ভালবেসে রাখব কাছে পর্ব -৬+৭+৮

#ভালবেসে রাখব কাছে
#লেখিকাঃ সাদিয়া সিদ্দিক মিম
#পর্বঃ৬

শীলা পার্কের একটা বেঞ্চে বসে আছে,আর তার সামনেই মেঘ কানে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কারন মেঘ আজ শীলার সাথে দেখা করতে সাত মিনিট লেট করেছে তাই মেঘকে শীলা শাস্তি দিয়েছে যে সাত মিনিট কানে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে।বেচারা মেঘ অনিচ্ছা সত্বেও কানে ধরে দাঁড়িয়ে আছে।আশেপাশের সবাই মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে,কেউ অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আর কেউ হাসছে।সেটা দেখে মেঘ নিজেকে যতটা সম্ভব লুকাতে চাইছে।আর এসব কিছু শীলা বেশ এনজয় করছে।এভাবে সাত মিনিট কেটে যাওয়ার পর মেঘ শীলার হাত ধরে বলে উঠে,,,

“চলো এখান থেকে,জায়গা গরম হয়ে গেছে এখানে আর থাকা যাবে না।”

“কেন?কী হয়েছে এখানে?এখানে যথেষ্ট ঠান্ডা লাগছে।”

“বইন আমার চুপচাপ এখান থেকে চল,সাত মিনিট কানে ধরে দাঁড় করিয়ে রেখে ত সেলিব্রিটি বানাইয়া ফেলছো।মানসম্মান সব ইনজেকশন হয়ে গেছে।সবাই কীভাবে তাকিয়ে আছে দেখেছো তুমি,চলো এখান থেকে।”

মেঘের কথা শুনে শীলার খুব হাসি পাচ্ছে,তাই মেঘকে আরেকটু জ্বালানোর জন্য বলে উঠল,,,

“না আমি যাব না,জায়গাটা খুব সুন্দর আর খুব ভাল্লাগতাছে আমার কাছে।”

“যাবে না তুমি?”

“উহু যাব না,তুমিও যাবে না।চুপচাপ আমার পাশে বসো ত,কথা না বলে।”

“ওকে।”

কথাটা বলে মেঘ শীলার পাশে গিয়ে শীলাকে কোলে তুলে নেয়,হঠাৎ এমনটা হওয়াতে শীলা ঘাবড়ে যায়।আর তাড়াতাড়ি মেঘের শার্ট আঁকড়ে ধরে,সেটা দেখে মেঘ শয়তানি হাসি দিয়ে বলে উঠে,,,

“এখন যদি তোমাকে আমি ফেলে দেই তবে আমার সম্মানের মত তোমার সম্মানও ইনজেকশন হয়ে যাবে।”

কথাটা বলেই মেঘ আবার খিলখিলিয়ে হেঁসে উঠে,সেটা দেখে শীলা রেগে বলে উঠে,,,

“খালি ফেলো তারপর দেখো না কী করি তোমাকে,একদম ডিভোর্স দিয়ে দিব😤।”

“বাপরে বিয়ে না হতেই ডিভোর্স,ত চলো বাসরটাও সেরে ফেলি।”

মেঘ শীলার দিকে কিছুটা ঝুঁকে বলে উঠল,শীলা সেটা দেখে বলে উঠল,,,

“উস্টা মাইরা পঁচা পানিতে নিয়ে ফেলব,আরেকবার এই কথাটা বললে।সেদিন সাবিহার সামনেও এমনটা বলেছো আর এখনও!লজ্জা সরম কী সব নদীর জলে ভাসিয়ে দিছো নাকি হে?”

“হে নদীর জলেই ভাসিয়ে দিয়েছি,আর এখন তোমাকেও ভাসিয়ে দিব।”

কথাটা বলেই মেঘ শীলাকে ফেলে দেয়।শীলা ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে আল্লা বলে হালকা চিৎকার করে উঠে,কিন্তু শীলা কোন ব্যাথা না পাওয়ায় চোখ খুলে দেখে সে গাড়িতে বসে আছে।আসল কাহিনি হল শীলা তখন কথা বলতে এতটাই ব্যাস্ত যে মেঘ গাড়ির দরজা খুলে ফেলেছে খেয়ালই করে নি।শীলাকে গাড়িতে বসিয়ে মেঘ সিট বেল্ট লাগিয়ে দেয় আর শীলার ঠোঁটে হালকা একটু চুমু খায়।সেটা দেখে শীলা চোখ বড়বড় করে তাকায় মেঘের দিকে।আর মেঘ শীলাকে চোখ মেরে নিজের সিটে বসে ড্রাইভ করা শুরু করে।

____________________________________

“খাব না,কিচ্ছু খাব না আমি।মামুকে রাজি না করালে কিছু খাব না আমি।”

“সাবিহা একদম পাগলামি করবে না,চুপচাপ খেয়ে নাও মেডিসিন নিতে হবে তোমাকে।”

“বাবা তুমি একটু মামুর সাথে কথা বলো না,আমি হিয়াকে ছাড়া নতুন স্কুলে ভালো নেই।হিয়াকে খুব মিস করছি আমি।”

“নতুন স্কুলে তোমার কারো সাথে বন্ধুত্ব হয় নি?”

“হয়েছে ত অনেকগুলো ফ্রেন্ড হয়েছে।”

“তবে তাদের সাথে সময় দেও দেখো আস্তে আস্তে ভালো লাগবে।”

“ভালো লাগবে না বাবা,আমার হিয়াকেই চাই।প্লিজ বাবা তুমি মামুকে রাজি করাও না।”

“হিয়া কোন স্কুলে পড়বে সেটা অর পরিবারের ব্যাপার আমরা জোড় করার কে সাবিহা?”

“বাবা জোড় কোথায় করছো?শুধু বলবে আমার একা ভালো লাগছে না নতুন স্কুলে তাই হিয়াকে চাইছি আমি।ত হিয়াকে যাতে আমার সাথে নতুন স্কুলে ভর্তি করায়।”

“তবে তুমিই তোমার মামুকে বলো সবটা।”

“মামুর সাথে কথা বলতে ভয় করে,নয়ত তোমাদের কাউকে বলতাম না আমি।তুমি মামুকে বলো নয়ত এখান থেকে যাও আমি খাব না কিছু।”

“সাবিহা তুমি এখনও ছোট বাচ্চা নও যে এমন মর্জি করবে আর তোমার মর্জি মত আমাদের চলতে হবে।তোমার মাকে পাঠাচ্ছি তখন বুঝবে তুমি।ভালো করে বুঝালাম কিন্তু বুঝলে না,তোমার মা এসে যখন পিঠে দুইটা দিবে তখন ঠিকই খাবে।আমি এখনই তোমার মাকে পাঠাচ্ছি দাঁড়াও।”

কথাটা বলেই বাবা চলে যায় রুম থেকে,আর আমি জোড়ে চিল্লিয়ে বলে উঠি,,,

“হে যাও যাও,আমাকে কেউ ভালবাসে না।আমাকে মারলেও আজ আমি খাব না।”

কথাটা বলেই পিছন থেকে চিপস নিয়ে চিপস খাওয়া শুরু করি আর ফোনটা আড়াল থেকে বের করে হাসিমুখে বলে উঠি,,,

“দেখলি বনু আমার বাপটা কেমন হিটলার হয়ে গেছে,কত করে বললাম কোন কাজ হইল না।”

“হ রে বইন সবই ত দেখলাম ভিডিও কলে,এখন কী করবি ভাবছিস?”

আমি মুখে আরেকটা চিপস দিয়ে চিবুতে চিবুতে বললাম,,,

“তুই মামুকে একটু বল না বনু,আমি না হয় মামুকে ভয় পাই কিন্তু তোর ত বাবা তুই বলে দেখ না।”

“না বাবা না আমি এটা পারব না,বাবার সাথে আমি ভয়ে ঠিক করে কথাই বলি না আর সেখানে বলব আমি স্কুল চেন্জ করব।তবে ছোট বেলার মত আবার আছাড় দিয়ে ব্যাংঙ বানাইয়া ফেলব।”

“উহুম,উহুম কেউ একজন বলেছিল সে কিছু খাবে না কিন্তু এখন ত অন্য কিছুই দেখছি।”

কারো গাল শুনে আমি ঘুরে তাকিয়ে দেখি সাদাফ ভাইয়া হাসি মুখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি সঙ্গে সঙ্গে চিপসের প্যাকেটটা লুকাতে গিয়ে তাড়াহুড়োয় ফোনটা লুকিয়ে ফেলি।ফোন লুকিয়েছি কথাটা মাথায় আসতেই আবার তাড়াহুড়ো করে ফোনটা সামনে এনে চিপসের প্যাকেটটা লুকিয়ে ফেলি পিছনে।আমার কাহিনী দেখে হিয়া শয়তানটা মিটমিটিয়ে হাসছে,আর সাদাফ ভাইয়াও হাসছে আমার দিকে তাকিয়ে।সাদাফ ভাইয়াকে দেখে আমি হালকা হেঁসে বলে উঠি,,,

“ভাইয়া আপনি আমার রুমে?আপু ত এখানে নেই।”

সাদাফ ভাইয়া রুমের ভিতরে ডুকে বলে উঠে,,,

“আমি ত শীলার সাথেই দেখা করতে এসেছিলাম কিন্তু এসে শুনি তুমি খাবে না।তাই দেখতে এলাম কেন খাবে না,কিন্তু এসে ত দেখি আরেক কাহিনি।তা মেম এসব করার কারনটা কী বেস্টুকে নিজের সাথে নতুন স্কুলে নিয়ে আসা?”

“না মানে,,,

আমার কথা শেষ করার আগেই ফোনে হিয়া খুশিতে গদগদ হয়ে বলে উঠল

” হ্যা ভাইয়া একদম ঠিক ধরেছেন,আসলে ছোট কালের বান্ধবী ত তাই আলাদা স্কুলে কারোরই ভালো লাগছে না।তাই সাবিহা আর আমি মিলে প্ল্যান করছিলাম কীভাবে একসাথে হওয়া যায় আবার?”

“ওও এই ব্যাপার,সেটা ত আমাকে বললেই হয় আমিই সবটা মেনেজ করতে পারতাম।তোমাদের আর এত কষ্ট করার কোন প্রয়োজন হত না।”

“মানেহ?আপনি কী করবেন?”

“আমি আঙ্কেল কে রাজি করাতে পারব তোমার মামুর সাথে কথা বলার জন্য।”

“সত্যি!”

“হুম সত্যি।”

“তবে ভাইয়া আপনি প্লিজ বাবাকে রাজি করান না!”

“রাজি করাতে পারি কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে।”

শর্তের কথা শুনেই আমার মুখটা কালো হয়ে গেলো,তাই সমস্ত উত্তেজনা দমিয়ে বলে উঠলাম,,,

“এর জন্য শর্তও মানতে হবে?”

“শর্ত বলতে তেমন কিছু নয় শুধু আমার সাথে একটা জায়গায় যাবে।”

“কী?”

“ভাইয়া রাজি রাজি সাবিহা রাজি,আপনি প্লিজ মামুকে রাজি করান।”

“এই হিয়ার বাচ্চা হিয়া আমি রাজি তুই এটা বলছিস কেন?”(রেগে)

“তুই চুপ কর,আর ভাইয়া আপনি প্লিজ ফুপাকে রাজি করান।আর সাবিহাকে রাজি করানোর দায়িত্ব আমার।”

“খুব খুশি হলাম তোমার কথা শুনে,তুমি তবে সাবিহাকে রাজি করিয়ে রেডি হতে বলো।আমরা আধা ঘন্টার মধ্যে বের হব।ততক্ষণে আমি আঙ্কেলকে রাজি করিয়ে আসি।”

কথাটা বলেই সাদাফ ভাইয়া বের হয়ে যায়,আর আমি রেগে হিয়াকে বলে উঠি,,,

“শয়তান মাইয়া,বজ্জাত মাইয়া এসব কী কইলি তুই?আমি সাদাফ ভাইয়ার সাথে যাব মানে?”

“আরে এটা করলে আমাদেরই লাভ,কারন সাদাফ ভাইয়া ফুপাকে রাজি করাবে আর ফুপা বাবাকে।তারপর আমরা দুজন আবার একসাথে উফফ ভাবতে পারছিস তুই,আমরা আবার একসাথে স্কুলে যাব,ক্লাস করব আরো কত কী করব!আর তকে ত শুধু উনার সাথে যাওয়ার জন্যই বলছে,আর কিছু করতে ত বলছে না।”

“কিন্তু,,,

” কোন কিন্তু নয় তাড়াতাড়ি রেডি হ,নয়ত তোর সাথে কাট্টি তেরো দিনের জন্য।”

বলেই হিয়া ফোনটা কেটে দেয় আর সাবিহা বেচারি ফোনটা হাতে নিয়ে গভীর ভাবনায় ডুব দেয়।

_____________________________________

কাব্যর আর সাবিহা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে,সাবিহা ডোন্ট কেয়ার একটা ভাব নিয়ে হাত গুজে দাঁড়িয়ে আছে।আর কাব্য চোখে পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,কাব্যর কাছে সবকিছু অগোছালো লাগছে।এমনটা কী হওয়া খুব প্রয়োজন ছিল,এভাবে সবটা কেন ধ্বংস হয়ে গেলো।

#চলবে…

(কালকে ধামাকা আছে🥱,সবাই তৈরি ত🙃?)#ভালবেসে রাখব কাছে
#লেখিকাঃ সাদিয়া সিদ্দিক মিম
#পর্বঃ৭(ধামাকা পর্ব😎)

হিয়ার অনেক জোড়াজুড়িতে রেডি হয়ে নিচে নামলাম।নিচে নামার পর আমি খুব অবাক হলাম,কারন সাদাফ ভাইয়া,বাবা আর কাব্য ভাইয়া ড্রয়িং রুমে দাঁড়িয়ে আছে।কাব্য ভাইয়া আমার সাথে দেখা করতে চাইছে কিন্তু সাদাফ ভাইয়া আসতে দিতে চাচ্ছে না।সেটা দেখে আমি জিজ্ঞেস করে উঠি,,,

“কী হয়েছে এখানে?আর কাব্য ভাইকে আটকাচ্ছেন কেন সাদাফ ভাইয়া?

আমার কথাশুনে সবাই আমার দিকে তাকায়।আর কাব্য ভাইয়া দৌড়ে আমার কাছে এসে আমার হাত তার হাতের মুঠোয় নিয়ে অস্থির হয়ে বলে উঠল,,,

“আমি কীভাবে তোর কাছে সাহায্য চাইব বুঝতে পারছি না।তোর সাথে আমি এতদিন যা করেছি সেসব একদমই ঠিক করি নি আমি।তোর সাথে অনেক বাজে আচরন করেছি,তোর গায়ে হাত তুলেছি তুই আমাকে ক্ষমা করে দে।তোর পায়ে পড়ি আমি,তুই আমাকে ক্ষমা করে আমার ভালবাসার মানুষটাকে বাঁচা।”

কাব্য ভাইয়ার কথা শুনে আমি একটুও অবাক হই নি।উনি আমার কাছে ক্ষমা চাইছে এটা হওয়ারই ছিল।আর উনি কাকে বাঁচানোর কথা বলছে?যে কী না উনাকে প্রতিনিয়ত ঠকাচ্ছে তাকে?

“আপনি কী বলতে চাইছেন সেটা বুঝিয়ে বললে সুবিধা হত!”

আমার কথাশুনে কাব্য ভাইয়া কান্না মিশ্রিত কন্ঠে বলে উঠল,,,

“ইইইশা,ইশার এক্সিডেন্ট হয়েছে।অঅনেক খারাপ অবস্থা,O Negative রক্ত লাগবে।অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাই নি,তাই তোর কাছে এসেছি রে।তোর ত O Negative রক্ত প্লিজ ইইশা কে বাঁচা।”

“কাব্য সাবিহা কোন রক্ত দিবে না,সাবিহা এখনও সুস্থ নয়,তুমি অন্য কোথাও চেষ্টা করতে পারো।আর সাবিহা সুস্থ থাকলেও আমি সাবিহাকে রক্ত দিতে দিব না,তুমি এখন আসতে পারো।”

“প্লিজ ফুপা এমন করো না,একটু দয়াকরো।সাবিহা তুই রক্ত দিয়ে দয়াকরে দুইটা জীবন বাঁচা।ইশার কিছু হয়ে গেলে আমি বাঁচব না,প্লিজ সাবিহা তুই কিছু একটা কর।”

কাব্য ভাইয়ের এত আকুলতা দেখে আমার হাসি পাচ্ছে।একটু পরে ত এই আকুলতা ঘৃনাতে পরিনত হবে।

“কাব্য ভাই আপনি আজ আপনার ভালবাসার মানুষটার জন্য যতটা অনুরোধ,অস্থিরতা দেখাচ্ছেন সেদিন সাবিহার পরিবারের লোকজনও ঠিক এভাবে আপনার কাছে অস্থির হয়ে অনুরোধ করেছিল তাদের মেয়েকে ছেড়ে দিতে।কিন্তু আপনি ছাড়েন নি,পশুর মত অত্যাচার করেছিলেন সেদিন।আর আপনি আজ কীভাবে নিজের স্বার্থের জন্য এখানে এসে দাঁড়িয়েছেন?”

“সাদাফ প্লিজ একটু দয়াকরো,আগে আমার ইশাকে বাঁচাও তারপর তোমরা আমাকে যা শাস্তি দিবে সবটা মাথা পেতে নিব।এখন প্লিজ ইশাকে বাঁচাও,সাবিহাকে বলো না আমার সাথে যেতে।”

“আপনি কার জন্য এত আকুলতা দেখাচ্ছেন যে কী না নাটক করে হসপিটালের বেডে পড়ে আছে তার জন্য!”

আমার কথা শুনে উপস্থিত সবাই অবাক।কিন্তু কাব্য ভাই রেগে বলে উঠল,,,

“সাবিহা ইশাকে নিয়ে একটা বাজে কথাও বলবি না তুই,একটা মেয়ে হসপিটালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে আর তুই কী না এসব বলছিস।রক্ত দিবি না সেটা স্পষ্ট করে বললেই হয়।”

“এখন আমি বাজে কথা বলছি আপনার মনে হচ্ছে।কিন্তু কিছুক্ষণ পর আপনি কী করবেন সেটাই ভাবছি আমি!”

“সাবিহা তুমি এসব কী বলছো,কিছুই ত বুঝতে পারছি না।”

“সাবিহা তুই স্পষ্ট করে বল কেন এসব বলছিস।আর ইশা নাটক করছে মানে কী?”

“বাবা একটু অপেক্ষা করো,তোমার মেয়ের জামাইকে আসতে দেও তারপর সবটা ক্লিয়ার হয়ে যাবে।”

“সাবিহা এখন মজা করার সময় নয়,একটা মিনিট দেরি করলেও যেকোন সময় যা কিছু হয়ে যেতে পারে।একটু দয়াকর আমার উপর,চল না আমার সাথে।”

“সাবিহা কোন মজা করছে না,মজা করছে তোর গার্লফ্রেন্ড নামের ডাইনিটা।”

মেঘের কথাশুনে সবাই দরজার দিকে তাকালে দেখতে পায় মেঘ আর শীলা দাঁড়িয়ে আছে।আর মেঘের হাতে কাগজ।কাব্য সময় নষ্ট না করে মেঘের কাছে গিয়ে বলে উঠে,,,

“ভাইয়া প্লিজ এভাবে বলিস না,তুই একটু বল না সাবিহাকে রক্ত দিতে।নয়ত ইশা বাঁচবে না,মরে যাবে ইশা।আর ইশার কিছু হয়ে গেলে আমিও বাঁচব না প্লিজ ভাইয়া কিছু একটা কর।”

“হুম অবশ্যই কিছু ত করবই,কিন্তু তার আগে এই কাগজগুলো আর এই ভিডিওটা দেখে নে।তারপর যা করার করব আমরা।”

কথাটা বলেই মেঘ তার হাতের কাগজ আর শীলার ফোনটা হাতে দেয় কাব্যর।কাব্য সেটা হাতে নিয়ে দেখতে থাকে কী আছে ঐ কাগজে।অনেকটা সময় নিয়ে কাব্য এসব দেখে,আর সবটা দেখে কাব্যর হাত থেকে কাগজ আর ফোনটা হাত থেকে পড়ে যায়।কাব্য হাটু গেড়ে ফ্লোরে বসে পড়ে।সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে কাব্যর,এমনটা না হলেও পারত।এভাবে কেন সবটা ধ্বংস হয়ে গেলো কেন ইশা এভাবে তার সাথে গেম খেলল।কাব্যর এই অবস্থা দেখে মেঘও কাব্যর পাশে বসে কাব্যর কাঁধে হাত দেয় আর কাব্য মেঘকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে।সেটা দেখে সাবিহা ডোন্ট কেয়ার একটা ভাব নিয়ে সাদাফের কাছে গিয়ে বলে উঠে,,,

“ভাইয়া চলুন যাওয়া যাক,আপনি ত বলেছিলেন আধা ঘন্টার মধ্যে বের হবেন তাড়াতাড়ি চলুন।”

এমন মুহূর্তে সাবিহার এরকম কথায় সাদাফ খুব অবাক হয় একে ত কাব্য কাঁদছে,কিন্তু কেন কাঁদছে সেটা অরা কেউ জানে না।আর ইশাকে নিয়েই বা অরা কী বলছে সেটাও বুঝতে পারছে না তার উপর সাবিহা এখন তাড়া দিচ্ছে বের হওয়ার জন্য।সবটা সাদাফের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে,আরেকটু হলেই বেচারা জ্ঞান হারাবে।সাদাফকে কিছু বলতে না দেখে সাবিহা বলে উঠল,,,

“আপনি কী যাবেন?বাকি আমি গিয়ে চেন্জ করে ফেলব!”

সাদাফ নিজেকে সামলে বলে উঠল,,,

“সাবিহা কী হয়েছে একটু বুঝিয়ে বলো,আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।কাব্য ভাইয়া এভাবে কাঁদছে কেন?কী আছে ঐ ফোনে আর কাগজে?”

“আপনি এসব নিয়ে গবেষণা করতে থাকুন আমি গেলাম রুমে।”

কথাটা বলেই সাবিহা ঘরে চলে যায়,আর সবাই অবাক চোখে সাবিহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।এমন একটা মুহূর্তে সাবিহার এমন গা ছাড়া ভাব দেখে সাদাফ আর সাবিহার বাবা বিরক্ত।তারা এবার শীলাকে জিজ্ঞেস করে উঠল কী হয়েছে?তখন শীলা বলে উঠল,,,

“ইশা মেয়েটা ভালো নয় বাবা,সে তার বয়ফ্রেন্ড রক্তিম দুজন মিলে বড়লোক ছেলে মেয়েদের প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে নানা রকমের কারসাজি করে টাকা নেয়।আজই ত এক্সিডেন্টের মিথ্যা নাটক করে কাব্য ভাইয়ের থেকে আঠারো লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়েছে।আর এসবের সাথে অনেকেই যুক্ত,যে হসপিটালে ইশাকে ভর্তি করা হয়েছে সেটাও ইশার চক্রান্ত।হসপিটালেও ইশার লোক আছে,তাই মিথ্যা অপারেশনের নাম করে টাকা নিয়ে পালিয়েছে।”

“কিন্তু তোরা এসব কীভাবে জানলি?”

“বাবা আমি এসবের কিছুই জানতাম না,কয়দিন আগে সাবিহা আমাকে বলেছিল স্কুলে ভর্তি হতে যাওয়ার সময় কোন ছেলের সাথে নাকি ইশাকে দেখেছে।ত আমি সেটা মেঘের সাথে শেয়ার করার পর মেঘ জানায় ইশা মেয়েটা ভালো না।মেঘের পরিচিত একজনের কাছ থেকেও নাকি প্রেমের নামে মিথ্যা নাটক করে টাকা নিয়ে পালিয়েছে।আর তার জন্য মেঘ ইশাকে দেখতে পারে না আর মেঘ কাব্য ভাইকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু বুঝে নি।উনি ভালবাসায় অন্ধ হয়ে ছিল।আর মেঘের কাছে কোন প্রমানও ছিল না তাই মেঘ অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছিল প্রমান যোগাড় করতে,তার জন্য লোকও লাগায় ইশার পিছনে লোক লাগিয়ে ইশার বয়ফ্রেন্ড রক্তিমের খোঁজ পাই,আর আজকের চক্রান্তের কথা জানতে পারি।কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে,ইশা টাকা নিয়ে পালিয়েছে।আর তার প্রমান ঐ ফোনে আর কাগজে আছে।”

সবটা শুনে সাদাফ আর মনির সাহেব অবাকের চরম সীমানায়।মেয়েটা খারাপ ছিল এটা অরা জানত কিন্তু এতটা যে খারাপ হবে সেটা বুঝতে পারে নি।কাব্য এখনও মেঘকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে।

______________________________________

সাবিহা আর তার পরিবার আজ একসাথে শপিং করতে বেরিয়েছে।আর কয়দিন পরেই মেঘ আর শীলার বিয়ে,সবাই আসলেও কাব্য আসে নি।ইশা টাকা নিয়ে পালিয়েছে আজ তেরো দিন,এই তেরো দিনে কাব্য না কারো সাথে কথা বলেছে আর না ঘর থেকে বেরিয়েছে।নিজেকে একদম ঘুটিয়ে নিয়েছে,কিন্তু এসবের মাঝেও কাব্য সাবিহার সাথে দেখা করতে চেয়েছে কিন্তু সাবিহা দেখা করে নি।সাবিহা এখন তার দৈনন্দিন জীবনে খুব খুশি,তার বেস্ট ফ্রেন্ড হিয়াও তার সাথে নতুন স্কুলে ভর্তি হয়েছে।আর সাবিহা তার এক তরফা ভালবাসা নামক পেরা থেকে নিজেকে সরিয়ে আনতে পেরেছে।নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে আর তায়কোয়ান্দো শিখছে,এতে সাবিহা আগে থেকে অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গেছে।

সাবিহার খুব পানির তেষ্টা লাগে তাই সে তার বাবাকে বলে যায় পানি কিনতে কিন্তু পানির দোকানে পৌছানোর আগেই কেউ সাবিহার মুখটা রুমাল দিয়ে চেপে ধরে।এমন একটা জায়গায় আছে সাবিহা যেখানে আশেপাশে কোন লোকজনও নেই।সাবিহা ছোটার চেষ্টা করছে কিন্তু ছুটতে পারছে না,একটা সময় ধস্তাধস্তি করতে করতে সাবিহা জ্ঞান হারায়।

#চলবে…

(বিদ্র ১ঃ কেছা লাগা ধামাকা😎?আর আমার পাঠক পাঠিকারা যে এতটা জিনিয়াস তা গত পর্বের কমেন্ট পড়ে বুঝতে পারলাম।অনেকেই বুঝতে পেরেছে ইশার পর্দা ফাঁস করব আজ,তাঁদেরকে ধন্যপাতা🙃)

(বিদ্র ২ঃ সবাই প্রস্তুতি নিতে থাকো আগামী সমস্ত পর্বের জন্য,কারন গল্পের মোড় ঘুরতে চলেছে।সবার কাঙ্ক্ষিত ঘটনাটা খুব শীঘ্রই ঘটতে চলেছে।

আর সবাইকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা🥰)#ভালবেসে রাখব কাছে
#লেখিকাঃ সাদিয়া সিদ্দিক মিম
#পর্বঃ৮

সাদাফ ভার্সিটি থেকে বাড়িতে এসে খেতে বসেছে,এমন সময় সাদাফের ফোনটা বেজে উঠে।সাদাফ ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে মনির সাহেবের ফোন।সাদাফ এক গাল হেঁসে ফোনটা রিসিভ করল,কিন্তু সাদাফের কিছু বলার আগেই ওপাশ থেকে মনির সাহেব অস্থির হয়ে বলে উঠে,,,

“সাবিহাকে পাওয়া যাচ্ছে না সাদাফ।”

মনির সাহেবের কথা শুনে সাদাফের বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠল,সাদাফের হাত কাঁপছে।সাদাফ উত্তেজিত হয়ে বলে উঠল,,,

“সাবিহাকে পাওয়া যাচ্ছে না মানে কী বলছেন এসব?”

“আমরা সবাই শীলার বিয়ের শপিং করতে এসেছি,শপিং করতে করতে একটা সময় সাবিহা পানি খেতে যায় তারপর আর ফিরে আসে নি।সারা শপিংমল খুঁজে ফেলেছি কিন্তু কোথাও সাবিহাকে পাচ্ছি না।”

“শপিং মল থেকে একটা মেয়ে কীভাবে উদাও হতে পারে?সাবিহা হয়ত আশেপাশেই আছে,ভালো করে খুজে দেখুন সবাই।নয়ত কোথাও কাজে আটকে আছে এক্ষুনি এসে পড়বে।”

“কোথাও কোন কাজে গেলে আর কাউকে না বললেও আমাকে বলবে,কিন্তু সাবিহা ত কিছু বলে নি শুধু পানি খেতে যাবে এটাই বলেছে,আর সাবিহাকে খুজে পাচ্ছি না ঘন্টাখানিক হবে।পানি খেতে কী এতক্ষণ লাগবে বলো তুমি।আর ফোনটাও বন্ধ সাবিহার,আশেপাশে অনেক খুঁজেছি সবাই কিন্তু আমরা সাবিহাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না।তুমি কিছু একটা করো সাদাফ।আমার মেয়েটাকে খুঁজে এনে দাও দয়াকরে।”

“আঙ্কেল আপনি শান্ত হন আমি এখনি আসছি,আমি সাবিহাকে খুঁজে আনবই।সাবিহার কোন ক্ষতি আমি হতে দিব না,আপনি শান্ত হন।

কথাটা বলে সাদাফ তাড়াতাড়ি ফোনটা কেটে বাড়ি থেকে বের হতে নিলেই সাদাফের বাবা বলে উঠে,,,

” এখন কই যাচ্ছো?খাবার ত খেয়ে যাও।”

“বাবা এখন খাওয়ার সময় নেই,আমাকে যেতে হবে এখুনি।তোমরা সাবিহার বাড়িতে যাও সবটা জানতে পারবে।”

কথাটা বলে সাদাফ এক প্রকার দৌড়ে চলে যায় সাবিহাকে খুঁজতে।সাদাফ হন্তদন্ত হয়ে গাড়ি চালাচ্ছে,সাদাফের ভিতরটা জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে।সাবিহা কোথায় আছে?কেমন আছে?কেউ কোন ক্ষতি করে নি ত সাবিহার?সাদাফ কী সাবিহাকে খুঁজে পাবে না?সাদাফ কী চিরদিনের জন্য সাবিহাকে হারিয়ে ফেলল?এমন নানা ধরনের চিন্তা সাদাফের মাথায় ঘুরছে।সাদাফ এক হাতে গাড়ি ড্রাইভ করছে আরেকহাত বারবার নিজের মুখ মুচছে,গাড়িতে এসি চলছে তার পরও সাদাফ ঘেমে যাচ্ছে।

“সাবিহা তুমি কোথায় চলে গেলে?আল্লা তুমি সাবিহাকে সুস্থ রেখো।সাবিহার যাতে কোন ক্ষতি না হয়,তুমি রক্ষা করো সাবিহাকে।”

_____________________________________

সাবিহা একটা চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে,আার তার সামনেই কাব্য হাত পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে।কাব্যর খুব রাগ হচ্ছে সাবিহার উপর,একে ত সাবিহা কাব্যকে ইচ্ছে মত দোলাই করল,হাত পা বেঁধে বসিয়েও রেখেছে।যেখানে সাবিহাকে কাব্য বিছানায় শুইয়ে রেখেছিল,হাত পা বাঁধে নি কিন্তু এই মেয়ে ত কাব্যকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ল।তার উপর এমন ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বসে আছে যেন কিছুই হয় নি।এসব ভেবে কাব্য নিজেকে নিজেই বকছে যে কেন এই বোম্বাই মরিচকে তুলে আনতে গেলো আর কিছুক্ষণ আগের কথা ভাবছে,,,

★ফ্লাসব্যাক★

সাবিহাকে একটা ঘরে আটকে রাখা হয়েছে,সাবিহার এখনও জ্ঞান ফিরে নি।সাবিহার সামনে কাব্য চেয়ার নিয়ে বসে আছে,আর এক দৃষ্টিতে সাবিহাকে দেখছে।এভাবে অনেকক্ষণ পরও যখন সাবিহার জ্ঞান ফিরে না তখন কাব্য সাবিহার চোখে পানির ছিটা দেয়।সাবিহা টিপটিপ করে চোখ খুলে তার সামনে কাব্যকে দেখতে পায়।কাব্য সাবিহার দিকে ঝুঁকে আছে।

জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে একটা ঘরে বিছানায় আবিষ্কার করি,আর সামনেই কাব্য ভাইকে ঝুঁকে থাকতে দেখে ঘাবড়ে যাই।কিন্তু পরক্ষণেই মনে পড়ে যায় শপিংমলে কেউ আমাকে অজ্ঞান করেছিল। তারমানে কাব্য ভাই আমাকে কিডন্যাপ করে ছিল তখন।কাব্য কিছু বলবে কিন্তু তার আগেই সাবিহা তার দুই পা একসাথে করে কাব্যর পেটে লাথি দিয়ে দূরে সরিয়ে উঠে দাঁড়ায়।কাব্য আবার সাবিহার কাছে এসে সাবিহাকে কিছু বলতে গেলে সাবিহা কাব্যর হাত মুচড়ে পিছনে নিয়ে কাব্যর পিঠে কনুই দিয়ে আঘাত করে।কাব্য মাটিতে পড়ে যায়,সাবিহা সঙ্গে সঙ্গে আশেপাশে দরি খুজতে থাকে।কিন্তু আশেপাশে কিছু না পেয়ে বিছানার চাদর পেচিয়ে কাব্যকে বেঁধে ফেলে।তারপর যেই চেয়ারে কাব্য বসে ছিল সেই চেয়ারে সাবিহা বসে,আর হাত ঝাড়া দিতে দিতে বলে উঠে,,,

“কী ভেবেছেন আপনি হুম মেয়ে বলে দুর্বল আমি,সেদিন আঘাত করে পাড় পেয়ে গেছেন বলে কী আজও ছেড়ে দিব আপনাকে?যদি এমনটা ভেবে থাকেন তবে ভুল ভাবছেন।তখন কাপুরুষের মত পিছন থেকে আঘাত করেছিলেন তাই রক্ষা পেয়ে ছিলেন তখন কিন্তু এখন কী করবেন হুম?”

কাব্য ছোটার জন্য ছটফট করছে,কিন্তু ছুটতে পারছে না।কাব্য আপ্রান চেষ্টা করেও খুলতে পারছে না হাতে পায়ের বাঁধন।সেটা দেখে সাবিহা একটা তৃপ্তির হাসি হাসল,সাবিহা এবার বাঁকা হেঁসে বলে উঠল,,

“কী সমস্ত শক্তি শেষ নাকি,ছুটতে পারছেন না!আমি না চাইলে আপনি ছুটতেও পারবেন না আর না এখান থেকে এক পাও নড়তে পারবেন।এবার বলুন ত আমাকে কিডন্যাপ কেন করেছেন আপনি?কী স্বার্থ আছে এসবের পিছনে হুম?এবার কী মেরে গুম করে দেয়ার প্ল্যান এঁটেছিলেন?”

“সাবিহা আমার হাতে পায়ের বাধনঁ খোল।”(ধমকে)

সাবিহা রেগে বলে উঠে,,,

“একদম ধমকাবেন না আমাকে,চোরের মায়ের বড় গলা কথাটা আবারও প্রমানিত হল।আমাকে এখানে তুলে এনে আবার ধমকাচ্ছেন আমাকে!আপনার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি এতকিছুর পরও কী আপনার মন ভরে নি কাব্য ভাই!আপনি আজ আমাকে এখানে তুলে এনেছেন কেন?আবারও মারার জন্য তুলে এনেছেন!কিন্তু সেটা ভেবে থাকলে ভুল ভাবছেন আপনি।কারন সাবিহা আর আগের মত নরম নয় যে চুপচাপ সেদিনের মত মার শয্য করে যাবে।”

“বেশি কথা না বলে ছাড় আমাকে।”

“ছাড়লে যাতে মারতে পারেন আবারও তার জন্য ছাড়ব আপনাকে?”

“আমি এসব কিছু করার জন্য তকে এখানে আনি নি।”

সাবিহা এবার বসা থেকে উঠে দাঁড়ায় আর কাব্যর গাল চেপে ধরে বলে উঠে,,,

“এখন ত ধরা পড়ে গেছেন তাই এসব বলছেন।আমাকে কী বলদ মনে হয় আপনার হুম?”

“সাবিহা ছাড় লাগছে আমার,মেয়েদের হাত মমতার হাত জানতাম কিন্তু তোর হাতের স্পর্শ পেয়ে মনে হচ্ছে সেটা ভুল।”

“চুপ একদম চুপ এত ডায়লগ দিবেন না।মেয়েদের বুঝার মত মন মানসিকতা আপনার নেই।তাই এসব ডায়লগ দিবেন না,কিন্তু জেনে রাখুন মেয়েরা প্রয়োজনে নরম,আবার গরমও। ”

“হুম সব জেনেছি এবার ছাড় আমাকে,আমার সারা শরীর ব্যাথা করছে।এত শক্তি তোর মধ্যে কোথ থেকে এলো রে!”

সাবিহা বাঁকা হেঁসে বলে উঠল,,,

“সবটা আপনার জন্য সম্ভব হয়েছে।এবার চুপচাপ মুখ খুলুন আর বলুন কেন এনেছেন আমাকে?”

সাবিহার এমন রূপ দেখে কাব্য কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না।কে জানে কারনটা বললে রেগে আবার দুইটা লাগিয়ে দেয়,আগে ছাড়া পাই তারপর না হয় বলব তখন দুই একটা দিতে আসলে আটকাতে ত পারব।কিন্তু এখন ত সেটা পারব না,এসব মনে মনে ভেবে কাব্য বলে উঠল,,,

“আগে আমার হাতে পায়ের বাঁধন খুলে দে তারপর সবটা বলছি।”

“আগে কারন বলবেন তারপর ছাড়ব।তার আগে আপনার মুক্তি নেই।”

★বর্তমান★

কাব্য কারনও বলে নি আর সাবিহা কাব্যর হাতে পায়ের বাঁধনও খুলে নি,তখন থেকে এভাবেই পড়ে আছে কাব্য।

#চলবে…

(ছোট হওয়ার জন্য দুঃখিত😔,আজ সারাদিন খুব বিজি ছিলাম তাই ছোট হয়েছে।কাল বড় করে দিব ইনশাআল্লাহ🥰)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here