ফিলোফোবিয়া পর্ব -১৫

ফিলোফোবিয়া

ঊর্মি প্রেমা (সাজিয়ানা মুনির )

১৫.

( কার্টেসি ছাড়া কপি নিষেধ)

কোলে করে ছাদে এনে কাঠের চেয়ারটার উপর ছুঁড়ে ফেলল। হাত মুখ খুলতেই, প্রিয় সাথে সাথে উঠে দাঁড়ালো। এগিয়ে আসছে শতাব্দ। ভয়ে পা পিছাতে পিছাতে সিঁড়ি কোটার দেয়ালে যেয়ে ঠকলো। খিঁচে চোখমুখ বন্ধ করে নিলো। ভয়ে থরথর কাঁপছে। ধুকপুক করছে বুক। ফোঁসফোঁস রাগী শ্বাস ফেলছে শতাব্দ। নিশ্বাসের গর্জন শুনে রাগের পরিমাণ অনুমান করা যাচ্ছে। আচমকা কাছে এসে এক হাতে কোমর খামচে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে নিলো প্রিয়’কে। অন্য হাতে শক্ত করে তার চিবুক চেপে। ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলল,
‘ আমাকে ইগনোর করা? আমাকে? আমি তোমার ইগনোর ঠেলবার লোক!….বারবার জিজ্ঞেস করেছি। সমস্যা কোথায়? কি হয়েছে। সামনা সামনি বসে সমাধান করি। আমার কথার কোন দাম নেই? তাই না?
প্রিয় চুপ। প্রচণ্ড ভয় করছে তার। শতাব্দের আগুন ঝরা ক্ষিপ্ত নিশ্বাস মুখে পড়তেই। শিরশিরে উঠছে গা। শতাব্দ ঝাঁঝালো কন্ঠে বলল,
‘ কোনকিছু না শুনে, না বলে হুট করে গায়েব হয়ে যাওয়া। শিহাবের সাথে গাড়ি করে ঘুরা। আমি এসব সহ্য করবো? উহু, খু*ন করে ফেলবো।’
শেষ কথাটা ধমকে বলল শতাব্দ। আঁতকে উঠল প্রিয়। ভয়ে জড়সড় হয়ে দেয়াল ঘেঁষে আরো নিবিড় ভাবে দাঁড়ালো। ঝুঁকে এলো শতাব্দ। প্রিয়’র গাল চেপে ধরল। গম্ভীর কঠিন গলায় বলল,
‘ চোখ খুলো। আমার দিকে তাকাও!’
চোখ খুলল না প্রিয়। আরো শক্ত করে চেপে রইল। শতাব্দের রাগ হলো। প্রচন্ড রাগ। দাঁতে দাঁত চেপে, চাপা কন্ঠে ধমকে বলল,
‘ আমার দিকে তাকাতে বলেছি প্রিয়!’
ওই অগ্নিঝরা দৃষ্টিতে তাকানোর সাহস নেই প্রিয়’র। চোখ খুলবে না সে। গলায় দলা পাকিয়ে থাকা কান্নাটা বেরিয়ে এলো। ডুকরে কেঁদে ফেলল হ্ঠাৎ। শুনল না শতাব্দ। তার রাগ সপ্তম আকাশে আজ। এই কয়েক দিন মেয়েটা বড্ড বেশি পুড়িয়েছে। গতকাল শিহাবের গাড়িতে আসতে দেখে মাথা বিগড়ে গেছে। প্রিয়’র ভয়, কান্না কোন কিছু চোখে পড়ছেনা তার। কোন এক অসুর ভয় করেছে যেন। প্রিয়’র দু’ কাঁধ চেপে ধরল। চিৎকার করে বলল,
‘ আমাকে নিয়ে খেলতে চাইছ? কি ভেবেছ ছেড়ে দিবো আমি! আমি তোমাকে শে*ষ করে দিবো প্রিয়! বলো কেন? কেন এমন করছ! বলো’
শতাব্দ আরো শক্ত করে চেপে ধরলো ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠল প্রিয়। ডুকরে কেঁদে উঠল। চাপা স্বরে চিৎকার করে বলল,
‘ কারণ, আপনি অন্যকারো সাথে জড়িয়ে গেছেন তা সহ্য করতে পারছিলাম না। কষ্ট হচ্ছিলো আমার। বুকে ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছিলো।’
শতাব্দ থমকে গেল। রাগটা নিমিষেই ধপ করে নিভে গেল । প্রিয় মুখের এই তিন বাক্য অদ্ভুত শান্তি দিচ্ছে তাকে। এই কয়েকদিনের অশান্তি, জ্বা*লাপো*ড়া। পলকেই উধাও হয়ে গেল সব।
অনবরত কেঁদে যাচ্ছে প্রিয়। ভারী ভারী শ্বাস ফেলছে। শতাব্দ বড় নিশ্বাস টেনে এলোমেলো নিজেকে সামলে নিলো। প্রিয়’র হাত টেনে কাঠের চেয়ারটায় বসালো। হাত পা গুটিয়ে। ভয়ে কাচুমাচু হয়ে চেয়ারের সাথে লেগে বসে আছে প্রিয়। জোসনা রাত। চাঁদের আলো এসে মুখ ছুঁইছে তার। ফোলা চোখমুখ ভীষণ মায়াবী দেখাচ্ছে। চোখের পানিতে গাল ভিজে। হাত পা এখনো কাঁপছে। শীতল চাহনিতে সব ঠাহর করল শতাব্দ। প্রিয়’র গা ঘেঁষে বসে বুকে টানতে চাইলে। হাত ঠেকিয়ে বাঁধা দিলো প্রিয়। শুনলো না শতাব্দ। হেঁচকা টান দিয়ে বুকে এনে ফেলল। কোমর চেপে মিশিয়ে নিলো। ফোঁসফোঁস শ্বাস ফেলছে প্রিয়। চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছে তখনো। ডুকরে কাঁদছে। হেঁচকি উঠে গেল। ছাড়া পাবার জন্য হাতপা ছুঁ*ড়াছুঁড়ি করল। ছাড়লো না শতাব্দ। আরো চেপে ধরল। প্রিয়’র মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করল। খানিক সময় নিয়ে প্রিয়’র হাত পা ছুঁড়াছুঁড়ি থামলো। শান্ত হলো। একটু চুপ থেকে। শতাব্দ মৃদু শান্ত কন্ঠে বলল,
‘ ওই মেয়ের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। নামও জানিনা। কেনটিনে সবার একবার প্রপোজ করেছিল রিজেক্ট করছি। কোথা থেকে জানো আইডি জোগাড় করে ম্যাসেজ দিয়েছিল সেদিন। নির্বাচন, ক্লাস চারদিকের ঝামেলায় ব্যস্ত থাকায় ম্যাসেজ চেক করা হয়নি আর। তুমি চাইলে কনভারসেশন চেক করতে পারো।’
বুক থেকে মাথা উঁচু করে প্রিয় তাকালো একবার। অভিমানী কন্ঠের সরল জিজ্ঞাসা তার,
‘ আমার কাছে বলছেন কেন? আমি কে হই আপনার?’
শতাব্দ প্রিয়’র মুখপানে সরু দৃষ্টিতে চাইল।ঠোঁট মেলে মৃদু হাসল। স্নিগ্ধ শীতল সুরে বলল,
‘ কি শুনতে চাইছ? প্রেমিকা!’
কপাল কুঁচকে চাইল প্রিয়। শতাব্দ আবার বলল,
‘ উহু, তুমি আমার প্রেমিকা নও। তুমি আমার যন্ত্রণা। বুকে বিঁধে থাকা নিবিড় যন্ত্রণা। যা ক্ষণে ক্ষণে শুধু পো*ড়ায়। ভীষণরকম জ্বা*লায়।’
‘ বেনামি সম্পর্কে এ কেমন অধিকার। কে হই আপনার?’
প্রিয়’র কন্ঠে ব্যকুলতা। বেনামি সম্পর্কটার নাম বুনতে অধির আকুলতা, উৎকণ্ঠা!
প্রিয়’র অস্থির এলোমেলো চোখজোড়ার উন্মাদনা অস্থিরতা ঠাহর করল শতাব্দ। নিমিষ চেয়ে রইল সেই নিদারুণ হরিণটানা আঁখিতে। সরল চাহনি মেয়েটার। নাকমুখ ছেয়ে আছে র*ক্তিম আভায়। ঠোঁট জোড়া কাঁপছে তিরতির।
অদ্ভুত এক সম্মোহনী মাথা চেপে ধরল। দৃষ্টিতে ঘোর লাগলো। আচমকা ঝুঁকে পড়লো। প্রিয়’র চিবুক উঁচিয়ে ভ*য়ঙ্কর এক কাজ করল। চোখমুখে এলোপাতাড়ি গাঢ় চুমু দিতে লাগলো। ঘাবড়ে গেল প্রিয়। ওড়নার কোন চেপে শক্ত হয়ে রইল। প্রচন্ড অনুভূতিতে কাঁপছে সে। শিরশির করছে গাঁ। নিশ্বাসের প্রবল উঠানামা। চোখ খিঁচে বন্ধ করে রেখেছে। মিনিট পাঁচেক পর থামলো শতাব্দ। ঠোঁটে আলতো চুমু দিয়ে, কপালে কপাল ঠেকিয়ে বসলো। তার ভারী ভারী তপ্ত নিশ্বাস। প্রিয়’র মুখ ছুঁইছে বারবার। নিশ্বাসে নিশ্বাসে কেঁপে উঠছে প্রিয়। ভ*য়ঙ্কর এই অনুভূতিতে মিয়িয়ে যাচ্ছে সে। আচমকা শতাব্দের গভীর নেশাতুর আওয়াজ ভেসে এলো। ফিসফিসিয়ে সে বলল,
‘ ভালোবাসি প্রিয়।’
কেঁপে উঠল প্রিয়। এই দুইটা শব্দ তার সর্বাঙ্গে কম্পন তুলে দিয়েছে। মন, মস্তিষ্ক আত্মা নাড়িয়ে দিয়েছে। হ্ঠাৎ অজানা কোন কারণে চোখের কোন ভরে এলো। অশ্রু বনে টপ করে গাল গড়ালো। কেন এই অশ্রু? অতি সুখের কারণে!
হিমেল হাওয়ায় ভেসে এলো ফিসফিস আওয়াজ। অত্যন্ত নিবিড় আর বুক ধা*রালো শতাব্দের সেই সুর,
‘ আমার তোমাকে একদিন দুইদিনের জন্য না অনন্তকালের জন্য চাই প্রিয়। এতটা চাই, যতটা চাইলে তোমার শরীরের এই মিষ্টি ঘ্রাণে মিশে থাকা যায়!’
লজ্জা পেল প্রিয়। শতাব্দের বুকে মুখ লুকালো। শক্ত করে চোখমুখ বুজে নিলো। ফিসফিসিয়ে মনেমনে বলল,
‘ আমার আপনাকে অতটা চাই, যতটা পেলে আপনি শুধু আমার থাকবেন। শুধুই আমার’
আকাশের চাঁদ তারাগুলো কি এখনো তাদের দিক চেয়ে? নাকি লজ্জায় তারই মত মেঘেদের আড়ালে মুখ লুকালো। প্রিয় পিটপিট দৃষ্টি মেলে আকাশ পানে চাইল। এই চাঁদ, এই রাত শুধুই তাদের। আর তাদের ভালোবাসার।

বর্তমান
>___________<' ভালোবাসি প্রিয়' আঁতকে উঠল প্রিয়। নিশ্বাসের উঠানামা প্রচন্ড। ভয়ে শরীর কাঁপছে। হাতপা থরথর করছে। ঝিমঝিম করছে সব। মাথাটা চক্কর দিলো। হ্ঠাৎ চোখের সামনে সব অন্ধকার হতে লাগলো। প্রিয়কে ঢলে পড়তে দেখে। অরণ্য তড়িঘড়ি উঠে দাঁড়ালো। তাড়াতাড়ি করে প্রিয়কে যেয়ে ধরলো। গাছের নিচে বসিয়ে। একটু সময় নিয়ে জিজ্ঞেস করল, ' তুমি ঠিক আছো?' হাত মুঠিবদ্ধ। চোখ বুজে উপর নিচ আলতো মাথা ঝাকাল প্রিয়। কথা বলতে ইচ্ছে করছে না তার। মাথাটা প্রচন্ড ব্যথা করছে। গা গুলিয়ে আসছে। অরণ্য আবার জিজ্ঞেস করল, ' পানি খাবে? আনবো?' প্রিয় আবারো মাথা ঝাকাল। অরণ্য পাশের দোকান থেকে পানি এনে খুলে হাতে দিলো। পুরোটা পানি শেষ করে খানিক চুপ থেকে প্রিয় বলল, ' আপনি আমার ভাইয়ের বন্ধু... অরণ্য কথার ধাঁচ ধরতে পেরে থামিয়ে দিলো। বলল ' তুমি অসুস্থ। ওসব কথা থাকনা এখন প্রিয়।' ' সবটা এখনি ক্লিয়ার করা প্রয়োজন। আমি চাইনা কোন মিথ্যা আশা পুষে থাকেন আপনি। অরণ্য ভাই ছোট থেকে আপনার আমাদের বাসায় আসা যাওয়া। সবসময় বড় ভাইয়ের চোখে দেখে এসেছি। ভাইয়ের মতই জেনেছি। মনের ভুলেও আপনার সম্পর্কে কখনো এমন ধারণা আসেনি আমার। আর তাছাড়া... এতটুকু বলে থামলো প্রিয়। নিশ্বাস আটকে আটকে আসছে। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। একটু সময় নিয়ে বলল আবার, ' আর তাছাড়া আমার পক্ষে কাউকে ভালোবাসা সম্ভব না। বিয়ে প্রেম ভালোবাসা আবেগে জড়ানো মত ইচ্ছা আমার নেই। এসব খানিকে অপ্রয়োজনীয় মোহ। মোহ কেটে গেলে সব পরিষ্কার হয়ে যায়। ঝকঝকে হয়ে যায় চোখ।' প্রিয়'র চোখমুখে বিরক্তির তিক্ত আভা। অরণ্য মনযোগ দিয়ে শুনল। কাতর কন্ঠে আবেদন করল, ' তোমার অতীতে কি ঘটেছে আমি জানি না। জানতে চাইও না। শুধু তোমাকে চাই। একটা সুযোগ কি দেওয়া যায় না প্রিয়?' প্রিয় তড়িঘড়ি উত্তর দিলো, ' না যায়না। এসব প্রেম বিয়ে সংসার করার মত ফালতু সময় আমার নেই। এসব তিক্ত অসহ্য বাজে জিনিস!' হতাশ শ্বাস ফেলল। প্রিয়'র চোখেমুখে স্পষ্ট ভয়। তবুও মেয়েটা তা ছাপানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। তিক্ত কথার বুলিতে ভেতরের ভয়টা ঢাকতে চাইছে। অরণ্য বলল, ' শুনলাম প্রভার বয়ফ্রেন্ডের ভাইয়ের জন্য তোমার হাত চাইছে। যদি বিয়েই করো তাহলে আমাকে করতে সমস্যা কোথায়? আগামীকাল তোমার হাত চাইলে বাবাকে তোমাদের বাড়িতে পাঠাবো।' ক্ষেপে উঠল প্রিয়। ক্ষিপ্ত কন্ঠেই বলল, ' সোজা কথা বুঝতে পারছেনা না আপনি? আমি বিয়ে করবো না। না আপনাকে, না অন্যকাউকে। এসব প্রেম বিয়ে আমার জন্য নয়। আজকের পর আর কোনদিন আমাকে ফোন করবেন না।' বলেই কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে উঠে দাঁড়ালো। বড় বড় ধাপ ফেলে জায়গা ত্যাগ করল। খানিক সামনে এসেই হাঁপিয়ে গেল। বড় গাছ্টার নিচে বসে। বড়বড় শ্বাস ফেলল। প্রচন্ড ক্লান্ত লাগছে। মাথা ঝিমঝিমানো আরো বাড়ছে। শরীরে শক্তি পাচ্ছেনা কোন। ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে ইরার নাম্বারে ফোন করল। দুবার বাজতেই অপর পাশ থেকে ফোন তুলল। বলল, ' হ্যাঁ প্রিয় বল।' ' তুই কোথায়? বাড়িতে?' ' হ্যাঁ বাড়িতেই আছি। কেন? কি হয়েছে? তুই কোথায় বলতো!এভাবে হাঁপাচ্ছিস কেন? ' শরীর খারাপ লাগছে। একা বাড়ি যেতে পাড়বো না বোধহয়। একটু আসবি!' প্রিয়'র করুণ আকুতি। ' তুই কোথায়?' ' তোর বাড়ির পাশে লেকের পাড়ে।' ' আচ্ছা, আমি পাঁচ মিনিটে আসছি।' পাঁচ মিনিটের ইরা এসে পৌঁছালো। তাড়াতাড়ি রিকশা ডেকে প্রিয়কে তুলল। থরথর কাঁপছে প্রিয়। ঠান্ডা হাত পা। চোখমুখ ফ্যাকাসে। কেমন নেতিয়ে আছে মেয়েটা। আঁতকে জিজ্ঞেস করল ইরা, ' এখানে কি করছিলি? জানিস হুটহাট অসুস্থ হয়ে পড়িস। তবুও একা কেন বের হয়েছিস?' ইরার কাঁধে মাথা হেলিয়ে চোখ বুজে আছে প্রিয়। মিনমিনিয়ে বলল, ' অরণ্য ভাই ডেকেছিল।' ' তোর ভাইয়ের বন্ধু অরণ্য? কেন ডেকেছে?' ' প্রপোজ করতে।' ' তুই কি বললি? সবসময়ের মত 'না'! প্রিয় চুপ। ইরা আর কথা বাড়ালো না। রিকশা প্রিয় বাড়ির সামনে এসে থামলো। ভাড়া মিটিয়ে দুজন উপরে চলে গেল। দরজা খুলে মেয়েকে দেখে আমেনা বেগম হতভম্ব, ঘাবড়ে গেল। তড়িঘড়ি করে ঠাণ্ডা শরবত বানিয়ে আনলো। ফ্যাচ ফ্যাচ করে কেঁদে উঠল। প্রিয় বিরক্ত হলো বলল, ' মা মাথা ধরছে আমার। এটা এখন অস্বাভাবিক কিছুনা। প্রায়ই হয়। কান্না করোনা তো প্লিজ।' আমেনা বেগম থামলেন না। মুখে শাড়ির আঁচল চেপে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। খানিকক্ষণ প্রিয়'র পাশে বসে রইল ইরা। যাওয়ার আগে ইনভিটেশন কার্ড ধরিয়ে বলল, ' এমনিতেও বিকালে কার্ড নিয়ে তোদের বাড়িতে আসতাম। এখন যখন আসছিলাম তখন ঝটপট ব্যাগে ঢুকিয়ে নিয়ে এসেছিলাম। আগামী বুধবার আমার বোনের মেয়ে অদ্রিজার জন্মদিন। তোকে কিন্তু অবশ্যই আসতে হবে।' মলিন হাসলো প্রিয়। হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়াল। ধীর আওয়াজে বলল, ' আসবো' মুচকি হেসে বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে গেল ইরা। প্রিয় বালিশে গা এলিয়ে আরাম করে বসলো। কার্ডটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখলো। বেবি পিংক আর হোয়াইট কম্বিনেশনে ভীষণ সুন্দর কার্ড। প্রাচুর্য বাড়াতে উপরে সোনালী রঙের আবরনে ডেকেছে। কভার খুলে ভেতরের কার্ডটা বের করল প্রিয়। কার্ডে চোখ বুলাতে বুলাতে হ্ঠাৎ অভ্যর্থনায় চোখ আটকালো। ' Dr. rikta & Dr.khan' গোটা গোটা অক্ষরে লিখা। কার্ডে Dr. না লাগিয়ে শুধু তাদের নাম লিখলেও লোকেদের চিনতে বোধহয় অসুবিধা হতো না। প্রিয়'র হ্ঠাৎ মনে হলো, এই সমাজ ঠুনকো। এই সমাজের মানুষ তাদের অর্জন লোক সমাজে জাহির করতে পছন্দ করে খুব। Dr. khan নামটা দেখে প্রিয়'র রাগ হলো প্রচন্ড। মাথা যন্ত্রণাটা আবারো নাড়া দিয়ে উঠল। ঝাপসা হয়ে এলো চোখ। ডুব দিলো অনেকবছর আগের সেই অতিতে।অতীত >_______< চলবে.........ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই সবার মতামত জানাবেন।টাইপোগ্রাফি : Maksuda Ratna আপু🌺🥀

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here