ভালোবাসার বহুরূপ পর্ব ৪

#ভালোবাসার_বহুরূপ
পর্ব:০৪
লেখনীতে: Farhana Alam Fimu

ইলিনাকে নিয়ে খেলার সময় হঠাৎ রাস্তায় দেখলাম তানিম!!তিন বছর পর দেখলাম।একটুও বদলায়নি।এখনো হাঁটার সময় এদিক ওদিক তাকায় বাচ্চাদের মতো।নখ কামড়াতে কামড়াতে হাঁটে।আজও বেখেয়ালির মতো শার্টের এক কোণা ইন করা আরেক কোণা বাইরে।একটা পরিবর্তন আছে অবশ্য।চোখের নিচে কালি।কেমন জানি দিশেহারা ভাব!

ইলিনাকে নিতে আসেনি তো!বুকটা ধ্বক করে উঠলো!আমি কিছুতেই ইলিনাকে দিবো না।ইলিনা জানে তার বাবা বিদেশ থাকে।মেয়েটা প্রতিদিন বাবা কবে আসবে বলে বলে জান দিয়ে দেয়।আজ যদি বাবাকে পায় তাহলে তো…
আর ভাবতে পারছিনা আমি।ইলিনাকে বুকে আঁকড়ে ধরে বসে থাকলাম।বেশ কিছুক্ষণ পর তানিম ছাদে এলো।বুঝতে পারছিনা,মা কিভাবে ওকে ছাদে আসতে দিলো?বাবা বাসায় নেই।বললাম না,মেয়েরা খুব বেহায়া আর আবেগী।অল্পতেই গলে যায়।মাও নিশ্চয়ই গলে গেছে!!

তানিম ছাদের দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে থাকে।ছলছল নয়নে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।ইলিনা বারবার জিজ্ঞেস করছে,
-আম্মু,উনি কে?
একটুপর তানিম এগিয়ে এলো।এসেই আমার পায়ে পড়ে সেই কান্না জুড়ে দিলো।আমি হতভম্বের মতো বসে আছি।কি করবো বুঝে উঠতে পারছিনা।ইলিনা কোল থেকে নেমে তানিমের পাশে দাঁড়িয়ে বলল,
-তুমি কি আমার বাবা?তোমার উপর আমি রাগ।আম্মু তো রাগ না।আম্মু তো তোমাকে দেখেছে আগে।আমি তো দেখিনি।তাই আমি রাগ।তুমি আম্মুর পায়ে কেন ধরেছো?আমাকে কোলে নাও নি কেন?চকলেট এনেছো?
তানিম মাথা উঠিয়ে ইলিনাকে জড়িয়ে ধরলো।এই দৃশ্যটা দেখার জন্যই যেনো আমার মন এতোদিন আকুপাকু করছিলো।নিজের অজান্তেই মুখে হাসি ফুটে উঠলো।
মেয়েরা বড্ড বোকা।নয়তো এভাবে একটা ধোঁকাবাজের কান্নায় গলে যায়?

তানিম আমার হাত ধরে।আমি যেনো রোবট!কিচ্ছু বলতে পারছিলাম না,নড়তেও পারছিলাম না।কেমন জানি স্বপ্ন স্বপ্ন লাগছিলো সব।
-সামু,প্রকৃতি প্রতিশোধ নেয়।রুমা অন্য এক ছেলের সাথে চলে যায়।আমার তিনটা বছরের একটা দিনও শান্তিতে কাটেনি।তোমার অভাব আমি প্রতিটা সেকেন্ডে অনুভব করেছিলাম।তোমার প্রতি যে অন্যায় করেছি তার ক্ষমা আসলে হয়না।
-তিন বছরে একবারও তো খোঁজ নাও নি।
-কোন মুখে নিবো?আমার কি সেই মুখ আছে?আমি তো তোমার সামনে আসারও যোগ্য না।আজ অনেক কষ্টে,সব লজ্জা কাটিয়ে চলে এসেছি।তুমিই আমার সব।এখন থেকে তুমি যা বলবা তাই হবে।তুমি যদি বলো বসে থাকতে তো বসে থাকবো। যদি বল এখনই ছাদ থেকে লাফ দিবো।তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিও না প্লিজ।
-যে আমার সাথে দুইবার প্রতারণা করেছে সে যে আবার করবেনা এমন কোনো গ্যারান্টি আছে?কোন সাহসে তোমাকে বিশ্বাস করবো আমি?আর কোন সাহসে তুমি আমার কাছে এসেছো?
-সামু,আমাদের ভালোবাসার সাহসে এসেছি।প্রতিটা দিন তোমার অভাবে কেঁদেছি,সেই সাহসে এসেছি।আমার মা আর বোনের কষ্ট দেখেছি তোমার জন্য,সেই অধিকারে এসেছি।
-তোমার মাকে তো কল দিয়েছি।উনি কেটে দিলেন।কিসের কষ্ট!!
-মা লজ্জায় ফোন রিসিভ করেনি।বিশ্বাস করো,প্রতিদিন তোমার জন্য কাঁদে।তানফি বিয়েরদিনও ভাবি ভাবি করে জান দিয়ে দিলো।আমাকে ফোন দিয়ে প্রতিদিন বলে তোমাকে নিয়ে আসতে।তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে।
-এখন আমার হাতে কিছু নেই।আমার বাবা মা আছে।তারাই সিদ্ধান্ত নিবে।
-আমি রাজি করাবো।সবটুকু দিয়ে রাজি করাবো।তুমি বলো,উনারা রাজি হলে তুমি যাবে তো?
-দেখা যাক।
-প্লিজ সামু!আমাদের মেয়েটার জন্য হলেও রাজি হও।দেখো,মেয়েটা কত্ত খুশি আমাকে দেখে।

আমি ইলিনার দিকে তাকালাম।মেয়েটা খুশিতে ডগমগ করছে যেনো।বাবা বাবা বলে ছড়া সাজাচ্ছে।বাবার হাঁটুতে বালু ঝেড়ে দিচ্ছে।আমার কেন জানি মায়া লাগলো মেয়েটার জন্য।আমি তানিমকে কি বিশ্বাস করবো!!দোটানায় পড়ে গেলাম।
বাবা আসলো সন্ধ্যার পরে।সাধারণত বাবা এশার নামাজের পরে আসে।এসে আগে ইলিনাকে কোলে নেয়।নিয়ে দিনের হালচাল জিজ্ঞেস করে।আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
-হ্যাঁরে মা,তোর কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো?শরীর ভালো তো?
এই তিন বছরে একটা দিনও এই রুটিনের বাইরে যায়নি।আর গেলো।বাবা আজ তাড়াতাড়ি এসেছে কারণ,মা ফোনে বলেছে তানিম আসার কথা।আজ ইলিনা নানাভাই বলে দৌড়ে গিয়ে কোলে উঠেনি।আজ সে তানিমের সাথে ব্যস্ত।বাবা কোনরকমে হাত মুখ ধুয়ে তানিমের মুখোমুখি বসলেন।
বাবা চুপ করে সোফার হাতায় টাট্টু বাজাচ্ছে।আসলে বাবা মনে মনে কথাগুলো সাজিয়ে নিচ্ছে।প্রথমে তানিমই কথা বলে।
-বাবা,আমি সামুকে নিতে এসেছি।
-সায়মার সাথে তোমার কি?শুনেছি তোমার অন্য কেউ আছে।
-বাবা,আমি সব নতুন করে শুরু করবো।সামুর সাথে শুরু করবো।আমি ভুল করেছি।আমি জানি আপনারা ক্ষমা করবেন না।যতক্ষণ আপনারা ক্ষমা করবেন না ততক্ষণ আপনার পায়ে পড়ে থাকবো।
এই বলে তানিম বাবার পা ধরে বসে থাকে।বাবা মহা ঝামেলায় পড়ে গেলো।
বাবা উঠে গিয়ে মার সাথে আলোচনা করতে লাগলেন।মার একই কথা,মেয়ে দিবো না।
তানিমকে সে কথা জানিয়ে দেয়া হলো।তানিম কাঁদতে লাগলো।আমার কি হয়েছে তখন জানিনা,আমি বলে বসলাম যে,
আমি যাবো!
আমার বাবা মা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলেন।বাবা বললেন,বিশ্বাসঘাতককে সুযোগ দেয়া ঠিক হবেনা।আমি বললাম,শেষ সুযোগ টা দিই।
এরপর বাবা মা আর কিছু বললেন না।আর আমিও জানতাম না এই সুযোগটা দেয়া যে আমার কত বড় ভুল ছিলো।


আমি তানিমদের বাড়িতে গেলাম।তানিম সেই প্রথমদিনের মতো করে পুরো বাড়ি সাজিয়েছে।আমাকে নতুন করে প্রপোজ করেছে।কিন্তু সব কিছু কেন জানি আমি মেনে নিতে পারছিলাম না।আমার চোখে বারবার তানিম আর রুমার বিয়ের সাজটাই ভাসছিলো।আমি আমার একটা ফ্রেন্ডকে দিয়ে খোঁজ লাগালাম,আসলেই রুমা অন্য ছেলের সাথে চলে গেছে কিনা।এবং দেখলাম যে,হ্যাঁ সত্যিই রুমা কাজটা করেছে।আর গেছে কার সাথে?রুমার বড় বোনের জামাইর সাথে!
শুনে থ হয়ে গেলাম!মানে এটা কি!!এই গোলক ধাঁধার মধ্যে কেন চলছে সব?রুমা তানফির ফ্রেন্ড।রুমার বোন রুহি আমার সতীন ছিলো একটা সময়ে।পরে রুমা সতীন হলো।এখন রুমা আবার নিজের বড় বোনের সতীন!!মানে এসব কি!এই দুবোনের কি আত্মসম্মান বলে কিছু নেই?
কেন জানি একটা প্রশান্তি কাজ করছিলো।কারণ রুহি এখন বুঝতে পারছে যে অন্যের স্বামী কেড়ে নিলে কেমন লাগে।আমি তানিমকে বিশ্বাস করতে আরম্ভ করলাম।কিন্তু আমার শ্বশুরের স্মৃতিগুলো আমাকে খুব কষ্ট দিতো।উনি থাকলে আমাকে দেখে অনেক খুশি হতেন।ইলিনার নামটাও উনারই দেয়া।কত্ত খুশি হয়েছিলেন যেদিন ইলিনা হলো।

সব ঠিকঠাক চলছিলো।ইলিনা প্রচন্ড বাপ ভক্ত হয়ে গেছে।বাবা ছাড়া কিচ্ছু বুঝেনা এখন।অফিসে গেলে হাজারবার কল দিবে আর তানিমও বিরক্ত না হয়ে কল ধরবে।বাবা মেয়ের মিল দেখে নিজের কাছেই ভালো লাগছিলো।
ইলিনার একটা স্বভাব পেয়েছে আমার শ্বশুরের।ভাজাভুজি খেতেন তিনি অনেক।ইলিনার জন্য এসব করতে হয়। সারাদিন এতো ব্যস্ত থাকি যে আগের কথা মনে করার সময়ই পাইনা।আর রাতে তো তানিম থাকে।ওর মুখে সামু নামটা শুনলেই সারাদিনের ক্লান্তি শেষ হয়ে যায়।
এর মধ্যে একদিন আমি বাবার বাড়ি যাবো।তানিমের ছুটি নেই।ইলিনাকে নিয়ে যাবো কিন্তু সে যাবেই না।সে তার দাদু আর বাবাকে ছেড়ে যাবেইনা।আমার কেমন জানি খারাপ লেগে উঠলো।তিনটা বছর আমার বাবা মা ইলিনাকে কষ্ট করে বড় করেছে,আমি তো প্রায় সময় অচেতনের মতো থাকতাম।সব সামলেছে মা আর বাবা।এখন যদি তারা শুনে যে ইলিনা তাদের কাছে যেতে চায়না তাহলে কষ্ট পাবে।তাই আমি আর গেলাম না।পরেরদিন বাবা মা ই চলে এলো।অনেকদিন পর দেখা হয়েছে নানা নানুর সাথে কিন্তু কোনো রকম উচ্ছ্বাস দেখলাম না আমার মেয়ের মধ্যে।মা বাবা ভেবেছেন দৌড়ে আসবে ইলিনা।কিন্তু এলো না।বাবা মা যতক্ষণ ছিলো ইলিনা ধারে কাছেও ঘেঁষেনি তাদের।
আমি তানিমকে রাতে ব্যাপারটা বললাম।তানিম বলল,
-ও ছোট মানুষ তো।মনে কষ্ট নিও না।বড় হতে হতে ঠিক হয়ে যাবে।
আমিও ব্যাপারটা মেনে নিলাম।কয়েকদিন পর দুপুরে খাওয়ার পর আমি একটু বিশ্রাম নিতে রুমে এলাম।ইলিনা তার আগেই শুয়ে পড়েছে।আমি ওর পাশে শুয়ে চুলে বিলি কেটে দিচ্ছিলাম।হঠাৎ ইলিনা আমাকে প্রশ্ন করে,
-আম্মু,নানা নানু কিভাবে রাক্ষস হলো?
-কি বলছিস এসব?ওরা রাক্ষস হতে যাবে কেন?
-হ্যাঁ তো।ওরা রাক্ষস ই তো।তাই আমি ওদের কাছে যাই না।আমার ভয় করে।
-তোকে এসব কে বলেছে?
-দাদু বলেছে।
আমি তখনই মায়ের কাছে গেলাম।আমি তো এজন্যই ভাবি আমার মেয়ে নানা নানুর জন্য পাগল ছিলো।এখন কি হলো!
-মা,ইলিনাকে এসব কি শিখাচ্ছেন?আমার বাবা মা রাক্ষস কেন হবে?আপনি ওকে তাদের থেকে দূরে কেন সরাচ্ছেন?
-সেকি!কখন আমি এরকমটা বললাম?
-ইলিনা নিজে বলল আপনি বলেছেন।
-কি বলো এসব!আমি আমার নিজের নাতনীকে এসব শিখাবো?বউমা,তোমার মেয়ে মিথ্যুক হয়েছে কিভাবে?
-মা,ইলিনা ছোট।ও মিথ্যের কি বুঝে?আর এতোবড় মিথ্যে কিভাবে বলবে ও?
-তার আমি কি জানি?আজ আমার ছেলে আসুক।আমাকে এতবড় দোষ দেয়া হলো!আমাকে বোঝা মনে হয় বললেই পারো।এতো নাটক সাজানোর কি দরকার ছিলো?
বলতে বলতেই তিনি কেঁদে ফেললেন।আমি নির্বাক হয়ে গেলাম।আমার কান্না পাচ্ছে খুব।এসব কি হচ্ছে?আমার মেয়েকে ও আজেবাজে শিক্ষা দিচ্ছে।আমি কিছু বললে দোষ দিচ্ছে আমার।আমি রুমে চলে গেলাম।ইলিনাকে কি বুঝাবো এখন?কি বলবো?তার দাদু মিথ্যেবাদী?আমি তো এই শিক্ষা দিতে পারবো না কোনোমতেই!
সেদিন রাতে মা খেতে আসেননি।তানিম বারবার ডাকার পরও আসেনি।পরে তানিম মার রুমে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন কি হয়েছে।ডুকরে কেঁদে উঠে মা সব বলল।তানিম আমাকে ডেকে বলল,
-ইলিনা সত্যি এরকম বলেছে?
-হ্যাঁ।
-ঠিকাছে তুমি যাও
আমি চলে এলাম।আমার তাদের কথোপকথন শুনার কোনো ইচ্ছেই হচ্ছিলো না।
একটুপর তানিম রুমে এলো,সাথে মা ও এলেন।
এসে মা বললেন,
-আমাকে মাফ করে দাও বউমা।আমার আসলে উচিত হয়নি ছোট বাচ্চাকে এসব শেখানো।আমি তো গল্পেরচ্ছলে বলেছিলাম।ইলিনা যে এটাকে মনে গেঁথে নিবে ভাবিনি।
এটা বলেই মা চলে গেলেন।তানিম আমার পাশে বসে আমার হাত ধরে বলল,
-সামু,মার বয়স হয়েছে।কি বলতে কি বলে জানেনা।কিছু মনে কোরো না প্লিজ।
-সমস্যা নেই।যা হওয়ার হয়ে গেছে।উনি ভুল বুঝতে পেরেছেন এটাই অনেক।
তার পরে আর উল্যেখযোগ্য কোনো ঘটনা ঘটেনি।
সকালে আমার কপালে চুমু এঁকে তানিম অফিসে যেতো।আসতো ফুল নিয়ে বৃষ্টি হলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টির ফোঁটা ছুঁয়ে দেয়া,মাঝে মাঝে এখানে ওখানে ঘুরতে যাওয়া,এটা ওটা গিফট করা এসব নিয়েই সুখে দিন কাটাচ্ছিলাম।
আমার ডিভোর্সের ৪মাস আগে একদিন তানফি আসে ওর জামাইকে নিয়ে।ঘরের মধ্যে একটা উৎসব উৎসব ভাব এসে যায়।রান্নাবান্না করলাম।তানফির খোঁজ খবর নিলাম।তানফির বাচ্চা হচ্ছেনা।অনেক চেষ্টা করেছে চিকিৎসা করেছে,কোনো লাভ হচ্ছে না।এখন কোথাও পাওয়া গেলে দত্তক নিবে বাচ্চা।
খাওয়া দাওয়া শেষে আমরা সবাই ড্রয়িং রুমে আড্ডা দিচ্ছিলাম।এমন সময় কলিংবেল বাজে।আমি গিয়ে দরজা খুললাম।খুলে দেখি একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে।আমাকে দেখেই এসে জড়িয়ে ধরে।আমি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিই।
-এসব কি অসভ্যতামি!!এভাবে গায়ে হাত দিচ্ছেন।কে আপনি??
-সায়মা,আমি!!তুমি কি বলছো এসব!
-মানে কি??
-আমি রায়হান।আমাদের নিয়মিত কথা হয়।দেখো,অনেক কষ্টে তোমার ঠিকানা জোগাড় করেছি।ফিরিয়ে দিয়ো না প্লিজ।
-পাগল হয়ে গেছেন?আমি আপনাকে চিনিই না।
তানিম এগিয়ে এসে বলল,
-ওর সাথে কথা হয় মানে?কোনো প্রমাণ আছে?
ছেলেটা পকেটে হাত ঢুকিয়ে……(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here