বিষাক্ত বাঁধন পর্ব -২২+২৩

#বিষাক্ত_বাঁধন
#অনামিকা_জাহান_জাফরিন।
#পর্ব_২২

খাবার টেবিলে নিজের বান্ধবী কে দেখে আশ্চর্যান্নিতা হয়ে তাকিয়ে রইল তুসি। নিজের চোখের ভ্রম ভেবে আবার চোখ কচলে আবার তাকিয়ে দেখলো যে সত্যিই তাহিয়া বসে আছে সেখানে।
আরিয়ান কড়া কন্ঠে বলল, দ্রুত বসো তোমাকে খাইয়ে তারপর আমি খাবো ।তুসি তাহিয়ার দিকে তাকিয়ে বসে গেল।তাহিয়ার ওর দিকে নজর যেতেই চিৎকার করে বলল, “বোকারানি !তুই এইখানে।জানিস আংকেল আন্টি কত চিন্তা করছে?এইখানে কি করছিস?
সবার নজর ওদের দিকে তাসিন তাহিয়াকে বলল, তুমি চেনো ওকে?
জবাবে তাহিয়া বলল, হ্যাঁ। ও তো আমার বান্ধবী। আমরা একই ক্লাসে পড়ি। তুসি মুখটা নিচু করে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।এই মুহূর্তে ওর ইচ্ছে করছে তাহিয়াকে জড়িয়ে ধরে সকল কথা বলতে কিন্তু সকলের সামনে বিশেষ করে আরিয়ান এর সামনে সেটা করতে প্রছেনা ভয়ে।যদি আবার আরিয়ান রেগে শাস্তি দেয় ওকে।
তাহিয়া ফের তাগিত দিয়ে বলল, কিরে বল তুই এইখানে কেন?আমাদের না জানিয়ে কেন এসেছিস?আমি তাহলে আংকেল কে কল করে বলছি এক্ষুনি।

সবার মধ্য থেকে তাহির চিৎকার করে বলল,নাহহহ।এই কথা ভাবার দুঃসাহস ও করবেনা।আর ও আমাদের বাড়ির বৌ।যেমন তুমি আমাদের বাড়ির বৌ তেমনি।

তাহির এর চিৎকার এ সবাই ভয় পেয়েছে তবে যে দুজন বেশি ভয় পেয়েছে তাদের একজন তুসি অন্যজন তাহিয়া। তাহির সকলকে খাবার তাগিদ দিল আর কোনো কথা যাতে না শুনে এটাও বলল।

এরপর আরিয়ান তুসিকে খাইয়ে দিচ্ছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো আরিয়ান চামচ দিয়ে খাইয়ে দিচ্ছে আজ ওকে আর ওর হাতে ব্যান্ডেজ করা। অন্যসময় হলে হয়তো তুসি বলত আপনার হাতে কি হয়েছে?আর আমি খেতে পারব।তবে আরিয়ান ওর সাথে যে ব্যাবহার করেছে সেটার পর তো প্রশ্নই আসে না এসব বলার।খারাপ লোকটা, ওকে কষ্ট দিচ্ছে শুধু। ওর বাবা মার কাছ থেকেও আলাদা করেছে ওকে।

আরিয়ান এর হাতের ব্যথায় হাত নাড়াতে পারছেনা তবুও তুসিকে খাইয়ে দিচ্ছে। ওর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলো মুখ ফুলে আছে ।অনেক কান্না করেছে বোধ হয়। মুখটা মলিন হয়ে গেছে।আসলে ওর কি হয়েছে বুঝতে পারেনি ও নিজেই।তাই ওই রকম করে ফেলেছিল।এখন অনুশোচনা হচ্ছে তুসির জন্য।

🌸🌸🌸

আশরাফ খান হুইলচেয়ার বসে আছে।মাথার মধ্যে তার শতশত ভাবনা।মেয়েটার কোনো খোঁজ পেলোনা।ওই ছেলেটা এমন জিনিস চাইছে যেটা দিতে পারবেনা ও।এইটা ওর ভাইসমতুল্য বন্ধুর শেষ স্মৃতি।ও কি করে তা নিজের মেয়েকে ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যবহার করবে।তবে সব চেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো দুনিয়াতে এত কিছু থাকতে ওই কিডনাপার কেনো ওই বাড়ি আর অফিস টা চাইছে সেটাইতো বুঝতে পারছেনা আশরাফ। ওইদিকে তার স্ত্রী সকাল বিকাল শুধু মেয়ের খবর জানতে চাইছে।কি যে করবে কিছুই বুঝতে পারছে না আশরাফ।তবে ছেলেটার সাথে কথা বললে ভালো হতো ।ওকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করবে যদি রাজি হয়।কিন্তু আফসোস ওর সাথে যোগাযোগ করার কোনো অপশনই নাই। গত কিছুদিন ধরে আশরাফ এইকথা বহুবার ভেবেছে।তবে এতে ওর কি করার আছ।মেয়েটার কিছু হলে বাচঁবেনা ও।ওটাই বাঁচার একমাত্র ভরসা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা যেনো মেয়েটা সুস্থ থাকে।

এরই মাঝে একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে কল এলো আশরাফ খান এর কাছে।রিসিভ করে বলল, হ্যালো।
ওপাশ থেকে কেও বলে উঠল, আসসালামুআলাইকুম কেমন আছেন ?মেয়ে যে আমার কাছে আছে সেটা কি ভুলে গেলেন নাকি?
আশরাফ এইবার বুঝলো এটা সেই ব্যক্তি যে তার মেয়ে কে আটকে রেখেছে।

বাবা আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাই প্লিজ আর হ্যাঁ সামনাসামনি।

সেটা সম্ভব না।আমার ডিল এ রাজি হলে তবেই মেয়ে কে ফেরত পাবেন।
আমার কিছু কথা আছে ।প্লিজ না করো না ।
এইবার আরিয়ান বলল, আচ্ছা ঠিক আছে তবে কোনো চালাকি করার চেষ্টা করবেননা।কথা শেষ করে আশরাফ কে আর কিছু বলতে না দিয়ে কল কেটে দিল।

ওই দিকে আরিয়ান এর মোবাইল এ রাজ কল কযে বলল, স্যার যে লোকের কথা বলেছেন তাকে পেয়েছি।আটনি কি আসবেন?
আরিয়ান আরিয়ান গায়ে শার্ট জড়িয়ে বের হতে হতে বলল, হ্যাঁ আমি এক্ষুনি আসছি।

নির্দিষ্টগন্তব্যে পৌছে আরিয়ান রাজ কে ডাকলো রাজ ভেতর থেকে বলল স্যার আমি ভেতরে আছি আফনি আসুন ওর কথা মতো আরিয়ান গুদাম ঘরটির ভেতরে গেলো গিয়ে দেখতে পেলো এক মাঝ বয়সী লোক কে বেধে রাখা হয়েছে। আরিয়ান গিয়ে লোকটার মুখোমুখি হলো আর বলল, আপনাকে যা যা প্রশ্ন করা হবে তার সঠিক উত্তর দিবেন আশা করি না হয় আর এখান থেকে যাওয়ার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফুলুন কননা এই নির্জন স্থানে কেউ আপনাকে রক্ষা করতে আসবে না ইভেন খোঁজ ও পাবে না।

(এইটা সেই লোক যাকে আরিয়ান ওর মায়ের ওইখানে দেখেছে আশরাফ এর সাথে ওর ধারপা ওর মা কি করে এখানে আসলো তা এই ব্যক্তি বলতে পারবে)

লোকটা বলল, স্যার আপনি যা জিজ্ঞাস করবেন আমি বলবো ।সব বলবো।
আরিয়ান বলল ,গুড এখন বলো তুমি যে মহিলার দেখাশোনা করো তাকে কে এনেছিল?আর তোমার কাছেই বা রাখছে কেন?
লোকটা বলল, উনি অসুস্থ তাই এখানে রেখেছেন আর শুনেছি অনেক বছর আগে ওনাকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ।কেবিনে বহুবার তাকে কেও মারার চেষ্টা করেছে তাই আশরাফ ভাই ওনাকে সরিয়ে এখানে নিয়ে এসেছে আর ডাক্তারদের কাছে অনুরোধ করে যাতে ওনাকে মৃত ঘোষণা করা হয় এতে করে তার জীবনের ঝুঁকি কমবে।

আরিয়ান ভাবছিলো ও বানিয়ে বলছে তাই ওর গলা চেপে ধরে বলল, সত্যি বল নাহলে এখানে পুঁতে রাখবো কেউ টের ও পাবে না।

রাজ এসে অনেক কষ্টে আরিয়ান কে ছাড়াল, লোকটার গলায় আঙ্গুল এর ছাপ বসে গেছে। আর কাশছে ।কাশতে কাশতে সে বলল, খোদার কসম আমি একবিন্দু ও মিথ্যা বলছিনা ।আমার একটা পরিবার আছে বাবা আমাকে ছেড়ে দাও।
আগে বল আশরাফ কেন যায় সেখানে?

উনি আপা কে দেখতে যায় ।আজ এত বছর ওনাকে কথা বলানোর জন্য আর সুস্থ করার চেষ্টা করছেন উনি কিন্তু আপা এখনো কোমায় সে কোনো কথা বলে না।ওই ভাইজান আসে কিছুক্ষণ কথা বলে তারপর চলে যায়।

আরিয়ান হৃদয় থমকে গেল ওর মা কোমায় আছে?এত বছর এই অবস্থায় আছে ওর মা? উনি কি সুস্থ হবেনা?আরিয়ান কে আবার ভালোবাসবেনা ?না,,না ,,তা হবে না।ও ওর মাকে নিজের কাছে নিয়ে আসবে ।তবে আশরাফ খান তো ওদের কে মেরে সম্পত্তি দখল করতে চাইত তাহলে কেন ওর মাকে বাঁচালো আর কেনই বা সুস্থ করতে চাইছেন ওনাকে? ওর যতটুকু মনে পড়ে ওর মায়ের নামেতো কোনো সম্পত্তি নেই তাহলে কিসের জন্য ওনাকে নিজের কাছে রেখেছ?আর কে মাকে মারার চেষ্টা করেছে?কিছুই বুঝতে পারছেনা।তবে যেহেতু আশরাফ খান এর মুখোমুখি হবে তখন সব ক্লিয়ার হয়ে যাবে ।
চলবে,,,,,
#বিষাক্ত_বাঁধন
#অনামিকা_জাহান_জাফরিন
#পর্ব _২৩

গভীর রাতে আরিয়ান এর পাঠানো ঠিকানায় আশরাফ খান অপেক্ষা করছে আধা ঘন্টার মতো কিন্তু আরিয়ান এর আসার কোনো খবর নেই।অবশেষে মাস্ক পরিহিত গায়ে কালো হুড়ি জড়ানো এক ব্যক্তি কে দেখলো আশরাফ। তার ধারণা এই সেই ব্যক্তি যে তার মেয়ে কে আটকে রেখেছে।

বাহ সময় মতো চলে এসেছেন দেখছি।মেয়ে কে নিয়ে যাবার খুব তাড়া তাই না?বিদ্রুপ হেসে জিজ্ঞেস করলো আরিয়ান। আশরাফ তাতে হেলদোল নেই সে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আরিয়ান এর দিকে ওর চোখ গুলো খুবই পরিচিত লাগছে যদিও আর কীছু বোঝার উপায় নেই মাস্ক এর উপর তারপরাও চোখগুলো তো ঢাকা নেই সেটা বাইরে অবস্থান করছে।আশরাফ খান এর সন্দেহ হচ্ছে এই চোখ এইচোখ তো,,,
ওর ভাবনার মাঝেই আরিয়ান হেঁটে ওর সামনে এসে তুড়ি বাজালো আর বললো, কি হল কি হারালেন?
আশরাফ হকচকিয়ে গেলেন তাও নিজেকে সামলে বললেন,বাবা আমার জানা মতো আমি তোমার কোনো ক্ষতি করিনি তাহলে তুমি কেন আমার সব চেয়ে মূল্যবান জিনিস টা আমার থেকে দূর করেছ?তাছাড়া আমার মেয়ে টা অনেকটা বাচ্ছা স্বাভাবের ও আমাদের মতো পরিপূর্ণ মানুষ নয় তবে কেন তুমি আমার কোমল মেয়েটার মনে দাগ ফেলছো ? যাকে আজ পর্যন্ত কোনো বিপদ আপদ ছুঁতে দেই নি কোনো আঘাত কষ্ট পেতে দেয়নি তাকে তুমি না জানি কি অবস্থায় রেখেছো।আমার মেয়ে টা আমাকে ছাড়া থাকতে পারেনা আর না কখনো প্রয়োজন হয়েছে থাকার।বলতে বলতে আশরাফ খান চোখের জল ছেড়ে দিলো।
আরিয়ান এর নিজেকে খুবই খারাপ মনের মানুষ মনে হচ্ছে যে কিনা এক বাবার কাছ থেকে তার মেয়ে কে কেড়ে নিয়েছে। তবে আবার ওর মায়ের কথা মনে পড়তে সব খারাপ লাগা করপুরের মতো উবে গেলো।

গম্ভীর কন্ঠে বলল আমার যা চাই তা দিয়ে দিলে তো ঝামেলা শেষ।
আশরাফ নিজের চোখের পানি মুছে শান্ত কন্ঠে বলল, তুমি যা চাইছো তা আমার ভাতৃসমতূল্য মৃত বন্ধুর আমানত যা আমি আজ এত বছর ধরে গচ্ছিত করে রেখেছি।এর মালিক আমি নই আমি তোমাকে কিভাবে দেবো বলোতো?এছাড়া আমার যত সম্পদ আছে সব নিয়ে নাও প্লিজ আমার কাছে এই আমানত আমার জীবনের থেকও বেশি মূল্যবান।

আরিয়ান চমকে গেলো আশরাফ এর কথায়। তার মানে আশরাফ তার বাবার কথা বলছে।কিন্তু এসব মিথ্যা ও বলতে পারে। তবে আমি তো এখন তার কাছে অপরিচিত সে আমাকে মিথ্যা বললে কি লাভ।

আরিয়ান মনে মনে এসব ভাবলেও মুখে আশরাফ কে বলল, আমি কীভাবে বিশ্বাস করবো তোমার কথা?আপনি তো আমায় মিথ্যে বলতে পারেন।আমি কেন আপনাকে বিশ্বাস করবো?

আশরাফ খান বলল, যে ব্যপারে আমার মেয়ে জড়িয়ে আছে সে ব্যাপারে মিথ্যা বলার কোনো প্রশ্নইআসে না।
আরিয়ান ফের আবার বলে উঠল,আপনার বন্ধু তো মৃত তাহলে তার সম্পদ কার জন্য আম্নত হিসেবে রাখছেন?

আশরাফ বলল, তার স্ত্রী এখনো জীবিত আছে সে আমার আমানত ।তবে দুর্ভাগ্য জনক হলেও সত্যি তার একটা ছেলে ছিল সেই ছেলেটাও মারা গেছে হাসপাতালে আগুন লেগে।
আরিয়ান এইবার যেন একটু বেশিই চমকেছেন সে মারা গেছে মানে? সেতো জ্নতে তার মা মারা গেছে তারপর তার মায়ের লাশটাও তারা পাই নি হাসপাতালের সেই বিল্ডিংতাতে আগুন ধরেছিল তাতে তার মৃত মায়ের লাশ পুড়ে গেছিল বলে জানে কিন্তু সে মারা গেছে এই কথা আশরাফ খান কে বলল? আর বললেই কি তাকে সেটা বিশ্বাস করতে হবে?কই কখন তো তার কোনো খোঁজ নিতে দেখেনি তবে এখন যা বলছে সেটা,,,সেটা কি সত্যি আর তাছাড়া আশরাফ তো তার মায়ের কথা অকপটে স্বীকার করে নিয়েছে তার মানে তার মাকে তার থেকে লুকিয়ে রাখেনি সে জানতোইনা আরিয়ান বেঁচে আছে?

আরিয়ান এর মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে কি করবে ঠিক ভুল ও কিছুই বুঝতে পারছেনা ।তবে তাকে সব কিছু জানতে সব কিছু। প্রকৃত পক্ষে কি আশরাফ আংকেল দায়ী সব খিছুর জন্য নাকি সব কিছুর পেছনেও কোনো বাস্তব সত্য লুকায়িত আছে যা তার চোখে ধরা পড়েনি অথবা যার সম্পর্কে সে অবগত নয়।

তবে আরিয়ান হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নিবে না আর ভেবে চিন্তে সব সত্যি জেনে কাজ করবে সে।এখন আপাদত আশরাফ খান কে বিদায় দেয়ার প্রয়োজন।

আশরাফ খান কাতর চোখে চেয়ে আছে অপরিছিত যুবক এর দিকে যদি একটু মন গলাতে সেই যুবকের সেই উদ্দেশ্যেই এত কথা বলা তবে আদও কি সে পেরেছে সেটা ?

এরই মধ্যে আরিয়ান বললো, আমি আপনাকে পরে খবর পাঠাবো তবে আপাদত এইটুকু শুনে রাখুন আপনার মেয়ের কোনো অযত্ন হচ্ছে না।তার সব দেখাশুনা আমি নিজে করছি এমনকি তাকে খাইয়ে দেওয়া ও!!!
আশরাফ বেশ খুশি। কিছু বলতে নিবে তার আগেই আরিয়ান হন্তদন্ত হয়ে সেখান থেকে চলে যায়।

🌸🌸🌸

তাহিয়াকে জড়িয়ে ধরে অনবরত কেঁদে যাচ্ছে তাহিয়া।ওকে কি শান্তনা দেবে সৃটা বুঝতে পারছেনা তাহিয়া তবে এতক্ষণ কাঁদতে কাঁদতে নিজের সাথে ঘটা সমস্ত ঘটনা প্রানপ্রিয় বান্ধবী কে বলতে বলতে তুসির এই কান্না।

তাহিয়া বুঝতে পারছেনা কি করে তুসি কে শান্তনা দেবে।তবে ওকে শান্ত করা দরকার মেয়ে টা অন্যরকম না জানি কিভাবে স্বাভাবিক থাকবে।

বোকারানি কান্না বন্ধ কর প্লিজ।তুই জানিস কাঁদলে তোকে কতো বাজে দেখায়? আর তাছাড়া তোদের বিয়ে হয়েছে এসব যায়েজ আছে বে প্রবলেম একটাই যে তোদের কোনো ভবিষ্যত নেই,তুসির উদ্দেশ্যে বলল তাহিয়া

তুসি নাক টেনে বলছে ,তার মানে উনি যটা করেছেন সেটা যায়েজ?কিন্তু উনি বলেছে কাজ শেষে আমাকে আমার বাড়িতে ফিরিয়ে দেবে তাহলে এসব করার কি মানে? আর বিয়ে টাও মানে না উনি তাহলে??

তাহিয়া সত্যিই বুঝতে পারছেনা তার কি করা উচিত তবে তুসিকে কি কারণে এখানে নিয়ে এসেছে এইটাই এখনও তার মাথায় আসছেনা। যা নাজুক তুসি তার উপর এতসব ঘটনা মেনে নিতে যে তুসির বেশ বেগ পেতে হচ্ছে তা সে বেশ ভালোভাবে টের পাচ্ছে তবে কিছু বিষয় আছে যা আমাদের হাতের বাইরে আমরা চাইলেও তা বদলাতে পারি না দীর্ঘ শ্বাস ফেলে তুসি মুখ উঠিয়ে চোখের পানি মুছে দিল তাহিয়া।
বলল, তুসি সময়ের সাথে সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে তুই ধৈর্য ধর।
তুসি এবার কিছুটা শান্ত হয়ে এলো।এবার তাহিয়াকে তার এখানে আসার কারণ জানতে চাইলো।
তাহিয়া একে একে সমস্ত ঘটনা খুলে বলল।সব শুনে তুসি বলল,আসলে তাসিন ভাইয়া খুব ভালো দেখেছিস তোকে কীভাবে বাঁচালো?
হুম তাই।

তুসি এবার আবদার করে বলল, আমি আজ তোর সাথে থাকব প্লিজ কেও যাতে না জানে।চল আমরা ওই কোনার রুমটাতে থাকব।

তাহিয়া ও রাজি হয়ে গেলো তার ও অস্বস্তি হয় তাসিন এর সাথে বেড শেয়ার করতে ।তাসিন এরও নিশ্চয়ই অনেক কষ্ট হয় কিন্তু বেচারা কিছু বলতে পারে না এইসব ভেবে দীর্ঘ শ্বাস নিলো তাহিয়া।অতঃপর দুই বান্ধবী একসাথে থাকার প্রস্তুতি শুরু করল।রিমি দেখলে অবশ্য তা কখনো হতোনা।তবে আজ রিমি খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেছে তুসি দেখেছে তারপরইতো এসে বান্ধবীর সাথে সুখ দুঃখের আলাপ করছে।

ঘড়ির কাঁটায় রাত দু’টোয় ঘরে আসলো আরিয়ান। চারদিকে চোখ বুলিয়ে ও কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি দেখতে পেলোনা।হঠাৎ বুকের ভেতর অস্থির লাগছে ।সব সময় তো ঘুমিয়ে কাদা হয়ে থাকে আজ এই মেয়ে গেলো কোথায়। তারপরও আরিয়ান সেসব পাত্তা না দিয়ে শুয়ে পড়ল। তবে এপাশ ওপাশ করে অনেকক্ষণ পরও ঘুম এলোনা চোখে । একি অসহ্য যন্ত্রণা?এমন কেন লাগছে।শেষে নিজের সাথে যুদ্ধে হেরে আরিয়ান বিরবির করে বলল,এইভাবে ঘুম হবে না যাই দেখি যে মহারাণী কোথায় আছে।কি আশ্চর্য আজ ভাবি কিছু বললো না তুসি যে অন্যঘরে রয়েছে নাকী জানেইনা?
চলবে,,,,,,,
ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।
(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here