ভালোবাসি হয়নি বলা পর্ব -২০

#ভালোবাসি_হয়নি_হয়নি বলা
#লেখকঃmahin_al_islam
#পর্বঃ২০

নার্সের চিৎকার শুনে আরও কয়েকজন ডাক্তার শহ নার্স কেবিনে প্রবেশ করলো

সবাইকে কেবিনে প্রবেশ করে দীপাকে ওই অবস্থায় দেখে তাড়াহুড়ো করে সবাই দীপাকে একটা কেবিনে শিফট করালো

এবং দীপার দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলো

বেশ কিছুক্ষণ হয়ে গেলো তাও দিপার জ্ঞান ফিরতে চায় না

ডাক্তার এবং নার্স অবাক এটা কিভাবে সম্ভব

ডক্টর ঃ রোগী তো শরীর একদম দুর্বল এত দুর্বল যে ওর এখন কোন ধরনের মেডিসিন প্রয়োগ করা যাবে না

নার্স ঃ তাহলে তো খুব বিপদে আছে কখন যে নিঃশ্বাসটা বন্ধ হয়ে যায় বুঝতে পারতেছি না এখন কি করব স্যার

ডক্টর ঃ এখন আর আমাদের হাতে কিছু করার নেই এখন সব উপরওয়ালার হাতে যদি ওনার হায়াত থেকে থাকে তো উনি বেঁচে থাকবে আর যদি হায়াত না থেকে থাকে তাহলে আমাদের কিছু করার নেই উনি পরপারে পাড়ি জমাবেন

নার্স ঃ এই রোগীর ভাইয়া আমাদের এখানে ভর্তি আছেন অনেকদিন যাবৎ আর তার মাও এই হসপিটালে আছে আমি কি তাদের এই খবরটা এখন দিব নাকি না

ডক্টর ; এই কাজ ভুলেও করবেন না তাহলে উনারা অনেক উত্তেজিত হয়ে যাবে এবং উনার ভাইয়ের অনেক বড় একটা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আর আমি যতোটুকু জানি ওনার মা হাটের রোগীর এই খবর যদি উনি শুনে হয়তো ওনার হার্ট এটাক করতে পারে তাই আমাদের এখন কাউকে কিছু বলা উচিত হবে না সব উপরওয়ালার হাতে এখন সবাই আল্লাহর কাছে হাত তুলে দোয়া করেন মেয়েটার জন্য

ডাক্তার এবং নার্স সবাই নফল নামাজ পড়ে দীপার জন্য দোয়া করল যাতে যেন মেয়েটা আবার সুস্থ মত পৃথিবীতে ফিরে আসে

এইদিকে,

১ম মেয়েঃ এই তোর এখন থাম আর মারিস না একদম মেরে ফেললে আমাদের বিপদে পড়তে হবে পুলিশ কেস হতে পারে তখন সামলাতে অনেক জটিল হয়ে যাবে এমনিতেই অনেক পিটায়ছিস আর এখন ওর অবস্থা মর্মান্তিক যেকোনো সময় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যেতে পারে তাই আমাদের আর এখানে থাকা উচিত হবে না চল সবাই

2য়: তুই একদম ঠিক কথা বলতেছিস পুলিশকে কেস হয় গেলে একটু ঝামেলা হবে তখন আবার
বাসায় অনেক ঝামেলা হবে আব্বু-আম্মু অনেক বকাবকি করবে তার থেকে একে এই অবস্থায় ফেলে যাই যখন মারা যায় যাবে

ওখান থেকে সবাই চলে গেল মাহিন মাঝ রাস্তায় পড়ে আছে আর ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে

(কখন যে নিশ্বাস থেমে যায় আর মাহিন পরপারে চলে যায় সেটা কেউ নিশ্চিত না এমনকি আমিও)

মাহিন অনেক চেষ্টা করতেছে চোখদুটো খোলা রাখার জন্য কিন্তু পারতাছে না যতই চেষ্টা করতেছে চোখ দুটো খোলা রাখার জন্য

চোখ দুটো ততই তার সাথে বেইমানি করতেছে চোখদুটো আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে আসতেছে

মাহিন আবার চেষ্টা করতেছে চোখ খোলা রাখার জন্য কিন্তু পারতেছেনা চোখ দুটো আপনা আপনি বন্ধ হয়ে আসতেছে

মাহিনের চোখের সামনে শুধু ভেসে উঠতেছে
দীপার সেই কান্না ভরা মুখখানি যে মুখে রয়েছে অনেক মায়া

চোখে রয়েছে গভীর অতল মায়ার সাগর
যে চোখ দুটোর মায়ায় পরে মা হিন্দি পার প্রেমে পড়েছিল আজকে সেই চোখ দুটোয় মাহিনের জন্য শুধু ঘৃণায় দেখতে পেয়েছিল

মাহিন ভুলেই গিয়েছে তার শরীর থেকে রক্ত ঝরে যাচ্ছে আর মাহিনের রক্ত দিয়ে পুরো রাস্তাটা লাল হয়ে যাচ্ছে

মাহিনের চারদিকে রাস্তাটা লাল হয়ে আছে মাহিনের রক্তে আর সেই রক্তের উপর শুয়ে আছে মাহিনের অস্তিত্ব,, অস্তিত্ব আর কিছুক্ষণ থাকবেন তারপর বিলীন হয়ে যাবে সবার মাঝে থেকে

মাহির অনেক চেষ্টা করতেছে তার বেইমান চোখ দুটোকে খুলে এই পৃথিবীটা দেখার জন্য কিন্তু তার বেইমান চোখদুটো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কালো মেঘে ছেয়ে যাচ্ছে তার হৃদয়

( একদিন মাটির ভিতরে হবে ঘর রে মন আমার কেন বান্ধ দালান ঘর)

মাহিন আধো আধো চোখ দিয়ে দেখতে পেল একটা গাড়ি তার দিকে এগিয়ে আসতেছে

মাহিন চোখ দুটো ভালোভাবে খুলে দেখতে চাইল গাড়ীটা কার হবে কিন্তু পারল না মাহিনের চোখদুটো বন্ধ হয়ে গেল

মাহিনের চোখদুটো বন্ধ হয়ে গেল নিঃশ্বাসটাও থেমে গেল

,,
রাকিবঃ এই ড্রাইভার গাড়ি থামা,, সামনে দেখত ওটা কি পড়ে আছে মানুষ না

ড্রাইভার ঃ জি স্যার মানুষ এত মনে হচ্ছে কিন্তু এরকম ভাবে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছে কি জন্য

রাকিবঃ আরে গাধা কোথাকার হয়তো কেউ ওকে পিটিয়েছে আর রাস্তায় ফেলে দিয়ে গেছে চল তো দেখি এখনো বেঁচে আছে কিনা

তারপর রাকিব আর ড্রাইভাররা দুজনে মিলে মাহিনের কাছে চলে গেল

ড্রাইভার ঃ স্যার লোকটার সামান্য পরিমাণ পালস রেট চলতেছে

রাকিবঃ বলিস কি তারা তারি নে লোকটাকে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে

ড্রাইভার : যদি পড়ে পুলিশের খপ্পরে পড়ে যায় বলা তো যায় না বাংলাদেশের পুলিশ

রাকিবঃ আরে চুপ থাক একটা লোক মরে যাচ্ছে আর অনি আছে পুলিশকে নিয়ে

রাকিব এবং ড্রাইভার দুজনে মাহিনকে ধরাধরি করে গাড়িতে তুলে নিল এবং হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা দিল

ড্রাইভার ঃ স্যার আপনি কি একটা জিনিস লক্ষ্য করেছেন মানুষ এত নিষ্ঠুর হতে পারে একটা মানুষকে কেমনে এইভাবে পিটাইতে পারে তাদের মনে কি একটুও দয়া মায়া নাই আর মানুষটাকে দেখতেছেন তরতাজা একটা মানুষ মুখে এখনো হাসির রেখা ফুটে আছে

রাকিবঃ আরে পাগল এই দুনিয়াটা আর আগের মত নেই এখন মানুষ টাকার জন্য যে কোন পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে,, আরে এখন টাকার জন্য ছেলে মাকে খুন করতেছে মা ছেলেকে খুন করতেছে বাবা ছেলেকে খুন করতেছে ছেলে বাবাকে খুন করতেছে,, এখন থেকে শুনে সাবধানে তাড়াতাড়ি গাড়িটা হসপিটালে নিয়ে যা

তারপর ড্রাইভার অতি সাবধানে সাথে গাড়িটা অনেক দ্রুত চালিয়ে হসপিটালে নিয়ে গেল

হসপিটালে গিয়ে রাকিব কয়েকজন নার্সকে ডেকে মাহিনকে হসপিটাল একটা কেবিনে মাহিনকে শিফট করালো

নার্সরা মাহিনের এই অবস্থা দেখে অনেকটা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তারা কখনো এরকম পেশেন্ট দেখেনি

একজন নার্স ওই হসপিটালের সবথেকে অভিজ্ঞ ডাক্তার কে খুব তাড়াতাড়ি ডেকে আনলেন

তারপর ডক্টর মাহিনকে দেখে অনেকটা আপসেট হয়ে পড়লেন তিনি ভাবতে পারতেছিনা আনছে পেশেন্টকে বাচাতে পারবে কিনা

ডাক্তার ঃ নার্স রোগীকে তাড়াতাড়ি আই সি ইউ তে নিয়ে যাও খুব তাড়াতাড়ি অপারেশন করাতে হবে নয়তো উনাকে আর বাঁচানো সম্ভব হবে না বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা আমাদের যতটুকু কর্তব্য আমি করে যাব

তারপর খুব দ্রুত মাহিনকে আইসিইউতে নেওয়া হলো

কেউ সিওর দিতে পারতেছে না যে মাহিনকে বাঁচাতে পারবে

সবাই বলতেছে তাদের নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবে,, বাকিটা মহান আল্লাহতালার হাতে তিনি যদি তার হায়াত রেখে থাকে তো বেঁচে থাকবে নয়তো পরলোকে গমন করবে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে

রাকিব এবং ড্রাইভার অনেক চিন্তিত হয়ে আইসিইউ এর বাহিরে অপেক্ষা করতাছে হাটাহাটি করতেছি টেনশন কমানোর জন্য কিন্তু টেনশন কমতাছে না কারণ তাদের চোখ সামনে জলজ্যান্ত একটা মানুষ লাশ হয়ে আসবে সেটা কখনোই মেনে নিতে পারতেছে না রাকিব চৌধুরী

ড্রাইভার ঃ স্যার আমার এই প্রথম অন্য কারো জন্য চোখ থেকে পানি পড়তেছে

রাকিবঃ জানিস আমি কখনো এরকম তার মুখোমুখি হই নাই আজকে প্রথম হলাম আমার ইচ্ছা করতেছে আমি অনেক জোরে জোরে কান্না করে নিজের মনটাকে হালকা করি কিন্তু সেটাও পারতেছি না কারণ পুরুষ মানুষকে কান্না করতে নেই

তারপর ড্রাইভার আর রাকিব চৌধুরী অনেক কথাবাত্রা বললেন এবং দুজনের চোখেই পানি টপ টপ টপ টপ করে পড়তেছে গাল বেয়ে

এইদিকে,,,

দীপা বেডে শুয়ে আছে তার হাতে পাঁচটা স্যালাইন লাগানো হয়েছে

পেনশন নার্স দীপার কেবিনে বসে আছে কখন কি হয় সেটা ডাক্তারকে জানানোর জন্য নার্সরা অনেক কান্না করেছে কারণ এই মেয়েটা অনেক কষ্ট করেছে নার্সরা সেটা ভালো করেই জানে

কারণ যেদিন এই মেয়েটা তার ভাইকে এই হসপিটালে নিয়ে এসেছিল সেদিন থেকেই নার্স রা দিপা কে চেনে

১ম নার্সঃ জানো আমি এই প্রথম কোন পেশেন্ট এর জন্য কান্না করতেছি কিন্তু কেন কান্না করতেছি সেটা নিজেও জানিনা

২য় নার্সঃ একটা মেয়ে এতটা দুর্বল কিভাবে হতে পারে আমি এটাই চিন্তা করতেছি তখন থেকে

৩য় নার্সঃ আমি ঐ কথাটা ভাবতেছি একটা মেয়ে এতটা দুর্বল কিভাবে হতে পারে আমার জানা মতে হয়তো মেয়েটা অনেক টেনশন করে খাওয়া-দাওয়ার কোন ঠিক নেই আর মানসিক চাপ আছে যার ফলে এরকম টা হয়েছে না হলে কখনো এরকমটা হতো না

নার্স রা অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলাবলি করতে লাগল এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করতে লাগল যথেষ্ট মেয়েটা সুস্থভাবে ফিরে আসে এবং তার পরিবারের সাথে হাসিখুশি মুখের বাসায় ফিরে যেতে পারে

(আপনারা সবাই জানতে চেয়েছিলেন যে কি এমন কথা শুনে ছিল যার কারণে দীপা মাহীনের সাথে এইরকম মিস বিহেভ করল

ওকে তাহলে তাই এই পর্বে শুনে নিন আমি এই পর্বে দিতে চাইছিলাম কিন্তু আপনারা হয়তো একটু)

ডক্টর ঃ আরে মাহিন বাবা যে আসো আসো

মাহিনঃ আচ্ছালামু আলাইকুম আঙ্কেল কেমন আছেন

ডক্টর ঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি তুমি কেমন আছো বাবা

মাহিন: আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি

ডক্টর : হ্যাঁ সেটা তোমার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে তুমি অনেক হাসি খুশি আছো

মাহিনঃ আঙ্কেল আপনার কাছে যে জন্য আসা

ডক্টর : হ্যাঁ বাবা বলো কিভাবে তোমাকে সাহায্য করতে পারি

মাহিনঃ আসলে আমি দীপাকে অনেক ভালোবাসি অনেক আমার নিজের থেকেও বেশি আর আমাদের বিয়ের আগে হয়নি বেশ কিছু দিন আগে হয়েছে আমি আপনাকে মিথ্যা বলেছিলাম

ডক্টর : কিন্তু কেন তুমি কি আগে থেকে মেয়েটাকে ভালবাসতে

মাহিনঃ আরে আঙ্কেল না হঠাৎ করে পরিচয় হঠাৎ করে প্রেমে পড়ে যাওয়া হঠাৎ করে বিয়ে

ডক্টর : তোমরা এখনকার ছেলে মেয়ে কখন কি করে বসো আমাদের চিন্তাধারার বাহিরে ,,, এমন কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নিও না যাতে দু’জনকেই সারা জীবন কান্না করতে হয়

মাহিনঃ আঙ্কেল দোয়া করবেন এরকম যেন কোনো ভুল সিদ্ধান্ত আমি না নেই,,, আমি দীপাকে আমার নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি আমি চাই আমার ভালোবাসা দিয়ে ওকে আগলে রাখতে

ডক্টর ঃ তাহলে কি তুমি মেয়েটাকে আগে দয়াকরে টাকা দিয়েছিলে

মাহিনঃ জ্বী আঙ্কেল তাকে দয়া করে ছিলাম আমি

আর দীপা সেই সময়ে এসে দরজার সামনে উপস্থিত হয় যখন ডক্টর কথাটা বলেছিল আর মাহিন কথাটার উত্তর দিয়েছিল

যার ফলে দিপা মাহিন কে ভুল বুঝতে শুরু করে আর পরে ঝগড়াটা তো আপনারা ভালো করেই জানেন
,,,,,,,

হঠাৎ দীপার কেবিন থেকে একজন নার্স বেরিয়ে এসে ডক্টর ডক্টর বলে চিৎকার করতে লাগল

( আসলে আমি গত পর্বের জন্য সরি,,, ফোনে চার্জ ছিল না তাই মনটাও ভালো ছিলনা কিন্তু আপনাদের তো গল্প দিতেই হবে তাই ছোট করে লিখছি গল্পটা মনের মত করে লিখতে পারিনি,,, বাকি যে কয়েকটা পাঠ আছে সেগুলো আপনাদের মনের মত করেই লেখবো কিন্তু এই সিজনে ওদের দুজনের মিল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না যদি মীল দিতে যাই তো গল্পটা 50 প্লাস পর্ব হবে তাই আমি চাচ্ছি গল্পটা সিজন 2 নিয়ে আসতে,,, সিজন 2 ওদের দুজনের আবার বিয়ে হবে এবং সেটা পরিবারের সম্মতিতে আর বিয়েতে অনেক মজার মজার কাহিনী তো হবেই
তাই আপনাদের মতামত কামনা করতেছি আশা করি সবাই আমার পক্ষে থাকবে এবং সিজন 2 নিয়ে আসার অনুমতি দিবে)

(বানান ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন প্লিজ)

চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here