যদি দেখা না হতো পর্ব -০৪

#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_০৪
#Tanisha_Esu

তখন কলেজে চান্জ পেয়ে কেবল প্রথম দিন ক্লাস শেষে একটা মেয়েকে দেখে আমার কেমন জানি ফিল হতে থাকে।মেয়েটি আর কেউ না নাতাশা।

১ম যখন ওকে প্রোপজ করতে গেছিলাম তখন সবার সামনে আমাকে থাপ্পড় মেরেছিলো।তার পরও আমি হার মানি নাই পাগলের মতো ভালোবাসতাম ওকে।একসময় আসলো ও আমাকে ভালোবাসতে শুরু করলো,,, যে মেয়ে আমাকে রিজেক্ট করেছিলো সেই আমাকে প্রোপজ করলো।

এইভাবেই চলতে লাগলো আমাদের রিলেশন,,এমনি একদিন..

নাতাশাঃ কাব্য একটা কথা বলি(ঘাড়ে মাথা রেখে)

কাব্যঃ হুম বলো

নাতাশাঃ আমি যদি দেখি তুমি অন্য কারোর হয়ে যাচ্ছো সেদিনই হবে তোমার আর আমার শেষ রিলেশন।আর কক্ষনো আমাকে তুমি পাবেনা(চোখ দিয়ে পানি পরছে)

কাব্যঃ আরে পাগলি তোমাকে ছাড়া আমি কোথায় যাব,,আমি যে শুধু তোমাকেই ভালোবাসি,,আর কাউকে না।এমন কথা আর কখনো বলবে না

কাব্যের এমন কথা শুনে নাতাশা তাকে জড়িয়ে ধরে।আস্তে আস্তে বিয়ের ডেট আগাতে থাকে,,

ঠিক যেদিন আমাদের এংগেস্টমেন্ড তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে প্রোপজ কর সেটা নাতাশা দেখে ফেলে আমাকে ভুল বোঝে সে।সে মনে করে আমি তোমাকে ভালোবাসা।

এই কথাগুলো বলতে বলতে কাব্য ভাইয়া কাঁদতে থাকে।আবার বলতে থাকে।

তুুমি চলে যার পর ও ওই আংটিটা ছুরে ফেলে দেয় আমার মুখের উপর আর বিয়ে ক্যান্সেল করে দেয়।আগে একটা কথা বলেছিলো আমি কারোর হলে ও আর রিলেশনটা রাখবে না।আমার একটা কথাও শুনে নাই।

ওতো লোকের মধ্যে বিয়েটা ভেঙ্গে দিলো জানো আমার এবং আমার পরিবারের কতোটা অসম্মান হয়ছে শুধু মাএ তোমার জন্য হয়ছে এইগুলো,,,এর প্রাপ্য শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে তানিশা

এই বলে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলেন আমার আটকানোর মতো সাহস নেই।এ আমি কি করলাম আমার জন্য শুধু মাএ আমার জন্য কাব্য ভাইয়ার জীবন শেষ হয়ে গেলো।।

শরীর অনেক কাঁপছে কাব্য ভাইয়া এখনো বাড়িতে ফেরেনি,, রাত একটা বাজতে গেলো আমার ভয় হওয়া শুরু হলো।।

এখন যেন মনে হচ্ছে আমাদের #যদি_দেখা_না_হতো 😔 তাহলে হয়তো এতোকিছু ঘটতো না।

আমিই তাহলে কাব্য ভাইয়ার প্রথম বউ,,,কিন্তু এতোকিছু হয়ে গেলো আমার পরিবার থেকে কেউ একবারো ফোন বা খোঁজ- খবর নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করলো না,,আসলেই আমি তাদের কাছে বোঝা হয়ে দাড়িয়েছিলাম। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যেন ঘুমিয়ে পরেছি।

সকালে,,

আমার ঘুম ভাঙ্গলো সূর্যের আলোই,,হঠাৎ আত্নাটা কেপে উঠলো কাব্য ভাইয়া কোথায় তারাতারি রুমে গিয়ে দেখলাম শুয়ে আছে।

আজও আমার শশুড়-শাশুড়ি আসবে না কোন কাজের লোককেও দেখছি না,,তাই আমিই সকালের নাস্তাটা বানিয়ে ফেললাম।তিনি উঠে ফ্রেস হয়ে এসে ব্রেকফাস্ট করে নিলেন।

তারপর বাইরে চলে গেলেন,রোজ দিনের মতোই আমার সাথে কোন কথা বললেন না তিনি।আমি তার রুমে গিয়ে সব গুছালাম,, গুছাতে গিয়ে একটা ছবি পেলাম সেটা নাতাশা আপুর

আমিঃ আচ্ছা যাকে ভালোবাসা যায়,,হাজার কারণ বাধা আসলেও তাকে ভালোবাসে মানুষ,,কিন্তু তুমি কেন একবারও কাব্য ভাইয়ার কথা শুলো নাই,,একবারতো শোনা উচিত ছিলো,,তার মানে কি তুমি ওকে ভালোইবাসনি।এ কি ভাবছি আমি,, দোষ সব তো আমার,, মরার দিনই আমি তাকে প্রোপজ করতে গেলাম

হঠাৎ নিচ থেকে তানিশা তানিশা বলে ডাক এলো,,আমি নিচে চলে আসলাম।দেখি তার দুহাতে ব্যাগ ভর্তি বাজার।

তানিশাঃ একি এতো বাজার কেনো এনেছেন

কাব্যঃ আমার কয়েকজন ফ্রেন্ড আসবে এবং তুমি এইগুলো এখনি রান্না করবে।

তানিশাঃ এতো রান্না করবো কেমনে

কাব্যঃ তুমি না আমাকে ভালোবাসো এইটুকু করবা না এটা তো কোন কঠিন কাজইনা আর হ্যাঁ এক ঘন্টার সময় তোমার কাছে( এই বলে আবার বেরিয়ে গেলো)

তার কথা গুলো কেমন জানি লাগলো,,,আজ সে আমার ভালোবাসা নিয়ে প্রশ্ন করলো ভালো।

ব্যাগ গুলো নিয়ে রান্না ঘরে গিয়ে সব পরিপাটি করে রান্না করতে থাকলাম,,, আমার নানু আমাদের কাছেই থাকতো।সেই বুড়ি থুক্কু নানুই আমাকে রান্না করা শিখাইছে,,আজ তার একটা কথা খুব মনে পরছে,,

” তুই তো বইসা বইসা খাস,, শোহুর বাড়ি গিয়া বইসা বইসা কি খাইতে দিবে,,হন ছেড়ি আই রান্না করা শিখাইগি তোর কাজে আসবোগা”

আজ হয়তো তার জন্য রান্না করতে পারি।তার কাছে রান্না শিখতে ভালোই লাগতো বাট অনেক খুটা দিতো যা সহ্যের মতো না।কিন্তু আজ নেই খুব কষ্ট লাগছে মনে পরছে তাকে।চোখের পানি মুছে রান্নায় মনযোগ দিলাম।

সেই কখন গেছেন তিনি ফেরার নাম নেই এদিকে টেবিলে খাবার ভর্তি করে রেখেছি। হঠাৎ কলিংবেল বাজলো আমি গিয়ে খুলে দিলাম দেখি তিনি একা।আমাকে না দেখার ভান করে চলে আসলো ভিতরে হাত ধুয়ে খেতে বসলো।আমি যাস্ট তাকে দেখছি

একের পর এক তরকারি দিয়ে খেয়েই চলেছে আমি যাস্ট অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি,,,এতো পেটে জায়গা তার।।

কাব্যঃ এই একদম নজর দিবে না বলে দিলাম

তার কথা শুনে ভেংচি কাটলাম একটা আর তিনি মুখ ঘুরালেন।খেয়ে দেয়ে হাত ধুয়ে আমার শাড়িতে হাত মুছলেন

কাব্যঃ খাবার গুলো জোস ছিলো😋,,আর তুমিও খেয়ে নিও।

এই বলে ডেং ডেং করতে করতে চলে গেলো সে।এতোটুকু বুঝলাম আজ একটা ছোট খাটো কষ্ট দিলো আমায়,,আমিও খেয়ে রুমে চলে আসলাম।

কিছুক্ষণ পর,,

তিনি আসলেন আমার রুমে,,আমি উঠে দাঁড়ালাম

তানিশাঃ কিছু লাগবে আপনার

তিনি কিছু বললো না ধীরে ধীরে এগিয়ে আসতে লাগলো,,কেমন জানি হার্টবিট ফাস্ট হতে লাগলো।

তিনি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে পেটে হাত দিয়ে স্লাইড করতে লাগলেন তার সাতে নাক ঘাড়ে ডুবিয়ে দিয়েছেন।আর আমি ফ্রিজড হয়ে গেচি জমে।

তিনি আস্তে আস্তে আমার ঠোঁটের দিকে আগাতে থাকলেন আমি চোখ বুজে ফেললাম।আমাকে ভুল প্রমাণিত করে তিনি কানে কানে বললেন,,

কাব্যঃ এটাই তোমার শাস্তি

বলে এক ধাক্কা দিলেন,, আমি বেডে গিয়ে পরলাম।তিনি বলতে লাগলেন,,

কাব্যঃ কি মনে করেছিলে তোমার মতো থার্ডক্লাস মেয়েকে আমি ভালোবাসবো প্রশ্নই উঠেনা। I just hate u miss sry misses, Tanisha…

এই বলে তিনি চলে গেলেন,,,আমার যেন কলিজা কেউ টেনে বের করছে।বুকের মধ্যে এতো ব্যাথা করছে মনে হচ্ছে কেউ হাতল পিটাচ্ছে।।সেইরাতে আর ঘুম হলো না,,থার্ডক্লাস এটাই কানের মধ্যে বেজে চলেছে








চলবে

(আশা করি এইবার আপনারা কাহিনিটা বুঝতে পারবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here