বৈধ সম্পর্ক সিজন ২ পর্ব ১৪

#বৈধ_সম্পর্ক
#সিজন_২
#পর্ব_১৪
#Saji_Afroz
.
.
.
-আমি তোমার সাথে আছি, তুমি এদিক ওদিক কি দেখছো?
.
উপমার কথা শুনে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মেয়ের দিকে তাকিয়ে আরাফ বললো-
মেয়ে দেখছি।
.
আরাফ যে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে উপমা সেই মেয়েটির দিকে এগিয়ে গিয়ে বললো-
ওই যে সবুজ শার্ট পরিহিত ছেলে টাকে দেখছো, সে আমার বফ।
.
মেয়েটি খানিকটা বিরক্তিভাব নিয়ে বললো-
তা আমি কি করবো?
-কখনো যদি তোমাকে প্রপোজ করে বসে তাই জানিয়ে দিলাম।
-বিশ্বাস নেই নিজের বফ এর উপর?
-অবশ্যই আছে।
-তাহলে এসব কোন ধরনের আচরণ!
.
পরিস্থিতি ঘোলাটে হবার আগেই আরাফ তাদের মাঝে এসে মেয়েটির উদ্দেশ্যে বললো-
আসলে আমরা চ্যালেঞ্জ ধরেছিলাম।
.
আবার উপমার দিকে তাকিয়ে আরাফ বললো-
হয়েছে তুমি জিতেছো। চলো এখন।
.
.
কিছুদূর দুজনে এগিয়ে আসার পর উপমার উদ্দেশ্যে আরাফ বললো-
আসলেই তুমি আমাকে বিশ্বাস করোনা?
-তুমিই তো বলেছো মেয়ে দেখছো তুমি।
-এসব তো মজা করে করেছি।
-আমি কিন্তু মজা করিনি। আমি তোমার পাশে কাউকে সহ্য করতে পারিনা এবং পারবোনা।
-করতেও হবেনা।
-কি করে বিশ্বাস করবো! তোমার বাবা তো দুটো বিয়ে করেছে। আমি বুঝিনা তোমার মায়েরা কিভাবে একে অপরকে সহ্য করে!
.
উপমার হাতটা ধরে আরাফ বললো-
আব্বু পরিস্তিতির স্বীকার ছিলো। তাছাড়াএসব দুই যুগ আগে হয়েছে। আমার সাথে এমন কিছু হবেনা। তুমি আমি ঠিক থাকলে সব কিছুই ঠিক। বর্ণমালার ভ দিয়ে, শুধু তোমার ভালোবাসা আর ভরসা দরকার আমার।
.
মৃদু হেসে উপমা তার হাত ধরে বললো-
হুম।
.
.
আগের কথা ভেবে ভেবে আরাফের চোখের কোণায় পানি জমে গেলো।
উপমা তার ফ্যামিলি নিয়ে আগেও এসব বললেও পাত্তা দেয়নি আরাফ।
কিন্তু কাল সে যা যা বললো তাতে খুব বেশিই কষ্ট পেয়েছে আরাফ।
ভালোবাসায় কি সব? যেখানে ভরসা নেই, সম্মান নেই।
বিয়ে মানে তো দুটো মানুষের মিলন না শুধু। দুটো পরিবারেরও মিলন। আর উপমাসহ তার পরিবার আরাফের পরিবার নিয়ে কাল যা যা বলেছে সেসব চাইলেও ভুলতে পারছেনা আরাফ।
.
বিছানা ছেড়ে উঠে সারারুমে পায়চারী করতে থাকলো আরাফ।
এতো কিছুর পরেও সে উপমাকে ভুলতে পারছেনা কেনো!
যে হাত দিয়ে উপমাকে চড় মেরেছে সেই হাতটা দিয়ে দেয়ালের মাঝে ঘুষি দিতে লাগলো আরাফ।
এক পর্যায়ে মেঝেতে বসে পড়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সে বললো-
এসব না হলেও পারতো।
.
.
.
রুপা আক্তারের সামনে বসে আছে সায়নী ও মুনিরা।
রুপা আক্তার তাদের খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছেন।
মুনিরার এখানে আসার ইচ্ছে না থাকলেও সায়নীর কথায় আসতে হয়েছে।
যে কারণে এসেছে আদৌ তা সফল হবে কিনা জানেনা।
.
রুপা আক্তারের উদ্দেশ্যে সায়নী বললো-
আমরা কি একটু উপমার সাথে কথা বলতে পারি?
-আমার মেয়ে এতো সকালে ক্লাস না থাকলে ঘুম থেকে উঠেই না।
-আরাফের আম্মুরা এসেছে জানলে নিশ্চয় আসবে সে।
-সেটা জানলে মোটেও আসবেনা।
-বেশি সময় নিবোনা। ৫টা মিনিট কথা বলেই চলে যাবো।
-আপনি বরং ৫সেকেন্ডও অপেক্ষা না করে চলে যান।
.
মুনিরা গম্ভীর গলায় বললো-
উপমা না আসা পর্যন্ত আমরা যাচ্ছিনা। আপু তো বললোই বেশি সময় নিবো না।
-আহ মুনিরা তুই থাম, আমি কথা বলছি তো।
.
সায়নী ও মুনিরার কথা শুনে রুপা আক্তার বললেন-
-বাহ! একজনের প্রতি আরেকজনের এতো দরদ! সবই লোক দেখানো।
.
সায়নী বললো-
যা ভাবেন। তবে আপনারা ভুল ভাবছেন। আমাদের সাথে যা হয়েছে আরাফের সাথেও হবে কথা নেই। আরাফের জীবনে উপমা ছাড়া কেউ আসবেনা। আমরা গ্যারান্টি দিচ্ছি।
.
সায়নীর কথা শুনে হেসে উঠলেন রুপা আক্তার। হাসতে হাসতেই বললেন-
নিজেদের জীবনের কোনো গ্যারান্টি নেই অন্যের টা নিয়ে কথা বলতে আসছে।
-অন্য মানে কি! আরাফ আমাদের ছেলে।
-ওহ তাই! দুজনের পেটেই নিশ্চয় থাকেনি সে। আরাফের আসল মা কে?
.
মুনিরা জবাব দিলো-
আমরা দুজনেই।
-আপনাদের যে লজ্জা নেই এই বিষয়ে আমি আগেই অবগত হয়েছিলাম। কিন্তু আমার ভাবনার বাইরে নির্লজ্জ আপনারা। নাহলে কাল এতো কিছুর পরেও কিভাবে এখানে আসতে পারেন!
.
সায়নী দাঁড়িয়ে বলে উঠলো-
আপনার সাথে এতো কথা বলে লাভ নেই। আমি উপমার সাথেই কথা বলে যাবো।
.
কথাটি বলেই সায়নী চেঁচিয়ে ডাকতে থাকলো উপমার নাম ধরে।
সায়নীর ডাক উপমার কানে আসতেই এগিয়ে এলো সে ড্রয়িং রুমের দিকে। জেগেই ছিলো সে। তবে আরাফের মায়েরা এসেছে তা জানতো না।
সায়নী ও মুনিরাকে দেখে চিনতে দেরী হলোনা উপমার।
আরাফের কাছে অনেক ছবি সে দেখেছে তাদের।
তবে আজ তাদের সামনাসামনি দেখতে পেয়ে মনের ভেতরে পুষে থাকা রাগ সব বেরিয়ে আসছে।
কাল এদের জন্যই আরাফ তার বাবা মায়ের সাথে খারাপ আচরণ করেছে। শুধু এটা করেই সে ক্ষান্ত হয়নি। তার গায়ে হাত তুলেছে আরাফ। শুধুমাত্র এই মহিলাগুলোর জন্যই।
উপমা দাঁতে দাঁত চেপে রাগে গিজগিজ করে বললো-
অভদ্রের মতো এভাবে চেঁচামেচি করছেন কেনো?
.
মুনিরা এগিয়ে এসে বললো-
তুমি কতোটা ভদ্র সেটা প্রথম দেখাতেই বুঝে গেলাম।
-আমার বাসায় এসে আমাকেই ভদ্রতা শেখাচ্ছেন?
.
মুনিরার উদ্দেশ্যে সায়নী বললো-
মুনিরা আমাকে কথা বলতে দে।
.
উপমার দিকে তাকিয়ে ছলছল নয়নে সায়নী বললো-
আমাদের ছেলেটা তোমাকে বড্ড ভালোবাসে। আমাদের নিয়ে যে ভাবনা টা তোমাদের হয়েছে তা পরিবর্তন করতে পারবোনা। কিন্তু আরাফের জীবনে এমন কিছুই হবেনা বিশ্বাস করো। আমরা সবাই তোমার কথা জানি। মেনেও নিয়েছি। তুমি ভালো থাকবা।
.
তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে উপমা বললো-
আপনাদের মানা না মানাতে আমার কিছু এসে যায়না। আমার এসে যেতো আরাফ কে নিয়ে। কিন্তু কাল সে প্রমাণ করে দিলো, সেও তার পরিবারের লোকের মতোই হবে। নাহলে কেনো সে কাল আমার মা বাবার কথা হজম করতে পারেনি! উল্টো আমার বাড়িতে থেকে আমার মা বাবার সামনেই আমার গায়ে হাত তুলেছে সে।
-ভুল করেছে উপমা। সামান্য ভুলের জন্য সম্পর্ক নষ্ট করার কোনো মানে হয়?
-আপনাদের মতো অসহায় পরিবারের মেয়ে নয় যে আমি এই ফালতু সম্পর্ক টা ধরে রাখতে হবে আমাকে। আসলে অসহায় বললে ভুল হবে। নষ্ট ফ্যামিলি একটা।
.
সায়নীর উদ্দেশ্যে মুনিরা বললো-
আপু চলো এখান থেকে। যে বুঝেনা তাকে হাজার বুঝিয়েও পারবেনা। একদিন আমাদের অবস্থায় সে পড়বে। সেদিন বুঝবে ভালোবাসা কি আর পরিস্থিতি কি।
.
ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে সায়নী বললো-
হুম তবে সেদিন হয়তো অনেকটা দেরী হয়ে যাবে।
.
.
.
সারারাত টা অস্থিরতায় কেটেছে মেহেনুবার।
তার এতোটা খারাপ কেনো লাগছে নিজেরই বোধগম্য নয়।
আরাফের কাহিনী শুনেই তার খারাপ লাগছে, না জানি আরাফের উপর দিয়ে কি বয়ে যাচ্ছে।
এটা ভেবে দাঁড়িয়ে পড়লো মেহেনুবা।
তাসু গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
মেহেনুবার ইচ্ছে করছে আরাফের কাছে যেতে।
যদিও সকাল সকাল যাওয়া টা ঠিক হবেনা। তবে হোকনা কিছু বেঠিক!
.
.
দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ হতেই দরজা খুলে দিলো আরাফ।
মেহেনুবাকে দেখে ভুত দেখার মতো চমকে গেলো সে।
মেহেনুবা মৃদু হেসে বললো-
আসতে পারি?
-হুম পারো।
.
ভেতরে এসে চেয়ার টেনে বসলো মেহেনুবা।
আরাফ বিছানার উপরে বসতে বসতে বললো-
হঠাৎ কি মনে করে?
-চোখ লাল করে কি লাভ?
.
মেহেনুবার প্রশ্নে চোখ জোড়া কচলাতে কচলাতে আরাফ বললো-
রাতে ঘুম হইনি তো।
-উপমাকে একটা ফোন করলেই পারতে।
.
মেহেনুবার কথা শুনে চমকালো আরাফ।
আরাফ কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই মেহেনুবা বললো-
কাল তোমাদের কথা আড়াল থেকে সব শুনেছি আমি। সরি, এটা আমার উচিত হয়নি।
.
মেহেনুবার কথা শুনে আরাফ বললো-
এতোকিছু ঘটে যাচ্ছে আমার জীবনে, এটা আর এমন কি!
-কষ্ট যখন পাচ্ছোই রাগ, অভিমান করে লাভ কি? আমার মনেহয় তোমার বাসা থেকে ওখানে কেউ গেলেই ভালো হয়। হয়তো বাসার কারো সাথে কথা বললে সবটা ঠিক হয়ে যেতে পারে।
-কাল ওদের সবার চোখে আমি যে হিংস্রতা দেখেছি তা তোমরা দেখোনি। এখান থেকে ওখানে কেউ গেলে অপমান ছাড়া কিছু হবেনা।
.
বলতে বলতেই ফোন বেজে উঠলো আরাফের।
উপমার ফোন দেখে মেহেনুবার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললো-
উপমার ফোন!
.
মুখে হাসি ফুটিয়ে মেহেনুবা বললো-
নিশ্চয় ভুল বুঝতে পেরে ফোন দিয়েছে। রিসিভ করো।
.
আরাফ রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে কর্কশ কণ্ঠে বললো-
নাটকের শেষ নেই। নাটক করতে আবার আমার বাসায় মা দের পাঠিয়েছো। লজ্জা করেনা তোমার?
.
উপমার কথার কিছুই আরাফ বুঝতে পারলোনা।
সে জিজ্ঞেস করলো-
কি বলছো তুমি কিছুই বুঝলাম না।
-বুঝোনা নাকি ভান করো! এতোটা নির্লজ্জ তোমরা জানা ছিলোনা আমার। তোমার মায়েদের যে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিইনি এটাই বেশি বলো।
.
দাঁতে দাঁত চেপে আরাফ বললো-
আমার আম্মুরা ওখানে যাবে জানলে কখনো যেতে দিতাম না। আর তোমার জন্য একটু আগেও আমার খারাপ লাগা কাজ করছিলো। এখন থেকে সেটাও আর হবেনা। ভাগ্যিস কথা গুলো তুমি ফোনের ওপাশ থেকে বলেছো। সামনে থাকলে আজ আরেকটা থাপ্পড় বসিয়ে দিতাম।
.
কথাটি বলেই আরাফ লাইন কেটে উপমার নাম্বার ব্লক লিস্টে করে দিলো।
মেহেনুবা চিন্তিত স্বরে বললো-
কি হয়েছে?
-আম্মুরা ওখানে গিয়েছিলো তাদের বোঝাতে। তারা নাকি অপমান করেছে আম্মুদের। এটা আবার আমাকে ফোন করেও বলছে! কাকে ভালোবেসেছি আমি! এই উপমাকে! তুমি আরো বলছো এখান থেকে ওখানে কেউ গেলে বোঝালে তারা বুঝবে! আরে যারা বুঝেনা তাদের শত বুঝিয়েও বোঝানো যাবেনা।
-তুমি মাথা ঠান্ডা কতো আরাফ। সব ঠিক হয়ে যাবে।
.
মেহেনুবা দেখতে পেলো আরাফের হাতটা লাল হয়ে আছে।
নিশ্চয় নিজের হাতে নিজেই আঘাত করেছে এই ছেলে।
আরাফের উদ্দেশ্যে মেহেনুবা বললো-
নিজের শরীরের ক্ষরি করছো দেখলে আন্টিরা কষ্ট পাবে। এমন টা আর করোনা।
.
হাতের দিকে তাকিয়ে আরাফ বললো-
হু।
.
.
.
প্রায় ৩০মিনিট পরে
সায়নী ও মুনিরা বাসায় ফেরার পর, আফরান তাদের কাছে সবটা শুনে হতাশ হয়ে পড়লো। তারা যতো যাই বলুক না কেনো, তাদের জন্য তার ছেলের আজ এই অবস্থা।
আফরান এগিয়ে গেলো নিজের ছেলের রুমে।
নক না করেই ভেতরে এসে বললো-
আরাফ?
.
শান্ত গলায় আরাফ বললো-
ওহ তুমি আব্বু!
-কাকে আশা করেছিলি?
-আম্মুদের।
.
আফরান তার পাশে বসে বললো-
আমি সবটা জানি।
.
অবাক হলোনা আরাফ। তার মায়েরা যে বাবাকে সবটা জানাবে জানা ছিলো তার।
আরাফ মাথা নিচু করে বসে বাবার উদ্দেশ্যে বললো-
আমার জন্য তোমাদের এতো কথা শুনতে হয়েছে।
-আমাদের জন্য তোর সম্পর্ক টা ভাঙলো।
-না আব্বু! তোমাদের জন্য নয়।
-আমি সবটা শুনেছি। তবে আমি এক্সপেক্ট করেছিলাম যে উপমা তোর সাথে
থাকবে, তোকে সাপোর্ট দিবে। ভালোবাসা তো এমনটাই হওয়া উচিত তাইনা?
-আমি ওকে ভুলে যেতে চাই আব্বু। ভুলে যেতে চাই।
.
আরাফ কে এভাবে দেখতে পারছেনা আফরান। সে বেরিয়ে গেলো রুম ছেড়ে।
একটু পরেই মেহেনুবা আরাফের দরজার সামনে এসে বললো-
আসবো?
-হুম।
.
আরাফের পাশে এসে মেহেনুবা বললো-
কাউকে মন চায়, এর মানে এই নয় যে তার সাথেই থাকতে হবে। কখনো কখনো মনের সাথে যুদ্ধ করে হলেও দূরে সরে যাওয়াই শ্রেয়। কেননা জীবনটাকে কোনো একজন ভুল মানুষ বা ভুল একটা জায়গায় থামিয়ে রাখা একেবারেই অনুচিত।
আজ উপমা যেটা করেছে সেটা মোটেও ঠিক হয়নি। তোমার সাথে রাগ করা যায় তাই বলে আন্টিদের সাথে এই আচরণ মানা যায়না।
-হুম।
-যা করবে ভেবেই করো আরাফ। এমন কিছুই করবে, যেটা নিয়ে ভবিষ্যতে পস্তাতে না হয়।
.
মেহেনুবা জানেনা সে আরাফকে এসব কথা কেনো বলছে!
তবে একটা মানুষ হিসেবে অন্য একটা মানুষকে সঠিক পরামর্শ দিতে নিশ্চয় কোনো কারণ নিশ্চয় দরকার নেই।
.
.
মেহেনুবা বেরিয়ে যাবার বেশ কিছুক্ষণ পরেই আরাফ এগিয়ে যেতে থাকলো রান্নাঘরের দিকে।
.
সকাল থেকে পেটে কিছু পড়েনি এই খেয়াল কারো নেই! এতো হতাশা কিসের সবার!
রান্নাঘরের সামনে যেতেই দেখতে পেলো সায়নী ও মুনিরার সাথে গল্পে মজে আছে মেহেনুবা। শুধু গল্প নয়, তাদের কাজেও সাহায্য করছে সে।
যে সময়ে তার মায়েদের মুখটা ফ্যাকাসে থাকার কথা, সেই সময়ে এই মেয়েটি তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
সত্যিই মেহেনুবা আলাদা।
.
.
.
পাবেল বসে আছে ড্রয়িং রুমে। তার পাশে এসে মিশিকা বললো-
তোমার মা বাবাকে দেশে ফিরতে বলো এবার। মেহেনুবার বিয়ের আয়োজন শুরু করে দিবো। আতিক কে তার পছন্দ হয়েছে। এখন শুধু পারিবারিকভাবে বসে সব ঠিক করতে হবে।
.
মৃদু হেসে পাবেল বললো-
আমাদের জামাই আরাফ হলেও মন্দ হতোনা। তাইনা?
-তুমি ই তো ডাক্তার জামাই খুঁজেছো বড় মেয়ের জন্য।
-হুম। তবে এখন মনে হচ্ছে আরাফ হলেও চলতো।
-হতেই পারে।
-কি করে! মেহেনুবার তো একপ্রকার বিয়ে ঠিকই হয়ে গেলো।
-তাসু আছেনা!
-তাসু! সে এখানে বিয়ে করবে?
-আরাফ কে করতেই পারে। আমেরিকান ছেলেদের মতোই স্মার্ট, হ্যান্ডসাম সে।
-মন্দ বলোনি। তবে তাসু রাজি হলেই সায়নী কে বলবে তুমি।
-অবশ্যই। এটা আধুনিক যুগ স্যার।
-প্রেম সব যুগেই ছিলো ম্যাডাম।
.
পাবেলের কথা শুনে হেসে মিশিকা বললো-
বাচ্চাদের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে আমরা কিছুই করবো না। সে হোক তাসু বা আরাফ।
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here