প্রেম সায়রের ছন্দপাত পর্ব ২০

#প্রেম_সায়রের_ছন্দপাত

#সাদিয়া_নওরিন

পর্ব—–২০

রাত নেমেছে দিল্লি শহরে। বারান্দার গ্রিল গলিয়ে এক দৃষ্টিতে ডুবে যাওয়া সূর্যটির দিকে তাকিয়ে আছে বন্যা। সূর্যের একটু একটু ডুবে যাওয়া, আর চন্দ্রের আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হওয়া। এ যেন প্রকৃতিরই অংশ। চাঁদ কিন্তু দিনের বেলায়ও থাকে। কেবল সূর্যের তেজের কারণে দৃশ্যমান হয় না তা।আর ইরশাদের জিবনে বন্যার অস্তিত্বটা আজ ঐ চাঁদটির মতো মনে হচ্ছে বন্যার কাছে! ধরিত্রীতে সূর্যের অস্তিত্বের কারণে যেমন চন্দ্রিমার দেখা মিলে না। ঠিক তেমনি ইরশাদের হৃদয়ে আরশীর অস্তিত্বের কারণেই হয়তো এতোদিন ধরে অন্য কোন মেয়ে তার হৃদয়ের রানী হতে পারি নি!

দু-চোখ ভরে আসছে আজকে বারবার বন্যার। নিজের ভাগ্যের প্রতি বড্ড হাসি পাচ্ছে তার আজ! মাতৃস্নেহে কাতর বন্যার শৈশবটা কেবলই কেটেছে পিতৃবিয়োগের কাতরে। আর যৌবনে যাকে সবচেয়ে বেশী চায়লো সে, তার দিকে ফিরেও তাকালো না সেই ব্যাক্তিটি! অশ্রুর লহর ভাসিয়ে দূর আকাশটির দিকে তাকিয়ে আছে সে এখন। হৃদয়টাও বড্ড খাঁ খাঁ করছে তার! এ যেন তিব্র জ্বালা!

সাগর, তিতাস আর তিশা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে স্তব্ধ হয়ে বসে থাকা ইরশাদের দিকে।আর ঠিক তার পাশেই আলতো মাথা নুইয়ে বসে আছে ইরহাম। সময়টা অতিক্রম হচ্ছে ধীরে গতিতে।আর এই ধিরগতির স্তব্ধতায় দম আঁটকে আসছে তিশার। শেষে অধর্য্য ভঙ্গিতে ইরশাদের গা ঝাঁকা দিয়ে বলে উঠলো সে,
—– আমরা তোর পাঁচ বছরের বন্ধু। আমরা কিছু জানি না কেন?
—- হুম ইয়ার। তুই আর আমি তো সেইম কলেজেই পড়তাম।আর প্রায় ছয় বছরের কাছাকাছি আমাদের সম্পর্ক। কখনো তো বললি নি কাউকে ভালোবাসিস তুই। আর এই মেয়ে হুট করেই বৌ হয়ে গেল কিভাবে?

তিতাস আর তিশা প্রশ্নে হতাশজনক লুক দিয়ে তাদের দিকে তাকালো সাগর।তারপর ইরশাদ কাঁধে হাত রেখে ধরা কোমল স্বরে বলল,
—– ইরশ, আরশীই কি ছন্দ? যাকে তুই পাগলের মতো খুঁজছিলি! এই মেয়ে কি সে ই?
বারবার ধরে আসছে যেন সাগরের গলা । ইরশাদের সেই করুণ আর্তনাত যেন চোখের সামনে ভেসে উঠছে তার। ইরশাদের সেই ছটফট করা দিনগুলো ছুঁচ রুপে খুঁচিয়ে চলছে যেন তাকে।

সাগরের প্রশ্নে ঈষৎ মাথা নাড়লো ইরশাদ। শূন্য দৃষ্টি ঝুলছে এখনো তার চোখেমুখে। হঠাৎ তার বদলেই বলে উঠলো ইরহাম একদম ভূমিকা ছাড়ায়!

” আমার যখন বিয়ে ঠিক হয়। অনেক খুশি ছিলাম আমি সাথে অনেক এক্সাইটেড ও। জিবনে কখনো প্রেম আসে নি আমার। আর না আমি চেয়েছি কারো সাথে প্রেম করতে। কিন্তু এলোকেশী বাসন্তী রঙের শাড়ী পরিহিতা এক কন্যার ওপর চোখ আঁটকে গেল একদিন আমার। মেয়ে না বলে হয়তো তাকে জাদু বললেই বেশী যুক্তিযোগ্য হবে আমার জন্য! সে এক অদ্ভুত মায়া তার চোখে মুখে, যেন ঘায়েল করে দেয় আমাকে!
যে আমি বিবিএস এক্সামের ভারে কারো চেহারা দেখার ফুরসত পাচ্ছিলাম না তখন। সেই আমিই বাবার এক বন্ধুর ছেলের বিয়েতে যেতে রাজি হয়ে গেলাম তাও আবার পরিক্ষার আগের দিন!
দিনটি আমার জন্য শুভ ছিল, না অশুভ আজো যেন তা বুঝতে পারি নি আমি! তবে পিতার কথা মেনে চলা কর্তব্য তা মনে করেই হাজির হয়েছিলাম আমি সেই বিয়েতে।”

একটু থামে ইরহাম। সোজাভাবেই তাকায় ইরশাদের দিকে। আর ইরশাদ সে যেন জিঙ্গাসু দৃষ্টিতে একপলকে তাকিয়ে আছে তার পানে! বাকিরা যেন নিশ্বাস নিতে ভূলে গিয়েছে এতোটাই উদগ্রীব তারা পরবর্তী কাহিনী শুনার!
ইরহাম বাতাসে উড়ে আসা পর্দাটির দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুসময় তারপর আবার বলতে আরম্ভ করলো,

——– বিয়েতে এককোনায় বসে বাসা থেকে ছবি তুলে আনা প্রশ্নগুলোতে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছিলাম আমি। পরের দিন পরিক্ষা, আর মাথায় টেনশন আকাশ সমান।হঠাৎ ধুপ শব্দ তুলে একদম পায়ের কাছে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেলো এক তরুনী! বয়স হয়তো বাইশ। বাসন্তী রঙের শাড়ীটি একদম কুঁচকে গেল তার মুহুর্তেই। আর তার সবচুলগুলোও চলে এলো মুখের সামনে! মেয়েটি বেখেয়ালি ভাবে পড়ে গেল নাকি আমার লম্বা করে টেনে রাখা পায়ের জন্য হুঁচট খেল একদমই বুঝতে পারলাম না আমি! তবে আমি এতুটুকু বলতে পারি, মেয়েটির মাঝে এমন কিছু ছিল যা আমাকে মোহিত করে তুলছিল সেদিন!
আমি তাড়াহুড়ো করে সরি বললাম তাকে। নরমালের চেয়ে যেন বেশী ব্যস্ত হয়ে উঠছিলাম আমি কেবল তার ক্ষমা পাওয়ার জন্য! কিন্তু সে বরাবরের মতোই স্বাভাবিক! একদম স্বাভাবিজ তার চাউনী!এবং হঠাৎ সে আমাকে একদম অবাক করে দিয়ে বলে উঠলো,
“ইটস ওকে আমারও ভূল ছিল”!
সাথে সাথেই যেন মেয়েটির স্বর রিনিঝিনি শব্দ তুলে আছড়ে পড়লো আমার বুকে! আর আমি পুলকিত ভাবে কেবল তাকে দেখায়ই মজে গেলাম!

হঠাৎ মেয়েটি কিছু দূর সামনে এগিয়ে আবার ফিরে এলো আমার কাছে।আমার বিষ্মিত দৃষ্টি উপেক্ষা করে, সে তার সেই ঝুনঝুনির মতো স্বর তুলে বলল আমায়,
—- বিয়েতে বসে পড়ছেন!
তার বিস্ময় ঢালা কন্ঠস্বরে কথায় খেই হারিয়ে ফেলছিলাম যেন আমি! তবে তাকে জবাব দেওয়া ও যে দরকারী। নিজেকে সাত-পাঁচ বুঝিয়ে বাজখাঁই গলায়ই তাই বলে উঠলাম,
—- আসলে কালকে এক্সাম তো তাই।
—– দোয়া করি আপনার এক্সাম খুব ভালো হোক।

চলে গেল মেয়েটি। তারপর দেখলাম তাকে আবারও, কন্যার বিদায় বেলায়! কেমন ঠোঁট কামড়ে কাঁদছিল সে কন্যার দিকে তাকিয়ে! আরো অদ্ভুত ঠেকলো বিষয়টি আমার কাছে যখন জানলাম মেয়েটি আমার মতোই বর পক্ষ!

—– কিহ্!
কথার মাঝে ফোঁড়ন কাটলো তিশা। আর এতে যেন বড্ড বিরক্ত হলো সাগর! সে মুখ গোমড়া করে ফেলল সাথে সাথে।আর তারপর বলল,
—- তুই কি মুরগীর পেছনের টা খাইছিস আজকে? কিছুখন পরপর এতো কথা বলিস কেন? চুপ থাকতে পারিস না?
তিশা ভেঙ্চি কেটে তিতাসের হাতটি জড়িয়ে ধরলো। আর ঠিক সেই সময়ে রুমে প্রবেশ করলো বন্যা। মুর্চে যাওয়া ফুলটির মতো নিষ্প্রাণ মনে হচ্ছে এখন তাকে! সে ধুপ করে তিশার পাশে বসতে বসতে বলল,
—- তো বিয়ের কথা আগালো কিভাবে?

ইরহাম চোখ বুঝলো। ঘাড়ের নিচে হাত দিয়ে ঘাড়টি দু’পাশে বাঁকালো কশেকবার।তারপর আবার বলতে শুরু করলো,
——বিবিএস এর লিস্ট এ নিজের নাম দেখার সাথে সাথেই প্রথম যার কথা মনে পড়লো আমার, সেই হলো সেই নাম না জানা মেয়েটি! হুট করেই মনে হলো নিজের খুশির খবরটা মেয়েটির সাথে শেয়ার করি আমি কিন্তু মেয়েটির সকল পরিচয়ও যে তখন আমার কাছে ছিল অজানা।
হঠাৎ বাসায় আমার বিয়ে নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হলো।বাবার বন্ধুর মেয়ের সাথেই বিয়ে দিতে চান তারা আমায়। পচন্ড হতাশা অনুভব করি তখন আমি৷ না সেই অচেনা মেয়েটিকে ভূলতে পারছি আমি, আর না বাবার কথা অস্বীকার করার স্বাধ্য আছে আমার !

শেষে মেয়েটিকে দেখতে তার বাসায় হাজির করা হলো আমাকে। অন্যদিকে আনমনেই মনোস্থির করে বসে রইলাম, দেখার সাথে সাথেই না বলবো দেখতে আশা মেয়েটিকে! কিন্তু গোলাপি কামিজ পরিহিতা কন্যাটির দিকে তাকিয়ে একদম বাকরুদ্ধ হয়ে রইলাম আমি! মেয়েটি আর কেউ নয় আমার মনের কোণে বসবাস করা সেই অচেনা মেয়েটি যার নাম আরশী! আরশী মেহতাব!

পরপর শুঁকনো ঢোক গিলল ইরশাদ। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসছে তার! অন্যদিকে ইরহামের দৃষ্টি একদম ফ্লোরেই কেন্দ্রিত! সে ঐভাবেই বলে উঠলো আবারও,
—– তারপরের সময়টা একদম দ্রুততার সহিত চলতে শুরু করলো!যেন সময় পাখা লাগিয়েছে! আরশী আর আমার বিয়ের কথা, পাকাদেখা, বাকি অনুষ্ঠান সব যেন পুরোদমে শুরু হয়ে গেল।

আমার এক্সাইটেড ও তখন তুঙ্গে। ঠিক সেইসময় হুট করেই একদিন কল দিল আমাকে আরশী! আমার নাম্বারেই কল দিল আর বলল সে দেখা করতে ইচ্ছুক আমার সাথে! ঐ মুহুর্তটা আমার কাছে কতোটা বিশেষ ছিল হয়তো তা বলে শেষ করাই অসম্ভব। মনের মাঝে হারমোনিয়ামের সুর আর তবলার তাল দুইটাই যেন অনুভব হচ্ছিল সেদিন আমার!
সেদিন দুঘন্টা লাগিয়ে সেজেছিলাম আমি। আর যখন সময়মতো আরশীর সামনে দাঁড়ালাম। মেয়েটির ভেজা চোখ দুটি যেন আমাকে ভেতর থেকে এফোঁড়ওফোঁড় করে দিল! সেদিন বুঝেছিলাম মেয়েটি অন্যের বিয়ে দেখলে কাঁদে কেন! আমি ক্যাফেরএক কর্নারে নিরিবিলি একটি সিট বুক করলাম তখন৷ আর ঠিক সেদিনই আমাকে দুনিয়া সবচেয়ে অপ্রিয় সত্যিটি আরশীর মুখ থেকে শুনতে হয়েছিল!

ডুকরে কেঁদে উঠলো ইরশাদ! বলা হয় ছেলেরা কাঁদে না, কিন্তু আজ যেন উপস্থিত প্রতিটি ছেলের চোখেই অশ্রু! তিতাস ভিন্ন। সে এখনো জানে না সম্পূর্ণ টা। কিন্তু সাগরের ভেজা চোখ, ইরহামের নাক টানা আর ইরশাদের বহমান অশ্রু কেবল এই একটি বিষয়ের ইঙ্গিত দেয়। মেয়েটা ভাগ্যবতী! মেয়েটি এতোটাই ভাগ্যবতী যে তার কষ্টে ব্যাথিত হয় তারই প্রিয়ের হৃদয়!

সাগর ইরশাদের কাঁধে আলতো মালিশের ভঙ্গিতে হাত বুলায়।তারপর উৎসুকভাবে তাকায় ইরহামের দিকে। ইরহাম নাক টেনে অশ্রু আটকায়।তারপর বলে উঠে,
—— সে মেরিড! এইটাই বলেছিল আরশী।
এবার হু হু করে কেঁদে উঠে ইরশাদ। এই অশ্রু কি তার জন্য আরশীর মনের কোনে জমানো অনুভূতির জন্য! নাকি তার সাথে ভেঙ্গে যাওয়া সম্পর্কের ইতি না টানার জন্য তা বুঝতে পারে না যেন ইরশাদ! কিন্তু ইরহাম কিছুই বলে না তাকে। সে নিজের গতিতেই বলতে থাকে,

—–আরশীর ঠিক যখন বিয়ে হয় তখন নাকি সে স্কুলের স্টুডেন্ট। হুট করেই একটা পার্কে বসে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল তার নয় মাসের প্রেমিকের সাথে!আর যারা বিয়েটা দেয়, তারা তারই প্রেমিকের শত্রুপক্ষ ছিল! খুব বাজে ভাবে বিয়েটা হয় তাদের। চারপাশের মানুষ ভিডিও করছিল, যেন কোন মজাদার কিছু দেখছে তারা। যা তাদের লাইক কমেন্টের বন্যা বইতে সাহায্য করবে এতোটা, যতোটা তারা সাধারনত খুঁজেলেও পায় না।আর আরশী কথা গুলো বলতে বলতে ডুকরে কাঁদছিল সেদিন! পার্কে দাড়িয়ে থাকা প্রতিটি মানুষ অতি নোংরা ভাষার টিচ করছিল তাদের যা সেই কিশোরী মনকে এফোঁড়ওফোঁড় করছিল। ভীত দিশাহীন আরশীকে কাবিননামা স্বাক্ষর করিয়েই খান্ত হয়েছিল সেদিন সেসব নরপশুরা।আর তার সেই প্রেমিকও ছিল অসহায়।

ঐঘটনাটি খুব বাজে ভাবে প্রভাব ফেলে আরশীর জিবনে। ভিডিওটি দেখেই আত্মীয় স্বজনরা বুঝতে পারে মেয়েটা আরশীই! লম্বা ঘোমটা পড়া মেয়েটির কন্ঠস্বর আর তার সবকিছু দেখে আত্মীয় স্বজনরা চিনেই নেয় তাকে!খুবই রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে আরশী। একটু টিভি দেখতেও যাকে কঠিন ঝাঁকি সহ্য করতে হয়, ফোন ব্যবহার করা যার জন্য দন্ডনীয় অপরাধ। সে হুট করেই প্রেম করে বিয়ে করে নিল। বিষয়টি কতো বড়! ভাবলেও যেন গা শিউরে ওঠে!
ঠিক সেদিনই আরশীকে নিয়ে তার ফুফির বাসায় চলে আসে তার বাবা, ঢাকাতে। তার ওপর সেদিন বহমান ঝড়-ঝঞ্ঝাও ছিল কল্পনার অতিত। তার খুব রাগ হয় তখন নিজের ওপর, তার সেই প্রেমিকের ওপর। যার জন্য তার অবস্থা এতোটাই করুণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল সেদিন। সব সম্পর্ক ছিন্ন করে ফোনটি পিতার কাছেই জমা দিয়ে দেয় সে সেদিন। তারপর পড়ায়ই মন দেয়। পরীক্ষা দিতে চিটাগাং যায় সে শেষ বারের মতো। আর তারপর কলেজটা ঢাকায়ই শেষ করে সে। পরের দুবছর কেবল সেই মানুষটিকে ভূলার চেষ্টা করেই কাটিয়ে দেয় আরশী৷ আর যখন চট্টগ্রাম ভার্সিটিতে চান্স পায় আবার ফিরে আসে সে চট্টগ্রামে।

তার বান্ধবীদের বানানো ফেইক নামটি নিয়ে বিয়ে করেছে সে এই কাহিনী শুনিয়ে চলেছিল সেদিন সে আমায়। আর অশ্রুসিক্ত নয়নে নাক টেনে টেনে বলছিল সে ভূলে গিয়েছে সেই মানুষটিকে!

মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে উঠে ইরহামের। আলতো মাথা নাড়িয়ে ঠোঁট কামড়ে হাসে সে। তারপর বলে,
—– জানো আমি ভেবেছিলাম, সাড়ে ছয় বছর আগে হুট করে হওয়া সেই এক্সিডেন্টের বর্ণনা দিচ্ছে সে আমাকে! কতো বড় বোকা ছিলাম আমি৷ সেদিন এই সহজ বুষয়টিই বুঝতে পারলাম না, সে তার হৃদয়ের কোণে জায়গা করে থাকা সেই বিশেষ মানুষটির বর্ণনা দিচ্ছিল সেদিন আমায়! বিগত সাত বছরে এক সেকেন্ডের জন্যও সেই মানুষটির সাথে যোগাযোগ করতে চায় নি আরশী। কেন চায়নি সেই কারণ টি অজানা আমার কাছে।তবে সেই অজানা কারণটিই যেন আমাকে এই তাসের ঘর বানানোর স্বপ্ন দেখিয়েছিল সেদিন!

আলতো মাথা নুইয়ে কাদছে ইরহাম।কিন্তু ইরশাদ বসে আছে গভীর চিন্তামগ্ন হয়ে! কাহিনির বাকি অদৃশ্য বিষয়গুলো জানার বড্ড ইচ্ছে হচ্ছে আজ ইরশাদের! কি চলছিল আরশীর ভেতর তা জানতে উদগ্রীব সে!এতোটা বছর সে একটি বারের জন্যও কেন যোগাযোগের চেষ্টা করে নি তাই যেন ভাবাচ্ছে তাকে! এতোটা অনুভূতি লুকিয়ে এতোটা কষ্ট কেন দিয়েছিল সে সেদিন তাকে তাও যেন অজানা তার কাছে!
প্রশ্ন অনেক, কিন্তু উত্তর!

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here