রঙহীন জীবনের রঙ,পর্ব:১৯+২০

গল্প: #রঙহীন_জীবনের_রঙ
পর্ব ১৯
লেখনীতে: #স্বর্ণা_সাহা (রাত)

(আজকের পর্বটা পড়ার পর নিচের বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ অর্থাৎ বিঃদ্রঃ টা অবশ্যই পড়বেন, প্লিজ)

নির্ঝর দিশানীকে ধাক্কা মারলো। টেবিলের সাথে মাথা বাড়ি খেয়ে দিশানীর মাথা খানিকটা কেটে গেলো। নির্ঝর দিশানীকে তুলে উল্টো থাপ্পড় দিলো তারপর বললো,
—অনেক সহ্য করেছি তোকে আর সহ্য করবো না তুই তোর সীমা ছাড়িয়ে গেছিস। কি ভেবেছিলে কালকে থাপ্পড় মারায় কিছু বলিনি জন্য আজকেও কিছু বলবো না? মা আর নিরাকে দিয়ে কাজ করাস তবুও কিছু বলিনি ভেবেছিলাম আর থাকবিই তো মাত্র কয়েকদিন ছেড়েই দিই না হয়। খুব প্রতিবাদ করতে শিখে গেছিস তাইনা? আমাকে কালকে কি কি যেন বলেছিলি আমি কাপুরুষ তাইনা? আমি মা-বোনের খেলার পুতুল তাইনা? কালকে খুব মুখের বুলি ফুটেছিলো তাইনা? তোর ভাই নিয়ে যায়নি তো কি হয়েছে তোর তো কত বন্ধু জুটেছে ওদেরকে বল তোকে এসে নিয়ে যাক।

—ঠিকই তো বলেছি আমি ভুল কি বলেছি।

নির্ঝর আবার দিশানীকে আরেকটা থাপ্পড় মারলো।
দিশানী গর্জে উঠে বললো,
—এতোই যখন মারার ইচ্ছা তাহলে মেরে ফেলছো না আমায় একেবারে মেরে ফেলতে।

নির্ঝর বললো,
—না তোমায় আমি মারবো না তোমার সাথে তো আমার যৌতুক কিংবা জায়গাজমি এসব নিয়ে কোনো শত্রুতা নেই যে আমি তোমাকে মেরে ফেলবো। এসব ভুল আমি করবো না।আমাদের সমস্যাই হলো বাচ্চা না হওয়া নিয়ে।

—বাচ্চা না হলে কি ভালো থাকা যেতো না? মানুষ কি বাচ্চা ছাড়া স্বাভাবিক জীবন যাপন করে না? তোমাকে তো কতবার বলেছিলাম তুমি নিজে একটা টেস্ট করাও তোমার মধ্যেও তো কোনো খামতি থাকতে পারে কিন্তু না তুমি তো আমাকেই দোষ দিয়ে গেলে।তোমার মধ্যেও দোষ থাকতে পারে।

নির্ঝরের এই কথায় প্রচুর রাগ হলো। ও এবার আর ঠিক থাকতে পারলো না।আবার দিশানীর গালে চড় বসালো তারপর বললো,
—তোর সাথে ভালোভাবে কথা বলাই ভুল। অনেক সহ্য করেছি তোকে আর পারবো না।যা বেরিয়ে যা আমার বাড়ি থেকে।
নির্ঝর চিৎকার করে বললো,
—বেড়িয়ে যা এখনি নাহলে তোর লাশ বেরোবে এই বাড়ি থেকে।

নির্ঝরের চিৎকার শুনে সবাই উপরে এলো।নির্ঝর দিশানীকে টানতে টানতে রান্নাঘরে নিয়ে এলো। তারপর চুলায় থাকা ফুটন্ত গরম জলে দিশানীর হাত ডুবিয়ে দিলো। দিশানী চিৎকার করে উঠলো,
—নির্ঝর!ছাড়ো লাগছে, প্লিজ। আমি তোমাকে রিকোয়েস্ট করছি।
নির্ঝর দিশানীর হাত শক্ত করে ধরে থাকে। দিশানী চোখ দিয়ে জল পড়তে থাকে। দিশানী বার বার নির্ঝরকে ছেড়ে দিতে বলে কিন্তু নির্ঝর ছাড়েনা।দিশানীর আকুতি নির্ঝরের কান অবধি পৌঁছায় না।এভাবে কিছুক্ষন থাকার পর নির্ঝর দিশানীকে ছেড়ে দেয় তারপর বলে,
—এখন দেখলি তো আমি কি করতে পারি আর কি না করতে পারি। কালকে চুপ করে ছিলাম ভেবে আজও চুপ করে থাকবো সেরকম ছেলে আমি নই।
দিশানী বেসিনে যেয়ে ট্যাপকল ছেড়ে দেয় আর হাত ট্যাপকলের নিচে দিয়ে রাখে কিছুক্ষন। তারপর দিশানী
আর সহ্য করতে না পেরে ব্যাগ গোছানো আরম্ভ করে। ডান হাত ফুটন্ত গরম জলে ডুবিয়ে দেওয়ার কারণে ডান হাত দিয়ে দিশানীর ব্যাগ গোছাতে প্রচুর কষ্ট হয় কিন্তু তবুও কষ্টে ব্যাগ গুছিয়ে নেয় তারপর বাম হাত দিয়ে কোনোরকমে ব্যাগ নিয়ে নিচে আসে, তারপর বলে,
—এই বাড়িতে থাকা আর আমার পক্ষে সম্ভব না।নিজের ক্ষতি করে এই বাড়িতে আমি থাকতে পারবো না। আর তোমরাও চাওনা আমি এখানে থাকি, আর চিন্তা কোরোনা ডিভোর্স আমি দিয়ে দেবো। তবে শেষবারের মতো একটা কথা বলছি আজকে অবহেলা করলে তো তবে একদিন তোমাদের মনে হবে দিশানীই তোমাদের জন্য পারফেক্ট ছিলো। আর এইদিন বেশি দূরে নেই। আর প্রতিবাদ যেটুকু করেছি সেটুকুতে চাপা শান্তিটুকু পেয়েছি। কিন্তু নিজের জীবন বাজি রেখে তো প্রতিবাদ করতে পারবো না।আর আমি তো বলেছিলামই আমি তোমাদের শাস্তি দেবো না সৃষ্টিকর্তা তোমাদের শাস্তি দেবে। তাই তার উপরেই ছেড়ে দিলাম সবকিছু। আসছি!
দিশানীর কথাগুলো বলতে গলা ধরে আসছিলো কিন্তু তবুও কষ্ট করে ও কথাগুলো বলেছে। দিশানী কথাগুলো বলে ওখান থেকে বেড়িয়ে গেলো।

দিশানী বের হয়ে যেতেই নিরা বলে উঠলো,
—আপদ বিদায় হলো।

সুজাতা নিরার কথার সাথে তাল মিলিয়ে বললো,
—একদম ঠিক বলেছিস!

——————-
দিশানী মেঘাদের বাড়ির কলিংবেল বাজাতেই মেঘা এসে দরজা খুললো। দরজা খুলেই দিশানীকে দেখে বললো,
—দিশু তুই?আর তোকে এরকম দেখাচ্ছে কেনো?
মেঘার চোখ দিশানীর হাতের দিকে যায় মেঘা উত্তেজিত হয়ে দিশানীকে বলে,
—দিশু তোর হাতের এই অবস্থা হলো কি করে? ভেতরে আয় তুই।

মেঘা দিশানীর ব্যাগ হাতে নিয়ে দিশানীকে ঘরে নিয়ে গেলো। তারপর বললো,
—এসব কি করে হলো?তোর হাতের এ অবস্থা কেনো?

দিশানী মেঘাকে সব বললো। মেঘা বললো,
—ভালো করেছিস ওখান থেকে এসে। তোর হাতের অবস্থা ভীষণ খারাপ। আমি নীলাদ্রি দা কে ফোন করছি।

মেঘা নীলাদ্রি কে ফোন দিলো।মেঘা নীলাদ্রি সব বলতেই নীলাদ্রি উত্তেজিত হয়ে বললো,
—আমি এখুনি আসছি।

মেঘা ঠান্ডা জল নিয়ে এসে দিশানীর হাত ডুবিয়ে দিলো। তারপর নীলাদ্রি এলো। তারপর ওর হাতে অয়েনমেন্ট লাগিয়ে দিলো। দিশানী শান্ত গলায় বললো,
—আমি হেরে গেলাম তাইনা?আমি তো আর প্রতিবাদ করতে পারলাম না আমি তো ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে এলাম।

নীলাদ্রি দিশানীকে বললো,
—কে বলেছে হেরে গেছো?প্রতিবাদ তো তুমি করেছোই।ওরা সীমা ছাড়িয়ে গেছে সেক্ষেত্রে তুমি যে ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছো নিজেকে বাঁচাতে এটাই অনেক। এরকমই বা কয়জন করতে পারে?

—নির্ঝর গায়ে হাত তুলতো কিন্তু এরকম কাজ করতো না আজকে ও ওর সীমা ছাড়িয়ে গেছে,তাই আমি আর ওখানে থাকিনি চলে এসেছি।কিন্তু আমি তো ওদের শিক্ষা না দিয়েই চলে এলাম আর তো প্রতিবাদ করতে পারলাম না।

—তুমি তোমার শাশুড়ি আর নিরাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য কাজ করিয়ে নাও, এখন তুমি ওই বাড়ি থেকে যখন বের হয়ে এসেছো তখন এই কাজগুলো ওদেরকে করতেই হবে।

—কিন্তু আমি যে এতদিন এতো এতো কথা বললাম, এতো বড় বড় কথা বললাম সেগুলো তো পূরণ করতে ব্যর্থ হলাম আমি

—শোনো দিশানী তোমার এখন সবথেকে বড় প্রতিবাদ কি হবে জানো?

—কি?

—তুমি যদি এখন ভেঙে না পড়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করো, নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলো তাহলে সেটাই তোমার শ্রেষ্ঠ প্রতিবাদ হবে। তখন তারা বুঝতে পারবে ওরা কি রত্ন হারিয়েছে।এক মাস প্রতিবাদ করেও যখন ওরা সোজা হয়নি ওরা সোজা হবে বলে আমার আর মনে হয়না। ওরা এখন পশুতে পরিণত হয়ে গেছে, ওদেরকে নিজে থেকেই নিজের ভুল বুঝতে শিখতে হবে। তুমি যদি নিজেকে যোগ্য বানাও তাহলেই এটা সম্ভব।

চলবে

গল্প: #রঙহীন_জীবনের_রঙ
পর্ব ২০
লেখনীতে: #স্বর্ণা_সাহা (রাত)

—তুমি যদি এখন ভেঙে না পড়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করো, নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলো তাহলে সেটাই তোমার শ্রেষ্ঠ প্রতিবাদ হবে। তখন তারা বুঝতে পারবে ওরা কি রত্ন হারিয়েছে।এক মাস প্রতিবাদ করেও যখন ওরা সোজা হয়নি ওরা সোজা হবে বলে আমার আর মনে হয়না। ওরা এখন পশুতে পরিণত হয়ে গেছে, ওদেরকে নিজে থেকেই নিজের ভুল বুঝতে শিখতে হবে। তুমি যদি নিজেকে যোগ্য বানাও তাহলেই এটা সম্ভব।

—আমি পারবো কি?

—অবশ্যই পারবে!নিজের ওপর বিশ্বাস রাখলে মানুষ কি না পারে। আমরা সবসময় তোমার পাশে আছি। তোমাকে পারতেই হবে। আমরা যে তোমার পাশে আছি এই পাশে থাকার সম্মান দেবে না? পারবে না নিজেকে গড়ে তুলতে?

—চেষ্টা করবো। আমি মনপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করবো।

নীলাদ্রি মেঘার দিকে তাকিয়ে বললো,
—আর মেঘা এখন তো প্রায় দুপুর হয়ে এসেছে। দিশানীকে তুমি খাইয়ে দাও।আমি কিছু ওষুধ নিয়ে আসছি ওর জন্য।

মেঘা উত্তর দিলো,
—হ্যাঁ আমি ওকে এখুনি খাইয়ে দিচ্ছি।

নীলাদ্রি ওষুধ আনতে বাইরে গেলো।আর মেঘা খাবার এনে দিশানীকে খাওয়াতে নিলো। যেহেতু ডান হাত টা পুড়ে গেছে তাই দিশানীর একা একা খাওয়া সম্ভব না, তাই মেঘা ওকে খাইয়ে দিতে লাগলো। দিশানী প্রথমে বলেছিলো যে খেতে ইচ্ছে করছে না কিন্তু মেঘা দিশানীকে ধমক দিয়ে খাইয়ে দেয়।

মেঘা দিশানীকে খাওয়াতে খাওয়াতে দিশানীর সব দস্যিপনাগুলো বলতে থাকে যাতে দিশানী এই ভয় কাটিয়ে উঠতে পারে।

দিশানীর খাওয়া শেষ হওয়ার আগে আগেই নীলাদ্রি ওষুধ নিয়ে চলে আসে। দিশানীও একটু স্বাভাবিক হয়ে ওঠে।
দিশানীর খাওয়া শেষ হলে নীলাদ্রি দিশানীকে ওষুধ দেয়।

দিশানী এখন একটু স্বাভাবিক হয়। নীলাদ্রি দিশানীকে বলে,
—মনে আছে তো কালকে ফর্ম জমা দিতে যাবো?

—হুম আছে।

—কালকে পুরো ভার্সিটিটা ঘুরে দেখবো ঠিকাছে?

—আচ্ছা

—কি হুম আচ্ছা লাগিয়ে রেখেছো বলোতো, কথা বলছো না কেনো ঠিক করে।

মেঘা বিরক্তি নিয়ে বললো,
—এই তোর কথার রেকর্ডার কি নষ্ট হয়ে গেছে নাকি যে চুপচাপ বসে আছিস, কোনো কথা বলছিস না।

—কি বলবো? তোদের কথার তো উত্তর দিচ্ছিই আমি।

নীলাদ্রি বললো,
—বলছিলাম কি একটা পুলিশ কমপ্লেইন করলে হতো না, তোমার হাতটার যে এই অবস্থা করলো ওরা?

—আমি আর এসবের মধ্যে জড়াতে চাইছি না, ওরা ঠিকই কোনো না কোনো ভাবে ছাড়া পেয়ে যাবে।কিন্তু কথায় আছে না রিভেঞ্জ অফ ন্যাচার। ওরা ওদের শাস্তি ঠিকই কোনো না কোনো ভাবে পাবে।

—তবুও আমার মনে হয় একটা পুলিশ কমপ্লেইন করা দরকার, তুমি চাইলে ডিভোর্স এর পর কেস তুলে নিও।আমার মনে হয় তোমার পুলিশ কমপ্লেইন করে বোঝানো উচিত তুমি হেরে যাওনি।

দিশানী কিছুক্ষন ভেবে বললো,
—আচ্ছা করবো!কিন্তু ডিভোর্স এর পর কেস তুলে নেবো। কারণ ওরা এতে কোনো শাস্তি পাবে না বরং জামিনে ছাড়া পেয়েই যাবে। কিন্তু ওরা বুঝতে পারছে না ওদের জন্য এর চেয়ে আরো বড় শাস্তি আছে সামনে।

—এইতো এটাই তো চাইছিলাম।

বিকালবেলায় দিশানী, নীলাদ্রি আর মেঘা থানায় গেলো।
থানায় যাওয়ার পর দিশানী পুলিশকে প্রমাণ দেখিয়ে পুলিশের কাছে কমপ্লেইন করলো।পুলিশ গিয়ে নির্ঝরকে এরেষ্ট করে নিয়ে এলো।সুজাতা আর নিরাও সাথে এলো আর নির্ঝরের বাবাকে ফোন দিয়ে উকিল নিয়ে আসতে বললো।

নিরা দিশানীর কাছে গিয়ে বলে,
—বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এসেও আমাদের শান্তিতে থাকতে দিলে না।

দিশানী কিছু বললো না। প্রায় অনেক্ষন পর নির্ঝরের বাবা উকিল আনলো।উকিল আনার পর সব নিয়মকানুন মেনে নির্ঝরের জামিন হলো কিন্তু ওকে কেস না ওঠা অবধি থানায় হাজিরা দিতে হবে।
নির্ঝরের উকিল দিশানীকে বললো,
—ম্যাম আপনাদের তো ডিভোর্স হচ্ছেই তাহলে অযথা কেসটা রেখে কি লাভ হবে, এতে মিছেমিছি সময় নষ্ট হবে।তার চেয়ে বরং কমপ্লেইন টা আপনি তুলে নিন।

দিশানী উত্তর দিলো,
—কমপ্লেইনটা আমি ডিভোর্স হলেই তুলবো।

নির্ঝরের বাবা দিশানীর কাছে এসে বললো,
—তুমি সত্যি সত্যি কমপ্লেইনটা তুলে নেবে তো?

—হুম নেবো। আমি আমার কথার নড়চড় করবো না।

—————–
দিশানী আর নীলাদ্রি গিয়ে আজ ফর্ম জমা করে এলো। আর ক্লাস শুরুর ডেট জেনে এলো।এখন দিশানী মেঘার বাড়িতেই থাকে। মাঝে মাঝে নীলাদ্রি ওদের বাড়িতে আসে।
এভাবেই দেখতে দেখতে দুই মাস কেটে যায়।

আজ দিশানী আর নির্ঝরের ডিভোর্স হবে। আর দিশানী নির্ঝরের বিরুদ্ধে করা কমপ্লেইন তুলে নেবে।আজকে নির্ঝরের সাথে নির্ঝরের বাড়ির সবাই আর দিশানীর সাথে নীলাদ্রি,মেঘা আর সৌম্য কোর্টে এসেছে।

অবশেষে সব নিয়ম-কানুন মেনে একদম পুরোপুরি ভাবে দিশানী আর নির্ঝরের ডিভোর্স ঘোষণা করা হলো। ডিভোর্স পেপারে প্রথমে নির্ঝর সই করলো তারপর দিশানীকে সই করার জন্য কাগজটা দিলো। ডিভোর্স পেপারে সই করার সময় দিশানীর চোখটা ছলছল করছিলো।একটা মেয়ের কাছে ডিভোর্সটা কতটা যন্ত্রনার তা শুধু সেই মেয়েটাই বুঝতে পারবে যে এই সময়টা ফেস করেছে। কিন্তু ওই যে কথায় আছে না কিছু পেতে গেলে কিছু ছাড়তে হয়। হয়তো দিশানীর জন্য ভালো কিছু অপেক্ষা করছে আবার হয়তো না। দিশানীর ভালো-খারাপ একদম এখন দিশানীর নিজের উপর নির্ভর করছে। দিশানী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ডিভোর্স পেপারে সই করে দিলো। তারপর নির্ঝরের ওপর থেকে কেস তুলে নিলো। অবশেষে নির্ঝর আর দিশানী আইনগত ভাবে আলাদা হলো। ওদের মাঝে আর কোনো সম্পর্ক নেই। কোনো স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন নেই।

নিরা নির্ঝরকে মিষ্টি খাইয়ে দিয়ে বললো,
—কংগ্রাচুলেশনস দাদা!অবশেষে এই বোঝা আমাদের ঘাড় থেকে নামলো।এখন তোর বিয়ে খাবো। আমার যে কি আনন্দ লাগছে না তোকে বলে বোঝাতে পারবো না।

দিশানী একদম শান্ত হয়ে আছে। বাড়ি ফিরে ও ঘরের দরজা লাগিয়ে দিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। কেউ ওকে ডিস্টার্ব করলো না।কারণ কাঁদলে মন শান্ত হয়। হতেই তো পারে হয়তো এটাই ওর শেষ কান্না।দিশানী নিজেকে শান্ত করে রাতে ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো এক নতুন উদ্যোমে।

পুরোনো কিছু মুছে গিয়ে এখন হয়তো নতুন কিছুর সূচনা হতে যাচ্ছে।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here