ভালোবাসার স্পর্শানুভুতি পর্ব ৮

#ভালোবাসার_স্পর্শানুভূতি
#রাইমা_মিমি
#পর্ব_৮

এদিকে তারা অত্যন্ত বিরক্ত সামিরকে নিয়ে। তার মতে সামির প্যারা ছাড়া কিছুই না। এ যেন এক উটকো ঝামেলা।

এদিকে, এনি সবে মাএ এসে পৌছেছে ভার্সিটিতে। সে তার প্রাইভেটকার থেকে নেমে সোজা হাটা দেয় ভার্সিটির দিকে। আর কলেজের সব ছেলেরা তাকিয়ে আছে আর দিকে। এমন সিন দেখা কে মিস করতে চায়?

আসলে এনি আজ পরেছে সাদা শাড়ি। একদম সাদা যাকে বলে বিধবাদের শাড়ি। কিন্তু একটু অন্যরকম। নানারকম কাজ করা। তবে তা সাদা রংয়েরই। শাড়িটা নেটের যার জন্য পেট, পেটের ভাজ সব দেখা যাচ্ছে। স্লিভলেস আর বড় গলার ব্লাউজ যার জন্য হাতসহ পিঠ আর গলার অনেকটাই দেখা যাচ্ছে। মুখে ভারী মেকআপ। হাত, কান আর গলায় ডায়মন্ড এর গহনা। হাই হিল। চুলগুলো রঙ করা। (কেমন লাগছে আপনারাই চিন্তা করে নিন।)

সবাই সবার মতো কাজ করছে। কারণ ফাংশন এখনো শুরু হয় নি। তাছাড়া অতিথিগণও এখনো এসে পৌছায় নি। তাই সবাই হাতের কাজগুলো কমপ্লিট করে ফেলছে।

একসময় ১ম বর্ষের সব ছাএছাএী এসে মাঠে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ায়। একপাশে ছেলেরা আর এক পাশে মেয়েরা। প্রধান অতিথিদের সম্মাননার জন্যই তাদের এইভাবে দাঁড়ানো। সবার সাথে তারাও দাঁড়ানো।

কিছুক্ষণের ভিতরেই একে একে সবাই আসতে থাকে। আর বাকি মাএ দুইজন। যারা এই ফাংশনের প্রধান এবং বিশেষ অতিথি। সবাই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে গেটের বাইরে।

এর মধ্যেই একসাথে প্রায় ৫-৬ টা মাইক্রো আর প্রাইভেটকার ঢুকে ভার্সিটির গেট দিয়ে। তার মানে দুজনের একজন চলে এসেছে। কে এসেছে তা সবার জানা। এসেছে রাতের বাবা রায়হান আহমেদ। দেশের সফল বিজনেসম্যানদের একজন। ভার্সিটিতে সবাই রাতকে তার বাবার পরিচয়েও চিনে তাই আর কেউ অবাক হয় নি। সবাই উনাকে সম্মান জানিয়ে উনার আসনে বসার অনুরোধ জানান।

এখন সবাই বসে আছে সবার শেষ অতিথির জন্য। সবাই খুব এক্সাইটেড অতিথিকে দেখার জন্য। আর অতিথি হলে এহসান মাহমুদ।

মিনিট ১০ এর মধ্যেই একসাথে ৮-১০ টা মাইক্রো আর প্রাইভেটকার প্রবেশ করে গেট দিয়ে। সবাই খুব সুন্দর করে স্বাগতম জানায় সবাই।

সব অতিথি এসে যাওয়ার পর যে যার যার আসন গ্রহণ করেন। মিস্টার আহমেদ আর মিস্টার মাহমুদের আসন একসাথে। তাই তারা খুবই বিরক্ত। কিন্তু তা সবার সামনে প্রকাশ করছেন না। ভদ্রতার খাতিতে একে অপরের সাথে কুশল বিনিময় করে যার যার আসনে বসে পড়েন।

কিছুক্ষণের মধ্যেই ফাংশন শুরু হয়। ইংলিশ ডিপার্টমেন্ট এর হেড পুরো ফাংশন টা পরিচালনা করবেন। এই দায়িত্ব রাত বিশেষভাবে উনাকে দিয়েছে।

প্রথমেই প্রিন্সিপ্যাল স্যার উনার ভক্তিতা পেশ করেন। আস্তে আস্তে অতিথিগণ তাদের ভক্তিতা দেন। ভক্তিতা শেষ শুরু হয় বরণ। সিনিয়ররা জুনিয়রদের ফুল মালা দিয়ে বরণ করবে।

সবাই সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। তারাকে বরণ করবে রাত। যা নিয়ে তারা ভিষণ বিরক্ত। এদিকে এনিও রাগে ফুসছে। কিন্তু রাতের মুখে বাঁকা হাসি। যেন বিশ্বজয়ী।

বরণ পর্ব শেষ হলে শুরু হয় পুরষ্কারের পর্ব। এই ভার্সিটিতে নবীনদের জন্য কিছু প্রতিযোগীতার আয়োজন হয় প্রতিবছর। আর তার পুরষ্কার দেয়া হয় নবীনবরণের দিন।

তার মধ্যে ২টা পুরষ্কার পায় তারা। গান আর বক্তৃতার জন্য।

এখন সময় গান ভাজনার। একে একে সবাই গান, আর বক্তৃতা দিবে। তার মধ্যে রাত আর তারাও রয়েছে।

এবার রাতের পালা। স্যার রাতের নাম এনাউস করার সাথে সাথেই সবাই হইহই শুরু করে। যেন সবাই এতোক্ষণ এর জন্যই অপেক্ষা করছিল।

রাত স্টেজে উঠেই সবার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়েই তারার দিকে তাকালো। তারপর গিটার হাতে গান তারার দিকে তাকিয়ে গান ধরল।

Apne Karam Ki Kar Adaayein
Yaara, Yaaraa… Yaara!
Mujhko Iraade De
Kasamein De, Waade De
Meri Duaaon Ke Ishaaron Ko Sahaare De
Dil Ko Thikaane De
Naye Bahaane De
Khwaabon Ki Baarishon Ko
Mausam Ke Paimane De
Apne Karam Ki Kar Adaayein
Kar De Idhar Bhi Tu Nigaahein
Sun Raha Hai Naa Tu
Ro Raha Hun Main
Sun Raha Hai Naa Tu
Kyun Ro Raha Hun Main
Sun Raha Hai Naa Tu
Ro Raha Hun Main
Sun Raha Hai Naa Tu
Kyun Ro Raha Hun Main
Manzilein Ruswa Hai
Khoya Hai Raasta
Aaye Le Jaaye
Itni Si Iltejaa
Ye Meri Zamanat Hai
Tu Meri Amaanat Hai Haan…
Apne Karam Ki Kar Adayein
Kar De Idhar Bhi Tu Nigaahein
Sun Raha Hai Naa Tu
Ro Raha Hoon Main
Sun Raha Hai Naa Tu
Kyun Ro Raha Hun Main
Waqt Bhi Thehara Hai
Kaise Kyun Ye Huaa
Kaash Tu Aise Aaye
Jaise Koi Duaa
Tu Rooh Ki Raahat Hai
Tu Meri Ibaadat Hai
Apne Karam Ki Kar Adaayein
Kar De Idhar Bhi Tu Nigaahein
Sun Raha Hai Naa Tu
Ro Raha Hoon Main
Sun Raha Hai Naa Tu
Kyun Ro Raha Hun Main
Sun Raha Hai Naa Tu
Ro Raha Hoon Main
Sun Raha Hai Naa Tu
Kyun Ro Raha Hun Main

রাত পুরোটা গান তারার দিকে তাকিয়ে গেয়েছে। যা অনেকেরই নজরে পড়েছে। আর তারা! তার মনেও যেন এক অন্য রকম অনুভূতি হচ্ছে। ঠোঁটের কোণে যেন অটোমেটিক হাসি ভেসে উঠেছে। যা দেখে এনি রাগে ফুসছে।

স্যার এসে রাতকে অভিনন্দন জানিয়েছে। একে একে সবাই রাতকে অভিনন্দন জানায়।

সবার পালা শেষ হলে এবার তারার পালা। তার গানেই শেষ হবে আজকের অনুষ্ঠান।

হেড- এটেনশন এভরিওয়ান। এখন আমাদের মাঝে গান পরিবেশন করতে আছে তারা…..(হেড তারার টাইটেল টা দেখে চমকে গেলেন। কিন্তু পরে আবার নিজেকে স্বাভাবিক করে বললেন।) তারা মাহমুদ।

তারা মাহমুদ নাম শুনে অনেকেই চমকে উঠল আবার অনেকে নরমালভাবে নিল।

তারা হাসি মুখে স্টেজে উঠল। তারপর হারমোনিয়াম নিয়ে চোখ বন্ধ করে শুরু করল গান।

দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার
গানের ওপারে।
দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার
গানের ওপারে।
আমার সুরগুলি পায় চরণ,
আমি
পাই নে তোমারে।
দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার
গানের ওপারে।
বাতাস বহে মরি মরি
আর বেঁধে রেখো না তরী,
বাতাস বহে মরি মরি
আর বেঁধে রেখো না তরী,
এসো এসো পার হয়ে মোর
হৃদয়- মাঝারে।
দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার
গানের ওপারে।
তোমার সাথে গানের খেলা
দূরের খেলা যে,
বেদনাতে বাঁশি বাজায়
সকল বেলা যে।
কবে নিয়ে আমার বাঁশি
বাজাবে গো আপনি আসি,
কবে নিয়ে আমার বাঁশি
বাজাবে গো আপনি আসি,
আনন্দময় নীরব রাতের
নিবিড় আঁধারে।
দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার
গানের ওপারে।
আমার সুরগুলি পায় চরণ,
আমি
পাই নে তোমারে।
দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার
গানের ওপারে।

তারা চোখ বন্ধ করে একধ্যানে গান শেষ করল। সবাই একধ্যানে তারার গান শুনেছে। তারার গান যেন সবার মন ছোয়ে গেছে। আর রাত তো হা হয়ে আছে। সে ভাবতেও পারে নি তারা এতো সুন্দর গান গায়।

সবাই একসাথে ওয়াও বলে হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানায় তারাকে। হাত তালির শব্দে চোখ মেলে তাকায় তারা। তাকিয়েই হাসি ফোটে উঠে তারার ঠোঁটের কোণে। এ যে এক তৃপ্তির হাসি।

স্যার এসে তারাকে অভিনন্দন জানায়। স্যার তার বক্তৃতার মাধ্যমে ফাংশন শেষ করতে নেয়। আর তারাও স্টেজ থেকে নামতে নেয়। তখনি মিস্টার মাহমুদ বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলে।

মিস্টার মাহমুদ- আমার কিছু বলার আছে। তারা তুমি স্টেজেই থাকো।(বলেই স্টেজে উঠে দাঁড়ান।)

মিস্টার মাহমুদ স্টেজে উঠে মাইকটা নিয়ে তারাকে কাছে টেনে নেন। তারা বুঝতে পারছে মিস্টার মাহমুদ কি করতে চাইছেন। তাই তারা বার বার মিস্টার মাহমুদের দিকে তাকিয়ে না না করছে। কিন্তু মিস্টার মাহমুদ সেদিকে পাত্তা না দিয়ে বলতে শুরু করেন।

মিস্টার মাহমুদ-…………………………………….

চলবে?

ভুল এুটি ক্ষমার নজরে দেখবেন এবং উৎসাহ দিবেন। ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here