ভালোবাসি তোমায় পর্ব -০৮+৯

#ভালোবাসি_তোমায়
#A_mysterious_love_story
#ইরিন_নাজ
#পর্ব_০৮

হুর বাদে সবাই খেতে বসেছে।মিস্টার ফরিদ তা লক্ষ্য করে বললেন,

-“হুর মামুনী কোথায়! ও খাবে না?”

-“না আঙ্কেল আমি ঐ সময় খেয়েছি। আর খাবো না। পেট ভরা আমার। ”
হুর পিছন থেকে এসে বললো।

ফাইয়াজ হুরের কথা শুনে বিড়বিড় করে বললো,

-“একবারেই যেই রা’ক্ষসীর মতো খেয়েছে আর খাবে
কি করে!”

হুর পাশে দাঁড়িয়ে থাকায় ফাইয়াজ এর কথা তার কানে গেলো। সে নাকের পাটা ফুলিয়ে ওখান থেকে চলে গেলো।

-“মেহমান না হলে একেবারে ধু’য়ে দিতাম। এই হুরের সাথে লাগা! একবার সুযোগ পাই! তেরোটা না বাজালে আমিও হুর না! হুঁহ! ”

————————————————————————

-“বুঝলি হাসান ছেলেটাকে নিয়ে অনেক চিন্তায় আছি।”

-“কেনো চিন্তার আবার কি হলো! তোর এতো ভালো, ভদ্র একটা ছেলে। তাকে নিয়ে চিন্তা কিসের?”

-“তোকে তো গতকাল বললাম আমার পরশু এক মাসের জন্য দেশের বাইরে যাওয়া লাগবে কাজের জন্য। ছেলে টাকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছা করে না রে। ও একটুও নিজের খেয়াল রাখে না। ঠিক মতো খাওয়া দাওয়াও করে না। অন্যান্য বার আমি বেশি হলে এক সপ্তাহের জন্য দূরে যেতাম। কিন্ত এবার আমার এক মাস কমপক্ষে থাকা লাগবে। আর ওকে এখানের সব দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছি। তাই চিন্তায় আছি ছেলেটা যে কি করবে! ওর মা বেঁচে থাকতো তাহলে আমার কোনো চিন্তা থাকতো না রে। ঐ আমার বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল। ”

-“এতে এতো চিন্তার কি আছে! আচ্ছা এক কাজ কর ওকে বলে দেখ ও আমাদের বাড়িতে থাকবে কিনা! আমাদের বাড়ির ছাদে সুন্দর একটা এক্সট্রা ফ্ল্যাট আছে। আমরা ভাড়া দেই না তাই ফাঁকাই পড়ে থাকে। ও চাইলে সেখানে শিফট করতে পারে তোর না আসা পর্যন্ত। এতে হেনা ওর খেয়াল ও রাখতে পারবে আর তোর চিন্তাও দূর হবে। ”

-“তুই আমাকে বাঁচালি বন্ধু। ও এখানে আসবে না মানে ওকে থাকতেই হবে হু। তুই শুধু ওর খবরা-খবর আমাকে দিস। ও ঠিকমতো সব করে কিনা। আর হেনা আপা আপনি ওকে নিজের ছেলের মতো শা’সন করবেন। ”

-“ভাইয়া আপনি চিন্তা করবেন না। ফাইয়াজ যদি এখানে থাকে তাহলে আমি ওর যত্নের কোনো কমতি রাখবো না। আমার খুব পছন্দ হয়েছে ছেলেটা কে। কি সুন্দর অমায়িক ব্যবহার। ভাই ওকে বুঝিয়ে বলবেন যেনো এখানে থাকে। আমি খুব খুশি হবো ও এখানে থাকলে। ”

-“হ্যা আপা আমি বুঝাবো ওকে। তো আপা পরশু তো আমি চলেই যাবো। তার আগে আপনাদের আমাদের বাড়িতে দাওয়াত করতে চাই। না করবেন না কিন্তু! কালকে দুপুরে আপনারা সবাই আমাদের বাড়িতে আসবেন। অ’নুরোধ রইলো।”

-“আচ্ছা ভাইয়া আমরা সবাই কালকে আসবো। ”
হেসে বললেন মিসেস হেনা।

————————————————————————

-“তো হুর মামুনী, লিয়া মামুনী, হৃদ বাবাই তোমরা সবাই কালকে ফুল ফ্যামিলি নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসবে কেমন! আমি কিন্ত অপেক্ষায় থাকবো তোমাদের। ”

-“আচ্ছা আঙ্কেল আমরা সবাই যাবো। ”

-“এখন তাহলে আমরা বাপ-বেটা চলি। কাল দেখা হবে কেমন!”

-“চল আমি তোদের এগিয়ে দিয়ে আসি। ”

-“আয়।”

হাসান সাহেব আর ফরিদ সাহেব বেরিয়ে পড়লেন। ফাইয়াজ হুর, লিয়া আর হৃদের সামনে এসে বললো,

-“চলি চ্যাম্প। চলি লিয়া। কালকে দেখা হচ্ছে তবে। আর এই যে মিস রা’ক্ষসী কালকে দেখা হচ্ছে। আমাদের বাড়িতে এসে আবার রা’ক্ষসীর মতো খাওয়া শুরু করবেন না যেনো! সতর্ক করে দিলাম নাহলে মান সম্মান কিছু থাকবে না আর। ”

ফাইয়াজ কথা শেষ করে চোঁখ টিপ দিয়ে চলে গেলো। হুর দাঁত ক’টম’ট করে ফাইয়াজ এর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। আর লিয়া আর হৃদ তো হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। হুর ওদের দিকে রা’গী চোঁখে তাকিয়ে বললো,

-“দেখলে তো মনে হয় ইনোসেন্ট এর ডিব্বা। সবার সাথে কি সুন্দর করে কথা বলে যেনো মহা ভদ্র। আর আমার সাথে কেমন করলো। রা’ক্ষস পোলা একটা। ”

ধূ’পধা’প পা ফেলে নিজের রুমে চলে গেলো হুর। রা’গে তার মাথা আ’গুন হয়ে যাচ্ছে। একটু খাওয়ার জন্য কতো খো’টা দিলো লোকটা। হুর মুখ বাঁকা করে বললো,

-“শা’লা তুই বউ পাবি না দেখে নিস। বউ পাবি কি করে! বউ কে তো না খাইয়ে মে’রে ফেলবি। ব’জ্জাত কোথাকার। একটু তাড়াহুড়ো করে নাহয় খেয়েছিলাম তাই বলে আমার বাড়ি এসে আমাকে খো’টা দিবি! কালকে তোর বাড়িতে যাবো তো! আমাকে অপ’মান করার ব’দ’লা না নিলে আমিও হুর না। ”

————————————————————————–

সকাল হতেই লিয়া হুরদের বাসায় এসে হাজির। আজকে তারা ভার্সিটি যাবে না। ফাইয়াজ দের বাড়ি যেতে হবে। লিয়ার ধা’ক্কা ধা’ক্কিতে বিরক্ত হয়ে হুর উঠে বসে লিয়ার পিঠে ধু’ম করে দুই টা বা’রি দিলো।

-“পে’ত্নীর তিন নাম্বার জামাইয়ের বাচ্চা কোথাকার! আজকে না আমরা ভার্সিটি যাবো না। তুই আমাকে গু’তা’ইলি কেন স’য়তান কোথাকার। আমি আজকে ১০ টা পর্যন্ত ঘুমাবো। তুই যা আমার রুম থেকে। বি’র’ক্ত করবি না একদম।”

যেই হুর আবার শুতে যাবে অমনি লিয়া আবার ওর হাত টেনে বসিয়ে দিয়ে বললো,

-“দোস্ত আজকে আমরা ঘুরতে যাবো আঙ্কেল দের বাসায়। রেডি হতে হবে না! জলদি ওঠ। ”

-“এই সকাল সকাল রেডি হওয়া শুরু করবো? আমার রেডি হতে ৩০ মিনিট এর বেশি লাগবে না। তুই যা তো যা আমার সামনে থেকে মা’ই’র না খাইতে চাইলে… ”

লিয়া আবার হুরের হাত ধরে বলে উঠলো,

-“দস্ত শুন না হয়েছে কি আমি না ড্রেস সিলেক্ট করতে পারছি না। কি পড়মু রে আমার তো কোনো কাপড় ই নাই। ”

হুর কপাল চা’পড়ে বললো,

-“তুই না কয়েকদিন আগেই কতগুলো ড্রেস নিলি বেদ্দ’প মহিলা। এখন বলিস কাপড় নাই তোর। দারা আন্টির কাছে বিচা’র দিমু তোর নামে। ”

-“না না দোস্ত। তুমি না আমার ভালো সোনা মোনা জানু এমন করে না। উম্মাহ। আম্মু কে বললে আম্মু আজকে সারাদিন আমার কানের সামনে নবাবের বেটি বলে খে’ছখে’ছ করবে। ”

-“ভালো হবে। ”

-“জানু দে না একটা ড্রেস সিলেক্ট করে। তুই তো জানিস আমার কতো সময় লাগে রেডি হতে! তুই না আমার সোনা জানু। আমি না তোকে কতো ভালোবাসি। ”

-“হয়েছে চলেন মহারানী আর পা’ম দেয়া লাগবে না। এমনিতেও আমার ঘুমের তো বারোটা বা’জিয়েই দিয়েছিস। ”

-“চলো জানু উম্মাহ!”

——————————————————–

বিশাল বড়ো এক ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনে গাড়ি থামলো হুরদের। হুর অবাক হয়ে বাড়ি টার দিকে তাকিয়ে আছে। চমৎকার সুন্দর করে বানানো হয়েছে বাড়ি টা।তারা গাড়ি থেকে নেমে দেখলো ফরিদ সাহেব তাদের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসছেন। বাড়ির মেইন গেট পেরিয়ে হুর আরও অবাক হলো। মাঝখানে রাস্তা, একপাশে বিশাল বাগান আর আরেক পাশে একটা মিনি সুইমিং পুল । হুরের মনে হলো সে কোনো ফুলের রাজ্যে চলে এসেছে। সে একধ্যানে ফুলগুলো দেখতে দেখতে হাটছে। হুট করে কেউ তার কানে ফিশফিশ করে বললো,

-“যেভাবে রা’ক্ষসীর নজরে আমার বাগান টাকে দেখছো তাতে সব গাছ ম’রে যাবে মনে হচ্ছে!”

হুর ভয় পেয়ে লাফ দিয়ে পিছিয়ে গিয়ে দেখলো ফাইয়াজ তার দিকে তাকিয়ে হাসছে। হুর আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই। তার মানে সবাই ভিতরে চলে গেছে আর সে ফুল দেখাতে এতটাই মগ্ন ছিলো যে খেয়াল ই করে নি। হুর নিজের জিভে কা’মড় দিয়ে দ্রুত বাড়ির ভিতরের দিকে হাঁটা দিলো।

-“আরে এই যে মিস রা’ক্ষসী! আমার কথার জবাব না দিয়ে কোথায় পালাচ্ছ! আমার গাছগুলোর কিছু হলে তোমাকে ক্ষ’তিপূরণ করতে হবে কিন্ত। ”
পিছন থেকে চি’ল্লি’য়ে বললো ফাইয়াজ।
#ভালোবাসি_তোমায়
#A_mysterious_love_story
#ইরিন_নাজ
#পর্ব_০৯

পুরো বাড়ি ঘুরে দেখছিলো হুর, লিয়া আর হৃদ। বড়োরা বসার রুমে কথা বলছে। মিস্টার ফরিদ তাদের কে বললো বাড়ি ঘুরে দেখতে। বড়ো দের কথার মাঝে তারা বসে বসে বোর হচ্ছিলো বুঝতে পেরে ফরিদ সাহেব তাদের বাড়ি ঘুরে দেখতে বলেছে।

বাড়ির বাইরের অংশ যতটা না বড় ভেতরের অংশ তার দ্বিগুন বড় বলে মনে হচ্ছে হুরের। এই বাড়িতে মাত্র দুজন মানুষ কিভাবে থাকে বুঝে পাচ্ছে না হুর। তবে অনেক সার্ভেন্টস আছে। হুর দ্বিতীয় তলা ঘুরে দেখছিলো। হুট করে পিছে ফিরে দেখলো হৃদ আর লিয়া নেই। সে আশেপাশে খুঁজেও তাদের পেলো না। হুর বুঝতে পারলো সে যখন চিন্তা করতে ব্যস্ত ছিলো তখন হয়তো ওরা অন্যদিকে চলে গেছে। হুর আর ঐদিকে মাথা ঘামালো না। সে তার মতো ঘুরে দেখতে লাগলো।

-“আচ্ছা এই ফাইয়াজ বেটা গেলো কোথায়! ভেতরে আসার পর মাত্র একবার দেখলাম উপরে উঠতে। আর নামলো না। গেলো কোথায়! ”

হাঁটতে হাঁটতে হুর দেখলো দ্বিতীয় তালার সব রুমের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ হলেও একটা রুমের দরজা ভেতর থেকে চা’পা’নো।হুর মনে মনে আন্দাজ করলো এটাই হয়তো ফাইয়াজ এর রুম।

আস্তে করে দরজা খুলে ভেতরে উঁকি দিলো হুর। দেখলো রুম ফাঁকা। সে বিনা শব্দে রুমে প্রবেশ করে বুঝতে পারলো এটা ফাইয়াজ এর রুম। বিশাল দেয়াল জুড়ে ফাইয়াজ এর অনেক ছবি সুন্দর করে ঝোলানো। ওয়াশরুম থেকে পানি পড়ার শব্দ আসছে।

-“ওহ! তারমানে মিস্টার শাওয়ার নিতে গেছেন। আপনাকে তো একটা পানি’শমেন্ট দেয়া দরকার মিস্টার ফাইয়াজ। আমাকে অ’প’মান করা, ফেলে দিতে চাওয়ার জন্য একটা ছোটোখাটো শা’স্তি তো বান্তা হ্যা! কাজে লেগে পর হুর… ”

হুরের নজর প্রথমে ড্রেসিং টেবিল এর উপর পড়লো। কিন্তু কাংক্ষিত জিনিস নজরে পড়লো না। হুর দ্রুত cupboard খুলে তার প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজতে লাগলো। কিন্তু যা দরকার ছিলো তা না পেলেও এমন কিছু পেলো যা সে এক্সপেক্ট করে নি! তবে সে আপাতত তা নিয়ে মাথা ঘামাতে চাচ্ছে না। তাকে তার মিশ’ন কমপ্লিট করতে হবে। ফাইনালি কাংক্ষিত বস্তু খুঁজে পেলো হুর। ড্রেসিং টেবিলের নিচের একটা ড্রয়ার এ রাখা ছিলো।

নিজের কাজ সম্পূর্ণ করে বিজয়ের হাসি দিলো হুর। কিন্ত সেই হাসি বেশিক্ষন স্থায়ী হলো না হুরের। হুট করে ওয়াশরুম এর দরজা খোলার শব্দে লাফিয়ে উঠলো সে। কি করবে ভেবে না পেয়ে দ্রুত cupboard এর একপাশে লুকিয়ে পড়লো। এইদিক থেকে ওয়াশরুম দেখা যায় না। তারমানে তাকেও দেখা যাবে না। সে cupboard এর সাথে সেটে চোঁখ মুখ খি’চে দাঁড়িয়ে রইলো। কিন্তু দুই মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পরও যখন কোনো শব্দ পেলো না তখন অবাক হলো। ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে চিন্তা করতে লাগলো,

-“কি হলো ব্যাপারটা। কিছু হলো না কেনো!”

মুখের উপর কেউ ফুঁ দেয়ায় কেঁপে উঠলো হুর। চোঁখ বড়ো বড়ো করে সামনে তাকিয়ে দেখলো ফাইয়াজ তার দিকে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে আছে। ভ’য়ে চি’ল্লাতে যাওয়ার আগেই হুরের মুখ চে’পে ধরলো ফাইয়াজ। হুর ফাইয়াজ এর দিকে তাকিয়ে খেয়াল করলো ফাইয়াজ শুধু একটা ট্রাউজার পড়ে আছে। উজ্জ্বল শ্যামলা দেহে ফোঁটায় ফোঁটায় পানি জমে আছে। ভেজা চুল দিয়ে পানির ছোট ছোট কণা ঝরছে। স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে তাকে। ফাইয়াজ কে এভাবে দেখে চোঁখ নামিয়ে নিলো হুর।ফাইয়াজ হুরের দিকে আরও ঝুঁকে এলো। হুরের মুখ থেকে হাত সরিয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে লো ভয়েস এ বললো,

-“মিস রা’ক্ষ’সী আমার রুমে কি করতে এসেছিলে হুম! কি ভেবেছিলে আমার রুমে ঢুকে আমাকে তেলে পা স্লি’প করে ফেলার প্ল্যান করবে আর আমি বুঝবো না!”

-“দে… দেখুন আ.. আ আমিতো আমিতো …”

-“তুমি তো কি … বলো মিস রাক্ষ’সী। ”

হুর কি বলবে! তার তো গলা দিয়ে আওয়াজ ই বের হতে চাচ্ছে না। মনে হচ্ছে কথা গুলো গলায় এসে আটকে যাচ্ছে। ফাইয়াজ এর প্রতিটা নিঃশ্বাস তার কাঁধে, গলায় আ’ছ’ড়ে পড়ছে। জীবনে প্রথম কোনো পুরুষ এতটা কাছে আসায় তার মনে হচ্ছে দম ব’ন্ধ হয়ে যাবে।

ফাইয়াজ কিছুটা দূরে সরে হুরের দিকে তাকিয়ে দেখলো হুর চোঁখ মুখ চে’পে বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে। হুরের অবস্থা দেখে ঠোঁট কামড়ে হাসলো ফাইয়াজ।

হঠাৎ করে নিজেকে হালকা মনে হওয়ায় চোঁখ পিটপিট করে খুললো হুর। দেখলো ফাইয়াজ তার থেকে কিছুটা দূরত্বে দাঁড়িয়ে মিটমিটিয়ে হাসছে। অমায়িক লাগছে তাকে হাসি হাসি মুখে। এইসব চিন্তা মাথায় আসায় হুর মনে মনে নিজেকে দুই চারটা গা’লি দিলো।

-“কি খা’রা’প, শ’য়তা’ন, অস’ভ্য লোক ভাবা যায়। আমাকে ভ’য় দেখিয়ে এখন কি সুন্দর ভে’ট’কা’চ্ছে। যাই হোক এখন উ’ল্টো’পা’ল্টা কিছু বলা যাবে না। যেভাবেই হোক এখান থেকে আপাতত বের হতে হবে। ”
মনে মনে ভাবলো হুর।

-“কি মিস রা’ক্ষ’সী! কোন ভাবনায় বিভোর হয়ে আছো হুম! আমার রুমে কেনো এসেছিলে বললে না তো! ”

হুর চমৎকার একটা ভে’টকা’নি হাসি দিয়ে বললো,

-“আরেহ ভাইয়া হয়েছে কি আমি তো ভুল করে আপনার রুমে চলে এসেছিলাম। হৃদ আর লিয়া কোথায় যেনো চলে গেলো আর আমি ভুল করে এখানে চলে এসেছি হেহে …”

-“ওয়াশরুম এর সামনে তেল টাও ভুল করে ঢে’লেছো বুঝি! ”
এক ভ্রু উঁচু করে জিজ্ঞেস করলো ফাইয়াজ।

-“ওই আরকি হেহে। আচ্ছা ভাইয়া আমি নিচে যাই হ্যা! সবাই মনে হয় আমাকে খুঁজছে। ”

হুর যেই যাওয়ার জন্য দুই কদম বাড়ালো অমনি ফাইয়াজ তার হাত ধরে টা’ন দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসলো। হুট করে টা’ন দেয়ায় ভ’য়ে ফাইয়াজ এর গলা আঁকড়ে ধরলো হুর। ধীরে ধীরে চোঁখ খুলে ফাইয়াজ এর দিকে তাকিয়ে দেখলো সে কেমন অন্যরকম দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে। সেই দৃষ্টিতে যেনো এক সমুদ্র মুগ্ধতা বিরাজমান। অদ্ভুত নেশালো সেই দৃষ্টি গায়ে কা’প’ন ধরিয়ে দিচ্ছে হুরের। হুর দ্রুত সরে আসতে চাইলে তার কোমর চে’পে ধরে ফাইয়াজ। ভ’য়ানক ভাবে কেঁ’পে উঠে হুর।

-“এতো বড়ো অ’পরাধ করে শা’স্তি ছাড়াই পালিয়ে যাবে তা কি করে হয়! বলো তো কি শা’স্তি দেয়া যায় তোমাকে!”

-“প্লিজ ছেড়ে দিন। আর জীবনেও এমন কিছু করবো না। ”

হুর কে দেখে মনে হচ্ছে সে এখনই কেঁ’দে দিবে। ফাইয়াজ এর অনেক হাসি পাচ্ছে হুরের ফেস দেখে। কিন্তু মুখটা কে গম্ভীর করে রেখেছে। ফাইয়াজ আরও কিছু বলতে চাচ্ছিলো কিন্তু তার আগেই লিয়া আর হৃদ এর আওয়াজ শুনতে পেলো। তারা হুর কে ডাকছে। তারমানে তারা হুর কে খুঁজতে খুঁজতে এদিকেই আসছে। তাই ফাইয়াজ হুর কে ছেড়ে দিলো। হুর কে ছেড়ে দিতেই হুর বড়ো একটা নিঃশ্বাস ছাড়লো। এতক্ষন তার দম আ’টকে ছিলো। হুর দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নিলে ফাইয়াজ পিছন থেকে বললো,

-“ছেড়ে দিয়েছি তারমানে এই না যে পা’নিশমেন্ট পাবে না। তোমার শা’স্তি তুলে রাখলাম। সঠিক সময়ে সেই শা’স্তি দিবো। ”

হুর নিরাপদ দূরত্বে সরে বললো,

-“আপনার থ্রে’ট এ আমি ভয় পাই না হুঁহ। আপনি আমার কিছুই করতে পারবেন না। হনু’মান একটা। ”
কথাটা বলে আর এক সেকেন্ড ও দাঁড়ালো না হুর। দিলো এক দৌড়।

এতক্ষন হাসি আটকে রাখলেও এবার হেসে ফেললো ফাইয়াজ।

-“ভাগ্য ভালো ঐ সময় মীররে ম্যাডাম কে দেখে ফেলেছিলাম। তাই তো বুঝতে পারলাম নিশ্চই কোনো গড়ব’ড় করেছে আমার রুমে। তাই এভাবে লুকিয়ে আছে। আজকের মতো মান সম্মান বেঁচে গেলো। উফঃ, এই মেয়ের থেকে বেঁচে থাকতে হবে। কাল থেকে তো তাদের বাড়িতেই থাকবো। কি কি স’হ্য করতে হবে কি জানি!”

চলবে?

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here