প্রেম সায়রের ছন্দপাত পর্ব ১১

#প্রেম_সায়রের_ছন্দপাত

#সাদিয়া_নওরিন

পর্ব— ১১

পরের দিন ক্লাসরুমে,
একহাতের আঙ্গুলের ভাঁজে অন্যহাতের আঙ্গুলগুলো পুরে আড়াআড়িভাবে মোচড়ে চলছে আরশী৷ নিজের প্রিয় উচ্চতর গনিতের ক্লাসটাতেও মনযোগ দিতে পারছে না সে আজ। আজ প্রথমবার ইরশাদের সাথে দেখা করতে যাবে সে। এইসব ভাবতেই অস্হিরতা ভর করেছে বারবার তার মন জুড়ে। ফুল স্পিডে চলা, ফ্যানের শিতল বাতাসেও দরদরিয়ে ঘেমে গোসল করে উঠছে অরশী! এই ক্লাসটি শেষ করেই তাকে বের হতে হবে, এই কথাটি ভাবতেই বুকের ভেতরটা ধক করে উঠলো তার। বার বার যেন গলা শুকিয়ে আসছে তার!

গলা শুকিয়ে আসায় পানির বোতলটি হাতে নিতেই দেখলো পানিটাও শেষ। তাড়াতাড়ি আড়ঁচোখে প্রিয়াকে ইশারা করলো সে। প্রিয়া ফোঁস করে নিশ্বাস ছেড়ে পানির বোতলটি এগিয়ে দিল তার দিকে।আর তারপর সুর টেনে,ফিসফিসিয়ে কিছু বলার আগেই তাকে থামিয়ে ব্যাগটি কাঁধে ঝুলিয়ে ওয়াসরুমের দিকে রওনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিল আরশী। স্যার বের হওয়ার সাথে সাথে ব্যাগটা বুকের সাথে চেপে দিল সে ভোঁদৌড়!

ওয়াসরুমে পৌছে সবার আগে বেইজ আর নেইম-প্লেট টা খুলে নিল আরশী!
” সাবধানতার মার নেই” আনমনে ভাবলো সে। আর যা হোক ইরশাদকে তার নাম বা স্কুলের নাম জানানো যাবে না, মনে মনে এইসব ভেবে ব্যাগটা সামনের দিকে ঝুলিয়ে নিলো। তারপর ব্যাগ থেকে বোরকাটি বের করে তা পড়ে ফেলল। এখন একদম বয়স্ক আন্টিদের লাগছে তাকে দেখতে! মনে মনে এইসব ভেবে, ফিক করে হেঁসে এবার নিকাবটিও পড়ে ফেলল সে। এরপরই পা টিপে টিপে বেরিয়ে এলো স্কুল ভবন থেকে।

অভিভাবকদের ঢল নেমেছে গেইটের ভেতর। মূলত শিশুর বাচ্চাদের মা রা এসেছে নিজেদের সন্তানদের নিতে! আরশী তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে তাদের সাথেই গা মিশিয়ে বেরিয়ে এলো গেইটের বাইরে!
জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলল আরশী। বুকের ভেতরটা যেন এখনো কেউ খামচে ধরে রেখেছে তার! সে তাড়াতাড়ি নিজেকে স্বাভাবিক করে সামনে পা বাড়ালো।আচমকা তার প্রিয়ার বলা শেষ কথাটি মনে পড়ে গেল!

অদ্ভূত দ্বিধায় ভূগছে এখন আরশীর কোমল মনটি। যাবে কি, যাবে না এমন ভাবনায় কাতর হচ্ছে তার মন! আনমনে প্রিয়ার বলা শেষ কথাগুলো আউরালো আরশী,
—- ছেলেটা যদি খারাপ হয়! যদি তোর সাথে খারাপ কিছু করতে চায়। আর যেখানে সব ছেলেদের প্রোফাইলে নিজের ছবি সেইখানে এই ছেলে কেবল গাছ, ফুল গিটার এইসবের ছবি দেয় কেন? দেখতে যদি বুড়া মোটা ট্রাক ড্রইভার হয় সে। হয়তো ফেইজ আইডি।

আরশী দুকদম পিছিয়ে গেল। কান্না পাচ্ছে তার! ইশ যদি বের হওয়ার আগে এইসব চিন্তা করতো তাহলে তো আর বেরই হতো না সে! এখন কোথায় যাবে সে! এতো আগে বাড়ি পৌঁছানোও যে যাবে না! মায়ের চেহারা চোখের সামনে ভাসতেই স্কুলের ওয়ালের সাথে গা মিশিয়ে দাড়িয়ে দাত দিয়ে নখ কাটতে লেগে পড়লো সে! এভাবেই কেবল নতুন বুদ্ধি মাথায় আসে তার!

“গ্যাচ” করে বাস ব্রেক কষতেই সামনের চেয়ারের সাথে বাড়ি খেল আরশী! কপালটা লাল হয়ে গেল সাথে সাথে! মুহূর্তেই কল্পনার রাজ্য থেকে বেরিয়ে বর্তমানে ফিরে এলো সে! কিন্তু কল্পনার রেষ এখনো খেলছে তার চোখে মুখে! সে আঁড়চোখে হাতের ডানপাশে তার সিটের দুসিট পরে বসে থাকা ইরশাদ কে দেখলো! রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে সে এখনো আরশীর পানে! মূলত আরশীর দিকে না আরশীর মাথায় ফুলে যাওয়া লাল জায়গাটির দিকে তাকিয়ে আছে সে!
আরশী চোখে চোখ পড়তেই নাক ফুলিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিল ইরশাদ!
আর আরশীও ইতস্ততভাবে তারাতাড়ি মাথা ঘুরিয়ে সামনের দিকে তাকালো! আর আনমনে ভাবলো সে,
—- প্রিয়াটা কে যদি দেখানো যেত সেদিন আমি কতো সুন্দর ভালো মনের একটি ছেলের প্রেমে পড়েছিলাম!

হঠাৎ প্রেম মনে পড়তেই বুকটা ধক করে উঠলো তার। একদম বুকের একপাশটা খাঁ খাঁ করে উঠলো যেন!তাড়াতাড়ি নিজের কল্পনা থেকে বেরিয়ে আসতে চায়লো সে। নিজের এতো ভূলের পর যে ইরশাদকে নিয়ে ভাবাটা একদমই অনুচিত! দুহাতে কিছুসময় মুখটি ঢেকে পাশের সিটে ঘুমন্ত ব্যাক্তিটির দিকে তাকালো আরশী! তার বাকদত্তা রুপী স্বামীটা তার পাশের সিটেই বসে পরম নিশ্চিতে ঘুমুচ্ছে!

নাক ফুলিয়ে আরশীর দিকে তাকিয়ে আছে ইরশাদ! আরশীর কাধের একপাশটা দেখা যাচ্ছে কেবল তার জায়গা থেকে। সেদিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত পিষে বিরবিরালো সে,
— মিথ্যেবাদী। আমার এতোটা ভালোবাসার যোগ্য কখনোই ছিলে না তুমি। না আমার অপেক্ষার। হুট করেই হারিয়ে যাওয়ার নাম যদি তোমার সত্যতা হয়, তাহলে সেই সত্যতার কোন দাম নেই আমার কাছে! বিয়েটা তো কেবল দূর্ঘটনা ছিল, এই বিষয়টা কি একবার ও চিন্তা করলে না তুমি ছন্দ!
হঠাৎ তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো ইরসাদ, মেয়েটা যে পরিচয় টা ও মিথ্যা দিয়েছিল!

হঠাৎ আরশীকে জানালার সাথে যুদ্ধ করতে দেখলো ইরশাদ! তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়িয়ে আরশীর দিকে এগিয়ে গেল সে!
আরশী জানালা খোলার ব্যার্থ চেষ্টায় মগ্ন। তার পাশে বসা ঘুমন্ত অজগরটাকে ঠোঁট উল্টে কয়েকদফা বকতেই ঘাড়ে কারো গরম নিশ্বাস প্রবলভাবে অনুভব করলো সে! মুহুর্তেই সেখানে জমে গেল আরশী! হার্ডটি যেন ছিটকে বেরিয়ে আসার উপক্রম! অনুভূতির মিষ্টি অনুভব যেন আবিষ্ট করতে শুরু করলো তার মনপ্রাণ। তার নিজের হার্ডবিটের শব্দগুলো যেন একদম নিজের কানেই শুনতে পারছে এখন সে! কুলকুল করে ঘেমে অস্হির হয়ে উঠলো আরশী!
ইরশাদের অবস্থা যেন আরো করুণ। আরশীর মিষ্টি সুবাসটি যেন তার শরিরে ইনেস্তিশিয়ার কাজ করছে! নিস্তেজ লাগছে নিজেকে এখন তার। ইচ্ছে হচ্ছে ঢলে পড়ুক সে আরশীর বুকে। আকুল হয়ে বুকের সাথে চেপে ধরুক সে তাকে!নিজেকে শান্ত করুক ইরশাদ, নিশ্চিতে একটু ঘুমাক! সাতটি বছর ধরে দিনপ্রতিদিনের দহনজ্বালা থেকে যে সে নিস্তার চায়!

আচমকা বিয়ের কথা মনে পড়তেই একটানে ঠাস করে জানালাটি খুলে, নিজের চেয়ারের দিকে রওনা দিল ইরশাদ। নিজেকে ধিক্কার জানাতে ইচ্ছে হচ্ছে আজ তার।এতো বেহায়া কেন তার মনটি, যে হুট হাট এক মিথ্যাবাদীর জন্য কাতর হয়! আনমনে ভাবলো সে! বড্ড কষ্ট হচ্ছে এখন তার! মনে হচ্ছে কেউ যেন ব্লেড দিয়ে তার কলিজাটি কাটছে এখন! এমন মনে হওয়াটাও বড্ড পিড়া দিচ্ছে তাকে ! তার বিয়ে করা বৌ অন্যের বৌ হওয়ার তৈয়ারী করছে! ভাবলেই তো হাত-পা নিশপিশ করে উঠছে ইরশাদের। মেয়েটার নাম আরশী মনে পড়তেই বিরবিরিয়ে বলতে লাগলো সে,
—– আরশী নামটার একদমই যোগ্য নও তুমি ছন্দ। কারন আয়না নিজের প্রতিবিম্ব দেখায় আর তুমি নিজের প্রতিবিম্বকেই কলুশিত করো।

অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে ইরশাদের অধর ছুঁইয়ে। সে ডুব দিল আবার তার সেই স্বর্নিল অতিতে। যা প্রতিটি পৃষ্ঠায় কেবলই মিথ্যা কিন্তু দিনগুলো, তা যে ছিল সপ্নিল!

_____________
সেদিন আরশী আর আসে নি দেখা করতে! আর ইরশাদও হার মেনে ফিরে যায় নি সেদিন ঘরে! রাত সাড়ে নয়টা, ঠিক রাত সাড়ে নয়টায় ঘরে ফিরে আসে ইরশাদ! টলমল চোখের সাথে একগাধা হতাশা তার চোখে মুখে!দুপুর এগারোটা থেকে রাত নয়টা! সময়টা যে অতিদীর্ঘ, আর সাথে দীর্ঘ ইরশাদের কষ্টের পরিমানও! তবে ইরশাদের একটি বারের জন্য ও এমনটা অনুভব হয় নি আরশী ইচ্ছে করে আসে নি সেদিন! তার সেদিন বারবার মনে হয়েছে হয়তো কোন সমস্যা হয়েছিল আরশীর!

হঠাৎ গাড়ির হইচইে ঘোর কাটলো ইরশাদের। চোখ খুলে ব্রু কুঁচকে সামনে তাকালো সে। বন্যা বরাবরের মতো ঝগড়া করে চলেছে সাগরের সাথে! আর বাকিরা আড়চোখে সেদিকে তাকিয়ে তামাশা দেখছে। আকাশ করুণ দৃষ্টিতে নিজের ইজ্জতের হালুয়া হতে দেখছে। আর আরশী অতিরিক্ত অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে বন্যার দিকে!
ঠিক তখনই বন্যা নাক ফুলিয়ে বলে উঠলো ,
—– ইরশাদ ই সব খরচ করবে? তুই আছিস কেন? বাসের ভাড়াটা ও দিস নি ওকে। তোর টাকাটাও কি ও দেবে? অন্যের ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে দিতে লজ্জা হয় না তোর?
—- তোর এতো জ্বলে কেন? মনে হচ্ছে তোর জামাইয়ের টাকা খেলাম আমি?
ভেঙ্চি কেটে বলল সাগর। বন্যা নাক ফুলিয়ে শক্ত কিছু বলার আগেই তাদের ডাক দিল ইরহাম। বন্যা ইতস্ততভাবে তাকালো ইরহামের দিকে। হাজার হোক ছোট বোনের হবু বর৷ ইরহাম আঁড়চোখে ইরশাদের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
—– তো তোমাদের নবাবজাদা একজনের এক্সট্রা খরচ দিতে পারবে না!তা তো হয় না। আমার তো মনে হয়, তারই সবার টা দেওয়া দরকার। আফটার অল ধনীর দুলাল সে। স্কুলে ওই প্রথম ছেলে ছিল যে কিনা দামী কারে চড়ে স্কুলে আসতো!
আরশী অবাক হয়ে তাকালো পিছনে! কিন্তু তার দৃষ্টি সম্পূর্ণ ইগনোর করলো ইরশাদ।একদম সোজাসাপ্টা স্বরেই বলল,
—- ইরশাদ মেহতাব একজন ব্যাংকার। তার পিতার কি আছে সেইটা তার পিতার হিসাব। ইরশাদের না। তবে ইরশাদ কারো টাকা উড়ানো পছন্দ করে না। সে নিজের ইনকামে যতোটা ইফোর্ট করে ততটা খরচ করতে ভালোবাসে।

ইরহাম মুগ্ধভাবেই চমৎকার হাসলো।তারপর ক্ষ্মীণ স্বরে বলে উঠলো,
—- তুমি একটুও পাল্টাও নি ইরশাদ! এজন্যই তোমার ব্যাক্তিত্ব আজীবনই মুগ্ধ করে আমাকে!

আরশী আঁড়চোখে আবার ইরশাদের দিকে তাকালো।এই মানুষটার ব্যাক্তিত্ব টা যে আজিবন প্রছন্দ তার! সে আরেকটু গভীর দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করলো ইরশাদকে! আগের চেয়ে শারিরীক গঠনে দিক দিয়ে অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে তার। পরিবর্তন বললে হয়তো ভূল হবে। সুদর্শন হয়েছে এই শব্দটিই কেবল তার জন্য যুক্তিযোগ্য। সাদা রংয়ের টিশার্ট পড়েছে ইরশাদ, সাথে ব্লাক জিন্স। আঁকাবাকা পেশীগুলো টাইট করে ধরে রেখেছে শার্টের বাহুকে৷ হাতে কালো ঘড়িটি ফর্সা হাতের ওপর হাইলাইটারের মতো জ্বলছে! সাদা ফুল হাতা শার্টে মাখনের মতো মনে হচ্ছে এখন ইরশাদকে আরশীর! একটু পরপর শার্টের হাতা ভাঁজ করে বাইরে তাকাচ্ছে সে যেন গাড়ি থেকে নামতে পারলেই বাঁচে! তার সেই কপাল কুঁচকানো, ঠোটের ওপর আঙ্গুল ছোঁয়ানো! সব মুগ্ধ করছে আরশীকে!
আরশীর হুট করেই মনে হলো পথটা অনন্তকাল ধরে চলুক! আর সে ইরশাদের এমন মোহনীয় চেহারা আরো কিছুখন দেখুক !ইশ্ তার আঁখির তেষ্টা যেন মিটছেই না!

বাস যখন ঢাকায় এসে পৌঁছালো তখন সময়টা দুপুর ৩.৩০। খিদা নামক দানবটি যেন পেটের ভেতর ছৌঁ-নৃত্য শুরু করছে এখনস বার। বাস থেকে লাফিয়ে নেমে জোড়ে – সো রে হাই তুলল সাগর। তারপর পেটের ওপর হাত বুলিয়ে করুণ স্বরে বলল,
—- দোস্ত দু’মুঠো ভাত দে। বহুত খিদা লাগছে।
সাগরের কথায় ফিক করে হেঁসে দিল আরশী। আড়চোখে সেদিকে তাকিয়ে হালকা মাথা ঝাঁকিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো ইরশাদ,
—- হ। আমি তো খাবারের ঢালা সাজায় রাখছি তোর জন্য এইখানে। চল কোথায় বসি।

সবার যার যার ব্যাগ নিয়ে হাটা দিল সামনে। ঢাকা আর চট্টগ্রাম শহরের মাঝে তফাত চোখে পড়ার মতো! ব্যাস্তময় শহর হিসেবে উভয় অঞ্চলের খ্যাতি থাকলেও, শহরের ভেতর প্রবেশ করতেই সবার আগে অনুভব হয় জিনিসপত্রের উচ্চদাম! রিকশা, ভ্যান থেকে শুরু করে হোটেল এমনকি খাবারদাবারেরও দাম এখানে অধিক।
তারা কিছুসময় এদিক ওদিক তাকিয়ে, একটি মুটোমুটি স্টান্ডার্ডের রেস্তোরাঁয় খেতে বসে গেল।

জিনিস পত্রের দাম দেখেই চোখ পিটপিট করে খাবারের মেনুর দিকে তাকালো তিতাস।তারপর বলে উঠলো,
—– এতো দাম এক আইটেমের! এই টাকা দিয়ে তো আমি পল্টু মামার দোকান থেকে পেট পুরে খাবার খেয়ে নিতে পারতাম!
—– হু। ঐটা দোকান না টঙ। তোমার তো খাবার হলেই চলে। তা ড্রেনের পাশে হোক। নো প্রবলেম তোমার চলবে।
এই , এই তিতাস! তুমি এতো কিপ্টা কেন বল তো? ছিহ্
—— কিপ্টা! কিসের কিপ্টা? এইটাকে মিতব্যয়ী বলে মেয়ে। বুঝলে? আর আনি কখন ড্রেনের পাশে বসি?
—– হু। কচু বলে।আর তুমি না তোমার ভুত বসে।
মুখ বাঁকালো তিশা।

দুজনের কথা কাটাকাটি চলতেই থাকলো।আর ওদের দিকে হতাশ দৃষ্টিতে তাকিয়ে, হালকা মাথা ঝাঁকিয়ে খাবারের অর্ডার দিলো ইরশাদ। তারপর চেয়ার টেনে বসতে বসতে বলল,
—— তোমরা কি আদো বিয়ে করবে? পারবে একসাথে থাকতে? এখনো এতো ঝগড়া কর, বিয়ের পরের পরিস্থিতি চিন্তা করা দরকার তোমাদের। আর তাছাড়া বিয়ে মানে আজিবন একসাথে থাকার ওয়াদা। সেটা যেমন বিয়ে হোক না কেন।সুতরাং চিন্তা করে ডিসিশন নাও

আরশী মাথা নুইয়ে আঁড়চোখে ইরশাদের দিকে তাকালো। দু’ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো তার চিবুক চুইয়ে! ইরশাদের কথাগুলো যেন তাকে সেই এক ঘন্টার বিয়ের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়! যা বারবার খুঁচিয়ে চলছে তার হৃদয়কে! মাঝে মাঝে ফিরে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে তার সেই সময়ে! কিন্তু সেই সময়গুলো যে সুখের সাথে দুঃখের কালো ছায়াও নিয়ে এসেছিল!

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here