যদি দেখা না হতো পর্ব ৭+৮

#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_০৭ (#Season_02)
#Writer_Tanisha_Esu


কাব্য আর আমি মার্কেটে যেতে লাগলাম এখান থেকে জাস্ট কিছুদূর।
কথা বলতে বলতে হাফ পথ চলে আসলাম হঠাৎ কেউ যেন আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো…….

তানিশা কোন রকম সরিয়ে শুভ্রকে দেখে কয়েক পা পিছিয়ে গেলো।নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস ই করতে পারছেনা।যে ছেলেটা মরে গেছে সে এখন তার সামনে,,,অপলক তাকিয়ে আছে দুজন দুজনের দিকে।কাব্য ও শুভ্রকে দেখছে

তানিশা নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলো শুভ্রকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে।শুভ্রও জড়িয়ে আছে।দুজনের চোখ দিকে টপটপ করে পানি পরছে।আর সেখানের সবাই শুভ্র আর তানিশার দিকে তাকিয়ে আছে

তানিশাঃ কি করেছো তুমি নিজের,,,কপালে বেন্ডেজ,,ট্রি-শার্টে রক্ত মাথা,,,মুখের কয়েক অংশ রক্তে মাখা,,আর কই ছিলে তুমি(জড়িয়ে)

শুভ্রঃ সব বললবো,,অনেক কিছু বলার আছে তোমাকে তানিশা,,সব বলবো

কাব্যঃ তানিশা এ কি করছো তুমি,,,তুমি হয়তো শুভ্রের আসল রূপ ভুলে গেছো

হঠাৎ মেহেন্তা আপুর কথা মনে পরতেই নিজের থেকে এক ঝটকায় সরিয়ে দিলো শুভ্রকে।তানিশা চোখ মুছে ফেললো,,

শুভ্রঃ আসল রূপ মানে??

তানিশাঃ আপনি খুব ভালো করেই জানেন

শুভ্রঃ সিরিয়াসলি আমি কিছু বুঝতে পারছিনা

তানিশাঃ মেহেন্তা আপুর বেবির বাবা কে??

শুভ্রঃ কেন কার সাথে ফস্টিনষ্টি করেছে সেই বাবা,আমি কি করে বল…

আর কিছু বলতে পারলো ঠাসস করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো শুভ্রের গালে।তানিশার নিজের কাছে নিজেরই ঘৃণা করছে কাকে ভালোবেসে ছিলো সে।

তানিশাঃ আপনি মেহেন্তা আপুর বেবির বাবা,,লজ্জা করেনা একটা মেয়ের সর্বনাশ করে আরেকটা মেয়েকে বিয়ে করে তাকে কষ্ট দিতে

এইবার শুভ্রের মাথায় রাগ চেপে গেলো,,এখনি মনে হয় তানিশাকে আছাড় মারবে এমন রাগ।

শুভ্রঃ মেহেন্তা কোথায় এখন

তানিশাঃ নিশ্চুপ

শুভ্রঃ আমাকে নিয়ে চলো মেহেন্তার কাছে আমি নিজের ভুল শিকার করে নিবো

তানিশাঃ তার মানে এগুলো সত্যি,,কেন শুভ্র কেন আমাকে বিয়ে করে আমার জীবন নষ্ট করলেন।আপনাকে মেহেন্তা আপুর কাছে পৌছে অনেক দূরে চলে যাব আমি(মনে মনে) চলুন,,কাব্য আপনিও চলেন

কাব্যঃ আচ্ছা চলো

তিনজনে মিলে মেহেন্তা আপুর বাড়িতে গেলো।মেহেন্তা দরজা খুলে শুভ্রকে দেখে ভয় পেয়ে গেলো।

শুভ্রঃ তোমার বেবির বাবা আমি

মেহেন্তাঃ কেনো সব ভুলে গেলে,,আর তুমি আমার বোনকে বিয়ে করেছো কেন??

শুভ্রঃ ও আচ্ছা ঠিক আছে চলো আমরা নতুন জীবন শুরু করবো(মেহেন্তার হাত ধরে টানতে থাকে)

হাতটা ধরাতে তানিশা মোটেও খুশি হয়নি তাও সত্যিটাকে মানতেই হবে।সব শেষ হলেও একদিক দিয়ে খুশি হলো তানিশা।।।।

মেহেন্তাঃ এই না না

তানিশাঃ কেনো আপু

শুভ্রঃ কি হলো চলো,,আমি তো তোমাকে মেনে নিচ্ছিই তো

মেহেন্তাঃ কাব্য এখনো তুমি চুপ করে থাকবে,,শুভ্রের মাথা খারাপ হয়ে গেছে,,অনেক মিথ্যা হয়ছে,এখন অন্তত আমাদের বেবির কথা ভাবো

তানিশাঃ কি বলছিস কি আপু

কাব্যঃ হ্যা ক,,,কি বলছো মেহেন্তা

মেহেন্তাঃ এটাই সত্য তানিশা,,আমার পেটের বেবি শুভ্রের নয় কাব্যের,, আমার পেটের বেবির কসম করে বলছি

তানিশাঃ Whattt,, তাহলে এতো মিথ্যা বললি কেনো(প্রচন্ড রেগে)

তানিশা এতোটায় রেগে গেছে আজ যদি মেহেন্তা প্রেগনেন্ট না থাকতো তাহলে মেরেই ফেলতো

তানিশাঃ আপু যা বলছে তা সত্যি মি. কাব্য

কাব্যঃ আসলে তানিশা আমার কথাটা শোন,,তোমার আপু আর শুভ্র প্লান করেই এসব

ঠাসসস করে একটা থাপ্পড় মারলো কাব্যকে।কলার চেপে ধরে বলতে লাগলো,,,,

তানিশাঃ নিজে ভুল করে আমার স্বামীর ঘাড়ে দোষ চাপাতে ছিলেন লজ্জা করেনা।আমি শুভ্রকে ভুল বুঝলাম।।কেন করলেন বলুন

কাব্যঃ হ্যাঁ আমিই মিথ্যে বলেছি,,কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসতাম। আমি সেই কাব্য স্কুল লাইফে আমরা বেষ্টফ্রেন্ড ছিলাম।ছোটবেলায় আমি তোমাকে ভালোবাসতাম আজ তোমার আমার বিয়ে হতো কিন্তু তার জায়গায় এই শুভ্র চলে আসলো যা আমি মানতে পারছিলাম না।

তানিশাঃ আপনি কাব্য মানে,,, কাব্য আহম্মেদ

কাব্যঃ হুম,,,জানো আমি বিদেশ চলে যাওয়ার পর তোমার সব খবর রাখতাম,,কিন্তু মাঝে মেহেন্তা চলে আসে।পরে যখন তুমি মেহেন্তার বোন তখন মেহেন্তাকে ব্যবহার তখন এন্টি হতে চেয়েছিলাম কিন্তু এই শুভ্র তোমাকে বিয়ে করলো।তখন থেকেই শুভ্রকে মেরে ফেলার জন্য জন্য অনেক চেষ্টা করি কিন্তু সফল হয়নি।ও যখন বিদেশ চলে আসে মিথ্যে মামলায় ভাসিয়ে দিয়ে মেরে ফেলি কিন্তু ও মরিনি এটা আমি জানতাম না।তোর ফুপ্পাকে খুন করে শুভ্রের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েদি।তারপর থেকে তোমার সাথে যা যা হয়েছে আমার প্লান অনুযায়ী। এমনকি আপুও আমাকে সাহায্য করে।শুধু একটা ভুল করে ফেলেছিলাম তা হলো মেহেন্তার সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে।কিন্তু

শুভ্রঃ শেষ রক্ষা আর হলো না তাইতো

কাব্যের কথাবার্তা শুনে আমি মেহেন্তা আপু অবাক হয়ে রইলাম।আমি যেন এবার সবোর্চ্চ শকড খাইলাম।শুধুমাএ আমার জন্য শুভ্রের এই অবস্থা

তানিশাঃ কি পেলেন এগুলো করে আমি কখনোই আপনাকে ভালোবাসতাম না আর তখন আপনি আমার অনলি বেষ্টু ছিলেন কোন লাভার না।আর আমি শুধু শুভ্রকে ভালোবাসি শুধু ওকেই ভালোবাসবো

কাব্যঃ আমার প্লান সাকসেসফুল হতো যদি আমি শুভ্রকে ঠিক মতো মেরে দিতাম আর তুমিও আমার হতে

তানিশাঃ আপনার এটা ভালোবাসা নয় এটা মানসিক রোগ,,,আর আপু দেখ কি মানুষের সাথে তুই রিলেশন করেছিস,,যে কিনা তোকে অনলি ব্যবহার করেছে

মেহেন্তা আপু মাথা নিচু করে থাকলো আর কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে কাব্যকে ধরে নিয়ে গেলো।

তানিশাঃ শুভ্র

শুভ্র রাগ দেখিয়ে চলে গেলো ওখান থেকে,, তানিশা পিছু পিছু গেলো।

তানিশাঃ ইসস আমি কেন যে শুভ্রকে ভুল বুঝলাম,,,আজ আমার জন্য ওর ওই অবস্হা(মনে মনে)

সেদিনই শুভ্র নিজের বাড়িতে চলে আসলো তানিশার সাথে।ডাক্তার দেখানো হলো ব্রেন্ডেজ করে দিলো আর মেডিসিন দিয়ে গেলো।

আমার বাড়িতে ধুম পরে গেলো সবাই দেখে দেখে যাচ্ছে শুভ্রকে।কিন্তু এ দুদিনে বুঝলাম শুভ্র আমার সাথে কথা বলছেনা।সবাই চলে যাওয়ার পর আমি ওর খেয়াল রাখতে লাগলাম।।।।

একদিন এক রাতে,,

তানিশাঃ শুভ্র তুমি আমার সাথে কথা বলছো না কেন??

শুভ্রঃ আমাকে অবিশ্বাস করার সময় মনে ছিলোনা।কতো কষ্ট করে পালিয়ে এখানে এসেছি শুধু তোমাকে ভালোবাসি বলে।যখন মাথায় আঘাত করে ওরা অজ্ঞানের আগে শুধু তোমার সাথে দেখা করার জন্য মনে হয়েছিল শুধু বাঁচার ইচ্ছে করেছিলো কিন্তু এতো কষ্ট করে যখন তোমার কাছে আসলাম আর তুমি ভুল বুঝলে এখন মনে হচ্ছে আমি মরে গেলে ভালো হতো

তানিশাঃ শুভ্রওওও,,,একবার আমার অবস্থার কথা ভেবে দেখছো না।কি অবস্থা হয়েছিলো আমার,,,পুরো মানসিক রোগী হয়ে গেছিলাম। তারপর তোমার এইসব কথা শুনার পর আর মাথায় কোন কাজ করছিলোনা শুভ্র (কাঁদতে কাঁদতে)

শুভ্রঃ আচ্ছা আর কাঁদতে হবেনা,,আজ থেকে আমরা নতুন ভাবে জীবন-যাপন করবো,, সব নতুন করে শুরু করবো

তানিশাঃ হুম কিন্তু এবার তুমি আর কোন অনৈতিক কাজ করবা না প্রমিজ করো

শুভ্রঃ আচ্ছা প্রমিজ

তানিশাঃ ভালোবাসি তোমাকে

শুভ্রঃ আমিও ভালোবাসি আমার পাগলিটাকে(জড়িয়ে)

“#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_০৮ (#Season_02)
#Writer_Tanisha_Esu

শুভ্রঃ তানিশা

তানিশাঃ হুম বলো

শুভ্রঃ আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি

তানিশাঃ আমিও তো তোমাকে ভালোবাসি

শুভ্রঃ কিন্তু একসাথে থাকতে চায়না

তানিশাঃ মানে,,কি বলছো এগুলো(অবাকের দৃষ্টিতে তাকিয়ে)

শুভ্রঃ এখন কোন কিছুই বলতে পারবোনা।দুপুরে তোমার আম্মু,আব্বু আসবে তোমাকে নিতে,,আমাকে যদি ভালোবেসে থাকো তাহলে তুমি চলে যাবে

শুভ্র যেতে লাগলো এমন সময় তানিশা শুভ্রের পেছন থেকে শক্ত করে চেপে ধরে বলতে লাগলো,,,

তানিশাঃ আমার অন্যায় কি শুভ্র,,কি দোষে তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে চাচ্ছো

শুভ্রঃ আমি বলতে পারবোনা

নিজের থেকে তানিশাকে ছেড়ে রুমে চলে গেলো,,,তানিশা ফ্লোরে বসে কান্না করতে লাগলো,,,,কি এমন অপরাধের জন্য শুভ্র এমন করছে তার সাথে,,কান্নায় ভেঙ্গে পরলো।

দুপুরে,,,

তানিশার আব্বু আম্মু আসলো তানিশাকে নিতে। তানিশা শুধু শুভ্রের দিকে তাকিয়ে আছে,,”এই বলে উঠবে এগুলো মজা ছিলো কিন্তু তা আর হলো না লাগেজ নিয়ে গাড়িতে উঠলাম কোন কথাও বললো না আমার সাথে।

জানলার পাশে বসে বাইরে তাকিয়ে আছি চুলগুলো আপন ইচ্ছায় উড়ছে,,মনে হাজারো প্রশ্নের তোলপাড়,,, এই না আমাদের সম্পর্ক ঠিক হয়ে গেলো তারপর আবার এগুলো কি হচ্ছে।

বাড়িতে পৌছে এক মিনিট ও না দাড়িয়ে নিজের রুমে এসে রুম লক করে দিলাম,,,দরজার পাশে থাকা লাঠি দিয়ে ভাঙচুর করতে থাকলাম।আজ কষ্ট,, আবেগ,ভালোবাসা,জেদকে শান্ত করার উপায় রাগ কমানো,, যা আর ঠান্ডা হবেনা।

আম্মু আর আব্বু দরজা ধাক্কিয়েই যাচ্ছে,, কিন্তু আমি আর আমার ধ্যান এ নেই,,,ছোটবেলা থেকেই যেমন জেদ ছিলো সেইরকম রাগ ও ছিলো,,কিন্তু রাগটা কন্ট্রোল করতাম প্রিয়জন হারানোর ভয়ে। কিন্তু যাকে এতো ভালোবাসলাম সেই চলে গেলো।

সন্ধ্যায় রুম থেকে বের হলাম আম্মু আব্বু রুমের সামনে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে,,আমাকে দেখতেই ছুটে আসলো।

তানিশা আম্মুঃ তানিশা তুই কি পাগল হয়ে গেছিস,,,ওগো ডাক্তারকে ডাকো ওর মাথা থেকে রক্ত পরছে(দু-বাহু ধরে)

আব্বুও তারাতারি ডাক্তারকে ফোন দিলো,,তারা জানে আমার রুম নাজে-হাল অবস্থা তাই আমাকে নিয়েই বিজি হয়ে পরলো।ডাক্তার এসে বেন্ডেজ করে দিয়ে গেলেন আম্মু জোর করে খাবার খাইয়ে তার কোলে মাথা রেখে ঘুম পারিয়ে দিলো।

এরই মাঝে বেশ কিছুদিন চলে গেলো অনেক ফোন করেছি কিন্তু শুভ্র ধরেনি আর ফোন করা তো দূরের কথা।এমনি একদিন পলাশ ভাইয়া আসলো আমাদের বাসায়,, পলাশ আমার ফুপির বড় ছেলে,

আমি জানলার পাশে হেলান দিয়ে বসে বসে কি যে ভাবছি নিজেও জানিনা।হঠাৎ,,

পলাশঃ আসবো তানিশা

তানিশাঃ হুম আসো

পলাশঃ কেমন আছিস তুই

তানিশাঃ আমার কথা বাদ দাও তোমার কি অবস্থা

পলাশঃ ভালোই,,,শুনলাম শুভ্রের সামনে বিয়ে

তানিশাঃ মানে??

পলাশঃ কেন তুই জানিস না,,বাড়ি সাজাচ্ছে,, নতুন বউ আসবে বলে

তানিশাঃ নিশ্চুপ

ভাইয়াকে আম্মু ডাকলো তাই বেশি কথা বলতে পারলো না,,,আমার বুকে তোড়পাড়ের ঝড় উঠে গেছে কি শুনলাম আমি,,না ওর সামনা-সামনি হতেই হবে আমাকে,,বিয়ে করবে মানে তাহলে আমি কে?

বিকেলে,,

আম্মুকে ভুলভাল বুঝিয়ে শশুড় বাড়িতে চলে আসি,, ভাইয়ার কথাটা সত্যি খুব সুন্দর করে সাজানো হয়ে গেছে বাড়িটা,,,আমি সোজা গিয়ে দরজায় নক করলাম শুভ্র এসে দরজা খুলে দিলো

শুভ্রঃ তুমি এখানে কেনো??

তানিশাঃ তুমি বিয়ে করছো

শুভ্রঃ হুম,,আমি আমার জীবন নতুন করে শুরু করতে চায়

তানিশাঃ ওও তাই নাকি তাহলে আমি কে??

শুভ্রঃ তুমি আমার পাস্ট,,ওই বিয়েটা Just an accident

তানিশাঃ মানে এতো কিছুর পরও এগুলো বলছো তুমি? কেন শুভ্র এগুলো করছো(কলার ধরে) কেনো বলো?? কি এমন অন্যায় করেছি আমি

শুভ্র এক ঝটকায় নিজের থেকে আমাকে ছাড়িয়ে বলতে লাগলো,,,

শুভ্রঃ আমি তোমাকে ভালোবাসিনা বুঝলা,,আমাকে বাঁচতে দাও শান্তিতে,,আর আমার বিয়ের দিনে আমার আশেপাশেও যেন তোমাকে না দেখি

এই বলে শুভ্র আমার হাত ধরে দরজার বাইরে বের করে দরজা অফ করে দিলো,,,,,,

তানিশাঃ শুভ্র,,প্লিজ শুভ্র গেট খোল।আমি কোন অন্যায় করবো না প্রমিজ, প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেওনা( কাঁদতে কাঁদতে)

সন্ধ্যার আজান দিয়ে দিলো তবুও ওও গেট খুললো না।আমি চলে আসলাম বাড়িতে,, ভাবছিলাম সুইসাইড করবো কিন্তু আম্মু আমার কাছ থেকে নড়তেই চায়না।যখন আম্মুর কাজ থাকে তখন আব্বু আমার কাছে থাকে।নিজেকে দিন দিন শেষ করে ফেলছি আমি।

এমনি একদিন শুনলাম শুভ্র বিয়ে করে নিয়েছে,,নিজের মৃত্যু যেন নিজেই দেখতে পারছি,,শুধু সময়ের অপেক্ষা।শুভ্র এখন সংসার নিয়ে বিজি এটাই বলেছিলো শেষ কলে।

শুক্রবারে,,

সবাই ফ্যামিলি পিকনিক এ আসে,,আমাকেও জোর করে নিয়ে যায়।ফ্যামিলি পিকনিক বললেও বাড়িটা ছিলো বিয়ের।একজন লোক এসে বললো,,

লোকটিঃ আরে পাএী চলে এসেছে,,আপনারা তারাতারি ওনাকে সাজানোর ব্যবস্তা করেন

তানিশাঃ আচ্ছা এটা তো বিয়ে বাড়ি,,আমরা এখানে কেনো??

বড় আম্মুঃ আজ তোর বিয়ে তাই

তানিশাঃ মানে,,আমার বিয়ে এসব কি বলছো??

আব্বুঃ ছেলে অনেক ভালো মা,,তোর মানসিক অবস্থা ভালো না তাই তোকে কিছু বলিনি,, আমরা চায় তুই ভালো থাক তাই তোকে না বলেই বিয়ে ঠিক করে ফেলেছি

তানিশাঃ আমাকে একবারের জন্য বলার প্রয়োজন করলেনা,,,আমি বিয়ের জন্য প্রস্তুত কি না,,আর আমি এ বিয়ে করবোনা

আম্মু এসে আমার হাত তার মাথায় রেখে বলতে লাগলেন,,

আম্মুঃ তুই যদি এই বিয়ে না করিস আমার মরা মুখ দেখবি

তানিশাঃ আম্মুওওও

আম্মুঃ ঠিকি বলেছি,,আমার মরা মুখ দেখবি নাকি বিয়ে করবে বল

আমি বাধ্য হয়েই রাজি হয়ে গেলাম,,,আমাকে কতো সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে,, আগের বিয়েটা আবার এই বিয়েটায় ও আমার মতামত ছিলোনা কি আশ্চর্য বিষয়,,আচ্ছা শুভ্র যদি বিয়ে করে সুখে থাকতে পারে তাহলে আমি কেন পারবোনা??

বরের পাশে বসানো হলো আমাকে,,চারিদিকে শুধু ক্যামেরা,,সবাই এসে গিপ্ট দিচ্ছে আর পিক তুলে নিয়ে যাচ্ছে এসবের ভিরে নিজেকে পুতুল পুতুল লাগছে।

কিন্তু নিজের খুশিটায় হারিয়ে ফেলেছি,,,কবুল বলানো হলো সাথে রেজিস্ট্রি করে বিয়েও হলো,,শুধু পেলামনা মনের মতো মানুষ,,খুব ক্লান্ত লাগছে।

খাবারের সময় একটু একলা ছিলাম কারণ আমি মানসিক ভাবে সুস্থ ছিলাম না,,তাই আর বর বউ একে অপরে খাওয়াই দেয় এটা হলোনা।

বিদায়ের সময় সবাই আমাকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো কিন্তু আমার চোখ থেকে একফোঁটাও পানি পরছে না।সব জল হয়তো শুকিয়ে গেছে আর নাহলে আমি নিজেই জীবন্ত লাশ হয়ে গেছি।

গাড়িতে উঠে নতুন গতিতে যাচ্ছি,,,নতুন পরিবেশ,,নতুন সংসার কিন্তু আমি শুভ্রের জায়গাটা কিভাবে অন্য কাউকে দেব এসব ভাবছিলাম। আসলেই “যে যাবে সে যাবেই, চাইলেও তাকে আটকানো যাবেনা।আর যে আসবে সে সকল বাধা বিপত্তি আছে যেনেও আসবে” ইসসস #যদি_দেখা_না_হতো আমাদের তাহলে দুজনের জীবনটা আজ আলাদা থাকতো,,নিজের লাইফকে নিজের মন মতো সাজানো যেত।

শশুর বাড়িতে এসে সব ছোট ছোট ছেলে মেয়ে এসে সেলফি উঠছে,,সবাই অপরিচিত আজ।

তানিশাঃ আসলে কোন ব্যক্তি আমার সম্পর্কে এতোকিছু জেনেও আমাকে বিয়ে করলো??(মনে মনে)

আমার বয়সী কিছু আপু এসে আমাকে একটা ফুলে দিয়ে সাজানো বেডে বসিয়ে দিলো,,চারিদিকে ফুল দিয়ে সাজানো,,,অনেক সুন্দর। আমার প্রথম বিয়ের ক্ষেত্রে অবশ্য এসব কিছুই হয়েছিলো না…..

ঠিক রাত ১২ঃ২০ এ গেট নাড়ার শব্দ পেলাম,,












চলবে…….

(জানি আজকের পর্ব পড়ে অনেকেই আমাকে গালি দিবে😒😒😒)







চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here