#ভালোবাসি_প্রিয়
#পর্ব_৪
#সুলতানা_সিমা
একটা ক্লাস করেই কলেজ থেকে বেরিয়ে আসলো লুপা। আজ অরিন আসেনি অনেকবার কল দেওয়ার পরেও কল ধরেনি। লুপার কাছে সবকিছু ঠিক লাগছে না। মনটা ছটফট করছে অরিনের খবর জানতে। কাল তার বাসায় অরিনের যাওয়ার কথা অরিন যদি কাল না যায়? ভাবতেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো লুপার। খিদে লাগছে কিন্তু কিছু খেতেই মন চাচ্ছে না। একটা রিকশা নিয়ে অরিনদের বাসার সামনে চলে আসল লুপা। এটা অবশ্য অরিনদের বাসা না ওরা ভাড়া বাসায় থাকে। রিকশা থেকে নেমে লুপা বাসার দিকে একবার তাকালো। দুইতলার একটা বিল্ডিং। ভূতের বাড়ির মত লাগে লুপার কাছে। বাড়ির মালিক কি এতই কিপটা রং টং করলে কি হয়? রিকশা বাড়া দিয়ে গেটের ভিতর গেলো সে। কলিং বেল দিতেই দরজা খুলে দিল তানভি। মনে হয় দরজার কাছেই ছিল। লুপা বললো”
_তানভি অরিনকে একটু ডেকে দিবে প্লিজ।
_ভেতরে আস না আপু।
_হুম। “লুপা ভেতরে ঢুকলো। তানভি বললো অরিন তার রুমে আছে লুপা অরিনের রুমে গেলো। অরিন বসে বসে বই পড়ছিল লুপাকে দেখে অবাক হয়ে বললো”” “লুপা তুই? কলেজ যাসনি?” অরিনের মাথায় কাপড়ের পট্টি বাঁধা দেখে লুপা অরিনের জবাব না দিয়ে হন্তদন্ত হয়ে বললো।
_তোর মাথায় কি হইছে? এভাবে বেঁধে রাখছিস কেন? তুই ঠিক আছিস তো?
_মাথা ঘুরে পড়ে গেছিলাম কপালের দিকে একটু চিলে গেছে। আর কিছু না।
_মাথা ঘুরে পরিস কেমনে তুই?
_আচ্ছা বাদ দে। কলেজ যাসনি?
খাটের উপর বসতে বসতে লুপা বললো “গিয়েছিলাম তুই নাই তাই ভালো লাগছিল না চলে আইছি। এবার যা আমার জন্য এক কাপ গরম চা বানিয়ে নিয়ে আয়। সাথে বিস্কুটও আনবি।
_ওকে তুই বস আমি পাচঁ মিনিটের মধ্যে নিয়ে আসছি।
অরিন কিচেনে গেল চা বানাতে। সে কিচেনে ঢুকার সাথে সাথেই জহুরা বেগমও (অরিনের সৎ মা) ঢুকলেন কিচেনে। উনি অরিনকে বললেন ”
_একটু চিনি রইছে আজকে বাজার করতে পারব না। এই চিনি দিয়ে আজ চলতে হবে। এক গ্লাস পানি খাইয়ে বিদায় কর।
_যতটুকু চিনি এখন লাগাব পরে আমি বাজার থেকে এনে দিব। “বলতে বলতে চায়ের পাত্রে পানি নিয়ে চুলায় বসায় অরিন। জহুরা বেগম এসে চুলা বন্ধ করে পাত্র থেকে পানি ফেলে পাত্র টা আবার জায়গা মতো রেখে বললেন”
_গ্যাস কিনতেও টাকা লাগে চিনি কিনতেও টাকা লাগে। দুদিন পর পর সতিনদের এনে খাওয়াবা নিজে রোজগার করে খাওয়াও আমার টাকায় না। এক টাকা দিয়ে তো আর সংসারে হেল্প করছ না। শুধু ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে খাচ্ছ” বলে কিচেন থেকে বেরিয়ে গেলেন তিনি। যেতে যেতে বলে গেলেন। “”রান্না করতে বললে মাথা ব্যথা, কিচেনে আসা যায়না। এখন মাথা ব্যথা নাই? অন্যের ঘাড়ে চড়ে ঘোড়া দৌড়ালে মজা লাগে।”
অরিন কান্না করে দিল। লুপা যতদিন তার বাসায় আসে একদিনও কিছু খেতে দিতে পারেনা। লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে। লুপাকে গিয়ে কি বলবে? খালি হাতে গিয়ে কিভাবে সামনে দাঁড়াবে? অরিনের লজ্জা করছে লুপার সামনে যেতে। অনেকক্ষণ পরে চোখের পানিটা মুছে অরিন ধীর পায়ে রুমে আসলো। আসতেই লুপা বললো”
_কই রে চা কই? “” অরিন শুকনো হাসলো। আলমারি খুলে পাঁচ’শ টাকার নোট বের করে এসে বললো”
_আমার সাথে আয়।
_কই যাবো?
_আগে আয় তো।
_বলনা কই যাবো।
_ঘরে গ্যাস নাই ইয়ার চল।
“”” লুপাকে নিয়ে অরিন একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলো। তাদের দুই বছরের বন্ধুত্বে এই প্রথম অরিন লুপাকে কিছু খাওয়াবে। লুপা সব সময় দামি দামি জিনিস গুলাই তাকে খাইয়েছে যেগুলার অনেক নাম সে জানে ও না। পাঁচ’শ টাকা দিয়ে সে আর কি খাওয়াবে। অরিন লুপাকে বললো “”
_কি খাবি বল? “বলতে দেরি হলেও লুপার অর্ডার করতে দেরি হয়নি। মেয়েটার প্রচন্ড খিদে লেগেছে বুঝাই যাচ্ছে। লুপার খাওয়ার মাঝকানে কল আসল তার বাসা থেকে অরিনকে আসছি বলে সে অর্ধেক খাবার রেখে সে চলে গেল। এটা অবশ্য লুপার জন্য কিছুই না কিন্তু অরিনের জন্য অনেক কিছু। বিলের কাগজ হাতে নিয়ে অরিন চোখ কপালে তুলে বলে “”দুই হাজার টাকা?”” অরিন শুকনো একটা ঢোক গিলে ওয়েটারকে বললো “”
_ বিল এতো বেশি আসল কেন?
_বেশি কই মেম সঠিক বিল ওতো এসেছে।” অরিন চিন্তায় পরে গেল কি করবে সে। ওয়েটার তাকে চিনে কারণ লুপা তাকে নিয়ে রোজ এই রেস্টুরেন্টেই আসে। অরিন ওয়েটার কে বললো ”
_আসলে আমি তো পাঁচ’শ টাকা নিয়ে বের হইছি। আর টাকা নেই আমার কাছে। আজ পাঁঁচ’শ রাখুন আস্তে আস্তে আমি পরিশোধ করে দিব।
_না মেম আমাদের এখানে এমন কোনো নিয়ম নেই। আপনি টাকা পরিশোধ করে তারপরেই এখান থেকে বেরিয়ে যেতে পারবেন।
_আমি সত্যি দিয়ে দিব পরে। আমাকে তো আপনারা চিনেন।
_আমাদের এখানে চেনা ছিনির কোনো নিয়ম নাই মেম। আপনি টাকা দিয়ে তারপরেই এখান থেকে যাবেন।
_আমি একটু ওয়াসরুম থেকে আসতে পারি।
_সিয়র।
অরিন ওয়াসরুমে চলে গেলো। বেদিশার মতো পুরুষদের ওয়াসরুমে ঢুকে গেছে। কেউ একজন দাঁড়িয়ে হিসু করছে। অরিন নাক ছিটকে বেরিয়ে যেতে লাগলো। দু কদম গিয়ে থেমে গেল। এ কাকে দেখলো সে? পিছনে তাকিয়ে আয়নার দিকে তাকালো। দিহান চোখ বন্ধ মুখে শিস বাজাচ্ছে আর হিসু করছে। অরিন দু’য়েক না ভেবেই প্রশ্ন ছুড়ে মারলো “হাই কেমন আছেন?” আচমকা কার কথা কানে আসতেই ধচমছিয়ে উঠল দিহান। তারাতাড়ি চেইন লাগিয়ে পিছনে তাকিয়ে অরিনকে দেখে ভূত দেখার মতো চিৎকার দিয়ে উঠে”
_আহহহহহহ।
_আরে আস্তে বাইরে থেকে মানুষ চলে আসবে।
_এই বেটি আপনি এখানে করেন?
_what is বেটি?
_এখানে মেয়েদের আসা নিষেধ। আপনি এখানে এসেছেন কেন? (কপাল কুঁচকে একটু ভেবে) এক মিনিট আপনি ওই মেয়েটা না সেদিন আমাকে বলির পাটা বানিয়েছিলেন?
_ওমা মনে আছে? আবার মাত্র তিন চার দিনে ভুলেও গেলেন?
দিহান শার্টের হাত ফোল্ড করতে করতে অরিনের দিকে এগুতে এগুতে বললো”
_আজকে তোমাকে পেয়েছি মেয়ে আজকে তোমাকে আমি ছাড়ব না। বল তোমাকে কে পাঠিয়েছে এমন টা করার জন্য।
_ওয়াসরুমে ঢুকিয়ে জবরদস্তি করছেন। চিল্লিয়ে লোক জড়ো করব? সোস্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়ার খুব শখ তাইনা? ওকে ঠিক আছে চিল্লাচ্ছি আমি।” অরিন চিল্লাতে যাবে তার আগেই দিহান অরিনের মুখ চেপে ধরে। এই মেয়েটাকে দিয়ে তার একটুও বিশ্বাস নেই।
_এই মেয়ে কথায় কথায় হুকমি দাও কেন? আমি ধরলে তুমি নড়তে পারবা? অরিন মুখ ছাড়ানোর জন্য ছটফট করছে। দিহান বললো ” মুখ খুলে দিলে চিল্লাবা না তো?” অরিন মাথা নেড়ে না বুঝাল। দিহান ছেড়ে দিলো। অরিন বড় বড় কয়েকটি শ্বাস ছেড়ে হাপাতে হাপাতে বলল ”
_আপনি কি মানুষ? এভাবে কেউ কাউকে ধরে?
_জ্বি না সবাই তো আপনার মতো ধরে একেবারে বিয়ে করে ছাড়ে।
_একবার আপনি একবার তুমি অশিক্ষিত নাকি?
_ও হ্যালো আমার চৌদ্দ গুষ্ঠির মাঝে কেউ অশিক্ষিত না। আর হ্যা নিজের ড্রেসাপ দেখ। গাইয়্যা টাইপ লাগছে। আর মাথায় এটা কি বাঁধছো? কাপড়ের পট্টি? দেখে তো মনে বস্তিতে থাকো আর এসেছ দিহান চৌধুরীর শিক্ষা মাপতে?
কথা গুলায় অরিন অনেক আঘাত পেলো কিন্তু প্রকাশ করল না। স্বাভাবিক স্বরেই বলল
_আচ্ছা বাদ দিন। আমাকে দু হাজার টাকা দিন তো।
_কিইইইইইইই? তুমি এখন দেনমোহর দাবি করছো?
_ওওওওও আচ্ছা আমি তো ভুলেই গেছিলাম
ধন্যবাদ মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। আমি তো আপনার কাছে এমনিতেই টাকা পাই এটা আমার হক। তবে আপাতত আমাকে দুহাজার টাকা ধার দিলেই হবে।
_এই মেয়ে সত্যি করে বলত তুমি কে? কে তোমায় পাঠিয়েছে? তুমি কার দলে কাজ কর বল?
_দু’হাজার টাকা চেয়েছি বলে এত প্রশ্ন করছেন? আমি তো কাবিনের টাকা চাইনাই। পাবলিকের পিঠানি খেতে মন চায়? চিল্লিয়ে লোক জড়ো করে বলি আপনি আমায় জোর করে বিয়ে করে এখন বউয়ের অধিকার দিচ্ছেন না?
_ওরে কি স্বাংগাতিক মেয়ে। এই মেয়ে আমি তোমায় জোর করে বিয়ে করছি নাকি তুমি আমায় জোর করে বিয়ে করছো?
_দেখেন আপনি আমায় দু’হাজার টাকা দেন আমি বিদায় হই এখান থেকে।
_মামার বাড়ির আবদার? দেবনা টাকা। আগে বল তুমি কার দলে কাজ কর?
_ওয়েট বলছি।” বলেই অরিন দিহানের দিকে পা বাড়াল। দিহান শুকনো একটা ঢোক গিলে পিছাতে লাগলো। পিছাতে পিছাতে দেয়ালের সাথে পিঠ ঠেকে গেলো। অরিন গিয়ে দিহানের একদম পাশে দাঁড়াল। দিহান ভিতু স্বরে বলল “দে দে দেখ। আমার একটা জি জি জিএফ আছে। প্লিজ আমার ই ই ইজ্জতহানী করনা।” অরিন দিহানের ভিতু চোখে চোখ রেখে বাকা ঠোঁটে হাসছে। দিহানের পেন্টে হাত রাখতেই দিহান চোখ খিঁচে কাঁদো কাঁদো ফেইস বানিয়ে বিরবির করে কি সব বলছে আর ভয়ে কাচুমাচু হয়ে কাঁপছে। অরিন দিহানের পকেট থেকে ওয়ালেট টা বের করে সেখান থেকে দু’হাজার টাকা নিয়ে ওয়ালেট টা আবার পকেটে রেখে বেরিয়ে গেলো। অরিন যাওয়ার পরে দিহান কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে এক চোখ বন্ধ রেখে এক চোখ মেলে তাকালো। অরিন নাই। ভিতুর মত দাঁড়িয়ে গলা বারিয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। কোনো দিকে না দেখে দৌড়ে বেরিয়ে আসলো। ওয়াসরুমে একটা মেয়ের সাথে পাবলিক দেখলে শুধু সে জুতা পিঠা খেতনা তার পরিবারের সম্মানও নষ্ট হতো। অরিন রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে দিহান দৌড়ে আসলো। সে বেরুতে যাবে তখনই ওয়েটার তাকে আটকে ফেলে।
_স্যার টাকা দিয়ে যান।” দিহান তারাতাড়ি পকেট থেকে টাকা বের করে পাঁচ’শ টাকার জায়গায় একহাজার টাকা দিয়ে এক দৌড় মারলো। ওয়েটার পিছন থেকে ঢেকে বললো “স্যার আপনার বাকি টাকা নিয়ে যান।” দিহানের কানে গিয়ে সে কথা পৌচাচ্ছে না। সে অরিনের খুঁজে চলে গেলো। কিছু করতে পারুক আর না পারুক মেয়েটা কই যায় সেটা তো সে দেখতে পারবে। দিহান রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে কারো সাথে অনেক জোরে ধাক্কা খেলো। এতো জোরে যে সে পরেই গেলো। চোখ তুলে তাকিয়ে দেখলো তার বেস্টফ্রেন্ড নীল দাঁড়িয়ে আছে। তারাতাড়ি উঠে হন্তদন্ত হয়ে বললো ”
_দোস্ত এদিকে একটা মেয়েকে যেতে দেখেছিস?
_হ্যা দেখেছি তো। একটা না শতশত দেখছি। রাস্তায় একবার তাকা কত সুন্দর সুন্দর মেয়ে ইয়ার। না দেখে তাকা যায়?
_শালা সব সময় শুধু মেয়েদের দিকে তাকাস।
_আমি তো শুধু তাকাচ্ছি তুই তো দৌড়াচ্ছিস।
দিহান এদিক ওদিক তাকালো। কোথাও মেয়েটাকে দেখা যাচ্ছে না। দিহানের মন খারাপ হয়ে গেলো। নীল দিহানের পিঠ চাপড়ে বললো
_মাম্মা সিরিয়াস কেস মনে হচ্ছে ব্যাপার কি?
দিহান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো “” নারে কিছু না। তুই আসবি তো কাল?
_কোথায়?
_বললাম না লুপার বার্থডে?
_অবশ্যই যাবো। আগে বল তর লাইলীর কি খবর?
_ভালই আছে।
_ভাল তো থাকারই কথা। দুদিন পর পর ফোন করে বলল বাবু আমার টাকা লাগবে আর বাবুও টাকা পাঠিয়ে দিলো। তোদের এসব বুঝিনা ভাই। প্রেমটা টাকার উপর দাঁড়িয়ে আছে।
_ওর হক আছে আমার টাকার উপর। দুদিন পরে আমাদের বিয়ে হবে। টাকা চাইতেই পারে এতো খারাপ করে দেখছিস কেন?
_বিয়ে হলে ভালো। অন্য মেয়ের সাথে হলে তো তোমার অনেক টাকার লস মাম্মা।
_বিয়ে হবে অবশ্যই হবে। আমি তন্দ্রাকে ছাড়া কোনো মেয়ে বিয়েই করবো না।
#ভালোবাসি_প্রিয়
#পর্ব_৫
#সুলতানা_সিমা
সকাল নয়টায় শাওন আর নীল চলে আসলো দিহানদের বাসায়। কলিং বেল দিয়ে দুজন দাঁড়িয়ে আছে কেউ এসে দরজা খুলে দিচ্ছে না। নীল শাওন দুজন ব্লাক টি’শার্ট পড়েছে,ব্লাক জিন্স। সিক্স প্যাক ফর্সা বডিতে এমন ড্রেসাপে দুজনকে হিরো লাগছে।চিল্কি চুল গুলা উপরের দিকে তুলে খাড়া খাড়া করে রাখছে। হাতে ব্লাক ওয়াচ। দুজনের কাধে ব্যাগ। দেখে মনে হচ্ছে দুজন যমজ ভাই শুধু ফিগারটা আলাদা। দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে শাওন বিরক্ত হয়ে নীলকে বললো”
_হারামি দেখলি তো এখনো সবাই ঘুমে আছে। আমি আগেই তোকে বলেছিলাম দুপুরের দিকে যাই।
_তুই বিরক্ত হলে তুই চলে যা।
_সত্যিই কিন্তু চলে যাবো।
_ওকে যা গা বাগ।” শাওনকে সরিয়ে নীল এসে একের পর এক কলিং বেল দিতে লাগলো। শাওন বললো”
_নীল এটা কিন্তু ভদ্রতার মাঝে পরেনা। ওদের ডিস্ট্রাব হবেনা?
_come on ইয়ার সব কিছু ভাবলে চলে?
নীল আবরও কলিং বাজাতে লাগলো। লুপা এসে দরজা খুলে দিলো। কুকড়া চুলগুলা এলোমেলো। চোখে মোটা ফেমের চশমা। কালো রংয়ের একটা টপস পড়া সাদা রংয়ের একটা লেগিংস। কেমন যেন পিচ্চি পিচ্চি লাগছে। নীল লুপার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। সদ্য ঘুম থেকে উঠে আসা মেয়েটাকে দেখতে কিউটের ডিব্বা লাগছে। লুপা দাঁতে দাঁত চেপে বললো ”
_কলিং বেজ বাজাচ্ছেন কেন? এটার ভেতর ঢুকে গেলেই পারেন।
নীল বললো “কলিং বেলের ভেতর বুঝি ঢুকা যায়? আমার না জানা ছিলনা।
_সকাল সকাল মানুষের বাড়িতে আসেন লজ্জা করেনা?
_আমার না একটুও লজ্জা করে না। এই শাওন তোর করে?
ঘরের ভিতর উঁকিঝুঁকি করছিল শাওন নীলের ধাক্কায় হুস আসে তার। হতভম্ব হয়ে নীলের দিকে তাকায় সে। সত্যি বলতে এতক্ষণ এরা দু’জন কি কথা বলছিলো তার কান দিয়ে ঢুকেনি। ইতস্তত হয়ে লুপাকে বললো”
_হ্যাপি বার্থডে কিউটি। “” লুপার গরম চোখ শীতল হয়ে এলো। কপালের কুঁচকানো বিলিন হয়ে গেলো। মুখে লজ্জার আভা ফুটে উঠলো। ঠোঁটের কোনে হাসির রেখা টেনে বললো “thank you so much!” নীল বললো “শাওন তোর ওকে কোন দিক থেকে কিউট মনে হয় রে? তাকিয়ে দেখ ওর তো নাক বুচা।” লুপা নীলের দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চলে গেলো। নীল শাওন ভিতরে ঢুকলো। আসলে তারা যা ভাবছিলো তাই। সবাই এখনো ঘুমে আছে। দিহানের রুমে গেলো দু’জন। শাওন গিয়ে দিহানকে জাগালো দিহান উঠেনি। নীল বললো “এভাবে নয় মাম্মা ভালো ভাবে জাগানো লাগব।” বলেই ওয়াসরুম থেকে মগ ভর্তি পানি এনে দিহানের উপরে ঢেলে দিলো। দিহান লাফ দিয়ে উঠলো। নীল বললো ”
_কিরে বিছানায় হিশু করা এখনো ছাড়িস নি?
নীলের উপর একটা বালিশ ছুড়ে মেরে দিহান বললো”
_হারামি তোর কারনে এই দুই দুইবার আমি মেয়েটাকে ধরতে পারিনি।
_কোন মেয়েটা তোর ললিপপ?
_তোর খালাম্মা। “রাগে হনহন করে দিহান ওয়াসরুমে চলে গেলো।
নীল আর শাওন হাসতে লাগলো। দিহান নিশ্চয়ই কোনো মেয়েকে স্বপ্নে দেখেছে আর তারা এসে তার স্বপ্নে পানি ঢেলে দিলো। অনেকক্ষন পরে দিহান,শাওন ও নীলের ডাক আসে নিচে যাওয়ার জন্য। শাওন নিচে নামার সময় চারিদিকে চোখ বুলিয়ে কাউকে খুঁজল। মনটা তার তৃষ্ণার্ত কাউকে একটা পলক দেখার জন্য। নিচে নামতেই দিহানের বড় মা এগিয়ে এসে বললেন “” কি ব্যাপার তোমরা একা কেন তোমাদের আব্বু আম্মু কই?” শাওন বললো ” উনারা সময় পেলে আসবেন সন্ধ্যার দিকে।” লুপা তখন টেবিলে বসে ছিলো। নীল লুপাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বললো ” আন্টি আমরা যে এতো সকাল সকাল এসেছি আমার না লজ্জা করছে। আচ্ছা সকাল সকাল কোথাও গেলে আপনারও কি লজ্জা করে? ” লুপা নীলের দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকালো। নীল একবার আড়চোখে তাকিয়ে আর তাকায়নি।
নাস্তার টেবিলে বসলো তারা। রুহান দিয়া এসে বসলো লুপার দু পাশে। দিহান,নীল,শাওন তারা এক পাশে। দিহান বললো।” বাবা আর চাচ্চুরা কই?” লুপা মা টেবিলের উপর ডিম ভাজার প্লেট রাখতে রাখতে বললেন “সবাই তাদের কাজে চলে গেছে।” নীল চোখ তুলে তাকালো লুপার মায়ের দিকে। উনি সবুজ রংয়ের সেলুয়ার কামিজ পড়েছেন। বড় চুল গুলায় বেণি করা। চেহারায় বয়সের কোনো চাপ নেই। উনাকে দেখে লুপার মা বলে মনে হচ্ছেনা। মনে হচ্ছে লুপার বোন। উনি খুব ছটফটে স্বভাবের। নিজের প্রশংসা শুনতে উনার অনেক ভালো লাগে। শাওন ও নীলকে প্লেটে ডিম ভাজা তুলে দিয়ে চেয়ার টেনে তিনিও বসলেন। শাওন মুখে তুলতেই উনি প্রশ্ন ছুড়ে মারলেন “ডিম ভাজা কেমন হয়েছে? একদম পার্ফেক্ট তাইনা? আমি ভাজছি। ছোট ভাবি ভাজলে তো কেউ মুখে দিতে পারেনা। কি তিতা বাবা গ।” দিহানের মা রাগি লুকে তাকালেন। একদিন একটু লবন বেশি হয়েছে বলে প্রতিদিন এভাবে বলবে? শাওনের গলা দিয়ে খাবার নামছে না। মনে হচ্ছে সে ডিম ভাজা নয় ডিরেক্ট লবন খাচ্ছে। উনি নিজেই তিতা বানান আবার অন্যের দুষ দিচ্ছেন। নীল একটু মুখে নিয়ে তারও একই অবস্থা। চোখ বড় বড় করে দু’জন দুজনের দিকে তাকিয়ে কাঁদো কাঁদো ফেইস বানিয়ে লুপার মায়ের দিকে তাকালো। উনি বেশ আগ্রহ নিয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে আছেন। নীল এক গ্লাস পানি ঢেলে ঢকঢক করে পানিটা খেয়ে খাবার নিচে নামালো। তারপর লুপার আম্মুকে বললো “”
_ওয়াও এতো মজার ডিম ভাজা আমার চৌদ্দ গুষ্ঠির মধ্যে কেউ জীবনে খায়নাই। আমিও আমার বাপের জন্মে এমন ডিম ভাজা খাইনাই। এত্ত মজা হইছে যে এই মজাটা খেয়ে আমার সুইসাইড করতে ইচ্ছে করছে।
লুপার আম্মু অবাক হয়ে বললেন”ওমা সুইসাইড করতে ইচ্ছে করছে কেন?
_এই যে এমন খাবার আমার বাপের জন্মে খাইনাই। আজ খেলাম সেই খুশির টেলায় আরকি।” লুপার আম্মু খুশিতে গদগদ হয়ে সব ডিম গুলা তার প্লেটে তুলে দিলেন। নীল এবার কেঁদেই দিবে এমন একটা অবস্থা। দিহানের আম্মু এসে নীলের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন “লজ্জার কিছু নেই বাবা তোমার ভালো লেগেছে খাও”। নীল বললো ” না আন্টি আসলে আমার পেট ভরে গেছে।” দিহানের বড় মা এসে বললেন “ওই ছেলে চুপচাপ খাও। মাত্রই তো খেতে বসলা এখন পেট ভরলো কেমনে?” নীল বললো “আসলে ডক্টর আমাকে ডিম খেতে নিষেধ করেছে।” লুপা বললো “নীল ভাইয়া একদিন খেলে কিচ্ছু হবে না খেয়ে নিন।” লুপার মা মুখ মলিন করে বললেন “ও বুঝেছি মজা হয়নি তাইনা?” নীল এবার মহা বিপদে পড়লো। একটু পরোটা ছিড়ে মুখে নিলো। সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে তাই একটু ডিম ভাজাও নিলো। নীল গিলতে পারছে না বার বার কাঁদো কাঁদো ফেইস বানিয়ে শাওনের দিকে তাকাচ্ছে। নীলের এমন কান্ডে দিহান বুঝে গেলো ব্যাপারটা কি।তাই সে লুপার আম্মুকে বললো” ছোট আম্মু তুমি এতো কষ্ট করে বানালা তুমি খাবানা?” পুরো একটা ডিম ভাজা হাতে নিয়ে বললো “এই নাও হা কর।” বলেই উনার মুখে ডিম ভাজা ঢুকিয়ে দিলো। উনি মুখে নিয়েই মারবেলের মতো চোখ বানিয়ে মূর্তির মতো বসে থাকলেন। রুহান বললো “আম্মু সব পার্ফেক্ট তো?” উনি মুখ চেপে উঠে দৌড় মারলেন। দিহানের মা ও তার বড় মা কিছুই বুঝলেন না। লুপা হাসতে হাসতে বললো “এখন আব্বু থাকলে আম্মুকে ইচ্ছামত পঁচাতো।আমি তো আম্মু বানিয়েছে শুনেই আর খাইনি। একমাত্র বড় আম্মু ছাড়া কেউ ভালো ভাবে ডিম ভাজতে পারেনা।
নাস্তা করে তিনজন বাইরে বেরিয়ে গেলো। আর বিকালে আসলো বাসায়। ততক্ষণে পুরো বাসা ভরে গেছে মেহমানে। তিন বন্ধু মিলে বসলো বাগানে। দিহান চোখ বন্ধ করে দুলনায় বসে আছে। শাওন একটা বল নিয়ে পিলারে মারছে আবার বেক করছে তো আবার মারছে। আর নীল গান গাইছে। দিহান একবার বিরক্ত হয়ে বলল “তোর গানের থেকে কুত্তার ঘেউ ঘেউ শুনতে ভালো লাগে।” নীল এসব কথা কানে নিলনা সে তার মত গান করেই যাচ্ছে।
চুমকি চলেছে একা পথে …..দিহান তর বউ আসছে।
গানের মাঝকানে নীলের এমন কথায় দিহান ধড়ফড়িয়ে উঠে কই কই বলে চারিদিকে তাকায়। যেন সে আসামি আর তাকে তাড়া করতে পুলিশ এসেছে। গেটের দিকে তাকিয়ে দেখলো তন্দ্রা হেলেদুলে হেটে আসছে। পিংক কালারের একটা গাউন পড়ছে এটা কাল দিহান নিজেই কিনে দিছে। তাদের বাসার সব মেয়েরা পিংক গাউন কিনেছে তাই সেও তন্দ্রাকে দিলো। ৮০কেজি মেকাপ মুখে। তন্দ্রাকে দেখে দিহান একটা সস্থির নিশ্বাস নেয়। নীলের দিকে রাগি লুকে তাকিয়ে বললো।”
_এটা কি নীল? সিরিয়াস বিষয় নিয়ে মজা করার মানে কি?
_আমি তো সব সময় এভাবে বলি আজ নতুন নাকি?
_আগে বলতি এখন আর বলবি না নিষেধ করে দিলাম।
তন্দ্রা এসে দাঁড়ালো তাদের সামনে। ন্যাকামি করে বললো “” বেবি তুমি ওকে বকছো কেন?
_না ভাবি বকছে না। আর বকলেও তোমার এমন কথা শুনে কলিজা ঠান্ডা হয়ে গেছে।
নীলের কথায় তন্দ্রা হেসে বললো ” নীল ভাইয়া তুমিও না অনেক দুষ্টু।
_হ্যাঁ ভাবি আর তুমি একদম আমার কিটক্যাট ভাতিজির মতো ও না একদম তোমার মতো করে নাকে নাকে কথা বলে।
_নাকে নাকে কথা কেমনে বলে?
_এই যে বড়রা যখন বাচ্চাদের মতো কথা বলতে চায় তখন যেভাবে কথার স্বর হয়ে যায় আরকি।
_মানে?””” দিহান নীলকে আর কিছু বলতে না দিয়ে বললো ওই যা তো তোরা। নীল শাওন চলে গেলো। তন্দ্রা দিহানের গলা জড়িয়ে ধরলো। দিহান নিজেকে ছাড়িয়ে বললো ”
_তন্দ্রা সব সময় ঘেঁষে লেপ্টে থাকতে চাও কেন এগুলা আমার পছন্দ না।
_হুহ্। নিরামিষ। মাঝে মাঝে আমার কি মনে হয় জানো? আমার প্রতি তোমার কোনো ফিলিংস ই নাই। ফিলিংস থাকলে এভাবে আমার ছোঁয়াতে বিরক্ত হতানা।
_চুপ কর। অলওয়েজ ঝগড়া করনা। ফিলিংস না থাকলে কি বিয়ে করতে চাইতাম?
_ ওকে বাদ দাও। এখন আস আমার সাথে আমার একটা কাজ আছে।
_কি কাজ? আর কই যাবো?
_বাবু আমি তো হোস্টেলে থাকি জানই তো। আমি বাসায় যেতে পারিনি। দেখ গায়ে কোনো অলংকার নেই। এভাবে ফকিন্নি বেশে অনুষ্ঠানে থাকব কেমনে? সবাই কি বলবে?
_গলায় এতো বড় একটা হার, হাতে এতো গুলা চুড়ি, কানে ইয়া মোটা ঝুমকা তারপরও বলছো কোনো অলংকার নেই?
_এগুলা তো নরমাল সব সময় পরি বাবু। পার্টিতেও এগুলা পরবো? তুমি কিপ্টামি করছো?
_ওকে আমি তোমাকে টাকা দিচ্ছি তুমি কিনে নিয়ে আস।
_তুমি যাবা না?
_দেখ বাসায় অনেক কাজ আছে বাবাও বাসায়। এখন কোথাও যেতে পারবো না। আমি টাকা বিকাশ করছি তুমি চলে যাও। “তন্দ্রা চলে গেলো। দিহান যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো। পিছন ঘুরতেই দেখলো দিশা আর ইশি কমরে হাত বেঁধে রাগি লুকে তাকিয়ে আছে। দিহান পাশ কেটে চলে যেতে চাইলে দুজন পথ আটকে ফেলে।
_কি পিলারের মতো দুইটা সামনে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?
_কাল বলেছিলাম আমায় শপিংয়ের জন্য কিছু টাকা দে। কি বলছিলি? হাতে টাকা নাই। আজ বলতে না বলতেই টাকা বেরিয়ে গেলো? (দিশা)
_টাকা আমাদের দেবে কেমনে রে? ওর তো একটা সংসার আছে বউ চালাতে হয়। আমাদের টাকা দিলে ওটারে চালাবে কেমনে? (ইশি)
_ওই তুই বউ বললি কেন? তন্দ্রা কি বউয়ের মতো স্বাংগাতিক মেয়ে?
_দেখেছিস দিশা আমি বলেছিলাম না এই মেয়েটা আমাদের দিলদারকে পাগল বানিয়ে দেবে? শুন কিসব বলছে। অলরেডি ও পাগল হয়ে গেছে।
“দিহান একবার একটা মেয়েকে পঠাতে চেয়ে ছিলো মেয়েটা দিহানের নাম ভুলে যেতো তাই দিহান না বলে দিলদার বলে ডাকতো। সেই থেকে ইশি দিশা তাকে দিলদার বলে ক্ষেপায়। দিহান দিলদার শুনেই তেজি গলায় বললো”
_ওই কংকাল,কুকুরের হাড্ডি আমারে আরেকবার দিলদার বলে ডাকবি তাহলে তর নাক কেটে কানে ঝুলিয়ে দিবো।
_ইশি চুপ কর তুই আমার কুত্তার মতো পেচা গন্ডার ভাইটাকে মোটেও দিলদার বলবি না। একবার তাকিয়ে দেখ ওরে একদম পাশের বাসার আন্টির বিড়ালের মতো লাগছে। আর তুই কিনা দিলদার বলছিস” দিহান দিশা ও ইশির দিকে তেড়ে আসলো। ওরা দুজন দু দিকে দৌড় দিলো। দিহান রুহানকে ডাক দিয়ে বললো “রুহান দিশাকে ধর” রুহান দিলো দিশার পিছনে দৌড়। দিহান দিলো ইশির পিছনে দৌড়। ইশি দৌড়ে আসলো তার মায়ের কাছে। উনি জিজ্ঞেস করলেন “কিরে কি হইছে দৌড়াস কেন?” ইশি শুধু দিলদার বললো বাকিটা বলতে পারলো না দিহান দৌড়ে কাছে চলে আইছে দেখে দৌড় মারলো। দিহান বললো “বড়মা ওরে ধর।” ইশি ততক্ষণে দূর চলে গেছে দিহানও পিছু নিল। দিহানের বড় মা ইশিকে উদ্দেশ্য করে চিল্লিয়ে বললেন “ওই দিলদার কি বললি বুঝিনি।” কথাটা এমন শুনালো যেন দিহান কি বলছে তিনি বুঝেন নি। দিহান দৌড় তামিয়ে তার বড়মার দিকে রাগি লুকে তাকিয়ে গজগজ করতে লাগলো। তিনি আবারও বোকার মতো প্রশ্ন করে বসলেন “কিরে দিলদার কি হইছে বুঝিনি?” রাগে গিজগিজ করতে করতে দিহান উপরে চলে গেলো। একবার ইশিকে হাতে পেয়ে যাক ওকে বুঝাবে মজা।
সন্ধ্যার দিকে সবাই রেডি হতে লাগলো। তখনই কলিং বেল বেজে উঠল। কেউ নিজের কাজ, গল্প, সাজগোছ ছেড়ে উঠল না। দুবার কলিং বাজতেই দিহান গিয়ে দরজা খুলল। দরজা খুলেই দেখল অরিন দাঁড়িয়ে আছে। দুজন দুজনকে দেখে একসাথে আহহহহহ বলে চিৎকার দিয়ে উঠল।
চলবে….।
দিহানদের এসব ঝগড়া আপনার কাছে যদি ন্যাকামি মনে হয় তাহলে দয়া করে ইগনোর করবেন। আমরা সব কাজিনরা মিলে অলওয়েজ এমন ঝগড়া করি তাই এগুলা আমার কাছে নরমাল বিষয়।
চলবে…..।
গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি। আপনার একটা মন্তব্য আমার লেখার আগ্রহ জাগায়।