মেয়ে,পর্ব:২

#মেয়ে

লেখিকা : সৈয়দা রাইসা আবেদীন অহনা

মধ্যাংশ

ড.আরিশের হটাৎ এমন কথা শুনে আরিয়ান কিছুটা চিন্তিত হয়ে যায় আর বলে,

– কেন?
– আরে চিন্তা করবেন না। আসলে আমাকে কাল পারসোনাল কিছু জরুরি কাজে বাংলাদেশ যেতে হচ্ছে। তবে আপনি চিন্তা করবেন না। সোহেল ভাই আমার পরিচিত। উনি আমাকে বলেছেন কেসটা কতোটা জরুরি, তাই আমি আপনাকে আমার পরিচিত একজন সাইকায়াট্রিসের ঠিকানা দিচ্ছি। সে ফিমেল ডক্টর। আশা করি আপনার আর প্রবলেম হবে না।
– আরে না, না আর কোন প্রব্লেম নেই। যেহেতু আপনি অন্য আরেকজন সাইকায়াট্রিসের খোজ দিয়ে গেলেন। ইটস সো কাইন্ড অফ ইউ।
– আমি তাহলে আপনাকে তার হসপিটাল আর টাইম স্কেজিউল মেইল করে দিচ্ছি।
– ইয়া সিউর।
– তাছাড়া আপনি সোহেল ভাইয়ের বন্ধু মানে আমাদের ভাই, তাই এতোটুকু তো করতেই পারি তাইনা। আর তাই আমি নিজেই আপনাকে কল করে জানিয়ে দিলাম৷
– থ্যাংকস।

বলেই আরিশ আরিয়ানকে নাযাকাতের স্কেজিউল আর হসপিটাল অ্যাড্রেস মেইল করে দিয়ে নাযাকাতকে কল করে,

– কি করছো?
– কিছুনা ইউনিভার্সিটির কিছু লেকচার শিট বানাচ্ছিলাম। (নাযাকাত চোখে চশমা পড়ে লেপটপে কিছু কাজ করতে করতে বলে)
– ওহ।
– কিছু কি বলতে চাচ্ছ?
– হ্যা,,,
– কি? (নাযাকাত চোখ থেকে চশমাটা খুলে কিছুটা গম্ভীর হয়ে বসে)
– নাযাকাত ফ্রি আছো না কাল?
– হ্যাঁ ফ্রিই তো। কেন?
– না, আই মিন টু সে, কাল পেসেন্টের অনেক বেশি প্রেসার নেই তো?
– না তেমন নেই। অন্যদিনের তুলনায় কিছুটা কমই। কেন?
– আসলে তোমাকে না জানিয়ে একটা ডিসিশন নিয়ে নিয়েছি৷
– কি?
– আসলে কাল আমি ভাইয়ের সাথে আমাদের ফ্যামিলির কিছু কাজে বাংলাদেশ যাচ্ছিলাম। তো আমার একটা পেসেন্ট আছে৷ অনেক ইম্পর্ট্যান্ট কেস। দুইবার সুইসাইড অ্যাটেম্পড করার ট্রাই করেছে। তাই ভাবলাম এমন কেস ওয়েট করানো ঠিক হবে না তাই তোমার কথা বলে দিয়েছি। সে তোমার কাছে কাল যাবে।
– না ভালো করেছো। এমন কেস ওয়েট না করানোটাই ঠিক।
– হুম।
– তো কাল যাচ্ছো কখন?
– সকালের ফ্লাইটেই।
– ওহ। হেভ আ সেফ ফ্লাইট।

এরপর তারা আরো কিছুক্ষন কথা বলে কল কেটে দেয়। আর আরিশ বাংলাদেশ যাওয়ার প্রিপারেশন নেয় আর নাযাকাত নিজের কাজে মন দেয়। এদিকে পরেরদিন সকালে আরিশ বাংলাদেশ যাওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়ে আর অন্যদিকে নাযাকাত ইউনিভার্সিটির ক্লাস শেষ করে হসপিটালে প্রবেশ করতেই চোখের সামনে কাউকে দেখে থেমে যায়। সে যেন সেখানেই অবশ হয়ে যায়। তার পুরোনো অতীতকে আজ সে এতো কাছ থেকে দেখছে। আর সেই ব্যাক্তিটি আর অন্য কেউ না আরিয়ান ছিলো। এদিকে আরিয়ান যুনাইরাহ আর ফারিয়াকে নিয়ে অনেক আগেই এসে ওয়েট কর‍তে থাকে। আরিয়ান যুনাইরাহ আর ফারিয়াকে ওয়েটিং রুমে বসিয়ে ডাক্তারের আসার সময় জানতে কাউন্টার থেকে ফিরে আসার সময় তার চোখও নাযাকাতের উপর পড়ে। আরিয়ানও যেন সেখানেই স্তব্ধ হয়ে যায়। নাযাকাত এক নজরে আরিয়ানকে দেখতে থাকলেও আরিয়ান যেন আজ নাযাকাতের চোখে চোখ মিলাতে পারছে না। হটাৎই নাযাকাতের খেয়াল হতেই সে দ্রুত পাশ কাটিয়ে নিজের কেবিনে চলে আসে। এদিকে নাযাকাত নিজের কেবিনে যাওয়ার সময় যুনাইরাহর নজরে পড়ে। যুনাইরাহও কিছুটা অবাক হয়ে নাযাকাতের দিকে তাকিয়ে থাকে৷ এদিকে নাযাকাত নিজের কেবিনে চলে গেলে আরিয়ানও এসে যুনাইরাহর পাশে বসতেই যুনাইরাহ ধীর আওয়াজে বলে,

– এটা সেই মেয়ে না যার ছবি আমাকে দেখিয়েছিলে আর বলেছিলে এই মেয়ে তোমার সাথে রিলেশনে ছিলো কিন্তু পরে ডিচ করেছে তোমাকে।

আরিয়ান যুনাইরাহর দিকে এক নজর তাকিয়ে বলে,

– এখনো মনে আছে?
– এই মেয়ে এখানে কি করছে?
– কি করছে আমি কিভাবে বলবো?

যুনাইরাহ প্রতিউত্তরে আর কিছু বলে না। এদিকে কাউন্টার থেকে আরিয়ানকে ডাকা হলে আরিয়ান যুনাইরাহ আর ফারিয়াকে নিয়ে নাযাকাতের রুমে প্রবেশ করে চেয়ারে বসতেই পাশের রুম থেকে নাযাকাত বেরিয়ে আসলে আরিয়ান আর যুনাইরাহ অবাক হয়ে যায় আর আরিয়ান তো মুখ ফসকে বলেই ফেলে,

– তুমি!

আরিয়ানের কথায় আর আরিয়ানকে যুনাইরাহর সাথে দেখে নাযাকাত একজন অপরিচিতদের মতোই বিহেইভ করে এসে বসতেই বলে,

– জ্বি আমি। ড. নাযাকাত।

নাযাকাত নিজেকে ডক্টর হিসেবে পরিচয় দিলে যুনাইরাহ অবাক হয়ে বলে,

– হোয়াট!

এদিকে পাশ দিয়ে আরিয়ান বলে,

– তার মানে ড. আরিস তোমার,,,, আই মিন আপনার কথা বলেছিল?

এদিকে আরিয়ানের এমন কথা শুনে নাযাকাতও অবাক হয়ে মনে মনে ভাবে,

“তার মানে আরিশ আরিয়ানের মেয়ে ফারিয়ার কথা বলছিলো! হায় আল্লাহ! আরিয়ানের মেয়েকে তাহলে আমার কাউন্সিলিং করতে হবে! আমায় শক্তি দিও আল্লাহ”

নাযাকাত নিজে নিজেই এসব ভেবে বলে,

– ওহ তাহলে আপনারা তারাই যার কথা ড. আরিশ আমাকে বলেছিলো। যাই হোক,,,,

নাযাকাত আরিয়ানের থেকে নজর সরিয়ে ফারিয়ার দিকে তাকিয়ে হাল্কা এক হাসি দিয়ে বলে,

– ফারিয়া তুমি ভিতরের রুমে গিয়ে বস।

এরপর একজন মহিলা এসে ফারিয়াকে ভিতরের রুমে নিয়ে বসায়। এদিকে ফারিয়া ভিতরের রুমে গিয়ে বসলে নাযাকাতও সেই রুমের দিকে যেতে নিলে যুনাইরাহ বলে উঠে,

– আগে জানলে তোমার কাছে আমার মেয়েকে নিয়ে আসতাম না। যেই মেয়ে ভালোবাসার নাম করে কয়দিন পর ছেলেকে ডিচ করে দেয়, যে এটা বুঝে না যে ছেলেটা তার ডিচ করায় কতোটা কষ্ট পেয়েছে, যার মধ্যে মন নামের জিনিস বলতে কিছুই নেই, সে আবার অন্যের কি কাউন্সিলিং করবে?

যুনাইরাহর এই কথাটি নাযাকাতের গায়ে লাগে তাই সে সেখানেই থেমে যায় আর যুনাইরাহর দিকে ফিরে তাকিয়ে শক্ত মুখে বলে,

– তো এখন কি মেয়ে কে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন? চাইলে যেতে পারেন। আমি আটকাবো না।

এদিকে আরিয়ানেরও যুনাইরাহর নাযাকাতের প্রতি এমন কথা শুনে কিছুটা রাগ হলেও আরিয়ান নিজেকে সামলে বলে,

– যুনাইরাহ থামবে! এইখানে আমরা কেউ কারো পারসোনাল রিজন নিয়ে কথা বলতে না আমাদের মেয়েকে নিয়ে এসেছি।

যুনাইরাহকে থামিয়ে দিয়ে আরিয়ান নাযাকাতকে উদ্দেশ্য করে বলে,

– নাযাকাত আমার মেয়েটা লাস্ট কয়েক সপ্তাহ ধরে অনেক স্ট্রেসে আছে। প্লিজ ডু সামথিং।

নাযাকাত একনজর আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে আর কিছু না বলেই ভিতরের রুমে চলে আসে। এদিকে ফারিয়া ভিতরের রুমে এসে যেন নিজের স্ট্রেস কিছুটা ভুলেই গিয়েছে। কারন ভিতরের রুমের পরিবেশটা অনেকটা ন্যাচারাল ছিলো। একটা কার্ভ সোফা তার সামনে একটা নরমাল চেয়ার আর তার পাশেই ছোট একটা টেবিল রাখা। দেয়ালের এক সাইডে বুক শেলফ। আরেক সাইডের দেয়ালে কিছু গাছ পালার সাথে একটি কৃত্তিম ফোয়ারার মতো সেখান দিয়ে পানি বয়ে যাচ্ছে যার শব্দ কানে গিয়ে লাগতেই এক আলাদা অনুভূতির সৃষ্টি হচ্ছে। মনে হচ্ছে কোন ঝর্নার পানি বয়ে যাচ্ছে। এদিকে রুমের পাশেই বারান্দার মতো বড় করে ফ্রেম করে খাচার মতো বানানো যেখানে পাখির কিচিরমিচির শব্দ কানে লাগে। আর বারান্দার ডোর ওপেন করা যেখান দিয়ে প্রকৃতইর খোলা বাতাস এসে রুমে প্রবেশ করে। নাযাকাতের হসপিটাল কেবিনটা হিল সাইডের পাশে হওয়ায় দুরের পাহারগুলো দেখা যায়। ফারিয়া সেই রুমে এসে বারান্দার সামনে দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর কৃত্তিম ফোয়ারার পানির শব্দ সাথে খোলা প্রকৃতির বাতাস যেন ফারিয়াকে তার সকল চিন্তা থেকে কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে নিয়ে যায়। নিজেকে খুব হাল্কা আর ফুরফুরে মেজাজের মনে হতে থাকে। এদিকে নাযাকাত রুমে প্রবেশ করেই ফারিয়াকে এমন ফুরফুরে দেখে মুচকি এক হাসি দিয়ে রুমে প্রবেশ করতে করতে বলে,

– রুমটা পছন্দ হয়েছে নাকি?

কারো গলার আওয়াজ পেয়ে ফারিয়া পিছনে ফিরে নাযাকাতকে দেখে হাল্কা এক হাসি দিয়ে বলে,

– অনেকদিন পর কিছুটা ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে গিয়েছি। রুমটা সত্যি অনেক সুন্দর করে ডেকোরেট করা। যে কেউই তার কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে যাবে।
– তাহলেতো ভালোই। তো তুমিও কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে গিয়েছিলে নাকি?
– কাইন্ড অফ।
– এসে ডিস্টার্ব করলাম না তো?
– হাহাহা না।

নাযাকাত ফারিয়ার সাথে কথা বলতে বলতেই কার্ভ সোফার সামনে রাখা চেয়ারে বসে পড়ে হাতে একটি ছোট ডায়রি আর কলম নিয়ে। আর ফারিয়া কার্ভ সোফাতে রিল্যাক্স হয়ে দুই পা উঠিয়ে বসে দুইহাত পেটের উপর রাখে। যেমনটা করে নাযাকাত বসতে বলে। নাযাকাত কথার কথায় ফারিয়ার সাথে কি হয়েছে তা জানতে চাইলেই মূহুর্তের মধ্যেই ফারিয়ার চেহারার রঙ উড়ে যায়। ফারিয়ার হাত কাপতে থাকে আর ঘামতে শুরু করে যা দেখে নাযাকাত উঠে এসে ফারিয়াকে এক গ্লাস পানি খেতে দিয়ে বলে,

– রিল্যাক্স করো। এতো হাইপার হওয়ার কিছুই নেই। আমাকে কোন ড. না তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড ভাবো। যার সাথে চোখ বন্ধ করে সব কথা শেয়ার করতে পারো। কি এমন ফ্রেন্ড আছে না তোমার।
– হ্যাঁ।
– সাবাস। এখন চোখ বন্ধ করে তোমার সেই ফ্রেন্ডের কথা ভাবো যে সে তোমার সামনে আর মন খুলে সব বলে দাও।

নাযাকাত অনেক ভালোমতো করে ফারিয়াকে বুঝিয়ে বললে ফারিয়া ধীরে ধীরে তার সাথে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা খুলে বলতে থাকে। এদিকে ফারিয়ার কথা শুনে নাযাকাত যেন নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছে না। মনে হচ্ছে সে যেন নিজেকেই আজ দেখছে। যে পরিস্থিতিতে সে পরেছিলো পনের বিশ বছর আগে। নাযাকাতের চোখ মুখ লাল হয়ে আসে। সে নিজেকে সামলানোর সর্বাত্তক চেস্টা করছে। কারন সে চায় না ফারিয়ার সামনে নিজেকে দূর্বল করতে। কারন সে এখন দূর্বল হয়ে পড়লে ফারিয়াকে সামলাবে কে? তাই নাযাকাত বহু কষ্টে নিজেকে সামলে নেয়। এদিকে ফারিয়া সব বলে চোখ খুলতেই নাযাকাত ফারিয়ার সামনে এক গ্লাস পানি তুলে দেয়। ফারিয়া ঢক ঢক করে সমস্ত পানিটুকু খেয়ে বসতেই নাযাকাত বলে,

– মাত্র এইটুকু কারনের জন্য নিজের জীবন শেষ করে দিচ্ছিলে! একবারো ভেবে দেখেছো তোমার বাবা মা যারা তোমার জন্য নিজের জান দিয়ে দেয় তাদের কি অবস্থা হতো? কোন বাবা মার জন্য নিজের সন্তানের লাশ দেখা কতোটা কষ্টের।

নাযাকাতের কথায় ফারিয়ার দুইচোখ দিয়ে অঝোরে পানি বইতে থাকে। নাযাকাত কিছুটা থেমে গিয়ে বলে,

– আজ তোমাকে একটি গল্প বলবো। আমার এক পেসেন্টের। কি শুনবে?

নাযাকাতের কথা শুনে ফারিয়া চোখ মুছে তাকায় আর সম্মতি জানায়। তখন নাযাকাত চেয়ারে হেয়ার দিয়ে বসে চেয়ারের দুইহাতলে হাত রেখে পায়ের উপর পা তুলে ইজি হয়ে বসে বলে,

– আমার কাছে একজন পেসেন্ট এসেছিলো। অনেক বছর আগে। সেও তোমার মতো ছিলো। তোমার মতো সেম এজেই তার সাথেও এমন হয়। মানুষ অনেক বোকা কখন হয় জানো?

ফারিয়া মাথা নাড়িয়ে না জানালে নাযাকাত বলে,

– ভালোবাসায় পড়লে। কেউ যখন কাউকে নিজের চেয়ে বেশি অন্ধের মতো বিশ্বাস করে ভালোবাসতে শুরু করে তখনই সে বোকা হয়ে যায়। সে যতোই চালাক ব্যাক্তি হোক না কেন। তাই এই দুনিয়ায় নিজের বাবা মা ছাড়া কাউকে অন্ধের মতো বিলিভ করাটাও বোকামি ছাড়া কিছু না। তাই বলে কথায় কথায় কাউকে সন্দেহ করাটাও ভালো কথা না৷ তোমার মধ্যে জাজমেন্টাল মাইন্ড থাকা লাগবে। কারন চোখে দেখা জিনিস সবসময় সত্যি হবে আর কানে শোনা জিনিসও যে সবসময় ভুল হবে তা না। তোমাকে যাচাই করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ কারন বিনা সিদ্ধান্ত নিয়ে কাউকে দোষী করাটা ভুল।

নাযাকাত এক দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে আবার বলে,

– তো যাই হোক যে টা বলছিলাম আর কি,,,,, তো আমার সেই পেসেন্টও কাউকে তোমার মতোই এতোটা ভালোবেসেছিলো কাউকে। আর সে ভালোবেসে ঠিক তোমার মতোই বোকা হয়ে একই কাজ করেছিলো। কিন্তু তোমার সাথে তার পার্থক্যটা কি জানো? তুমি যাকে ভালোবেসেছ সে তোমার প্রতি বদলা নিয়েছে, কিন্তু সেই পেসেন্ট যাকে ভালোবাসতো সে একটা প্লে বয় ছিলো যে কিনা শুধু তার কাছ থেকেই না বরং অন্য সব মেয়ে দের পটিয়েও এসব ছবি নিতো। কিন্তু সেই ছেলেটা কোন মেয়ের পারসোনাল ছবি লিক করতো না। একটা টাইম পরে ডিলিট করে দিতো। মানে যতোদিন কোন মেয়ের সাথে রিলেশন রাখতো ছবি থাকতো রিলেশন নেই ছবিও নেই। কিন্তু প্রবলেম কি হয়েছে জানো? সেই ছেলে আমার সেই পেসেন্টের সাথে রিলেশনে থাকার পরেও ছবিগুলো কোনভুল বশত ডিলিট করে ফেলে, তখন সে আবারও মেয়ের কাছে ছবি চাইলে মেয়ে ছবি দিতে মানা করে তখন সেই ছেলে ওকে মিথ্যা বলে যে এখন ছবি না দিলে পরে আগের দাওয়া ছবিগুলো লিক করে দিবে। সেই ছেলেটা ওকে এটা বলে না যে তার পাঠানো আগের ছবি ডিলেট হয়েছে। উলটো ওকে ব্লাকমেইল করা শুরু করে। তখন সেই মেয়ের এক বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো ও অনেক ভালো হ্যাকিং জানতো। সেই ফ্রেন্ড ওই ছেলের আইডি হ্যাক করে জানতে পারে যে ছবিগুলো ডিলেটেড। এরপর ফ্রেন্ড মেয়েটিকে সব খুলে বলে ইভেন সেই ছেলে কেমন তাও বলে৷ যা শুনে মেয়েটি ছেলেটির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয়। কিন্তু তাও মেয়েটি ডিপ্রেশনে চলে যায়। কারন সে তখনও বিশ্বাস করে উঠতে পারে নি যে যেই ছেলেকে সে এতো ভালোবাসতো বিলিভ করতো সে এমন কাজ করবে তার সাথে। আর এর কিছুদিনের মাঝেই সেই মেয়েটির বেস্ট ফ্রেন্ডটা মেয়েকে প্রপোজ করে বসে। কিন্তু মেয়েটি তাকে না বলে দেয়, যেটা স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু দিন দিন তার বেস্টফ্রেন্ডের বিহেইভিয়ার অনেক অ্যাগরেসিভ হতে শুরু করে। মেয়েটার প্রতি এক ধরনের অবসেশন হয়ে যায়। সেই বেস্ট ফ্রেন্ডটা মেয়েটিকে পাওয়ার জন্য এতোই পাগল হয়ে যায় যে, সে তখন মেয়েটিকে ব্লাকমেইল করা শুরু করে।

এতক্ষন পরে ফারিয়া কিছুটা উৎসাহ নিয়ে জিজ্ঞেস করে,

– ব্লাকমেইল! (কিছুটা আশ্চর্য হয়ে)

ফারিয়ার কথা শুনে নাযাকাত একটু সোজা হয়ে সামনের দিকে হাল্কা ঝুকে হাটুর উপর হাতের কুনুই ভর করে দুই হাত মুঠো করে নিয়ে বসে আর বলে,

– হ্যাঁ ব্লাকমেইল৷ সেই ফ্রেন্ডটা বলে যদি তার সাথে সম্পর্ক না করে তাহলে মেয়েটি তার এক্স বয়ফ্রেন্ডকে যেসব ছবি দিয়েছিলো তা লিক করে দিবে।
– হোয়াট! (অবাক হয়ে)
– ইয়েস।
– কিন্তু এটা কিভাবে পসিবল।
– মেয়েটির সেই ফ্রেন্ডটা যখন তার এক্স বয়ফ্রেন্ডের আইডি হ্যাকিং করে,,, তখন সেখান থেকে ডিলেটেড কিছু ছবি রিসাইকেল করে পেয়ে যায়। যা এতোদিন না বললেও তখন বলে।
– হায় আল্লাহ! তারপর কি হলো?
– তারপর আর কি মেয়েটি প্রথমে বিলিভ করে নি আর পাত্তাও দেয় নি। বরং রাগ করে সেই ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। আর অঘটনটা তখনই ঘটে। ছেলেটা সত্যি সত্যি সেসব ছবি লিক করে দেয়।
– ওহ মাই গড। (অবাক হয়ে)
– তোমার ছবিগুলো লিক করেছে সেই যে তোমার উপর বদলা নিতে চেয়েছে। কিন্তু সেই মেয়েটির ছবিগুলো লিক করেছিলো সে যাকে মেয়েটি বেস্ট ফ্রেন্ড ভাবতো। কখনো কল্পনাও করে নি যে সে এমন করবে। এই ছবিগুলো যদি সেই সো কল্ড তার এক্স বয়ফ্রেন্ডও করতো তাও হয়তো মেয়েটির এতোটা কষ্ট পেতো না যতোটা তার কাছের সেই ফ্রেন্ড করেছে বলে পেয়েছে। কারন তার সেই সো কল্ড এক্স বয়ফ্রেন্ড আগেও তাকে ব্লাকমেইল করেছে আর ছেলেটা কেমন তা সে জানতো কিন্তু সেই কাজটা যখন তার বিশ্বাসের কেউ করলো সেটা আনক্সপেক্টেড ছিলো তার কাছে।
– আই আন্ডারস্ট্যান্ড। (কিছুটা মন খারাপ করে বলে)
– ভালোবাসা মানুষকে খারাপ থেকে ভালো করলেও কখনো কখনো ভালোকেও খারাপ করে দেয়। আর ভালোবাসায় ভালো থেকে খারাপ হওয়াটার একটাই রিজন থাকে অবসেশন। যেটা মানুষকে দিয়ে যেকোন কিছুই করাতে পারে।

কিছুটা অন্যমনস্ক হয়েই কথাটা বলে নাযাকাত।তখনই ফারিয়া বলে,

– আচ্ছা তারপর সেই মেয়েটির সাথে কি হয়েছে?

এরপর নাযাকাত ছোট এক নিশ্বাস ফেলে ফারিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,

– একচুয়ালি সি বিলং ফ্রম ভেরি কনজারভেটিভ ফ্যামিলি। তার ফ্যামিলি যখন এসব ব্যাপার জানতে পারে মেয়েটিকে প্রচুর মারধর করে। তোমার প্যারেন্ট তো শুধু একটি চড় মেরেছিলো তোমাকে, যেমনটা তুমি বললে কিন্তু সেই মেয়ের প্যারেন্ট অনেক রুড ছিলো। তাদের জন্য মান সম্মান অনেক বেশি ম্যাটার করতো। দে ডোন্ট ইভেন কেয়ার দোষ কার। তার শুধু এটাই মানতো সোসাইটিতে তাদের কি বলবে মানুষ।
– তারপর কি হলো?
– তারপর তারা মেয়েটিকে বাসা থেকে বের করে দেয়। তোমার প্যারেন্ট তো সাইবার মামলা করেছে কিন্তু সেই মেয়ের ফ্যামিলি তা করে নি। উলটো তাদের মেয়েকে বাসা দিয়ে বের করে দেয়। এমনকি বলে দেয় তাদের জন্য সে মারা গিয়েছে। এরপর মেয়েটির এক মেয়ে ফ্রেন্ড ছিলো যে কিনা তাকে আশ্র‍য় দেয়। এমনকি মেয়েটির জন্য তার ফ্রেন্ডের প্যারেন্ট নিজের মেয়ের পরিচয়ে সাইবার মামলাও করে৷
– তারপর কি সেই কালপ্রিট ধরা খেয়েছিলো?

এরপর নাযাকাত একটু মনখারাপ করে বলে,

– না। কারন সেই কালপ্রিট যেই ডিভাইস দিয়ে এই কাজ করে সেই ডিভাইসের আইপি লোকেট করে পুলিশ সেখানে গেলে দেখতে পায় সেই ডিভাইস কোন আবর্জনা স্তুপে পড়ে আছে। ইভেন ছেলেটি তার পরিচয় ও আলাদা দিয়েছিলো। যার জন্য সেই লেপটপ কার ছিলো তাও খুজে পাওয়া যায় নি।
– পুওর গার্ল৷ (মন খারাপ করে)
– ইয়েস।
– এরপর কি হয়?
– এরপর পুলিশ সেই ছবিগুলো ইন্টারনেট থেকে সরিয়ে তো ফেলে কিন্তু মেয়ের ফ্যামিলি তাকে নিজের বাসায় তোলা তো দূর পরিচয় দাওয়াও বন্ধ করে দেয়। এরপর সেই মেয়েটি তার যেই মেয়ে ফ্রেন্ডের বাসায় ছিলো তার প্যারেন্ট মেয়েটিকে আরো স্টাডি করায় এরপর মেয়ে স্কলারশিপ পেয়ে দেশের বাহিরে চলে আসে আর সেখানে এসে সেই স্কলারশিপের টাকা দিয়ে পি.এইচ.ডি কম্পিলিট করে।
– মেয়েটি অনেক স্ট্রাগল করেছে। ইভেন যেই ফ্যামিলি তাকে হেল্প করেছে দে আর সো কাইন্ড।
– হ্যাঁ। তারা ছিলো বলেই মেয়েটি এখনো বেচে আছে। নাহলে এতোদিনে মেয়েটি হয়তো সুইসাইড করে ফেলতো।
– মেয়েটা স্ট্যাবলিশ হওয়ার পর কি তার ফ্যামিলি তাকে মেনে নিয়েছিলো?
– না।
– কেন?
– তখনও তার ফ্যামিলি মেয়েটিকে মানে নি কারন মেয়েটির জন্য তাদের সোসাইটিতে নাম খারাপ হয়েছে তাই। আর একটা কনজারভেটিভ ফ্যামিলির জন্য তাদের মান, সম্মান তাদের বাচা মরা থেকে বেশি ম্যাটার করে। তার মেয়ের জন্য যেহেতু তাদের নাক মুখ কাটা গিয়েছে তাই তারা মেয়েটির সাথে কোন সম্পর্কই রাখে নি আর।
– সো আনলাকি৷ (মন খারাপ করে)
– ইয়া সি ইজ৷
– ইজ? (অবাক হয়ে)
– ইয়া, সি ইজ,,,, কারন মেয়েটি এতোটাই আনলাকি ছিলো যে মেয়েটির বাবা মা মারা যাওয়ার সময় তাদের মরা মুখটাও দেখতে দেয় নি। এর থেকে আনলাকি আর কি হতে পারে একজন সন্তানের জন্য বলো? যে তার বাবা মায়ের মরা মুখটাও দেখার নসিব হলো না৷ আর এখানে তো তোমার প্যারেন্ট তোমার সাথে আছে। আর কি চাই। আরেকটা কথা কি জানো তুমি তো সুইসাইড অ্যাটেম্পড করার ট্রাই করেছো। কিন্তু মেয়েটি সেই চিন্তা মাথায়ও আনে নি৷ যখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করি যে তার মাথায় কি কখনো এমন চিন্তা ভাবনা আসে নি? তখন সে আমায় কি উত্তর দেয় জানো?
– কি?
– এটাই যে দুনিয়া থেকে বাপ মা নাহয় সম্পর্ক ছিন্ন করে দিলো, এখন সুইসাইডের মতো মহাপাপ করে আল্লাহর থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করার মতো সাহস আমার নেই। ক্যান ইউ ইভেন ইম্যাজিন কেউ কতোটা স্ট্রং হলে এই কথাটা বলতে পারে?
– সত্যি সে খুবই স্ট্রং।
– ইয়েস সি ইজ। ইভেন তোমাকে তার মতোই স্ট্রং হতে হবে। ওর সাথে তো কেউ ছিলো না তাও এতোটা স্ট্রং আর এখানে তো তোমার সাথে তোমার প্যারেন্ট আছে তাহলে এতো উইক কেন তুমি? ইউ হেভ টু বি স্ট্রং লাইক হার। লাইক আ লাওন৷ তাছাড়া এখানে তো তোমার কোন দোষই নেই। তুমি ভালোবেসেছিলে। বিশ্বাস করেছিলে। কিন্তু সে তোমার বিশ্বাস ভেঙেছে। একটা কথা কি জানো? প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভালোবাসা আর ঘৃনা দুটোই খুবই টক্সিক হয়। যেটা তোমার সাথে হয়েছে। তুমি তাকে অতিরিক্ত ভালোবাসতে। অনেক বিলিভ করতে। আর বিলিভ করাটাই স্বাভাবিক, কারন ভালোবাসার অপর নাম তো বিশ্বাস তাই না। সো এখানে যদি কেউ শাস্তির দাবিদার হয় সেটা হবে সেই ছেলে তুমি না। কেন নিজেকে শাস্তি দিচ্ছো? শাস্তি যদি দিতেই হয় তাহলে তাকে দাও যে দোষী। স্ট্রং হয়ে উঠে দারাও। রুখে দাড়াও এই সমাজের এই নোংরা নিয়ম থেকে, যেখানে কি না সবকিছুর দোষ নারীকেই দাওয়া হয়। যেখানে কোন মেয়ের দোষ থাকে না সেখানেও দোষী হতে হয় তাকে।

নাযাকাতের কথায় আর সেই মেয়েটির গল্প শুনে যেন ফারিয়া নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে পায় আর বলে,

– আইল ট্রাই। আমি দাড়াবো। কোন অন্ধকার ঘরে থেকে নিজেকেই নিজে দম আটকে মারতে চাই না আমি।
– ভেরি গুড।
– কিন্তু!
– কিন্তু কি?
– নিজের প্রতি রাগ উঠছে, কিভাবে এতোটা বোকা হলাম আমি। আমার বাবা মা আমাকে নিয়ে যেখানে প্রাউড করতো আমি তাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি। আই এম রিয়্যালি আ ভেরি ব্যাড গার্ল। আমি জানি আমার এই ভুল তারা কখনোই মাফ করবে না। তাছাড়া আমি জানি আমি সুইসাইড অ্যাটেম্পড করার ট্রাই করেছিলাম বলে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে। আদারওয়াইজ দে ডোন্ট কেয়ার অফ মি। আর আমি যা করেছি তাতে আমার কেয়ার না করাটাও অস্বাভাবিক কিছু না।
– কে বলেছে মাফ করবে না? আর কে বলেছে তারা তোমার কেয়ার করে না। তারা তোমার প্যারেন্ট। তারা তোমার অনেক চিন্তা করেন। তুমি জানো তুমি কতোটা লাকি।
– লাকি!
– ইয়েস ইউ আর। কয এমন কঠিন সময়েও তোমার প্যারেন্ট তোমার সাথে আছেন। যেটা সেই মেয়ের সাথে ছিলো না (কিছুটা মন খারাপ করে বলে নাযাকাত এই কথাটি)। আর এমন কঠিন সময়ে প্যারেন্টের সাথে থাকাটা অনেক স্ট্রেংথ দেয়। তাছাড়া তারা তোমার এতোটাই কেয়ার করে যে তারা অলরেডি সেই ছেলের বিরুদ্ধে সাইবার মামলাও করেছে।
– হোয়াট!
– হ্যাঁ।
– আপনি কিভাবে জানলেন যে আমার আব্বু সাইবার মামলা করেছে? যেটা আমি নিজেই জানি না।
– তোমার আব্বু ড.আরিশের সাথে তোমার ব্যাপারে ইন ডিটেইলস কথা বলেছিলো ইভেন সে কি কি স্টেপ নিয়েছে অপরাধীর বিরুদ্ধে তাও বলেছিলো। আর তাই আমি শুনেছি ড. আরিশের থেকে। কারন তোমার কাউন্সিলিং আমি না ড.আরিশের কাছে হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তার কিছু ইমারজেন্সি কাজ পড়ে যায় বলে ড.আরিশ তোমাকে আমার কাছে পাঠায়।
– ওহ।
– এখন তুমিই বলো, তারা তোমার সাথে না থাকলে, তোমার চিন্তা না করলে এমন করতো? হাজার ভুল হলেও তুমি তাদের সন্তান। তারা তোমাকে তাদের থেকে আলাদা করবে না। বুঝতে পেরেছো৷ আর যা বললে সুইসাইড করছিলে বলে তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছে। তোমার কেয়ার করে বলেই এখানে নিয়ে এসেছে। তারা বাবা মা হয়ে তাদের হৃদয়ের টুকরার লাশ কি করে দেখতো? তারা যদি তোমার কেয়ার নাই করতো তাহলে কি তোমার সুইসাইড অ্যাটেম্পড করার পরেও তোমাকে বাচানোর চেস্টা করতো?

নাযাকাত হাল্কা করে ফারিয়ার হাত ধরে বলে,

– দেখো ফারিয়া, আমরা মানুষ ফেরেশতা না ভুল আমরা করেই থাকি, তাই বলে সুইসাইড কোন ফাইনাল ডিসিশন হতে পারে না। জীবনে চলার পথে এমন হাজারও হোচট খেতে হবে তাই বলে হেরে গেলে তো চলবে না তাইনা। জীবন তো এখনও অনেক বাকি। এতো তাড়াতাড়ি তো হেরে গেলে তো চলবে কিভাবে? তোমাকে তো উঠে দাড়াতে হবে। আর ভালোবাসা এখন পাও নি তার মানে এই না জীবনটাই শেষ। তোমাকে ছোট ছোট জিনিসে খুশি খুজে নিতে হবে। দেখার নজর পাল্টাও সাথে উদ্ভট চিন্তাভাবনাও। দেখবে জীবনটা নতুন রঙ নিয়েছে। প্রতি শীতে গাছের সব পাতা যেমন ঝড়ে যায় আর বসন্তে নতুন করে পাতা গজায় ঠিক তেমনই তোমাকেও কষ্ট ঝেরে ফেলে নতুন করে সামনে এগিয়ে চলার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। নতুন করে তৈরই হতে হবে। যখনই মন চাইবে মন খুলে কেদে দিবে নাহয় কষ্ট চেপে রাখলে এক সময় এই কষ্ট এতোই বেশি হবে যে তখন কেদে কষ্ট কমাতে চাইবে কিন্তু কাদতে পারবে না উলটো ভিতরে ভিতরেই যন্ত্রনা পাবে। তাই কষ্ট জমিয়ে না রেখে কেদে ঝেরে ফেলো। নেগেটিভ থট মাথা দিয়ে ফেলে দাও। রাতের পর যেমন দিন আসে তেমনি কষ্টের পরেও সুখ আসবেই৷ এক ফোটা আলো যেমন অন্ধকারে আটকে থাকা মানুষের মনে আশা যোগায় তোমাকেও সেই আলোর খোজ করতে হবে যেন অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসতে পারো। আর যখনই তুমি এই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে প্রকৃত সুখের সন্ধান পাবে৷ আর তুমি ভালো থাকলে তোমার প্যারেন্টও ভালো থাকবে। কি চাও না তোমার প্যারেন্ট আবারও তোমার সাথে আগে মতো নরমাল হয়ে যাক?
– হ্যাঁ চাই। (হাল্কা হেসে)
– তাহলে প্রমিশ করো তুমি এখন থেকেই ভালো থাকার চেস্টা করবে। আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
– প্রমিশ। (হাসি দিয়ে)

প্রতিউত্তরে নাযাকাতও হাসি দিয়ে বলে,

– ভেরি গুড।

নাযাকাত ফারিয়াকে বুঝাতে পেরে যেন কোন যুদ্ধ জয় করার আনন্দ খুজে পেয়েছে।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here