বিষাক্ত বাঁধন পর্ব -২৪+২৫

#বিষাক্ত_বাঁধন
#অনামিকা_জাহান_জাফরিন।
#পর্ব_২৪

মাঝে মাঝে আমরা এমন সব কাজ করে ফেলি যা আমাদের ব্যক্তিত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

মানে হঠাৎ এমন সব কাজ করে ফেলি যার সম্পর্কে পরবর্তীতে মনে পড়লে দারুণ লজ্জায় জর্জরিত হই নিজেই।এটা সবার ক্ষেত্রে হতে পারে ।

যেমন এখন আরিয়ান এর করেছে।যে আরিয়ান কিনা প্রতিশোধ নেশায় বুঁদ ছিল।যার জীবনে বিয়ে ,স্ত্রী ,সংসার এসব নিছকই স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু ছিল না তার জন্য কারণ তাকে তার উদ্দেশ্য হাসিল করতে যে হতো তাই।তবে তার ভাই আর রিমা অবশ্য বহুবার চেষ্টা করেছে আরিয়ান এর বিয়ে দেওয়ার তবে বরাবরই তারা আরিয়ান এর জেদের কাছে হার মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে ।তবে সৃষ্টিকর্তার হয়তো এটাই ইচ্ছে ছিল তাইতো অপ্রত্যাশিত ভাবে তুসির সাথে তার বিয়ে হয়ে গেল।

নিজের পাশ ফিরে তাকিয়ে ফের মনে মনে বলে উঠল,সবই আল্লাহর ইচ্ছা।তবে আরিয়ান খুশি ,ভিষণ খুশি ।এই মায়াভরা মুখের অধিকারীণী তার বৌ !তার অর্ধাঙ্গী!তার স্ত্রী!সত্যি সে ভাগ্যবান এমন নিষ্পাপ হৃদয়ের কন্যা যে তার স্ত্রী হয়েছে এটাই কম কিসের?একে ছাড়া গোটা ঘরটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল ।তুসিকে এইখানে নিয়ে আসার কথা মনে পড়লেই তার পুরো শরীর আশ্বস্তিতে ছেয়ে যায়। তার জীবনে কখনো এমন পরিস্থিতিতে সে পড়েনি আর না কখনো তাকে কেও বিব্রত অবস্থায় ফেলতে পেরেছে।সব সময় সে ছিল গম্ভীর বুদ্ধিমান এবং ভিষণ চতুর তাকে কেও কখনো অশ্বস্তি বা বিব্রত অবস্থায় ফেলতে পারেনি তবে আজকের দিনটি ভিষণ অস্বস্তিকর

কিছুক্ষণ আগে,,,,,,,,

আরিয়ান সারা ঘরে ঘুরে ঘুরে তুসিকে খুঁজছে তবে সে বুঝতে পারছেনা এই ভিতু মেয়েটা কীভাবে সাহস করল একা একা থাকার জন্য !সব গুলো রুম চেক করছে তবে পাচ্ছে না কোথাও কোথায় থাকতে পারে সে?সামনের রুমটা তাসিন আর তাহিয়ার তাই সেটা আর চেক করলোনা।নিজের ছোট ভাইয়ের ঘরে উঁকি দেওয়া বড্ড লজ্জাজনক আর তাছাড়া তাসিন এখন আর সিঙ্গেল নেই তার বৌ আছে।

শেষে একটাই ঘর খালি ছিল কোনাতে আরিয়ান সেটাতে গেলো আর কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি দেখতে পেয়ে তার ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠল ।সে দেখলো তুসি কাকে যেন জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে মুখটা বারান্দার আলোতে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে না তবে পাশের জন মাথা থেকে পা পর্যন্ত কাঁথা টেনে রেখেছে তাই বোঝা মুশকিল সে কে? ছেলে না মেয়ে ?

আরিয়ান এর বুক ধক করে উঠল, সে বিরবির করে বলল ,ত,,,তুসি কাকে জ,,জড়িয়ে ধরে আছে?স,,সে কি কোনো ছেলে?রাগ ওঠে গেলো ওর হঠাৎ ওরই ঘরে তার বৌকে সাথে করে ঘুমানোর এমন সাহস কে করবে সে বুঝলোনা এটা আদও অসম্ভব আরিয়ান এর অবুঝ মন সেটা বুঝলোনা তার মাথায় একটাই কথা ঘুরপাক খাচ্ছে “তুসি কি তার তখনকার ব্যবহারের জন্য এমন অন্য কারো সাথে থাকছে”

“মানুষের রাগ উঠলে সে যে তার সব জ্ঞান বুদ্ধি লোপ পায়” এই কথাটি এখন আরিয়ান এর ক্ষেত্রে শতভাগ প্রযোজ্য ।সে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে বলে উঠল ,তোর কত বড় কলিজা আমারই ঘরে আমার বৌ এর সাথে শুয়ে আছিস? সাথে দুচারটা গালিও দিলো আর বলল, আমি তোর কলিজা ছিঁড়ে যদি কুকুর কে না খাইয়েছি তো আমার নাম ও আরিয়ান নয় এই বলে কাথা সরিয়ে সেই ব্যক্তির হাত ধরে বিছানা থেকে ওঠাতেই হতভম্ব হয়ে গেলো, কারণ তার সামনে দাঁড়িনো ব্যক্তিটি হচ্ছে তাহিয়া আর সে তুসির বান্ধবী সেটা খাওয়ার টেবিলেই শুনেছিল আর সে কিনা কি ভেবে ফেলেছে আর শেষে তাহিয়াকে কি কথা গুলো বলেছে সেটা মনে পড়তেই অশ্বস্তিতে পুরো গা ছেয়ে যায় ।সাথে সাথে তাহিয়ার হাত ছেড়ে দেয়।

অন্যদিকে তাহিয়াতো পুরোই ভেবাচেকা খেয়ে গেলো একেতো তার কাঁচা ঘুম ভেঙ্গে গেলো তার ওপর আরিয়ান কে দেখে আরো অবাক হলো। কিন্তু তাহিয়া এটা বুঝলোনা তাকে আরিয়ান এইভাবে কেন তুলল? প্রশ্নাত্বক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল আরিয়ান এর দিকে যেন মুখের ভাষায় হারিয়ে ফেলল সে ।

আরিয়ান ঘর ছেড়ে বের হয়ে গেল মুহুর্তেই তার আর সে ঘরে থাকার একবিন্দু ও ইচ্ছে নেই ।এরপর সোজা তাসিন এয ঘরে গেলো তাসিন ঘুমিয়ে ছিল আরিয়ান ওকে ডাকতেই সাথে সাথে তাসিন ওঠে গেলো কারণ তার কাঁচা ঘুম আর আরিয়ান এর ডাকার তীব্রতা অনেক বেশি ছিল।

তাসিন চোখ ডলে বলল,ভাই এগ্লা কোন কারবার আমার এত সাধের ঘুম আহারে কত কষ্টেই না এসেছিল ঘুমটা সেটা তুমি ভাইঙ্গা দিলা কেন?

আরিয়ান তাসিন কে মাথায় একটা চাটি ভেরে বলল,তোর ফালতু বকবকের শোনার জন্য আমি এখানে আসিনি যাস্ট দুইমিনিটের মধ্যে নিজের বৌকে ঘরে নিয়ে আসবি আর ওয়ার্ন করে দিবি যাতে আর কখনো তার বান্ধবীর সাথে থাকে।নিজের বরের সাথে থাকতে হয় বিয়র পর ।এগুলো ভালো করে বুঝিয়ে দিবি নেক্স টাইম যাতে এমন না হয় ।

তাসিন সব বুঝতে পেরে মিটমিট করে হেসে আরিয়ান কে জালানোর উদ্দেশ্যে বলল, ভাই তুমি বিয়ার পর এমন বৌ পাগল হয়ে যাবা এইটা ভাবাও যায় !আচ্ছা সেতো বিপদে পড়ে এসেছিল তার মধ্যে বিয়ে সংসার আর আমার ভাইটাকে এমন বৌ পাগল বানইয়া দিল।

আরিয়ান ধমক দিয়ে বলল, চুপ কর ।আমি বুঝিনা আমার সাথে কথা বলার সময় তোর ভাষার এমন অবস্থা কেন হয় ডিসগাস্টিং ।

তাসিন আবার বলল, ভাই তুমি বুঝি একদিনও ভাবিকে ছাড়া থাকতে পারবেনা??আরিয়ান গলা খাকারি দিয়ে বলল, ত,,তেমন কিছু না আর তা ছাড়া ভাবি জানলে ঝামেলা হবে।

তাসিন বলল, আরে কিছু হবে না ভাবি আজ সেই ঘুম দিয়েছ আমি নেকবার ডেকেছিলাম কিন্তু দেখলাম রা – শব্দ নেই।

আরিয়ান বলল, তাসিন তোকে দেওয়া দুমিনিটের এক মিনিট তোর ফালতু বকবকে চলে গিয়েছে আর একমিনিট এর মধ্যে নিজের বৌকে নিয়ে আসবি ফাস্ট ।।।

তাসিন এটা শোনার সাথে বেরিয়ে গেল নেক মজা করে ফেলেছে এখন সময় মতো বৌকে না আনলে তার খবর করবে আরিয়ান তা ভালো করেই জানে ।তাসিন একটা কথা ভেবে অবাক হয় বরাবর আরিয়ান সময়ের কথা এত পারফেক্ট ভাবে কীভাবে মনে থাকে।এর জন্য তাকে অবশ্যই তাকে অস্কার দেওয়া উচিত।দুনিয়ার সব চেয়ে সময়ের বেলায় সচেতন কেবল শুধু তার ভাই-ই বোধ হয় ।

তখন তাসিন আরিয়ান এর কথা মতো তাই করলো এরপর আরিয়ান তুসিকে নিয়ে চলে আসলো রুমে এনে শুইয়ে দিল।তবে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো এতকিছু ঘটে গেল কিন্তু তুসির ঘুমের কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি সে এখনো একি ভাবে ঘুমিয়ে আছে। তবে এতে তারই ভালো না হয় সে তুসির সামনে আরো লজ্জায় পরতো।।।

সে দিনের পর কিছুদিন কেটে যায় এভাবে আরিয়ান আগের থেকে ও বেশি তুসির কেয়ার করে আর তুসি সব নিরবে মেনে নেয় ।তবে আরিয়ান কখনো আর খারাপ আচরণ করেনি ওর সাথে ।আরিয়ান এর মধ্যে অনেক কিছুর রহস্য বের করেছে।

ইদানিং সে বেশ চুপচাপ থাকে দেখে মনে হয় কি নিয়ে যেন সারাক্ষণ চিন্তা করে।তবে তুসি কিছু জিজ্ঞাস করে না।

আরিয়ান এর মধ্যে অনেক কিছু জানতে পেরেছে ।
সেসব নিয়ে বড্ড চিন্তিত সে কি করা উচিত বুঝতে পারছেনা সে।তবে যাই করবে সে অনেক ভেবে চিন্তে করবে।

অন্যদিকে আশরাফ অপেক্ষার প্রহর গুনছে কখন তার কলিজাকে তার কাছে ফিরিয়ে দেবে সেই লোক?অপেক্ষার প্রহর কি আরো সইতে হবে? এই অপেক্ষার এক একটি প্রহর কি তার জন্য #বিষাক্ত_বাঁধন হয়ে যাবে নাকি ???
চলবে,,,,,#বিষাক্ত_বাঁধন
#অনামিকা_জাহান_জাফরিন।
#পর্ব _২৫

হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে ঘরে ঢুকতেই থমকে গেল আরিয়ান মনের ভেতর একটা কথা জোরে জোরে বাজছে ,কাকে খাওয়াতে নিয়ে এসেছে সে খাবার ?সেতো নেই !তার অনুপস্থিতির আজ সপ্তম দিন।তবুও আরিয়ান এর অফিস থেকে ফিরে তার খাবার নিয়ে খাইয়ে দেওয়া যেনো ভুলেনি। একবার দুবার নয়, আরিয়ান এর সাথে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে বহুবার ।

যে মানুষটাকে রাতে ঘুমোতে দেখতো অফিস থেকে ফিরে ক্লান্ত শরীর নিয়ে কখনো ফ্রেশ হয়ে আবার কখনো না হয়ে যার জন্য খাবার নিয়ে রুমে ঢুকত যাকে নিজ হাতে খাইয়ে দিত এসব সে কি করে ভুলবে। ভুলতে পারছেইবা কই সেই তো খাবার নিয়ে হাজির হয়ে যায় তার পর এসে দেখে নেই সে নেই! পাখি তার নিজের নীড়ে ফিরে গেছে আর তাকে দিয়ে গেছে কিছু অভুলনীয় স্মৃতি যেটা তাকে একটা একটা বাঁধনে আটকে রেখেছে আর এই বাঁধন যেই সেই বাঁধন না এযে কত বড় #বিষাক্ত_বাঁধন আরিয়ান সেটা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে আর এই বাঁধন থেকে যে ও কখনো ছুড়তে পারবে না তা এই কয়েক দিন এ আরো গভীর ভাবে উপলব্ধি করেছে আরিয়ান। যেটা এই জন্মে তার পক্ষে ভোলা সম্ভব নয় আর না সে ভুলতে চায়।

ওর প্রথম অনুভূতি প্রথম ভালোলাগা ভালোবাসা তাকে ও কখনো ভুলতে চায় না।তবে আজ পর্যন্ত কখনো এসব অনুভূতি প্রকাশ করা হয় নি তার সামনে ।সে ইচ্ছে করেই করেনি ।এর জন্য নিজে যে কম কষ্ট পেয়েছে তা নয় ।একজন মানুষ যাকে আপনি ভালোবাসেন তার কাছ থেকে নিজের অনুভূতি লুকানো খুব একটা সহজ কাজ নয়।আর সে যদি আপনায সহধর্মিনী হয় তাহলেতো সেটা আরো কষ্টকর।কেননা যার সাথে দিবা- রজনী চোখাচোখি হবে ।যার সংস্পর্শে আসবেন যার গায়ের গন্ধ আপনার নাকে বাড়ি খাবে তখন তখন কি আপনার মন চাইবেনা তার কাছ থেকে একটু স্পর্শ পেতে?তাকে হৃদয়ের অনুভূতি জানান দিতে ।তার হাতে হাতে রেখে জোছনা বিলাস করতে।

করবে!একশো বার করবে।মানুষ মাত্রই ভালোবাসার কাঙ্গাল।

আরিয়ান এসব ভেবে দীর্ঘশ্বাস নিল নাহ আজকেও আর তার খাবার গলা দিয়ে নামবেনা ।প্লেট টা রেখে খাটের যে সাহডে তুসি থাকতো সেই পাশে হাত বুলালো তারপর সেথায় শুয়ে নাক টেনে তুসির গায়ের গন্ধ নেওয়ার চেষ্টা করল কি আশ্চর্য ব্যাপার এই গন্ধটাও সময়ের সাথে সাথে মিলায়ে বাতাসে মিলিয়ে যেতে শুরু করেছে?এইভাবে কি তুসি ও ওর জীবন থেকে চিরতরে মিলিয়ে যাবে???

🌸🌸🌸

রুকসানা বেগম মেয়ের জন্য খাবার নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করে দেখে তার মেয়ে বারান্দা বসে আক্শের দিকে নিরব হয়ে তাকিয়ে আছে।সেটা দেখে তার বুক ফেটে কান্না এলো মাত্র কয়েকদিন এর ব্যবধানে তার হাসিখুশি বোকা চঞ্চল মেয়েটা এমন মনমরা হয়ে গেলো।কোন পাপের ফল তাকে দিচ্ছে আল্লাহ সেটা জানেনা সে।মেয়ে কে তার স্বামী ফিরিয়ে এপেছে যে সপ্তাহখানেক হবে।তবে এতদিন কোথায় ছিল?কীভাবে ছিল ?কারা নিয়েগিয়েছিল তাকে তার সম্পর্কে তুসিকে যতবার জিজ্ঞেস করেছে তুসি সবসময় ছিল নিরব।কিছুতে সে সম্পর্কে কোনো কথা তার থেকে বের করতে পারেনি ।আর তারাও জোরাজুরি করেনি মেয়ে কে ফিরে পেয়েছে এটাই অনেক।তবে তার খুব কৌতুহল হচ্ছে জানতে যে কী এমন হলো তার চঞ্চল মেয়েটা এমন শান্ত হয়ে গেলো ।যে মেয়ে খিদে সহ্য করতে পারতো না খিদে পেলে পুরো বাড়ি মাথায় তুলে পেলত তাকে কিনা আজকাল জোর করে খাওয়ানো লাগে।আচ্ছা তার ফুলের মতো নরম মনের মেয়েটার সাথে খারাপ কিছু ঘটেনি তো!!!

রুকসানা বেগম নিজেকে সামলে এগিয়ে গেলেন মেয়ের কাছে গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে আদুরে গলায় বুলি আওড়ালেন,আমার মামুনির খিদে পায় নি?আমি তো আমার রাজকুমারীর জন্য তার পছন্দের খাবার নিয়ে এসেছি।

তুসি হাসার চেষ্টা করল।তারপর বলল চলো আম্মু ঘরে চলো খাবো।

মেয়ের মুখে খাবার গুঁজে দিতে দিতে বললেন,মন খারাপ কেন মামুনি?
তুসি খাবার চিবোতে চিবোতে বললেন,কই নাতো কিছুনা।

রুকসানা সেসব বাদ দিয়ে বললেন ,আজ আমাদের একটা দাওয়াত আছে ওখানে যাবো।তোমার বাবার এক বন্ধুর মেয়ের বিয়ে। আমাদের বিপদ আপদে পাশে ছিলো গত কয়েকবছর না গেলে খারাপ দেখায় পরো ফ্যামিলি সহ যেতে বারবার রিকোয়েস্ট করেছে।তুমি ও যাবে ।

তুসির আসলে ইচ্ছা নেই কোথাও যাওয়ার মায়ের কথার উপর নাও করতে পারছেনা। বলল আচ্ছা যাবো।
উমম্ মা আর খাবোনা।

তুসির কথার প্রেক্ষিতে ওর মা বলল, এটুকু খাবারে পেট ভরবেনা মা আরো খাও।

তুসি নাকচ করে বলল, আম্মু প্লিজ আর না।

রুকসানা আর জোর করলেননা।চলে গেলো।
তুসির কাছে কিছুই ভালো লাগছেনা।সে কি ওই জায়গা কে মিস করছে!আশ্চর্য এমন কথা মাথায় আসছে কেন।তুসি এখনো সেই দিন ভুলতে পারেনি ।

সেদিন,,,,,,
দুপুরে আরিয়ান তুসিকে নিজ হাতে খাইয়ে দিয়েছিল আর অদ্ভুতভাবে অনেকক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে ছিল।আরিয়ান এর আচরণ সন্দেহজনক লাগলেও কিছু বলেনি তুসি। হঠাৎ আরিয়ান এভন কাজ করলো তুসি অবাকই হলো আরিয়ান ওকে জড়িয়ে ধরল তুসি নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে আরিয়ান কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, প,,প্লিজ শান্ত হয়ে থাকো কিছুক্ষণ ট্রাস্ট মি আমি খারাপ কিছু করবোনা।

আরিয়ান ঠিকভাবে কথাই বলতে পারছে মনে হচ্ছে অনেক দিনের তৃষ্ণা যেন মিটিয়ে নিচ্ছে।

তুসি শান্ত হয়ে বসে ছিল মূলত সে আরিয়ান এর কাতর কন্ঠকে অগ্রাহ্য করতে পারেনি।মায়া হচ্ছিল।মানুষটা খারাপ হলেও তার অনেক যত্ন নেয় ।তার বাবা মার পরে কেও এইভাবে যত্ন নিচ্ছে ওর।ওকে খাইয়ে দেয় ।আর খারাপ ব্যবহার করেনি তেমন শুধু সেদিনের আচরণটা তুসির মনে দাগ কেটে আছে,,,,,,
এরই মাঝে আরিয়ান ওকে ছেড়ে দিয়ে বাইরে চলে গেল,কেন গেল সে কি কিছু লুকাতে বাইরে চলে গেলো!!হয়তো,,,,
আবার কিছুক্ষণ পরে ফিরে এলো আর তুসি কে রেডি হতে বলল, ওর বাবা নিতে আসবে।

তবে তুসির কাছ থেকে কিছু কথার শর্ত নিয়ে নিলো ও ।তুসি ও মেনে নিলো।এছাড়া আর কি উপায়?
অতঃপর তাকে একটা ঠিকানায় নিয়ে গিয়ে আরিয়ান আড়ালে ছিল আশরাফ খান মেয়েকে পেতেই জড়িয়ে কাঁদলেন কিছুক্ষণ সাথে তুসি ও।
আরিয়ান তখনো যায়নি।আশরাফ মেয়ে কে নিয়ে চলে গেলেও গেলোনা আরিয়ান তায কাছে খালি খালি লাগছে মনে হচ্ছে ওর সব থেকে দামি সম্পদ ও হারিয়ে ফেলছে।

তুসি সেদিন বাসায় আসার পর রুকসানা বেগমের সেকি কান্না ।মেয়ে কে পেয়ে আল্লাহর কাছে লাখোকোটি শুকরিয়া করলেন।

বর্তমানে,,,,
রুকসানা ফের তুসিকে তাগাত দিয়ে রেডি হতে বলে চলে গেলেন। তুসি ও তাই করলো।

কিছুক্ষণ এর মধ্যে সেই জায়গায় পৌছে গেল।তুসি সবুজ রঙের একটা গাউন পরেছৃ আর ওরনাটা মাথায় পেঁচিয়ে রেখেছে ।তাতে যেন ওর সৌন্দর্য আরো বেড়ে গেছে।একদম কোনো রাজকমারীর মতো লাগছে। “পুতুল রাজকমারী”ভ। বিয়ে শুরু হবে কিছুক্ষণ এর মধ্যে। আশরাফ এর বন্ধু আসলেন তুসিকে দেখে বেশ কথা বললেন। লোকটা তার ছেলের সাথে আশরাফ খান এর পরিচয় করিয়ে দিলেন।ছেলেটি বেশ হ্যান্ডসাম আর লম্বাও বটে।পরে সেই ছেলেটি তুসির সাথে কথা বলতে লাগল।।তবে তুসি কথা বলতে চাইছে না।তার বিরক্ত লাগছে সেই কখন থেকে লোকটা তার দিকে তাকিয়ে আছে।
শেষে সে তুসিকে ডান্স এর জন্য অফার করে তুসি মানা করে তবে ওই ছেলেটা শুনেনা ওর হাত ধরে ডান্স প্লোরে নিয়ে আসে আর জোর করে ডান্স খরতে থাকে।

ওইদিকে এইসব দেখে কেও একজন নিজের রাগ কনট্রোল করতে পারছেনা।পাশের দেওয়ালে ঘুষি মারে।আর সহ্য করতে পারেনা নাহ এখন কিছু করতে হবে না হয়,,,,,,,
চলবে?

ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।
ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন ।

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here