লাভার নাকি ভিলেন পর্ব ১১+১২

#লাভার_নাকি_ভিলেন?
#পার্টঃ১১
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona

মেঘলাঃ না মানে… আকাশ ভাইয়ার সাথে ওই মেয়েটা কে….???আসলে উনাকে আগে কখনো দেখি নি তো আর আকাশ ভাইয়াকেও এর আগে মেয়েদের সাথে এত বেশি মিশতে দেখি নি তাই জিজ্ঞাস করছিলাম আর কি…




নাবিলঃ মেয়েটার নাম ইরা,আমাদের সাথেই পড়ে গতবছর টিসি নিয়ে এখানে এসেছে কিন্তু কলেজে বেশি আসেনা, বাসা মনে হয় দূরে।সত্যি বলতে আমি ওর সাথে তেমন কথা বলি নি তাই বেশি কিছু জানি না।

মেঘলাঃ অহ আচ্ছা….. বড় লোক তাই না? দেখেই বোঝা যাচ্ছে…

নাবিলঃ হবে হয়ত…..গাড়ি ছাড়া কলেজে আসে না.জানই তো মেয়েদের ব্যাপারে আমার ইন্টারেস্ট কম তাই কখনো খোঁজ নেই নি। তবে আকাশের সাথে ইরার বেশ ভাল সম্পর্ক। একমাত্র আকাশের সাথেই ইরা বেশি মেলামেশা করে।

মেঘলার ভিতরে কি হচ্ছে মেঘলা জানে কিন্তু প্রকাশ করার উপায় নেই।

মেঘলাঃ বড়লোকের সাথে বড়লোকেই মানায় আমার মত চালচুলা হীন মেয়ে আকাশের যোগ্য নই (মনে মনে) কিন্তু উনি ত আমায় ভালবাসেন তাই না? ভালবাসায় সব সম্ভব বড় ছোটর পার্থক্য নেই।



মেঘলা নিজেই নিজেকে শান্তনা দিচ্ছে।
দেখতে দেখতে সবাই গন্তব্যে পৌছে গেল।
রুম বুক করা হচ্ছে,সমস্যা একটাই মেঘলা ছোট তাই কেউ তাকে রুমে নিতে চাচ্ছে না ও থাকলে নাকি মজা করা যাবে না।মেঘলার এমন পরিস্থিতে পড়ে খারাপ লাগছে।

আকাশঃ কি হবে তাহলে? একে নিয়ে এসে তো ভাল ঝামেলায় পড়া গেল।

নাবিলঃ কিসের ঝামালা আমি তো কোন ঝামেলা দেখতে পাচ্ছি না…. ম্যানেজার সাহেব একটা লাক্সারি রুম দিন।আকাশের দিকে তাকিয়ে নাবিল বলল মেঘলা একাই থাকবে।

আকাশঃ okey তোদের যেমনটা ইচ্ছে….

ইরাঃ উফফ আকাশ যার যেখানে খুশি থাকুক না তাতে তোমার কি ছাড়োত এসব,চলো না সমুদ্রে যাই….

আকাশঃ আরে কেবল তো আসলাম আগে রুমে যাই।ফ্রেশ হয়ে না হয় যাব।

ইরাঃ না না না আমি কিছু শুনতে চাই না এখনি চলো প্লিজ, সমুদ্রে ভিজব তারপর এসে একেবারে ফ্রেশ হবো।

আকাশঃ আচ্ছা ঠিক আছে চলো….

যাওয়ার জন্য ইরা আকাশের হাত ধরল

দৃশ্যটা দেখে মেঘলার মুখ টা একদম মলিন হয়ে গেছে…. চোখ ছল ছল করছে।

আকাশের হাত ধরে ইরা যেই যেতে যাবে তখনি
নাবিল বলে উঠল এই আকাশ দাঁড়া, তোরা হানিমুনে আসিস নি যে একা একা ঘুরতে যাবি।
গেলে সবাই একসাথে যাবি।

ইরাঃ উফফ… কাম অন নাবিল!! আমরা স্কুলের বাচ্চা না যে স্যাররা হাত ধরে নিয়ে ঘুরে বাড়াবে।আমরা এখানে প্রাইভেট টাইম স্পেন্ড করতেই এসেছি। এই তোমরা সবাই কি বলো?

অন্যরা বলল হ্যা ইরা তো ঠিকি বলেছে ওরা যাচ্ছে যাক তোর আপত্তি কিসের নাবিল?আমাদের যাদের ইচ্ছা হবে আমরা যাব ওদের সাথে যেতে হবে কেন এই ইরা তোরা যা তো।

ইরা আকাশ কে নিয়ে চলে গেল।

সবাই সবার মত রুমে চলে গেল। নাবিল মেঘলাকে রুমে দিয়ে নিজেও রুমে গেল।

মেঘলা রুমে এসে ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ার টা ছেড়ে দিয়ে তার নিচে বসে বসে ভিজছে চোখের পানি বাধ মানছে না। মেঘলার রাগ কষ্ট ২ টাই হচ্ছে।

প্রায় এক ঘন্টা পর নাবিল ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিয়ে মেঘলার রুমে আসল।

নাবিল ঢুকার সময় অবাক হল একি দরজা খোলা কেন? মেঘলা দরজা লক করে নি কেন? নাবিল ঘরে ঢুকে দেখল মেঘলার ব্যাগটা সে যেখানে রেখে গিয়েছিল সেখানেই আছে তারমানে মেঘলা ফ্রেশ হয় নি তাহলে করছে টা কি? চারপাশে দেখল মেঘলা নেই।
হটাৎ নাবিলের ওয়াশরুমের দিকে চোখ গেল,দরজা খোলা মেঘলা নিচে বসে হাটুতে মুখ গুজে ভিজছে।হাতের ঘড়িটা খুলে নি শীতের জ্যাকেট টাও খুলে নি সব নিয়েই ভিজছে।

নাবিলের বুঝতে বাকি রইল না যে মেঘলা আসার পর থেকেই শাওয়ার নিচে বসে আছে।

নাবিল তাড়াতাড়ি গিয়ে মেঘলাকে টেনে তুলল।

প্রায় ১ ঘন্টা যাবত সে ভিজছে তাও এই ঠান্ডার দিনে।ঠান্ডায় মেঘলার গোলাপি ঠোঁট গুলি নীল হয়ে গেছে ঠকঠক করে কাঁপছে মেঘলা।

নাবিলঃ এসব কি করছো মেঘলা?এভাবে ভিজছো কেন?

মেঘলা……কথা বলার অবস্থায় সে নেই।

নাবিল ব্যাগ থেকে জামা বের করে দিয়ে বলল চেঞ্জ করে নাও।

মেঘলা তাই করল। কিন্তু তার ঠান্ডা এখুনো কমে নি আর শীতের জামাও ভিজিয়ে ফেলেছে নাবিল নিজের জ্যাকেট টা খুলে মেঘলাকে পড়িয়ে দিল।

তারপর জোর করেই মেঘলাকে নিয়ে বেরিয়ে গেল
সমুদ্রের পাড়ে একটা রেস্টুরেন্ট এ খেতে গেল মেঘলাকে নিয়ে।

ওরা বসে খাচ্ছিল তখনি আকাশ আর ইরাও সেখানে আসল।

আকাশ মেঘলার পড়নে নাবিলের জ্যাকেট দেখে একটু হাসল।

আকাশঃ তুই ই বা আমার চেয়ে কম কিসে মেঘলা….ভালই তো আছিস নাবিলের সাথে।আচ্ছা দেখি তুই কতটা নিতে পাড়িস (মনে মনে)

আকাশঃ খাবার অর্ডার দিল আর খাবার দেওয়ার পরেই আকাশ ইরাকে খায়িয়ে দিতে শুরু করল।

এবার আর মেঘলার আর সহ্য হল না সে উঠে আকাশের টেবিলের কাছে গিয়ে আকাশ প্রশ্ন করল এই মেয়েটা কে?

আকাশ উঠে দাঁড়িয়ে বলল আপু আপনি ঠিক আছেন? কাকে কি বলছেন?

মেঘলা আকাশে কলার চেপে ধরে বলল আমি জানতে চাচ্ছি মেয়েটার সাথে কি সম্পর্ক আপনার?

নাবিল দূরে দাঁড়িয়ে দেখছে,
নাবিলঃ এটা হওয়ার এই ছিল….আকাশ একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে(মনে মনে)

আকাশঃ আপু আপনি প্লিজ রুমে যান এটা পাবলিক প্লেস।

মেঘলা কিছু শুনতে রাজি না সে আকাশ কে বারবার জোর করছে।

আকাশ ভালভাবেই মেঘলাকে বোঝানোর চেস্টা করছিল কিন্তু হটাৎ ইরা একটানে মেঘলাকে ছাড়িয়ে নিয়ে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল মেঘলার গালে। মেঘলা অবাক হয়ে আকাশের দিকে তাকাল কিন্তু আকাশ কিছু বলছে না।

নাবিল তাড়াতাড়ি এসে বলল ইরা কি করলে এটা?

ইরাঃ যেটা আমার করার কথা ঠিক সেটাই করেছি। তোমার জিএফ যদি আমার বয় ফ্রেন্ডকে নিয়ে টানাটানি করে তাহলে আমাকে তো একটু অসভ্য হতেই হবে।

ইরাঃ আকাশ চলো তো এখান থেকে যতসব ফালতু মেয়ে।
আকাশ কে নিয়ে ইরা চলে গেল।

মেঘলার এই ধাক্কাটা সহ্য হল না সে মাটিতে বসে কাঁদতে লাগল।

নাবিলঃ শান্ত হও মেঘলা….প্লিজ শান্ত হও

মেঘলাঃ ভাইয়া মেয়েটা…..ক ক ক কি বলে গেলেন উনি? আকাশ উনার বয়ফ্রেন্ড……!!!বলুন না আমি ভুল শুনেছি তাই না?কিন্তু মেয়েটা আমায় মারল আকাশ তবু কিছু বলল না কেন?আমি স্বপ্ন দেখছি তাই না ভাইয়া এসব মিথ্যা ……আকাশ আমায় ঠকাতে পাড়েনা।এসব কিছুতেই হতে পাড়েনা।

নাবিল মেঘলাকে কি বলে শান্তনা দিবে বোঝতে পাড়ছে না।

নাবিলঃ আকাশ কি চাইছিস তুই…..??? কেন এসব করছিস? ও এসব কিভাবে মানবে আমারেই তো সহ্য হচ্ছে না। মেঘলা যে জেদি যদি কোন অঘটন ঘটায় সহ্য করতে পাড়বি তো? না কিছু ঘটার আগে আমাকেই কিছু একটা করতে হবে…..

নাবিলঃ উঠি মেঘলা কে কার জিএফ সেটা কি মুখে বল্লেই হয়ে যায় ও তো এটাও বলল যে তুমি আমাত জিএফ তাই বলে কি সেটা সত্যি?

মেঘলাঃ মিথ্যাই যদি হবে আকাশ কেন প্রতিবাদ করল না…. কেন বলল না ও আমায় ভালবাসে।
আচ্ছা ভাইয়া আমি কি দেখতে খুব খারাপ যে আমাকে। প্রেমিকার পরিচয় দেওয়া যাবে না…..‌!!!

।#লাভার_নাকি_ভিলেন?
#পার্টঃ১২
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona

মেঘলাঃ মিথ্যাই যদি হবে আকাশ কেন প্রতিবাদ করল না…. কেন বলল না ও আমায় ভালবাসে।
আচ্ছা ভাইয়া আমি কি দেখতে খুব খারাপ যে আমাকে। প্রেমিকার পরিচয় দেওয়া যাবে না…..‌!!!



নাবিলঃ আমি কি বলব বা আমার কি করা উচিত আমি জানি না মেঘলা কিন্তু এইটুকু বলতে পাড়ি আকাশের চাল চলন সহজে বোঝা যায় না তুমি মন খারাপ করো না। ওর মাথায় নিশ্চুই কিছু চকছে তুমি চল এখান থেকে যাই।

রাস্তায় যেতে যেতে নাবিল বলল মেঘলা চুড়ি কিনবে….???

মেঘলাঃ না রুমে যাব চলুন যাই।

নাবিলঃ আরে চলো না এসেছি যখন দোকানগুলি একটু ঘুরে যাই। আমার জিএফ এর জন্য গিফট নিতে হবে না? না হলে বেচারি মন খারাপ করবে।

মেঘলাঃ আপনার জিএফ এর জন্য নিবেন ঠিক আছে তবে চলুন যাই।

দোকানে গিয়ে মেঘলা জিনিস কুটিয়ে কুটিয়ে দেখছে ওকে দেখে মনে হচ্ছে মনটা কিছুটা ভাল হয়েছে।

মেঘলা অনেক দেখে, চুড়ি আর একটা ওড়না কিনল নাবিল এর জিএফ এর জন্য।

মেঘলাঃ আপুর পছন্দ হবে না?

নাবিলঃ হয়ত….

মেঘলাঃ হয়ত মানে কি আমার পছন্দ কি খারাপ নাকি?

নাবিলঃ ঠিক তা নয় পছন্দ ভাল তবে খুবি কৃপন তুমি, মাত্র এই ২ টা গিফট দেওয়া যাবে?

মেঘলাঃ কি…. আমি কিপটা…. দাঁড়ান আপনাকে এখনি ফকির বানিয়ে ছাড়ব।
এবার মেঘলা অনেক কিছু কিনল।

মেঘলাঃ দিন এবার বিল দিন….

নাবিলঃ তো দিব না কখন বল্লাম? আপনি দাঁড়ান আমি বিল দিয়ে আসছি।

নাবিল টাকা দিয়ে মেঘলার হাত থেকে ব্যাগ গুলি নিয়ে গল্প করতে করতে হাঁটছে মেঘলার মন অনেকটাই ভাল হয়ে গেছে।

হোটেল এর সামনে এসে নাবিল সবগুলি প্যাকেট মেঘলার হাতে দিয়ে বলল রুমে যাও।

মেঘলাঃ এগুলি ত আপনার জিএফ এর আমি নিব কেন?

নাবিল হা হা করে হেসে বলল আমার জিএফ সেটা আবার কোথা থেকে আসল? আমার কোন জিএফ টিএফ নেই ম্যাডাম।এগুলি আপনার জন্যই নিয়েছি।
কেউ একজন বলেছিল মেয়েদের খুশি করার ভাল উপায় নাকি গিফট করা।তাই করলাম আর তোমার কথা বললে ত তুমি কিনতে না তাই জিএফ এর কথা বল্লাম।

মেঘলা অবাক হয়ে নিজের অজান্তেই বলে ফেলল জানেন আপনি না খুব ভাল যে মেয়ে আপনাকে পাবে সে অনেক ভাগ্যবতি….মেয়েদের কত সম্মান করেন,সবার মন বোঝেন।

কথাটা শুনে নাবিল একটু আনমনা হয়ে গেল সে আর কিছু না বলেই চলে গেল।

মেঘলাঃ ইস কি বলে ফেললাম এটা? ভাইয়া আমায় কি ভাবল?দূর কি যে করি না আমি।

যাক উনি আকাশ এর মত না আমায় কথা তেমন কিছু মনে করবে না আশা করছি।
মেঘলা সব ব্যাগ নিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল…

এদিকে নাবিল আকাশের ঘরে গেল…..

নাবিলঃ আসতে পাড়ি….

আকাশঃ আরে পারমিশন চাইছিস কেন আয় না….

নাবিলঃ না প্রাইভেট টাইম স্পেন্ড করছিস তাই পারমিশন নিয়ে নিলাম।

আকাশঃ আহ নাবিল তুই ও না….ইরা তুমি তোমার রুমে যাও আমার নাবিলের সাথে কিছু কথা আছে।

ইরাঃ আমি থাকলে কি সমস্যা…??

নাবিলঃ আকাশের কোন সমস্যা নেই তবে তোমাকে নিয়ে আমার অনেক সমস্যা। চোখের সামনে থেকে বিদায় হও প্লিজ।

ইরাঃ তুমি আমার সাথে এভাবে কথা বলার সাহস পাও কোথা থেকে?

নাবিলঃ এখুনো যে থাপ্পড় মারি নি সেটাই তো অনেক।তুমি মেয়ে না হলে আজকে মেঘলার সাথে এমন করার মজা বোঝাতাম।

ইরাঃ আকাশ তুমি কিছু বলছ না যে।

নাবিলঃ আকাশের সাথে তোমার কি বিয়ে হয়েছে? ফাউল মেয়ে আমি তোমার ক্লাসমিট আকাশ ও তাই তাহলে আমাদের কথার মাঝে ওকে টানছো কেন

ইরাঃ এই শোন আমি তোমাকে…??

আকাশঃ ইরা তুমাকে আমি রুমে যেতে বলেছি।আর একটা কথা নাবিলের সাথে গলা উঁচুকরে কথা বলার সাহস দ্বিতীয় বার দেখিও না চুপচাপ ঘরে যাও।

ইরা রাগে ফোঁসতে ফোঁসতে চলে গেল।

নাবিলঃ কি করছিস এসব আকাশ?মেঘলাকে এত কষ্ট কেন দিচ্ছিস? নিজেই ক্ষত তৈরি করছিস আবার তুই ই মলম লাগাচ্ছিস।যা যা তোর করার কথা তুই আমাকে দিয়ে করাচ্ছিস এসবের মানে কি?

আকাশঃ কি করাচ্ছি?

নাবিলঃ এই যে সবাই যখন মেঘলাকে কথা শুনাচ্ছিল সেখানে প্রতিবাদ করার কথা ছিল তোর তুই নিজে না গিয়ে আমাকে পাটালি কেন? আমাকে বল্লি ওর যত্ন নিতে পড়ে আবার নিজেই আমাদের রেখে চলে যেতে চাইলি এটার মানে কি?

আকাশঃআমি চলে যাব বলেছিলাম কারন গাড়ি থামিয়ে অপেক্ষা করলে সবাই তোর উপড় চড়াও হত তুই সবার সাথে তর্ক করতে পাড়তি না আমাকে যখন ধমক দিলি সবার শিক্ষা হয়ে গেল।কেউ আর কিছু বলল।

নাবিলঃ আচ্ছা সেটা না হয় বাদ দিলাম এখন এটা বল তুই কি করে বোঝলি মেঘলা ঘরে গিয়ে কোন অঘটন ঘটাবে….???আমি ত আর সারারাতে ওর ঘরে যেতাম না তুই যদি ফোন না দিতি। তুই জানিস এই ঠান্ডায় মেঘলা ১ ঘন্টা ভিজেছে।আমি তখন না গেলে আরও ভিজত।

আকাশঃ হুম জানি এটা ওর ছোট বেলার অভ্যাস রাগ হলে ভিজে ওর ধারনা ভিজলে রাগ কমে।তবে আমি সেটা ভুলে গেছিলাম যখন মনে হল তখন দেড়ি হয়ে গেছে তবুও তোকে ফোন দিলাম তুই না গেলে ও সারারাত ভিজত।

নাবিলঃ আচ্ছা এতই যখন ভালবাসিস এতই বোঝিস তাহলে ইরা যে ওকে মারল তুই কিছু বল্লি না কেন?

আকাশঃ এটার জবার ইরা পাবে…. তবে এখন না সময় মত।এটা তোর ভাবতে হবে না তুই এটা বল মেঘলা গিফট পেয়ে খুশি হয়েছে তো?

নাবিলঃ হুম তুই যা যা বলেছিলি তাই তাই করেছি আমার জিএফ এর কথা বলে গিফট কিনে দিয়েছি তুই তোর কার্ড খালি করে ফেলেছে সাথে আমার কাছ থেকে আরও লেগেছে।

আকাশঃ যাক ও খুশি হয়েছে তাতেই হয়েছে। আমি তোর টাকা দিয়ে দিব নি।

নাবিলঃ সব হয়ত ঠিকি আছে কিন্তু আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না আকাশ। আমার বারবার মনে হচ্ছে তুই ভুল করছিস তোর এই ভুলের জন্য না তুই ওকে হারিয়ে ফেলিস? আমার ভয় হচ্ছে।মেঘলা কখন কি করে না দেখেই তুই বলতে পাড়িস কি করলে ওর মন ভাল হয় সেটাও বোঝিস এত ভালবাসিস তাহলে বলিস না কেন আকাশ?

আকাশঃ অনেক কারন আছে তাই বলি না।তুই বোঝবি না সময় হোক বোঝাব।

নাবিলঃ আমি নাইবা বোঝলাম কিন্তু তুই কি বোঝতে পাড়ছিস?এমন করলে মেঘলা তোর কাছ থেকে সরে যাবে আর আমার প্রতি দুর্বল হয়ে যাবে।আগুন আর ঘী পাশাপাশি রাখতে নেই আকাশ,আর তুই তো পাশাপাশি না একদম একসাথে মিলিয়ে দিচ্ছিস।আজ মেঘলার তোর কাঁধে ঘুমানোর কথা ছিল কিন্তু তুই নিজেই তুই আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিলি।

এরপর যদি ও আমার প্রেমে পড়ে?কি হবে তখন? ও তো জানে না যে এসব কিছু আমি নিজের ইচ্ছায় করিনি সব তুই করিয়েছিস।

আকাশঃ হা হা হা কি যে বলিস নাবিল…. আমার জন্য কি কম মেয়ে পাগল? আমি যদি ১০ বছর ধরে ওর জন্য অপেক্ষা করে থাকতে পাড়ি সব মেয়েদের উপেক্ষা করে তাহলে ও আমার জন্য একটা নাবিল কে এভয়েড করতে পাড়বে না ?ওর উপড় আমার সেই বিশ্বাস আছে। আমি জানি ও কখনো কারো হবে না। ওর মন প্রান জোড়ে শুধু আকাশই আছে।

নাবিলঃ ওর মনে কে আছে সেসব তর্কে আমি না যাই কিন্তু এইটুকু শোন এত কিউট একটা মেয়ের সাথে থাকলে আমি কিন্তু প্রেমে পড়ব তখন আমায় কিছু বলতে আসিস না।

আকাশঃ হা হা হা কেন এত হাসাচ্ছিস বলতো তোকে কি আমার চিনার বাকি এখুনো? নাবিল নিজের বুকে ছুড়ি চালাতে পাড়ে কিন্তু আকাশের বুকে নয়।তবুও ধরে নিলাম তুই প্রেমে পড়লি তাতে বা কি?মেঘলা তোকে ভালবাসবে না। ১০০℅ গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পাড়ি।

নাবিলঃ তুই যাই বল আমার এসব ভাল লাগছে না আকাশ ২ জন ২ জনকে এত ভালবেসেও এক হতে পাড়ছে না, আবার না হওয়ার মধ্যে কোন যুক্তি সংঘত কারন ও দেখতে পাড়ছি না এটা আমার ঠিক হজম হচ্ছে না।

আকাশঃ দোস্ত আমি একটু চিপায় পড়ে গেছি রে, প্লিজ মাথা চাড়া দিয়ে দাড়ানোর সময়টুকু আমায় দে। আমি সবকিছু ক্লিয়ার করে দিব। কেউ না জানুক তুই তো জানিস মেঘলা আমার প্রান আমি আমার প্রান টা তোর হাতে তুলে দিয়েছি প্লিজ একটু সামলে রাখ আমাকে একটু সময় দে আমি সব ঠিক করে নিব।

নাবিলঃ চিন্তা করিস না আকাশের জন্য নাবিল জীবন ও দিতে পাড়ে আর এটা তো সামান্য একটা কাজ।

আকাশঃ থ্যাংক্স দোস্ত।

নাবিল আকাশের রুম থেকে যাওয়ার সময় দেখল মেঘলা শপিং এর জিনিসগুলি দেখছে তারমন বেশ ভাল তাই নিশ্চিন্ত হয়ে নাবিল নিজের রুমে গেল।





পরদিন সকালে,নাবিল একটু দেড়ি করে ঘুম থেকে উঠল আকাশ সকালে জগিং এ গিয়েছিল। ফিড়ে এসে নাবিল কে বলল হিরোইন কোথায়?

নাবিলঃ এখনো দেখা হয় নি…

আকাশঃ কি বলিস ম্যাডাম তোন এত ঘুমায় না যা ডেকে তুল।

নাবিলঃ জো হুকুম স্যার….
নাবিল মেঘলার ঘরে গিয়ে আকাশ কে ডাকতে লাগল।

আকাশঃ কি হয়েছে? চেচাচ্চিস কেন?

নাবিলঃ মেঘলা কোথায়?একা একা কোথাও যাওয়ার মেয়েত মেঘলা না।

আকাশ আর নাবিল সারা হোটেল খোঁজে দেখল কিন্তু মেঘলা কোথাও নেই।

নাবিলঃ আকাশ মেঘলা কোন অঘটন ঘটাল না তো আমার খুব ভয় করছে।

আকাশঃ না না না আমার মেঘলার কিছু হতে পাড়ে না…



চলবে….!!!

চলবে….!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here