প্রেম পাগলামি পর্ব ১৬+১৭

#প্রেম_পাগলামি
#নিহীন_রুবাইয়াত
#পর্ব:১৬

শিবলি ভাইয়ার সাথে খারাপ ব্যবহার করে বেশ খারাপ লাগছে।ধুর!কেন করলাম এমন??ভাইয়াকে সরি বলা দরকার,ওনাকে খোজার জন্য যেই উল্টা ঘুরে হাটতে গিছি,মনে হলো কোন এক দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেলাম।পড়ে যেতে যাচ্ছিলাম কিন্তু কেউ আমায় ধরে ফেলে।নাহ,এইবারো এটা কোন দেয়াল না,সৌভিক ভাই আর উনিই আমাকে ধরেছে।আমি যখনি পড়তে যায় এই লোকটা কোথা থেকে যে টপকে পড়ে বুঝি না অবশ্য আমি পড়তেও যায় ওনার জন্যই।উনি আমার হাত ছেড়ে দিলেন।
–তোমাকে কখন বলা হয়েছে ক্যান্টিনে আসার কথা,আসোনি কেন?
–আসলে আমি
–এখন ওতো আসলে নকলে করার সময় নেই।চলো

উনি আমার হাত ধরে গটগট করে হাটছেন।আমি তো পুরো অবাক ওনার এ কান্ডে।আশেপাশে চোখ পড়তেই দেখলাম মেয়েরা সব তাকিয়ে আছে,চোখে হিংসা।কেউ কেউ তো এমনভাবে তাকাচ্ছে যে আমাকে খেয়ে ফেলবে।সবার ক্রাশ নাকি আমার হাত ধরে হাটছে,সবাই তো একটু তাকাবেই।এসব ভাবনার মাঝে খেয়ালি হলো না উনি কেন আমার হাত ধরে এভাবে হাটছে।হটাত খেয়াল হলো,ও এম জি।উনি এভাবে আমার হাত ধরে হাটায় সবাই তাকায় আছে আর কি না কি ভাবছে আল্লাহই জানে।এটা দেখতেও তো বাজে দেখাচ্ছে।
–কি করছেন আপনি?আমার হাত ছাড়ুন প্লিজ,সবাই তাকিয়ে আছে তো।খারাপ দেখা যাচ্ছে তো।
কে শোনে কার কার কথা।তার কানে কি কোন কথা যায়।গাড়ির কাছে এসে হাত ছেড়ে দিলো।আমি যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম,বুকে হাত দিয়ে কয়েকবারা লম্বা নিশ্বাস নিলাম।

–গাড়িতে ওঠো
–……..
–কি হলো গাড়িতে উঠতে বললাম তো।
–হুম?কিছু বললেন?

উনি ভ্রু কুচকে তাকালেন,মুখ চোয়াল শক্ত করে বললেন,,
–তুমি কি বয়রা?
–কি?বয়রা হবো কেন?
–তাহলে গাড়িতে উঠতে বললাম তা কথা কানে গেল না?
–গাড়িতে কেন উঠবো?
–আমি বলছি তাই।
–কিন্তু..

উনি আর আমার কোন কথা শুনলেন না,হাত ধরে গাড়ির ভিতরে জোর করে বসিয়ে দিলেন।ওনার এমন ব্যবহারে আমার কলিজা শুকিয়ে যাচ্ছে।ওনার মুখ দেখে তো খুব রাগী লাগছে,কিন্তু আমি যে এবার কোন ভুল করেছি বলে মনে হলো না।উনি ড্রাইভিং সিটে বসলেন।
–সিট বেল্ট লাগাও।

ওনার কথাটা আমার কানেই গেলো না যেন।উনি নিজেই আমার সিট বেল্ট বেধে দিলো।সিট বেল্ট বাধার সময় উনি আমার অনেক ক্লোজ হয়ে গেছিলেন,ওনার গরম নিশ্বাস আমার মুখে এসে পড়ছিলো আর কেন জানি না আমার হার্টবিট খুব জোরে জোরে ওঠানামা করছিল।উনি আমার সিট বেল্ট বাধা শেষে গাড়ি চালান শুরু করলেন।আমি জানালার বাইরে তাকিয়ে কয়েকবার ঘন ঘন নিশ্বাস নিয়ে ওনার দিকে তাকালাম।উনি এক ধ্যানে ড্রাইভ করছে।মুখে কোন হাসি নেই,চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। আমার হাত পা কাপছে ভয়ে।মনে মনে কিছুক্ষন ভাবলাম আমি কোন ভুল করেছি কিনা,না তেমন কিছু তো করিনি শুধু মাত্র শিবলি ভাইয়ার সাথে তখন কিন্তু এটা তো ওনার জানার কথা না।উনি তো তারপর পরি এলেন,এইটুকু সময়ের মধ্যে তো শিবলি ভাইয়ার সাথে ওনার কথা হওয়ার কথা না।ধুর তাহলে উনি এভাবে রেগে আছেন বা কেন আর আমাকেই বা কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন??ওনার কাছেই শুনতে হবে।বুকে সাহস নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,

–আপনি কি কোন কারনে আমার ওপর রেগে আছেন?আমি কি কোন ভুল করেছি?
–…………………………
–দেখুন আমি সত্যিই যদি কোন ভুল করে থাকি তাহলে ইচ্ছা করে করিনি,সত্যি বলছি।
–……….
–আমি সত্যিই,
–আমি কি তোমাকে বলেছি তুমি কোন ভুল করেছো?এতো বেশি বোঝ কেন তুমি?(একবার আড়চোখে তাকিয়ে কথাটা বলে আবার গাড়ি চালানোই মন দেন)

মনে মনে একটু হাফ ছেড়ে বাঁচলাম,যাক আমি কোন ভুল করিনি।কিন্তু উনি তাহলে এভাবে বসে আছেন কেন?এই মানুষটাকে আমি একদমি বুঝি না।উনি যে আমার ওপর রেগে নেই এই ব্যাপারটা ভেবে তো একটু শান্তি পেলাম কিন্তু আমাকে নিয়ে উনি যাচ্ছেন কোথায়?শুনবো কি একবার?না না থাক না শুনাই ভালো,দেখা গেলো কোথায় যাচ্ছি এটা শুনে আবার রেগে যাচ্ছে।অসভ্যটার তো আবার রাগের টাইম টেবিল নাই,যখন তখন রেগে যায়।আচ্ছা আমি শুনবো নাই বা কেন?আর ওনাকে এতো ভয় পাওয়ারি বা কি আছে?উনি কি বাঘ না ভাল্লুক যে ভয় পেতে হবে?আর তাছাড়া এভাবে একটা মেয়েকে বলা নেই কওয়া নেই উনি কোথাও নিয়ে যেতে পারেন না।বলা তো যায় না আমাকে যদি কিডন্যাপ করে ফেলে বা কোথাও যেয়ে যদি কিছু করে ফেলে বা মেরে ফেলে।কথাটা ভাবতেই বুকের মধ্যে কেপে উঠলো,বুকে হাত দিয়ে আতকে উঠেছি।ওনার দিকে একবার তাকালাম উনি সামনের দিকে তাকিয়ে এখনো চোখমুখ শক্ত করে গাড়ি চালাচ্ছেন।আমার ভয় আরো বেড়ে গেলো,মনে মনে আল্লাহর নাম নিচ্ছি।মনের মধ্যে শুধু মনে হচ্ছে আজকেই আমার শেষ দিন,আমি আর বাড়ি ফিরতে পারবো না,মা-বাবা,দাদির মুখ দেখতেতে পারবো না।সামনে নিলু আপার বিয়ে,যদিও ওর সাথে আমার ভালো বনে না কিন্তু ওর বিয়ে নিয়ে আমার অনেক প্লান ছিলো।কিছুই আর হবে না,খুব কান্না পাচ্ছে।কিন্তু উনি তো এতোটাও খারাপ না তাহলে উনি কেন করবেন আমার ক্ষতি??মনে মনে এসবি ভাবছি।

–আমি বাঘ ভাল্লুক না যে আমাকে ভয় পাওয়া লাগবে আর আমি ওতোটাও খারাপ না যে একা একটা মেয়েকে কোথাও নিয়ে যেয়ে ক্ষতি করে দেবো।

ওনার মুখে কথাটা শুনে আমি সাথে সাথে তাকালাম।উনি মুচকি হেসে বললেন,,
–আমি তোমাকে কিডন্যাপ করছি না অন্য কোন ক্ষতিও করব না।তাই বি কুল।

উনি আবার মুচকি একটা হাসি দিলেন।আমি তো ভাবছি উনি কিভাবে জানলেন আমি এসব ভাবছি?উনি কি তাহলে মনের কথা বুঝতে পারেন নাকি?আর সত্যিই তো উনি তো ওমন ছেলে না।আমিই বেশি বেশি ভেবে ফেলেছি,যদি সত্যিই উনি বুঝতে পারেন তাহলে আমার এই বোকামিটা কি না কি ভাববেন,ছি লজ্জার ব্যাপার।নিজের এসব উল্টা পাল্টা ভাবনার জন্য মাথায় নিজেই একটা চাটি মারলাম।উনি খেয়াল করে একটু মুচকি হাসলেন আমি লজ্জায় পড়ে গেলাম।আমি জানালার দিকে তাকিয়ে রইলাম,ওনার দিকে তাকানোর মতো সাহস পেলাম না।কিন্তু মনের মধ্যে একটা কথায় ভাসছে আমরা যাচ্ছি কোথায়?ভার্সিটি থেকে বেশ দূরে চলে এসেছি।ওনার কাছে দুয়েকবার জিজ্ঞেস করতে যেয়েও করলাম না।উনি হটাত করেই ব্রেক কসলেন,আমি সামনের দিকে হুমড়ি খেয়ে পড়তাম ভাগ্যিস সিট বেল্ট বাধা ছিলো।উনি ওনার ফোন নিয়ে কিছু একটা করলেন,তারপর ফোন রেখে আমার দিকে তাকিয়ে,
–তোমার ফোন বের করো।
–কেন?
–যা বলছি তাই করো।

আমি ওনার কথা মতো ফোন বের করলাম।
–লক খোলো
–……….(আমি ওনার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালাম)
–লক খুলতে বলেছি লক খোলো(উনি একটু চিল্লিয়ে ওঠেন)

আমি লাফ দিয়ে উঠে তাড়াতাড়ি লক খুলে দিই।লক খুলার সাথে সাথে উনি আমার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে নেন।
–আমার ফোন..
–খেয়ে ফেলবান না তোমার ফোন,দিয়ে দিচ্ছি ওয়েট।

এই লোকটার কিছু কিছু ব্যবহারে মনে হয় দিই নাকে এক ঘুষি।ভালো করে কথা বলতে ককি খুব কষ্ট হয় ওনার??ফালতু লোক একটা।উনি আমার ফোন নিয়ে কিছু একটা করলেন,আমি আড়চোখে দেখার চেষ্টা করলাম কিন্তু কোন লাভ হলো না।মিনিট পাঁচেক পর উনি আমার ফোন দিয়ে দেন।

–কি করছিলেন আমার ফোনে??
–………..
–আজব তো কথা বলেন না কেন?বলবেন তো কি করছিলেন?
–চেক করছিলাম বি এফ এর সাথে কেমন চ্যাটিং করো।
–কি?আমার কোন বি এফ নেই।আপনি কি বলছেন এসব?আমি পিউর সিংগেল,জীবনে কোনদিন এসব প্রেম-ট্রেম করিনি।ওসব করে সময় নষ্ট করার কোন মানেই হয় না।
–উফফ!!থামবে তুমি??(উনি গাড়ির সামনে এক ঘুষি দেন।আমি লাফ মেরে উঠি)
–এরকম করার কি আছে আমি তো জাস্ট,,
–চুপ।আর একটা কথা যদি বলো তো খবর আছে।

আমার খুব রাগ হয়ে গেলো।আসভ্য লোক কোথাকার।নিজেই আমার ফোন নিয়ে ঘুটুমুটু করছিলো আবার আমি কি করছে জানতে চাইলেই রাগ দেখাচ্ছে।অসভ্য,শয়তান,বদমাস লোক।এসব ভাবতে ভাবতেই গাড়ির জানালাই একটা ছেলে নক দিলো।উনি জানালা খুলে দিলেন
–ভাই আপনার প্যাকেটটা।
–দে।(উনি ছেলেটার কাছ থেকে প্যাকেট নিলেন একটা আর ওনার ওয়ালেট থেকে পাঁচশ টাকার একটা নোট বের করে ছেলেটাকে দিলেন।ছেলেটা মুচকি হেসে টাকাটা নেই)
–ভাই তাহলে আসি।
–আচ্ছা।

ছেলেটা চলে গেলো।উনি প্যাকেট খুলে একটা খাবারের বক্স বের করেন।কোন একটা রেস্টুরেন্ট এর নাম লেখা আছে।খাবার দেখেই আমার খুদা পেয়ে গেলো।এমনিতেই সকালে খাইনি।উনি বক্সটা খুলতেই দেখি একটা বার্গার আর একটা পেস্ট্রি।
উনি বলে উঠলেন,
–কাল রাত থেকে কিছু খাইনি।খুব খুদা পেয়েছে,খেয়ে নিই আগে।ওকে?

বার্গার দেখে আমার পেটের ভিতরের ইঁদুরটা আরো বেশি বেশি দৌড়াচ্ছে যেন।উনি বার্গারটা হাতে নিয়ে এক কামড় দিতে গেলেন।আমি বার্গারটার দিকে তাকিয়ে আছি।ওনার হা করার আগেই আমি বার্গার দেখে হা করেছিলাম।এমনিতেই খুদা আছে পেটে আরো সামনে আমার ফেভারিট বার্গার,লোভ সামলানো মুশকিল।আমার হা দেখে উনি বললেন।
–খাবে তুমি?
–হুম?
–বলছি খাবে?

আমি বাচ্চাদের মতো মুখ করে মাথা নাড়ালাম যে খাবো না।উনি আবার বার্গার নিয়ে মুখে দিতে যাচ্ছিলেন তার আগে জিজ্ঞেস করলেন,
–তুমি সকালে কি খেয়েছো?
আমি মুখ শুকনো করে বললাম,
–খাইনি কিছু।
–কি খাওনি মানে?খাওনি কেন তুমি?(উনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন)
–সকালে টাইম পাইনি,ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছিলো তাই আর খাওয়া হয়নি।
–টাইম পাওনি মানে কি?ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি ওঠা যায় না?আর বাসায় খাইতে পারোনি ঠিক আছে,গাড়িতে বসে তো খেয়ে নিতে পারতে।আগে বলোনি কেন তুমি যে সকাল থেকে এখনো না খেয়ে আছো?তোমাকে নিয়ে আর পারা যায় না।

উনি আমাকে একটু বকা দিলেন আমি বাচ্চাদের মতো চুপ করে বসে রইলাম।উনি এবার হাতের বার্গারটা বক্সে রেখে আমার দিকে বক্সটা এগিয়ে দিলেন।
–এই নাও খাও।

আমি ওনার দিকে বোকার মতো তাকিয়ে থাকলাম
–কি হলো ধরো এটা।
আমি এখনো তাকিয়েই আছি।
–নিহীইইইন
–জ্বি(আমি লাফ দিয়ে উঠলাম)
–কি দেখছ ওভাবে ধরো এটা আর খাও।
–কিন্তু ওটা তো আপনার ছিলো।আমি কিভাবে খাবো?
–তোমার ওতো ভাবা লাগবে না।তুমি খাও
–আমি না হয় সকাল থেকে খাইনি কিন্তু আপনি তো কাল রাত থেকে খাননি,আপনার তো আরো…
–তোমার এতো বোঝা লাগবে না,খেতে বলেছি খাবে।

আমি আর বেশি কিছু বললাম না।কারন বার্গার দেখে আমার পেটে যে ইঁদুর দৌড়াচ্ছে এখন যদি আমি এটা না খায় সারাদিন আমার মন খারাপ থাকবে।আমি এক কামড় নিলাম,ওনার দিকে তাকাতেই দেখি উনিও খাবারের দিকে তাকিয়ে আছে।আমার তাকানো দেখে বেচারা চোখ সরিয়ে নিলো।আমার বেশ খারাপ লাগল।আমার জন্য ওনার খাওয়াটা হলো না,ওনারো তো অনেক খুদা পেয়েছে।পেস্ট্রিটার দিকে চোখ যেতেই আমার একটু ভালো লাগল আমি ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
–আপনি পেস্ট্রটা খান।
–কিন্তু তোমার তো….
–প্রব্লেম নাই।আমার একটা বার্গারেই হবে।আপনি এটা খান।

উনি আর একটা কথাও বললেন না।পেস্ট্রিটা হাতে নিয়েই খাওয়া শুরু করে দিলেন।এমনভাবে খাচ্ছেন যেন কত বছর খাবার খাননি।ওনার হয়ত অনেক বেশিই খুদা পেয়েছিলো।উনি পেস্ট্রিটা শেষ করেই পানির বোতল থেকে ঢকঢক করে পানি খেয়ে নিলেন।তারপর পেটে হাত দিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন।আমি এতোক্ষন ওনার কান্ড দেখছি,উনি হটাত আমার দিকে তাকালেন,
–বসে আছো কেন তুমি?খাও..(আমি নিজের চোখ সরিয়ে নিলাম)
–হুম খাচ্ছি।

আমি খাওয়ায় মন দিলাম।খাওয়া শেষ করে পানি খেয়ে নিলাম।উনি আবার গাড়ি স্টার্ট দিলেন।পেটে খাবার পড়াই বেশ শান্তি লাগছে।উনি মিউজিক অন করলেন,

~~ভালোবেসে সখী নৃিভিতে যতনে আমার নামটি লিখ তোমার মনেরো মন্দিরে।

গানটা আমার বেশ ভালোই লাগে।আমি চোখ বন্ধ করলাম।আমার এখন আর কেমন কেমন লাগছে না।আমি ওনার সাথে কোথায় যাচ্ছি কেন যাচ্ছি এসব কিছুই আর আমার মাথায় আসলো না।গানটা শুনছি মন দিয়ে।গান শুনতেতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়লাম।

ঘুমের মাঝেই মনে হলো কেউ আমার মাথায় হাত বুলাচ্ছে খুব যত্নে।আমার খুব চোখ খুলতে ইচ্ছা করছে,কে এতো যত্নে আমার মাথায় হাত বুলাচ্ছে জানতে ইচ্ছা করছে কিন্তু আমি তাকালাম না।আমার বেশ ভালো লাগছে,হাতের স্পর্শটা খুব চেনা লাগছে আমার,যেন এই স্পর্শ আমি আগেও পেয়েছি।
#প্রেম_পাগলামি
#নিহীন_রুবাইয়াত
#পর্ব:১৭

ঘুমের মাঝেই মনে হলো কেউ আমার মাথায় হাত বুলাচ্ছে খুব যত্নে।আমার খুব চোখ খুলতে ইচ্ছা করছে,কে এতো যত্নে আমার মাথায় হাত বুলাচ্ছে জানতে ইচ্ছা করছে কিন্তু আমি তাকালাম না।আমার বেশ ভালো লাগছে,হাতের স্পর্শটা খুব চেনা লাগছে আমার,যেন এই স্পর্শ আমি আগেও পেয়েছি।চোখ মেলে দেখতে ইচ্ছা করছে আবার চোখ বন্ধ কড়ে তার স্পর্শ পেতে ইচ্ছা করছে।আস্তে আস্তে আমার মাথার থেকে হাতটা সরে গেলো মনে হলো,তারপর আমার কপালে কে যেন আলতো করেই ঠোট ছোঁয়াল,আমি ঘুমের মাঝেই কেপে উঠলাম।কিছুক্ষন পর কিছু বাচ্চাদের হাসির আওয়াজ আর হৈচৈ এ ঘুম ভেঙে গেলো।আমি আস্তে আস্তে চোখ খুললাম,আমি তো গাড়ির ভিতরেই বসে আছি।কিন্তু পাশে তো উনি নেই,কোথায় এসেছি আমরা?চারপাশে এতো বাচ্চা।গাড়ির দরজা খোলাই ছিলো,তাই সাথে সাথে বের হয়ে গেলাম।গাড়ি থেকে বের হয়ে দেখি একটু দূরেই সৌভিক ভাই বেলুন হাতে দাড়িয়ে আছে আর ওনাকে ঘিরে ৮-১০ টা বাচ্চা।তারা সবাই ভাইয়া বেলুন দাও বেলুন দাও করছে,উনি হাসতে হাসতে একেক করে সবাইকে বেলুন দিচ্ছে।বেলুন পেয়ে বাচ্চা গুলো অনেক খুশি,সবাই ওনার গালে একটা করে চুমু দিলো,উনিও বাচ্চাদের গালে চুমু দিচ্ছে।আমি দূর থেকে দাড়িয়ে এসব দেখছি,বাচ্চাদের সাথে এভাবে ওনাকে মজা করতে দেখে খুব ভালো লাগছে,আমি আপন মনেই হাসছি।উনি হটাত আমার দিকে তাকান,আমাকে হাসতে দেখে উনিও মুচকি হাসেন।আমার হাসি থেমে যায়,এই লোকটার মুচকি হাসিটাই যে কি আছে বুঝি না যখনি মুচকি হাসবে মেয়েরা ক্রাশ খেতে বাধ্য হবে।আমি ওনাদের দিকে তাকিয়েই আছি উনি আবার তাকিয়ে বাচ্চাদের কি যেন বলে আর সাথে সাথে সব বাচ্চারা আমার কাছে ছুটে আসে।বাচ্চাপার্টির এভাবে ছুটে আসা দেখে আমি তো ঘাবড়ে যায়।আমার কাছে এসেই বাচ্চাগুলো,
–ভাবি চকলেট দাও,ভাবি চকলেট দাও করতে থাকে।আমার মাথায় কিছুই আসছে না।এরা আমাকে ভাবি বলে কেন ডাকছে আর আমি চকলেটি বা কোথায়??বাচ্চাগুলো কথাটা বলেই যাচ্ছে বারবার।
–বাচ্চারা তোমরা আমাকে ভাবি বলে ডাকছো কেন আজব??কে তোমাদের ভাবি??

–কেন তুমিই তো আমাদের ভাবি..

–আমি??তোমাদের ভুল হচ্ছে সোনা আমি তোমাদের ভাবি না।

–কিন্তু আমরা তো জানি তুমিই আমাদের ভাবি।

–কি?এ কি বিপদে পড়লাম আবার?(মনে মনে)
–দেখো আমি তোমাদের ভাবি না আর তাছাড়া আমি তোমাদের কোন ভাইয়ার বউ হবো?

–কেন সুফিক ভাইয়ার বউ না তুমি?

সুফিক নামে কাউকেই তো চেনা লাগছে না।এরা কার কথা বলছে রে বাবা।
–সুফিক?এটা আবার কে??

বাচ্চাগুলো হাত দিয়ে সৌভিক ভাইকে ইশারা করলো,উনি দূরে দাড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলো।বাচ্চাদের ওনার দিকে হাত করা দেখে আমার চোখ তো আকাশে উঠে গেছে প্রায়।বাচ্চাগুলো কি খেয়ে ওনাকে আমার বউ ভাবে।আজব!!আচ্ছা উনি আবার বলেননিতো।কিন্তু উনিই বা কেন বলবেন?ওনার সাথে তো আমার ওমন কোন সম্পর্ক নেই।আচ্ছা উনি আবার আমাকে লাইক টাইক করেন না তো?লাইক করার কথাটা ভেবেই লজ্জা লাগলো।পর মুহুর্তেই হুশ ফিরলো।ছি ছি!এসব আমি কি ভাবছি,ছি!উনি কেন আমাকে লাইক করবেন?নিহী তুই পাগল হয়ে গেছিস।বাচ্চাগুলো আমার হাত ধরে ঝাকাতে লাগলো।
–ভাবি ও ভাবি দাও চকলেট।ভাইয়া বলেছে তোমার কাছে আছে।

–এই বদমাশরা তোরা ওকে ভাবি কেন বলছিস?
(আমি কিছু বলার আগেই উনি বাচ্চাদের কাছে এসে বলেন)

–ভাইয়া এটা তো তোমার বউ,তুমিই তো….

–চুপ একদম চুপ।ও আমার বউ না,ও ও কেন আমার ব বউ হতে যাবে?নিহীন তুমি ওদের কথাই কিছু মনে করো না প্লিজ।ওরা আসলে বুঝতে পারিনি,আমার সাথে আগে কোন মেয়েকে দেখিনি তো তাই আর কি।আমি বলেছিলাম আমার সাথে যদি কোনদিন কোন মেয়ে আসে তাহলে সেটা হবে তোদের ভাবি মানে আমার…..(উনি লজ্জা পেয়ে মাথা চুলকালো)তাই হয়ত ওরা ভেবেছে…আচ্ছা আমি ওদের বকে দিচ্ছি।এই ওরে তোরা আপু বলে ডাক,বুঝলি।ভাবি বলবি না একদম।

–আচ্ছা ভাইয়া।

উনি আমার দিকে তাকিয়ে একটু ফেইক হাসি দিলো।ওনার যুক্তিটা আমার বিশ্বাস হলো না তেমন কারন বাচ্চারা এতোটাও বোঝে না যে ওনার ওই কথা মতো আমাকে ভাবি বলবে।কিন্তু উনিই বা কেন বলবেন আমাকে ভাবি ডাকতে।বাচ্চাগুলো আবার চকলেট নিয়ে বায়না শুরু করলো।
–আপু চকলেট দাও আপু চকলেট দাও।

–আমার কাছে তো কোন চকলেট নেই।

–না আছে,দাও না।

–নিহীন ওদের চকলেট দিয়ে দাও।তুমি কি বাচ্চা যে ওদের চকলেট দিচ্ছো না নিজে খাবে বলে(ওনার কথা শুনে আমি ভ্রু কুচকে তাকায়)

–আমার কাছে তো কোন চকলেট(আমার কথা শেষ করতে দেন না উনি)

–গাড়ির পিছনের দরজা খোল,চকলেটের বক্স আছে।নাও আর ওদের জিনিস ওদের দাও,তুমি চাইলে একটা নিজের জন্যও রাখতে পারো।হাহাহাহাহাহহহ

–আমার কোন দরকার নেই।

আমি গাড়ির পিছনের দরজা খুলি।সিটের ওপর একটা বক্স।আজব তো এটা কোথা থেকে আসলো আগেতো খেয়াল করিনি।তাহলে এটা কখন আসলো?বাচ্চারা আরো বাহানা শুরু করলো।আমি তাড়াতাড়ি বক্সটা নিয়ে তার থেকে চকলেট দেয়া শুরু করলাম।সবাই চকলেট পেয়ে তো অনেক খুশি,আমার জামা টেনে ধরে আমার গালে চুমু দিলো।আমার বেশ ভালো লাগল,চকলেট নিয়া হয়ে গেলে বাচ্চাগুলো দৌড়ে চলে গেলো একটু দূরে গিয়ে খেলা করছে।উনি বাচ্চাগুলোকে দেখে আপন মনে হাসছে।উনি এবার আমার দিকে তাকালেন।
–এরা কারা সেটাই ভাবছো তো?এরা আমার মন ভালো করার ওষুধ।
–ঠিক..(কথা শেষ করতে দিলেন না)
–ঠিক বুঝলে না তাই তো?
–হুম।
–ওই যে দেখছো বাচ্চা গুলো ওরাই আমার মন ভালো করার ওষুধ।ওরা একসময় রাস্তায় থাকতো,আমার বাবা ওদের আনে রাস্তা থেকে তারপর এইখানে রাখে।বলা যায় এটা ওদের বাড়ি,এখানে কিছু বুড়ো বাচ্চাও আছে,যাদের বয়স ৮০ কিন্তু মন ৮ বছরের।আর এই সবাইকে দেখার জন্য আছে মিস সুমা আর বিজয় ভাই।অবশ্য আরো দুজন আছে যারা সবার খেয়াল রাখে।ভিতরে চলো বুঝতে পারবে।

উনি আমার হাত ধরে হাটতে যায়।কিন্তু আমি দাড়িয়ে থাকি।উনি পিছু ঘুরে,
–কি হলো চলো…

আমি ইশারা করে হাতটা দেখায়।উনি তাড়াতাড়ি আমার হাত ছেড়ে দেই।মাথা চুলকে বলে,
–সরি।

উনি আগে আগে যাচ্ছে আর আমি ওনার পিছু পিছু।আমরা এতোক্ষন গার্ডেনে ছিলাম,মাঝারি সাইজের গার্ডেনটা বেশ সুন্দর এখন একটা ছোটখাটো বাড়ির ভিতরে ঢুকলাম।ছোট্ট একটা ড্রয়িং রুমে ৮/৯ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বসে আছে।ওনাকে দেখে সবাই সুন্দর একটা হাসি দিল।ওনাদের মধ্য থেকে একজন বয়স্ক মহিলা বলে উঠলো,
–তোমার সাথে কথা নেই আমাদের।তুমি এতোদিন আসোনি কেন?(উনি যেয়ে পাশে বসে পড়লেন)
–রাগ করো না ডার্লিং,এইতো আজ এলাম।খুব ব্যস্ত ছিলাম গো তাই আসা হয়নি।(উনি কথা শেষ করেই কানে হাত দিয়ে সরি বলে মুচকি হাসি দেয়)
–নায়ক কি তোমাকে আর সাধে বলি?তোমার এই হাসিতেই তো এই বুড়িগুলো পাগল হয়ে যায়,রাগ করে থাকতে পারিনা।

উনি আরো একটু হাসে ওনার সাথে সাথে বাকিরাও হাসে।আমি দরজার কাছে দাড়িয়ে এসব দেখছি।বয়স্ক একজন লোক আমার দিকে ইশারা করে বলে,
–নায়ক এটা আবার কে?

উনি কোন উত্তর দেই না।মুচকি হেসে মাথা চুলকাই,সবাই আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেই
–ভালো বেশ
–মাহশাল্লাহ,
–নায়ক ফাটায় দিছো একদম
একেকজন একেক কথা বলে।উনি কিছু একটা ইশারা করাই সবাই চুপ হয়ে যায়।আমার মাথায় তো এসব কিছুই ঢুকছে।ওনারা এমন বিহেভ কেন করছে?আমি বোকার মতো দাড়িয়ে ওনাদের কান্ড দেখছি শুধু।এমন সময় এক দীদা আমাকে ডাক দেই,,
–বুবু এদিকে আই।

আমি এখনো দাড়িয়ে আছি,ওনার দিকে একবার তাকালাম উনি চোখ দিয়ে ইশারা করে আসতে বলেন।আমিও সবার সাথে গিয়ে বসি।সবাই আমার নাম জিজ্ঞেস করেন।তারপর নিজেরা আমার সাথে পরিচিত হয়,ওনাদের জীবনের গল্প এখানে কিভাবে সময় কাটে সব বলতে থাকে।আমি মনযোগী স্রোতার মতো শুনছি।ওনারা নিজেদের মাঝেই ঝগড়া করছে ইয়ারকি করছে মাঝে মাঝে ওনার কাছে একে অপরের নালিশ করছে উনি আবার বকা দিয়ে দিচ্ছে।আমার বেশ ভালো লাগছে,উনি ঠিকি বলেছিলেন এনারা বাচ্চাদের মতোই।ওনাদের গল্পের মাঝেই এক অল্প বয়সী মহিলা আসেন বয়স ৩০-৩২হবে।
–কি হচ্ছে এখানে?

মহিলাটাকে দেখে সবাই চুপ চুপ বলে মুখে হাত দেয়।উনি আমাদের কাছে আসে।
–কেমন আছো সৌভিক?
–আমি ভালো আছি মিস সুমা।আপনি কেমন আছেন?
–আমিও ভালো আছি।তা তোমার ডার্লিংরা আমার নামে আজ কি কি বদনাম করলো?
–না না মিস সুমা কেউ আপনার নামে কোন নালিশ দেইনি।
–যাক তাহলে তো ভালোই।

উনি এবার আমার দিকে তাকান।আমাকে চিনতে না পেরে,
–তোমাকে তো ঠিক চিনলাম না।
–মিস সুমা ও নিহীন,আমার ভার্সিটিতেই পড়ে।
–হাই নিহীন
–হ্যালো
–কেমন আছো তুমি?
–ভালো আছি।আপনি?
–আমিও ভালো আছি।আমার পরিচয় টা দিই।আমার নাম সুমা আক্তার।এই যে দেখছো সৌভিকের সব ডার্লিং আমি এদের কেয়ার টেকার।আবার বলা যায় সৌভিকের বাবার এমপ্লই।
–নাইস টু মিট ইউ।

উনিও মুচকি হাসি দেন।এরপর সবার দিকে তাকিয়ে বলেন,দুপুরে খাওয়ার সময় হয়ে গেছে সবাই ডাইনিং এ যাও।ওনার কথা মতো সবাই ডাইনিং এ চলে যায়।উনি এবার সৌভিক ভাইর দিকে তাকিয়ে বলেন,
–তোমরাও এসো।
–না মিস সুমা আমরা এখন খাবো না।
–আচ্ছা বাই নিহীন
–বাই

উনি চলে যায়।এবার সৌভিক ভাই নিজে থেকেই বলেন,
–মিস সুমা কিন্তু এতোটাও স্ট্রিক্ট না।আসলে এই বুইড়াবুড়ি গুলো খুব দুষ্টুমি করে তো তাই মিস সুমা ওদের সাথে একটু স্ট্রিক্টলি বিভেব করে।
–আচ্ছা উনিও কি এখানে থাকে?
–হ্যা।মিস সুমা সেই প্রথম থেকেই এখানে আছে।ওনার স্বামী ওনাকে বাড়ি থেকে মেরে তাড়িয়ে দিয়েছিলো,উনি রাস্তায় বসে কাঁদছিল বাবা তখন ওনাকে দেখে এখানে আনে।উনিই সেদিন থেকে এই বয়স্ক এবং বাচ্চাগুলোকে সামলাচ্ছে নিজের সন্তানের মতো করে।

আমি আর উনি হাটতে হাটতে ডাইনিং এর দিকে আসি বাচ্চা,বয়স্ক সবাই খাচ্ছে একসাথে।মিস সুমা খুব যত্ন করে সবাইকে খাবার দিচ্ছে।খাবার খাওয়া শেষ হলে সবার সাথে আরো অনেক সময় কাটালাম।সবার সাথে বেশ ভালো সময় কাটালাম।কখন যে বিকেল হয়ে গেছে বুঝিনি।উনি এবার বিদায় চাইলো কিন্তু কেউ ওনাকে ছাড়বে না।তাও জোর করে বিদায় নিয়ে আসলাম।উনি ড্রাইভ করছে।খুব হাসিখুশি উনি,ওনাকে এতোটা হাসিখুশি আগে কখনো দেখিনি।আজ সবার সাথে উনি অনেক মজা করেছে,আজ আমি অন্যরকম এক ওনাকে চিনলাম।
–নিহীন পিছনে দেখো খাবারের প্যাকেট আছে,নিয়ে খাও।

আমি ওনার দিকে অবাক হয়ে তাকালাম।উনি চোখ দিয়ে ইশারা করলেন,পিছনে তাকিয়ে দেখি সত্যিই একটা খাবারের প্যাকেট।আমি প্যাকেটটা নিলাম
–খোলো(আমি খুললাম দেখি তেহেরি ভিতরে)
–এটা কোথায় পেলেন?
–বিজয় ভাইকে দিয়ে কিনিয়ে এনেছিলাম।ওটা খাও এখন।দুপুরে তো খাওয়া হয়নি।
–সে তো আপনিও খাননি
–আমি বাসায় যেয়ে খেয়ে নেবো এখন তুমি খাও।না খেলে দুজনি খাবো।
–আরে না কোন সমস্যা নেই।
–সমস্যা আছে কি নেই আমি বুঝবো।আপনি গাড়ি থামান।
–নিহীন
–গাড়ি থামান।

উনি গাড়িটা রাস্তার এক পাশে সাইড করে রাখে।আমি হাত ধুয়ে তেহেরির অর্ধেকটা আর এক সাইডে দিয়ে ওনার দিকে দিই।উনিও হাসি মুখে নেই।দুজনেই খাচ্ছি,
–আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
উনি খেতে খেতে আমার দিকে তাকাই
–করো
–আসার সময় ওমন রেগে ছিলেন কেন?
আমার কথা শুনে হেসে দেই।
–হাসছেন কেন?
–আমি তখন রেগে ছিলাম না,তোমাকে ভয় দেখানোর জন্য ওমন ভাবে ছিলাম।হাহাহাহহাহহহ
–কি?
–হুম,তুমি একটুতেই ভয় পেয়ে যাও তো,তাই ভয় দেখাতে মজা লাগে।
–ইউ!!এটা ঠিক না।(ওনার ওপর খুব রাগ হলো)
–আচ্ছা সরি।
–ঠিক আছে।আর একটা কথা আপনি কি এখানে প্রায় আসেন?
–হুম তা আসি।তবে অনেকদিন আসা হয়নি।আজ একটা স্পেশাল ডে তাই তোমাকেও আনলাম।
–আজ স্পেশাল ডে?
–হুম।
–কেন কি আজ?
–খাওয়ার সময় এতো কথা বলা ঠিক না নিহীন,চুপ করে খাও।
–কিন্তু
–চুপ করে খেতে বলেছি আমি…

খাবারের দিকে তাকিয়েই উনি কথাটা বলেন আর খেতে থাকেন।ওনাকে জিজ্ঞেস করেও লাভ হবে না তা বুঝে গেছি তাই আমিও খেতে থাকি।

চলবে…………….
(কোন ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।আর নেক্সট নেক্সট না করে গল্পটা কেমন লাগছে সেটা জানালে বেশি খুশি হবো।ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here