মিস্টার সিনিয়র পর্ব -০৫

#মিস্টার__সিনিয়র
#পর্বসংখ্যা_০৫
®ফিহা আহমেদ

“আমি কি মরে গেছি নাকি বেঁচে আছি” । (পরশি চোখ বন্ধ করে বললো)

পরশি ধীরে ধীরে চোখ খুললো। চোখ খুলতেই পরশির চোখ বড় বড় হয়ে গেল।

“আ,,,,আপনি,,,, (পরশি অবাক হয়ে বললো)

“মিস জুনিয়র ওই লোকটা কে ছিল যে আপনাকে ধাক্কা মারলো ? (জোভান)

[জিহা জোভানের কাছে বায়না ধরেছে ফুচকা খাবে।জোভান জিহাকে কান্নাকাটি করতে দেখে অবশেষে জিহাকে নিয়ে ফুচকার দোকানে আসলো।জোভানের একটা গুরুত্বপূর্ণ ফোন আসাতে ফুচকার দোকানের বাহিরে আসলো।কথা বলতে বলতে পাশে তাকাতেই দেখলো একটা লোক পরশিকে ধাক্কা দিচ্ছে। জোভান দ্রুত গিয়ে পরশির হাত ধরলো।পরশি পড়ে যাওয়া থেকে বেঁচে গেল।]

“এসব পরে বলি আমায় উঠান আগে”। (পরশি)

“এক শর্তে উঠাবো”। (জোভান শয়তানি হাসি দিয়ে বললো)

“মানে সব জায়গায় এমন না করলে শান্তি হয় না আপনার”। (পরশি হালকা রেগে বললো)

“যদি শর্তে রাজি না হও তাহলে আর কি আমি হাত ছেড়ে দিচ্ছি”। (জোভান)

জোভান হাত কিছুটা আলগা করতেই পরশি চোখ বন্ধ করে চিৎকার করে বাম হাত দিয়ে জোভানের শার্ট খামচে ধরে বললো,,,,,

“প্লিজ মিস্টার সিনিয়র হাত ছাড়বেন না আপনি যা বলবেন তাই শুনব আমি”।

“এইতো গুড গার্ল এর মতো কথা বললে। আমায় সরি বলো”। (জোভান)

“সরি কেন বলবো আমি? (পরশি হালকা রেগে বললো)

“ভার্সিটিতে আমার সাথে যা যা করেছ তার জন্য সরি বলো”। (জোভান)

“আমি কি করলাম আপনার সাথে?(পরশি)

“প্রথম না দেখে ধাক্কা মারলে,দ্বিতীয় থাপ্পড় মারলে আর তৃতীয় সাঁতার না জানার ভান করে আমায় পুকুরে নামালে।এইসবের জন্য সরি বলো”। (জোভান)

“আপনি কোনো ভুল করেননি সব ভুল আমার”। (রেগে বললো পরশি)

“এই যে এখন আমায় ধমক দিয়ে কথা বললে এর জন্য সরি আরেকবার বেড়ে গেল।চার বার সরি বলবে নাকি হাত ছেড়ে দিব”। (জোভান বাঁকা হাসি দিয়ে বললো)

“পরশি রাগ কন্ট্রোল কর। এখন সরি বলে কেটে পড়। পরে একে দেখে নিব”। (পরশি মনে মনে বললো)

“বলবে নাকি,,,,,(জোভান)

জোভান আর কিছু বলার আগে পরশি বললো,,,,

“সরি, সরি, সরি, সরি” ।

পরশি সরি বলার সাথে সাথে জোভান পরশিকে ওপরে উঠালো। জোভান যাওয়ার আগে পরশির মুখের ওপর ফুঁ দিয়ে চলে গেল। পরশি চোখ বন্ধ করে ফেললো।

পরশি চলে যেতে নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। পরশি রাস্তার ডান পাশে একটা গাছের কাছে একটি ব্লু কালার ঘড়ি পড়ে আছে। পরশি ধীর পায়ে হেঁটে গাছের কাছে এসে ঘড়িটি হাতে নিল।

“মনে হচ্ছে ধস্তাধস্তিতে লোকটার ঘড়ি হাত থেকে খুলে পড়ে গেছে। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আমি কোথাও এই ঘড়ি দেখেছি।কিন্তু কার হাতে দেখলাম এই ঘড়ি আমি? (পরশি মনে মনে বললো)

“এতক্ষণ লাগে উল্টি করতে পরশি”।

পিছন থেকে লারার কথা শুনে পরশি ঘড়িটা লুকিয়ে ফেললো।পরশি সামনে তাকিয়ে আমতাআমতা করে বললো,,,,

“আ,,,,আসলে আপু করার চেষ্টা করছি।ভিতর থেকে ঠেলছিলো তো তাই”।

“ঠিক আছে চল । কাশবনে যাব এখন সবাই”। (লারা)

“না গেলে হয়না”। (পরশি অসহায় ভাবে বললো)

“ওই ডাইনি বুড়িকে আমি দেখে নিব চল”। (লারা)

পরশিকে জোর করে গাড়িতে উঠালো লারা।এইদিকে জোভান আর জিহা সবকিছু দেখছিল।জোভান জিহার কাছে সবকিছুর শেয়ার করে। পরশির ব্যাপারে সবকিছু বলেছে জোভান জিহাকে।

“ভাইয়া কাশবনে যাবি।আমার না ওই ছেলেটাকে তেমন সুবিধার মনে হয় না। তোর মিস জুনিয়রের দিকে কিভাবে তাকিয়ে ছিল”। (জিহা)

“ওদের ফলো করি চল”। (জোভান)

এক ঘন্টার মধ্যে পরশিরা কাশবনে এসে পৌঁছালো।কাশবনে এসে পরশির মন ভালো হয়ে গেল।পরশি গাড়ি থেকে নেমে কাশফুলে হাত বুলিয়ে বুলিয়ে দেখছে।লারা – রিশা অনেক খুশি কাশবনে এসে।তারা দু’জন ছবি তুলতে ব্যস্ত। পরশি কাশফুল দেখতে দেখতে অনেকটাই ভিতরে চলে এসেছে।

“একি আমি তো অনেকটাই ভিতরে চলে এসেছি। কোনদিক দিয়ে আসলাম তা ও মনে পড়ছে না।আমি কি হারিয়ে গেলাম? (পরশি ভয় পেয়ে বললো)

_____

“ভাই তোর মিস জুনিয়র ওদের সাথে নেই? (জিহা)

“মেয়েটা কোথায় গেল?যদি বেশি ভিতরে চলে যায় তাহলে ও পথ হারিয়ে ফেলবে। আর ওই ছেলেটাকে ও দেখতে পাচ্ছি না”। (জোভান)

“ভাই আমরা ভিতরে গিয়ে দেখব?(জিহা)

“হ্যাঁ চল”। (জোভান)

_____

পরশি সামনে এগোচ্ছে।হঠাৎ কারো বুকের সাথে ধাক্কা খেয়ে পরশি দাঁড়িয়ে পড়লো।পরশি সামনে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো,,,,

“তাসির ভাইয়া আপনি। ভালো হয়েছে আপনি এসেছেন আমি তো পথ হারিয়ে ফেলেছি।আমায় আপুদের কাছে নিয়ে চলেন প্লিজ”। (পরশি)

তাসির কিছু না বলে শয়তানি হাসি দিয়ে পরশির কাছে আসতে লাগলো পরশি ভয় পেয়ে পিছনে যেতে লাগলো।

“ভ,,,,ভাইয়া স,,,সামনে কেন এগোচ্ছেন?(পরশি ভয় পেয়ে বললো)

“তুমি পেছনে কেন যাচ্ছ সুন্দরী পরশি? (তাসির নেশাক্ত চোখে পরশির দিকে তাকিয়ে বললো)

পরশি বুঝতে পারলো তাসিরের উদ্দেশ্য। পরশি ভয় পেয়ে দৌঁড়ানো শুরু করলো। দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে কিছু একটা পরশির পায়ে ঢুকে গেল।পরশি মাটিতে পড়ে গেল।

“আহ্” (পরশি চিৎকার করে বললো)

পরশির পায়ে ভাঙ্গা কাঁচের টুকরো ঢুকে গেছে।পরশি ভয়ে কান্না করে দিলো।

“এখন তো নিজেকে বাঁচানোর জন্য দৌঁড়াতে ও পারব না।এখন আমার কি হবে? (পরশি কান্না করতে করতে বলবো)

_____

“ভাই মনে হচ্ছে মিস জুনিয়রের চিৎকারের আওয়াজ শুনলাম?(জিহা চিন্তিত হয়ে বললো)

“তুই কেন মিস জুনিয়র বলছিস। ওকে শুধু আমি মিস জুনিয়র বলবো।ওর নাম ধরে বল”। (জোভান)

“ওর নাম জানলে তো নাম ধরে বলবো”। (জিহা)

“ওহ হ্যাঁ । ওর নাম আমি নিজে ও জানিনা তাই তো মিস জুনিয়র বলে ডাকি”। (জোভান)

_____

“দয়া করে আমার সর্বনাশ করবেন না”। (পরশি কান্না করতে করতে বললো)

তাসির পরশির কাছে আসতেই পরশি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো। তাসির পরশির ওড়নায় হাত দিতে যাবে তার আগেই কেউ তাসিরের নাক বরাবর ঘুসি মারলো।

ঘুসি খেয়ে তাসির পরশির থেকে চার-পাঁচ হাত দূরে ছিটকে পড়লো। ঠাস করে কিছু পড়ার আওয়াজ শুনে পরশি ভয়ে ভয়ে চোখ খুললো। চোখ খুলতেই দেখলো তাসির তার থেকে চার-পাঁচ হাত দূরে পড়ে আছে।

পরশি বাম পাশে তাকাতেই দেখলো মিস্টার সিনিয়র রাগী দৃষ্টিতে তাসিরের দিকে তাকিয়ে আছে সাথে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে ।

“জিহা তুই পরশিকে সামলা আমি এই বজ্জাতটাকে দেখছি”। (জোভান রেগে বললো)

চলবে…..
_____

(বানানে ভুল-ক্রটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)

(গল্প পড়ে সবাই লাইক – কমেন্ট করবেন। নাইচ,নেক্সট না লিখে গল্প সম্পর্কে গঠনমূলক মন্তব্য করবেন প্রিয় পাঠক-পাঠিকাগণ।)
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ❌]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here