বুনোভাই,পর্ব:১৪+১৫

#বুনোভাই
#পর্ব_১৪
#লেখনীতে_তিথি_মজুমদার

১৪

বিষন্ন দুপুরে ক্লান্ত মন নিয়ে এলোমেলো ভাবে ঢাকার ব্যাস্ততম রাস্তায় হাঁটছে হিমেল।আজকাল তার বড় অনুশোচনা হয় নিজের কৃতকর্মের জন্য। তার জন্য একটা মেয়ের জীবন প্রায় নষ্ট হয়ে যেতে বসেছিলো, বসেছিলো কী নষ্ট তো হয়েই গেছে।সে তো চায় নি তার জন্য মনীষার জীবন টা এমন এলোমেলো হয়ে যাক।সে তো সময়ের স্রোতে ক্ষণিকের মোহে আচ্ছন্ন হয়েছিলো তার প্রতি কেবল। পরবর্তী তে তো সে খুব সুন্দর ভাবেই মনীষা কে সবটা বুঝিয়ে সম্পর্কের ইতি টেনেছিলো সেদিন।এতোটা তীক্ষ্ণ জ্ঞান সম্পন্ন মেয়ের সাথে কি অন্য কিছু হয়েছিল যার জন্য সে মাদকের নেশায় আসক্ত হয়েছিল?
তা না হলে মনীষা শুধু মাএ তার সাথে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটেছে বলে এ পথে যায় নি।এসব কথা চিন্তা করতে করতে হাটছে হিমেল।
সেদিন যখন মনীষা তাদের বাড়িতে এসেছিলো আর হিমেল তাকে না দেখেও একটা টান অনুভব করেছিলো তার গভীরতা জানার জন্যই হঠাৎ এক বিকেলে সে উপস্থিত হয় মৃম্ময়ীর বাড়িতে। আর সেখানেই সে জানতে পারে রুপাই হচ্ছে তার একসময়কার প্রাক্তন মনীষা।হয়তো এজন্যই তার মন বারবার রুপার কাছে ছুটে আসতে চেয়েছিলো।
বাড়ি ফিরে মনীষার বিষয়ে সবটা জেনে যেনো একমুহূর্তের জন্য থমকে গিয়েছিল হিমেল।আজকাল তার দুচোখ শুধু মনীষাকে একবার দেখার জন্য ব্যকুল হয়ে থাকে,তার সাথে দুদণ্ড কথা বলার জন্য সে চাতক পাখির মতন কাতরায়। কিন্তু আজ আর তার জন্য কলেজ পড়ুয়া মনীষা ব্যাকুল হয় না,সে যে অধিক শোকে আজ একটা পাথরে পরিণত হয়েছে যে পাথর ভাঙ্গার মন্ত্র সে জানে না।তার কেনো যেনো বারবার মনে হয় সে আবার প্রেমে পড়েছে তার মনীষা,বড্ড কাছে পেতে ইচ্ছে করে তাকে তাইতো সে মনীষার অতীতের খোঁজ নিচ্ছে। সে জানতে চায় কে করেছে এমন কাজ যার জন্য আজ ওই ফুটফুটে চঞ্চল, তীক্ষ্ণ বুদ্ধীদিপ্ত মেয়েটি অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে ছিলো এতোগুলা বছর!!!!!
————————————————————-

জ্ঞান ফেরার পর একটা বদ্ধ ঘরে নিজেকে আবিষ্কার করলো মৃণালিনী। চোখ পিটপিট করে খুলে সে খুব নিখুঁত ভাবে পুরো ঘরটাকে দেখছে।কিন্তু নাহ তো এটা তো তার পরিচিত কারোও ঘর বলে মনে হচ্ছে না,সে এখানে কীভাবে এলো,আর তাকে কেইবা ওইসময় অজ্ঞান করে তুলে আনলো।এসব কিছুই বুঝছে না মৃণাল।এরমধ্যেই তার চোখ পড়লো খাটের এক পাশে কতগুলো শপিং ব্যাগ।ব্যাগ গুলোতে হাত দিতে যাবে তখনই দরজা খোলার খট করে শব্দ তার কানে এলো।মৃণাল অনেকটা সতর্ক হয় বসলো।নিজের আত্মরক্ষার জন্য সে খাটের এক কোনায় গিয়ে বসলো যেখানে লাগোয়া একটা টেবিল ল্যাম্প আছে, ভিতরে যদি কোনো বদ লোক ঢুকে আর তার সাথে কোনো অসভ্যতামী করার চেষ্টা করে তাহলে ল্যাম্প লাইট টা তুলে মাথায় দিবে একটা বারি।মনে মনে এটা পরিকল্পনা করে রাখলো মৃণাল। কিন্তু তার ভাবনার বাহিরে গিয়ে ঘরে ঢুকলো একটা সুন্দরী মেয়ে। মেয়েটা ঘরে ঢুকেই বলল,

-আপু আপনি উঠে গিয়ছেন।যাক তাহলে বরং আমি আপনার মেকাপটা করে দি।

-কে আপনি,আমি কোথায়,আর আমাকে মেকাপই বা কেনো করাবেন আপনি বলুন বলুন বলছি?
একদমে চিৎকার করে সবগুলো কথা বলল মৃণাল।

-আমি তনু।বিউটিশিয়ান।এখানে আপনাকে সাজানোর জন্য আমাকে এপোয়েন্ট করা হয়েছে আপু।

-কিন্তু আমাকে সাজতে হবে কেনো। আচ্ছা আমাকে বলুন তো এখানে আমায় কে নিয়ে এসেছে?

-আপু আমি এসব কিছুই জানিনা।তবে খুব সম্ভবত আপনার আজ বিয়ে, আসলে আপনাকে ব্রাইডাল লুকে সাজাতে বলা হয়েছে আমায়।এর বেশি কিছু আমি জানি না।
তনুর মুখে বিয়ের কথা শুনে যেনো তব্দা খেলো মৃণাল।সে বিষ্ফরিত গলায় বলল,

-অসম্ভব। আমি কিছুতেই বিয়ে করবো না।এই আমাকে এখানে কে নিয়ে এসেছে, এই আমি কিন্তু এখন চিৎকার করে লোকজন ডাকবো।হেল্প হেল্প বলে চেঁচাতে লাগলো মৃণাল।
তখনই একজন মুখোশধারী লোক ঘরে প্রবেশ করলো।আর বলল,

-দেখুন ম্যাডাম যা হচ্ছে বা হবে তাতে যদি আপনি সম্মতি দেন তাহলেই আপনার মঙ্গল। আমরা আপনাকে এখানে বেশিক্ষণ আটকে রাখবো না।বিয়ে টা হয়ে গেলেই আপনাকে সম্মানমত হলে পৌঁছে দিয়ে আসা হবে।তাই অযথা চেচামেচি না করে কো-অপারেট করুন আমাদের সাথে।

-মগের মুলুক পেয়েছেন নাকি,বিয়েটা কী আপনার কাছে ছেলেখেলা মনে হয়,চেনা নাই, জানা নাই আমি একজন কে বিয়ে করে ফেলবো!

-দেখুন ম্যাডাম আপনি শুধু শুধু সময় নষ্ট করছেন।আমাদের বস কিন্তু সময়ের কাজ সময়ে করতে পছন্দ করেন।এখন স্যার যদি এসে দেখে আপনি এখনো তৈরি হন নি তাহলে আপনারই ক্ষতি হবে।

মৃণালের মাথা কাজ করছে না।কি হচ্ছে তার সাথে, এরা কারা,কে তাকে তুলে আনল,কেইবা তাকে বিয়ে করতে চায়,আর এদের বসই বা কে।কী করবে সে,সে কি পালিয়ে যাবে, নিজেকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা টুকু করতে হবে অন্তত বুনোভাইকে শেষবার দেখার জন্য হলেও তাকে এই চক্র গুহ থেকে বাঁচতে হবে।কিন্তু কীভাবে?
পরক্ষণেই সে মুখোশধারী লোকটাকে বলল,

-আমি রাজি তবে আমার একটা শর্ত আছে।

-কী শর্ত?

-আমি বিয়ের আগে হবু বরকে দেখতে চাই।

-সরি ম্যাম আপনার এই শর্তটা মানা সম্ভব না।আপনি অন্য কিছু বলুন।

-নাহ্ এটাই আমার শেষ সিদ্ধান্ত।
মুখোশধারী লোকটা কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
এদিকে মৃণাল মনে মনে বলছে এইবার আমিও দেখব কে সে লোক যে আমাকে এভাবে তুলে এনে বিয়ে করতে চাইছে।

এদিকে মুখোশধারী লোকটা তার বসকে গিয়ে মৃণালের শর্তের কথা জানায়।তখন
তাদের বস নিজ মনেই বলে,

-তুমি বড্ড চালাক মৃণালিনী!
তবে তুমি কী এটা জানো তোমার এই বর তোমার থেকে আরও বেশি চালাক।
বলেই একটা ডেবিল হাসি দিলো সে।

—————————————————-
পলির হাত পা ভয়ে থরথর করে কাপছে। তার ভীষণ ভয় করছে আজ বাবাকে।তার বাবা শীতল দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তার দিকে তাকিয়ে আছে। আর সে নিচের দিকে তাকিয়ে পা দিয়ে মাটি খুঁটছে। সকালে বসন্তের শুভেচ্ছা জানাতে সে ফোন দিয়েছিলো তপুকে।তখন তপু বায়না ধরে আজ যেনো পলি শাড়ী পড়ে সেজেগুজে তাকে ভিডিও কল দেয়।প্রথমে পলি না না করলেও পরে ঠিকই মায়ের একটা নীল রঙের শাড়ি পড়ে সুন্দর করে সেজে সে ফোন দিয়েছিলো তপুকে।এ পর্যন্ত সব কিছুই ঠিক ছিলো কিন্তু বিপদ বাঁধলো তার বাবা যখন হঠাৎ তার ঘরে ঢুকে দেখলো তারা দুজন ভিডিও কলে কথা বলছে।
এরপর থেকেই পিনপতন নীরবতা বিরাজ করছে ঘরের মধ্যে ।
নিরবতা ভেঙে পলি কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,

-আসলে আব্বু আমি তোমাকে সবটাই জানাতাম
তার মধ্যে মানে,,,,,,,,

-কতদিন ধরে চলছে এসব।
পলির কথার মাঝে তাকে থামিয়ে গম্ভীর কন্ঠে কথাটা বলেন তিনি।

-৫ মাস এগারো দিন আব্বু।
নিচু গলায় বলল পলি।

-ছেলেটা কে,কি নাম, কই থাকে, কিছু করে নাকি বেকার?

তারপরই পলি তপুর বিষয়ে সবটা বলে তার বাবাকে।সবটা শুনে তিনি উঠে দাঁড়ালেন আর বললেন,

-ছেলেকে বলো সে যেনো বড়দের দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় এ বাড়িতে। এসব প্রেম ভালবাসা করলে হবে না শুধু।
বলেই তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।আর এদিকে পুরো বিষয়টা বুঝতে পলির দশ সেকেন্ড সময় লেগেছে। তারপরই সে প্রবল উত্তেজনায় লাফাতে লাগলো।
কিছুক্ষণ লাফালাফি করার পর তার মনে হলো তপেশ আর মৃণালকে এই খুশির খবরটা জানাতে হবে।যে ভাবা সেই কাজ।ফোন হাতে নিয়েই আগে তপুর নাম্বারে ডায়াল করলো সে!

চলবে,,,,,,

#বুনোভাই
#পর্ব_১৫
#লেখনীতে_তিথি_মজুমদার

মুখ ভোঁতা করে চিলেকোঠার ঘরে থম মেরে বসে আছে পলি।আজকে তার এতো ভালো একটা খবর সে তার সবচেয়ে প্রিয় এবং কাছের মানুষটিকে জানাতে পারছেনা বলে।দুপুরের পর থেকে কম করে না হলেও সে অন্তত একশোটারও বেশি কল করেছে মৃণালকে।কিন্তু মৃণালের কোনো পাত্তাই নাই।এ মেয়েটা বরাবরই এমন ফোন চালায় ঠিকই কিন্তু সেটা যে সবসময় হাতের কাছে রাখতে হয় সেটা জানে না। সে কতবার বলেছে মিনু ফোনটা সবসময় হাতের কাছে রাখবি আর সাইলেন্ট মুডে তো একদমই রাখবি না।কিন্তু কে শোনে কার কথা।সে নিশ্চয়ই ফোন সাইলেন্ট করে বালিশের নিচে রেখে পড়ছে।এ মেয়েকে সে আর বুঝিয়ে পারলো না।
অন্যদিকে এতো দুশ্চিন্তার মাঝেও পলির মনের ভিতর এক অদ্ভুত অনুভূতিতে ছেয়ে যাচ্ছে। সবটা যে এতো সহজে তার বাবা মনে নিবে তা সে কল্পনাও করতে পারেনি।তার বাবা পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো বাবা!!
আচ্ছা পৃথিবীর সব বাবারাই কী তাদের সন্তানদের কাছে ভালো হয়,নিজেকে প্রশ্ন করছে পলি।তারপর নিজেই নিজেকে বলছে,নাহ্ তা কী করে হবে পৃথিবীর সব বাবা ভালো হয় না ঠিক যেমন মৃণালের বাবা!
পলির মাঝে মাঝে মৃণালের জন্য খুব কষ্ট হয় এতো ভালো একটা মেয়ে হয়েও সো তার বাবার চোখের বালি। পলি তার দাদীর কাছে শুনেছিলো,মৃণালের জন্মের সময় যখন তার মা মারা যায় এরপরে নাকি তাদের ফুফা মানে মৃণালের বাবা তার সদ্য জন্মানো নবজাত বাচ্চাকে অস্বীকার করে এমনকি সে আজ পর্যন্ত তার মেয়ের মুখও দেখতে আসেন নি।তবে মাসে মাসে বাবার দায়িত্ব বোধ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা সে মৃণালের জন্য পাঠায়।যদিও তার বাবা, জেঠারা সে টাকার কোনো অংশই মৃণালের জন্য খরচ করেনা উপরন্তু তা মৃণালের নামে ডিপোজিট করে রাখে।তাদের ভাষ্যমতে যে বাবা নিজের সন্তানের দায়িত্ব পুরোপুরি ভাবে নিতে পারেনা উল্টো কিছু টাকা পাঠিয়ে নিজের দায়িত্ব গা জেড়ে ফেলে দেয় সে দায়িত্ব করার চেয়ে না করাই ভালো।তারা তাদের রোজগারেই তাদের ভাগনিকে মানুষ করবেন।যদিও মৃণালের যখন এসব বোঝার জ্ঞান হয় তখন থেকেই সে তার চাহিদার মাত্রা শূন্য করে দিয়েছিলো।এমনকি অল্প বয়স থেকেই সে টিউশনি করিয়ে নিজের যাবতীয় হাতখরচ চালাতো।যদি এ নিয়ে কেউ কিছু বলতো তাহলে সে বলতো,প্রাইভেট পড়ালে জ্ঞান বাড়ে,নিজের সামর্থ্য এবং অক্ষমতা দুটোই বোঝা যায়।তাই এ নিয়ে কেউ মৃণালকে তেমন ভাবে কখনো বাঁধা দেয়নি।মৃণাল ছোট থেকেই আত্নমর্যাদা সম্পন্ন মেয়ে।সে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কখনোই কারো কাছে হাত পাতে নি।এসব কিছুই খুব ভালো করে জানে পলি।তাইতো সে মনে মনে মৃণালের এই লড়াই কে সেলুট করে।সে চায় মৃণাল একদিন অনেক বড় ডাক্তার হয়ে তার বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করুক, কী ভুল,কী অন্যায় ছিলো তার যার কারণে তার বাবা তাকে ত্যাগ করেছে!

——————————————————-
ফ্লোরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে রনি।তাকে ইচ্ছে মতন মেরেছে হিমেল। সেও এখন ক্লান্ত হয়ে ফ্লোরের এক কোণায় বসে আছে।
কিছুক্ষণ ধাতস্থ হওয়ার পর হিমেল রনিকে উদ্দেশ্য করে বলল,

-কেনো করেছিস এমনটা।ওর কী দোষ ছিলো বলতো?

রক্তাক্ত অবস্থায় ফ্লোরে চিৎ হয়ে শুয়ে একটা শয়তানি হাসি দিয়ে রনি বলল,

-প্রতিশোধ!

-প্রতিশোধ কীসের প্রতিশোধ নিয়েছিস তুই মনীষার কাছ থেকে।
রনির কথায় চমকে প্রশ্নটি করে হিমেল।
উপরে সিলিং এর দিকে নিষ্পলক ভাবে তাকিয়ে রনি বলা শুরু করলো,

-তুই আর আমি সেই ছোট্ট বেলা থেকে বন্ধু। কিন্তু বরাবরই সব জায়গায় সময়ময় তুই আমার থেকে এগিয়ে থাকতি।কিন্তু তোর আর আমার মধ্যে ঊনিশ বিশ পার্থক্য ছিলো।তবুও তুই সবজায়গায় সবসময় মধ্যমণী হয়ে থাকতি।সত্যি বলতে এসব আমার একদমই ভালো লাগতো না।দিনকে দিন আমি তো ফেডাপ হয়ে যাচ্ছিলাম তোর উপর।মনে মনে তোকে হারিয়ে দেওয়ার তীব্র ইচ্ছের জন্ম নিলো আমার মনে।শুধু সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম আমি।আর আল্লাহ আমাকে সে সুযোগও করে দিলেন একদিন।মনীষা এলো তোর জীবনে। মেয়েটা তোর প্রেমে পুরাই দিওয়ানা ছিলো।কিন্তু তখন তুইতো এসব পাত্তাও দিতি না। তবে আর কেউ না জানলেও আমি তোর বেস্ট ফ্রেন্ড হওয়ার সুবাধে জানতাম তুইও মেয়েটাকে মনে মনে পছন্দ করিস,কিন্তু তুই সব কিছুর আগে নিজের ক্যারিয়ারকে বেশি প্রাধান্য দিতি।তাই আমি মনীষার কাছে তোর স্পাই হয়ে যেতাম।ওকে তোর নামে মিথ্যে সব খবর দিতাম আর মেয়েটাও আমাকে বিশ্বাস করতো। কথায় বলেনা প্রেমে পড়লে বুদ্ধিমানরা বোকা আর বোকারা চালাক হয়ে যায়।সেরকমই ঘটেছিলো মনীষার সাথে।মেয়েটা সব কিছুর ক্ষেত্রে তীক্ষ্ণ বুদ্ধির প্রয়োগ করলেও সে ছিলো তোর প্রতি দূর্বল।আর আমি ঠিক এই দূর্বলতাটাকেই কাজে লাগিয়েছিলাম।কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেয়েটা আমার কালো ধান্ধাটা জেনে গিয়েছিলো।তাইতো ওকে আমার পথ থেকে সরাতে মিথ্যে ড্রাগসের মামলায় ফাঁসিয়ে দিলাম।ব্যাস তোর প্রতি আমার প্রতিশোধ টাও নেয়া হয়েছিল আর মনীষাকেও রাস্তা থেকে সরিয়েছিলাম।তুই যখন মনীষার জন্য কষ্ট পেতি, আমাকে তোর মনের দুঃখ গুলো বলতি তখন আমি যে তৃপ্তি টা পেতাম না সেটা তোকে বলে বোঝাতে পারবো না দোস্ত।
বলেই বিশ্বজয়ের একটা হাসি দিলো রনি।এদিকে রনির এই হাসি গা জ্বালা করছে হিমেলের।তাই সে হাত দিয়ে রনির থুতনি বরাবর আরেকটা ঘুষি দিয়ে বলল,

-শালা তোর যা রাগ ছিলো সবতো আমার উপর ছিলো আর তুই তার শাস্তি একটা নিষ্পাপ মেয়েকে দিলি।
বলেই সে আবার রনিকে মারতে উদ্যত হতে নিলেই পুলিশ এসে তাকে থামায়। তারপর হাতকড়া পড়িয়ে রনিকে নিয়ে যায় পুলিশ। যাওয়ার আগে হিমেল তার ফোনে রেকর্ডকৃত সমস্ত প্রমান পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে।
পুলিশ চলে যাওয়ার পর মাথার চুল হাত দিয়ে শক্ত করে টানতে টানতে সে চিৎকার করতে থাকে।শুধু মাত্র তার জন্য আজ মনীষার জীবনটা এমন হয়ে গেলো।সেদিন সে যদি মনীষাকে ফিরিয়ে না দিয়ে তার হাতটি শক্ত করে ধরতো তাহলে এমনটা হতো না।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here