মেয়ে,পর্ব:৩

#মেয়ে

লেখিকা : সৈয়দা রাইসা আবেদীন অহনা

শেষাংশ

নাযাকাত ফারিয়াকে বুঝাতে পেরে যেন কোন যুদ্ধ জয় করার আনন্দ খুজে পেয়েছে। এদিকে প্রায় ৩ ঘন্টার কাউন্সিলিংয়ের পর ফারিয়াকে বাহিরে নিয়ে আসা হলে, আরিয়ান আর যুনাইরাহ ফারিয়াকে বেশ ফুরফুরে দেখতে পায়। যা দেখে তারাও কিছুটা অবাক হয়, সাথে খুশিও। এদিকে ফারিয়াকে বাহিরে নিয়ে যাওয়া হলে নাযাকাত ফারিয়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে এক মলিন হাসি দিয়ে বলে,

– এটা আমার কোন পেসেন্টের গল্প না বরং আমার ছিলো। আর যেই লোক আমার এতোবড় সর্বনাস করেছিলো সেই ব্যাক্তি আর কেউ না বরং তোমার বাবাই ছিলো ফারিয়া। খোদার কি খেল। কি অদ্ভুতভাবেই নিজের কর্মফল ফিরে পেলে আরিয়ান৷ আহ আরিয়ান আহ! একেই বলে রিভেঞ্জ অফ ন্যাচার। প্রকৃতি কারো কুকর্ম নিজের কাছে রাখে না। সময় মতো তাকেই ফিরিয়ে দেয়, যেমনটা আজ তুমি পেলে।

এদিকে কিছুক্ষন পর নাযাকাতও আরিয়ান আর যুনাইরাহর সামনে এসে বসে বলে,

– সি ইজ ভেরি স্ট্রং গার্ল। ওকে আরও কয়েক দিন তো আসতেই হবে। এরপরই ওর ফাইনাল স্টেজ কতোটুকু প্রোগরেস হলো তা বলা যাবে।
– থ্যাংকস নাযাকাত। আই মিন ড. নাযাকাত।

এরপর আরিয়ান যুনাইরাহ আর ফারিয়াকে নিয়ে চলে আসে আর তাদের গাড়িতে উঠিয়ে আরিয়ান বলে,

– তোমরা যাও আমি আসছি।
– কেন তুমি কোথায় যাচ্ছো?
– আমি একটু জিজ্ঞেস করে আসি কোন মেডিসিন বা মেডিটেশন করার প্রয়োজন পড়বে কি না।

বলেই আরিয়ান আবার হসপিটালের ভিতর আসে। এদিকে নাযাকাত নিজের কেবিনে চেয়ারে বসে দুইহাত মুঠো করে কপালের সাথে ঠেকিয়ে রাখে আর তখনই বিনা নক করেই আরিয়ান হটাৎ করেই রুমে ঢুকে পড়ে আর এদিকে হটাৎ করেই কেউ রুমে ঢুকে পড়ায় নাযাকাত সামনে তাকাতেই আরিয়ানকে দেখে উঠে দাঁড়ায় আর বলে,

– কোন প্র‍য়োজন?

আরিয়ান যেন বলার কিছুই পাচ্ছে না। তাই বলে উঠে,

– না জিজ্ঞেস করতে এসেছিলাম যে, কোন মেডিসিন না মেডিটেশন করতে হবে কি না?
– এসবের কোন প্র‍য়োজন নেই। কয়েকদিন কাউন্সিলিংয়ের জন্য নিয়ে আসলেই হবে। আর কিছু কি বলার আছে? হ্যাজিটেশন না করে বলে ফেল।

আরিয়ানের যে হ্যাজিটেশন হচ্ছে তা নাযাকাত বুঝে যাওয়ায় সে কিছুটা অবাক হলেও বলে,

– নাযাকাত আই এম সরি।

নাযাকাত শক্ত মুখেই বলে,

– ফর হোয়াট?
– তোমার সাথে যা করেছিলাম এর জন্য। আমি জানি আমি যা করেছি তার কোন মাফ নেই। আমি তোমার সাথে যেই অন্যায় করেছি তা কতোটা কষ্টের একজন বাবার জন্য তা আমি আজ বুঝতে পারছি। আসলে আজ আমি সত্যি রিয়্যালাইজ করছি যে কেউ কারো বদলা না নিলেও প্রকৃতইই তা নিয়ে নেয়। আর আজ আমি আমার অতীতের সকল পাপকর্মের জন্য লজ্জিত এবং মাফ চাই। যুনাইরাহকে আমিই বলেছিলাম তুমি আমাকে ডিচ করেছো রিলেশন করে ছেড়ে দিয়েছো। কারন আমিই বারাবারি করে জানিয়েছিলাম যে তুমি আর আমি রিলেশনে। কারন যুনাইরাহ আমাকে অনেক ভালবাসতো কিন্তু আমি যে তোমায় ভালোবাসতাম। তাই চাই নি যুনাইরাহ কষ্ট পাক। তাছাড়া আমি যে কেদেছি তোমাকে না পাওয়ায় তা যুনাইরাহ দেখেছে। ও আমাকে আগে থেকেই লাভ করতো যেনটা তুমি জানতে। আর ওকে সত্যি বলার সাহস এরজন্যই হয় নি কারন তখন আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে, যদি তখন ওকে আমি সত্যি বলে দিতাম তাহলে ও তোমার কাছে যেত আমার জন্য আর তোমার কাছে গেলে জেনে যেত যে আমিই তোমার ছবি লিক করেছিলাম। তোমার প্রতি যে আমার অবসেশন আমাকে এসব করিয়েছিলো তা বলার সাহস হয় নি কারন পুলিশের হাতে পড়ার ভয় আর ছিলো নিজের আর নিজের ফ্যামিলির রেপুটেশন হারানোর ভয়।

এবার নাযাকাত কিছুটা তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,

– বাহ নিজের ফ্যামিলির রেপুটেশনের এতো খেয়াল আর আমার তো ফ্যামিলি ছিলো না তাইনা!
– দেখো নাযাকাত আমি তখন আবেগে রাগে এসব করলেও পরে নিজের ভুল বুঝতে পারি। আসলে এমন করার কারন একটাই ছিলো, আমি চাই নি তুমি অন্য কারো হও।

নাযাকাত এবার নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে আরিয়ানের সামনে এসে দাঁড়িয়ে আংগুল তুলে রক্তিমাভাবা চোখে বলে,

– তোমার এই আবেগের রাগ আমার পুরো জীবনটাই পাল্টে দিয়েছে। তুমি জানো, তোমাকে আমি সেই রাতেও ফোন দিয়েছিলাম যখন তুমি আমার ফটো লিক করেছিলে। আমার বাসায় জানার আগেই আমি কল দিয়েছিলাম কিন্তু তুমি আমার ফোন তোলা তো দূর নিজের নাম্বার আর সব ইনফরমেশন গায়েব করে ফেলেছিলে। কতো খোজ করেছিলাম তোমার অথচ উধাও হয়ে গিয়েছিলে। আর আজ এতোবছর পর গুহা থেকে বেরিয়ে আসলে তাও নিজের মেয়ের জন্য। খোদার কি খেল, আসতে হলো তো তাও আমার সামনে যার কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছিলে নিজেকে। তাছাড়া তোমার বিরুদ্ধে যে কোন প্রমান পাবো তা পর্যন্ত রাখো নি। বাহ কি হাত সাফ তোমার। এতো সফলভাবে কাজ করেছো যে পুলিশ আজ অবধিও খুজে পাওয়া তো দূর ক্লু পর্যন্ত পায় নি। কি ভাগ্য তোমার, তোমার মতো ভাগ্য তো নসিব ওয়ালা মানুষরাই পায়। কতোটা সফলতার সাথে বেচে গিয়েছো বাহ। (তালি দিয়ে)

আর তখনই নাযাকাতের রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে কেউ একজন বলে উঠে,

– তুমিইই সেই আরিয়ান তাহলে!

এদিকে কারো কথার আওয়াজ পেয়ে নাযাকাত আর আরিয়ান পিছনে ফিরলে দেখতে পায় আরিশ দাঁড়ানো। তখন আরিশ বলে,

– আজ যদি আমার ফ্লাইট ক্যান্সেল না হতো আর এখানে আমি না আসতাম জানতেই পারতাম না এই সেই লোক। যে তোমার জীবনটাই তছনছ করে দিয়েছে।

এদিকে নাযাকাত আরিশের থেকে নজর সরিয়ে আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,

– নিজের মেয়ের কাউন্সিলিং করাতে এসেছো। তা হলেই চলে যাবে। মানবতার খাতিরে আর একজন কাউন্সিলর হিসেবে আমার কাজ তোমার মেয়েকে কাউন্সিলিং করা আর তাই করছি। আর একবার তোমার মেয়ে সুস্থ হয়ে গেলেই এখান দিয়ে চলে যাবে। তোমার চেহারাও এই জীবনে আর দেখতে চাই না।

বলেই নাযাকাত রুম দিয়ে বেরোতেই দেখে সেখানে যুনাইরাহ কান্নামিশ্রিত চোখে তাকিয়ে আছে। নাযাকাতের আর বুঝতে বাকি থাকে না যে যুনাইরাহ সব শুনে ফেলেছে। তাই নাযাকাত যুনাইরাহকে উদ্দেশ্য করে বলে,

– যা শুনার শুনেছো। এসব নিয়ে এখন নিজের সংসার নষ্ট করো না। যে পাপ করেছে এই দুনিয়ায় সে তার শাস্তি পেয়ে গিয়েছে। সো সে অতীতে কেমন ছিলো তা নিয়ে ঝগড়া বেধে এখন নিজের সংসার ভেঙ না। মেয়ে বড় হয়েছে, এখন সে সব বুঝে। সো নিজের বাবার এমন কটু সত্য কোন মেয়েই সহ্য করতে পারবে না। তাও আবার এমন বাবা যে কিনা মেয়ের এতো যত্ন নেয়। সো এসব ভূতকাল নিয়ে না ভেবে আগামীকাল নিয়ে ভাবো আর আজ নিয়ে বাচো।

বলেই নাযাকাত চলে যায় আর যুনাইরাহ নাযাকাতের যাওয়ার দিকে একবার তাকিয়ে কেবিনের ভিতর আরিয়ানের দিকে তাকাতেই চোখ দিয়ে একফোটা পানি ঝড়ে যায়। আর এদিকে নাযাকাতের রুমে আরিশ আর আরিয়ান সামনাসামনি দাঁড়িয়ে। এদিকে যুনাইরাহ চলে যেতে চেয়েও যায় না, আরিয়ান আর আরিশ কি বলবে শুনার আগ্রহ যেন আরো বেরে যায় তাই যুনাইরাহ তখনও সেখানে দাড়িয়ে থাকে। এদিকে আরিয়ানকে উদ্দেশ্য করে আরিশ বলে,

– আগে জানলে আপনাকে কখনোই নাযাকাতের কাছে পাঠাতাম না।
– মানে?
– মানে আমি আপনার আর নাযাকাতের সম্পর্কে সব জানি।

আরিশের এই কথা শুনে আরিয়ান চুপ হয়ে যায়।

– আপনি জানেন আপনি এই মেয়েটার লাইফ কি পরিমান হেল করে দিয়েছেন? আপনি জানতেন নাযাকাত আপনাকে পছন্দ করে না ইভেন ওর ফ্যামিলি কেমন তাও জানেন। আপনি মেয়েটির লাইফ এতো বাজে করে দিয়েছেন যে ওকে বাড়ি থেকে বের করে দাওয়া হয় শুধু তাই না ওর প্যারেন্ট মারা যাওয়ার সময়ও তাদের মুখটা পর্যন্তও দেখতে দাওয়া হয় নি। এতো বড় দুনিয়ায় বিগত পনের বিশ বছর ধরে একা লড়াই করে আসছে। নিজের অতীতটা ওকে এমনভাবে গ্রাস করেছে যে আজ পর্যন্ত বিয়ে পর্যন্ত করে নি। আর আপনি তো বিয়ে করে সুন্দর করে সংসার করছেন আর ও যেন কারো না হতে পারে সেই অবস্থায় ফেলে দিয়েছেন ওকে। বিশ্বাস নামের জিনিসের উপর দিয়ে ওর ভরসাই উঠে গিয়েছে। এন্ড ইউ আর দ্যা রিসপন্সিবল ফর দিস। দেখেন কুদরতের কি খেল আপনার শাস্তি এই সভ্য সমাজ দিতে না পারলেও খোদা প্রদত্ত হয়ে গিয়েছে। একেই বলে রিভেঞ্জ অফ ন্যাচার। তবে ভাবতেও অবাক লাগছে আজ আমার যেই ব্যাক্তি অন্যের আইডি হ্যাক করে রিসাইকেল করে ছবি পেয়ে যায় আজ সে কিভাবে তার মেয়ের অপরাধীকে ধরতে পারলো না। তাহলে কি সে আপনাকে টপকে ফেললো? দেখলেন তো কিভাবে আপনার কর্ম আপনিই ফিরে পেয়েছেন। আর আমি অযথা আপনার সাথে কথাই বা কেন বলছি? আপনার সাথে কথা বলতেও মুখে বাধছে আমার। আপনার মতো পুরুষের জন্য সকল পুরুষজাতির নাম খারাপ হচ্ছে। আপনার মতো পুরুষদের এই সমাজ সার্টিফিকেট ধারী শিক্ষিত বললেও মস্তিস্কের দিক দিয়ে আপনারা আসলে অশিক্ষিত, আর নীচ মনুষ্যত্বের লোক।

বলে আরিশও চলে যায় এদিকে আরিয়ান কেবিন দিয়ে বের হতেই যুনাইরাহকে দেখেই থমকে যায়। এদিকে যুনাইরাহ আজ যেন আরিয়ানের ফেসটাও দেখতে পারছে না। যেই মানুষটাকে এতোকাল ভালোবেসে আসছিলো আর তার প্রতি প্রবল ঘৃনা জন্ম নিয়ে নিয়েছে। এতোটাই ঘৃনা যে তার উপস্থিতিতেও যুনাইরাহর এখন দম বন্ধ হয়ে আসছে। এদিকে আরিয়ান যুমাইরাহকে কিছু বলবে তার আগেই যুনাইরাহ চলে যায় আর আরিয়ান আজ বিশ বছর পর তার অতীতের পাপের বোঝার ওজন অনুভব করতে পারছে। যা তার পিঠে ভারী হয়ে পড়ছে। এদিকে আরিশ সোজা নাযাকাতের বাসায় এসে দেখে নাযাকাত তার ড্রয়িং রুমেই সোফায় বসে আছে। চোখদুটি রক্তলাল হয়ে আছে। নাযাকাত আরিশকে দেখে বিশেষ কোন প্রতিক্রিয়া দেখায় নি, যেন সে জানতো আরিশ আসবে। এদিকে আরিশ নাযাকাতের পাশে এসে বসতেই নাযাকাত বলে,

– ডোন্ট সে সরি। তুমি জানতে না যে এই আরিয়ানই সেই আরিয়ান। সো ডোন্ট ফিল গিল্টি।
– তুমি বুঝলে কিভাবে এটাই বলতাম।
– উনিশ বছর ধরে দেখছি তোমাকে এতোটুকু তো চিনতে পেরেছি নাকি।
– তুমি যদি এখন ফারিয়ার কাউন্সিলিং করাতে না চাও তাহলে আমি অন্য কোন সাইকায়াট্রিসের খোজ তাদের দিয়ে দিবো নাহয়।
– কোন দরকার নেই। আমি কাউন্সিলিং শুরু করে দিয়েছি, এখন অন্য আরেকজনের কাছে গেলে মেয়েটার উপর প্রেসার পড়ে যাবে। আমি আজ একভাবে বুঝিয়েছি কাল অন্যকেউ তার মতো বুঝাবে। সিচুয়েশন উলটা হতে পারে। অ্যাজ ইউ নো।
– আই নো বাট,,,,
– বাট নাথিং,,,, কয কয়েকদিনের ব্যাপার তারপর ওরা চলে যাবে। সো ডোন্ট ওয়ারি।
– আর ইউ সিউর?
– হুম।

নাযাকাত মুখে সিউর বললেও যে নিজে ঠিক নেই আরিশ তা বুঝতে পেরেছে, কিন্তু সে জানে নাযাকাতকে এখন বুঝিয়েও লাভ হবে না তাই সেও চুপ হয়ে যায়। এদিকে আরিয়ান বাসায় এসেই তার রুমে বসে আছে আর যুনাইরাহ তার মেয়েকে রাতের ডিনার খাইয়ে ঘুম পারাতে গেলে ফারিয়া যুনাইরাহকে বলে,

– মা জানো আজ ড.আন্টি আমাকে তার একটা পেসেন্টের গল্প শুনিয়েছে। আর তা শুনার পর আজ আমার মনে হচ্ছে তার কষ্টের সামনে আমার কষ্ট তো কিছুই না।

ফারিয়ার কথা শুনে যুনাইরাহ কিছুটা আগ্রহ নিয়ে বলে,

– কি সেই গল্প?

এরপর ফারিয়া সেই ঘটনা খুলে বললে যুনাইরাহর আর বুঝতে বাকি থাকে না যে তা কোন পেসেন্ট না বরং নাযাকাতের ছিলো। তাই যুনাইরাহও আর বেশি কিছু না বলে ফারিয়াকে ঘুম পারিয়ে নিজের রুমে এসে দেখে আরিয়ান অন্ধকার রুমে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে। যুনাইরাহ তার পাশে গিয়ে নীরবে দাঁড়িয়ে বলে,

– একজনের জীবন অন্ধকার করে এখন নিজে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে কি হবে?

যুনাইরাহর কথা শুনে আরিয়ান পাশে ফিরে কিছু বলতে নিলেই যুনাইরাহ বলে,

– মানুষ ঠিকই বলে বাপ মায়ের পাপ সন্তানদের বইতে হয়। যা আজ আমার মেয়ে তোমার জন্য বইছে।

আরিয়ান কিছু বলতে চাইলে যুনাইরাহ হাত উঠিয়ে থামিয়ে দিয়ে বলে,

– আজ আমি বলবো তুমি শুনবে।

যুনাইরাহ একটু থেমে বলে,

– আমি সব জানি। এতোকাল নাযাকাতকে আমার সামনে খারাপ বানিয়েছো। বিনা দোষে মেয়েটাকে আমার মনের ঘৃনার পাত্র বানিয়েছো। এতোকাল বলে এসেছো নাযাকাতের সাথে আগে তোমার সম্পর্ক ছিলো কিন্তু সত্যি তো অন্য কিছুই বলছে। নাযাকাত কখনো তোমাকে ওর লাইফে ফ্রেন্ড ছাড়া কিছু ভাবেও নি আর তুমি ওকে তোমার লাইফে না পেয়ে এভাবে বদনাম করতে পারলে! শুধু বদনামই না জীবনটাই নরক বানিয়ে দিয়েছো ওর। মানলাম আমাকে ভালোবাসো না বলে আমার থেকে দূরে থাকতে তোমার আর নাযাকাতের রিলেশন মিয়ে মিথ্যা বলেছো। এতো যখন অপছন্দের ছিলাম বলে দিতে ডিস্টার্ব করতাম না তোমায় আমি। এতোই যখন নাযাকাতকে ভালোবাসতে তাহলে ওর লাইফ হেল করে আমাকে কেন বিয়ে করলে? কেন তোমার মতো পাপীর সঙ্গী করলে। যেখানে আমি এতোকাল ভেবে আসছি যে নিজেকে তুমি সেকেন্ড চান্স দিচ্ছো। আর আমিও আমার ভালোবাসা পেয়ে গিয়েছি। কিন্তু আজ সত্যি জেনে আমার কেমন এক অদ্ভুত বাজে ফিল হচ্ছে বুঝাতে পারবো না। জানো, আমি যখন আজ নাযাকাতকে দেখেছিলাম, ভেবেছিলাম ভুল জায়গায় চলে এসেছি। আমার মেয়ের জন্য ও সঠিক কাউন্সিলার না। বাট আমি ভুল ছিলাম। ও ফারিয়াকে এতো ভালোভাবে বুঝিয়েছে যে আমার মেয়ে একদিনেই যথেস্ট ফুরফুরে হয়ে গিয়েছে। ওই মেয়ের উপর আমার আজ কোন ঘৃনা না বরং সম্মান আসছে। জানো আমি ওকে কেন এতো হেইট করতাম? কারন ও তোমাকে কষ্ট দিয়েছিলো। যাকে আমি এতো ভালোবাসি, তাকে সে কষ্ট দিলো। কিন্তু আজ বুঝতে পারছি। কষ্ট ও তোমাকে না, তুমি আমাদের দিয়েছো। নাযাকাতের সাথে যথেষ্ট অন্যায় করেছো যার কোন হিসাব নেই আর আমাকে এতোগুলো বছর নিজের ভালো মানুষি দেখিয়ে এসেছো। আসলে তুমি তো মানুষই না৷ এতোবছর লুকিয়েও লাভ হলো না কোন৷ সত্য আজ সামনে আসলোই। তাছাড়া এটা তো সত্যের নিয়মই যে এক সময় না এক সময় তা বেরিয়ে আসবেই। জানো আজ নাযাকাত আমাকে তোমাদের কথা বলার সময় ওর কেবিনের বাহিরে দেখেছিলো। ও আমাকে কি বলেছে জানো? বলেছে অতীত নিয়ে যেন এখন নিজের সংসার না ভাঙি কারন এতে ফারিয়ারই খারাপ হবে। এতো কিছুর পরেও মেয়েটা আমার মেয়েকে নিয়ে ভাবছে। ও চাইলেই তোমার এই কটু সত্য তোমার মেয়েকে খুলে বলে তোমার সম্মান তোমার মেয়ের সামনে জিরো করে দিতে পারতো কিন্তু করেনি। কারন ও জানে একজন মেয়ের কাছে তার বাবা কি মূল্য রাখে। তাছাড়া আমি যখন তোমাদের কথা শুনেছিলাম সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলাম যে আমি ফারিয়াকে নিয়ে তোমার থেকে দূরে চলে যাবো, কিন্তু নাযাকাতের ছোট একটি কথা আমাকে আমার সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য করে। আমি পরে অনেক ভেবে দেখলাম। ও যা বলেছে ঠিকই তো বলেছে। ফারিয়ার কন্ডিশন এখন এমনিতেই ঠিক না। আর এই অবস্থায় ও তোমার এসব কাজ সম্পর্কে জানলে যতোটুকুই ভালো হয়েছে আজ তা নষ্ট হয়ে যেতো। পরের ছেলে ওর যা ক্ষতি করেছে তা নিয়ে ও সামলে উঠলেও নিজের বাপের এমন কর্মের কথা জানলে মেয়ে আমার মারাই যাবে। তাই ফারিয়ার কথা চিন্তা করেই এখনো চুপ আছি আমি। আজ যদি আমি গাড়ি থেকে তোমার পিছন পিছন না আসতাম তাহলে হয়তো এই সত্য থেকে আজও দূরে থাকতাম। তবে চিন্তা করো না আমি তোমার কথা ফারিয়াকে বলবো না আর না তোমার কুকর্মের কথা। কয তোমার জন্য আমি আমার মেয়ের উপর এখন আর কোন আচ আসতে দিতে পারবো না। এতোকাল ভালোবেসে ছিলাম তোমাকে আর আজ বাধ্য হয়ে নিজের মেয়ের জন্য থাকবো। কারন তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা আজ চলে গিয়েছে। আমার মন তো চাইছে এখনই তোমার সত্য পুলিশকে বলে দেই। কিন্তু আমার কাছে তো প্রমান নেই বরং কারো কাছেই নেই। অনেক সুন্দরভাবে প্রমান নষ্ট যে করে দিয়েছো। আমার মেয়ের জন্য তোমার সাথে থাকছি আমি ঠিকই। কারন এমন সিচুয়েশনে তোমার বিরুদ্ধে আমি কোন পদক্ষেপ নিলে তা আমার মেয়ের জন্যই খারাপ হবে, তাই ফারিয়ার দিকে তাকিয়ে আমি চুপ করে সব সহ্য করে যাবো। আর মনে রাখবে আজ থেকে বরং এখন থেকেই তোমার স্ত্রী যুনাইরা আরিয়ান মারা গিয়েছে আর আমার মেয়ের থেকে দুরত্ব কিছুটা বজায় রাখবে। কারন আমি চাই না তোমার অসুভ ছায়া আমার মেয়ের উপর পড়ে ওর কোন ক্ষতি হোক।

যুনাইরাহ একশ্বাসে আরিয়ানকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই এসব বলে চলে যায়। এদিকে আরিয়ান যুনাইরাহর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,

– এসব তো আমার প্রাপ্য ছিলো।

বলেই চোখ দিয়ে কয়েক ফোটা পানি ঝড়িয়ে ফেলে। এদিকে আরিয়ান আর যুনাইরাহ ফারিয়াকে নিয়ে রেগুলার কাউন্সিলিংয়ের জন্য যাচ্ছে। প্রায় এক মাস ফারিয়াকে কাউন্সিলিং করার পর ফারিয়ার অবস্থা আগের থেকে উন্নত হয়েছে। এমনকি অনেকটা স্বাভাবিকও হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে আরিয়ান আর যুনাইরাহ ফারিয়ার সামনে হাসিখুশি আর কাছাকাছি থাকলেও একা এক রুমে থেকেও তারা একে অপর থেকে বহু দূরে সরে গিয়েছে।

.

আজ নাযাকাত তার পেসেন্টেদের কাউন্সিলিং করা শেষ করে বাসায় আসতে নিলেই তার কেবিনে হটাৎ করেই আরিয়ান যুনাইরাহ আর ফারিয়াকে নিয়ে আসে। যা দেখে নাযাকাত কিছুটা ভড়কে যায় আর ভাবে আবার কিছু হলো না তো? কারন ফারিয়ার কাউন্সিলিং শেষ হয়ে গিয়েছিলো। এদিকে ফারিয়া এসেই নাযাকাতকে জরিয়ে ধরে বলে,

– থ্যাংক ইউ। আপনার জন্যই আজ আমি এই সিচুয়েশন ফেস করার স্ট্রেংথ পেয়েছি৷ আপনার কাছে আমার একটা কথা জানার ছিলো ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড।
– আরে মাইন্ড করবো কেন? বলে ফেল।
– আপনি আমাকে আপনার এক পেসেন্টের কথা বলেছিলেন। আপনি তার কথা এতো ডিটেইলস কিভাবে জানেন? যেমনটা আপনি বললেছিলেন শুনে মনে হচ্ছে এখনও আপনার তার সাথে যোগাযোগ আছে।

নাযাকাত এক নজর আরিয়ান আর যুনাইরাহর দিকে তাকিয়ে মিথ্যা হাসি মুখ নিয়ে ফারিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,

– হ্যাঁ আছে। বরং সে আমার খুব কাছের ফ্রেন্ড। তাই জানি।
– সত্যি!
– হ্যাঁ।
– তাহলে একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
– করো?
– আপনার সেই পেসেন্ট কি এখনও তার সেই এক্স বয়ফ্রেন্ডকে ভালোবাসে?
– তোমার কি মনে হয়? ভালোবাসা উচিত?
– না।
– তাই হয়েছে। ও ওর সেই এক্স বয়ফ্রেন্ডকে ভালোবাসে না। কারন যেই ছেলে দুইদিন পর পর মেয়ে বদলায় সে আর যাই করুক ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না। এমনকি ও সেই ছেলের সম্পর্কে কথা বলা তো দূর নামটা শুনাও পছন্দ করে না এখন।

এতোটুকু বলেই নাযাকাত আরিয়ানের দিকে শক্ত নজরে তাকিয়ে বলে,

– তাছাড়া ও শুধু ওর সেই এক্স বয়ফ্রেন্ডই না সেই বেস্টফ্রেন্ডকেও ঘৃনা করে, যার জন্য সে তার সব হারিয়েছে।

নাযাকাতের কথা শুনে ফারিয়া বলে,

– অবশ্যই ঘৃনা করা উচিত এমন মানুষদের। যারা বেস্টফ্রেন্ড হয়ে তারই ক্ষতি করে।

আরিয়ান ফারিয়ার এমন কথা শুনে মন খারাপ করলেও অবাক হয় না। কারন সে সত্যি বলেছে। এদিকে ফারিয়ার কথা শুনে আরিয়ানের এমন রিয়্যাকশন যুনাইরাহও খেয়াল করে। এদিকে ফারিয়া নাযাকাতকে আরও বলে,

– আচ্ছা আরেকটা কথা বলি? ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড।
– ইয়া সিউর।
– আমি কি আপনার সেই পেসেন্টের সাথে দেখা করতে পারি?

ফারিয়া কিছুটা এক্সসাইটেড হয়েই এই কথাটি বলে কিন্তু এই কথা শুনে নাযাকাতের হাসি উড়ে যায়। এমনকি আরিয়ান আর যুনাইরাহরও। কারন ফারিয়া তো জানে না যে সেই পেসেন্ট আর অন্য কেউ না নাযাকাত ছিলো। এদিকে নাযাকাত আর মুখে ফেইক হাসি নিয়ে বলে,

– সে তো এখন জার্মানির বাহিরে। কাজে গিয়েছে।
– ওহ। আসলে আমি তার সাথে দেখা করে বলতে চাচ্ছিলাম যে, এভরি উইমেন শুড বি লাইক হার। কারন তিনি যেভাবে এই বদ্ধ সমাজের চাপে নিজেকে না হারিয়ে প্রতিটা সিচুয়েশন সামনা সামনি একজন যোদ্ধার মতো ফেস করেছেন। তার মতো মেয়েরা অন্যান্য মেয়েদের জন্য প্রেরনা।

ফারিয়ার কথা শুনে নাযাকাত চুপ হয়ে যায়। আর বলে,

– আমার সাথে তার দেখা হলে আমি তাকে এই কথাটি বলে দিবো৷
– থ্যাংক ইউ৷ বাই দা ওয়ে জানেন, বাংলাদেশ থেকে কল এসেছিলো তারা আরশাদকে ধরতে পেরেছে।
– বাহ এটা তো গুড নিউজ।
– হ্যাঁ৷ আর আজ রাতের ফ্লাইটে আমরা বাংলাদেশ ব্যাক করছি। আমি আপনাকে অনেক মিস করবো।

নাযাকাত বেশি কিছু না বলে ঠোটের কোনে হাল্কা এক হাসি নিয়ে বলে ফারিয়ার চিবুক ছুয়ে বলে,

– আমিও৷

নাযাকাতের এমন কথা শুনে ফারিয়া তাকে জরিয়ে ধরে। এই কয়েদিনের কাউন্সিলিংয়ে ফারিয়া নাযাকাতকে নিজের অনেক কাছের একজন বানিয়ে ফেলেছিলো। এদিকে ফারিয়ার ফোনে তার এক ফ্রেন্ডের কল আসলে ফারিয়া বাহিরে চলে আসলে আরিয়ান নাযাকাতকে বলে,

– আমার অতীতের পাপের জন্য পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও। জানি, আমি যেই পাপ করেছি মাফ চাওয়ারও যোগ্য না। তাও চাইছি। আই এম সরি।

আরিয়ান দুই হাত জোর করে ক্ষমা চেয়ে চোখ মুছতে মুছতে বাহিরে চলে আসে। নাযাকাত একটি শব্দও মুখ দিয়ে বের করে নি। এদিকে যুনাইরাহ বলে,

– এতোকাল আমি সত্য জানতাম না তাই তোমাকেই দোষী ভাবতাম। কিন্তু আজ তোমার প্রতি আমার সম্মান অনেক বেড়ে গিয়েছে। আমার মেয়ের জন্য তুমি যা করেছো আমি হাজার ধন্যবাদ দিয়েও তা শোধ করতে পারবো না। আর আরিয়ান তোমার সাথে যা করেছে জানি অনেক খারাপ করেছে। এখন হাজারও মাফ চাইলে তোমার মনের ক্ষত দূর করা সম্ভব হবে না। তাও আমি আরিয়ানের পক্ষ থেকেও মাফ চাইছি। সম্ভব হলে ক্ষমা করে দিও।

নাযাকাত শক্ত মুখেই বলে,

– ফারিয়ার খেয়াল রেখো যুনাইরাহ। আল্লাহ হাফেজ। ইনশাআল্লাহ আমাদের আর দেখা হবে না।

বলেই নাযাকাত চলে যায়। এদিকে সেদিন রাতে আরিয়ান তার ফ্যামিলি নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে আর নাযাকাত তার রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে কতোক্ষন পরিষ্কার আকাশের দিকে তাকিয়ে তার স্টাডি রুমে এসে ডায়রি নিয়ে বসে। মাঝেমধ্যে ডায়রি লেখাটা নাযাকাতের অভ্যাস। আজ প্রায় বহুদিন পর নাযাকাত আবার ডায়রি নিয়ে বসেছে।

” বহুদিন পর নিজের অতীতের রুপ আবার আমার সামনে এসেছিলো। যখন ফারিয়ার কাউন্সিলিং করাচ্ছিলাম মনে হচ্ছিলো যেন আমি নিজেকেই বুঝাচ্ছি। জীবনটা কেমন অদ্ভুত। আজ যখন আরিয়ান মাফ চাইছিলো তখন ভাবছিলাম এতো খুজার পরেও যাকে পেলাম না সে সামনে এলো তো এলো নিজের মেয়ের জন্যই এলো। তাও সেই সেম সিচুয়েশনে পড়ে এসেছে যেখানে সে আমাকে ফেলেছিলো কয়েক বছর আগে। আসলে যতোক্ষন না নিজের উপর দিয়ে সেই একই বিপদ না যায় কেউ কারো পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হয় না। আমার থেকে সব ছিনিয়ে নিয়ে যখন চলে গিয়েছিলো আমার সিচুয়েশন বুঝে নি আর আজ যখন নিজের মেয়ে সেই সেম সিচুয়েশনের পড়েছে আমার কষ্ট বুঝতে পারছে সে। কিন্তু সময়ের জিনিস সময়ে না বুঝে অসময়ে বুঝলে তো লাভ নেই। যেমন এখন আমার কাছে হাজার বার মাফ চেয়েও লাভ নেই। কারন যা হারানোর তা আমি হারিয়েই ফেলেছি। যার একমাত্র কারন আরিয়ান আর আমি ওকে এরজন্য কখনো মাফ করতে পারবো না। কখনো না।
আমাদের মেয়েদের জীবনটা খুবই অদ্ভুত। দুনিয়ার সব বোঝা কোন না কোন ভাবে ঘুড়ে আমাদের উপরই পড়ে। আর আমাদের এই দুনিয়া সভ্য হলেও মানুষের মস্তিস্ক যেন আজও সেই পুরোনো আমলে পড়ে আছে। যেখানে মেয়ের দোষ নেই সেখানে তাকেই দোষারোপ করাটা যেন সমাজের একটা জঘন্য নিয়মে পরিনত হয়েছে।
এই সমাজে ভালোবাসাটা যেমন খেলনা হয়ে গিয়েছে, তেমনি বিশ্বাসটাও। যার জন্য আজ অবধি আরিশকে নিজের জীবনে জরাতে ভয় লাগে। ভালোবাসায় বিশ্বাস হারিয়েছি। বন্ধুত্বেও বিশ্বাস হারিয়েছি। এখন যেন কারো উপর বিশ্বাসই আসে না। আমার মন সবসময় আরিশকে,আরিশের ভালোবাসাকে, আরিশের প্রতি বিশ্বাসকে সত্য বললেও মস্তিস্ক বারবার জানান দেয় আবার যন বিপদে না পড়ি। আবার যেন ভেঙে পড়তে না হয়। কারন আমি ভেঙে পড়লে কেউ আমায় ভরসা দিতে আসবে না। কারন আমি মেয়ে। এই সমাজ একটা মেয়ের জন্মের পরেই তার পায়ে সীমাবদ্ধতার বেড়ী বেধে দেয়। বেশি রাত করে বাহিরে থাকা যাবে না, জোরে হাসা যাবে না, দুরন্তপনা তার জন্য নয়৷ তার উপর যদি তার মন কেউকে ভালোবেসেই ফেলে তখন তাকে বলা হবে তুমিই দোষী। কেন তার কাছে গেলাম৷ আর নাহয় বলা হবে তারা তো পুরুষ তারা তো এমন একটু করতেই পারে। তুমি মেয়ে হয়ে পুরুষের সাথে নিজের তুলনা কেন করো? মেয়েদের তো সহ্য ক্ষমতা বেশি। সহ্য তোমায়ই করতে হবে। অ্যাডজাস্ট করে নাও, কারন তুমি, মেয়ে ”

সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here