান : দরকার নেই নামার বসে থাকো ৷

ইশিতা : না ৷ বের হবো না আজ?

ইশান : তুমি এ অবস্থায় বেরোবে?

ইশিতা : আরে আমার পায়ে আর ব্যথা নেই তো ৷ আপনি কেন এরকম করছেন? আমার পা আমি তো বলছি ব্যথা নেই তাহলে?

ইশান : এই তুমি না বেশি কথা বলো ৷ তোমাকে বসে থাকতে বলছি তোমার ভালোর জন্য আর তুমি ঝগড়া করছো আমার সাথে?

ইশিতা : ধুরর ৷ বলি কি আর বোঝে কি? সরুন সামনে থেকে ৷

বলেই দাঁড়িয়ে সামনে আগাতে গেলে উনি আমার হাত ধরে ওনার দিকে ঘুরিয়ে বললেন,,,,,,

ইশান : কোথায় যাচ্ছো?

দাঁতে দাঁত চেপে বললাম,,,,,,

ইশিতা : ফ্রেশ হতে ৷ ছাড়া যাবে কি?

ইশান : সেটা বললেই তো হয় ৷

ইশিতা : বলার সুযোগ দিয়েছেন আপনি? যাইহোক রেডি হয়ে নিন ৷

ইশান : কেন?

ইশিতা : বাহিরে যাবো না?

ইশান : এই অবস্থায় তুমি…

ইশিতা : মেরে নাক ফাটিয়ে দিব একেবারে ৷ আমি ঠিক আছি তাই এত কথার কোনো দরকার নেই ৷

ইশান : আরে…?

মুখ ভেংচি কেটে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম ৷

__________________

একটা সরু রাস্তা আর এই রাস্তার দুইপাশে গাছগাছালিতে ভরা ৷ এই রাস্তার সামনে রয়েছে কয়েকটা উঁচু নিচু পাহাড় ৷ এই রাস্তা দিয়ে এই পাহাড়ে যাওয়া যায় না ৷ এই পাহাড়ে যেতে হয় অন্য রাস্তা দিয়ে ৷ পুরো জায়গাটা নির্জন ৷ শুধু রয়েছে শা শা করে ছুটে যাওয়া বাতাসের শব্দ ৷ আশেপাশে কোনো মানুষ নেই ৷ হাতে গোনা ১ জন কি ২ জন ৷ এই রাস্তা দিয়েই হাঁটছি আমি আর ইশান ৷ প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে হাঁটছি এখানে তবুও পথ শেষ হচ্ছে না ৷ আবার ফিরে যেতেও ইচ্ছে করছে না ৷ হঠাৎ জোরে মেঘ গর্জন করে উঠলো ৷ ভয়ে চোখ বন্ধ করে ইশানের হাত খামচে ধরলাম আমি৷

ইশান আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আশেপাশে তাকালো ৷ পুরো আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গেছে ৷ হয়তো এক্ষুনি বৃষ্টি নামবে ৷ এখানে আর থাকা নিরাপদ নয় ৷ চারপাশে তাকিয়ে খুজতে লাগলো কোনো আশ্রয়স্থল পায় কি না? তবে দূর দূরান্ত পর্যন্ত কিছুই দেখা যাচ্ছে না দেখে ইশান বলতে লাগলো,,,,,,,,

ইশান : কি করবা এখন? সেই কখন বলেছিলাম চলে যাই আমার কথা তো শুনলেই না ৷ আবার এদিকে রাত হয়ে গিয়েছে ৷ মনে হচ্ছে বৃষ্টি নামবে ৷ বলো কি করবা?

ইশিতা : আআমি কি জানি? এএকটু খুঁজে দেখুন কোথাও থাকা যায় কি না?

ইশান : হুম এখন তো আমাকেই সব দেখতে হবে ৷ চলো এগোই দেখি ৷

কিছুদূর যেতেই জোরে বৃষ্টি নামলো ৷ আর এই বৃষ্টিতে দুজনেই ভিজে গেলাম ৷ বৃষ্টির পানি অতিরিক্ত ঠান্ডা ৷ গায়ে লাগার সাথে সাথেই কেঁপে উঠলাম ৷ ইশান ওনার গায়ের থেকে জ্যাকেট খুলে আমার গায়ে জড়িয়ে দিলেন ৷ আমিও সেটা গায়ের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে সামনের দিকে হাঁটতে লাগলাম ৷ নিজের উপর রাগ উঠছে এখন ৷ কেন যে থাকতে গেলাম?

কিছুদূর যেতেই একটু আলোর দেখা পাওয়া গেল ৷ ওরা দুজন সেই পথ ধরে হেঁটে গেল ৷ সামনে গিয়ে দেখে একটা পুরোনো কুড়ে ঘর ৷ ইশান সেখানে গিয়ে জোরে করে বলতে লাগল,,,,,,,

ইশান : কেউ আছেন? একটু হেল্প লাগবে ৷ একটু শুনবেন? আছেন কেউ?

একটু পর একটা বুড়ো লোক লাঠিতে ভর করে বাহিরে এসে বলতে লাগলো,,,,,,,,,

—- কে তোমরা বাবা? কি চাই?

ইশান : আসলে চাচা আমরা ঘুরতে এসে বৃষ্টির জন্য আটকে গিয়েছি এখানে ৷ যদি একটু আজকের জন্য থাকার ব্যবস্থা করে দিতেন ৷

—- আমার এই ভাঙ্গা ঘরে থাকতে পারবা বাবা?

ইশান : শুধু আজকের রাতটার জন্য মাথার উপরে একটু ছাদ হলেই হবে ৷

—- তাইলে আহো ভেতরে আহো তোমরা ৷

ইশান আমাকে নিয়ে ভিতরে চলে গেলেন ৷ ঘরের ভিতরে বলতে গেলে কিছুই নেই ৷ শুধু একটা পুরাতন চকি আর একটা টিনের বাক্স ৷ বুড়ো লোকটা ইশানের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন,,,,,,,,

—- তোমরা তো ভিইজা গেছো পুরা ৷ দাঁড়াও একটা কাপড় আইনা দিতাছি ৷

বলেই বুড়ো লোকটা ঘরের বাহিরে চলে গেল ৷ কিছুক্ষন পর ঘরে এসে ইশানের হাতে সাদা রঙের পায়জামা আর পান্জ্ঞাবি ধরিয়ে দিয়ে বলতে লাগলো,,,,,,

—- নাও বাবা পইরা নাও ৷ নইলে ঠান্ডা লাইগা যাইবো ৷

তারপর আমার দিকে একটু তাকিয়ে ওই টিনের বাক্সের কাছে গিয়ে একটা লাল সুতি শাড়ি নিয়ে এসে আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলতে লাগলো,,,,,,,

—- মা তুমি এইডা পইরা লও ৷

আমি একবার শাড়িটার দিকে তাকিয়ে ইশানের দিকে করুন চোখে তাকালাম ৷

ইশান : একটু ম্যানেজ করে নাও ৷

বলেই উনি বাহিরে চলে গেলেন ৷ সঙ্গে বুড়ো লোকটাও ৷ একদিক দিয়ে আমি শাড়ি পরতে পারি না আরেকদিক দিয়ে এই শাড়িটার সঙ্গে ব্লাউজই নেই ৷ এখন ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পরবো কীভাবে? আবার ভেজা কাপড়ে ঠান্ডা লাগছে ৷ তাই আর কোনো উপায় না পেয়ে শাড়িটা একপ্রকার গায়ে পেঁচিয়ে নিলাম ৷ দরজা খোলার শব্দ পেয়ে টেনে টুনে ঠিক করতে লাগলাম ৷

এদিকে ইশান ভিতরে ঢুকে ইশিতাকে এই অবস্থায় দেখে জোরে হেসে উঠলো ৷ ওর হাসির শব্দ শুনে ইশিতা ঘাড় ঘুরিয়ে ওর দিকে তাকালো ৷ ওকে এভাবে তাকাতে দেখে চুপ করে রইল ও ৷ ইশিতার ভেজা চুলের থেকে টপটপ করে পানি পরছে ৷ আর সেই পানিতে ইশিতার চোখ মুখ ভিজে গেছে ৷ ইশান হা করে তাকিয়ে রইলো ওর দিকে ৷ ইশানকে এভাবে তাকাতে দেখে ইশিতা চোখ সরিয়ে একপ্রকার জোরে বললো,,,,,,,,

ইশিতা : কি দেখছেন ওভাবে?

ইশান অন্যদিকে তাকিয়ে জোরে একটা শ্বাস নিয়ে পকেট থেকে ওর ফোন এগিয়ে দিয়ে বললো,,,,,,,,

ইশান : মোবাইলে দেখে ভালো করে শাড়িটা পরে নাও ৷

ইশিতা : নেটওয়ার্ক নেই তো ৷

ইশান : এতোক্ষন ছিল না ৷ এখন বৃষ্টি থেমে গেছে ৷ একটু একটু পাবে নাও ৷

আমি ইশানের থেকে ফোনটা নিলাম ৷ উনি বাহিরে চলে গেলেন ৷ ইউটুব দেখে কোনো রকমে শাড়িটা পরে ইশানকে ডাক দিলাম ৷ উনি ভিতরে এসে নিচে একটা কাঁথা বিছিয়ে তার উপরে শুয়ে পরলেন ৷ আর আমি উপরে চকিতে ৷

_______________

মাঝরাতের দিকে কারো গোঙানির আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে গেল ৷ বিরক্ত নিয়ে উঠে বসলাম ৷ পাশে তাকিয়ে দেখি ইশান নিচে শুয়ে কাঁপছেন আর গোঙাচ্ছেন ৷ আমি উঠে গিয়ে ওনার কাছে চলে গেলাম ৷ তার গায়ে হাত দিয়ে দেখি জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে একদম ৷ এই অচেনা জায়গায় ডাক্তার কোথায় পাবো? আবার মাথায় যে জলপট্টি দিব সেটাও বা কই পাবো? চকির উপর থেকে চাদরটা এনে ইশানের গায়ে জড়িয়ে দিলাম ৷ তবুও কাঁপুনি থামছে না তার ৷ উপায় না পেয়ে ইশানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম ৷

★★★
সকালে ইশান ঘুম থেকে জেগে দেখে ইশিতা ওর সাথে লেপ্টে ঘুমিয়ে আছে ৷ চোখ কচলে আবার তাকালো ও ইশিতাকেই দেখতে পাচ্ছে ৷ অবাক হয়ে গেল হঠাৎ কেন মেয়েটা উপর থেকে নিচে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে রইলো? ইশিতাকে নিজের থেকে ছাড়াতে গেলে ও আরো শক্ত করে ওকে ধরে নড়েচড়ে আবার ঘুমিয়ে পরলো ৷ ইশিতার ঘুমন্ত মুখটার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ওর মুখের উপর হালকা করে একটা ফু দিলো ইশান ৷ ইশিতার মুখের ছোট ছোট চুল গুলো সরে গেল এতে ৷ ইশিতা চোখ, মুখ কুচকে ঘুমের মধ্যেই হেসে দিল ৷ ইশান সেই হাসিটার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে চোখ বন্ধ করে নিল ৷

নিজের থেকে ইশিতাকে ছাড়িয়ে ইশিতাকে চকিতে শুইয়ে দিয়ে ডাকতে লাগলো ওকে ইশান ৷ একটু নড়েচড়ে আবার ঘুমিয়ে যায় ও ৷ ইশান এবার ওকে ধাক্কা দিতে লাগলো ৷ ইশিতা বিরক্ত হয়ে হাত নাড়িয়ে বলতে লাগল,,,,,,,,

ইশিতা : এই যান তো ৷ আরেকটু ঘুমাতে দেন ৷ সারারাত ঘুমাতে পারি নি উফ ৷

ইশান ধরে ইশিতাকে বসিয়ে দিয়ে একপ্রকার ঝাকিয়ে বলতে লাগল,,,,,,,,,,,,

ইশান : আরে ওঠো নাহলে যেতে দেরি হয়ে যাবে ৷ হোটেলে গিয়ে আরো ঘুমিও ৷ এখন ওঠো না বাবা ৷

আমি চোখ কচলে বলতে লাগলাম,,,,,,,

ইশিতা : হুম উঠেছি তো ৷

ইশান : খুব ভালো করেছো ৷ এখন চেন্জ্ঞ করে বাহিরে আসো কুইক ৷ ওয়েট করছি আমি ৷ বুঝেছো?

ইশিতা : হু!

তারপর ইশান বাহিরে চলে গেলেন ৷

__________

গাড়ি থেকে নেমে হোটলের ভিতরে যেতে নিলেই পিছন থেকে ইশান ডেকে উঠলেন,,,,,,,,

ইশান : ইশিতা?

এই প্রথম উনি আমার নাম নিয়ে ডাকলেন ৷ ওনার ডাকে কেঁপে উঠলাম আমি ৷ পিছন ফিরে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম ৷ ইশান আমার কাছে এসে বলতে লাগলেন,,,,,,,,

ইশান : পরশু আমাকে চলে যেতে হবে ৷

এটা শুনে আমার বুকটা ধুক করে উঠলো ৷ কিছু বললাম না চুপ করে রইলাম ৷ উনি আবার বললেন,,,,,

ইশান : কালকের একটা দিন আমি এখানে আছি ৷ তারপরের দিন ঢাকা ব্যাক করবো ৷ যদি ঘুরতে চাও তো কাল সারাদিন তোমাকে নিয়ে ঘুরতে পারি ৷ তারপর তো চলে যাবো ৷ আর কোনোদিন দেখা হবে কি না জানি না ৷ ঘুরবে কাল আমার সাথে?

আমি মাথা নাড়িয়ে ‘আচ্ছা’ বললাম ৷ ইশান আমার দিকে তাকিয়ে আবার বললো,,,,,

ইশান : যাও ভেতরে যাও ৷ আর সাবধানে থেকো ৷

আমি চুপ করে রইলাম ৷ উনি ঘুরে পেছনের দিকে হাঁটতে লাগলেন ৷ আমার হাত বাড়িয়ে ইশানকে ডেকে বলতে ইচ্ছা করছে,, “আপনি যাবেন না প্লিজ ৷ এই কয়দিন যেভাবে আমাকে আগলে রেখেছেন সারাজীবন সেভাবেই নিজের কাছে আগলে রাখুন ৷ আমি আপনার কাছে থাকতে চাই ৷ প্লিজ আমাকে একা ফেলে রেখে যাবেন না ইশান ৷”
কথাগুলো গলায় আটকে রইলো ৷ মুখ ফুটে বলতে পারলাম না আর ৷ চোখ দিয়ে দু ফোঁটা পানি গড়িয়ে পরলো ৷ চোখ সরিয়ে পিছনে ঘুরে হোটেলের ভিতরে চলে এলাম ৷

_______________________________________

মাঝখান দিয়ে কেটে গেল আরো একটা দিন ৷ আজ ইশান ঢাকা ব্যাক করবেন ৷ আমি আবার একা হয়ে যাবো ৷ মনটা কেমন অসস্থির হয়ে উঠেছে ৷ ইশান চলে যাবেন এটা শুনেই মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু ওনাকে তো যেতেই হবে ৷ আমার জন্য শুধু শুধু থাকবেন কেন এখানে? সকাল ১০ টা বাজে ইশানের ফ্লাইট দুপুর ১ টার দিকে ৷ হাতে মাত্র আর তিন ঘন্টা সময় ৷ এটুকু সময়ে কি-ই বা করতে পারি আমি?

রুমে পায়চারী করছি আর এসব ভাবছি ৷ দরজা খুলে নিচে চলে গেলাম ৷ ওনার যাওয়া আমি আটকাতে পারবো না সেটা জানি ৷ অন্তত এখন আরেকবার শেষ দেখা তো দেখতে পারবো তাকে ৷ তাই আর সময় নষ্ট না করে পাশের হোটেলে চলে গেলাম ৷ রিসিপশানে গিয়ে রুম নাম্বার জিজ্ঞাস করলে সে বলে ‘২০২’ নাম্বার রুম ৷ দোতলায় গিয়ে রুমের কাছে এসে দরজা ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে গেল ৷ হয়তো লক করা ছিল না তাই ৷

চারপাশে তাকিয়ে আস্তে করে ভিতরে ঢুকে পরলাম ৷ পুরো রুম এলোমেলো ৷ একেই বলে ছেলে মানুষের রুম ৷ আশে পাশে তাকিয়েও কোথাও ইশানকে দেখতে পেলাম না ৷ হয়তো ওয়াশরুমে গিয়েছেন ৷ ঘুরে ঘুরে পুরো রুমটা দেখতে লাগলাম ৷ তখনি একটা ফোন বেজে উঠলো ৷ মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখি মোবাইলের স্ক্রিনে ‘ভাইয়া’ নামটা ভেসে উঠেছে ৷ কিছুক্ষন বাজতে বাজতে কলটা কেটে গেল ৷ হাতের ফোনটা রাখতেই দরজা খোলার আওয়াজে পিছনে ঘুরে তাকালাম ৷ সঙ্গে সঙ্গে এক চিৎকার দিয়ে অন্য দিকে ঘুরলাম আমি ৷

হঠাৎ করে ইশিতার চিৎকারে ইশান ভয় পেয়ে গেল ৷ সামনে তাকিয়ে ইশিতাকে দেখে আরো অবাক হয়ে গেল আর বলতে লাগল,,,,,,

ইশান : তুমি এখানে?

ইশিতা আমতা আমতা করে বলতে লাগল,,,,,,,

ইশিতা : আআপনার সঙ্গে ককথা বলতে এসেছিলাম ৷ আআপনি এভাবে বের হয়েছেন কেন?

ইশান : কোন ভাবে? (ভ্রু কুচকে)

কথাটা বলে ইশান কিছুক্ষন ইশিতার দিকে তাকিয়ে রইল ৷ কিন্তু ইশিতা চুপ ৷ এবার ও একবার নিজের দিকে তাকিয়ে আবার বললো,,,,,,

ইশান : আমার রুম আমি যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে বেরোবো ৷ এমন তো না যে আমার গায়ে কিছুই নেই ৷

বলেই ইশিতার দিকে এগোতে গেলে ইশিতা বলতে লাগল,,,,,,,

ইশিতা : আআমার কাছে আসবেন না প্লিজ ৷ আপনি চেন্জ্ঞ করে নিন ৷ আমি পরে ককথা বলবো আপনার সাথে ৷ এএখন আমি যাই ৷

বলেই পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলেই ইশান ওর হাত ধরে ওর সাথে মিশিয়ে নিল ৷ হঠাৎ এরকম হওয়ায় ইশিতা ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো ৷ ইশানের গায়ে জমে থাকা ছোট্ট ছোট্ট পানির কনাগুলো ইশিতার গায়ের জামাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে ৷ আর ও কেঁপে কেঁপে উঠছে ৷ ওর হাত, পা, মুখ সব কাঁপছে ৷ জোরে জোরে শ্বাস ফেলছে ৷ ইশান ইশিতাকে আরো শক্ত করে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল ৷ ইশিতার মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না ৷ চুপ করে আছে ও ৷

ইশান ওর কানের কাছ থেকে চুলগুলো একহাতে এক সাইডে সরিয়ে দিল ৷ তারপর ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে শান্ত স্বরে আস্তে করে ফিসফিস করে বললো,,,,,,,,,, “ভালোবাসি!”

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here