যদি দেখা না হতো পর্ব ৯+১০

#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_০৯ (#Season_02)
#Writer_Tanisha_Esu 👩


ঠিক রাত ১২ঃ২০ গেট নাড়ার শব্দ পেলাম,,ভয়ে গায়ের লোম উঠে যাচ্ছে।কি করে আরেজনকে নিজের করে নিব,,

শুভ্রঃ কি হলো সালাম করবে না নাকি,,আজব মেয়ে তো

গলার ভয়েজ শুনে আমি মুখের দিকে তাকিয়ে শকড এতো শুভ্র,,,বর বেশে কি সুন্দর করে দাড়িয়ে আছে।

শুভ্রঃ তো সারপ্রাইজ কেমন লাগলো জানু

আমি বেড থেকে উঠে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরলাম,,,আর অবাধ্য চোখের জল পরতে লাগলো,,,

শুভ্রঃ এই পাগলি কাঁদছো কেন হু,,তোমার কি মনে হয় আমি অন্যজনকে বিয়ে করতে পারি

তানিশাঃ কেন করলে এমন

শুভ্রঃ প্রথম বিয়েতে কোন কিছু নিয়ম মেনে করা হয়েছিলো না,,তাই এবার নিয়ম মেনে বিয়েটা করলাম।বাট আপনি যে একবারও আমার মুখের দিকে তাকালেন না তাহলে এতো কষ্ট হতো না।

তানিশাঃ আমাকে কেন কষ্ট দিলে??

শুভ্রঃ তোমাকে একটু কষ্ট দিলাম যাতে তুমি আমাকে ছেড়ে না যাও।এবার কান্না থামাও তো(চোখ মুছে দিয়ে) আহহ কি মিষ্টি লাগছে,,, লেপ্টে থাকা কাজলে দুচোখ আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,,নিজেকে কি আর কন্ট্রোল করা যায়

শুভ্রের কথা শুনে তানিশা অনেক লজ্জা পেলো এবং মাথা নিচু করে ফেললো,,,,,,,,,,,,,,

শুভ্রঃ লজ্জা মুখে আরও বেশি সুন্দর লাগছে তোমাকে,,, এই পাগলি তুই কি আমার হবি রে??

তানিশাঃ হুম(মাথা নিচু করে) আচ্ছা আমি এখন ঘুমাবো

শুভ্রঃ এই এই(কোমড় চেপে ধরে) ঘুমাবা মানে,, আজ তোমার জন্য ঘুম হারাম বুঝলা।আজ না আমাদের বাসররাত,,কতো স্বপ্ন থাকে যানো,,,ঘুম নাই বুঝলা,,ভালোবাসি অনেক ভালোবাসি

এই বলে তানিশাকে শক্ত করে চেপে ধরে পেটে স্লাইড করতে লাগলো,,,তানিশা শুভ্রের স্পর্শ পেয়ে কেঁপে কেঁপে উঠছে।তারপর তানিশার ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে নিয়ে নিলো আজ আর তানিশা কোন বাধা দিলো না।একসময় দুজন ভেসে গেলো ভালোবাসার চাদরে……

সকালে,,,

দুটি চোখ তানিশার দিকে তাকিয়ে আছে অনেকক্ষণ থেকে,,তানিশার কেমন জানি অস্বস্তি হতে লাগলো তাই ঘুম থেকে উঠে দেখলো শুভ্র তাকিয়ে আছে,,

শুভ্রঃ শুভ সকাল,, মহা রানী

তানিশাঃ শুভ সকাল

শুভ্রঃ তো ঘুম কেমন হলো??

তানিশা চোখ ছোট ছোট করে শুভ্রের দিকে তাকিয়ে আছে,,

শুভ্রঃ কি হলো বউ আমার দিকে এমন করে তাকিয়ে আছো কেন??

তানিশাঃ ঘুমাতে দিছেন আমাকে আপনি??

শুভ্রঃ 😐😐😁

তানিশাঃ ছাড়ুন আমি উঠবো

শুভ্রঃ আরেকটু পর

তানিশাঃ নাহহ উঠবো ছাড়ুন তো

শুভ্রঃ আচ্ছা বুঝিনা,, এবার তুমি একবার আপনি,, যে কেনো একটা বলা যায়না

তানিশাঃ হি হি,,আপনিই বলুন কোনটা বলবো

শুভ্রঃ তুমি করে বলবা বুঝলা

তানিশাঃ আচ্ছা,, এবার ছাড়ো

শুভ্রঃ ওয়েট

শুভ্র তানিশার মুখ হাত দিয়ে কপালে একটা ভালোবাসার পরশ এঁকে দেয়।

শুভ্রঃ এবার যাও (মুচকি হেসে)

তানিশা শুভ্রের গালে একটা কিস করে উঠে পরে,,শুভ্র হয়তো এটা আশা করেনি।তানিশা ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।

শাওয়ার করে বেরিয়ে এসে দেখে শুভ্র এখনো ঘুমিয়ে আছে।তানিশা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শুভ্রের কাছে গিয়ে ডাকতে থাকে,,আর শুভ্র এক ঝটকায় নিজের উপর ফেলে দেয়,,এবং তানিশার মুখ দেয়

তানিশাঃ এই এই তোমার জন্য বারেবার শাওয়ার নিতে পারবোনা এই শীতে

তানিশার কথা শুনে এবার শুভ্র হাসতে থাকে আর তানিশা মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে

তানিশাঃ যাও শাওয়ার নিয়ে আসো,,আমি নিচে গেলাম।

শুভ্রঃ আচ্ছা

আমি নিচে গেলাম আমার শাশুড়ী আমার দিকে তাকিয়েই আছেন,,,,

শাশুড়িঃ মাশাল্লাহ আমার বৌমাকে অনেক সুন্দর লাগছে

তার কথায় আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকলাম

তানিশাঃ মা আপনি কি এখানেই থাকবেন

শাশুড়িঃ যদি শুভ্র রাজি তাকে তাহলে থাকবো,,,তা শুভ্র কোথায়

তানিশাঃ ও শাওয়ার নিতে গেছে,, এখনি চলে আসবে

শাশুড়িঃ আচ্ছা,, ও আসলে ব্রেকফাস্ট করে নিও,,আমি তনয়ার(শুভ্রের বোন) বাড়িতে যাচ্ছি

তানিশাঃ আজকেই

শাশুড়িঃ হুম মা,,আসি

এই বলে তিনি চলে গেলেন,, কারণ শুভ্র তার মাকে দেখলেই রেগে যায়।

তানিশাঃ নাহহ,, এদের পরিবারকে যে করেই হোক ঠিক করতে হবে,, সব যেন এলোমেলো

শুভ্রঃ তানিশা কি ভাবছো

পাশে তাকিয়ে দেখে একদফা ক্রাস খাইলাম নীল কালারের পাঞ্জাবী,ব্লক পেন্ট,,কালারটা তার গায়ের রঙয়ের সাথে খুব সুন্দর মানিয়েছে,,কালো কালারের ওয়াচ পুরাই হিরো,,,আহহ আমার বরকে আমিই নজর দিচ্ছি কেন,, কিছু হলে

শুভ্রঃ কি ভাবছো এতো(আমাকে একটু ঝাকিয়ে)

তানিশাঃ আপনি কি কোথাও যাবেন??

শুভ্রঃ নাহহ,,আজ সারাদিন তোমার সাথে চিপায় থাকবো(চোখ মেরে)

আমি আর কোন কথা বললাম না তার হাত ধরে ডাইনিং টেবিলে বসে কাবার বেড়ে দিলাম,,

শুভ্রঃ এতো খাবার কেন আর তুমি খাবা না

তানিশাঃ কে বলেছে আমি খাব না,,তুমি খাইয়ে দিবে আমাকে

শুভ্রঃ আচ্ছা,, হা করো

তিনি এক লোকমা আমার মুখে তুলে দিলো,, এইভাবেই দুজনে খেয়ে রুমে আসলাম।তিনি মোবাইল ঘাটতে লাগলেন আর আমি কখন থেকে তার দিকে তাকিয়েই আছি,,,

শুভ্রঃ আচ্ছা আমাকে কি বেশি সুন্দর লাগছে??

তানিশাঃ নাহহ তো একদম বান্দরের মতো লাগছে

শুভ্রঃ তাহলে ওইরকম রসগোল্লার মতো করে তাকিয়ে আছো কেনো??

এবার একটু বেশিই লজ্জা পেলাম,,, ইসস দেখলো কেমনে,,শুভ্র ফোন রেখে আমার দিকে এগিয়ে আসছে,, আমি কয়েকটা ঢোক গিললাম।

তানিশাঃ এই তুমি এগিয়ে আসছো কেন

শুভ্রঃ আমি এখন রোম্যান্টিক মুডে আছে

তানিশাঃ ওই দেখ আম্মু

শুভ্র যেই দরজার পানে তাকিয়েছে আমি এক দৌড়ে ছাদে চলে আসলাম…

বিকেলে,,

আমার আর ভালো লাগছে না বোরিং ফিল হচ্ছে তাই নিচে গিয়ে বরকে একটু জ্বালাবো এই পরিকল্পনা করেই রুমে গেলাম।রুমে গিয়ে দেখি সে হোপ ফুলে আছে আমাকে দেখেও না দেখার ভান করছে

শুভ্রঃ লাইফ অফ করে দিয়ে যাও

বুঝলাম মুড ভালো নাই ঘুমাবে,,,বেডের কাছে সুইচ যেই বন্ধ করতে গেলাম তিনি এক টানে নিজের উপর ফেলে দিলো

তানিশাঃ কি করছেন ছাড়ুন

শুভ্রঃ আমি ঘুমাবো এখন তার সাথে তুমিও ঘুমাবে বুঝলা

পরের দিন,,,

আজ বৌভাত,,বাড়িটা আরও পরিপাটি করা হয়ছে,,আজ আমার ফ্যামিলি+ বন্ধু-বান্ধব এসেছে শুধু মেহেন্তা আপু বাদে।শাশুড়ী ননদবাদে সবাই এসেছে,,,

শুভ্র সবার সাথে পরিচয় করে দিলো,,,, ক্যামের ফ্লাস লাইট,,সবার সাথে পরিচয়,,পিক তোলা বেশ ক্লান্ত হয়ে গেছি আমি।

সন্ধ্যায়,,

সবাই একে একে করে চলে গেছে,,,আমার পরিবারও চলে গেছে থেকে গেলো শুভ্রের ছোট মামি আর আর মামাতো বোন। ছোটবেলা থেকে নাকি মামিই শুভ্রকে বড় করেছে,,তাই শুভ্র আর মামিকে যেতে দিলোনা।

ডিনারের শেষে শুভ্র একটু বাইরে গেলো আমার মাথা খুব ব্যাথা করছিলো।

মিসেস সোফিয়াঃ আয় মা তোর মাথায় তেল ম্যাসাজ করে দি ভালো লাগবে

আমিও আর না করলাম না,,আসলেই খুব খারাপ লাগছিলো,,তিনি তেল নিয়ে চুলগুলো বিলি কেটে কেটে দিচ্ছে,,

তানিশাঃ আচ্ছা আমি আপনাকে কি বলে ডাকবো

মিসেস সোফিয়াঃ শুভ্র তো ছোট মা বলে তুই ও বলিস

তানিশাঃ আচ্ছা চোট মা একটা কথা জিজ্ঞেস করবো

মিসেস সোফিয়াঃ হুম বল পারমিশন নিতে হবেনা

তানিশাঃ আচ্ছা শুভ্রের সাথে শুভ্রের মায়ের সম্পর্ক ভালো না কেন?

মিসেস সোফিয়াঃ তোর শাশুড়ী ছেলেসহ বাদ দিয়ে অন্য এক লোককে বিয়ে করে যার পক্ষে তোর ননদ।শুভ্র খুব কষ্ট পায়ছিলো,,,তার কিছুদিন পর শুভ্রের আব্বু মারা যায় তারপর থেকে আমি শুভ্রকে নিয়ে নিছি কারণ,, আমার কোন সন্তান ছিলো না,,তখন শুভ্রের বয়স মাএ আট বছর

তানিশা কথাগুলো শুনে খুব কষ্ট পেলো এতো ছোট বয়সে এতো বড় আঘাত পেয়েছে ও,,,এই জন্য ওর মাকে সহ্য করতে পারেনা

মিসেস সোফিয়াঃ হুম রে মা ওর খেয়াল রাখিস

আমি ছোট মাকে জড়িয়ে ধরি,, তিনিও বেশ অবাক হয়,,হয়তো তিনি এটা আশা করেনি…

মিসেস সোফিয়াঃ আমি কখনো ভাবিনি আমার এতো ভালো বৌমা থুক্কু মেয়ে হবে

তানিশাঃ আচ্ছা ছোট মা আপনার কথা বার্তাতে মনে হচ্ছে অনেক শিক্ষিত

মিসেস সোফিয়াঃ হুম রে মা,,,মাস্টার্স পাস।তখন তোর ছোট আব্বু বেকার ছিলো আমাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিতে ছিলো কিন্তু আমি পালিয়ে আসি কারণ আমি তাকে হারাতে চায়ছিলাম না।পরে মেনে নেয় আমার পরিবার কিন্তু যখন বাচ্চা আর হলো না তখন শুভ্রকে পেলাম বুঝলি

শুভ্রঃ ছোট মা ওকে একা একাই আদর করছো আমি পর হয়ে গেলাম

মিসেস সোফিয়াঃ দেখছিস কি হিংসা করছে

তানিশাঃ হুম দেখছি তো,,আচ্ছা তুমি এখানেই থাকো

শুভ্রঃ হুম তানিশা তো ঠিকি বলেছে

মিসেস সোফিয়াঃ আচ্ছা


“#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_১০ (#Season_02)
#Writer_Tanisha_Esu


মেহেন্তাঃ আমি বাচ্চা নষ্ট করে দিছি

তানিশাঃ কিহহহ,,এগুলো কি বলছিস,,তোর আর কাব্যের ভুলের জন্য একটা নিষ্পাপ বাচ্চাটাকে মেরে ফেললি

মেহেন্তাঃ আমি চায়না কাব্যের কোন চিহ্ন আমার জীবনে থাকুক

তানিশাঃ তাই বলে

মেহেন্তাঃ আমি আবার নতুন করে জীবন শুরু করতে চায়

তানিশাঃ যা হবার হয়ে গেছে,, এখন চাইলেও প্রথম জায়গায় যাওয়া যাবেনা।আচ্ছা ঠিক আছে

মেহেন্তাঃ শুভ্রের কোম্পানিতে আমার একটা চাকরির ব্যবস্তা করে দে তানিশা(মিনতি করে)

তানিশাঃ আচ্ছা আমি ওর সাথে কথা বলবো,,,এখন তোর শরীরের অবস্থা স্বাভাবিক নয়,,তুই চাচ্চুর কাছে ফিরে যা

মেহেন্তাঃ আমি তার কাছে মারা গেছি হয়তল তানিশা,,,আব্বু আর কখনোই আমাকে মেনে নেবে না

চাচ্চুঃ তুই কি আমাকে এতোটাই পর ভাবিস মা

আজ সকালে মেহেন্তা আপু আমাকে ফোন দিয়ে দেখা করতে বলে আমরা একটা রেস্টুরেন্টে মিট করি।শুভ্রের কাজ থাকায় সে আমাকে রেষ্টুরেন্টের সামনে নামিয়ে দিয়ে নিজের কাজে চলে যায়।

পেছনে ঘুরে দেখি শুভ্র আর চাচ্চু দাড়িয়ে আছে।চাচ্চুর চোখ গুলো ছলছল করছে,,,,,,

মেহেন্তাঃ আব্বু তুমি

চাচ্চুঃ মেয়ে তার বাবার কাছে সবসময় সমান হয়,,অন্যায় করলেও।আর তোর অবস্থা খুব একটা ভালো না আর আমরা পাশে না থাকলে তুই সুস্থ থাকবি কিভাবে

মেহেন্তাঃ সরি আব্বু,, আমার ভুলের জন্য তোমার মান-সম্মান সব শেষ হয়ে গেছে

চাচ্চুঃ তুই কেন ক্ষমা চাচ্ছিস,,আমাদেরই ভুল,,ছোট বেলা থেকে শুধু আদর না দিয়ে একটু শাসন ও করা উচিত ছিলো।।।ফিরে চল বাড়িতে মা

মেহেন্তা আপু কাঁদতে লাগলো,,,তার সাথে চাচ্চুও

তানিশাঃ সব কিছু ঠিক হয়ে গেলো আলহামদুলিল্লাহ

শুভ্রঃ সবই তোমার জন্য

তানিশাঃ কিভাবে??

শুভ্রঃ তুমি যদি না বলতে চাচ্চুকে রেষ্টুরেন্টে আনতে তাহলে হয়তো এই সম্পর্ক টা এতো তারাতারি ভালো হতো না।

তানিশাঃ আর হ্যাঁ মেহেন্তা আপুকে একটা চাকরির ব্যবস্তা করে দাও

শুভ্রঃ ওকে চিন্তা করো না

তানিশাঃ হুম,,,

সবাই লান্চ করে নিজের বাড়িতে চলে আসলাম।ছোট মা ও আজ চলে যাবে ছোট আব্বু ঢাকা থেকে আসবে তাই।

ছোট আম্মুঃ তুই নিজির খেয়াল রাখিস আর শুভ্রের ও খেয়াল রাখিস,,,আজ আসি

তানিশাঃ ছোট আব্বু নিয়ে এসো কেমন

ছোট আম্মুঃ আচ্ছা আসি মা,,চল শুভ্র

শুভ্র ছোট আম্মুকে স্টেশন এ নামাতে গেলো,,আমি রুমগুলো গোছাচ্ছিলাম,,হঠাৎ একটা ডাইরি পেলাম,,ডাইরিটা ছিলো শুভ্রের।প্রথম কয়েক পেজ ছিলো আম্মু আম্মু নিয়ের ওর পরিবার,,,তার কয়েক পেজ জুড়ে আছে আম্মু চলে যাওয়া আর আব্বু মারা যাওয়ার কাহিনী। হঠাৎ একটা পৃষ্ঠায় চোখ আটকে যায়,,,

“আজ আমার জন্মদিন উইশ করার মতো কেউ নেই,,,আম্মু তো কোন খোজ খবার রাখেনা আর আব্বু চিরকালের মতো হারিয়ে গেছে।এই একটা দিন আমার সব দিন থেকে বেশি কষ্ট পায়।
🙂Broken_ Heart

তানিশাঃ আজ তো ১৬ জানুয়ারী তার মানে কাল শুভ্রের বার্থডে,,,,,,সারপ্রাইজ কি দিব এখন??আরেকটু পরই তো শুভ্র চলে আসবে যা করবো খুব তারাতারি।

তানিশা সব গোছগাছ করে বান্ধবীকে ফোন দিয়ে কথা বলে রান্না ঘরে গিয়ে শুভ্রের পছন্দ মতো রান্না করতে লাগলো।

বিকেলে,

তানিশাঃ ওই আমার মিষ্টি খাইতে মন চাচ্ছে

শুভ্রঃ তুমি আমাকে আগে বলবা না,,আমি নিয়ে আসছি

এই বলে শুভ্র বাইরে মনে গেলো,,আমার হাতে এখন বেশি সময় নেই এই টুকু সময়ের মধ্যে আমার সব কাজ করতে হবে।

তিনি আসতে আসতে রাত করে ফেললেন।

শুভ্রঃ এই নাওও,,ওই খেতে দাও তো খিদা লাগছে

তানিশাঃ আজ রান্না করতে মনে নাই

শুভ্রঃ কি করছিলে তুমি

তানিশাঃ ঘুমাচ্ছিলাম

শুভ্র গটগট করতে করতে চলে গেলেন রুমে হয়তো রাগ করেছে,,তাতে আমার কী রাগ তো একটু পরেই ভেঙ্গে যাবে।

রাত ১২ টা বাজতে ১০ মিনিট বাকি,,,তিনি ঘুমাননি কিন্তু ওপাশ হয়ে শুয়ে আছে আর আমি এপাশ ওপাশ করতে করতে শেষ।

তানিশাঃ এই সঠিক সময়(মনে মনে) এই শোন,, আমার সাথে ছাদে চলো তো

শুভ্রঃ কেনো??

তানিশাঃ কাপড়গুলো তুলতে মনে নাই,,

শুভ্রঃ একন তুলতে হবেনা কাল তুলো

তানিশাঃ নাহহ এখনি তুলতে হবে

শুভ্রঃ তুমি একাই যাও

তানিশাঃ তুমি কি চাও তোমার বউকে ভুতে তুলে নিয়ে যাক

শুভ্রঃ ভুতে তো তুলবে নানে এলিয়েন আসতে পারে,,চলো

আমি লাইট জ্বালালাম,,তিনি আমার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো,,

শুভ্রঃ এতো সেজেছো কেনো??

তানিশাঃ আমার মন বলেছে তাই চলো তো

আমি আসতে থাকলাম তিনি আমার পিছু পিছু আসছেন,,ছাদে পৌছে হঠাৎ লাইট জ্বলে উঠলো,, শুভ্র চমকে উঠলো,,,

চারিদিকে বেলুন ফুলে সাজানো একপাশে টেবিল আর দুপাশে চেয়ার,, ছাদের মাঝখানে টেবিলের উপর একটা কেক আর চারিপাশে বিভিন্ন রকমের চকলেট।

তানিশাঃ Happy birthday Mr, Bor…১২টা বেজে গেছে চলুন কেক কাটবেন

শুভ্র আমার মুখের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন,,

তানিশাঃ আরে আসতো(টানতে টানতে)

শুভ্রঃ আজ কতো তারিখ

তানিশাঃ একটু আগে ১৬ জানুয়ারি ছিলো আর এখন ১৭ই জানুয়ারি,, আজ আপনার জন্মদিন

শুভ্রঃ তুমি কিভাবে জানলে

তানিশাঃ উফফ তা পরে হবে,,মোমবাতিগুলো নিভাও আর কেকটা কাটো

শুভ্র খুশি হয়ে ফু দিয়ে মোমবাতিগুলো নিভিয়ে দিলো,,,আমি Happy birthday বলতে বলতে হাত তালি দিতে লাগলাম।।।তিনি ছুরি নিয়ে কেক কেটে আমার মুখে দিলো তারপর আমি তাকে খেয়ে দিলাম,,

হঠাৎ,,,

শুভ্র আমাকে জড়িয়ে ধরে ইমোশনাল হয়ে পরলো,,,

শুভ্রঃ আজ মনে হচ্ছে তানিশা আমি সঠিক মানুষকেই ভালোবেসেছি,,,তোমাকে ফিরে না পেলে হয়তো এতো বড় সারপ্রাইজ পেতাম না(আর কিছু বলতে পারলো না সে গলা ধরে আসছে)

তাকে কিছুটা স্বাভাবিক করে,,আমি একটা গোলাপ ফুল নিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে বলতে লাগলাম,,,

তানিশাঃ I Love You Mr. Husband,, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি,,সারাজীবন তোমার পাশে থাকতে চায়,,,আমরা যখন বুড়ি হবো তখন তুমি আর আমি বসে চাঁদ দেখবো রাতে তখনও তোমার পাশে থাকতে চায়।তুমি কি আমার হবে গো,,

তিনি একটা হাসি দিয়ে আমার হাত থেকে ফুল নিয়ে আমাকে উঠতে হেল্প করলেন।

শুভ্রঃ I Love You 2,,আমি আমি তোমারই হতে চায়,, ছিলাম এবং থাকবো,,আর এতোগুলো ভালোবাসা এতো বড় সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য

তানিশাঃ আসো(শুভ্রের হাত ধরে)

তানিশা শুভ্রের হাত ধরে টেবিলে বসালো,,কেন্ডেল জ্বালিয়ে দিলো,,শুভ্র দেখতে পেলো তার পছন্দের খাবার রান্না করে রেখেছে।
তানিশা শুভ্রের প্লেটে খাবার দিলে বললো,,,

তানিশাঃ খেয়ে নাও

শুভ্রঃ তুমি খাবে না

তানিশাঃ তুমি খাও আমি দেখবো পরে খেয়ো নিব

শুভ্র নিজে খেতে খেতে তানিশাকে খাইয়ে দিলো,,,

শুভ্রঃ এতো আয়োজন করলে কিভাবে তুমি

তানিশাঃ মিষ্টি কেনার নাম করে

শুভ্রঃ তুমি মিথ্যা বলছিলে

তানিশাঃ হুম,,আর আমাকে হেল্প করেছে আমার বেষ্টুগুলো

শুভ্রঃ ওদের কাল আসতে বলো ওকে(কিছুটা অবাক হয়ে)

তানিশাঃ আচ্ছা,, আর এই নাও(গিফ্ট দিয়ে)

শুভ্রঃ এটা কি আবার

তানিশাঃ কেনো গিফ্ট

শুভ্রঃ সে তো আমিও জানি কি আছে এর মধ্যে??

তানিশাঃ তুমিই খুলে দেখে নাও

শুভ্র প্যাকিং খুলে অনেক কিছু দেখলো তার সাথে বৌভাতে তোলা সেরা ছবির ফ্রেম,,একটা ডাইরি,,ওয়ার্চ,,পাঞ্জাবী,,আর দুটো রিং

শুভ্রঃ এতো কিছু(অবাক হয়ে)

তানিশাঃ হুম,,, আমাদের কোন বারেই এংগেজ হয়নি তাই রিং দুটো কেনা,,,আর ডাইরিটা দিলাম নতুন জীবনের নতুন অধ্যায়ের ভালো খারাপ মুহুর্ত লিখে রাখার জন্য

শুভ্র আমাকে উঠিয়ে দাড় করিয়ে হাতটা নিয়ে অনামিকা আঙ্গুলে রিং পরিয়ে দিলো আর আমি তার মধ্যমা আঙ্গুলে রিং পরিয়ে দিলাম।বক্সে গান হতে শুরু হলো

Shayad kabhi Na keh
Sako may tumko
kahe bina smajh lo
Tum shayad
Shayad mere khayal me
Tum ek din
Milo mujhe khi pe gum shayad
Jo Tum Na Ho🥺
Rhenge hum nahi💔
Na chaye kush
Tumse jyada tumse kam nahi

তিনি আমার সাথে গানের তালে তালে ডান্স করতে লাগলো,,, আজ আমাদের এই ভালোবাসার স্বাক্ষী রইলো এই রাত,,,চাঁদ,,তারা।

Aakho ko khwab dena
Khud hi sawal karna
Khud hi jwab dena teri traf se
Bin kaam kaam krna
Jana khi ho chahe
Har baar hi gujarna
Teri tref se…….
Ye koshishe,, to hongi kam nahi

চুলগুলো শুভ্র বারে বার ঠিক করছে ততোবারই বাতাসে উঠছে,,,, একসময়
শুভ্র শুধু আমার দিকে তাকিয়েই ছিলো,,,
তিনি আমাকে কোলে নিয়ে চলে আসলেন রুমে,,,আবারও একটা ভালোবাসার রাত চলে গেলো।

Na cahiye kush
Tumse jiyada tumse kaam nahi
Jo Tum na ho,,,
Rahenge hum nahi…….











চলবে…

বানান ভুল হলে মাফ করবেন





চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here