#ভালবেসে রাখব কাছে
#লেখিকাঃ সাদিয়া সিদ্দিক মিম
#পর্বঃ৩
“কী রে তুই এখন এখানে কেন?”(শীলা)
“সাবিহাকে দেখতে এলাম কিন্তু সাবিহা কই যাচ্ছে?”
“বাড়ি যাচ্ছে,মেঘ বলল আজ বাড়িতে নিয়ে যেতে পারব।”
“আচ্ছা,সাবিহা এখন কেমন আছো তুমি?”
“জি আলহামদুলিল্লাহ ভাইয়া।”
“আচ্ছা চলো আমি তোমাদের বাড়িতে পৌঁছে দেই।”
“সাদাফ তার কোন প্রয়োজন নেই,আমি গাড়ি নিয়ে এসেছি।” (মনির সাহেব)
“আঙ্কেল ত সাবিহা না হয় আমার সাথে আসুক,আপনি আর শীলা আপনার গাড়ি নিয়ে আসুন।আসলে সাবিহার সাথে আমার কিছু কথা ছিল।” (ইতস্তত করে)
আমার সাথে কথা আছে শুনে সাদাফ ভাইয়ার দিকে তাকালাম।সাদাফ ভাইয়াও আমার দিকে তাকিয়ে আছে,আপু তখন বলে উঠল,,,
“কীসের কথা তোর সাবিহার সাথে?”
“শীলা তুমি চুপ করো আর সাবিহা যাও সাদাফের সাথে,সাবধানে এসো।”
বাবার কথা শুনে আমি অবাক,একটা ছেলে আমার সাথে কথা বলার জন্য তার সাথে যেতে বলছে আর সেটা বাবা চুপচাপ মেনে নিল।ব্যাপারটা বেশ গন্ডাগোল লাগছে।বাবা কথাটা বলেই সামনে এগিয়ে যায় কিন্তু আপু তখনও দাড়িয়ে সন্দেহ চোখে সাদাফ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।সেটা দেখে বাবা ধমকে বলে উঠল,,,
“শীলা তোমাকে আমার সাথে আসতে বলেছি দাড়িয়ে থাকতে বলি নি ওভাবে।”
“জি বাবা আসছি।”
তারপর আপু আর বাবা চলে যায়,আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সাদাফ ভাইয়ার দিকে তাকালে উনি বলে উঠে,,,
“চলো যাওয়া যাক!”
আমি মাথা নেড়ে সম্মতি জানালে সাদাফ ভাইয়া হাঁটা শুরু করে।আমিও তার পিছন পিছন হাঁটা ধরি।
_________________________________
কাব্য আর তার বন্ধুরা কলেজ ক্যাম্পাসে বসে আড্ডা দিচ্ছে,তখন সেখানে উপস্থিত হয় ডংঙ্গি ইশা।সেটা দেখে কাব্যর বন্ধু নিশান রিয়ানকে কাব্যর আড়ালে বলে উঠে,,,
“দোস্ত দেখ এই ডংঙ্গি আজও তেরো কেজি আটা, ময়দা মেখে আসছে।”
“ভালোই ত হয়েছে রে দোস্ত,আমাদের বন্ধুর আর আটা ময়দা কেনা লাগবে না,এই ডংঙ্গির মুখ থেকে আটা ময়দা দিয়েই লুচি+রুটি বানাতে পারবে।আটা কয়দা কেনার টাকা বেঁচে গেলো কাব্যর।”
নিশান রিয়ানের মাথায় একটা গাট্টা মেরে বলে উঠল,,,
“তোর মাথা ছাগল একটা,ছাগলের মত দুইটা সিংই আছে কিন্তু গরুর মত গুতা দিতে পারবি না।কাব্যর সাথে এই ডংঙ্গির বিয়ে হলে কাব্য এই মাইয়ার জন্য আটা ময়দা কিনতে কিনতে ফকির হয়ে যাইব।”
“এভাবে ত ভেবে দেখি নাই রে বন্ধু,বড় লোক দোস্ত আমার ফকির হয়ে যাবে ভাবতেই কিমুন ফিলিং অশান্তি অশান্তি আসিতেছে রে।”
“চুপ কর আর দেখ এই ডংঙ্গি কী বলে!”
তারপর দুজনেই চুপ করে ইশা আর কাব্যর কথা শুনার চেষ্টা করে।কিন্তু অরা শুধু বাবু,সোনাই করে যাচ্ছে যেটা ওদের দুজনের একদমই শয্য হচ্ছে না।সিঙ্গেল হলে যা হয় আরকি,তাই অরা কিছু না বলে চুপচাপ চলে যেতে চাইলেই শুনতে পায়,,,
“বেবি তোমাকে বাড়িতে কেউ কিছু বলে নি ত ঐ থার্ড ক্লাস মেয়েটার জন্য।”
“মা আর বাবা একটু রাগারাগি করেছে,এমনিতে সব ঠিকই আছে।”
“ওহহ,আর ঐ থার্ড ক্লাস মেয়েটা কেমন আছে?”
“জানি না আমি।” (বিরক্ত হয়ে)
“বেবি তুমি আমার কথায় বিরক্ত হলে,যাও আর কথাই বলব না।” (ডং করে)
“আরে জান রাগ করো না প্লিজ,আমি তোমার কথায় বিরক্ত হই নি বিরক্ত হয়েছি ঐ মেয়েটার কথা মনে করে।তুমি প্লিজ রাগ করো না জান।”
“ঠিক আছে রাগ করব না কিন্তু আমাকে আজ শপিং করে দিতে হবে কিন্তু।”(হেঁসে)
” ওকে আমার জান যা বলবে তাই হবে।এখন দেখি ত আমার জানের হাতটা কেমন আছে!”
তারপর কাব্য ইশার হাতটা দেখে হাতে একটা চুমু দিয়ে বলল,,,
“সেরে যাবে খুব তাড়াতাড়ি।”
“হুম বেবি,লাভ ইউ😘।”
“লাভ ইউ টু।”
“আচ্ছা বেবি আমি একটু আসি,পার্লারে যাব।বিকালে ত শপিং করতে হবে তার জন্য একটু সাজুগুজু করে আসি।”
“আচ্ছা জান আমি তোমাকে পৌঁছে দিয়ে আসি চলো।”
“না না আমি একাই যেতে পারব।”
“sure.”
“হুম বেবি sure,এখন আমি আসি।”
“সাবধানে যেও।”
“ওকে বেবি।”
তারপর ডংঙ্গি ডং করতে করতে চলে যায়,আর কাব্য ইশার যাওয়ার দিক থেকে চোখ সরিয়ে অর বন্ধুদের দিকে তাকালে দেখতে পায় তারা অর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।সেটা দেখে কাব্য ভ্রু কুঁচকে বলে উঠে,,,
“what?”
“তুই সাবিহার সাথে আবার কী করেছিস কাব্য?” (রিয়ান গম্ভীর হয়ে)
“তরাও এখন মা-বাবার মত শুরু করিস না প্লিজ।এসব নেকামি আর ভালো লাগছে না।” (বিরক্ত হয়ে)
“তুই একটু বেশিই বারাবাড়ি করছিস,বাচ্চা একটা মেয়ে,এখনও পৃথিবীটা ভালো করে চিনে উঠতে পারে নি।আবেগ হোক বা সত্যি ভালাবাসা হোক মেয়েটার বয়সই বা কী এখন!সারাক্ষণ তোর পিছন পিছন ঘুরে ভালবাসি ভালবাসি বলে,আর তুই সাবিহার সাথে কত খারাপ আচরনই না করিস।এমন খারাপ আচরন না করে ঠান্ডা মাথায় একটু বুঝালেও ত পারিস তা না করে তোর ঐ ডংঙ্গি গার্লফ্রেন্ডের কথায় নাচস।আর ছোট বড় সব কারনে সাবিহার সাথে খারাপ আচরন করিস।এত অন্যায় আল্লাহ সইবে না,তোর কর্মফল তুই ঠিকই পাবি।”
নিশান খুব রেগেই কথাগুলো বলে,তারপর সেখানে আর দাঁড়ায় না।নিশানের পিছন পিছন রিয়ানও চলে যায়,কারন তারা সবই জানে আর এটাও জানে যে কাব্য সাবিহার সাথে কেমন আচরন করে।
আর কাব্য নিশানের বলা কথাগুলো মন দিয়ে শুনেছে।তার মধ্যে কাব্যর একটা কথা খুব মনে ধরেছে,ঠান্ডা মাথায় বুঝানোর বিষয়টা।কিন্তু কাব্য ত তেমন কিছুই করে নি,ভালো করে বুঝালে হয়ত আজকের পরিস্থিতিটা অন্য রকম হত।
পরক্ষণেই কাব্য আবার ভাবে যে সে এসব কী ভাবছে!এত স্টুপিট মার্কা কথা তার মনে কীভাবে আসতে পারে?এসব ভেবে কাব্য নিশানের কথাগুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দেয়।
________________________________
শীলা গাল ফুলিয়ে গাড়িতে বসে আছে আর তার পাশেই বসে আছে মনির সাহেব।শীলা বারবার জানতে চাইছে তার বাবা তখন কেন সাবিহাকে চুপচাপ সাদাফের সাথে যেতে দিল।কেন কিছু বলল না উনি সাদাফকে!কিন্তু যতবারই জানতে চেয়েছে ততবারই মনির সাহেব ধমক দিয়ে শীলাকে চুপ করিয়ে দিয়েছে।তাই সে গাল ফুলিয়ে বসে আছে,সেটা মনির সাহেব দেখেও না দেখার ভান করে বসে আছে।এখন রাগ না দেখালে মেয়েটা তার মাথা খারাপ করে ফেলবে সবটা জানতে চাওয়ার জন্য।যেটা এখন উনি জানাতে চাইছে না, তাই চুপচাপ বসে ফোন টিপছেন উনি।
★★অন্যদিকে সাদাফ গাড়িটা একটা পার্কের সামনে দাঁড় করায়।হঠাৎ গাড়ি থামানোতে আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখি একটা পার্কের সামনে আছি আমরা।আমি সেটা দেখে সাদাফ ভাইয়ার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালে উনি নামতে ইশারা করে।
“এখানে নামব কেন?আমাদের ত বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল!”
“আরো একটা কথাও ছিল যে তোমার সাথে আমার কিছু কথাও আছে।”
“ত কী হয়েছে?”
“কী হয়েছে মানে,নামো গাড়ি থেকে।”(ধমকে)
আমি চুপচাপ গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম,তারপর চুপচাপ একটা বেঞ্চে বসে পড়লাম।সাদাফ ভাইয়া একটা দোকান থেকে দুইটা আইসক্রিম নিয়ে আমার পাশে বসলেন।আর একটা আইসক্রিম আমার দিকে এগিয়ে দিলেন।আমি ভ্রু কুঁচকে উনাকে বলে উঠলাম,,,
” আমাদের কী আইসক্রিম খাওয়ার কথাও ছিল?”
“না ছিল না,আর ছিল না বলে কী আইসক্রিম খাবে না নাকি?”
“না খাব না আমি,আপনার যা বলার সেটা তাড়াতাড়ি বলুন,আমি বাড়িতে যাব।”
“বাড়িতে ত যাবেই,আইসক্রিম টা নাও তারপর দুজন খেতে খেতে কথা বলি না হয়!”
আমি আর কিছু না বলে উনার হাত থেকে আইসক্রিম নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম,তারপর উনি বলতে শুরু করলেন,,,
“কালকের আচরনের জন্য আমি দুঃখিত,আমার ওভাবে তোমার সাথে রাগ দেখানোটা ঠিক হয় নি।আসলে তোমাকে ওভাবে দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারি নি।আর কাব্য ভাইয়ার উপরেও খুব রাগ হয়েছিল তাই রাগ দেখিয়ে ফেলেছি।এমনিতেই তোমার শরীরের এ অবস্থা তার উপর আমি রাগ দেখিয়ে একদমই ঠিক করি নি।আর এটা ভেবে গতকাল রাতে আমি ঘুমাতেও পারি নি।তাই সকাল হতে না হতেই ছুটে চলে এসেছি।”
“এটাই কী আপনার বলার ছিল?”
“হুম,I am sorry for everything”
“It’s ok,,,এবার চলুন বাড়িতে ফেরা যাক।”
“শুধু It’s ok,আর এখনই বাড়ি ফিরে যাবে?একটু বসি না হয় দুজনে,একটু সময় কাটাই এখানে!”
“আর কী বলব?আপনার কথা বলার ছিল কথা বলা হয়ে গেছে,সরি বলার ছিল বলেছেন।আমি তার উওরও দিয়েছি ত আর কী বলব ভাইয়া?আর আমার ভালো লাগছে না আমি এখনই বাড়ি ফিরব।”
“আচ্ছা ঠিক আছে চলো ফেরা যাক।”
উনি কিছুটা মন খারাপ করে কথাটা বললেন।কিন্তু আমি সেসবে পাত্তা দিলাম না।এখন এসব নিয়ে কথা বলতে ভালো লাগছে না।তাই আর কিছু না বলে হাঁটা শুরু করলাম গাড়ির দিকে।অতঃপর গাড়ির কাছে এসে গাড়িতে বসে চললাম বাড়িতে যাওয়ার জন্য।
#চলবে…
(এত এত ভালবাসা পেয়ে আর রাগ করে থাকতে পারলাম না।রাগ গলে ফুচকা হয়ে গেছে😋,তাই দিয়ে দিলাম আরেকটা পার্ট।এবার আমি ঘুমাই🥱,,,হক্কলরে Gd night🥰)#ভালবেসে রাখব কাছে
#লেখিকাঃ সাদিয়া সিদ্দিক মিম
#পর্বঃ৪
কাব্য ভার্সিটি থেকে ফেরার পর ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়ার পর কাব্যর ফোনটা বেজে উঠে।কাব্য ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে নিশান ফোন করেছে।কাব্য ফোনটা রিসিভ করে বলে উঠে,,,
“রাগ কমছে তোর?নাকি আরো রাগ দেখানোর জন্য এখন ফোন দিলি?”
“তোর সাথে রাগ দেখালে যে তোর কিছু যায় আসে না সেটা আমার থেকে ভালো আর কেউ বুঝে না।তাই ঠিক করেছি তোর সাথে আর রাগ দেখাব না।সব শেষ করে দিব,তোর সাথে বন্ধুত্ব রাখা আমার পক্ষে আর সম্ভব নয়।”
“মানেহ!এসব কী বলছিস তুই?বন্ধুত্ব রাখবি না মানে কী এসবের!নিশান আমরা সেই ছোট থেকে বন্ধু আর তুই হঠাৎ এসব কেন বলছিস?”
“হে রাখব না কোন অমানুষের সাথে আমি বন্ধুত্ব রাখতে চাই না।আজকের পর থেকে আমার সাথে আর কোন যোগাযোগ করবি না তুই।আমি জানতে পেরেছি তুই সাবিহাকে ঠিক কতটা নির্যাতন করেছিস।বাচ্চা মেয়েটাকে ওভাবে না মারলেও পারতি,তোর মধ্যে মনুষ্যত্ব বলতে কিচ্ছু নেই।”
“তুই কী ঐ থার্ড ক্লাস মেয়েটার জন্য আমার সাথে বন্ধুত্ব নষ্ট করতে চাইছিস?”
“অন্যকে থার্ড ক্লাস বলার আগে নিজের ক্লাসের কথা ভেবে নিস।”
কথাটা বলেই নিশান ফোনটা রেখে দেয়,আর কাব্য রাগে ফুঁসছে।
“ছাড়ব না আমি তকে,তোর জন্য আজ আমার বন্ধু আমার সাথে বন্ধুত্ব নষ্ট করে দিয়েছে।এর শোধ আমি নিয়েই ছাড়ব।”
কাব্য কথাটা বলেই গাড়ি নিয়ে গটগটিয়ে বের হয়ে গেলো।
___________________________________
বিছানায় বসে বসে গল্পের বই পড়ছিলাম তখন মা হাতে কিছু ফল নিয়ে রুমে আসে।আমি সেটা দেখে নাক,মুখ কুঁচকে বলে উঠি,,,
“মা তুমি আবারও এসব নিয়ে এসেছো!আমি এসব খাই না জানো তুমি,তারপরও এসব নিয়ে এলে।”
“ফল না খেলে মাইর খাবি,চুপচাপ এসব খা।”
“মা তুমি এখনও আমাকে বকবে!”
“হে বকব,দরকার পড়লে মারবও।তাই বেশি কথা না বলে খা আর খেয়ে তোর বাবার কাছে যা একটু।তোর স্কুল চেন্জ করবে বলছে,সেটা নিয়েই কথা বলবে তোর সাথে।”
আমি মার কথা শুনে ত খুবই অবাক হয়েছি আমি।আমার স্কুল চেন্জ করবে মানে কী?
“মা আমার স্কুল হঠাৎ বাবা চেন্জ করতে চাইছে কেন?”
“সেটা তোর বাবাকে জিজ্ঞেস কর,এখন ফলগুলো সব শেষ কর।”
আমি মুখটা কাচুমাচু করে বলে উঠলাম,,,
“ফলটা কী খেতেই হবে?”
“জি খেতেই হবে,কিন্তু না খেতে চাইলেও সমস্যা নাই তখন মাইর খাওয়াব,তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নে কী করবি!” (ধমকে)
“আচ্ছা খাচ্ছি,তুুমি রান্নাঘরে যাও এবার,কীসের যেন পোড়া গন্ধ আসছে!”
“কানের নিচে দুইটা দিব,বোকা পাইছত আমাকে।আমি এখান থেকে যাই আর ফলগুলো ফেলে দিস।আর আমি চুলায় কিছু বসিয়েও আসি নি তাই নাটক না করে চুপচাপ খা।”
আমি মার কথা শুনে চুপচাপ গাল ফুলিয়ে খাওয়া শুরু করলাম।অনেক কষ্ট ফলগুলো শেষ করলাম,তারপর মাকে একটা ভেংচি দিয়ে বাবার রুমের দিকে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালাম।
বাবার রুমে গিয়ে দেখি বাবা ফোনে কারো সাথে কথা বলছে।আমি চুপচাপ খাটে গিয়ে বসি,আর বাবার কথা শেষ হওয়ার অপেক্ষা করি।একটু পর বাবার কথা শেষ হলে বাবা বলে উঠে,,,
“দুপুরের খাবার খেয়েছিস?”
“হে বাবা খেয়েছি।”
“ঔষধ খেয়েছিস?”
“আরে বাবা হে সব খেয়েছি,এখন বলো ত তুমি হঠাৎ আমার স্কুল নিয়ে কেন পড়লে?আর দেড় মাস পর আমার এসএসসি পরীক্ষা এখন স্কুল চেন্জ করা মানে নির্ঘাত পরীক্ষায় চশমা পাব।”
“আমি তোর ভালোর জন্যই স্কুল চেন্জ করতে চাইছি।”
“বাবা একটু বুঝিয়ে বলো।”
“মানে হল তোর এই স্কুলে তায়কোয়ন্দো শেখানো হয় না তাই তোর সুবিধার জন্য স্কুল চেন্জ করছি, যেখানে তায়কোয়ন্দো শেখানো হয়।বুঝতে পেরেছিস এবার আমি কেন স্কুল চেন্জ করব!”
“আমার সুইট বাবাটা কত্ত ভালো।ধন্যবাদ বাবা আমার তায়কোয়ন্দো শেখার ব্যাপারটা এতটা গুরুত্ব দেয়ার জন্য।”
বাবার গলা জড়িয়ে ধরে বললাম,বাবাও আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে দিল।
“আমাকে ত কেউ ভালইবাসে না,আমাকে কেউ আদরও করে না,আমায় সত্যি সত্যি কুড়িয়ে পাইছে মনে হচ্ছে এখন!”
শীলা ঘরে ডুকতে ডুকতে গাল ফুলিয়ে কথাটা বলল।সেটা দেখে আমি বাবাকে ছেড়ে আপুকে জ্বালানোর জন্য বলে উঠলাম,,,
“মনে হওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না,তোমাকে ত সত্যি সত্যি কুড়িয়ে পাইছে তাই না বাবা!”
“বাবা তোমার ছোট মেয়েকে কিছু বলো,নয়ত আমি কিন্তু অরে মেরে আলুর বর্তা বানাব।”
“সে গুড়ে বালি,তুমি আলুর বর্তা বানানোর জন্য পেয়াঁজ,মরিচ কাটতে থাকো আমি আর বাবা ততক্ষণে বাইরে থেকে ঘুরে আসি।”
“পেয়াঁজ মরিচ কাটব আমি তাই না,দাঁড়া তকে দেখাচ্ছি মজা।”
কথাটা বলেই শীলা সাবিহাকে তাড়া করে, সাবিহাও দেয় ভো দৌড়,সেটা দেখে মনির সাহেব তৃপ্তির হাসি হাসে।শীলার বিয়ের পর হয়ত সবকিছু অন্য রকম হয়ে যাবে।এরকম দৃশ্য আবার কবে চোখে ধরা দেয় ঠিক নেই।কেন যে মেয়েদের বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতে চলে যেতে হয়?এসব ভেবে মনির সাহেব একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
কলিং বেলের আওয়াজে দুইবোন শান্ত হয়ে দাঁড়ায় আর সাবিহা যায় দরজা খুলতে আর শীলাও পিছন পিছন যায় কে এসেছে দেখার জন্য।সাবিহা দরজা খুলে দেখে কাব্য দাঁড়িয়ে আছে।কাব্যর চোখ,মুখ অসম্ভব রকম লাল হয়ে আছে,দেখে বুঝাই যাচ্ছে খুব রেগে আছে।কিন্তু সাবিহা সেসবে পাত্তা না দিয়ে দরজা থেকে সরে আসতে নিলেই শক্ত হাতের চর পড়ে সাবিহার গালে।সাবিহা গালে হাত দিয়ে কাব্যর দিকে রেগে তাকায়,কাব্য কিছু বলতে যাবে কিন্তু তার আগেই সাবিহা কাব্যর গালে ঠাস,ঠাস করে দুইটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।আর রেগে বলে উঠে,,,
“সবকিছুর একটা লিমিট থাকে,কিন্তু তুই সে লিমিট ক্রস করে ফেলেছিস।তুই মানুষ নামের একটা অমানুষ,তোর ত সাহস কম নয়।আমার বাড়িতে এসে আমার গায়েই হাত তুলিস!সেদিন মেরেছিস কিছু বলি নি বলে কী ভেবেছিস আজও কিছু বলব না।যা ইচ্ছে তাই করতে পারবি আমার সাথে?আমি কী তোর খাই না পড়ি যে আমার গায়ে হাত তুলিস তুই!আমার বাবা মা ছোট থেকে এতটুকু বড় করেছে তারা কখনও আমার গায়ে হাত তুলে নি আর তুই কোন অধিকারে আমার গায়ে হাত তুললি?”
সাবিহার কথা শুনে কাব্য আর শীলা খুব অবাক হয়।কারন যে মেয়ে কাব্য বলতে পাগল ছিল সে মেয়ে আজ এভাবে কাব্যকে তুই তুকারি করে কথা বলছে।শুধু তাই নয় থাপ্পড়ও মেরেছে।সাবিহা আবারও বলে উঠে,,,
“এবার থেকে আমার গায়ে হাত তোলার আগে এই থাপ্পড়ের কথা মনে করে নিস।আমাকে তুই একটা দিবি আমি তকে তার ডাবল ফিরিয়ে দিব।বেরিয়ে যা এই বাড়ি থেকে,তোর মুখের দিকে তাকাতেও ঘৃনা হচ্ছে আমার।”
কাব্য আর কিছু না বলে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বের হয়ে যায়,আর সাবিহা সদর দরজা আটকিয়ে হাঁটু মুড়ে নিচে বসে পড়ে।সাবিহার চোখ দিয়ে দু ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে।সেটা দেখে শীলা সাবিহাকে জড়িয়ে ধরে নরম গলায় বলে উঠে,,,
“সাবিহা কাঁদিস না,বাবা আর মা এসব জানতে পারলে আবার ঝামেলা হবে,তুই প্লিজ শান্ত হ।”
“আপু আমি আজ কাব্য ভাইয়ের গায়ে হাত তুলেছি।কিন্তু আপু বিশ্বাস করো আমি এমনটা চাই নি,আমি ভালবেসে উনার পাশে থাকতে চেয়েছি কিন্তু উনি আমাকে এসব করতে বাধ্য করেছে।আমি ত উনাকে ভালবেসে ছিলাম,কিন্তু উনি আমাকে তার বিনিময়ে আঘাত ছাড়া আর কিছুই করে নি।তাই আজ আমাকে এতটা খারাপ হতে হলো।সেদিনের মারের পর থেকে উনার কথা মনে হলেই শরীরের প্রতিটা আঘাত আমার মনে করিয়ে দেয় যে উনি ঠিক কীভাবে আমাকে ক্ষত বিক্ষত করেছে।আর সেখানে উনি আজ আমার সামনে এসে আমার গায়ে আবারও হাত তুলেছে।তাই রাগটা আর কন্ট্রোল করতে পারি নি,আপু আমি কী ভুল করেছি?”
“না বোন তুই কোন ভুল করিস নি,যা করেছিস একদম ঠিক করেছিস।কাব্যর মত ছেলের সাথে এমনটাই করতে হয়।তুই এসব ভেবে নিজেকে আর কষ্ট দিস না,কাব্য তার কর্মফল ঠিকই পাবে।”
“উনার কর্মফল ত উনি পাবেই,আর আমি নিজে উনাকে তার পাপের শাস্তি দিব।”
________________________________
সাদাফ শীলাকে এক নাগাড়ে ফোন দিয়েই যাচ্ছে সাবিহার খোঁজ নেয়ার জন্য কিন্তু কেউ ফোন ধরছে না।সাদাফের মাথায় নানা ধরনের খারাপ কথা ঘুরপাক খাচ্ছে?।সাদাফ আর কিছু ভাবতে পারছে না তাই আর কিছু না ভেবেই ছুটে চলল সাবিহাকে দেখার জন্য।কিন্তু গিয়ে যা দেখে তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তত ছিল না সাদাফ।
#চলবে…
(গল্পটা আমি রাত ১০ টা থেকে ১১ টার মধ্যে পোস্ট করব)#ভালবেসে রাখব কাছে
#লেখিকাঃ সাদিয়া সিদ্দিক মিম
#পর্বঃ৫
সাদাফ এসে দেখে সাবিহা দুইটা ছেলের সাথে হেঁসে হেঁসে কথা বলছে,আর তার পাশেই শীলা বসে আছে।সাদাফের খুব রাগ হল,ছেলেদের সাথে এত হেঁসে হেঁসে কথা বলার কী আছে বুঝে না সাদাফ।সাদাফের সাথে কথা বলার সময় ত মুখে এমন হাসিটা থাকে না,তবে কেন অন্য ছেলের সাথে কথা বলার সময় এই হাসি থাকবে?এসব ভেবে সাদাফের খুব রাগ হচ্ছে,তাই সে গটগটিয়ে সাবিহার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
নিশান ভাইয়া আর রিয়ান ভাইয়ার সাথে আমি আর আপু কথা বলছিলাম তখন সেখানে উপস্থিত হয় সাদাফ ভাইয়া।উনাকে দেখে আপু বলে উঠে,,,
“আয় বস এখানে,পরিচিত হ উনারা হলেন,,,
“তোমার না শরীর ভালো না তবে রেস্ট না নিয়ে এখানে বসে কী করছো?”
সাদাফ শীলাকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে সাবিহাকে গম্ভীর হয়ে কথাটা বলে উঠল।সাদাফের হঠাৎ এমন আচরনে উপস্থিত সবাই অবাক।সাবিহা একবার শীলার দিকে তাকাল,তাকিয়ে দেখে শীলাও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।তাই সাবিহা হালকা হেঁসে বলে উঠল,,,
“ভাইয়ারা এসেছে তাই ওদের সাথে কথা বলছিলাম,বসুন না আপনি।”
“কে উনারা?চিনলাম না ত!”
“আরে উনারা হলেন কাব্যর বন্ধু নিশান আর রিয়ান।সাবিহাকে দেখতে এসেছে।আর এটা হচ্ছে সাদাফ আমার ফ্রেন্ড।” (শীলা)
শীলার কথা শুনে নিশান,রিয়ান আর সাদাফ হাত মেলাল।তখন নিশান বলে উঠল,,,
“আমাদের এখন আসতে হবে,একটু কাজ আছে।”
“ভাইয়া এখনই চলে যাবেন?রাতের ডিনারটা করে গেলে হয় না!”
“না বোন,খুব জরুরি একটা কাজ আছে।আমরা এখন আসি,অন্য একদিন আসব।তখন পেট ভরে খেয়ে যাব,আসি এখন আর নিজের খেয়াল রেখো।”
সাবিহা মাথা নেড়ে সম্মতি জানালে নিশান আর রিয়ান বেরিয়ে যায়।তখন সাদাফ বলে উঠে,,,
“কাব্য ভাইয়া এমন একটা কাজ করার পরও তোমরা কীভাবে অর ফ্রেন্ডদের এলাও করলে বাড়িতে?”
“সাদাফ দোষ কাব্য করেছে,অর বন্ধুরা করে নি।অরা বরং সাদিয়াকে অনেক স্নেহ করে,আর তাই তারা খবরটা পেয়ে ছুটে এসেছে সাবিহাকে দেখতে।”
“দেখ গিয়ে এর পিছনেও হয়ত ঐ কাব্য আছে,হয়ত কোন নতুন ফন্দি আটতাছে।”
“ভাইয়া সবাইকে এত সন্দেহ করার রোগ আপনার কবে হল?”
“আশেপাশে যা হচ্ছে তাতে সন্দেহ করাটা স্বাভাবিক।”
“অরে আমার গোয়েন্দা পুলিশ আসছে রে,এত গোয়েন্দা গিরি যখন জানিস তখন গোয়েন্দা গিরিটাই কর।পুলিশে জয়েন কর,তাতে করে আমাদের বাংলাদেশ অনেক উপকৃত হবে।”
“শীলা আমি একদমই মজা করছি না,আর না মজা করার মুডে আছি।ভালো লাগছে না এখন এসব,আসছি আমি।”
কথাটা বলেই সাদাফ বের হয়ে গেলো।আর বেচারি শীলা বোকার মত তাকিয়ে রয়েছে সাদাফের যাওয়ার দিকে।শীলা ত একটু মজা করেছে তার জন্য এত রাগ দেখানোর কী হল বুঝতে পারছে না শীলা।আর সাদাফ এখন এখানে কেন এল সেসবও ত জানা হল না তার আগেই রেগে ফায়ার হয়ে চলে গেছে।এসব ভেবে শীলা একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে,আর সাবিহা কাউকে কিছু না বলে গুটিশুটি মেরে সোফায় শুয়ে পড়ে।শরীরটা ভালো লাগছে না,তাই চুপচাপ শুয়ে পড়ে।
______________________________________
কাব্য একটা নির্জন জায়গায় এসে গাড়ি থামায়,কাব্য গাড়ি থেকে নেমে কিছুটা দূরে এসে হাঁটু গেড়ে বসে চিৎকার করে বলে উঠে,,,
“সব ধ্বংস করে দিব আমি,সাবিহা তকে আমি ছাড়ব না।তোর কত বড় সাহস আমার গায়ে হাত তুলিস তুই,তোর ঐ হাত যদি আমি না ভেঙ্গেছি ত আমার নামও কাব্য নয়।আজ আমি যতটা একা হয়েছি ঠিক ততটাই একা করে দিব তকে।আমার ভালো থাকার সমস্ত কারন তুই কেড়ে নিয়েছিস তকে ত আমি ছাড়ব না।”
এভাবে অনেকক্ষণ বসে থাকার পর কাব্য নিজের গাড়িতে গিয়ে বসে।আর ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে ২৩+ কল এসেছে ইশার ফোন থেকে।কাব্য সঙ্গে সঙ্গে কল ব্যাক করল,কয়েকবার রিং হওয়ার পর ইশা কল ধরল।আর সাথে সাথে ইশা রেগে বলে উঠল,,,
“এখন কল দেয়ার সময় হয়েছে তোমার?এখন কল না দিলেও পারতে,বিকালে শপিং করানোর নাম করে কোন দুনিয়ায় চলে গেছো?”
কাব্যর এমনিতেই মেজাজ খারাপ তার উপর এই ডংঙ্গি রাগ দেখাচ্ছে।কাব্যর খুব রাগ হচ্ছে কিন্তু কাব্য তার রাগটা কন্ট্রোল করে ইশাকে বলে উঠল,,,
“সরি আসলে একটু বিজি ছিলাম।”
“কী এমন কাজ করছিলা যে এতটাই বিজি ছিলা আমার ফোনটাই ধরতে পারো নি?”
“আরেকটা মেয়ের সাথে ছিলাম,তার জন্য বিজি ছিলাম।আর কিছু বলবি তুই?”(ধমকে)
ইশা এবার ন্যাকা কান্না করে বলে উঠল,,,
” বেবি তুমি আমাকে তুই করে বলতে পারলে!আমাকে ধমক দিতে পারলে তুমি!যাও আর,,,
ইশা আর কিছু বলার আগেই কাব্য ফোনটা কেটে বন্ধ করে দেয়।কাব্যর এসব কিছুই ভালো লাগছে না,কাব্য এবার তার সমস্ত রাগ ঝাড়ে তার গাড়ির উপর।খুব স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে কাব্য,মনে হচ্ছে আধা ঘন্টার পথ পাঁচ মিনিটেই শেষ করে ফেলবে।
অন্যদিকে ইশা ভাবছে হঠাৎ হলো কী এই ছেলের,যে ছেলে ইশা বলতে পাগল আর আজ তার সাথে এমন করল কেন?তবে কী ইশার প্রতি কাব্যর ভালবাসা কমে গেলো?না না এমন হলে ত চলবে না,তবে ত সোনার ডিম পারা হাসঁ হাত ছাড়া হয়ে যাবে।যেটা ইশা চাইছে না,তাই মনে মনে শয়তানি ফন্দি আটা শুরু করে দেয়।কীভাবে কাব্যকে নিজের পায়ের কাছে এনে ফেলা যায় সে ফন্দি।
_______________________________________
সাদাফ বাড়িতে এসে মুখটা কালো করে ড্রয়িং রুমে বসে আছে।সাদাফকে এভাবে বসে থাকতে দেখে সাদাফের মা তার পাশে বসে বলে উঠে,,,
“কী হয়েছে এভাবে বসে আছিস কেন?”
“মা আমি বিয়ে করব।”
“মানেহ?” (অবাক হয়ে)
“মানে হল আমি বিয়ে করব,তুমি আঙ্কেলের সাথে কথা বলো।”
“হঠাৎ এই কথা কেন বলছিস সাদাফ?সাবিহার ত এখনও বিয়ের বয়স হয় নি আর তুই ত বলেছিলি তোর প্রতি সাবিহার মনে ফিলিংস হলে তারপর বিয়ে করবি।কিন্তু এখন হঠাৎ এ কথা কেন বলছিস বুঝিয়ে বল আমাকে?”
“মা আমার মনে হচ্ছে সাবিহাকে আমি হারিয়ে ফেলব।আমি জানি সাবিহার মনে আমার জন্য কোন ফিলিংস নেই।এতদিন সেটা মেনে নিলেও এখন মেনে নিতে পারছি না।ভয় হচ্ছে খুব,আমি কিছুতেই সাবিহাকে আমার ভালবাসাটা বুঝাতে পারছি না।তুমি প্লিজ আঙ্কেলের সঙ্গে কথা বলো।বিয়েটা না হলেও এনগেজমেন্ট করে রাখলাম,তাতে করে আমি একটু নিশ্চিন্ত হতে পারব।তারপর যখন সাবিহা বিয়ের উপযুক্ত হবে তখন না হয় বিয়েটা হল।”
“সাদাফ এতে করে হীতে বিপরীত হয়ে যাবে,সাবিহা কিছুতেই সবটা এত সহজে মেনে নিবে না।তুই নিজেকে একটু সময় দে,আর ঠান্ডা মাথায় চিন্তা কর।হার না মেনে সাবিহাকে তোর ভালবাসাটা বুঝা।হার মানা মানেই হেরে যাওয়া তাই হার না মেনে এগিয়ে যা,সফলতা একদিন আসবেই।”
“মা তুমি প্লিজ এখন এসব বলো না,তুমি আঙ্কেলের সাথে কথা বলো তারপর বাকিটা আমি দেখে নিচ্ছি।”
“আমার ছেলেটা বিয়ে পাগল হয়ে গেছে,কেউ আমার ছেলের জন্য পাবনায় একটা সিট বুকিং করো।”
“মা তুমিও মজা করছো?”
“ত কী করব?তুই কী বুঝতে পারছিস না এখনের পরিস্থিতিটা উপযুক্ত নয় তোর আর সাবিহার বিয়ের।সাবিহা কদিন হল একটা ধাক্কা খেয়েছে সেটা সামলে উঠার আগেই তুই আবার আরেকটা ধাক্কা দিবি তখন মেয়েটার কী অবস্থা হবে বুঝতে পারছিস?এত অস্থির না হয়ে ঠান্ডা মাথায় ভাব কী করা যায়?আর সাবিহা ত তোরই,সেটা তুইও জানিস আমরাও জানি।”
কথাটা বলেই সাদাফের মা চলে যায় আর সাদাফ কিছুতেই নিজের মনকে বুঝাতে পারছে না সাবিহা তার।সাদাফের খালি মনে হচ্ছে সাবিহাকে হারিয়ে ফেলবে।এতদিন সাবিহা কাব্যর কাছে ভালবাসার দাবী করেছে তখন যে মনের ভিতর কী হত সেটা সাদাফই জানে।কিন্তু তখন নিজেকে শান্ত রেখেছে এটা ভেবে যে সাবিহা সাদাফের।
সাদাফ কিছু একটা ভেবে দৌড়ে তার রুমে চলে আসে।আর এসে ড্রয়ারে কিছু একটা খুঁজছে,একটু খুজার পরই পেয়ে যায়।সেটা দেখে সাদাফের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুঁটে।আর সাদাফ মনে মনে বলে উঠে,,,
“তুমি হয়ত আমাকে বিয়ে করতে চাইবে না,কিন্তু আমিও তোমাকে আমি ছাড়া অন্য কারো বউ হতে দিব না।ভালবেসে আমার কাছে রাখব,অন্য কারো হতে দিব না।”
_____________________________________
গাড়িতে বসে আছি আমি,পাশেই বাবা বসে আছে।দৃষ্টি আমার বাইরের দিকে,মাঝে কেটে গেছে কয়েকদিন।আমি এখন পুরোপুরি সুস্থ,আর আজ যাচ্ছি নতুন স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য।নতুন স্কুলে ভর্তি হব,নিজেকে নতুন রূপে গড়ব ভেবেই আনন্দ লাগছে।কিন্তু এই আনন্দের মাঝেও কিছু খারাপ লাগা কাজ করছে।হিয়াকে খুব মিস করছি আজকে,কতদিন ধরে দেখা হয় না হিয়াটার সাথে।হঠাৎ চোখ আটকে যায় একটা জায়গায়,ইশা আপু এখানে কী করছে?আর ইশা আপুর সাথেই বা কে আছে ওটা?আমার জানতে খুব ইচ্ছে করছে ওখানে কী হচ্ছে তাই বাবাকে বললাম গাড়ি থামাতে।বাবাও কথামত ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বলে তারপর আমাকে জিজ্ঞেস করল,,,
“কী হয়েছে?”
“বাবা দেখো ইশা আপু একটা ছেলের সাথে।”
“ত কী হয়েছে?”
“কিছু না,তুমি একটু দাঁড়াও আমি আসছি।”
“এক পাও গাড়ি থেকে নিচে নামবে না।চুপচাপ বসে থাকো এই মেয়ের জন্য তোমার সাথে কী হয়েছে আশা করি সেটা ভুলে যাও নি।”
কথাটা বলেই বাবা ড্রাইভারকে গাড়ি চালাতে বলে,আমিও আর কিছু না বলে চুপ করে বসে আছি।
#চলবে…
(রাতে ১০-১১ টায় আরেকটা পার্ট দিব)