বেলা_শেষে_ফেরা পর্ব ৬+৭

#বেলা_শেষে_ফেরা

#পর্ব_৬

#লেখনীতে_Suchona_Islam

তূর্ণারা আজকে প্ল্যান করলো, আজ যেহেতু ক্লাস হয়নি। তবে তারা বাকি গুলো ক্লাস’ও করবে না। এমনি সময় মুনিয়া হঠাৎ বলে উঠলো তার খুব ফুচকা খেতে ইচ্ছে হচ্ছে। ফুচকা’র কথা শুনে তো তূর্ণা কি আর না করতে পারে। তাই সে’ও ভাবলো ক্লাস আজ না করুক। গেটের বাইরে’ই এক ফুচকা ওয়ালা মামা’র দোকান আছে। তাই তূর্ণারা সবাই সে দোকানের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে।

“এই মেয়ে দাড়াও! এই বেণুনি করা মেয়ে। দাড়াও!”
তূর্ণা পিছন ফিরে দেখে যে তন্ময় দৌঁড়ে তার’ই কাছে আসছে। তূর্ণা এবং বাকিরা’ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কারণ তন্ময় তো সবার ক্রাশড, এমন ভাবে দৌড়ানো’তে সবাই তো একটু ভ্যাবাচেকা খাবেই।

দৌঁড়িয়েছে বলে তূর্ণার কাছে এসে দাড়িয়ে প্রচুর হাঁপাতে থাকলো তন্ময়। তন্ময় হাঁপাতে হাঁপাতে’ই তূর্ণাকে বলছে, “তোমার নাম’টা কি যেন?”
তূর্ণা তো চোখ রসগোল্লার মতো করে তাকিয়ে আছে তন্ময়ের দিকে। এখন’ও হাঁপাতে থাকা তন্ময় কি না তার নাম জিজ্ঞেস করার জন্যে দৌঁড়িয়েছে।
“দেখুন ভাইয়া, আপনি তো হাঁপাচ্ছেন। একটু জিরিয়ে নিন, প্রান ভরে নিশ্বাস নিন। তারপর আমি আপনাকে আমার নাম বলবো, কেমন!” তূর্ণা ভাবলো তন্ময়কে শান্ত করা উচিত। তন্ময় এখন’ও অল্প অল্প হাঁপাচ্ছে। এদিকে মুনিয়া তূর্ণাকে বলে গিয়েছে, সে আর আসাদ ফুচকা মামার দোকানে’ই আছে। তার দোকানে প্রচুর ভীর হয় বলে। বেশ মজা’ও খেতে তাই লোকের ভীর বেশী। আর তূর্ণার কথা বলা শেষ হলে তন্ময়কে’ও সাথে নিয়ে যেতে বললো। দু’জনেই প্রস্থান করলো।

এখন তন্ময়ের শ্বাস-প্রশ্বাস একটু ঠিক লাগছে। এতোক্ষন কোমড় ধরে হাঁপাচ্ছিলো সে। এবার সে তূর্ণার দিকে তাকালো। তন্ময় দেখলো তূর্ণা তাকে চোখ বড় বড় করে দেখছে।
তন্ময় ভাবলো তার চেহেরা’য় বোধহয় কিছু লেগে আছে। তাই সে তার বাহু দিয়ে মুখ মুছে চলেছে। তূর্ণা ভাবলো এ বোধহয় পাগল হয়ে গিয়েছে। তা’ও ভদ্রতার খাতিরে সে তন্ময় জিজ্ঞেস করলো, “বলছিলাম আপনার কি কিছু হয়েছে?”
“না তো, কেনো?” তূর্ণাকে লক্ষ্য করে তন্ময় বললো।
“তাহলে বাহু দিয়ে এমন করে অযথা মুখ ডলছেন কেনো, ব্যথা করবে তো!”
“আমার মুখে কি কিছু লেগে নেই তাহলে?” তন্ময় এবার অবাক হয়ে বললো।
“না তো!”
“কি বলছো। আমি আরও ক’ই ভাবলাম, আমার মুখে বোধহয় কিছু লেগে আছে। আসলে তোমার চোখ বড় বড় করে তাকানো’তে আমার তাই মনে হলো।”
তূর্ণা এবার সজোরে’ই হেসে দিলো তন্ময়ের কথা শুনে। তন্ময় এবার মাথা নিচু করে মুখ কিছুটা কাচুমাচু করে আস্তে আস্তে বললো, “বোকা! নাক কাটালি তো সুন্দরীর সামনে। আগে তো জিজ্ঞেস করবি তোর মুখে কিছু ছিলো কিনা। ডাফার তন্ময়!”
“এ্যা! কিছু বললেন?”
“ক’ই কিছু না তো।” এবার তন্ময় বাচ্চা বাচ্চা ফেস করে রেখেছে। তা দেখে তূর্ণা আবার’ও হেসে উঠলো। তন্ময় এবার তূর্ণাতে মত্ত। তূর্ণার হাসি তার কাছে কোনো স্বর্গীয় পরীর মতো লাগছে। এতো ভালো লাগা কাজ করছে তা শুধু তন্ময়’ই উপলদ্ধি করতে পারবে, আর কেউ না। তূর্ণা হাসছে তো হেসে’ই চলেছে। হাসিটা এতো মধুর লাগছে কেনো তন্ময়ের কাছে।

হাসতে হাসতে পেট ধরে আসছিলো বলে তূর্ণা হাসি থামিয়ে তন্ময়ের দিকে তাকালো। তন্ময় তো তূর্ণাতে হারিয়ে গিয়েছে, তার কোনো হুশ নেই। তূর্ণা ভাবলো সে একটু বেশিই হেসে ফেলেছে। তাই বোধহয় ছেলেটা তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। তুড়ি বাজিয়ে তন্ময়ের হুশ ফেরালো তূর্ণা। হুশ আসতেই তন্ময় নড়েচড়ে দাড়ালো।
“তা ভাইয়া, আপনি কি যেন বলতে এসেছিলেন আমায়!”
“ওহ হ্যা। ভুলে গিয়েছিলাম। আসলে আমি এসেছিলাম তোমার সাথে তো তখন কতো কথা’ই হলো, তাই ভাবলাম নামটা’ও জেনে’ই নি না হয়। ”
“জ্বী, আমার নাম তূর্ণা তালুকদার। আপনি যদি কিছু মনে না করতেন তবে আপনার নামটা কি আমি জানতে পারি?” ইতস্ততবোধ করে বললো তূর্ণা।
“হ্যা অবশ্যই! আমার নাম তন্ময় চৌধুরী। তোমার নামটা কিন্তু খুব মিষ্টি তূর্ণা।” একগাল হেসে তন্ময় তূর্ণাকে বললো। তূর্ণা’ও একটু মুচকি হেসে ধন্যবাদ জানালো।
“তবে একটা জিনিস খেয়াল করেছো তূর্ণা?”
“কি!” তন্ময় কি বলছে তূর্ণার মাথাতে’ই ঢুকছে না।
“আমার নামের প্রথম অক্ষর “ত” এবং তোমারও “ত” আছে। বেশ মিল তাই না!” খুশিতে গদগদ হয়ে কথাটা বললো তন্ময় তূর্ণাকে। তূর্ণা তন্ময়ের কথা শুনে মুচকি হেসে বললো, “জ্বী ভাইয়া।”

“কি ভাইয়া, ভাইয়া লাগায় দিছো বলো তো। আমি তোমার কবে কালের ভাই লাগি শুনি, ভাইয়া বলতে বলতে তো মুখের বুলবুলি এক করে দিচ্ছ।” তন্ময় তার প্রেয়সীর মুখ থেকে আর ভাইয়া শুনতে পারছে না। বেশি ‘ভাইয়া ভাইয়া’ করলে তন্ময় কবে যেন হার্ট এ্যাটাক’ই করে বসবে। তাই তো একটু রাগী কণ্ঠে তূর্ণাকে ধমকালো তন্ময়।

তূর্ণা তো তন্ময়ের ব্যবহারে “হা” হয়ে গিয়েছে। চোখ বোধহয় এবার বেড়িয়েই আসবে। তন্ময় ব্যপারটা বুঝতে পেরে বললো, “সরি! আসলে তুমি আমায় ভাই বলো তা আমার ভালো লাগছে না। এত্ত কিউট একটা মেয়ের ভাই হতে চাই না আমি। ভাই বললে সবাই আমাকে তোমার সত্যিকারের ভাই বানিয়ে দিবে। তারপর একদিন তোমার বাবার সম্পত্তি’র ভাগ নিয়ে নিলে। না বাবা আমি কারো ভাইয়া হতে পারবো না।” এবার তন্ময় একটু অদ্ভুত আচারণ করায় তূর্ণা মিনিট এক তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে থেকে ফিক করে হেসে দিলো। তন্ময় তো আর নিতে পারছে না তূর্ণার হাসি।
“এই মেয়েটা কি জাদু করতে পারে নাকি। বার বার কোনো না কোনো ভাবে আমি ওর প্রেমে ঘায়েল হই’ই। ইশ আর যে সহ্য হচ্ছে না। হৃদপিন্ড তো এবার বেড়িয়ে আসবে আল্লাহ।”

…………………
তূর্ণা তন্ময়কে জোর করে ফুচকা ওয়ালা মামার দোকানে নিয়ে এসেছে। তন্ময় একবার ফুচকা খেয়েছিলো, তবে ও ঝাল খেতে পারে না বলে’ই তার ফুচকা অপছন্দ। তূর্ণা তন্ময়কে জিজ্ঞেস করেছে, সে ঝাল বেশি খায় কি না। তন্ময় আনমনে চেয়ে মাথা নেড়ে হ্যা বলে দিয়েছে। আসলে সে ফুচকা’র ঝালের কথা মনে করছিলো আর তখন’ই তূর্ণা তন্ময়কে ঝাল খাওয়ার কথা বললো।

তূর্ণার খাওয়ার দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে তন্ময়। তূর্ণা এতো উপভোগ করে ফুচকা’টা খাচ্ছিলো যে তন্ময় হারিয়ে গিয়েছে তূর্ণাতে। তূর্ণার আর কত রূপ যে তন্ময়কে ঘায়েল করবে কে জানে।
তূর্ণা প্রচুর ঝাল দিয়ে ফুচকা খাচ্ছে। তাই তো ঝালে ঠোঁট লাল হয়ে গিয়েছে। তূর্ণা একটা করে ফুচকা’য় চামচের মাধ্যমে অনেক ঝাল-টক নিয়ে সাথে সাথেই পুরো ফুচকা মুখে পুরে দেয়। তূর্ণা ফুচকা’টা মুখে পুরে দিয়েই চোখজোড়া বন্ধ করে ফেলে, ঠোঁট জোড়া চুম্মা’র মতো ভঙ্গিমায় ফুচকা খেয়ে যাচ্ছে। আর হাত দিয়ে ঠোঁটের ঝালে বাতাস করছে। ঠোঁটে ঝালের রস লেগে থাকায় ঠোঁট’কে রসালো করে তুলেছে এবং প্রচুর লাল’ও। তন্ময় অবাক চোখে তূর্ণার ফুচকা খাওয়া দেখছে। মুনিয়া আর আসাদ একে অপরের দিকে ফিরে ফুচকা খাচ্ছিলো বলেই কিছু’ই দেখতে পাচ্ছে না।

কিছুক্ষণ বাদে তূর্ণা খেয়াল করলো তন্ময় খাচ্ছে না। এদিকে তার প্লেট প্রায় ফাঁকা হতে চললো আর তন্ময় কি না ফুচকা খাচ্ছেই না। তূর্ণার মুখে একটি ফুচকা ছিলো তাই মুখ দিয়ে আওয়াজ না করে চোখের ইশারায় তন্ময়কে ফুচকা খেতে বললো। তন্ময় তো জানে’ই না ফুচকা’য় অনেক ঝাল দেওয়া।

তূর্ণার মতো করে তন্ময়ও ফুচকা মুখে পুরে নিলো। কামড় দিয়ে’ই তন্ময় ভাবলো আজ সে শেষ। এমনি ঝাল দেওয়া হয়েছে, মনে হচ্ছে মরিচের সব গুড়ো তন্ময়ের প্লেটে’ই দেওয়া। তন্ময় এবার পাগলের মতো মুখের ফুচকা’টা নিয়েই এদিক-ওদিক দৌড়াচ্ছে। ভর দুপুরে তন্ময়কে সবাই “ডিজিটাল পাগল” ভাবছে। তূর্ণা তো তন্ময়ের কাণ্ডে ভ্যাবাচেকা খেয়ে তন্ময়ের পিছনে ছুট লাগালো। কিন্তু তন্ময়ের থামার কোনো নাম গন্ধও নেই। তূর্ণা এবার কি করবে।

……………………..
তন্ময়ের থেকে ঝাল সম্পর্কে জেনে তূর্ণা আফসোস করলো। কারণ সে’ও বুঝতে পারে নি, আর তন্ময়ও। তবে একদিকে তূর্ণার খুশিই লাগছে। তূর্ণা তো তন্ময়ের প্লেটও ফাঁকা করে দিবে। তন্ময় তো আর খাবে’ই না। প্রচুর পানি খেয়েছে সে, তাতেই পেট পানিতে ফুলে গিয়েছে। তূর্ণার আগের ভঙ্গিমায় ফুচকা খাওয়া দেখে তন্ময়ের মনে হলো তার ঝালে জিব্বাহ পুড়ে যাওয়া এবার ঠিক হলো বোধহয়। একদৃষ্টিতে তূর্ণাকে দেখায় ব্যস্ত সে।

আসাদ আর মুনিয়া শপিংয়ে গিয়েছে। তবে মুনিয়া বলেছে যাওয়ার সময় সে তূর্ণাকে সাথে করে নিয়ে যাবে। তাদের বাসা পাশাপাশি প্রায়।
তূর্ণা আর তন্ময় ভার্সিটির পিছনে বড় লেক এর পাশে বসে আছে। তন্ময় তূর্ণার দিকে তাকিয়ে থাকলেও তূর্ণা অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। তন্ময়ের তাকিয়ে থাকা দেখে ফিরে তাকালো সে।
“আচ্ছা আপনি তো আমাকে ভাইয়া বলতে মানা করেছেন। তাহলে আমি আপনাকে কি বলে ডাকবো?”
তূর্ণার প্রশ্ন শুনে তন্ময় মুচকি হেসে বললো, “কেনো, আমায় বন্ধু ভাবতে পারবে না। আমি কি তোমার বন্ধু হতে পারি না!”
“এমা তা কি করে হয়। আপনি আমার সিনিয়র। আবার বয়সে’ও তো বড় কিছুটা। আমাদের কি বন্ধু হলে মানাবে বলুন।” হেসে’ই বললো তূর্ণা।
“কেনো নয়। আমি কি বুড়ো হয়ে গেছি নাকি। সিনিয়র আর বড় হয়েছি বলেই কি আমাকে বন্ধু ভাবা যাবে না নাকি। এখন থেকে তুমি আমাকে তন্ময় বলে এবং বন্ধু’ই ভাববা। আমি কোনো এক্সকিউস শুনতে চাই না বলে দিলাম।” ঠোঁট ফুলিয়ে বললো তূর্ণাকে কথাগুলো। তূর্ণা হেসে দিয়ে বললো, “আচ্ছা তন্ময় বলে’ই ডাকবো। কিন্তু তুমি বলতে সময় লাগবে। তবে আমরা বন্ধু। থুক্কু আপনি আমার সিনিয়র বন্ধু। হিহিহিহি।” তূর্ণার হাসি দেখে তন্ময় বার বারই ঘায়েল হয়।

…………………….

তন্ময়ের তো রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে তূর্ণা। আজকাল আর সুষ্ঠু ঘুম হয়না তার। বিছানায় বসে এপাশ থেকে ওপাশ করছে। কিছু’ই যে ভালো লাগছে না। রাত প্রায় ১২ টা বেজে চললো। তন্ময় একবার ভেবেছিলো তূর্ণার বাসার ওদিকে যাবে তূর্ণাকে দেখতে। পরে ভাবলো মেয়েটা বোধহয় এখন ঘুমিয়ে আছে। তার বাবা’ও এখন বাসায়।

তন্ময় তার বাবাকে খুব ভয় পায়। বাবা বাসায় থাকলে তন্ময় তো সন্ধ্যের পরে কোথাও যেতে পারে না বললে’ই চলে। তাই এখন আফসোস হচ্ছে, কেন সে তার বাবাকে ভয় পায়। তা না হলে তো তূর্ণার সাথে দেখা হতো তন্ময়ের।

তন্ময়ের পরিবারে থাকেন তন্ময়, তার বাবা তারিকুল চৌধুরী, মা আফরোজা জান্নাত, ছোট ভাই তূর্জয় চৌধুরী, ছোট বোন তানিয়া চৌধুরী এবং সাথে দাদী আমেনা বিনতে। পরিবারের সকলেই খুব ভালো। কিন্তু তন্ময় তার বাবা’কে ভালোবাসে এবং ভয়ও পায়।
তারিকুল চৌধুরী বেড়াতে এসেছেন দেশে। তারিকুল চৌধুরীর ভাই আহাদ চৌধুরী দু’জনে একসাথে জাপানে তাদের ক্যাফেটেরিয়া’টা চালন করেন। অনেক দিন পরে দেশে আসায় ভেবেছেন কিছু দিন থেকেই যাবেন তারিকুল চৌধুরী। তন্ময়দের নিজস্ব একটি ফ্ল্যাট আছে। তাদের বাসা উত্তরার দিকে।

তূর্জয় তন্ময়ের ছোট ভাই। তবে তানিয়ার চেয়ে ৩ বছরের বড় তূর্জয়। প্রচুর দুষ্টু সে। এবার এইচ.এস.সি. দিয়েছে। পড়াশোনায় মোটামুটি। তন্ময়ের বোন’টা বেশ শান্তশিষ্ট হয়েছে।

তন্ময়ের ভালো লাগছিলো না বলে গিটার হাতে নিয়ে ছাদে যায়। ছাদে গিয়ে’ই দেখে ছাদের কোণায় কেউ একজন সিগারেটের ধোয়া উড়াচ্ছে। তবে সে জানতো না কে। ছেলেটার পাশে গিয়ে বললো, “রাতে ছাদের কেণে সিগারেট খাচ্ছো, লজ্জা করে না তোমার। তোমার মা-বাবা জানলে কতো কষ্ট পাবে তা কি কখনোই ভেবেছো তুমি!”

বড় ভাইয়ের আওয়াজ শুনে তো থতমত খেয়ে যায় তূর্জয়। এতোদিন সবার অগোচরে সিগারেট খেয়েছে সে। আর আজ বড় ভাইয়ের হাতে ধরা পরে গেলো। ভাবতেই একটু ভয় হলো।
এবার কি করে পালাবে তন্ময়ের থেকে তূর্জয়?
#বেলা_শেষে_ফেরা

#পর্ব_৭

#লেখনীতে_Suchona_Islam

তন্ময়ের আওয়াজ পেয়ে তো তূর্জয় কাশতে কাশতে শেষ। ভাই যদি একবার জানতে পারে, তাহলে তার কি হাল যে করবে!
“কি হলো কথা কানে যায় নি। এভাবে এখনো বড় ভাইয়ের সামনে দাড়িয়ে বেয়াদবি করবে?”
তূর্জয়ের তো ভয়ে কাঁপাকাপি অবস্থা। এবার তো তার বাঁচার উপায় নেই। তাই ভাবলো পালিয়ে আর হবে কি। একটা ম্যান্দামার্কা হাসি দিয়ে ভাইয়ের দিকে ফিরে দাঁড়ালো। তন্ময়ের তো বিস্ময়ের শেষ নেই। শেষে কি না তার ছোট ভাই সিগারেট খাচ্ছে। যেখানে তন্ময় সিগারেটের ধোঁয়া পর্যন্ত সহ্য করতে পারে না, আর সেখানে কি না তূর্জয়। না আর ভাবতে পারছে না তন্ময়। তূর্জয়’কে এখন কি করা উচিত তন্ময়ের। থম মেরে দাঁড়িয়ে আছে তন্ময়।

তূর্জয় এই সুযোগে পালাতে লাগলো। তবে ছাদের গেটের কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে পরে ভাইয়ের ডাকে পিছনে ফিরে গেলো। দুঃখে তার চোখ দিয়ে পানি’ও পরে না। তূর্জয় তন্ময়ের কাছে আসতেই সে দেখলো, তন্ময় এক বিকট দুষ্টু হাসি তার দিকেই তাকিয়ে দিচ্ছে। বড় একটা ঢোক গিললো তূর্জয়।

“ভাই আমার ভুল হয়ে গেছে। আমাকে ক্ষমা করে দে প্লিজ। আর জীবনেও সিগারেট খামু না।” কান ধরে ৫০০ বার উঠ-বস করছে আর কান্না গলায় তন্ময়ের কাছে অনুনয় করছে তূর্জয়। তন্ময়ের বেশ ভাল’ই লাগছে, আনন্দে বুক ফেটে আসছে তার। অবশেষে তূর্জয়কে সে এবার হেনস্তা করে ছাড়লো, যেখানে তন্ময়কে এতোদিন তূর্জয় হেনস্তা করেছে। ‘হাহাহা’ করে একটা ভিলেন হাসি দিলো তন্ময়। ভাইয়ের হাসিতে তূর্জয় ‘ভ্যা’ করে কেঁদে’ই দিলো।

“আচ্ছা তোকে কি শাস্তি দেওয়া যায় বল তো!” ছাদের রেলিংয়ের উপরে বসে, দু’হাত রেলিংয়ের দু’পাশে দিয়ে আকাশের বড় চাঁদের দিকে তাকিয়ে তূর্জয়কে কথাগুলো বলছে তন্ময়।

“ভাই রে এবারের মতো ছেড়ে দে। বললাম তো আর সিগারেট খাবো না। উফঃ আমার পা ব্যথায় কাঠ হয়ে গেলো। প্লিজ ভাই ছেড়ে দে!” মিনতির স্বরে কথা’টা বললো তূর্জয়।
“তুই যে আবারও এই কাজ করবি তা আমি বেশ ভাল করেই জানি।”
“তা জানিসই যখন তখন ৫০০ বার কান ধরে উঠ-বস করালি কোন দুঃখে কুত্তা।” মিনমিন করে বলছিলো কথা’টা তূর্জয়। তবে তন্ময় ভাল মতই তার কথা শুনেছে। কিন্তু সে কথা’টা সম্পূর্ণ এড়িয়ে গিয়ে, জেনেও না জানার ভাব ধরে বললো, “এ্যা! কিছু বললি বোধহয়।”
“আরে না কি যে বলিস না। আমি কোথায় কি বললাম। এমনিতে’ই পা’য়ের জ্বালায় বাঁচি না। উফঃ আমার সোনা, সুন্দর লম্বা লম্বা পা দু’টো!” এখন একটু কান্নার অভিনয়ে কথাগুলো বললো তূর্জয়। তন্ময়ের বেশ হাসি পেল। এবার তূর্জয়কে বেশ করে জব্দ করবে তন্ময়। ভাবতে’ই তার মন পৈশাচিক আনন্দ পায়। তবে তূর্জয়কে জব্দ করায় বোরিংনেস ‘টা কম হয়েছে তন্ময়ের।

…………………….

আজকে তূর্জয়কে সাথে করে ভার্সিটিতে নিয়ে এসেছে। যেমন তন্ময় ঠিক তেমনি তার ভাই তূর্জয়। দেখতে দু’জনেই মাশা-আল্লাহ। সব মেয়ের মন জয় করার অস্ত্র বোধহয় তাদের কাছে’ই মজুদ। ক্যাম্পাসের সব মেয়েরা তো দুই ভাই’কে গিলে গিলে খাচ্ছে।

“থ্যাংকস মামা থুক্কু ভাই, ভাই!” ভ্যাবাচেকা খেয়েছে তূর্জয়। এই সুযোগ’ই এবার তন্ময় নিবে।
“ওহ! তাহলে পাড়ায় আড্ডাও হয় বুঝি। চিন্তা করিস না। ছবির সাথে তোর এই কথা’টাও পাচার হবে বাবার কাছে।” তন্ময়ের তো সুখের শেষ নেই। ভাইয়ের আর কত যে গোপন তথ্য সে পাবে আর ব্ল্যাকমেইল করবে।
“দেখ ভাই ব্ল্যাকমেইল করবি না। এবার তুই অতিরিক্ত করছিস। আরে আমার মুখ ফোসকে বেড়িয়ে গিয়েছে মামা শব্দ’টা। আর থ্যাংকস এইজন্যে দিলাম তোকে, কারণ আমার শখ ছিলো সিনিয়র আপুদের ক্রাশড হবো। তুই তো দেখি পুরো ভার্সিটির ক্রাশড। তোর সূত্রে আমিও এবার ক্রাশড হবো। ভাবতেই ভিতর থাইকা জিল্লানী বাইর হইতাসে।” খুশিতে গদগদ হয়ে কথাগুলো বলছিলো তূর্জয়।
তন্ময়’ও সজোরে হেসে দেয় তূর্জয়ের কথা শুনে। তূর্জয় এবার একটু রাগী গলায় বললো, “এই আমি কি জোকার যে, তোর আমার কথায় হাসি পাবে। আরে কই ভাবলাম একটু চিল করবো। তা না কুত্তা’টা আমাকে জ্বালিয়ে মারছে।” মুখ বাঁকিয়ে তূর্জয় তন্ময়কে কথাগুলো শুনিয়ে যাচ্ছিলো। ‘কুত্তা’ শুনে তন্ময়ের চোখ তূর্জয়’তে পরলেই তূর্জয় আমতাআমতা করে বলে, “আআআরে চিল ভ্রো। আমি তো তোর পায়েরী ভাই তাই না।” এবার একটু ভাব ধরলো তূর্জয়।
“তুই আজ শেষ তূর্জয়। আমি বাবাকে বলে দিবো দ্যাট’স ইট!” চোখ রাঙ্গিয়ে কথাগুলো তূর্জয়কে বলছিলো তন্ময়।

তূর্জয়’ও তার বাবাকে প্রচণ্ড ভয় পায়। তারিকুল চৌধুরী মানুষটা’ই অনেক স্ট্রেইট। দুই ভাই তো প্রচুর পরিমানে ভয় পায় তাদের বাবাকে। আর বাবার কানে যদি তূর্জয়ের এসব কথা কানে যায়, তবে ভূমিকম্প হয়ে যাবে বাসায়। তাই ভয়ে একটা শুকনো ঢোক গিললো, সাথে ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে শুকনো একটা হাসি’ও দিলো। তন্ময় ডেভিল হাসি দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তূর্জয় মনে মনে তার ভাইকে ‘কুত্তা’ বলে বকা দিয়ে দিয়ে শেষ করে দিচ্ছে।

………………………

সামনেই তূর্ণা বটবৃক্ষের নিচে বসে আছে। তার হাতে একটা আর্টবুক হবে হয়তো। পাশেই কতক গুলো রঙের ছড়াছড়ি। তন্ময় তূর্ণা দেখে’ই তূর্জয়কে তার কাছে ডেকে নিলো। তূর্জয় সামনে যেতে’ই তন্ময় তূর্নাকে হাত দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে বললো, “এটা তোর ভাবী হয় বুঝলি। একে’ই আমি আমার বউ করে ছাড়বো মিলিয়ে নিশ তুই।”

তূর্জয় এবার তূর্ণাকে ভালোভাবে লক্ষ করে তন্ময়কে বললো, “আজ তোর প্রতি আমার গর্ভ হচ্ছে। এমন কিউট মেয়েই তোর বউ হবে। ওয়েট আমি ভাবীকে ডাকছি।” কথা’টা তন্ময়কে বলতেই যেই না শব্দ বের করবে আর ওমনি তন্ময় তূর্জয়ের মুখ চেপে ধরে। সে তূর্জয়কে বললো তূর্ণা এখনো জানে না এসবের কিছু’ই। তাই সে’ও চুপ থাকলো।

“আচ্ছা ভাবী থুক্কু আপু আপনাকে একটা প্রশ্ন করতাম?” তূর্ণাকে তূর্জয়ের করা প্রশ্ন।
“জ্বী ভাইয়া বলো।” তুমি করে’ই বলছে, কারণ তূর্জয় ২ বছরের ছোট হবে তূর্ণার তাই।
“আপনি কি দুনিয়াতে আর কোনো পোলা খুঁজে পেলেন না। এই ম্যান্দামার্কা’রেই আপনার ফ্রেন্ড করতে হইলো। আরে বুইন জীবন শেষ করে দিবে এ পোলায় আপনার। সময় থাকতেই পালাইয়া যান।” আকুতি ভাব নিয়ে তূর্নাকে তূর্জয় কথাগুলো বলছিলো। কিন্তু তূর্জয়ের মনে হলো তার কান কেউ সজোরে টানছে। সে আর কেউ নয় তন্ময়। তূর্জয়ের অবস্থা এখন এমন বিপাকের উপর বিপাক দিয়ে’ই যাচ্ছে।

দুই ভাইয়ের আচারণ তূর্ণার মাথাতে’ই যাচ্ছে না। সে কতো সুন্দর করে তার ভাইকে আদর করে আর তন্ময় এবং তূর্জয় দু’জনেই ভিন্ন। একজন কান মলাতে ব্যস্ত তো, তো আরেকজন কুত্তা বলছে। এসব দেখে তূর্ণা দু’জনকেই ধমকে থামতে বলছে। পাশ থেকে ধমকের সুরে আওয়াজ আসায় দু’জনেই দেখে যে তূর্ণা রেগে গিয়েছে। তাই দু’জন একসাথে’ই চুপ হয়ে গেলো।

“শুনুন আপনারা দুই ভাই দুই’টা পাগল। আরে আমার’ও ভাই আছে। ওকে আমি যেমনভাবে রাখি, যেমন করে বুঝাই লক্ষী ছেলের মতো সব শুনে। আর আপনারা বুড়ো দামড়া দু’টো ছেলে হয়ে’ও এখনো সভ্যতা শিখেন নি।” তূর্ণা চটে গিয়ে কথাগুলো শোনালো ওদের। ওরা দুই ভাই’ই চুপ’শে গিয়েছে।
“তন্ময়! আমি এবার আসি। আজ আমার ইম্পরট্যান্ট ক্লাস আছে। আপনারা থাকুন!” এ বলে’ই তূর্ণা প্রস্থান করলো সেখান থেকে। দু ভাই আবার’ও ঝগড়ায় লেগে গেলো। সে বলে তার দোষ আবার অপরজন বলে তার দোষ। এতেই তুমূল ঝগড়া’র সৃষ্ট।

……………………..

“এই ছেলে বেশি কথা বলবা তো এক থাপ্পড়ে তোমার গালের ডিজাইন চেন্জ করে দিবো। বেশি দেমাগ দেখাও আমার সাথে।”
“হ ভাই দেন এক থাপ্পড়। তবে আমার একটা রিকুয়েস্ট ডিজাইন করলে হ্যান্ডসাম পোলার ডিজাইন কইরেন। এমনিতে’ই কপালে গিএফ নাই। জীবনতাই বেদনার। আর আপনি তো আমাকে ফ্রী’তেই সার্ভিসিং করবেন। তো খুব সুন্দর করে করিয়েন কেমন!” তূর্জয় কথাগুলো রাগ এবং অনুরোধভাবে বললো অপরিচিত লোকটা’কে। লোকটা হ্যাবলার মতো তাকিয়ে আছে তূর্জয়ের কথা শুনে, সাথে তন্ময়’ও। এমনি’তেই ভাইয়ের সাথে তর্কাতর্কি হওয়ায় তার মেজাজ হাই টেম্পারেচার, তার উপর এই আবাল মার্কা রিকশাচালক কি না একজনের গাড়ির সাথে টক্কর লাগিয়ে দিয়েছে। তন্ময়’ও সাথে ছিলো।
তন্ময় সেই ব্যক্তি’কে সরি বলেছে’ও কিন্তু ব্যাটার মাঝে কোনো অনুশোচনা নাই। তাই বাধ্য হয়ে তূর্জয়’ই লোকটা’কে টাইট দিলো। লোকটা ক্যাবলাকান্তের মতো তার দিকে তাকিয়ে আছে তার দিকে।

“এই মিয়া আপনার তো তাও গাড়ি আছে। সেখানে কিইবা এমন ক্ষতি হয়েছে শুনি। কিন্তু এই রিক্সা মামার তো আপনার মতো টাকা-পয়সা নাই। সে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে টাকা’টা অর্জন করছে। আপনার গাড়িতে ছায়া নামক স্থান আছে, সে কি এমন ছায়া পায়। না! সে রৌদ্দুরে’ও এক টাকার বিনিময়ে তার জীবনচালনা তৈরী করেন। আপনার যেমন পরিবার আছে, তেমনি তার’ও আছে। তার মাঝে আপনার পার্থক্য কি জানেন, আপনার কাছে টাকার অভাব নাই আর তার এক টাকার জন্য হলেও রাস্তায় পরে পরে মরতে হয়।” একটানা কথাগুলো বলে’ই তূর্জয় একটা নিশ্বাস নিলো। তন্ময় তার ভাইকে দেখে পুরোই অবাক। ভাইয়ের মাঝে এমন মহৎ গুন’ও যে বিদ্যমান তা সে কখনোই উপলদ্ধি করেনি। তার চোখের কোণটা একটু নোনাজলের ছোয়া পেলো। লোকটা’ও তূর্জয়ের কথাটা বুঝতে পেরে অনুশোচনা করলো।

রিক্সা চালককে ২০০ টাকা হাতে গুঁজে দিয়ে লোক’টা চলে গিয়েছে। কান্না করতে করতে তূর্জয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বুড়ো রিক্সা চালকটা তূর্জয়কে ধন্যবাদ দিয়েই চলেছে। এই ২০০ টাকাই আজ তার পরিবারের অন্ন এর সমস্যা দূর হবে। দু’মুঠো একবেলা প্রাণ ভরে খেতে পারবে হয়তো। তন্ময় তূর্জয়কে হঠাৎ জড়িয়ে ধরলো। তূর্ণা ঠিক’ই বলেছে, সে যদি একটু তার ভাইকে বুঝায়, ভালো ব্যবহার করে। তবে তাদের সম্পর্ক’টাও খুবই সুন্দর হবে।

তন্ময়ের বাবা ইচ্ছে করেই গাড়ি কিনেন নি। কারণ তার ভাবনা ছেলেদের নিজের যোগ্যতায় সব’টা সামলানো উচিত। এখন তো পড়াশোনার খরচের পাশাপাশি যাবতীয় খরচ বহন সে করছে’ই। কিন্তু ছেলে-মেয়েদের বেশি বিলাসকতায় রাখলে’ই তারা হবে ‘হৃদহীন মানুষ’। তাই তো সে সব সময় তার সন্তানের উপর একটা রাগী আবছা পোষণ করে রাখে, যাতে সন্তানেরা সঠিক সময়ে তাকে বুঝতে পারে।

তন্ময় রিক্সা চালক’কে ৫০০ টাকা’র নোট হাতে ধরিয়ে দিলো। এবার’ও লোকটা কান্না করে’ই যাচ্ছে আর বলছে, “আল্লাহ তুমাগো ভালা করবো বাজানে’রা। তুমরা যা আমার জন্যে আজকে করলা তা আমি জীবনে’ও ভুলমু না। আল্লাহ তুমাগো মনের আশা পূরন করবো দেইখো বাজান’রা।”
“দোয়া করবেন মামা থুক্কু দাদার বয়সী আপনি তাই দাদা’ই বলে সমোন্ধন করলাম।” হাসি মুখে দুই ভাই বিদায় দিলেন বুড়ো মানুষ’টাকে। বেলকনি থেকে দাড়িয়ে তারিকুল চৌধুরী সব’টা দেখে এক বুক হাসি নিয়ে রুমে প্রবেশ করলেন।

#ক্রমশ…

(গল্পের তূর্জয় চরিত্র’টা একটু হাস্যকর হবে। তবে আশা করি সকলের ভালো লাগবে গল্পটা। আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না। পাশে থাকবেন এটাই চাওয়া।
আর আজকের অনুগল্প লিখায় এক পর্বই দিচ্ছি। তার জন্যে দুঃখিত। তবে অনুগল্প’টা কিছু বাস্তবকে সমোন্ধন করে।
স্ববিনয়ে পড়ুন এবং ধন্যবাদ সবাইকে।)
বি.দ্র. আমাদের এখানে প্রচুর লোডশেডিং হচ্ছে তাই গল্প দিতে দেরি হলো, তার জন্যে দুঃখিত আমি।
#ক্রমশ….

(আপনার মতামত জানান আমাকে, যেন গল্পে উৎসাহিত হতে পারি।
স্ববিনয়ে পড়ুন এবং ধন্যবাদ সকলকে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here