ভালোবাসি হয়নি বলা পর্ব -২৮

#ভালোবাসি_হয়নি_বলা
#লেখকঃmahin_al_islam
#পর্বঃ২৮

রাগের বশে মনে হচ্ছে মাথাটা ফেটে যাবে

উফফফ আর কিছু ভাবতে পারতেছিনা এখন আবার মাথাব্যথা শুরু করে দিল

মাথাটা দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে বিছানার উপর বসে পড়ল

কত বড় সাহস আমাকে না বলে বাসায় চলে যায়

এইদিকে,,,

যখন আমার ঘুম ভাঙলো দেখলাম যে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেছে এতক্ষণ ঘুমিয়েছিলাম ভাবতে পারতেছিনা

আর আমি এতক্ষণ ঘুমিয়েছিলাম আমাকে কেউ ডাক পর্যন্ত দিল না

ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে চলে গেলাম ওয়াশরুমে গিয়ে গোসল করে

বেরিয়ে আসলাম জামা কাপড় চেঞ্জ করে

নিচে গেলাম নিচে গিয়ে দেখি ভাইয়া বসে আছে আর আম্মু ভাইয়ের সাথে গল্প করতেছে

আম্মু আমাকে নিচে আসতে দেখে ভাইয়ার ওখান থেকে উঠে আম্মুর রুমে চলে গেল আমার দিকে একবার ফিরেও তাকাল না

আমিঃ কি ভাইয়া এখন কেমন লাগতেছে

মিলন: আগের থেকে অনেক ভালো মনে হচ্ছে দুদিন পর আমি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাব

আমিঃ তাহলে এখন একটু হাঁটাচলা কম করে করবি দুদিন পর যেহেতু একদম ঠিক হয়ে যাবি এখন যদি একটু হাঁটাচলা বেশি করিস তাহলে ওই জায়গাটায় আঘাত লাগবে আর আঘাত লাগলে ওই জায়গাটা একটু ইনফেকশন হবে তাই বলতেছি কি এখন একটু হাঁটাচলা কম করে করবি শুয়ে থাকবি দুদিন পর মনের মতো হাঁটতে পারবি

মিলনঃ আপু তুই আমাকে সত্যি করে বলতো তুই গতকাল রাতে আর গতকাল সারাদিন কোথায় ছিলি??

আমি কি করব ভাবতে পারতেছিনা নিশ্চুপ হয়ে ভাইয়া মুখের দিকে তাকিয়ে আছি আর মুখে ভয়ের ছাপ বুঝতে পারতেছি না কেন বলতে পারতেছি না আমি। কেন আমার মধ্যে সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে

মিলনঃ কি হল আপু, বলছো না কেন তুমি কালকে কোথায় ছিলে সারাদিন বাসায় ছিলা না সারারাত বাসায় ছিল না একবারের জন্য ফোন দাও নাই কিন্তু কেন আপু?? আমাদের কথা কি তোমার মনে পড়ে না??

আমিঃ ভাইয়া কয়েকদিন অপেক্ষা কর সব জানতে পারবি এখন বলার মত কোন মানে খুজে পাচ্ছিনা আমি

আমি আর ভাইয়ার ওখানে বসে থাকলাম না ওখান থেকে উঠে আবার রুমে চলে আসলাম

রুমে এসে ফোনটা হাতে নিলাম

উনার ফোনটা হারিয়ে গেছে ওনার সাথে যোগাযোগ করতে পারব না এখন ছুটকির নাম্বারটাও নাওয়া হয়নি,,, কথা বলবো কিভাবে ওখানে!!!!

টেনশনে মাথা ফেটে যাচ্ছে পুরা কি হচ্ছে আমার সাথে? কেন হচ্ছে আমার সাথে এসব? আমি কি এমন অপরাধ করেছিলাম? যার শাস্তি আমি এখন পাইতেসি না পারতেছি বাসায় জানাতে আর না পারতেছি সব কিছু মুখ বুজে সহ্য করতে:’ কেন হচ্ছে আমার সাথে এরকম আমি আর কিছু ভাবতে পারতেছিনা কান্না করে দিলাম কি হচ্ছে আমার সাথে এসব কান্না করতেছি আর ভাবতেছি কেন আমার সাথে এসব হচ্ছে? কি এমন অপরাধ করেছি আমি???

মনটা ছটফট করতেছে হয়ত উনি এখন আমার উপর অনেক রেগে আছে কারণ সকালবেলা আমি ওনাকে কিছু না জানিয়ে বাসায় চলে এসেছি মিথ্যা বলে চলে এসেছি হয়তো আমার উপর অনেক রেগে আছে এখন ফোন নাম্বার ও নেই যে ওদের সাথে যোগাযোগ করব

উফফফফ মন বলতেছে বিষ খেয়ে মারা যাই
তাহলে হয়তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বাসায় এসেও শান্তি নাই আম্মু কথা বলতেছে না আম্মুর সাথে যে সব শেয়ার করব আম্মু তো আমার কথা বুঝতে চাইতেছে না

বালিশের উপর মুখ গুঁজে দিয়ে কান্না করতে লাগলাম আর ভাবতে লাগলাম আমার এই সমস্যা হয়তো কোনদিনও ঠিক হবে না যতদিন না আমি মারা যাই হয়তো আমি মারা গেলে আমি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে

আমি বিছানা থেকে উঠে আম্মুর রুমে চলে গেলাম গিয়ে দেখি আম্মু শুয়ে আছে

আমিঃ আম্মু প্লিজ তুমি আমার সঙ্গে কথা বলো তুমি আমার সাথে কথা না বললে আমি মারা যাব সত্যি বলতেছি আমি আর থাকতে পারতেছি না

তাও আম্মু কথা বলতেছে না চুপচাপ শুয়ে আছে আগের মত হয়ে

আমিঃ কি হলো আম্মু মেয়ের উপর এতটা অভিমান যেখানে আমি তোমার উপর অভিমান করবো উল্টা তুমি আমার উপর অভিমান করে আছো প্লিজ কথা বলো আর কখনো এরকম ভুল হবেনা আমার

আম্মুঃ তুই যদি তোর মাকে এতই ভালোবাসতিস তাহলে একবার অন্তত ফোন দিয়ে বলতে পারতিস যে আমি আমার বান্ধবীর বাসায় আছি কালকে সকালে যাব

আমিঃ আসলে আম্মু যখন ওর একসিডেন্ট হয় তখন ওর ফোনটা হারিয়ে ফেলেছিল তাই তোমাকে জানাতে পারিনি

আম্মুঃ বেশ বুঝলাম কিন্তু ওর বাসায় কি একটা ফোন নেই যে ফোন দিয়া আমার সাথে কথা বলা যেত আর তার থেকে বড় কথা হলো তুই কালকে সকাল চলে গেছিস আমাকে একবার জানানোর প্রয়োজন বোধ করিস নি

আমিঃ আম্মু বললাম তো ভুল হয়ে গেছে আর কখনো এরকম হবে না ( নিজের চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারলাম না)

আম্মু চুপচাপ হয়ে উল্টোদিকে হয়ে শুয়ে পড়লো

আমি আর কিছু না ভেবে আমিও আম্মুকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লাম দেখি আম্মু কান্না করতেছে

আমিঃ আম্মু এবং কানে ধরতেছি প্লিজ বিশ্বাস করো আর কোনদিন এরকম হবে না আর কখনো তোমার সাথে আমি এরকম করবো না যেখানে যাব তোমাকে বলে যাব

আম্মুঃ তুই জানিস কালকে সারাদিন আমি কিছু খাইতে পারিনি রাতেও কিছু খাইনি কিন্তু তুই একটা বারও আমার কথা ভাবলিনা যে আম্মু টার কি হবে ( আম্মু কান্না করতে লাগলো বুঝতে পারলাম এমন একটা টেনশন করেছে আমাকে নিয়ে)

আমিঃ আম্মু অনেক হয়েছে আর কান্না করা লাগবে না চলো সবাই মিলে একসাথে গিয়ে খাবো আগের মত হয়ে যাবে আমরা সবকিছু ভুলে যাও

আম্মু কিছু বলল না চুপচাপ আমি আম্মুর হাত ধরে টেনে খাবার টেবিলে নিয়ে গেলাম আম্মুকে বসিয়ে দিয়ে ভাইয়াকেও খাবার টেবিলে নিয়ে আসলাম ভাইয়া কেউ খাবার টেবিলে বসিয়ে দিয়ে আমি সবাইকে খাবার তুলে দিলাম আমি একটা চেয়ার টেনে বসে খেতে লাগলাম

অনেকদিন পর আবারও সবার মুখে হাসি খুশি তিনজনে অনেক গল্প করলাম খাইতে বসে তারপর খাওয়া-দাওয়ার পালা শেষ করে আম্মু আম্মুর রুমে চলে গেল ভাইয়াকে ধরে ভাইয়ার রুমে দিয়ে আসলাম এসে আমি আমার রুমে শুয়ে পড়লাম এখন মনটা একটু ভালো

কিন্তু মনটা বেশিখন ভালো থাকল না ওনার কথা মনে পড়তেই হবে মনটা নিমিষেই খারাপ হয়ে গেল

জানিনা উনি কি করতেছে একা একা

এইদিকে,,,,

আম্মুঃ এরকম পাগলামো করতেছিস কেন বুঝতেছিনা??

মাহিনঃ আমি কি পাগলামি করলাম ও আমাকে না বলে চলে গেল কি জন্য

আম্মুঃ ওর ও একটা পরিবারের দায়িত্ব আছে বুঝছিস,,, আর তুই ওকে কিভাবে বিয়ে করেছিস সেটা তুই ভালো করে জানিস ওর পরিবারের কেউ জানে না আর মেয়েটা গতকাল সারাদিন সারারাত এখানে ছিল ওর আম্মুর টেনশন হয় না

আর রুমের একই বেহাল অবস্থা করেছিস সব কিছু ভেঙে ফেলছিস কেন????

আমি চুপচাপ মাথা নিচু করে বিছানায় বসে আছি কারণ আম্মু এখন অনেক রেগে আছে এখন কিছু বলা ঠিক হবে না যদি কিছু বলি উল্টাপাল্টা হয়ে যাবে সবকিছু

আম্মুঃ কি হলো এখন আমার কথার উত্তর দিচ্ছিস না কেন খুব তো বক বক করতেছিলি

ছুটকিঃ আরে আম্মু তুমি আমাকে ভাইয়ের সাথে পাগল হয়ে গেলে নাকি হয়তো

আম্মুঃ তোকে এখানে পক্ষপাতিত্ব করতে হবে না তুমি যে কাজ করতেছে সেটাই কর

ছুটকি আর কিছু বলার সাহস পেলো না চুপচাপ ওইখানেই দাঁড়িয়ে রইলো

আম্মুঃ আর তুই এটাও কি ভাবিস না যে তুই এখন আগের মত সুস্থ না একটু হলেও অসুস্থ আছিস আরে যেই একটু ভালোলাগা কাজ করতেছে তোর সরিলে তখনই শুরু করে দিচ্ছিস রাগারাগি তাই না কিছু বলিনা মাথায় চরে গেছিস

আমি শুধু চুপচাপ আম্মুর বকা খেয়ে যাচ্ছি কিছু বলতেছি না

আম্মু কিছুক্ষণ বকা দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন

ছুটকিঃ এখন দেখ কেমন লাগে তোকে আগেই বলছিলাম বেশি রকম মাতামাতি করিস না সুযোগ পেলেই ভাবি এখানে চলে আসবে আর তুই সেটা শুনলি না,,,,

ছুটকি ও কিছুক্ষণ কথা শুনে চলে গেল আর আমি ওখানেই নিস্তব্ধ হয়ে বসে আছি কি হচ্ছে আমার সাথে আপনি কি করতেছি?????

চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here