প্রেমের মরা জলে ডুবে পর্ব -১২

#প্রেমের_মরা_জলে_ডুবে

#তানিয়া

পর্ব:১২

শুভ্র ভোরে উঠে ওযু করে নিলো।তিমিরের দিকে তাকিয়ে ভাবলো ওকে ডাকবে কিনা,কারণ শুভ্র জানে তিমির ভোরে তার ঘরে উঁকি দেয় সেটা, কিন্তু অজানার ভান করতো।তাছাড়া শুভ্র এটাও জানে তিমির নামাজ পড়ে সকালে।এখনো উঠছে না দেখে নিজেই ডাক দিলো।

তিমির উঠো, নামাজ পড়বে না?

কয়েকবার ডাকার পরও তিমির উঠলো না।শুভ্র এবার শরীর ঝাকিয়ে ডাকতে তিমির বিরক্তের সুরে গলা তুললো,

উফফ জ্বালাস না তো শুভা?

শুভ্র বুঝলো তিমির শুভা মনে করে কথা বলছে।

তিমির নামাজ পড়বে না?

তিমির কোন হা হু করলো না।ওয়াক্ত শুরু হওয়ায় শুভ্র নিজেই নামাজ আদায় করে নিলো।নামাজ শেষ করে শুভ্র আরেকবার তিমিরকে দেখলো। মেয়েটা কুঁজো হয়ে গেছে।গতকাল হালকা বৃষ্টি পড়েছে বলে সকালে ঠান্ডা বেড়েছে। শুভ্র কাভার্ড থেকে চাদর নিয়ে তিমিরকে জড়িয়ে দিলো।

ঘুম থেকে উঠে তিমির দেখলো তার গায়ে চাদর।পাশে শুভ্র অঘোরে ঘুমোচ্ছে। শুভ্র তার গা থেকে এতটাই দূরে যা পাশ ফিরতে গেলে সোজা নিচে পড়বে।তিমির উঠে গিয়ে রুমে গেলো।যদি নিপা এসে দেখে তিমির শুভ্রর রুমে তাহলে তুলকালাম ঘটাবে।

সকালের নাস্তা করে তিমির বেরিয়ে গেলো। একটুপর শুভ্রও বের হলো।গাড়ি থেকে দেখলো তিমির রাস্তায় দাড়িয়ে আছে।শুভ্র গাড়ি থামালো যে তিমির কেনো দাড়িয়েছে সেটা জানার জন্য কিন্তু তিমির দেরী না করে সোজা গাড়ির দরজা খুলে শুভ্রর পাশে বসে গেলো।

আরে আরে কি সমস্যা তুমি গাড়িতে উঠে বসলে কেন?

আপনি গাড়ি থামিয়েছেন কেনো সেটা বলুন?

আজব গাড়ি থামিয়েছি বলে তোমাকে কৈফিয়ত দিতে হবে?

হ্যাঁ কারণ আপনি গাড়িটা আমার জন্য থামিয়েছেন সেটা বলতে লজ্জা পাচ্ছেন।যাই হোক অযথা কথা বাড়াবেন না তাড়াতাড়ি চলুন লেট হচ্ছে। তাছাড়া শুভা থাকলে দুজনে কথা বলতে বলতে যায় এখন তো শুভা নেই তাই আপনার সাথে যাবো।যতদিন শুভা আসবে না শুভার সব কাজ আপনাকে করতে হবে।

ওহ হ্যালো তোমার মাথা ঠিক আছে,আমি আর শুভা এক না?তাছাড়া তোমার এসব পাগলামো শুভা মানতে পারবে আমি না?

এখন কি নেমে যাবো?

তিমির মুখ গোমড়া করে প্রশ্ন করলো।শুভ্র বিষয়টা বুঝে গাড়ি স্টার্ট দিলো।তিমির মুচকি হেসে সামনে তাকালো।শুভ্র আড়চোখে দেখলো তিমিরের হাসি।

কলেজের একটু আগে তিমিরকে নামিয়ে দিলো কারণ শুভ্র চায় না দুজনকে একসাথে দেখে সবাই উৎসুক হোক।তিমির মুখ ভেংচি কেটে গাড়ি থেকে নেমে বাকি পথটা হেটে গেলো।

শুভ্র ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে তখনি তিমির ব্যস্ততার ভঙ্গি নিয়ে তার ঘরে ঢুকলো।

আরে আমাকে একটু সাহায্য করুন,তাড়াতাড়ি এদিকে আসুন?

শুভ্র চোখ তুলে দেখলো তিমির দুই হাতে বই নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বলতে গেলে বেঁকে আছে। শুভ্র গিয়ে বইগুলো নিয়ে বিছানায় রাখলো।

এসব হাঁড়িপাতিল নিয়ে তুমি আমার রুমে কি করছো,তাছাড়া আমার কাজের সময় তোমাকে আসতে মানা করলাম না?

আপনি এভাবে আমার বিদ্যাকে হাড়ি পাতিল বলছেন কেনো,তাছাড়া একা রুমে পড়তে ভালো লাগছে না আবার সামনে বোর্ড পরীক্ষা, না পড়লে ফেল তাই আপনার কাছে এলাম পড়তে।আমি ইংরেজিতে যথেষ্ট কাঁচা আমি যদি ফেল করি তাহলে তো আপনি শিক্ষক হিসেবে ব্যর্থ।

কেনো তোমার ফেলের সাথে আমার কি সম্পর্ক?

আলবাত সম্পর্ক আছে। আপনি ইংরেজির এত বড় শিক্ষক আর আপনার বউ ইংরেজিতে ফেল করবে সেটার দায়ভার কে নিবে আপনারই তো তাই না?তাই আপনি এখন আমাকে পড়াবেন?

পারবো না পড়াতে।তোমাকে পড়াতে গেলে আমি পাগল হয়ে যাবো তারচেয়ে নিজের রুমে যাও

না আপনাকে তো বলেছি শুভা না আসা পর্যন্ত আপনি তার হয়ে আমাকে সাহায্য করবেন।তাছাড়া একজন শিক্ষক হয়ে কোন মুখে না বলেন দেখি?

শুভ্র বুঝলো তিমির সহজে ছাড়বে না।একবার যখন বলেছে সে এখানে পড়বে তবে তাকে আর সরানো যাবে না।শুভ্র নিজেও ল্যাপটপ নিয়ে কাজে মন দিলো।

তিমির পড়ছে ঠিকই তবে মাঝে মধ্যে শুভ্রকে এটা ওটা নিয়ে বিরক্ত করছে।

তোমার সমস্যা কি তিমির পড়ছো পড়ো না কেনো আমাকে ডিস্টার্ব করছো?

বা রে একটানা পড়লে যে পড়া সব ভুলে যাই তাই একটু খেলাধুলা করছি।আপনি একটা বাচ্চা মেয়ের সঙ্গে এমন করছেন কেনো স্যার?

হোয়াট,তুমি বাচ্চা? তোমাকে বাচ্চা বললে সকল বাচ্চাকে ছোট করা হয়,ঝুনো নারকেল চিনো তুমি হচ্ছো সেটা?

কিইইইই?আপনি এত বড় কথা বললেন আমাকে? স্যার আপনার মুখে এসব মানায় না,এগুলো পচা কথা?

মুখ ভার করে বললো তিমির।

তুমি আমাকে বারবার স্যার বলছো কেন,এটা তো ক্লাস রুম না?

তো কি বলবো শুনি, শুভ্র ভাইয়া?

তিমির পাগলের মতো কথা বলো না,তোমার সাথে আমার ভাই বোনের সম্পর্ক না বুঝেছো?

বা রে স্যার ডাকবো না আবার ভাইও ডাকব না তো কিভাবে কথা বলবো?মেয়েরা তাদের জামাইকে হয় নাম ধরে ডাকে না হয় হ্যা গো, ওগো, শুনছো গো বলে।আবার না হয় অমুকের বাপ তমুকের বাপ এভাবে বলে।আপনি তো আর এসব সম্বোধন পছন্দ করেন না আবার স্যার ভাই ডাকও শুনতে চাইছেন না তাহলে ডাকবো কি করে?

না ডাকলেই তো চলে।

তিমির কিছুক্ষণ ভাবলো তারপর আইডিয়া বলে চেচালো।তিমিরের চিৎকারে শুভ্র কটমট করে তাকালো।তিমির নিজেকে সংযত করে হেসে দিলো।

শুনুন আপনার একটা নাম পেয়েছি আর সে নামে ডাকবো।

কি?

অনাগত বাচ্চার বাপ?

হোয়াটটটট??

তিমির কানে হাত দিলো।

এভাবে গরুর মতো চিল্লান কেনো,ভুল কি বললাম শুনি?আপনি সোহাগী ডাক পছন্দ করেন না আবার আমাদের কোনো বাচ্চা নেই যে সে নামে ডাকবো।বাই চান্স যদি আমাদের মিলমিশ হয়ে যায় তখন তে বাচ্চা হবেই তাই সেই বাচ্চার কথা চিন্তা করে আপনাকে তার বাপ বানিয়ে দিলাম ভালো না?

তিমির তুমি এ মুহুর্তে বের হও রুম থেকে।আর কখনো পড়তে আসবে না আমার রুমে।

শুভ্রর কঠিন গলার স্বর শুনে তিমির মুখ কালো করে ফেললো।তারপর বইগুলো নিয়ে দরজার কাছে যেতে একবার পিছনে ফিরে তাকালো। শুভ্র ওর দিকে রাগান্বিত চোখে চেয়ে আছে।

আপনাকে শুধু একটা কথা বলবো অনুমতি দিবেন?

না তুমি একটা কথাকে একটা রচনা তৈরি করে ফেলো আমি শুনবো না।

শুনুন না,বাংলা সিনেমাতে দেখেছি পায়ে পায়ে ঘষলে নাকি বাচ্চা হয়,একদিন পর দেখি নায়কার কোলে ফুটফুটে বাচ্চা। আপনি অনুমতি দিলে আমি আপনার পায়ের সাথে পা টা ঘষাবো।না মানে কালকের মধ্যে যদি বাচ্চাটা পেয়ে যায় তাহলে তার নাম দিয়ে আপনাকে ডাকতে সুবিধা হবে এ আরকি?

তিমিরের কথা শুনে শুভ্র বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো,কি বলে এ মেয়ে এগুলো কোথা থেকে শিখলো?তিমির মনে মনে মজা পাচ্ছে কিন্তু চেহারায় ইনোসেন্ট ভাব নিয়ে শুভ্রর উত্তরের আশায় বসে আছে। শুভ্র কোলের ল্যাপটপ ফেলে তিমিরের দিকে এগিয়ে আসতে তিমির ইতিউতি না দেখে সোজা রুমে গিয়ে দরজা আটকে দিলো।তবে পেছন থেকে শুনলো, যদি আর সেদিকে যায় তবে পা পায়ের জায়গায় থাকবে না।তিমির এ কানে শুনে ও কানে বের করলো।আপাতত রাত হোক সোজা বালিশ নিয়ে আবারও আক্রমণ করবে।

শুভ্র খেতে এসে দেখলো তিমির আসে নি।শুভ্র আপন মনে খেতে লাগলো কারণ তিমিরকে নিয়ে প্রশ্ন করলে মা আবার রেগে গিয়ে কি না কি ভাববেন।শুভ্র অপেক্ষা করছিলো তিমির কখন আসবে কিন্তু সে এলো না।আশ্চর্য মেয়েটা খেতে আসছে না কেউ ওর খোঁজও করলো না।খাওয়ার মাঝপথে জিন্নাহ সাহেব নিপাকে প্রশ্ন করলেন তিমির কোথায়?নিপা জবাব দিলেন শরীর খারাপ তাই নাকি তিমির খাবে না,জিন্নাহ সাহেব নিপাকে বললেন খাবারটা যাতে উপরে দিয়ে আসে এতে নিপা একটা ধমক দিয়ে নিজে খেতে বসে গেলেন।

শুভ্র বিছানা ঠিক করে দরজা বন্ধ করতে গিয়ে আবার ফিরে এলো।যদি সত্যি সত্যি তিমির আসে।খাওয়া শেষ করে আসার সময় একবার তিমিরের রুমে উঁকি দিবে ভেবেছিল দ্বিধা নিয়ে সরে এলো।

রাত একটা প্রায় হয়ে গেছে তিমির এখনো আসে নি আবার শুভ্ররও ঘুম না আসাতে সে এপাশ ওপাশ করছে।কি মনে করে সে তিমিরের রুমে গেলো,তিমির আধো কেনো আসে নি।তিমিরের দরজায় হাত লাগাতে সেটা খুলে গেলো,বিছানায় তিমির নেই কিন্তু গোঙানির শব্দ কানে আসছে।শুভ্র দু কদম এগিয়ে যেতে দেখে তিমির মেঝেতে কুন্ডলী পাকিয়ে পড়ে আছে। দুই হাত শক্ত করে পেটে চাপ দিচ্ছে। সেই সাথে চোখ মুখ কিচে কান্না আটকাচ্ছে।শুভ্র হঠাৎ তিমিরকে এ অবস্থায় দেখে ঘাবড়ে গেলো।তাড়াতাড়ি এগিয়ে গিয়ে তিমিরের মাথাটা কোলে নিলো,

তিমির কি হয়েছে তোমার তুমি এমন করছো কেনো?

তিমির ঢুলুঢুলু চোখে একবার শুভ্রর দিকে তাকিয়ে আবারও চোখ বন্ধ করল।শুভ্র বুঝল না ব্যাপারটা, তিমির পেটে হাত দিয়ে কুকড়াচ্ছে।শুভ্র তিমিরকে পাজাকোল করে বিছানায় রাখতেই হাতে তরল কিছু লাগলো।হাতে লাল কিছু লেগে আছে বুঝতে পারলো এটা রক্ত।সাথে চোখ পড়লো তিমিরের কাপড়ে।শুভ্রর বুঝতে বাকি রইলো না তিমির এমন করছে কেনো?সে তাড়াতাড়ি হটপটে পানি গরম করে বালতিতে রাখলো।তিমিরকে ধরে ধরে নিয়ে গেলো।রাতে তিমির কিছু খায় নি দেখে খাবার আনলো হালকা। তিমির ওয়াশরুম থেকে বের হতেই শুভ্র খাবারটা খাইয়ে দিয়ে একটা ব্যাথার ঔষধ দিলো।তিমির বিছানায় শুয়ে ধড়ফড় ধড়ফড় করছে।শুভ্র ভেবে পেলো না কি করবে,সে তিমিরের কানের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

তিমির বেশি খারাপ লাগছে ডাক্তার ডাকবো?

তিমির হাতের ইশারায় না করলো।তখনো তিমিরের চোখ থেকে পানি পড়ছে।শুভ্র হট ব্যাগ এনে তিমিরের পেটে দিলো।তিমির সেটা চেপে ধরে পড়ে রইলো।আস্তে আস্তে তিমিরের চোখে ঘুম নেমে এলো।শুভ্র জীবনে এ প্রথম এ ধরনের পরিস্থিতির মুখে পড়েছে।মেয়েদের থেকে দূরে থাকায় কখনো এসব নিয়ে কারো সাথে আলাপ বা চোখে পড়ে নি।এ বাড়িতেও দুজন মেয়ে আছে কখনো তাদের দেখে নি এমন বিষয় নিয়ে ছটফট করতে।হয়তো তারা করেছিলো শুভ্র টের পায় নি?আজও পেতো না যদি না সে তিমিরকে দেখতে আসতো।শুভ্র তিমিরের দিকে চেয়ে রইলো। কতটা ক্লান্ত লাগছে তিমিরকে।কান্নার শুকিয়ে যাওয়া জলটা এখনো চাপ রয়ে গেছে। শুভ্র তিমিরের মাথায় বিলি কাটছে।ছোট বেলায় তার ঘুম না আসলে মা এভাবে ঘুম পাড়াতো তাই সেও করছে।কাজটা করতে করতে নিজেও ঘুমিয়ে গেলো।

সকালে ঘুম ভাঙতেই শুভ্র দেখলো তিমির ঘুমচ্ছে।নিজে রুমে গিয়ে তৈরি হয়ে একবার উঁকি দিয়ে নিচে গেলো। নাস্তা করে উপরে এসে একটা চিরকুট লিখে তিমিরের হাতের মুঠোয় দিয়ে চলে গেলো। তিমির ঘুম থেকে উঠে দেখলো তার হাতে কাগজ সেটাতে লেখা,পাকনামি করে বাসা থেকে বের হবে না সারাদিন রেস্ট করো।তিমির হেসে দিলো শুভ্রর এমন মিষ্টি শাসনে।

শুভ্র কলেজ থেকে বাসায় এসে দেখে শুভা তিমিরের সাথে গল্প করছে।শুভাকে দেখে হঠাৎ শুভ্র বিরক্ত হলো।কেনো বিরক্ত হলো শুভ্র বুঝলো না তবে মনে হলো শুভা এত তাড়াতাড়ি এসে তার সমস্যা করেছে।শুভা ভাইকে দেখে এগিয়ে এসে কুশল বিনিময় করলো।

তুই আজ চলে এলি যে বেড়ানো শেষ?

হ্যাঁ ভাইয়া। তুমি কেমন আছো?

ভালো।তা আগে তো অনেকদিন বেড়াতি এবার কম হলো যে?

তখন তো বাসায় একা থাকতাম বোর লাগতো এখন তো তিমির আছে তাই চলে এলাম।

শুভ্র কিছু না বলে বিরক্ত কিছুটা প্রকাশ করে চলে গেলো।শুভার চোখ এড়ালো না সেটা।সে তিমিরকে জিজ্ঞেস করল শুভ্রর এ ব্যবহার। তিমির মুচকি হেসে এতদিনের সব কথা বললো।শুভা তো চোখ বড় বড় করে সেসব শুনছে আর হাসছে।

বাহ্ তুই তো দেখি আমার ভাই ্কে একদম কাজের ছেলে বানিয়ে দিলি।তুই এসব করেছিস ভাইয়ার সাথে?মানতে হবে রে তুই জিনিয়াস।তার মানে আমাকে দেখে ভাইয়ার খুশি না হওয়ার এ কারণ।সমস্যা নাই তুই চাইলে ভাইয়ার সাথে থাকতে পারিস।

না সম্ভব না এতদিন তুই ছিলিনা সে অজুহাত দিয়েছি কিন্তু এখন পসিবল না।তাছাড়া অনেক গল্প আছে তোর সাথে। তোর বেড়ানোর গল্প গুলো শুনবে আজ থেকে।

শুভ্র কাজ শেষ করে বিছানা ঠিক করলো।তখনি তার বালিশের পাশে তিমিরের বালিশটা দেখে মনটা কেমন জানি করে উঠলো।সে বালিশটার দিকে চেয়ে রইলো, আজ কি তবে তিমির আসবে না?হঠাৎ দরজায় ঠকঠক শব্দ হতে শুভ্রর ঠোঁটে হাসি ফুটলো।সে দরজা খুলতে দেখে তিমির হাসি হাসি মুখ নিয়ে তাকিয়ে আছে। তিমির শুভ্রর হাসিটা লক্ষ্য করলো।

আজ কেনো এসেছো,এখন তো শুভা চলে এসেছে, এখনো কি ভয় লাগছে?

শুভ্রর পিঞ্চ মার্কা কথা শুনে তিমির বুঝলো এ পুরুষ ভাঙবে তবুও মচকাবে না।সে আরেকটু মিষ্টি হেসে বললো,

না আজ আর থাকবো না।এসেছি বালিশ নিতে।এখন শুভা আসায় তো এক বালিশে শুতে পারবো না তাই আমার বালিশটা নিতে আসলাম।কই দেখি দিন তো বালিশটা।

শুভ্রর মনের আনন্দটা হঠাৎ মিয়ে গেলো।তিমির নিজে এগিয়ে গিয়ে বালিশ নিয়ে শুভ্রর পাশ দিয়ে আসতে শুভ্র তাকে একবার ডাকলো।তিমির প্রশ্নসূচক চোখে তাকালো কিন্তু শুভ্র কিছু বললো না।চোখ দিয়ে ইশারা করলো চলে যেতে।তিমির বের হতেই শুভ্র ধড়াম করে দরজা লাগালো।তিমির বুঝলো এটা কীসের প্রকাশ?সে শুভাকে গিয়ে সব জানাতে দুজনে গড়াগড়ি করে হাসলো।তবে শুভা আফসোস করলো ভাইয়ের জন্য।

শুভ্র বিছানায় সে যে বসে আছে এখনো শুই নি।তার ভালো লাগছে না একা শুতে।এ মেয়েটা দিন দিন তাকে তার প্রতি অভ্যাসে পরিণত করছে।হঠাৎ শুভ্রর ইচ্ছে হলো যদি তিমির চলে আসতো তবে আজ কোনো বকা দিতো না।বড় একটা জায়গা তিমিরকে দিতো।মেয়েটার কুন্ডলী পাকিয়ে ঘুমানোটা বড্ড বেশি আহত করল শুভ্রকে।
,
,
,
চলবে………..

১১.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here