“ভালোবাসার_ভুল Part-09+10

#ভালোবাসার_ভুল
#writer_Sp_sanjana_(সাগরিকা)
🍁🍁🍁
Part-09+10
প্রহর আর নিশি বেরিয়ে যেতে ওদের পিছু পিছু নিঝুম ও যায়।আসলে ওদের পার্টি ছেড়ে বাইরে যাওয়া দেখে নিঝুমের কেমন যেন সন্দেহ হয়।
বাইরে করিডোরে,
প্রহর:- বলো কি হয়েছে, এখানে কেন ডেকেছো?😒
নিশি:- তুমি আমাকে বল এই নিঝুমের ব্যাপারটা কি?😡 ও কেন তোমার বার্থডে সেলিব্রেট করছে তুমি তো আমার ফিয়ন্সে।
প্রহর:- ঐ চুপ কর কেউ শুনে ফেললে আমার সব প্লান ভেস্তে যাবে।😰
নিশি:- কিসের প্ল্যান দেখো তুমি আমার সাথে ঠিক করছো না এটা।
প্রহর:- আরে পাগলি আমার কথা তো শুনো আমি শুধু তোমাকেই ভালবাসি তোমাকেই বিয়ে করব।নিঝুম হবে আমার প্রতিশোধ এই বলেই প্রহর নিশি বাহুডোরে আবদ্ধ করে নেয়।
নিশি:- I love u prahor.love u so much
প্রহর:- love u 2 nishi.
এসব বলে কেবিনে ফেরার জন্য পিছনে ফিরতেই নিঝুমকে দেখে প্রহরের হাসি মিলিয়ে যায়।নিঝুম এর চোখ দিয়ে অনবরত জল পড়চ্ছিল।সে এসব সহ্য করতে না পেরে পার্টি ছেড়ে চলে আসে।এসে বাড়িতে ঢুকেই নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে কাঁদতে থাকে।
অন্যদিকে রেস্টুরেন্ট এ সবাই নিঝুমকে খুঁজছে প্রহর কোনোভাবে সব ম্যানেজ করে খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ করে বাসায় চলে আসে।বাসায় আসার সাথে সাথে প্রহরের বাবা বলে উঠে।
প্রহরের বাবা( আবির শাহ্):- আজ কি হল ঐ নিলীমার মেয়েকেভরা মহলে অপমান করলি।
প্রহর:- আর বলো না বাবা এই মেয়ে যা চালাক সব জেনে গেল। এই নিশির জন্য ও যদি আমায় আলাদা করে না ডাকতো তাহলে তোমার ইচ্ছা আজ পূরণ হত।
আবির শাহ্:- আমার ছেলে হয়ে তুই এতো কাঁচা খেলোয়াড় হবি আমি ভাবতে পারিনি।যা এখন গিয়ে একে ভুল বোঝাতে পাড়িস কিনা দেখ।
আবির শাহ্ হল নীলের(নিঝুমের বাবা ) রাইবেল বিজনেসম্যান যদিও এছাড়াও এনার একটা পরিচয় আছে তা আমরা পরে জানব।
রুমের দরজা বন্ধ করে কেঁদে যাচ্ছে তারপরও কেন যেন মনটা শান্ত হচ্ছে না।শাড়ি খোলে বাথরুমে অনেকটা সময় ঝর্না ছেড়ে বসে ছিল নিঝুম।চোখের জলগুলিও ঝর্নার জলের সাথে একাকার হয়ে গিয়েছিল। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছিল কিন্তু পাড়ছিল না।
রাত ৯ টায়,
নিঝুম ভেজা চুলে ড্রেস চেঞ্জ করে রুমে এসে বিছানায় শুয়ে পড়ল।
নিঝুম:- কেন এমন করলে আমার সাথে কেন কিসের প্রতিশোধ তোমার??
কিছুক্ষন কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গেল।রাতে নিঝুমের মা অনেক ডাকাডাকি করেও প্রতিউত্তর না পেয়ে ঘুমিয়েছে ভেবে আর ডাকে না। এই সময়টা পুরোটাই প্রহর নিঝুমকে ফোন করেছিল কিন্তু নিঝুমের সেই দিকে খেয়াল নেই।
সকালে খুব ভোরে নিঝুমের ঘুম ভাঙ্গে বালিশ থেকে মাথা তুলতে ই অনেক ভারি অনুভব করল।রাতের কথা মনে করতেই মনের আকাশে একরাশ কষ্ট ভিড় করল।ফোন হাতে নিতেই প্রহরের অনেক মিসডকল চোখে পড়ে তাকে ব্লক করে দেই।উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্যালকনিতে রোজকার ফুল আর চিরকুট খুঁজতে লাগল।এখন মনে হয় এটাই তার মন ভালো করতে পারে ভেবে। কিছুক্ষন খুঁজে পেয়ে ও যায় আজ আছে তার প্রিয় নীল পদ্ম যা দেখে মনের কষ্টগুলো ভুলে বসেছিল কিছুক্ষণ এর জন্য।সাথে চিরকুট যাতে লেখা-

একটুখানি আলো আধারে ,
ভালোবাসবো গোপনে।
তোমার হয়ে থাকবো আমি,
জানবে তুমি স্বপ্নে।
চলবে…………..
(কেমন লাগছে বলবেন আর কোনো কনফিউশন থাকলে বলবেন।)

Part-10

🍁🍁
চিরকুট এর লেখাটি পড়ে আজ অনেক ভালো লাগল মনে হল কেউ আমাকে সত্যি ভালোবাসে হোক না তা লোকানোর অপ্রকাশিত।নিঝুম ভেবে নিল তিন মাস পর ই ফাইনাল পরীক্ষা এখন আর সে কলেজ যাবে না শুধু পরীক্ষা দিতে যাবে।সে চায় না সে প্রহরের চেহারাও দেখোক প্রহরকে ভালোবাসা ই তার জীবনের “ভালোবাসার ভুল” একমাএ ভুল। প্রহর সামনে থাকলে নিঝুম দুর্বল হয়ে পড়বে তার তার সামনে গিয়ে তাকে নিজের কষ্ট বাড়ানোর আর সুযোগ দিতে চায় না।এভাবে চলে যায় এক মাস,এরমাঝে মৌ,নিকি বিথী অনেক চেষ্টা নিঝুম থেকে তার কলেজে না যাওয়ার কারন জানার জন্য কিন্তু সকলেই ব্যর্থ।নিঝুম এই ব্যাপারে কিছুই বলে না। নিঝুম এখন আর আগের মতো হাসে না সবার সাথে বসে গল্প করে না সারাদিন আঁধার ঘরে বসে থাকে।নিঝুমের মা ও নিঝুমকে নিয়ে চিন্তিত হঠাৎ কি হল তার মেয়ের জীবনে যে আমার হাসি খুশি মেয়েটা এমন হয়ে গেল। নিঝুমের মা মৌকে ফোন করে আবার একটু আসতে বলে যদি কোনোভাবে ওকে বুঝিয়ে বাইরের ঘুরতে নিয়ে যেতে পারে।
মৌ:- হে বল আন্টি নিঝুম এখন কেমন আছে?
নীলামা:- আর কি বলব বল আমার মেয়েটার যে কি হল কিছুই বুঝতে পারছি না মা তোরা আয় না একবার দেখ কোথাও নিয়ে যেতে পারিস কিনা।
মৌ:- আচ্ছা আন্টি চিন্তা কর না আমি বাকিদের নিয়ে আসছি আজ ওকে আমাদের সাথে যেতেই হবে।
কিছুসময় পর ,
মৌ,বিথী,নিকি এসে হাজির হল নিঝুমের বাড়ি।
মৌ:- আন্টি দেখ আমি চলে আসেছি।
বিথী:-আন্টি হতছারি নিঝুমটা কোথায় বল আজ ওকে না নিয়ে আমরা যাচ্ছি না।
নিকি:- ওকে বল এসে গেছি আমরা এখন আমাদের সাথে ফুচকা খেতে যেতে হবে।
নীলিমা:- যাও উপরের ২ নম্বর ঘরটাই ওর না বের হতে চাইলে চেঁচিয়ে বের করবে।
মৌ,নিকি,বিথী চলে যায় নিঝুমের রুমে।নিঝুম ব্যালকনিতে বসেছিল সবাই গিয়ে নিঝুমকে এনে জোর করে রেডি করে সন্ধ্যায় ফুচকা খেতে নিয়ে যায়।
ফুচকা স্টোলে,
মৌ:- মামা বেশি করে ঝাল দেও।এই নিঝুম তুই খাচ্ছিস না কেন রে ?
নিঝুম:- হম্ খাচ্ছি দেখ। বলেই সামনে দেখতেই রাস্তার অন্যপাশে প্রহরকে দেখে নিশির সাথে আর নিঝুমের চোখে ফুটে উঠে একরাশ ভালোবাসা হারানোর বেদনা।কোনক্রমে মৌদের বলে বাসায় চলে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। ব্যালকনিতে বসে একাকী চাঁদের হালকা আলোতে বসে চোখের জল ফেলতে থাকে।এখন আর নিঝুম আগের মত পড়তে পারে না দিনের খুব কম সময় সে পড়ে। এইভাবে নিঝুমের ফাইনাল পরীক্ষা চলে আসে। প্রহর তাকে আর মানাতে না পেরে ভিন্ন খেলায় নেমেছে এখন সে তাকে রাস্তায় ডিস্টার্ব করে কলেজে তাকে সবার সমানে বিভিন্ন ভাবে বিব্রত করে।কখনো পা দিয়ে লেং মেরে কলেজ ক্যাম্পাসে ফেলে দেওয়া তো কখনো নিশির সাথে তার চোখের সামনে ঘুরে বেরায় যা নিঝুম মনকে ক্ষত বিক্ষত করে। নিঝুম মাঝে মাঝেই ভাবে একটা “ভালোবাসার ভুল” মানুষের জীবন তচনছ করতে যথেষ্ট যেমন টা তার হয়েছে,ভুল মানুষকে ভালোবাসার শাস্তি পাচ্ছে এখন সে।এইভাবেই তার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়।এতো কষ্টের মধ্যেও সকালের কিছুটা সময় তার ভালোই কাটে নতুন নতুন ফুল আর চিরকুটের অপেক্ষায় যদিও প্রথম থেকেই এই চিরকুট তার ভালো লাগতো।কিন্তু এখন এগুলি ই তার জীবনে প্রশান্তির রসদ জোগায়। চিরকুটের অপারের মানুষটি যেন তার কতো আপন।তার দেখা পাওয়ার জন্য মন ব্যাকুল মাঝে মাঝে কবে হবে অপ্রকাশিত ভালোবাসার সম্মুখ আলাপন। ফাইনাল পরীক্ষার একমাসের লম্বা ছুটি।সকাল সকাল এক কাপ কফি হাতে ব্যালকনিতে চলে চিরকুট খুঁজতে কিন্তু পায়না কিছু মন খারাপ করে নিচের বাগানে হাঁটতে যায়। তার বাগানের ফুল গাছগুলো ও ঠিক তার মতোই অবহেলায় কেমন শুকিয়ে গেছে।এখন প্রহরের স্মৃতি তাকে এতোটাও পোড়ায় না আবার তাকে সহ্য ও করতে পারে না। এখন তার নতুন নেশা চিরকুট অপেক্ষা করা আর নিজের ডায়েরীতে ফুল সহ প্রতিদিনের চিরকুট কালেক্ট করা।অন্যদিকে প্রহর ,
আবির শাহ্(প্রহরের বাবা):-আমি চাই তুই ঐ মেয়েকে ধরে এনে বিয়ে কর তখন আমি নীল চ্যাটার্জি কে বোঝাবো আমি কি জিনিস।আমার সাথে প্রতারনা করার ফল সে পাবে।
প্রহর:- কিন্ত বাবা আমরা নিঝুমকে এভাবে কিডন্যাপ করতে পারবো না তার বাড়িতে বিভিন্ন জায়গায় সিসি টিভি ক্যামেরা আর শখানেক গার্ড।এভাবে তাকে কিডন্যাপ করা সহজ না আমাদের নিঝুমের বাইরে যাওয়ার অপেক্ষা করতে হবে।
আবির শাহ্:- আচ্ছা করব এতো বছর অপেক্ষা করেছি তো আরো কিছু সময় করি।প্রহর:- well done dad.
চলবে…….
(দুদিন একটু ব্যস্ত আছি বাড়িতে লক্ষ্মি পূজো।তাই গল্প দিতে পারিনি জানি অনেকেই হয়তো অপেক্ষা করেছেন। অপেক্ষা করানোর জন্য দুঃখিত।আজ অনেক চেষ্টা করে একটা পার্ট দিলাম কেমন লাগল বলবেন সবাই)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here