বোবা টানেল পর্ব -১২

#বোবা_টানেল (১২)
এই নিয়ে ভার্সিটির মধ্যে চার চারবার অসিফাকে খুঁজে এসেছে শিখন। বারবার কল দেওয়ার পরও ফোন সেই সুইচড অফফই বলছে। পাশের ফ্লাটের ভাড়াটিয়াদের কাছেও কল দিয়ে শুনেছে যে অসিফা বাসায় পৌছেছে কিনা। কিন্তু তার ‘না’ বলতেই ঘাম ছুটতে শুরু করেছে শিখনের। বিড়বিড়িয়ে শুধু নিজেকেই দোষ দিয়ে যাচ্ছে সে। কেন সে একটু তাড়াতাড়ি এখানে আসতে পারলনা সে। জয়ের জন্য ভয় হচ্ছে তার।

“আহারে মাইয়াটার জন্য কি যে মায়া হচ্ছে আমার। মানুষ যে কেন এত অ’ধ’ম হয়! এ’সি’ড মাইরা কেমনে মাইয়াটার মুখখান পুড়া’ই’য়া দিয়ে গেল।”
“আর বইল না ভাই, মানুষের মনুষ্যত্ব দিনদিন গায়েব হইয়া যাইতেছে। এখনকার পোলাপাইন যে এ’সি’ড কইদ্দে জোগাড় করে কে জানে!

পাশ হতে দুজন ফুচকাওয়ালার উক্ত কথোপকথন শুনে বুকটা হঠাৎ ধক করে ওঠে শিখনের। ছুটে তাদের সামনে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে ওঠে,
“এখানে কি হয়েছিল ভাই? কে কার মুখে এ’সি’ড মে’রে’ছে?
” আরে ভাই আর বইলেন না। একটু আগে ওই যে ওইখানে একটা মাইয়া দাড়াইয়া ছিল। মনে তো হইল এই ভার্সিটিতেই পড়ে। একটা পোলা মোটরসাইকেলে কইরা আইসা মাইয়াটার মুখে এ’সি’ড মাইরা দিয়া ভাইগা গেছে। মাইয়াটার মুখের একপাশ পুরো জ্বইলা গেছে ভাই। মানুষজন ধরাধরি কইরা হসপিটালে নিয়া গেছে।”
চারপাশ উলোটপালোট হয়ে যেতে শুরু করে শিখনের। বারবার তার মন কেন নেগেটিভ দিক নিয়ে ভাবছে এটা নিয়ে যেন নিজের চুল নিজেরই ছি’ড়’তে মন চাইছে তার। কাপা কাপা কন্ঠে বলে ওঠে,
“আচ্ছা ভাই মেয়েটা চেহারা দেখেছিলেন? ছবি দেখালে চিনতে পারবেন?”

“ভাই সে তো হাত দিয়া মুখ ঢাইকা রাখছিল যতক্ষণ পর্যন্ত এইখানে ছিল। কেমনে যে য’ন্ত্র’ণায় দাপাদাপি করতেছিল। দেইখা আমার নিজেরই চোখে পানি আইসা গেছিল। বারবার খালি আমার ছোট বোনটার কথা মনে পড়তেছিল।”

“একটু কিছু তথ্য দেন মেয়েটা সম্পর্কে!” (শিখন)

ক্ষানিকটা সময় নিয়ে ভেবে ফুচকাওয়ালা বলে ওঠে,
“হ্যা হ্যা মনে পড়ছে। মাইয়াটা সবুজ রঙের একটা জামা পড়া ছিল।”

কথাটি শিখনের কর্ণকুহরে পৌছাতেই টলমল চোখে দুই কদম পেছনে সরে যায় সে। আজ সে সকালে নিজেই আলমারি থেকে পছন্দ করে সবুজ রঙের থ্রি-পিস বের করে দিয়েছিল অসিফাকে। হঠাৎ অসিফার নাম্বার থেকে কল আসতেই শিখন তড়িঘড়ি করে কল রিসিভ করে।

“হ্যালো অসিফা?” (শিখন)
ফোনের অপর পাশ হতে একজন অপরিচিত পুরুষের কন্ঠ ভেসে আসে।

“আপনি অসিফা খন্দকারের স্বামী মি. শিখন বলছেন?”
“জ্বী আমিই শিখন। আমার অসিফা কোথায়?”
“আমি ইন্সপেক্টর নিলয় বলছি। দেখুন আপনি প্লিজ শক্ত হন। আপনার স্ত্রীর অবস্থা খুবই খারাপ৷ তিনি এ’সি’ড দ্বারা মা’রা’ত্ম’কভাবে দ’গ্ধ হয়েছেন। উনার ফোনের চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় ফোন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমরা তাই আপনার সাথে আগে যোগাযোগ করতে পারিনি। আপনি যতদ্রুত সম্ভব হসপিটালে চলে আসুন।”

কল কেটে যেতেই শিখন ধপ করে মাটিতে বসে পড়ে। হাত-পা অবশ হয়ে এসেছে তার। এই মুহূর্তে যে সে কি করবে তা আর বুঝে উঠতে পারছে না। হাউমাউ করে কেদে উঠে সে এক প্রকার অনুরোধের সুরেই সেই ফুচকাওয়ালাদের উদ্দেশ্য করে বলে ওঠে,
“ভাই প্লিজ আমাকে আমার অসিফার কাছে নিয়ে চলুন। আমি বুঝতে পারছি না আমি কি করব। আমি হাত-পায়ে জোর পাচ্ছিনা।”
ফুচকাওয়ালা দুজন বুঝতে পারে মেয়েটা আর কেউ না এই লোকেরই স্ত্রী। তারা তাদের সহকর্মীদের কাজ বুঝিয়ে দিয়ে শিখনকে দুইপাশ থেকে দুজন ধরে নিয়ে সিএনজি করে হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
——
হসপিটালের বার্ন ইউনিটের সামনে ফ্লোরে গড়াগড়ি খেয়ে হাউমাউ করে কান্না করছে শিখন। এখন পর্যন্ত কেউ সক্ষম হয়নি তাকে সেখান থেকে উঠিয়ে নিয়ে কোথাও বসাতে। আশপাশে থাকা সকল মানুষজন হা হয়ে শুধু শিখনের কান্ড দেখে যাচ্ছে। নিজের অজান্তেই হয়তো কারো কারো চোখ হতে পানি গড়িয়ে পড়েছে।
শিখনকে চিনতে পেরে ইন্সপেক্টর নিলয় অন্যান্য নেতাবৃন্দকে খবর দিয়ে দেন। খবর পেয়ে শিখনের বন্ধু-বান্ধব ও বিভিন্ন জায়গা হতে নেতারা ছুটে আসে।
শিখনকে তার দুজন বন্ধু জোরপূর্বক পাজকোলা করে উঠিয়ে একটা চেয়ারে নিয়ে বসিয়ে দেয়। দেয়ালের সাথে মাথা এলিয়ে দিয়ে শিখন বলে ওঠে,
“আমি ওকে ছাড়ব না। ওকে বারবার মানা করেছিলাম, ‘আমার ব্যক্তিগত বিষয়ে ঢুকিস না।’কিন্তু ও তো আমার কলিজা কে’টে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। ভাই বিশ্বাস কর অসিফার কিছু হলে আমি বাচতে পারব না। ও ছাড়া আমার কেউ নেই। আজকে আমার জন্য শুধুমাত্র ওর এই অবস্থা।”
শিখনকে শান্ত করার জন্য শিখনের বন্ধু আবিদ বলে ওঠে,
“ভাই তুই শান্ত হ। ভাবির কিছু হবেনা।”

শিখন মাথা সোজা করে সামনে তাকাতেই দেখে সাকলাইন খান দাঁড়িয়ে আছেন। ঘোরের মাঝেই শিখন উঠে তাকে জাপটে জড়িয়ে ধরে।
“আমার অসিফা ভালো নেই মি. সাকলাইন খান আপনার কথাই সঠিক। এই শিখন একটা অ’ভ’দ্র, উ’চ্ছৃ’ঙ্খ’ল, বে’য়া’দ’ব। নিজের আপন মানুষকেও ঠিক করে একটু আগলে রাখতে জানেনা।”

প্রথমবারের মতো সন্তানকে বুকে পেয়ে কেমন এক অদ্ভুত ধরনের অনুভূতি খেলা করে ওঠে সাকলাইন খানের অন্তরে। সন্তান বুকে মুখ মুখ লুকালে বুঝি এমনিই সুখ সুখ অনুভূত হয়? সাকলাইন খানের সারা দেহে কেমন যেন অনুতাপের চরম উত্তাপ বায়ু ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। মুখে কিছু না বলেই তিনি শিখনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকেন।
——-
“তুমি কি করেছ আজ সত্যি করে বলো জয়।” রা’গে ফোসফোস করতে করতে জাহিদ মির্জা ছেলের সামনে এসে দাড়ান।
রিমোট দিয়ে চ্যানেল বদলাতে বদলাতে জয় আয়েসি ভংগিতে বলে ওঠে,
“তুমি কি বলতে চাইছো বাবা? আমি আবার কি করলাম?”
“নিউজ দেখোনি তুমি? অসিফার মুখে এ’সি’ড কেন মারতে গেলে? ওই বেচারি কি দো’ষ করেছে? যত সমস্যা তো তোমার শিখনের সাথে। আমিতো বলেছি অসিফা তোমারই হবে। সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে পড়ে গেছে। প্রত্যেকটা টিভি চ্যানেলে দেখানো হচ্ছে তা। যেখানে স্পষ্ট ভাবে দেখা গেছে, একজন মোটরসাইকেল ওয়ালা এসে অসিফার মুখে এ’সি’ড ছু’ড়ে দিয়ে দ্রুত সেখান হতে ভেগে গেছে। আর এই কাজ তোমার ছাড়া আর কারো না।”

“হ্যা আমিই মেরেছি এ’সি’ড। তুমি আর কি এনে দিবে ওকে? সঠিক সময়ে তো পারলে নাম। ও এখন অফিশিয়ালি শিখনের ওয়াইফ। প্রথমে ভেবেছিলাম, যা আমার হয়নি তা অন্য কারও কেন হবে? একদম মে’রেই দিতে চেয়েছিলাম। পরে ভাবলাম, ম’রে গেলে তো ম’রে গেল। এতে মজা নেই। তার চেয়ে ভালো আজীবনভর পস্তাক দুজন মিলে। সুখ যেন ওদের ছুতে না পারে। ওই দৃশ্য দেখেও শান্তি পাব আমি।”

“তোর রা’গ-ক্ষোভ তোকে দিনকে দিন অ’সু’স্থ করে তুলছে জয়। তুই ভাবতে পারছিস ওর এই একটা বো’কা’মির জন্য তোকে জে’লেও যেতে হতে পারে! এখানে আর তোর বাবার ক্ষমতা এবং টাকা কিছুই কাজে আসবে না। শিখনকে তো ভালো করেই চিনিস। নিজের ক্ষমতা দিয়ে ঠিকই তোকে জে’লে পুরে দিতে পারবে। আমাত আর তখন কিছুই করার থাকবে না। আপাতত তারা এখনো মোটরসাইকেলের কোনো তথ্য পায়নি। তুই যে মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেট বদলে দিয়ে চা’লা’কিটা করেছিস তাতে আমার মনে হয়না তুই বেচে যাবি। আমার এখন টেনশনে মাথা ফেটে যাচ্ছে।”

” উফফ বাবা তুমি এখন যাও তো এখান থেকে। এই জয়কে ধরা এত সহজ না। মাঠে যখন নেমেছিই পুরো প্ল্যান গুছিয়ে নিয়েই নেমেছি।”

“তুই সত্যিই পা’গ’ল হয়ে গেছিস।”

জাহিদ মির্জার কথার জবাবে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে জয়।
ছেলের পরিণাম চিন্তা করে আঁতকে ওঠেন জাহিদ মির্জা।
—–
পুরো একদিন অসিফার ধারেকাছে কাউকে ঘেষতে দেননি ডাক্তাররা। বাহির হতে অসিফার য’ন্ত্র’ণায় কাতরানোর শব্দ শুনে হসপিটালের করিডরে শুধু দাপাদাপি করে গেছেন আসিফ খন্দকার ও নিলুফা বেগম। শিখন গতকাল সেই যে মুখে তা’লা দিয়েছে তারপর হতে আর তার মুখে একটা বুলিও ফোটেনি। এক কর্ণারে ঘাপটি মেরে বসেছে তো বসেছেই আর তাকে কেউ উঠাতেও পারেনি আর কিছু খাওয়াতেও পারেনি। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, এ’সি’ডে শুধু অসিফার মুখের ডান পাশটা এবং গলার কিছুটা অংশই দ’গ্ধ হয়েছে। সৌভাগ্যক্রমে শ্বাসনালীর কোনো ক্ষতিই হয়নি।
পুরো চব্বিশ ঘন্টা অবজারভেশনে রাখার পর অসিফার কেবিনে প্রবেশের সুযোগ দিয়েছে ডাক্তাররা। একে একে আসিফ খন্দকার ও নিলুফা বেগম কেবিন হতে বেরোনোর পর শিখনকে তার এক বন্ধু ধরে নিয়ে কেবিনে প্রবেশ করে। শিখনকে চেয়ারে বসিয়ে দিয়েই সে বেরিয়ে যায়।
সাদা ব্যান্ডেজে মোড়ানো অসিফার মুখখানার দিকে তাকাতেই পুনরায় শিখনের চোখ উপচে পানি পড়তে আরম্ভ করে। শব্দ যেন না হয় তাই হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে কান্না আটকানোর চেষ্টা করে সে। কান্না থামিয়ে অসিফার মুখের দিকে তাকিয়ে ভারী কন্ঠে বলে ওঠে,

“প্রিয় তন্দ্রাহরণী,
যে ভুল করব না বলেই তোমাকে এত কষ্ট দিলাম, সেই ভুলই তো করেই বসলাম। সাথে তার মাশুল আজ তুমিই দিচ্ছো। আমি শুধু এই একটা কারণেই তোমাকে আমার জীবনের সাথে জড়াতে ভয় পেয়েছিলাম। দেখলে আজ তা সত্যিও হয়ে গেল। আমি আর কোন সাহসে তোমাকে আমার কাছে রাখব বলো? তোমার বাবার ভরসা তো আমি ভেংগে গুড়ো গুড়ো করে দিলাম। মনে হচ্ছে আমার কলিজা কেউ কে’টে টুকরো টুকরো করে ফেলছে। বুকের মধ্যে যে কি যন্ত্রণা হচ্ছে! এই যন্ত্রণার হাহাকার এখন তুমি কিভাবে আমার বুকে কান পেতে শুনবে? তুমিতো একদম নিশ্চুপ। তোমার ফটফটিয়ে বলা কথাগুলো এখন বড্ড শুনতে মন চাইছে। আমার দম যেন বন্ধ হয়ে আসছে।”

টুপ করে অসিফার বাম চোখ হতে এক ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। শিখন কাপাকাপা হাতে সন্তপর্ণে তা মুছে দেয়।
———
অসিফাকে বাসায় আনা হয়েছে দুদিন হলো। শরীরের অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছে তার। টুকটাক হাটাহাটি করতে পারছে সে। শরীরের ঘা’য়ে’র চেয়েও যেন মনের ভেতরের ঘা বেশি যন্ত্রণাময় লাগছে অসিফার কাছে। মাঝে মাঝে হিং’স্র হয়ে উঠছে সে। কাউকে কালো রঙের পোশাকে দেখলেই কেমন ভয়ে কুকড়ে ওঠে। যার জন্য এ বাসাতে একদম কালো রঙ এর সব জিনিসপত্রই নি’ষি’দ্ধ হয়ে গেছে। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলেও জবাব দেয়না। মাঝে চুল খা’ম’চে ধরে নিজেই নিজেকে বিড়বিড় করে কি যেন বলে যায়। শিখন শুধু চুপ করে অসিফার পাশে বসে তার কান্ড দেখে যায়। অসিফার খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে ঘুম পর্যন্ত সব কিছুর দায়িত্ব নিয়েছে সে। আসিফ খন্দকার ও নিলুফা বেগমও তাদের বাধা দেননি।

রাত প্রায় দুটোর কাছাকাছি বাজছে। শিখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। পাশেই অসিফা শুয়ে রয়েছে। অসিফার চোখে ঘুম নেই। বিছানা হতে নেমে সে বাথরুমে চলে যায়।
আচমকা বাথরুম হতে বিকট এক আওয়াজ ভেসে আসতেই ঘুমন্ত শিখন, আসিফ খন্দকার ও নিলুফা বেগম লাফিয়ে ওঠেন। সকলে দ্রুত ছুটে যান বাথরুমের দিকে। ভিড়ানো দরজা খুলে বাথরুমে প্রবেশ করতেই দেখতে পান বাথরুমের ওয়ালে লাগানো আয়নাটি ভেংগে টুকরো টুকরো হয়ে ফ্লোরে পরে আছে। কিছুটা দূরেই অসিফা নিজের চুল খামছে ধরে ফ্লোরে বসে আছে। বাথরুমে সবার উপস্থিতি টের পেয়ে সে বলে ওঠে,

“আমার সামনে কেউ এসো না। ভয় পাবে তোমরা। চলে যাও, তোমরা চলে যাও।”

শিখন দৌড়ে অসিফার কাছে যেতেই অসিফা ক্রন্দনরত সুরে বলে ওঠে,
“আমাকে আর আপনি আগের মতো ভালোবাসবেননা তাই না নেতা সাহেব?”

চলবে…

#আফিয়া_অন্ত্রীশা

[দুঃখিত দেরি হবার জন্য। হাত থেকে ফোন রাস্তায় পড়ে গিয়ে ডিসপ্লে একদম ফেটে গিয়েছিল। যার জন্য আসলে গল্প দিতে পারিনি দুদিন। কেউ রা’গ হবেন না প্লিজ। পর্ব কিন্তু অনেক বড় করে দিয়েছি।”]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here