বিষাক্ত বাঁধন পর্ব -৩৪ ও শেষ

#বিষাক্ত_বাঁধন
#অনামিকা_জাহান_জাফরিন ।
#পর্ব_৩৪

কিরে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলো এখনো ছাদে বসে আছিস কেনো?তুই তো অনেক ভয় পেতিস সন্ধ্যা বেলা ছাদে আসতে আজ কি হলো?রুকসানা বেগম আশ্চর্য হয়ে তুসি কে জিজ্ঞাস করলো।

তুসি তেমন কিছু বললোনা বসা থেকে উঠে বলল, নিচে চলো আম্মু। এমনি বসে ছিলাম ।

রুকসানা বেগম আর কিছু বলার সুযোগ ফেলেন না।
বিকাল বেলা হঠাৎ কিছু না জানিয়ে তুসি তাদের বাড়ি আসে।সাথে ছিল তাহিয়া।রুকসানা অবাক হয়ে মনে মনে ভাবলো এই সময়ে ও আসলো আর কিছু ত ও জানায় ও নি!!তারপরও সেসব না ভেবে মেয়ে আসাতে অনেক খুশি হলো।

আসার পর থেকে তুসির মন ভিষণ রকমের খারাপ সেটা উনি অনুমান করতে পেরেছেন।
ছাদে বসে ছিল একা একা তাই আর না পেরে ডাকতে এসেছেন মেয়ে কে।কিন্তু ও তো কিছুই বলছেনা।নিশ্চয়ই কিছু ঝামেলা হয়েছে জামাইয়ের সাথে। তা না হলে তো ওকে একা আসতেই দেয় না আরিয়ান। সব সময় আরিয়ান ওর সাথে আসে।

রুকসানা বেগম এর ধারণাই সত্যি হলো আরিয়ান রাতে এসে হাজির ওদের বাড়িতে। তবে সে একা আসেনি সাথে তার মা রাইমা কে নিয়ে এসেছে।

রাইমাকে দেখে রুকসানা তো স্তব্ধ হয়ে গেলো পুরো ।তার প্রানপ্রিয় বোনের মতো বান্ধবী টা বেঁচে আছে।ভাবতেই খুশিতে কান্না করে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলেন।তুসি কান্নার শব্দে নিচে নেমে এলো আর দেখতে পেলো আরিয়ান এসেছে সাথে এক মহিলা আর তাকে জড়িয়ে ধরেই কাঁদছে রুকসানা।

রুকসানা বলল, তত,,তুই বেঁচে আছিস?আমি ঠিক দেখছি তো?
রাইমা চোখে জল নিয়ে মাথা নাড়ল। মুখ দিয়ে কথা ও বের হচ্ছে না ওর।নিজেকে অনেক ভাগ্যবতী মনে করলো ও না হলে এত কিছুর পর ও যে বেঁচে আছে সেটাই অনেক।আল্লাহর হয়তো এটাই ইচ্ছে ছিল।

রুকসানা কিছুটা শান্ত হয়ে আরিয়ান এর দিকে তাকিয়ে বলল,বাবা তুমি ওকে কোথায় পেয়েছো?

আরিয়ান বলল নরম কন্ঠে বলল,খুঁজে নিয়েছি মামনি অনেক কষ্টে।

আরিয়ান এর মামুনি ডাকে রুকসানা চমকে ওঠলেন।আগেতো কখনো আরিয়ান এমন নামে ডাকে নি।এই নামে তো ওকে একজনই ডাকতো।

রুকসানা কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, ক,,কে তুমি?

আরিয়ান এগিয়ে এসে বলল, আমি মামুনি তোমার বাবু।আমি কিন্তু কিছু ভুলিনি ছোটবেলার স্মৃতি।

রুকসানা বেগম আজ খুশিতে অত্মহারা হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে। আরিয়ান এবার তিনি চিনতে পেরেছেন।রাইমা চোখ দিয়ে আশ্বস্ত করল যে হ্যাঁ এটাই ওর ছেলে।রুকসানা আরিয়ান কে জড়িয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো কাঁদছে।আরিয়ান এর চোখে ও পানি তবে সেটা খুশির। ও এতোদিন নিজেকে এক প্রকার রুকসানা বেগম থেকে লুকিয়ে রেখেছে।ও ভেবে নিয়েছিল সব কিছু জেনে তারপর ও সবাইকে সবটা বলবে আর তার মায়ের শরীর ও ভালো হওয়ার অপেক্ষা করছিলো।আজ ভালো লাগছে ওর খুব।

এরপর আরিয়ান সবাইকে সব ঘটনা খুলে বলল, আর তাহির কে যে পুলিশে ধরে নিয়ে গিয়েছিল সেই কথা ও জানালো।আর এ ও জানালো যে এইসব ঘটনায় তার বাবা,আর আশরাফ আংকেল এর কোনো দোষ নেই। সবটা তাহিরেরই প্ল্যান ছিল।

🌸🌸🌸

খান বাড়িতে আজ খুশির আমেজ।দীর্ঘ কয়েক বছর পর নিজেদের আপনজন দের পেয়ে আবেগে আপ্লুত রুকসানা আর আশরাফ।
নানা ভাবে খাতির যত্ন করছেন রাইমা আর আরিয়ান এর।তুসি রাইমার সাথেই বসা।খাওয়ার পর্ব শেষ করে ওরা রুকসানার রুমে আড্ডা দিচ্ছে।রাইমা ভিষণ খুশি হয়েছে এটা জানতে পেরে যে আরিয়ান তুসিকে বিয়ে করেছে। তবে ওর প্রতিশোধ নেওয়ার ব্যাপারে সবার থেকে ক্ষমা চাইলেন তিনি সাথে আরিয়ান ও ।তবে আশরাফ খান আর রুকসানা বেগম এ ব্যাপারে ভুল না বুঝে আরিয়ান এর পরিস্থিতি বুঝলেন ওনারা।
আর এত দিন পর পেয়েছেন ওদের তাই আর কিছু মনে রাখতে চান না।

আরিয়ান ঘর জুড়ে পাইচারি করছে।তুসি ওর ওপর রেগে আছে।ওর সাথে কথা বলার দরকার।কিন্তু ও তো রুকসানা আর রাইমার সাথে ওখানে বসে বসে গল্প করছে।কি ব্যাপার আজ এ মেয়ের ঘুম আসছে না।এত রাত পর্যন্ত জেগে আছে।

দু তিনবার ওই ঘরে গিয়েছিল আরিয়ান তবে মা আর মায়ের সমবয়সী মামুনির সামনে কিছু বলতে ও লজ্জা করছে ।তারপরও চোখের ইশারায় বোঝানোর চেষ্টা করল কিন্তু তুসি তাকচ্ছেইনা ওর দিকে।
হতাশ হয়ে আরিয়ান আবার ওই রুমে গিয়ে রুকসানা কে বলল,মামুনি একটু এ দিকে শোনো না।
রুকসানা তৎক্ষণাৎ ওঠে এলো ব্যস্ত পায়ে আর রুমের বাইরে যেতেই আরিয়ান বললো আব,,আমার চা খেতে ইচ্ছে করছে মামুনি।

রুকসানা আরিয়ান এর গালে আদুরে ভাবে হাত বুলিয়ে বললো ,আচ্ছা তাই ঠিক আছে আমি চা করে আনছি।

আরিয়ান বলল ,আচ্ছা তুমি বানিয়ে ওকে দিয়ে পাঠিয়ে দিও আর কষ্ট করে তোমায় সিড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে হবে না।
এই বলে আরিয়ান চলে গেলো।

ঠিক পেনেরো মিনিটের।মাথায় তুসি চা নিয়ে হাজির। চা রেখে চলে যেতে চাইছিল ও কিন্তু আরিয়ান তার আগেই দরজা বন্ধ করে দিল। বাপরে যে মেয়ে!অনেক কষ্টে হাতের কাছে পেয়েছে ও।একবার হাতছাড়া হয়ে গেলে কষ্ট হবে আবার পেতে।আর তা ছাড়া ওর ভুল ভাঙ্গানো দরকার।

তুসি হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু আরিয়ান আরো কিছে টেনে বলল,তুমি কাওকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছো কেন?লিসেন, আমি তোমার এইসব খামখেয়ালি একদম সহ্য করবোনা।যদি রাস্তায় কোনো বিপদ হতো?আমাকে একটাবার জানানোর প্রয়োজন ও মনে করলে না ??

কথা বলো।আরিয়ান এর ধমকে তুসি কথা বলার পরিবর্তে কেঁদে উঠল ফুঁপিয়ে।

আরিয়ান চোখ বন্ধ করে জোরে শ্বাস নিয়ে নিজেকে সময় নিয়ে শান্ত করল। এযপর তুসির দিকে এগিয়ে গিয়ে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
আর বলল,সরি জান।আমার ভুল হয়ে গেছে। সেদিন তোমার খাবারের কথা আমি একদম ভুলে গেছি আর আমি অনেক প্রবলেভ এর মধ্য দিয়ে গিয়েছিলাম তখন তাই তোমার সাথে ওমন ব্যাবহার করেছিলাম। ক্ষমা করে দাও আর এমন হবে না।

তুসি নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে বলছে, ছাড়ুন আমাকে। একদম ধরবেননা!আপনি আমাকে ভালোই বাসেননা।শুধু কষ্ট দেন।আমি আর আপনার সাথে থাকবোনা ওই বাড়ি ও যাবোনা।

আরিয়ান বুঝলো অভিমান খুব গভীর ও শতল কন্ঠে বলল,কে বলেছে বাসি না ভালো?ভালো না বাসলে দু,দুবার বিয়ে কিভাবে করলাম?

তুসি জবাবে কিছু না পেরে বলল,আপনি খুব খারাপ।খুববব।

আরিয়ান তুসির কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল আমি কত খারাপ সেটা আজ আরো ভালো করে বুঝবে।

অভিমানী তুসিকে এক বিন্দু ও ছাড়লোনা আরিয়ান বরং আরো আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে কোলে তুলে নিলো ।তুসি কিঞ্চিৎ ভয় পেয়ে আরিয়ানএর গলা জড়িয়ে ধরে বলল, নামান আমাকে।

আরিয়ান মুখে কোনো কথা না বলে তার প্রিয়তমা কে শুধু ভালোবাসার স্পর্শের মাধ্যমে ওর সব অভিযোগ ,অভিমান ভেঙ্গে দিলো।লজ্জায় তুসি হতভম্ব হয়ে চোখ খোলার ও সাহস করলো না।শুধু অনুভব করল আরিয়ান এর ব্যাকুলতা,আর তীব্র ভালোবাসার স্পর্শ।
চলবে,,,,,
ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।#বিষাক্ত_বাঁধন
#অনামিকা_জাহান_জাফরিন ।
((শেষ পর্ব ))

হাসি_কান্না, সুখ_দুঃখ এর মাঝে কেটে গেছে অনেকটা বছর।

তুসি এক সন্তান এর জননী ।ছেলে সন্তান হয়েছে ওর।ছেলে টা এত মায়াবী।
বাবার জন্য একদম জানপ্রাণ ছেলের আর বাবারও কলিজার টুকরো তার ছেলে হৃদয় ।নামটা রেখেছিল তুসি ওর পছন্দের নাম।
ছেলে আর বাবা মিলে তুসিকে আচ্ছা করে জব্দ করছে।
এই যেমন আরিয়ান তো রাতে ওকে ছুটোছুটি আর দৌড়াদৌড়ি করতে দেয়না আর দিনে তুসি কি করে না করে সব ছেলের থেকে জেনে নেয়।ছেলেটা ও হয়েছে একদম বাবার মতো।তুসিকে শাষণ করে অনেক।

এইতো সেদিন তুসি আচার খাচ্ছিল আর হৃদয় এসে বলে
” মাম্মা আপনি এত তেলযুক্ত আচার খালি পেটে কেন খাচ্ছেন।বাবাই জানলে বকবে আর ভিষণ রাগ করবে”।

তুসি রাগে দাত কিরমির করতে করতে বলে যা ইচ্ছা করুক রাতে আসলে তো আমাকে সারাক্ষণ শাষনেই রাখে আর দিনে এই গোয়েন্দাটাকে লাগিয়ে রাখে ।আরে বাবা আমি কি আমার পছন্দমতো কিছু খেতে পারবোনা।

তাদের জন্য কিছুই করতে পারবোনা।শুধু বাধা আর বাধা।

আম্মাজান আপনি রাগ করছেন কেন আমরা আপনার ভালো চাই তাইতো আপনার যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখি।হৃদয়ের কথার জবাবে তুসি চোখ পাকিয়ে বলে,,তুই আমার পেট থেকে হয়েছিস নাকি আমি তোর পেট থেকে হুম?

আমি আপনার পেট থেকে।কেন আম্মাজান আপনি সেটাও ভুলে গেছেন?বলে মুচকি হাসে হৃদয়।

তুসি রাগ দেখিয়ে চলে যেতে যেতে বলে এটার ছয় বছর হবে কবে এই জন্য তো স্কুলে ভর্তি করাতে পারছি না।এইবার স্কুলে ভর্তি করাই তার পর দেখবো কি করে আমার পেছনে গোয়েন্দা গিরি করে।

হৃদয় হেসে পেছন থেকে বলে স্কুলে ভর্তি হলেতো আপনি আমায় নিয়ে যাবে তখন আর এক্সট্রা ভাবে গোয়েন্দা করতে হবে না ।বাইরে গেলেতো আপনি ভদ্র বেবি হয়ে যান।

তুসি সেটা শুনে আর পেছন ও ফিরে নি কথা ও বাড়ায়নি এই ছেলে এত চালাক বাপ কে ও ছাড়িয়ে যাবে।মাত্র সাড়ে পাঁচ বছরে এত মেধাবী আল্লাহ্ জানে সামনে কি হয়।

🌸🌸🌸

তাহিয়ার আজ কে ডেলিভারি ডেট। ও ভীষণ অস্বস্তিতে আছে আর সাথে টেনশন তো আছেই ।ওর ভয়ের আসল কারণ হচ্ছে ওর আগের বাচ্চা টাও মৃত হয়েছিল।

সেসময় তাহিয়াকে সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছিল তাসিন এর কাছে ও তো কম কষ্টে নেই। একেতো বাবার এমন পরিণতি আর যার দিকে তাকিয়ে সব ভুলে নতুন করে বাঁচবে ভেবেছিল সেই মারা গেল।তারপরও নিজেকে যথেষ্ট সামলে তাহিয়াকে অনেক সাহস দিয়েছিল।বাচ্চার জন্য সে অনেক পাগলামো করতো।একটা মা ই জানে তার কষ্ট। তার পর সন্তান এর মুখের দিকে তাকিয়ে মায়েরা সব ভূলে যায় আর যদি সে সন্তানই জীবিত না থাকে থাহলে একটা মা-ই
জানে তার যন্ত্রণা কেমন।সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।

ডেলিভারির জন্য হাসপাতালের ভেতরের রুমে নিয়ে যাওয়ার আগে তাহিয়াকে তাসিন আশ্বস্ত করেছিল রে আল্লাহ্ আমাদের সাথে দ্বিতীয় বার এমন করবে না। ভরসা রাখো।

সত্যি আল্লাহ্ তাদের দ্বিতীয় বার আর হতাশ করে নি।বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনে তাসিন আর সেখানে উপস্থিত তুসি ,জবা আর রাজ অনেক খুশি হয়।সাথে খুশি হয় ছোট্ট হৃদয় ও।

বাচ্চা কে একজন নার্স তোয়ালে পেঁচিয়ে এনে তাসিন এর হাতে হাতে তুলে দিতে দিতে বলে ,নিন আপনার বেবিকে আপনার ওয়াইফ সবার আগে আপনাকেই দিতে বলেছে।

তাসিন মুখে হাসি আর চোখে জল নিয়ে ওকে কোলে নিয়ে সারা মুখে চুমু খেতে থাকে। সেই নার্স টি বলে,মেয়ে একদম মায়ের মতো হয়েছে।

তাহিয়ার কাছে গিয়ে ওর কপালে চুমু খেয়ে বলল, আল্লাহ্ আমাদের রাজ্যের রাজকন্যা কে পাঠিয়েছেন।

আমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা হয়ে দেখাবো।

চোখ বন্ধ তাহিয়ার মুখে ও তৃপ্তির হাসি তবে কিছুই বলে না সে।

এইদিকে বেবিটাকে তুসির কোলে দেখছে হৃদয় গোল গোল চোখ নিয়ে।
মুখটা এত মায়াবী গালগুলো ফোলা ফোলা ওর।
তুসির কোলে হাত নাড়িয়ে কি সুন্দর খেলছে হৃদয়ের ইচ্ছে জাগলো ওকে কোলে নিতে কিন্তু তুসি রাজি হচ্ছে না কিছুতেই।
অবশেষে হৃদয়ের জোরাজুরিতে ওকে কোলে দিতে বাধ্য হয়েছে।

দিতে দিতে বলল, সাবধানে নাও বাবুকে নাহলে বাবুর ব্যথা লাগবে।

হৃদয় মায়ের কথা মতো খুবই সাবধানে নিল বাবুকে কেন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো ওর কোলে নিতে না নিতে বাবুটা চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করল ।তা দেখে তুসি ওকে নিজের কাছে নিয়ে নিল খুব দ্রুত।
ও নিতেই বাবুটার কান্না থেমে গেল।তা দেখে হৃদয়ের রাগ হলো খুব ওর কোলে কাঁদতে হবে কেন?ও কি চিমটি কেটেছিল নাকি খামচি দিয়েছিল?তারপরও তার কোলে এমন কাদলো কেন?

সময় টা রাত গভীর তখন, জবা এই নিঃশব্দ রাতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে নিজের দুঃখ ভুলার চেষ্টা করছে ।
রাজ ঘুমের ঘোরে হঠাৎ পাশে হাত রাখতে জায়গা টা খালি দেখে জেগে গেল।
ওঠে বসে জবাকে পাশে পেল না।বুঝতে অসুবিধে হলো না যে সে কোথায়?জবা প্রায় এমন করে ইদানিং।

তাদের বিয়ের এতো বছর হয়ে গেল এখনো জবা মা হতে পারেনি। এই নিয়ে তার যত মন খারাপ।আল্লাহর কাছে অনেক কাঁদে ও ।এই যে এখন রাত তিনটা বাজে উঠেছে এখন তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে সন্তান চাইবে ও।তারপল কোরআন তেলওয়াত করে বারান্দায় দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ নিজের মন খারাপ দূর করতে চাইবে।এসব রূটিন রাজ এর জানা।

ও গিয়ে জবাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল মধ্যরাতে জেগে নামাজ পরবে ঠিক আছে কিন্তু বারান্দায় কেন আসো?

জবা বলল,কিছুনা এমনি।

রাজ ওকে আর একটু গভীর ভাবে জড়িয়ে বলল,সব চাওয়া পূর্ণতা পায় না জবাফুল এটা আমাদের মানতে হবে।

আল্লাহ্ আমাদের পরীক্ষা নিচ্ছেন। আমাদের কে
সন্তুষ্ট থাকতে হবে নিজের যা আছে তা নিয়ে।

জবা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বলল,হুম কিন্তু মন তো মানে না।

কারো বেবি দেখলে আমার এত খারাপ কেন লাগে?আর বাচ্চার জন্যই বা আমার মন এত উতলা বলতে পারো।

রাজ ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,একজন মেয়ের ভেতর মাতৃত্বের সাধ জাগবে এটা স্বাভাবিক।

পৃথিবীতে এমন অনেক বাচ্চা অছে যাদের বাবা মা দরকার।আমরা নাহয় তাদের থেকে কারো বাবা মা হলাম।
কিছু চাওয়া নাইবা পূর্ণ হলো ,কিছু অপূর্ণ,পূর্ণ, আশা ,ভরসা দুঃখ সুখ নিয়েই মানব জীবন।।।

ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।

(সমাপ্ত)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here