মেঘ_বৃষ্টি পর্ব=২১
❤❤
রোদ-রোদেলা
#তানিয়া_আনিতা
বৃষ্টি আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজের ঠোঁটে হাত দিয়ে দেখতে লাগলো আর ভ্যা ভ্যা করে কাদতে লাগলো।
——-এই ছেলেটা কি করল আমার ঠোঁটের ভার্জিনতা শেষ করে দিল রে। যেখানে কেউ আমার হাত ধরার সাহস পাই নাই সেখানে এ ছেলেটা আমার ঠোঁট স্পর্শ করল।এখন আমি কি করবো
,
,
,
বলে আবারও কাদতে লাগলো।আর এদিকে মেঘ সারাদিন ও রুমে ফিরল না।বেশ কিছু দিন কেটে গেল। একদিন মেঘ রোদেলার রুমের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ করে রুম থেকে হাসির শব্দ ভেসে আসে সাথে ফিসফিস করে কথা বলার শব্দ। মেঘ দরজার কাছে কান নিতেই
——– তুমিও না পারো বটে এসব কথা বলতে আচ্ছা তোমার একটু লজ্জা করেনা নাকি।
——-কিসের লজ্জা নিজের বউয়ের সাথে এসব বলা যায়। আর তুমি তো আমার বউ মানে হবু বউ
——-তাই তবে এখনো হয়নি যখন হবো তখন দেখা যাবে।আচ্ছা তুমি ভাইয়ার সাথে আমাদের সম্পর্কের বিষয়টা নিয়ে কথা বলবে কখন।
——–যখন তুমি চাইবে।চাইলে এখনি,কি বলবো নাকি
——-না আগে আমি ভাইয়াকে তোমার কথা বলবো তারপর ঠিক আছে।
——-ওকে
,
,
,
এই নিয়ে তাদের মধ্যে অনেক কথা হয়। এদিকে মেঘ বাইরে থেকে সব কথা শুনে রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে গেল। সে বুঝতে পেরেছে তার বোন কোনো সম্পর্কে জরিয়ে গেছে। কিন্তু সে কোনোভাবে চাই না তার বোন কোনো ভুল করুক তাই সে এর ব্যবস্তা করবে বলে সেখান থেকে বেরিয়ে গেল। প্রায় কিছু দিন যাওয়ার পর একদিন রাতে সবাই ডিনার করতে বসে তখনি মেঘ বলে উঠে,
——-মা আমি একটা কথা বলতে চাই
——হুমম বল
—— মা আসলে আমি রোদেলার বিয়ে নিয়ে কথা বলতে চাই। আমার এক বন্ধু বাইরে থাকে কিছু দিন আগে দেশে এসেছে, বিয়ের জন্য মেয়ে দেখছে তাই আমি ভাবলাম রোদেলারও তো বিয়ের বয়স হয়েছে তাই ওর সাথে বিয়েটা দিয়ে দিব কি বলো
কথা গুলো শুনে রোদেলার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। মেঘের মা মেঘের কথায় সম্মতি জানাবে ঠিক তখনি রোদেলা বলে উঠল
——-না মা আমি এখন বিয়ে করবো না আমি নিজের পড়ালেখা শেষ করতে চাই।
——-কেন করবি না তুই চাইলেও বিয়ের পর স্টাডি করতে পারবি তাহলে সমস্যা কই।
——–না সম্ভব না আর বিয়ের পর কখনো স্টাডি ভালোভাবে করা যায় না
——আচ্ছা তোর সমস্যা কোনটা স্টাডি নিয়ে নাকি বিয়ে নিয়ে নাকি অন্য কিছু।
অন্য কিছু শব্দটা শুনেই রোদেলা কিছুটা ভয় পেল তারপরও নিজের মতো করে কিছু বলতে যাবে
——-কি হলো চুপ করে আছিস কেন উওর দে (চিৎকার দিয়ে )
মেঘের কথায় রোদেলা ঘাবড়ে গেল তারপর আমতাআমতা করে
——-আসলে ভাইয়া আমি একজনকে ভালোবাসি কিন্তু তোমাকে বলার সাহস পাচ্ছিলাম না তাই
——-তাহলে এই ব্যাপার কিন্তু শুনে রাখ তোর কোনো কিছুই আমি শুনতে চাই না আমি যেখানে তোর বিয়ে ঠিক করেছি সেখানে বিয়ে করতে হবে এটাই শেষ সিদ্ধান্ত।
মেঘের কথা শুনে রোদেলা রেগে কান্না করতে করতে ওপরে চলে গেল। আর রুমে গিয়ে পায়চারি করতে লাগলো।
——-না না এটা সম্ভব না আমি রোদকে ভালোবাসি যে করেই হোক আমাকে কিছু করতে হবে আমি এই বিয়ে করবো না প্রয়োজনে……
ফোনটা তুলে রোদকে কল দেয়
——-হুমম বলো রোদেলা।
——-রোদ আমি তোমার সাথে কাল দেখা করতে চাই খুব আর্জেন্ট।আর হ্যা মানসিকভাবে প্রস্তুত থেকো।আর এই মূহুর্তে কিছু জিজ্ঞেস করো না আমি কাল বলবো সব।বলে লাইনটা কেটে দিল।
।
।
।
।
।
।
রোদেলা অনেকক্ষণ যাবত ওয়েট করার পর রোদ আসলো।এসেই
——-হুমম বলো এতো জরুরি তলব মনে হচ্ছে কিছু হয়েছে। কি হয়েছে
——-আসলে আমার বাসা থেকে বিয়ে ঠিক হয়েছে আর আমি ভাইয়াকে বোঝানোর চেষ্টা করছি ও আমার কোনো কথা শুনিনি আর আমি জানি ও আমার কথা শুনবেও না একবার যখন বলেছে বিয়ে দিবে তো দিবে কিন্তু আমি এই বিয়ে করতে পারবো না, আমি তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে স্বামী হিসেবে মানতে পারবো না।
——-তাহলে এখন কি করতে চাও
——তোমাকে আমার সাথে যেতে হবে এক্ষুনি, কিন্তু কোনো কথা নই বলে রোদের হাত ধরে রেস্টুরেন্টে থেকে বের হয়ে গেল।
.
.
.
.
.
.
.
২ ঘন্টা পর। মেঘ নিজের কেবিনে বসে কাজ করছিল হঠাৎ একটা কল আসে তারপর হন্তদন্ত হয়ে বৃষ্টির ডেক্সে যায়। গিয়ে বৃষ্টিকে নিয়ে বের হয়ে যায়। এদিকে বৃষ্টি বুঝতে পারছে না মেঘ হঠাৎ এমন আচরণ করছে কেন।বাসার সামনে এসেই মেঘ বৃষ্টিকে গাড়ি থেকে বের করে বাসায় ঢুকে। ঢুকেই দুজনে থেমে যায় কারন তাদের সামনে একজোড়া নতুন দম্পতি দাঁড়িয়ে আছে, যা সম্পর্কে মেঘের বোন আর বোনের হাসবেন্ড রোদ। রোদকে দেখে মেঘ বৃষ্টি দুজনে ঝটকা খায়।তারমানে রোদেলা যাকে ভালোবাসতো সে আর কেউ নয় রোদ।অন্যদিকে মেঘের মা মুখ গুজে কান্না করছে।রোদেলা মেঘের সামনে এসেই
———ভাইয়া আমি জানি আমি অন্যায় করেছি কিন্তু আমার আর কোনো উপায় ছিল না আমি রোদকে ভালোবাসি তাই আমি রোদকে কোর্ট ম্যারিজ করে ফেলেছি।
।
।
।
।
কথা টা বলার বাকি আর মেঘের চর দেওয়ার সময় নিলো না সাথে সাথে সে চর দিয়ে দিল।এই প্রথম মেঘ রোদেলার গায়ে হাত দিল।বাবা চলে যাওয়ার পর কখনো ছোট বোনকে ধমক দিয়ে কোনো কথা বলে নি আর আজ চর দিয়েছে। রোদেলা ছলছল চোখে ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। মেঘ রোদের কাছে গিয়ে রোদের কলার টেনে
——-তুই ইচ্ছা করে এটা করেছিস তাই না।আমি জানি এসব তোর প্ল্যান। আমি তো তোকে ছাড়বো না।
——-আরে আরে কি করছেন আমি আপনার বোনের স্বামী হয় সম্পর্কে আমরা শালা দুলাভাই চাইলে মশকারি করতে পারি কিন্তু ঝগড়া নয়।আর আমি কি করবো আপনার বোনই তো আবদার করল আমাকে বিয়ে করবে,নিজের ভালোবাসার মানুষকে বারবার হারাতে কে চাই তাই গিয়ে রেজিস্ট্রি করে নিলাম আপনার মতো করে কিন্তু সাক্ষী রেখেছি।চাইলে প্রুভও দেখাতে পারি।
।
।
।
বলে বাকা হাসি দিল, রোদের কথার মানে রোদেলা না বুঝলে মেঘ আর বৃষ্টি ভালো করে বুঝেছে।আর তাই মেঘ কলার ছেড়ে দিল যাতে রোদ আর কিছু না বলে। তারপর মেঘের মাকে সালাম করে মেঘকে জরিয়ে ধরে
——–বলেছিলাম না তোমার সবচেয়ে কাছের জিনিসটা নিয়ে তোমাকে শায়েস্তা করবো দেখো এখন কি কি হয় বলে সরে আসলো।
তারপর সবার থেকে বিদায় নিয়ে রোদের বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিল। বাসার পৌঁছে……..
,
,
,
,
,
,
চলবে…………
(আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন আসলে কি বলবো আপনারা হয়তো জানেনে যে আমাদের একজন লেখিকা মারা গেছেে ইন্না-লিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলায়লি রাজিউন আমি গ্রুপে আাসার পর ওনার ফেনদের বিভিন্ন পোস্ট দেখে সত্যি কান্না করছিলাম আসলে এমন কিছু হবে এটা কল্পনার বাহিরে, ওনি এতো কম বয়সে সবাইকে ছেড়ে যাবেন সত্যি দুঃখজনক ওনার এসবে বিন্দু মাএ লিখতে ইচ্ছে করছে না তবুও লিখেছি যদি ভুল থাকে ক্ষমা করবেন আর #মেঘ আপুর জন্য সবাই দোয়া করবেন )