ফাল্গুনের ঢেউ পর্ব -১২

#ফাল্গুনের_ঢেউ
পর্ব – ১২
লেখিকা – Zaira Insaan

হৈহুল্লার মাঝখানে ফাঁক গলে বেরিয়ে সেই একই দোকানে গেল স্নিগ্ধ। দোকানির কাছে এসে বলল,,

“কিছুক্ষণ আগে যাওয়া মেয়েটা কি দেখছিল এখানে?”

দোকানি একটা ব্রেসলেট এগিয়ে দিয়ে বলল,,

“এইডা।”

“তো নেয়নি কেন?”

“কি আর কমু! মাইফা মানুষ দরদামের জ্বালায় আর নেয়নি।”

ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলল স্নিগ্ধ। দোকানিকে কিছু টাকা দিয়ে তারপর সেই কালো রঙের ব্রেসলেট টা কিনে নিল । মেলায় কিছুক্ষণ থেকে হোটেল যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিল সবাই। সবার হাতে ছোটখাটো প্লাস্টিক ব্যাগ। আর মিহির গায়ে জোড়ানো শাল যা কিনে ছিল মাত্র। নীলিম স্যার হঠাৎ বলে উঠল,,

“কাল সকালে সবাই দ্রুত তৈরি থাকবা। কাল আমরা বিচ দেখতে যাবো।”

হৈহুল্লো শুরু হয়ে গেল আবারো। সবার মাঝে এক আনন্দ বিরাজ করছে। এখন অপেক্ষা শুধু এক নতুন প্রভাতের।
_____________

মিহি ও তনু সকাল সকাল চটজলদি রেডি হয়ে নিল। বেরুবে এমন সময় কে যেন জোরে জোরে দরজায় টোকা দিতে লাগল। মিহি দরজা খুলতেই স্পৃহা রাগান্বিত হয়ে বলে,,

“এতোক্ষণ লাগে খুলতে?”

তনু পেছন থেকে বলে উঠলো,,

“আসতে সময় লাগে বইন। আমরা তো আর দরজায় হেলান দিয়ে ঘুমাইয়নি।”

স্পৃহা রাগে বলল,,

“তাড়াতাড়ি আয়, দেরি হয়ে যাচ্ছে বিচে যেতে।”

“হু”

মিহি ও তনু দ্রুত বেরিয়ে গেল। নীচে নামলো সবাই একসাথে। বাসে উঠে পড়লো একের পর এক।
বাসের গতিবেগ বাড়ালো। কিছুক্ষণ পরেই তারা পৌঁছালো বিচে। সবাই হৈ হুল্লোড় সাথে নীচে নেমে চলে গেল। মিহি জুতো খুলে বালিতে ধীরস্থে হাঁটতে হাঁটতে যেতে লাগল। সবার পায়ে জুতো একমাত্র মিহি ছাড়া। সবাই অন্য পাশে ছবি তুলতে ব্যস্ত আর মিহি আরেকপাশে নিজের কাজে। সে নিজের ছবি না তুলে প্রকৃতির ছবি তুলতে ব্যস্ত। স্নিগ্ধ তাকালো ওর দিকে নিজের মধ্যে ভেতরে এক ধরনের শিহরণ বয়ে গেল। মিহি হেঁসে হেঁসেই ছবি তুলছে। স্নিগ্ধ দাঁড়ালো ওর ঠিক পিছনে। মিহি ফিরতেই ভয় পেয়ে গেল। অবাক হয়ে বলল,,

“আপনি এখানে?”

“কোন সমস্যা?”

“না মানে, আপনি এখানে আমার সাথে?”

“বিরক্ত লাগছে? চলে যাবো?”

মিহি থতমত খেয়ে গেল বলল,,

“না, থাকেন।”

মিহি মেকি হাসলো তারপর দুজনেই নীরবে হাঁটতে লাগলো। স্নিগ্ধ বলে উঠলো,,

“ক্যামেরা টা দেখি?”

মিহি সম্মতি দিয়ে ক্যামেরা এগিয়ে দিল। স্নিগ্ধ মিহির সামনে ক্যামরা তুলে বলল,,

“গ্লাস পরিস্কার আছে, একটু হাঁসো।”

মিহি চমকে উঠে তারপর মেকি হাসলো। স্নিগ্ধ একটা ওর ছবি তুলে ওকে দেখালো। দেখলো ছবিটা বেশ সুন্দর হয়েছে। মিহির ঠোঁটে হাঁসি ফুটে উঠল। তারপর স্নিগ্ধের সামনে হেঁসে ‌একটা পোজ দিতেই স্নিগ্ধ এক চোখ বন্ধ করে ছবি তুলে দিতে লাগল। ছবি তোলার শেষে ছবি দেখতে দেখতে ঠোঁটের কোণায় এক চিলতে হাসি ফুটে উঠল। স্নিগ্ধ তাকালো দৃঢ় ও শান্ত দৃষ্টিতে। ওর হাসিতেই যেন ঘোরে চলে গেল ও।

(চলবে…)

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here