শুভ্রনীড়,পর্ব:৩

#শুভ্রনীড়
#পর্ব০৩
#Shamu_Choudhury

শুভ্রা আর সামিহাকে তারা রাত্রিতে ভোজন করার উপলক্ষে প্রস্তুতি করতেছে,,,

শুভ্রাদের কাঠের টেবিলে শুয়ে রাখা হয়েছে। শুভ্রার মাথায় সাদা কাপড় বাঁধা। সাদা না কাপড় টাকে লাল বলা শ্রেয়, কেননা শুভ্রার রক্তে সাদা কাপড়টি সহ মাথার সব চুল রক্তে মেখে গেছে তার অবস্থা গুরতর। হয়ত কিছু ঘন্টা পর সে পঁচত্বপ্রাপ্তি(মৃত্যু বরণ) করবে।

আরেকদিকে সেই আঘাত করা লোকটি আর তার বন্ধুরা শুভ্রাদের খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ৷

(লোক দুটি মাওরিস জাতির। মাওরিস,মানুষ খেকো এক জাতী। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যার ৩% এই মাওরিসরা মাওরিস রা কখন কোথায় থাকে তা বলাও মুশকিল)

মাওরিস দের নিজেস্ব ভাষা রয়েছে। তারা দুজন তাদের ভাষায় বলে উঠল,,

___অনেকদিন এই দ্বীপে প্রদোষকালে(রাত্রিবেলায়) মানুষের দেখা পাই না। এত দিন পর শিকার আর লোভ সামলাতে পারছি না,আর সংহু ( তাদের ৩য় বন্ধু)কখন আসবে?? সে আসলে আমরা রাত্রিভজন শুরু করবো।

____
এদিকে জাপানে অবস্থানরত আমানের কাছে এক কল আসে,,

___হ্যালো আমান?কোথায় আছিস তুই? আমাকে মাফ করে দে। আমি তোর কথা রাখতে পারিনি রে শুভ্রা আর সামিহাকে পাওয়া যাচ্ছে না।

(আমান বিচলিত হয়ে বলল)
_এইগুলা কি বলতেছিস শ্রাবণ? তোকে বলেছিলাম ইউভী খোজ পেয়েছে শুভ্রা ইন্দোনেশিয়ায় আছে। তুই তো জানিস আমি ইউভী সম্পর্কে তেমন কিছু জানিনা শুধু জানি তার ছায়াটাও পশুর মত হিংস্র। তাই তোকে শুভ্রার কাছে পাঠালাম যাতে শুভ্রা কে সেইফভাবে আমার কাছে আনিস। আর তুই এইগুলা কি বলতেসিস???

(পরে শুভ্রা কিভাবে পালায় সবকিছু শ্রাবণ আমান কে খুলে বলে সেও বাহিরে চলে যায় শুভ্রাদের খুজতে____)

ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপপুঞ্জ। এখানে ১৭,৫০৮ টি দ্বীপ রয়েছে। তার মাঝে কেবল ৬০০০দ্বীপে মানুষ বসবাস করে।
সেই ৬০০০ দ্বীপের মাঝে ছোট একটি দ্বীপ আমানের বাবা আমানের মার জন্য কিনে। আমানের মা-বাবা কেউ বেঁচে নেই। তার একমাত্র বন্ধু শ্রাবণ। যাকে আমান চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে। তারা দুজনেই লেখাপড়ায় অনেক ভাল ছিল,তাই তাদের পিছু তাকাতে হয়নি। তাদের এই বিশাল সাম্রাজ্যে কোন কিছুর অভাব নাই অভাব শুধু রাণীর। আর তাছাড়া শুভ্রা কে ইউভীর থেকে সেইফ রাখার জন্য আমান তাকে তার “আমান’স স্কোয়াড” যা ইন্দোনেশিয়ার একটি দ্বীপে অবস্থিত সেখানে আনে।

____
এদিকে সামিহার জ্ঞান ফিরেছে। সে শুধু কেঁদেই যাচ্ছে, তার কোন কিছু করার নেই। মাওরিস দের ৩য় বন্ধু এসে গেছে, এখন শুধু শুভ্রাদের হত্যা করা বাকি। মাওরিস দের ৩য় বন্ধু সংহু ধারালো ছুরি নিয়ে সামিহার দিকে এগোয় সামিহা শুধু চিৎকার করে কাঁদতেছে। তাকে দুজন ধরে আছে এই রকম ধস্তাধস্তির এক পযার্য়ে সামিহার হাত ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে যায় সাথে সাথে রক্ত ছিটকে বের হতে থাকে সামিহা ভড়কে যায়। যেই তারা আবার সামিহার দিকে এগোয় পিছন থেকে এক গুলি এসে ২য় বন্ধুর মাথায় লাগে। এ দেখে বাকি দুজন পিছনের দরজা দিয়ে পালাতে চাইলেই শ্রাবণ তাদের পায়ে গুলি করে। শ্রাবণের সঙ্গীরা তাদের দিয়ে ধরে ফেলে আর শুভ্রা আর সামিহা কে তাদের বাংলো তে নিয়ে যাওয়া হয়। বাংলোতে সব কিছু আগে থেকেই রেডি করা থাকত। কখনো ইমারজেন্সি ট্রিটমেন্ট এর জন্য লাগতে পারে তাই।
শুভ্রা আর সামিহার ট্রিটমেন্ট চলতে থাকে। শুভ্রার অবস্থা বেশি খারাপ আর সামিহার অনেক রক্ত ক্ষরণ হয়েছে।

____আমান এইগুলা জানতে পেরে আর থাকতে না পেরে ইন্দোনেশিয়ার ফ্লাইটে উঠে পরে। তার উদ্দেশ্য শুভ্রা কে এক নজর দেখা

_____সেই সাথে ইউভী ইন্দোনেশিয়ায় এসে গেছে। এত দ্বীপের মাঝে কোনটাতে সামিহা আছে তা খুজে বের করা অসম্ভব। তবুও সে হার মানেনা। সে ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত বালি দ্বীপে প্রথমে যায় আর সেখানে থাকার পরিকল্পনার করে। সে তার গুপ্তচর কে ফোন করে কিন্তু তার ফোন গত দুদিন যাবত অফ। সে ভাবে আজ না হলেও কাল ঠিকি তার গুপ্তচর তাকে খোঁজ দিবে তখন না হয় শুভ্রা কে খুজে বের করবে।

______
পরেরদিন আমান ইন্দোনেশিয়ার এয়ারপোর্টে শ্রাবণের জন্য অপেক্ষা করতেছে। তাকে রিসিভ করার কথা কিন্তু শ্রাবণ এখনও আসেইনি। সে ভাবলো আবার কিছু হল না তো। তাই সে একাই বেড়িয়ে পরে তার গন্তব্য “আমান’স স্কোয়াড”।

____
এদিকে ভোর না হতেই ইউভীকে ফোন করে তার গুপ্তচর জানিয়ে দেয় শুভ্রা “আমান’স স্কোয়াড” এ আছে।

___আমি আসতেছি শু। আর কত পালাবে?? (ডেভিল স্মাইলে ইউভী বলে বেড়িয়ে পড়ল তার ও গন্তব্যস্থল আমান’স স্কোয়াড )

_________
শুভ্রা আর সামিহা একটু সুস্থ। শুভ্রা কিছু করতে না পারলেও সামিহা টুকটাক কাজ করতে পারতেছে। শ্রাবণ এসে তাদের জানায় তারা যাতে জানতে পারে তারা জার্মানে আছে তাই তাদের রুমে জার্মানের ক্যালেন্ডার রাখা হয়েছিল। আর তাদের ভালোর জন্য আমান এইগুলা করতেছে।
এই কথা শুনে শুভ্রা কোন ভাবে বলে উঠল,

__আমান আমান কে এই আমান? আমি চাই ইউভী কে। আমান আমার পথের কাটা নক হলে এতক্ষণে হয়ত ইউভীকে পেয়েও যেতাম। আমাদের প্লিজ ছেড়ে দিন। আর সহ্য হয়না ( এই বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে উঠে)

__দেখ শুভ্রা তুমি এখন অসুস্থ আর তোমার ক্ষতি আমরা কেউ চাইনা, শুধু একবার বিশ্বাস কর,আমান আজ আসতেছে কিছু কাজে সে আটকে গেছে তাকে রিসিভ করতে এয়ারপোর্টে যাওয়ার কথা, তাও যেতে কেন পারতেছিনা জানো? তোমার জন্য। আমরা আজ জাপানে যাচ্ছি তোমার চাচ্চুর খুনি কে বের করার জন্য যাবেনা? সেখানে গিয়ে ইউভীকেও খুঁজে নিও। তাড়াতাড়ি বের হয়ে নাও( এই বলে শ্রাবণ আমান কে কল লাগায় আর জানিয়ে দেয় সে খবর পেয়েছে ইউভীর কোন গুপ্তচর তাদের সাথে আছে, যে সব কিছু ইউভীকে বলে দিয়েছে এমনকি শুভ্রা যে তাদের সাথেই আছে এইটাও। তাই তারা বের হচ্ছে আমান যেন এয়ারপোর্টে তাদের জন্য অপেক্ষা করে)

অনেকক্ষণ পেড়িয়ে যায় কিন্তু শ্রাবণ আমানের দেখা পায়না।সে তো এখানেই তাকে অপেক্ষা করতে বলেছিল তাহলে গেল কোথায়? এমন জায়গা নাই যেখানে শ্রাবণ আমান কে খোঁজেনি। কিন্তু আমান উধাও। অবশেষে সে শুভ্রার সেইফটির জন্য আমানকে ছেড়েই পারি জমায় জাপানে।

_____
এইদিকে আমান জ্ঞানহীন অবস্থায় পরে আছে তার নিজের বাংলো “আমান’স স্কোয়াড” এ। তার হার্টবিট খুব ধীরে ধীরে পাম্প করেতেছে। তারে হার্টের খুব কাছে কেউ ছুরি মেরেছে রক্তে ফ্লোর পুরো মেখে গেছে। হয়ত তার গল্প এখানেই শেষ, সে শুভ্রাকে পেয়েও যেন পেলো না।

চলবে??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here