ভালবেসে রাখব কাছে পর্ব -২৫+২৬+২৭+২৮

#ভালবেসে রাখব কাছে
#লেখিকাঃ সাদিয়া সিদ্দিক মিম
#পর্বঃ২৫+২৬

সকাল ৬ টা বেজে ৪ মিনিট,,,বজ্জাত ফোনটা সক্কাল সক্কাল এক নাগাড়ে বেজেই চলেছে,হাজারও বিরক্তি নিয়ে চোখ ডলতে ডলতে ফোনটা ধরি।আর সাথে সাথে ওপর পাশ থেকে কেউ উত্তেজিত হয়ে বলে উঠে।

“সাবিহা মামনি তুই জলদি আমাদের বাড়িতে আয়,সাদাফের কী যেন হয়েছে?ঘুম থেকে উঠে কাঁদছে আর কী যেন বিড়বিড় করে চলেছে একনাগাড়ে।কী বলছে কিছুই বুঝতে পারছি না শুধু এতটুকু বুঝতে পেরেছি তোর নাম নিয়ে কিছু বলছে।মা না ভালো তাড়াতাড়ি আয় তুই।”

আন্টির কথাশুনে আমার চোখ থেকে ঘুম ছুটে গেলো,আর একরাশ চিন্তারা এসে ভর করল মস্তিষ্কে।কী হয়েছে সাদাফ ভাইয়ার?উনি এমনটা কেন করছে?নাহ এখানে বসে এসব ভাবলে চলবে না,আমাকে এক্ষুনি উনার বাড়িতে যেতে হবে।তাই শোয়া থেকে উঠে চুলগুলো হাত খোঁপা করে গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে গেলাম রুম থেকে।বাগানে এসে দেখি বাবা গাছে পানি দিচ্ছে,বাবা আমাকে দেখে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে।

“সাবিহা তুই এত সকালে গাড়ির চাবি নিয়ে কই যাচ্ছিস?”

“বাবা সাদাফ ভাইয়ার কী যেন হয়েছে?আন্টি ফোন করে বলল আমাকে যেতে।”

“সে কী?কী হয়েছে সাদাফের?”

“সেটাই ত জানি না,এখন এত কথা বলতে পারব না বাবা আমাকে তাড়াতাড়ি যেতে হবে।আমি এখন আসি বাবা এসে সবটা বলব তোমাকে।”

“আরে দাঁড়া আমিও যাব।”

“বাবা তোমাকে যেতে হবে না,আমি আগে গিয়ে দেখি তারপর তুমি যেও।”

কথাটা বলেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম,খুব দ্রুত ড্রাইভ করছি আমি।মনটা কেমন অস্থির হয়ে আছে,যতক্ষণ না নিজের চোখে উনাকে দেখব ততক্ষণ শান্তি নেই।সাদাফ ভাইদের বাড়ির সামনে গাড়ি থামিয়ে ছুটে গেলাম বাড়ির ভিতরে।এসে দেখি আন্টি আর আংকেল চিন্তিত মুখে সাদাফ ভাইয়ার পাশে বসে আছে।কিন্তু সাদাফ ভাইয়ার কোন ভাবাবেগ নেই,উনি উনার মত একমনে কী যেন বিড়বিড় করে চলেছে।উনাকে এমন অবস্থায় দেখে বুকের মধ্যে কেমন যেন একটা ব্যাথা অনুভব হল।আমাকে আসতে দেখে আন্টি আমার কাছে ছুটে আসে আর আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়।

“মা রে আমার ছেলেটাকে ঠিক করে দে না,দেখ না আমার ছেলেটা কেমন যেন করছে?ডাক্তারকে ফোন দিচ্ছি কিন্তু এত সকালে ফোন তুলছে না।না পেরে তকে ফোন দিয়েছি,কারো সাথে কোন কথা বলছে না এভাবেই রয়েছে সেই তখন থেকে।তুই আমার ছেলেটাকে ঠিক করে দে না রে মা।”

“আন্টি আপনি শান্ত হন,সাদাফ ভাইয়ার কিছু হয় নি।আমি দেখছি,আপনি শান্ত হন একটু।”

আন্টির থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে আমি সাদাফ ভাইয়ের দিকে এগিয়ে যাই।সাদাফ ভাইয়ের সামনে হাঁটু গেড়ে বসি আমি,আর কাঁপা কাঁপা হাতে সাদাফ ভাইয়ের গালে হাত রাখি।সাদাফ ভাইয়ের কোন ভাবাবেগ নেই,আমি এবার নরম স্বরে সাদাফ ভাইকে বলে উঠি।

“সাদাফ ভাই।”

সাদাফ ভাই এবার মুখ তুলে আমার দিকে তাকায়,আমাকে দেখার সাথেসাথে উনি আমার সামনে হাটু গেড়ে বসে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠে।

“আমার সাবিহা ফিরে এসেছে,আমার সাবিহা আমার কাছে ফিরে এসেছে।কাব্য,লিজা আমার থেকে সাবিহাকে কেড়ে নিতে পারে নি।মা,বাবা দেখো সাবিহা আমার কাছে ফিরে এসেছে।এই সাবিহা আমাকে ছেড়ে কিন্তু একদম যাবে না।আমি মরে যাব তোমাকে ছেড়ে,প্লিজ যেও না আমাকে ছেড়ে।খুব ভালবাসি তোমাকে,প্লিজ আমাকে একা করে চলে যেও না।না না এভাবে বললে হবে না,চলো আমরা পালিয়ে যাই এখান থেকে।কাব্য আর লিজার থেকে অনেক দূরে চলে যাব তোমাকে নিয়ে।তবে আর অরা তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।আর আমার থেকে দূরে সরাতেও পারবে না।চলো আমার সাথে,সবার আড়ালে অনেক দূরে চলে যাব তোমাকে নিয়ে।তাড়াতাড়ি চলো,নয়ত কাব্য আর লিজা চলে আসবে।”

উনি কথাগুলো একনাগাড়ে বলে উঠে দাঁড়িয়ে আমার হাত ধরে বসা থেকে উঠায়।আর দরজার দিকে হাঁটা ধরে,আমি উনার আচরনে এতটাই অবাক যে উনাকে যে আটকাবো সেটাও মাথায় নেই।উনি আজও সেদিনের মত পাগলামি করছে যেদিন কাব্য ভাই আমাকে কিডন্যাপ করেছিল।আর আজও এমন করছে,কী হয়েছে উনার?কী সমস্যা হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না।সাদাফ ভাইয়ার বাবার কথায় হুস আসে আমার।

“সাদাফ তুই কী শুরু করেছিস?কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস সাবিহাকে?দাড়া সাদাফ,কথা শোন আমার।”

সাদাফ ভাই কারো কথা না শুনেই হেটে চলেছে।কিন্তু আমি এবার দাঁড়িয়ে যাই আর সেটা দেখে সাদাফ ভাই পিছন ফিরে বলে উঠে,,,

“থামলে কেন?চলো তাড়াতাড়ি,নয়ত কাব্য আর লিজা চলে আসবে।”

“হ্যাঁ ভাইয়া আমরা যাব ত,কিন্তু যাওয়ার আগে একটা ছোট্ট কাজ করতে হবে।”

“কী কাজ করতে হবে তাড়াতাড়ি বলো,নয়ত অরা চলে আসবে।”

আমি এবার সাদাফ ভাইকে বিছানায় বসাতে বসাতে বলে উঠি।

“আচ্ছা আপনি একটু বসুন আমি আসছি।”

“না না,তুমি কোথাও যাবে না।তুমি গেলে যদি আর না আসো।না একদম কোথাও যাবে না তুমি আমাকে ছেড়ে।আমার পাশে বসো তুমি,আর কী করবে তাড়াতাড়ি করো নয়ত অরা চলে আসবে।”

আমি উনার অবস্থা দেখে বুঝতে পারছি উনি খুব ভয় পেয়েছেন,যার জন্য উনি এমন আচরন করছে।তাই আন্টিকে ইশারায় বললাম কিছু খাবার আর ঘুমের ঔষধ নিয়ে আসতে।একটু ঘুমালেই উনি ঠিক হয়ে যাবে মনে হচ্ছে।আন্টি আমার কথামত ঔষধ আর খাবার নিয়ে আসে।আমিও উনাকে নানা ধরনের কথা বলে খাইয়ে দিয়ে ঔষধটা খাইয়ে দেই।খাওয়ার পর উনি আমার কোলে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে যায়।সেটা দেখে আন্টি আর আংকেল কিছুটা নিশ্চিন্ত হন,আর তারা বেরিয়ে যায় ঘর থেকে।
সাদাফ ভাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি আমি আর ভেবে চলেছি উনি এমন কেন করছে?কোন খারাপ স্বপ্ন দেখে কী এমন পাগলামি করছে?কিন্তু স্বপ্ন দেখে কী কেউ এতটা পাগলামি করে?অন্য কোন ঘটনা নেই ত এসবের পিছনে।আর উনি বারবার কাব্য ভাই আর গরিলা মার্কা মহিলার কথা কেন বলল?তারা কী কিছু করেছে?উফফ মাথা পুরো হ্যাং হয়ে আছে,কিছু বুঝতে পারছি না আমি।না মাথায় এত চাপ দিয়ে লাভ নেই,আমার সমস্ত প্রশ্নের উওর সাদাফ ভাই ই দিতে পারবে।ত উনার ঘুম থেকে উঠার অপেক্ষা করি,তারপর সবই জানতে পারব।

___________________________________

দুপুর ২ টা ছুঁইছুঁই,সাদাফের ঘুম ভাঙ্গে আর চোখ খুলে নিজেকে কারো কোলে আবিষ্কার করে।সাদাফ তাড়াহুড়ো করে উঠে পড়ে,আর তাকিয়ে দেখে সাবিহা বেডে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে।কিন্তু সাদাফ তাড়াহুড়ো করে উঠাতে সাবিহার ঘুমটা ভেঙ্গে যায়।

আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি সাদাফ ভাইয়া জেগে গেছে সেটা দেখে মুচকি হেঁসে বলে উঠে,,,

“এখন ঠিক আছেন আপনি?”

সাদাফ ভাইয়া মাথা নাড়িয়ে বুঝায় সে ঠিক আছে।পরক্ষনেই আবার বলে উঠে,,,

“তুমি এখানে?আর তোমার কোলে,,,

” সকালে কী পাগলামি করেছেন মনে নেই আপনার?আচ্ছা এটা বলুন ত লিজা আপু আর কাব্য ভাই কী করেছে?যার কারনে সকালে এতটা পাগলামি করেছেন?”

আমার কথাশুনে সাদাফ ভাইয়ের মুখে ভয়ের ছাপ আবারও দেখা দেয়।উনাকে এমন ভয় পেতে দেখে এবার আমারও কেমন যেন একটা লাগছে।কী এমন হয়েছে যার জন্য উনি এভাবে এতটা ভয় পেয়ে রয়েছে?আমি উনার কাঁধে হাত রেখে বলে উঠি,,,”

“সাদাফ ভাইয়া কোন সমস্যা হয়েছে?”

সাদাফ ভাইয়া আমার দিকে টলমল চোখে তাকিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠে,,,

“আমি এখন তোমাকে কিছু বলতে পারব না সাবিহা,সময় হলে সব বলব তোমাকে।কিন্তু তুমি প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না,আমি তোমাকে খুব ভালবাসি।তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারব না আমি,প্লিজ কখনও ছেড়ে যেও না।”

উনার এমন অবস্থা দেখে আমি শুধু অবাকই হচ্ছি।কিছুই বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে এসব?কী আছে এসবের পিছনে যার জন্য উনি এতটা পাগলামি করছে?

“শীলার বিয়ের দিন চলো আমরা বিয়ে করে ফেলি।”

সাদাফ ভাইয়া আমাকে ছেড়ে আমার গালে হাত দিয়ে কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে বলে উঠে কথাটা।উনার কথা শুনে চমকে উনার দিকে তাকাই,কী বলছে উনি এসব?আপুর বিয়ের দিন আমাদের বিয়ে মানে?কীভাবে কী?”

“মানেহ?”

“এত কিছু জানি না আমি,তুমি শুধু বলো আমাকে বিয়ে করবে আর সেটা এ সপ্তাহেই।আমি সারাক্ষণ তোমার আশেপাশে থাকতে চাই,যাতে কেউ তোমাকে আমার থেকে কেড়ে নিতে না পারে।প্লিজ সাবিহা আমাকে ফিরিয়ে দিও না,রাজি হয়ে যাও প্লিজ।”

“আপনার থেকে কে কেড়ে নিবে আমাকে সেটা ত বলুন।”

“আমি এখন কিছু বলতে পারব না সাবিহা,তুমি আমার কাছে কিছু জানতে চেও না দয়াকরে।শুধু তুমি বলো আমাকে বিয়ে করবে আর সেটা এ সপ্তাহেই।”

উনার কথাশুনে মাথায় আবার নতুন চিন্তা এসে ভর করল।

“সাবিহা কিছু ত বলো।”

“আমাকে একটু ভাবার সময় দিন।আমি আপনাকে পরে জানাচ্ছি।”

কথাটা বলেই উনার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বেরিয়ে এলাম রুম থেকে।
অন্যদিকে সাদাফ বেডে বসে দুইহাত দিয়ে চুল আকড়ে ধরে আর কান্না জড়িত কন্ঠে বলে উঠে।

“তোমাকে হারাতে পারব না আমি,তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারব না আমি।আমার থেকে তোমাকে কেড়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।কেড়ে নিবে আমার থেকে তোমাকে,তোমার লাইফ রিক্স আছে সাবিহা।ছয় বছর আগে যেমনটা আমার থেকে তোমাকে কেড়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিল ঠিক এখনও তাই করা হচ্ছে।কিন্তু আমি ত পারব না তোমাকে ছেড়ে থাকতে, আমার তোমাকে চাই সারাজীবনের জন্য।তোমাকে হারানোর ভয়ে পাগল হয়ে যাচ্ছি আমি।তোমাকে ছেড়ে বাঁচতে পারব না আমি,বাঁচতে পারব না।”

কথাটা বলেই সাদাফ কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।

#চলবে,,,

(বিয়েটা কী দিয়ে দিব নাকি🤔)

#ভালবেসে রাখব কাছে
#লেখিকাঃ সাদিয়া সিদ্দিক মিম
#পর্বঃ২৬

আর মাত্র তিনদিন পর আপুর বিয়ে,আর সাদাফ ভাইও পাগলামি করছে আপুর বিয়ের দিন বিয়ে করার জন্য।কিন্তু আমার মন সায় দিচ্ছে না,এখনই বিয়ে করতে চাইছি না আমি।উনি প্রতিনিয়ত আমাকে বিয়ের জন্য পেশার দিচ্ছে।উনি এত কথা বলে চলেছে কিন্তু আসল কথাই বলছে না।আমার লাইফ রিস্ক আছে মানে কী?কে আমার ক্ষতি করতে চায়?গরিলা মার্কা মহিলা নাকি কাব্য ভাই?মাথায় কিছু ধরছে না আমার।আমি যখন এসব ভাবনায় মগ্ন তখন কেউ আমার রুমে প্রবেশ করে।আমি তাকিয়ে দেখি কাব্য ভাই,উনাকে দেখেই রাগটা মাথা চারা দিয়ে উঠে।

“আপনার সাহস কী করে হল আমার রুমে আসার?বেরিয়ে যান আমার রুম থেকে,নয়ত খুব খারাপ হয়ে যাবে।”

“সাবিহা আমি তোর কোন ক্ষতি করব না,তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।ত দয়াকরে আমার কথাটা ঠান্ডা মাথায় শোন।আমি কথাটা বলেই চলে যাব, প্লিজ আমার কথাটা শোন।”

“আমি আপনার কোন কথা শুনতে চাই না,চলে যান এখান থেকে।”

“দুই মিনিট শুধু দুই মিনিট সময় দে আমাকে।আমি আমার কথা শেষ করেই চলে যাব।প্লিজ দয়াকরে আমার কথাটা শোন।”

আমি কিছুক্ষণ ভেবে,বলে উঠলাম।

“বলুন কী বলতে চান?”

আমার কথা শুনে কাব্য ভাইয়া খুশি হয়ে যায়।আর হাসিমুখেই বলে উঠে।

“থ্যাংকস ইয়ার,অবশেষে তোর সাথে কথা বলার সুযোগ পেলাম।এ কয়টা দিন খুব চেষ্টা করেছি তোর সাথে কথা বলার জন্য।কিন্তু প্রতিবারই তুই কিছু না কিছু করে আমাকে বলার সুযোগই দিস নি।”

“এসব বলার জন্য এখানে এসেছেন আপনি?”

“আরে না,আমি ত,,,,

” বেশি কথা না বলে কাজের কথা বলুন।”

“আসলে,আমি তোর কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি।এতদিন তোর সাথে অনেক অন্যায় করেছি তার জন্য আমি অনুতপ্ত।তোকে এতটাই কষ্ট দিয়েছি যে এখন আমি প্রতিনিয়ত শাস্তি পাচ্ছি।আমার পরিবার থেকেও নেই,যাকে ভালবেসেছিলাম সেও ধোঁকা দিলো আমাকে।আমাকে তুই ক্ষমা করে দে,নয়ত আমি মরেও শান্তি পাব না।”

কাব্য ভাইয়ের কথাশুনে আমি হু হা করে হেঁসে উঠলাম।কথাগুলো বলার সময় উনার চোখে পানি টলমল করছিল।আমার হাসির আওয়াজে চোখে জল নিয়েই তাকায় আমার দিকে।

“তুই হাসছিস?”

“ত কী করব?নাচব নাকি কাঁদব?আপনার এসব ফালতু নাটক দেখার সময় নেই আমার।আপনি আসতে পারেন।”

“আমি কোন নাটক করছি না সাবিহা।বিশ্বাস কর আমাকে আমি সত্যি অনুতপ্ত।দয়াকরে ক্ষমা করে দে আমাকে।”

“আমি এত দয়ালু নই যে আপনার মত অমানুষ, পাষানকে ক্ষমা করে দিয়ে সবকিছু ভুলে যাব!আপনি কী ভাবছেন আপনার করা এত অন্যায় শুধু ক্ষমা চাওয়াতেই সেটা ভুলে গিয়ে ক্ষমা করে দিব?এমনটা ভাবলে ভুল ভাবছেন আপনি।আমি আপনাকে কখনও ক্ষমা করব না, আমি আর একটা কথাও শুনতে চাই না আপনার মুখে।বেরিয়ে যান আমার রুম থেকে।”

আমার কথাশুনে কাব্য ভাই আমার দিকে এগিয়ে আসে আর আমার হাত তার মুঠোয় নিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বলে উঠে।

“ক্ষমা করতে না পারিস,অন্তত আমাকে একটা সুযোগ দে ভালো হওয়ার।আমাকে পুলিশের হাতে তুলে দিস না,আমি জীবনটা গুছিয়ে নিতে চাই।”

উনি হাতটা বেশ ভালো করেই ধরেছে যার জন্য ছাড়াতে পারছি না।তারপরও হাত ছাড়াবার চেষ্টা চালাচ্ছি।

“হাত ছাড়ুন আমার,হাত ছেড়ে কথা বলুন।”(রেগে)

” না আমি ছাড়ব না,আগে তুই বল আমাকে একটা শেষ সুযোগ দিবি?”

“হাতটা ছাড়ুন আমার।”

“তুই ত আমাকে ভালবাসিস,ত ভালবাসার মানুষটাকে একটা শেষ সুযোগ কী দেয়া যায় না?তুই আমাকে এই শেষ সুযোগটা দিয়ে দেখ আমি আমার করা সব অন্যায় শুধরে নিব।জীবনটা নতুন করে সাঁজাব তোর সাথে।ভালবাসব তকে,ভালবেসে রাখব কাছে।প্লিজ একটা সুযোগ দে আমাকে।”

আমি কাব্য ভাইয়ের কথার পরিবর্তে কিছু বলব তার আগেই সাদাফ ভাই হাত তালি দিতে দিতে ঘরে প্রবেশ করে।আমি সেটা দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকাই উনার দিকে,আর কাব্য ভাই আমার হাতটা ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায়।

“বাহ!বাহ!বাহ!ভালোই ত চলছে রোমান্টিক সিন।তা বন্ধ করলে কেন চালিয়ে যাও।”

“বাজে কথা কম বলুন।”

“তোমরা এখানে হাত ধরাধরি করে রোমান্টিক কথা বলছো,ভালবাসার কথা বলছো আর আমি কিছু বললেই বাজে কথা হয়ে গেলো!”

“পুরো কথা শুনে তারপর কথা বলুন,না জেনে কথা বলবেন না।”

“একদম চুপ,একটা কথাও বলবা না তুমি।এখন আমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারছি তুমি কেন আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছো না।আমারই বুঝার উচিত ছিল যে মেয়ে কাব্য বলতে পাগল সে মেয়ে হঠাৎ আমাকে ভালবাসতে চাইবে কেন?তার পিছনে নিশ্চয়ই কোন কারন আছে নয়ত সে এত তাড়াতাড়ি একজনকে ভুলে গিয়ে আরেকজনকে ভালবাসতে চাইবে কেন?আমার অনুভূতি নিয়ে খেলছো তুমি।আমাকে ঝুলিয়ে রেখে আরেকজনের সাথে প্রেমালাপ করছো।আমি তোমাকে সেফ রাখার জন্য এতকিছু করছি আর তুমি কী না এসব করছো?নেহাত তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারব না নয়ত তোমার মুখও দেখতে চাইতাম না আমি।কিন্তু সেটা ত পারব না তাই তোমাকে সারাজীবনের মত নিজের করে নিব আজ।যাতে আমি ছাড়া আর কারো হতে না পারো তুমি।”

কথাটা বলেই সাদাফ ভাই আমার হাত টেনে নিয়ে যাচ্ছে,কাব্য ভাই আটকাতে চাইছে কিন্তু উনি ছাড়ছে না।

“সাদাফ সাবিহাকে নিয়ে তুমি কোথায় যাচ্ছো?ছাড়ো সাবিহাকে।ফুপি,ফুপা দেখে যাও সাবিহাকে নিয়ে সাদাফ কোথায় যেন যাচ্ছে!”

সাদাফ ভাই কোন দিকে পাত্তা না দিয়ে আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।আমি ছাড়াতে চাইলে উনি আমাকে কোলে তুলে নেয়।

“ভুল করছেন আপনি,ছাড়ুন আমাকে।”

উনি কোন কথা না বলে হেঁটেই চলেছে।উনি আমাকে গাড়িতে বসিয়ে আমার গলার উর্না দিয়ে হাত বেঁধে দেয়,আর উনার রুমাল দিয়ে মুখ বেঁধে দেয়।পিছন থেকে আপু আর কাব্য ভাই ছুটে আসছে আটকাতে।আর বাবা বুকে হাত গুজে দাঁড়িয়ে থেকে সবটা দেখছে,পাশেই মা দাঁড়িয়ে আছে।তাদের ভাব এমন যেন কিছুই হচ্ছে না।

অনেকক্ষণ পর সাদাফ ভাইয়া একটা কাজি অফিসের সামনে গাড়ি থামায়।সেটা দেখে আমার চোখ বড়বড় হয়ে যায়,আমি উনার দিকে তাকিয়ে মাথা ঝাঁকিয়ে বুঝাচ্ছি এমনটা না করতে।কিন্তু উনি কোন কথা কানে না নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে আমার হাতের বাঁধন খুলে উর্নাটা গায়ে দিয়ে আবারও কোলে তুলে নেয়।আমি উনাকে কিল,ঘুসি দিয়েই চলেছি ছাড়ানোর জন্য কিন্তু উনি ছাড়ছেই না।সাদাফ ভাই আমাকে ভিতরে নিয়ে এসে একটা চেয়ারে বসিয়ে দু’পাশে হাত দিয়ে বলে উঠে।

“একদম ছটফট করবে না,চুপচাপ বিয়েটা করে নিবা।”

উনার কথাশুনে এবার ঠাস করে উনার গালে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেই।

“একবার বাল্যবিবাহ করে কী তোর শখ মিটে নি,আবার বাল্যবিবাহ করতে তুলে নিয়ে এসেছিস।”

কথাটা বলেই উনাকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে উঠে দাঁড়ালাম বাইরে আসার জন্য।কিন্তু উনি এবার আমার হাত ধরে আটকে দেয়,আর টান দিয়ে উনার বুকের উপর ফেলে,জড়িয়ে ধরে শক্ত করে।আমি ছোটার জন্য ছটফট করলে উনি আমার গাড়ে কিছু একটা করে।আমি গাড়ে হাত দিয়ে উনার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ডলে পড়ি উনার বুকে।উনি সেটা দেখে আমাকে বুকে আগলে নিয়ে কপালে একটা চুমু একে দেয়।আর আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে উঠে,,,

“জানতাম তুমি এখন বিয়ে করতে কখনও রাজি হবে না।তাই আজ বাড়ি থেকে প্রস্তুতি নিয়েই বেরিয়েছি। তুমি আজ বিয়েতে রাজি না হলে তুলে নিয়ে বিয়ে করব এমনটা ভেবেই এসেছিলাম।কিন্তু এসেই কাব্যর সাথে তোমাকে ওভাবে দেখি,আর তাতে করে মেজাজ আরো বিগড়ে যায়।আর কাব্যর বলা কথাগুলো শুনে তোমাকে হারানোর ভয়টা আবারও ঝেকে বসে মাথায়।তাই আজ যেভাবেই হোক তোমাকে নিজের করেই নিব।তুমি আমার আর আমার কাছেই থাকবে।হোক সেটা ভুল রাস্তার,কিন্তু আমি তোমার জীবন নিয়ে আর কোন রিস্ক নিতে পারব না।আর না পারব তোমাকে হারাতে।আর তখন রাগ দেখিয়ে অনেক কথা বলে ফেলেছি,তার জন্য হয়ত তুমি আমার উপর খুব রাগ করে আছো।কিন্তু আপাতত আমার কিছু করার নেই,এখন আমার একটাই কাজ তোমাকে নিজের করে নেয়া।”

কথাগুলো বলে সাদাফ সাবিহার কানের লতিতে আরেকটা চুমু দিয়ে কোলে তুলে নেয়।আর একটা চেয়ারে বসে সাবিহাকে নিজের বুকে আগলে নেয়।ফোনটা হাতে নিয়ে কাউকে ফোন লাগায় আর সাবিহার দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,,,

“তিন ঘন্টার জন্য নিশ্চিন্ত তার মধ্যে সব রেডি চাই।”

কথাটা বলেই সাদাফ ফোনটা পকেটে রেখে দেয়।আর সাবিহার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে।

#চলবে,,,

(সাদাফ আর সাবিহার বিয়ের দাওয়াত রইল🥰।গিফট নিয়ে এসো সবাই নয়ত কালকে বিবাহ বিভ্রাট পর্ব দিব😴।)#ভালবেসে রাখব কাছে
#লেখিকাঃ সাদিয়া সিদ্দিক মিম
#পর্বঃ২৭+২৮

যখন জ্ঞান ফিরে তখন নিজেকে বউ সাজে সাদাফ ভাইয়ের রুমে আবিষ্কার করি।আমি হুরমুরিয়ে শোয়া থেকে উঠে বসি,আর সামনেই দেখতে পাই সাদাফ ভাই একটা চেয়ার নিয়ে বসে আছে।উনার দৃষ্টি আমাতেই আবদ্ধ,আমাকে উঠে বসতে দেখে উনি আমার কাছে এগিয়ে এসে পাশে বসে।

“এসবের মানে কী?আমি এখানে কেন?আর এই সাজেই বা কেন?”

“বউ সাজে না তোমাকে খুব হট লাগছে,ইস্ ইচ্ছে করছে বিয়ের আগেই বাসরটা সেরে ফেলি।”

“বাজে কথা না বলে যেটা জানতে চেয়েছি সেটা বলুন।”

“এখনও বুঝতে পারছো না সাবুপরি?”

“হেয়ালি না করে ভালোয় ভালোয় উওর দিন আমি এখানে আর এই সাজে কেন?”

“আজ ত আমাদের বিয়ে,আর বিয়ের দিন বউ ত বউ সাজেই থাকবে তাই না!”

“মানেহ?”

“এত মানে টানে বুঝাতে পারব না।এখন উঠো ত তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।”

“আবার কীসের সারপ্রাইজ?”

“চলো গেলেই দেখতে পাবে।”

“আমি যাব না আপনার সাথে।আর না আপনাকে বিয়ে করব আমি।আপনি ত আমাকে বিশ্বাসই করেন না ত আপনাকে বিয়ে করে লাভ নেই।”

“তুমি কী ভেবেছো তুমি না করলে আমি শুনব?মোটেও নয় আমি যখন বলেছি আজ আমাদের বিয়ে ত আজই আমাদের বিয়ে।”

কথাটা বলেই উনি আমাকে কোলে তুলে নেয়,আর বাড়ির বাইরে নিয়ে আসে আমাকে।আমি বাইরে এসে অবাকের চরম সীমানায়।বাগানটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।আর সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হল আমার পরিবার,সাদাফ ভাইয়ের পরিবার,মেঘ ভাইয়ার পরিবার আরো অনেকে এখানে উপস্থিত রয়েছে।তার মানে সবটা আগেই প্লান করা ছিল?আমাদের এভাবে আসতে দেখে সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।আমিও লজ্জার মাথা খেয়ে সবার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছি।আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমার বাবা কানে হাত দিয়ে সরি বলল।আমি কিছু না বলে মুখটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে নেই।সাদাফ ভাই আমাকে সোফায় বসিয়ে আমার পাশে বসে।

“কী কেমন লাগল সারপ্রাইজ?”

আমি কিছু না বলে গাল ফুলিয়ে বসে আছি।উনি সেটা দেখে বাঁকা হেঁসে কানের কাছে গিয়ে আস্তে করে বলে উঠল।

“এখন চুপ করে থাকো সমস্যা নাই কিন্তু কবুল বলার সময় কবুলটা বলে দিও।”

আমি উনার কথায় পাত্তা না দিয়ে চুপ করে বসে আছি।তখন কেউ আমাকে জড়িয়ে ধরে আর আমি তাকিয়ে দেখি হিয়া আর অর পাশেই নিলয় ভাইয়া দাড়ানো।

“বইনরে বইন তুমি তলে তলে বিয়ে অবধি এগিয়ে গেছো আর আমি কিছুই জানলাম না?আজ সাদাফ ভাই বিয়ের দাওয়াত না করলে ত জানতেই পারতাম না।”

আমি হিয়াকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে বলে উঠলাম,,,

“তুমিও ত তলে তলে টেম্পু চালাইতাছো সেটা কী আমাকে বলছো?”

আমার কথা শুনে হিয়া ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়,আমতা আমতা করে বলে।

“ককী বলছিস এএসব?”

“কী বলছি তুই ভালো করেই বুঝতে পারছিস,তুই যে নিলয় ভাইয়ের সাথে রিলেশনে আছিস সেটা আমি জানি না ভেবেছিস?”

আমার কথা শুনে নিলয় ভাইয়ার কাশি উঠে যায়,উনি কাশতে কাশতে সেখান থেকে টুপ করে সরে যায়।আর হিয়া লজ্জা পেয়ে সেখান থেকে কেটে পড়ে।হিয়া ভাবতেও পারে নি আমি কথাটা বলে ফেলব।।আসলে নিলয় ভাইয়া হিয়াকে হসপিটালে সেদিন দেখে প্রেমে পড়ে যায়।আর হিয়াকে সেটা জানালে হিয়াও রাজি হয়ে যায়।কিন্তু আমাকে সেসব কিছুই জানায় নি,আমি অবশ্য গোপন সূত্রে কথাটা জেনেই ফেলেছি।

“দিলে ত দুজনকে ভাগিয়ে,বেচারি একটু আসছিল মজা করতে আর তুমি ওদের লজ্জা দিয়ে ভাগিয়ে দিলা।”

আমি কিছু না বলে চুপ করে আছি,যাই হয়ে যাক উনার সাথে আমি কথা বলছি না।উনি আমাকে তখন কতগুলো কথা শুনিয়ে দিলো সবটা না জেনে।আমার উওর না পেয়ে উনি একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে আমার বাবার কাছে গিয়ে কিছু একটা বলে।আর বাবা আমার কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠে।

“মামনিটা রাগ করেছে আমাদের উপর তাই না?”

“একদম কথা বলবে না আমার সাথে।আমাকে তাড়ানোর জন্য যদি এতই তাড়া তোমাদের,আমাকে বলতে আমি চুপচাপ চলে যেতাম।এসব করার কী খুব প্রয়োজন ছিল?”(অভিমানও স্বরে)

“হ্যাঁ রে মা প্রয়োজন ছিল,তুই হয়ত এখন বুঝবি না কিন্তু সময় হলে ঠিক বুঝবি যে আমরা ভুল কিছু করি নি।শুধু জেনে রাখ কোন বাবা মা চায় না তাদের সন্তানের ক্ষতি হোক।তেমনি আমরাও চাই না,ত আমাদের কথা ভেবে বিয়েটা করে নে মা।এতে তোরও ভালো,আমাদেরও ভালো।”

কথাটা বলে বাবা চলে যায়,আর আমি হিসেব মেলাতে ব্যাস্ত।সবাই কেমন রহস্য রেখে রেখে কথা বলছে আমার সাথে।কী এমন রহস্য লুকিয়ে আছে যেটা সবাই জানে শুধু আমি জানি না?আমি জানলে কী ক্ষতি হবে?কিছুই মাথায় আসছে না আমার।

“এই যে ভাবনা কুমারি এত ভেবে লাভ নেই সময় মত সবটা জেনে যাবেন।এখন ছোট্ট মাথায় এত চাপ দিয়ো না ত।”

সাদাফ ভাই পাশে বসতে বসতে কথাটা বলল।আমি উনার দিকে একবার তাকিয়ে মুখটা অন্য দিকে ফিরিয়ে আবারও ভাবনার জগতে পা বাড়াই।কিছুক্ষণ পর কাজির কথায় ধ্যান ভাঙ্গে আমার।কবুল বলার জন্য বলছে কিন্তু আমি শুনেও না শোনার ভান করে বসে আছি।তখন সাদাফ ভাই আমার কানের কাছে এসে বলে।

“কবুল বলে দাও সাবুপরি,নয়ত সবার সামনে চুমুতে ভরিয়ে দিব তোমাকে।”

আমি উনার কথাশুনে চোখ বড়বড় করে তাকাই উনার দিকে।উনি সেটা দেখে চোখ টিপ মারে,আমি আর কিছু না ভেবে কবুল বলে দেই।বেশ ভালো ভাবেই বিয়েটা সম্পন্ন হয় আমাদের।কিন্তু পুরো সময়টাতে কোথাও কাব্য ভাই কিংবা গরিলা মার্কা মহিলাকে দেখতে পাই নি।সবাই যখন আছে ওদেরও ত থাকার কথা কিন্তু নেই কেন?

___________________________________

বাসর ঘরে বউ সাজে বসে অপেক্ষা করছি সাদাফ ভাইয়ার জন্য।রাত ১২ টা বাজতে চলল তার খবর নেই,মহাশয় আজ আসুক অনেক কাজ বাকি আছে।আজ যদি উনাকে আলুর বর্তা না বানাইছি তবে আমার নামও সাবিহা না।

বেশ অনেকক্ষণ পর সাদাফ রুমে আসে,সাবিহা সেটা ঘোমটার ভিতরে থেকেই আড়চোখে সাদাফের দিকে তাকায়।সাদাফকে দেখেই মনে হচ্ছে ভয় পেয়ে রুমে ডুকছে।অবশ্য ভয় পাওয়ারই কথা যার সাবিহার মত বউ আছে সে ভয় না পেয়ে যাবে কোথায়।তার উপর আবার তুলে এনে জোর করে বিয়ে করেছে।সাদাফের কপালে দুঃখ লিখা আছে বাসর রাতে।

সাদাফ ভাইকে দেখে আমি ধীরে ধীরে খাট থেকে নামি।আর লজ্জার পাওয়ার মত মুখ করে উনার সামনে দাঁড়াই আর উনার পায়ের সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসি সালাম করার জন্য।উনি সেটা দেখে খুশি হয়ে যায় আর বলে উঠে।

“আরে আরে সালাম করতে হবে না,আমার দোয়া এমনি তোমার উপরে সবসময়,,,

আর কিছু বলতে পারল না তার আগেই সাদাফ ধপাস করে নিচে পড়ে যায়।আর সাবিহা খিলখিলিয়ে হেঁসে উঠে।আসলে সাবিহা সাদাফের পায়ে টান দিয়ে ফেলে দেয়।সাদাফ কোমড়ে হাত দিয়ে কাচুমাচু মুখ করে বলে উঠে,,,

” এই ছিল তোমার মনে?শেষমেষ বাসর রাতে নিজের একমাত্র জামাইকে সালাম করার নামে এভাবে ফেলে দিলে?আমার কোমড়টা ভেঙ্গে গেলো গো,কেউ আমারে উঠাও।”

আমি হাসতে হাসতেই সাদাফ ভাইয়ের দিকে হাত বাড়িয়ে দেই,উনি আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে হাত না ধরেই উঠার চেষ্টা করে।তারপর আমি জোড় করেই উনাকে তুলে খাটে বসাই আর উনার পাশেই পা ঝুলিয়ে বসে পড়ি।

” কী ভেবেছিলেন অন্য সবার মত সুন্দর করে সালাম করব আপনাকে?তেমনটা ভাবলে ভুল,কারন সাবিহা মানেই নতুনত্ব।তাই নিউ স্টাইলে সালাম করলাম আপনাকে।”

কথাটা বলেই আবারও হেঁসে ফেললাম আমি,উনি এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি হাসি থামিয়ে আবারও বলে উঠি,,,

“আমাকে বিয়ে করার খুব শখ ত আপনার তাই না?এবার সেই শখটা সুধে আসলে পূরন করব আমি।সারাজীবন জ্বালিয়ে মারব।”

“তুমি আমার কাছে সারাজীবন থাকলে আমি তোমার সবকিছু হাসিমুখে মেনে নিব,খুব ভালবাসি তোমাকে।”

“হুম জানি জানি কতটা ভালবাসেন আপনি।ভালবাসলে তখন ওভাবে রিয়েক্ট করে তুলে আনতেন না আমাকে।”

“সাবিহা আমি তোমাকে সত্যি খুব ভালবাসি,আর তোমাকে কাব্যর সাথে ওভাবে দেখে আমি রাগ করি নি।রাগ করেছি কাব্য তোমার হাত ধরেছিল বলে,আমি ছাড়া অন্য কোন পুরুষ তোমাকে ছুঁলে আমার শয্য হয় না।বুকের ভিতর আগুন জ্বলে তাই ওভাবে রিয়েক্ট করেছি।আর তুলে এনে বিয়ে করার কথা বললে বলব ওটা আগে থেকেই প্লান করা ছিল।এটার জন্য তুমি আমাকে যে শাস্তি দিবে আমি মাথা পেতে নিব কিন্তু আমাকে ছেড়ে যেও না।”

“শাস্তি ত অবশ্যই দিব তবে সেটা তখনকার বাজে আচরনের জন্য,তুলে এনে বিয়ে করার জন্য নয়।তুলে এনে বিয়ে করার জন্য আপনাকে এত্তগুলা থানকু।”

“মানে?”

“মানে হল আমার স্বপ্ন ছিল আমার যে স্বামী হবে সে আমাকে তুলে এনে জোড় করে বিয়ে করবে।সাইকো টাইপের গল্প পড়তে পড়তে এই ইচ্ছেটা জাগে আমার।”

উনি আমার দিকে চোখ বড়বড় করে তাকায়,আমি উনার অবস্থা দেখে টুপ করে উনার গালে একটা চুমু দিয়ে দেই।উনি এবার অবাকের চরম পর্যায়ে,গালে হাত দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে অবাক চোখে।আমি এবার আমার কাজে নিজেই বোকা বনে যাই,কী করে ফেললাম এটা?লজ্জা সরম কই গেলো আমার,ছিঃ সাবিহা তুই কীভাবে পারলি এটা করতে?নিজেকে নিজে বকে চলেছি,তখন সাদাফ ভাইয়া আমাকে এক হাতে জড়িয়ে ধরে কাঁধে মাথা রেখে শয়তানি হাসি হেঁসে বলে উঠে।

“আমার বউটা ত হেব্বি রোমান্টিক,তা বউ বাসরটা সেরেই ফেলি হুম!”

আমি উনাকে এক ঝটকায় নিজের থেকে ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়াই।

“বাসর করার খুব শখ না আপনার,এবার করুন বাসর একা একা।তখন বাজে আচরন করার শাস্তি হল একা একা বাসর রাত পালন করা।আর সেটাই করুন,নয়ত দাঁত ভেঙ্গে ইঁদুর দের খাওয়াব।”

তারপর আমি মিটিমিটিয়ে হাসতে হাসতে একটা থ্রি পিছ নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যাই।অন্যদিকে সাদাফ গালে হাত দিয়ে বসে ভাবছে,,,

“কপাল করে একখানা বউ পাইছি,জল্লাদ বউ একটা।কেন যে তখন রাগ দেখিয়ে ওসব বলতে গেলাম!তখন ওভাবে না বললে হয়ত একা একা বাসর রাত পালন করতে হত না।ফিলিং দুঃখু দুঃখু,বাসর রাত বউ বীহিন পালন করিন।”

#চলবে,,,

(সবাই ত খুব চিন্তায় ছিলেন যে সাবিহাকে জোড় করে বিয়ে করাতে সাদাফকে ভুল বুঝবে সাবিহা।আমি কিন্তু এতটাও খারাপ না যে খালি বেচারা সাদাফকে কষ্টই দিব😐।

আর হ্যাঁ গল্পটা আর কয়েক পর্বেই ইতি টানব🥰।)

#ভালবেসে রাখব কাছে
#লেখিকাঃ সাদিয়া সিদ্দিক মিম
#পর্বঃ২৮

আমি ওয়াশরুম থেকে চেন্জ করে বের হওয়ার সাথে সাথে সাদাফ ভাই আমাকে কোলে তুলে নেয়।পড়ে যাওয়ার ভয়ে সাদাফ ভাইয়ের গলা জড়িয়ে ধরি আমি।তখন সাদাফ ভাই হাসতে হাসতে বলে উঠে,,,

“সাবুপরি কী ভেবেছো তুমি,আমি একা একা বাসর রাত পালন করব হুম?”

“ছাড়ুন আমাকে।”

“নাও ছেড়ে দিলাম।”

কথাটা বলেই সাদাফ ভাই আমাকে খাটে ধপাস করে ফেলে দেয়।আমি ভয়ে পেয়ে হালকা চিৎকার করে উঠি।সাদাফ ভাই এবার আমার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ে।

“আরে করছেনটা কী?সরুন এখান থেকে।”

“বাসর রাত পালন করছি,আজ সারারাত দুজন গল্প করব এভাবেই।”

কথাটা বলে উনি আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে,আমি শিউরে উঠি।পরক্ষণেই নিজেকে সামলিয়ে উনাকে সরানোর জন্য ব্যাস্ত হয়ে পড়ি।

“আমি সারারাত এভাবে বসে থাকতে পারব না,উঠুন বলছি।নয়ত ঘুসি দিয়ে নাক ফাটিয়ে ফেলব।”

“ঘুসি দেও আর লাথি দেও তারপরও উঠছি না আমি।এভাবেই বসে থাকবে বুঝেছো!”

“আমার ওত বুঝে কাজ নেই,আপনাকে উঠতে বলেছি উঠুন।আপনার মত হাতি আমার কোলে শুয়ে আছেন আর আমি মশা হয়ে সে ভার বহন করিতে পারিতেছিনা।অতএব জনাব আপনি আমার কোল থেকে উঠুন নয়ত খুব খারাপ হয়ে যাবে।”

“এমন কেন করো সাবুপরি?তুমি সবসময় আমার সাথে এমন কঠোর হয়ে কথা বলো।একটু নরম হতে পারো না আমার জন্য।আমারও ত ইচ্ছে করে আমার বউটা আমার সাথে সবসময় মিষ্টি স্বরে কথা বলবে।মিষ্টি করে ওগো,হেগো এভাবে বলে ডাকবে।কিন্তু তুমি ত সবসময় আমার সাথে রেগে কথা বলো,নয়ত ঠাস ঠুস লাগিয়ে দাও।”

সাদাফ ভাই কথাগুলো নরম গলায় বলেছে।আমার উপর করা উনার অভিযোগ গুলো একটাও মিথ্যা নয়।সত্যি আমি বড্ড বেশি কঠোর হই উনার প্রতি।

“আজ এমন একটা স্পেশাল দিনে তোমার কাছে একটা অনুরোধ করব,রাখবে?”

“এভাবে কেন বলছেন?আপনি বলুন না কী বলতে চান।”

“বলব তার আগে বলো রাখবে।”

“হুম রাখব বলুন।”

“একটাবার ভালবাসি বলবে!জানি তুমি আমাকে ভালবাসো না তারপরও একটা বার মিথ্যে করেই ভালবাসি বলো না সাবুপরি।”

আমি উনার কথাশুনে থমকে যাই।কী করব আমি?মিথ্যে করেই কী ভালবাসি বলা যায়?

“তোমার মুখ থেকে ভালবাসি কথাটা শুনতে বড্ড বেশি ইচ্ছে করছে সাবুপরি।প্লিজ একটাবার বলো,আর কখনও বলব না ভালবাসি বলো।শুধু আজ একটাবার বলো না।”

কী এক মুসিবতে পড়লাম আমি,ভালবাসি কথাটা বলা কী এতই সহজ?
কিছুক্ষন ধরে আমি এসবই ভাবছি যে বলব নাকি বলব না!একটা সময় সাদাফ ভাই আমাকে ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়।আর চুপচাপ ব্যালকনিতে চলে যায়,আমার চুপ থাকাটা উনাকে কষ্ট দিয়েছে।কিন্তু আমিই বা কী করব,হঠাৎ করেই মাথায় একটা কথা আসে আর আমার ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠে।আমি খাট থেকে নেমে ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়াই ঠিক উনার পিছনে।আর গিয়েই উনাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আস্তে করে বলে উঠি,,,

“ভালবাসতে চাই আপনাকে।ভালবেসে আপনার কাছে-পাশে থাকতে চাই।রাখবেন কী আমায় ভালবেসে আপনার কাছে?”

উনি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে আমাকে টেনে উনার সামনে দাঁড় করিয়ে আমার নাকে উনার নাক ঘসে মুচকি হেসে বলে।

“ভালবেসে রাখব কাছে,
থাকব তোমার পাশে।
বাসব অনেক ভালো,
সারাজীবন ধরে।”

(কবিতা লেখার ট্রায় করছি কিন্তু হয় নাই🤧)

উনার কথাশুনে আমার ঠোঁটের কোনের হাসিটা চওড়া হয়।উনি এবার আমাকে বুকে আগলে নেয় শক্ত করে।

______________________________________

সকাল বেলা ঘুম ভাঙ্গে চেঁচামেচির আওয়াজে,ঘুম থেকে উঠে দেখি সাদাফ ভাই পাশে নেই।হয়ত নিচে গেছে,আমিও গায়ে উর্নাটা জড়িয়ে নিচে নামি।আর নিচে নেমেই সকাল সকাল মাথাটা গরম হয়ে যায়।গরিলা মার্কা মহিলা আর কাব্য ভাই সকালে পুলিশ নিয়ে হাজির আমাদের বাড়িতে।গরিলা মার্কা মহিলা আর কাব্য ভাইকে দেখেই মাথা গরম হয়ে যায় আমার।কিন্তু এখানে কী হচ্ছে সেটা ঠিক ঠাহর করতে পারছি না।সাদাফ ভাই আর উনার বাবা এক পাশে কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছে।আর এক পাশে সাদাফ ভাইয়ের মা দাঁড়িয়ে আছে।আমি ধীর পায়ে শ্বাশুড়ি আম্মুর পাশে গিয়ে দাঁড়াই।

“আম্মু এই দুই শয়তান এখানে কেন?”

আমার কথা শুনে আম্মু চোখ দুইটা বড়বড় করে তাকায় আমার দিকে।আমি সেটা দেখে আবারও বলে উঠি,,,

“আম্মু এখন এমন রিয়েকশন না দিয়ে কাহিনী কী সেটা বলো।”

আমার কথা শেষ হওয়ার পরই আম্মু আমাকে টেনে একপাশে নিয়ে দাঁড় করায় আর ফিসফিসিয়ে বলে উঠে।

“আরে এই দুইজনকে নাকি সাদাফ কাল কিডন্যাপ করেছে তাই পুলিশ নিয়ে এসেছে বাড়িতে।”

আম্মুর কথাশুনে আমার চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম।দুজনকে কিডন্যাপ করেছে মানে?কাল তবে এর জন্য এই দুই শয়তানকে চোখে পড়ে নি।কিন্তু সাদাফ ভাই ওদের কিডন্যাপ কেন করল?আমার ভাবনার মাঝেই কাব্য ভাই আমার কাছে এসে আমার গালে হাত দিয়ে বলে।

“সাবিহা তুই ঠিক আছিস?এই বদমাইশটা তোর কোন ক্ষতি করে নি ত?তকে আর কিছু করতে পারবে না এই বদমাইশটা।আমি এসে পড়েছি এবার তকে এখান থেকে নিয়ে যাব।চল আমার সাথে,এখানে আর এক মুহুর্তও না।”

কথাটা বলে কাব্য ভাই আমার হাত ধরে টান দেয়।তখন সাদাফ ভাই আমার পাশে এসে অন্য হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে উনার বুকে ফেলে।আর এক হাত দিয়ে আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে উনার সাথে মিশিয়ে নেয়।আর রাগমিশ্রিত স্বরে বলে উঠে,,,

“তোর সাহস হল কী করে আমার বাড়িতে এসে আমারই বিয়ে করা বউকে টাচ করার?”

সাদাফের কথা শুনে কাব্য অবাক হয়ে যায়।বউ মানে কী বলছে এসব সাদাফ?

“বউ মানেহ?”

“বউ মানে সাবিহা আমার বিয়ে করা বউ।”

“সাদাফ তুই বিয়ে করেছিস?আর এই মেয়েটাকে!তুই কী জানিস না আমি তকে কতটা ভালবাসি?তারপরও তুই এই মেয়েটাকে কীভাবে বিয়ে করলি?”

“আমি কাকে বিয়ে করব না করব সেটা কী তুই বলে দিবি?আর এই মেয়েটা এই মেয়েটা করছিস কেন?অর একটা সুন্দর নাম আছে নাম ধরে ডাকবি নয়ত ভাবি বলবি।”

আমি অবাক চোখে সবার কথা শুনে যাচ্ছি।কাব্য ভাইকে নতুন রূপে দেখছি,তার সাথে গরিলা মার্কা মহিলার প্রেম প্রেম পাগলামি।আর সবার উপরে আছে আমার একমাত্র হাসবেন্ড যে কী না আজ পুরো ফাটিয়ে দিচ্ছে।আমি আজ কিছু বলব না শুধু নিরব দর্শকের মত সবটা দেখব।ইস্ পপকর্ন হলে জমত ভালো,কিন্তু আমি ত ফ্রেশই হই নি ঘুম থেকে উঠে।দেৎ ভাল্লাগে না,আমার এমন বোকা বোকা ভাবনার মাঝেই কাব্য ভাই আমার দিকে এগিয়ে এসে কিছু বলতে নিলে সাদাফ ভাই হাত দিয়ে থামিয়ে দেয়।

“যেখানে আছিস সেখানেই থাক একদম আমার বউয়ের কাছে আসার চেষ্টা করবি না।”

“সাদাফ সাবিহাকে ছাড়,সাবিহা তকে বিয়ে করতে পারে না।সাবিহা ত আমাকে ভালবাসে,সাবিহা এমনটা করতে পারে না।তুই নিশ্চয়ই সাবিহাকে জোড় করে বিয়ে করেছিস?অফিসার আপনি কিছু বলছেন না কেন?দেখতে পারছেন না একটা মেয়েকে কীভাবে জোড় করে আটকে রেখেছে!কিছু করুন আপনারা,আর সাবিহাকে মুক্ত করুন অর থেকে।”

“এই চুপ,একদম চুপ সাবিহা তকে ভালবাসত কিন্তু এখন আর বাসে না।আর অফিসার কী বলবে?আমি আমার বউকেই বিয়ে করেছি,দুজনের মতেই বিয়েটা হয়েছে।তুই এসবে নাক গলাচ্ছিস কেন?ভালো চাস ত চুপচাপ তুই আর লিজা চলে যা এখান থেকে।নয়ত যে পুলিশ নিয়ে তরা এসেছিস সে পুলিশের হাতেই তদের ধরিয়ে দিব।তরা নিশ্চয়ই এমন কোন কাজ করিস নি যে পুলিশ তদের কোলে বসিয়ে আদর করবে?তাই চুপচাপ এখান থেকে যা নয়ত তদের আসল রূপটা ওদের সামনে আনতে বাধ্য হব।”

তারপরও কাব্য ভাই আর লিজা আগের জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছে।সেটা দেখে সাদাফ ভাই আমার হাত ধরে সিড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে অফিসারদের বলে।

“ওদের যে আমি কিডন্যাপ করেছি তার কোন পাকাপোক্ত প্রমান আপনাদের কাছে নেই।তাই এই দুই জনকে নিয়ে এখান থেকে চলে যান।নয়ত আমিও আইন একটুআকটু জানি।”

কথাটা বলেই সাদাফ ভাই আমাকে নিয়ে রুমে চলে আসে।রুমে এসে দরজা বন্ধ করে কোমড়ে হাত দিয়ে আমার সামনে দাঁড়ায়।আমি সেটা দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকালে উনি ধমকে বলে উঠে,,,

“তোমাকে যে কাব্য স্পর্শ করল তারপরও তুমি কাব্যকে কিছু বললে না কেন?আমি চাই না আমি ব্যাতীত অন্য কোন পুরুষ তোমায় স্পর্শ করুক।তারপরও কেন তোমাকে কাব্য স্পর্শ করল?আর তুমি কেন কিছু বললে না?”

আমি উনার প্রশ্নের কোন উওর না দিয়ে চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি,উনি সেটা দেখে রেগে দেয়ালে একটা ঘুসি দেয়।আমি আৎকে উঠি,আর উনার হাত ধরতে গেলে উনি আরো রেগে যায়।

“একদম ছুবি না আমাকে।তুই ঐ কাব্যকে নিয়ে পড়ে থাক।”

কথাটা বলেই উনি রেগে রুম থেকে চলে যায়,আর আমিও উনার পিছন পিছন ছুটি।হাতটা হয়ত থেতলে গেছে ঔষধ না লাগালে সমস্যা হবে।

#চলবে…

(সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা🥰।

❤️ঈদ মোবারক❤️

এবার সবাই আমাকে ঈদের সালামি দিয়ে দাও😁,এই সালামি সেই সালামি নয়।আমার সালামি হিসেবে সবাই কিছু ভালো ভালো কমেন্ট করো🥰।কিপ্টামি করো না কেউ বুঝেছো।)

(কিছু সমস্যার জন্য দুইদিন গল্প দিতে পারি নি তার জন্য দুঃখিত আমি।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here