ভালোবাসা তুই পর্ব -২১+২২

#ভালোবাসা_তুই
#পর্বঃ২১
#লেখিকা_নিদ্রানী_নিদ্রা

[ কপি করা নিষেধ ]

আমি সকালেই শুভ্র ভাইদের বাসা থেকে নাস্তা করে বাসায় চলে আসলাম । বাসায় এসেই রেডি হয়ে আমি আর আপু ভার্সিটিতে চলে গেলাম । আপু তার ক্লাসের দিকে চলে গেল। আমি চলে গেলাম আমার ফ্রেন্ডদের কাছে । আমি ওদের কাছে যেতেই বৃষ্টি বলল ,

” এই তো শুভ্রতা চলে এসেছে ! চল একটা গেইম খেলা যাক ।

বৃষ্টির গেইমের কথা শুনে রনিত বলল,

” কি গেইম ?

” আমাদের মধ্যে একজন ছেলে গিয়ে একটা মেয়েকে প্রপোজ করবে আর একজন মেয়ে গিয়ে একটা ছেলেকে প্রপোজ করবে । প্রপোজ একসেপ্ট করলে আমরা পাব ট্রিট আর যে প্রপোজ করবে সে পাবে গার্লফ্রেন্ড / বয়ফ্রেন্ড । রাজি সবাই ?

সবাই একসাথে বলে উঠলাম ,

” আমরা সবাই রাজি ।

রিয়া আকাশকে বলল ,

” এখন গেইট দিয়ে প্রথম যেই মেয়ে প্রবেশ করবে তুই গিয়ে তাকে প্রপোজ করবি ।

আকাশ একটু ভাব নিয়ে বলল ,

” আমি যেই মেয়েকেই প্রপোজ করবো সেই একসেপ্ট করে ফেলবে তোরা শুধু দেখতে থাক আমি কি করি !

আকাশের কথায় বৃষ্টি ভেংচি কেটে বলল ,

” হুহ ! দেখা যাবে আগে প্রপোজ তো কর ।

আমরা অনেকক্ষণ ধরে গেইটের দিকে তাকিয়ে আছি । কিন্তু এখন একটা মেয়ে ও আসছে না । কিছুক্ষণ পর একটা মেয়ে আসলো । আমাদের ভার্সিটির প্রিন্সিপাল স্যারের মেয়ে নাতাশা । বৃষ্টি আকাশকে ধাক্কা দিয়ে বলল,

” যা গিয়ে প্রপোজ কর !

আকাশ অসহায়ের মত মুখ করে বলল,

” অন্য কাউকে করলে হয় না ?

যেহেতু প্রিন্সিপাল স্যারের মেয়ে যদি স্যারের কাছে গিয়ে বিচার দেয় তাহলে অবশ্যই কঠিন শাস্তি পেতে হবে । আকাশ অন্য কারোর কথা বলার পরও রিয়া বলল,

” প্রথমে যখন নাতাশা এসেছে তোকে নাতাশাকেই প্রপোজ করতে হবে ।

আকাশ আচ্ছা বলে এগিয়ে যাচ্ছিল । তখন পেছন থেকে রনিত ডেকে বলল ,

” একটা ফুল নিয়ে যা ।

আমাদের ভার্সিটিতে এক সাইডে অনেক গুলো ফুলের গাছ আছে । আকাশ সেখান থেকে একটা গোলাপ ফুল নিয়ে নাতাশার সামনে গেল । আমরা সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে আছি । আকাশ নাতাশার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ফুল বাড়িয়ে দিয়ে বলল,

” তুমি কি আমার স্বপ্নের কন্যা হবে ? তুমি কি আমার হাসি মুখের কারণ হবে ? তুমি কি আমার ভালোবাসা হবে ?

নাতাশা আকাশের হাত থেকে ফুলটা নিয়ে মুচকি হেসে চলে গেল । আকাশ আমাদের কাছে এসে বলল,

” প্রপোজ একসেপ্ট করল না রিজেক্ট করল কিছুই তো বুঝলাম না ।

রনিত বলল,

” আচ্ছা ওর কথা বাদ দে ! এখন মেয়েদের থেকে কে যাবি বল ?

বৃষ্টি প্রথমে রিয়া বলতেই রনিত চোখ গরম করে বৃষ্টির দিকে তাকালো তারপর বৃষ্টি বলল,

” রিয়া না শুভ্রতা যাবে ।

আমি ও বললাম ,

” আচ্ছা কাকে প্রপোজ করতে হবে বলে !

” গেইট দিয়ে এখন যে ছেলেটা আসলো তাকে ।

আমি বৃষ্টির কথা মতো একটা ফুল নিয়ে ওই ছেলেটার কাছে গেলাম । যখন ছেলেটার সামনে গিয়ে বসলাম তখন হঠাৎ করে কে যেন আমায় দাঁড় করিয়ে টানতে টানতে ভার্সিটির বাহিরে নিয়ে গেল । আমি তাকিয়ে দেখি শুভ্র ভাই । উনি আমাকে গাড়িতে নিয়ে এক প্রকার ছুরে ফেলে দিলেন। গাড়িতে উঠে অনেক স্পিডে গাড়ি চালাতে লাগলেন। একটু ভুল হলেই এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে । শুভ্র ভাই আমাদের বাসার সামনে এনে গাড়ি থামাল। গাড়ি থেকে নেমে আমার হাত ধরে টানতে টানতে বাসার ভিতরে নিয়ে গেল । আমাদের বাসায় মামনি আর আম্মু বসে কথা বলেছিল। আমাকে এভাবে টেনে নিয়ে যেতে দেখে মামনি বলল,

” শুভ্র তুই এভাবে শুভ্রতাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস ?

শুভ্র ভাই মামনির কথার কোনো উত্তর দিল না । আমাকে আমার রুমে নিয়ে গিয়ে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলল ,

” এই তুই কোন সাহসে ওই ছেলেকে প্রপোজ করতে গিয়েছিস ?

” শুভ্র ভাই বিশ্বাস করুন ……

আমি কথা শেষ করার আগেই শুভ্র ভাই আমাকে ঘুরিয়ে দেয়ালের সাথে লাগিয়ে বাম হাতটা দেয়ালের সাথে চেপে ধরে রাগী কন্ঠে বলল,

” কোনো এক্সকিউস দেখাবি না । তোর এতো বড় সাহস কিভাবে হলো একটা ছেলেকে প্রপোজ করার ।

আমার হাতে কাঁচের চুড়ি ছিল । শুভ্র ভাই জোরে হাত চেপে ধরায় চুড়ি গুলো ভেঙ্গে আমার হাতে ঢুকে রক্ত বের হতে লাগলো । শুভ্র ভাই এখনো খেয়াল করেননি। আমি ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে আর্তনাদ করে উঠলাম। আমার আর্তনাদ শুনে শুভ্র ভাই শান্ত হয়ে আমার হাতের দিকে নজর দিয়ে বলল ,

” শুভ্রতা বিশ্বাস কর আমি ইচ্ছে করে তোকে আঘাত দিতে চাইনি ।

আমার আর্তনাদ শুনে আম্মু আর মামনি সাথে নিশি ও রুমে আসলো । নিশি কোথা থেকে এলো আমি জানিনা। মামনি এসেই আমার হাতটা শুভ্র ভাইয়ের হাত থেকে ছাড়িয়ে শুভ্র ভাইকে একট থাপ্পড় দিয়ে বলল ,

” তোর সাহস কি করে হলো শুভ্রতাকে আঘাত করার। তুই ছোটবেলায় যেভাবে ওর থেকে দূরে ছিলি এখনও ঠিক আগের মতো শুভ্রতার থেকে দূরে থাকবি। একদম ওর কাছে ঘেঁষার চেষ্টা করবি না ।

” আম্মু আমি তো ……

” আমি তর মুখ থেকে একটা কথাও শুনতে চাই না । বেড়িয়ে যা এখান থেকে ।

শুভ্র ভাই কোনো কথা না বলে চুপচাপ বেড়িয়ে গেল । আমাদের বাসার কাছেই একটা ডক্টরের ফার্মেসি আছে। আম্মু গিয়ে ডক্টরকে নিয়ে এসে হাতে ব্যান্ডেজ করিয়ে দিল । বিকালে আমি আর নিশি ছাদে বসে আছি । নিশির থেকে জানতে পারলাম তুষার ভাইয়ার আব্বু নাকি চাচ্ছে এখনই আপু আর তুষার ভাইয়ার বিয়েটা হয়ে যাক । তাই নিশি আমাদের বাসায় এসেছে। শুভ্র ভাই আমাকে আর আপুকে ভার্সিটি থেকে আনতেই ভার্সিটিতে গিয়েছিল । কিন্তু আমাকে এভাবে একটা ছেলেকে প্রপোজ করতে দেখে রাগে আমাকে নিয়েই চলে এসেছে । নিশি আমার কাছে জানতে চাইলো শুভ্র ভাই কেন এভাবে রেগে গিয়েছেন । আমি নিশিকে সব খুলে বললাম । নিশি এবার আমায় বলল,

” শুভ্রতা ছোটবেলায় কি কারণে শুভ্র ভাই চট্টগ্রাম চলে গিয়েছিল ?

আমার আজকে অনেক মন খারাপ । এখন ছোটবেলার কথা বলতে ভালো লাগছিল না । তাই নিশিকে বললাম,

” অন্য আরেক দিন বলবো ।

নিশি আমার কথায় সন্তুষ্ট হলো না । একটু জেদ নিয়েই বলল,

” তোকে ওই দিন ও জিজ্ঞেস করেছিলাম তুই বলিসনি । আজকে তোকে বলতেই হবে । আমি আজকেই শুনব বল তুই !

” আচ্ছা বলছি !

#চলবে#ভালোবাসা_তুই
#পর্বঃ২২
#লেখিকা_নিদ্রানী_নিদ্রা

[ কপি করা নিষেধ ]

ছোটবেলায় আমি সবসময় শুভ্র ভাইয়ের পিছনে পিছনে ঘুর ঘুর করতাম । শুভ্র ভাইয়ের কোলে উঠার জন্য কান্নাকাটি করতাম । শুভ্র ভাই অনেক বিরক্ত হতো । আমি তখন শুভ্র ভাই ছাড়া কিছুই বুঝতাম না। শুভ্র ভাই বিরক্ত হলেও সব সময় আমার সাথে খেলা করত। আমাকে কোনো সময় অন্য কোনো ছেলের সাথে খেলতে দিতো না । একদিন শুভ্র ভাই স্কুলে যাওয়ার সময় আমাকে এসে বলল,

” শুভ্রতা আমি স্কুলে যাচ্ছি । তোকে যেন কোনো ছেলের সাথে খেলা করতে না দেখি ।

” আততা ভাইয়া তুমি যাও।

তখন শুভ্র ভাইকে আমি তুমি করেই বলতাম । কিন্তু এতো দিন পরে শুভ্র ভাইকে তুমি করে বলাটা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি তাই আপনি করেই বলি । শুভ্র ভাইয়া চলে যাওয়ার পর পাশের ফ্লাটের একটা ছেলে এসে আমাকে একটা চকলেট দেখিয়ে বলেছিল ,

” শুভ্রতা চকলেট খাবে ? খেলে আমার সাথে খেলতে হবে ।

” না আমি খেলবো না ।

তারপর অনেক গুলো চকলেট বের করে আমায় দেয়। আমি ও চকলেট দেখে খেলতে রাজি হয়ে যাই । শুভ্র ভাই কিসের জন্য যেন স্কুলে যাওয়ার থেকে আবার বাসায় ফিরে আসে । এসে আমাদের খেলতে দেখে লাগে স্কুল ব্যাগটা ছুড়ে ফেলে প্রথমে ছেলেটাকে মারতে থাকে আর বলে,

” তোকে বলেছিলাম তুই শুভ্রতার আশেপাশে না আসতে তাও তুই ওর সাথে খেলছিস ।

শুভ্র ভাই ছেলেটাকে অনেকক্ষণ মারতে থাকে। আমি শুভ্র ভাইকে বললাম,

” ভাইয়া ছেড়ে দাও না ।

আমি এই কথাটা বলাতে শুভ্র ভাই আরো ক্ষেপে গেল । ছেলেটাকে ছেড়ে দিয়ে একটা বেত নিয়ে আমাকে মারতে থাকে । আমি চিৎকার করে বলেছিলাম,

” ছেড়ে দাও ভাইয়া আর কোনদিন খেলব না।

আমার কথাগুলো শুভ্র ভাইয়ের কান পর্যন্ত পৌছালো না। উনি আমাকে মারতেই থাকে। আমাকে মারতে মারতে রক্তাক্ত করে ফেলে । আমার চিৎকারে বাসার সবাই ছুটে আসে । মামু এসে শুভ্র ভাইকে অনেক গুলো থাপ্পড় দেয়। মামনি আমায় বুকে জড়িয়ে কান্না করে দিয়েছিল । আমি সেইদিন কান্না করে মামনিকে বলেছিলাম,

” মামনি আমি আর শুভ্র ভাইয়ের কাছে যাব না ।

ওই দিনই মামনি শুভ্র ভাইকে চট্টগ্রাম পাঠিয়ে দেয়। তারপর আর উনার সাথে দেখা নেই । আমি নিশিকে কথা গুলো বলার পর পিছন থেকে আম্মু আমাদের নিচে নিয়ে যায় । তুষার ভাইয়েরা নাকি ফোন দিয়ে বলেছে পরশু দিন গায়ে হলুদ আর তার পরের দিন বিয়ে। কালকে আমরা সবাই মার্কেট করতে যাব ।

আজকে আর শুভ্র ভাইয়ের দেখা পেলাম না । মনটা ছটফট করছিল একবার উনাকে দেখার জন্য। কিন্তু মামনির আদেশ শুভ্র ভাইয়ের সাথে দেখা করা যাবেই না । আজকে অনেক কষ্টে ঘুমালাম । পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে নিলাম । বিকেলের দিকে আমি, আপু, নিশি, মামনি আর আম্মু মার্কেটে গেলাম । মনে করেছিলাম শুভ্র ভাই হয়তো আমাদের সাথে যাবে । মামনি আসার পর কিছুক্ষণ দরজার দিকে তাকিয়ে ছিলাম । আমায় তাকাতে দেখে মামনি বলল,

” ওই দিকে তাকিয়ে লাভ নেই কেউ আসবে না ।

আমার মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেল। বার বার শুধু শুভ্র ভাইকে দেখতে ইচ্ছে করছে । আগে কখনো এমন হয়নি তাহলে আজ কেন এমন হচ্ছে ? মার্কেটে করতে গেলে ও আমার এখন একটু ও ইচ্ছে করছে মার্কেট করতে । আপুর জন্য গায়ে হলুদের শাড়ি কিনল।আর বিয়ের জন্য লাল কালারের লেহেঙ্গা । আমার আর নিশির জন্য হলুদের শাড়ি । আমি বিয়েতে ও শাড়ি পরব নিশি লেহেঙ্গা পরবে । আমরা সবাই কেনাকাটা করে বাসায় ফিরে গেলাম । আম্মু মামনিকে শুভ্র ভাইয়ের কথা বলেছিল তখন মামনি বলল ,

” শুভ্রর বিয়েতে আসা লাগবে না ।

মামনির কথায় আম্মু বলল,

” আমার কোনো ছেলে নেই শুভ্র আমার ছেলের মতো আর শুভ্র বিয়েতে থাকবে না । এটা হতেই পারে না ‌।

” শুভ্রর কোনো দরকার নেই শুভ্রতার আশেপাশে থাকার পরে যদি রাগের মাথায় শুভ্রতার কোনো ক্ষতি করে ফেলে ।

” শুভ্র ওই দিন ইচ্ছে করে এইসব করেনি ভুলে হয়ে গেছিল । আমি শুভ্রকে যথেষ্ট বিশ্বাস করি । শুভ্র নিশ্চয়ই আসবে ।

আম্মু শুভ্র ভাইকে কল দিয়ে স্পিকারটা বাড়িয়ে দিল । শুভ্র ভাই কল রিসিভ করার পর আম্মু বলল,

” শুভ্র বাবা আমাদের বাসায় আয় তো ।

” ফুপ্পি আমার শরীর ভালো লাগছে না আমি এখন যেতে পারবো না ।

” আচ্ছা আমি যেন কাল সকালে তোকে আমাদের বাসায় দেখি।

” আচ্ছা ফুপ্পি !

শুভ্র ভাইয়া আসবে শুনে মনটা ভালো হয়ে গেল । কেমন যেন সুখ-সুখ অনুভূতি হচ্ছে । আমি রাতে রুমে গিয়ে দেখি নিশি ফোনে কার সাথে যেন কথা বলছে আর মুচকি মুচকি হাসছে । নিশিকে হাসতে দেখে জিজ্ঞেস করলাম ,

” কিরে কার সাথে কথা বলছিস ?

” নিশাত ভাইয়ার সাথে ।

নিশাত ভাইয়ার নাম শুনে উনার সাথে কথা বলতে চাইলাম কিন্তু পরক্ষনেই ভ্রু কুঁচকে নিশিকে জিঙ্গেস করলাম,

” তোর সাথে নিশাত ভাইয়ার যোগাযোগ আছে ?

তারপর নিশি আমাকে রাজশাহীতে নিশাত ভাইয়ার সাথে দেখা হওয়া থেকে সব কিছু খুলে বলল। আমি নিশির কাছ থেকে ফোন নিয়ে নিশাত ভাইয়াকে কল দিলাম । ভাইয়া কল রিসিভ করার পর বললাম,

” ভাইয়া আমি শুভ্রতা! কেমন আছেন ?

” ভালো, তুমি কেমন আছো ?

” ভালো ! পরশু আপুর বিয়ে আপনাকে কিন্তু আসতে হবে ।

নিশাত ভাইয়ার সাথে কথা বলা শেষে কলটা কেটে ঘুমিয়ে গেলাম । সকালে ঘুম থেকে উঠে নিচে গিয়ে দেখি শুভ্র ভাই এসেছে। মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে। দেখতে কেমন লাগছে । মনে হয় রাতে ঠিকমতো ঘুমায় নি । আমি নিচে যাওয়ার পর শুভ্র ভাই আমার দিকে একবার ও তাকালো না ।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here